শেষ পাতায় সামাপ্তি পর্ব ৬

0
286

#শেষ_পাতায়_সমাপ্তি
#লেখিকাঃজিন্নাত_চৌধুরী_হাবিবা
#পর্ব_০৬

দরজার শব্দে সৎবিৎ ফিরে পায় চৈতালি। ত্রস্ত পায়ে এগিয়ে যায় সেদিকে। দরজাটা ভালোভাবেই আটকে আছে। কিছুতেই টেনে খোলা যাচ্ছেনা। পুরো ঘর জুড়ে অন্ধকারের বিচরণ। নিস্তব্ধ পরিবেশ গা চমচম করে উঠলো চৈতালির। মাঝে একটু ভ’য় ও হলো। দরজাটা খুলছেনা। বুদ্ধি করে ব্যাগ থেকে ফোন নিয়ে ফ্ল্যাস অন করলো। বন্ধুদের কল দিতে গিয়ে দেখলো এই বদ্ধ ঘরে নেটওয়ার্কের কানাকড়ি ও নেই। ভ’য়ের মাত্রা আরেকটু খানি বাড়লো। দরজায় অনেক্ষণ যাবত করাঘাত করে ও কোনো লাভ হলোনা। নিজেকে স্থির করার জন্য দরজার পাশ ঘেষে বসে পড়লো চৈতালি। ভ’য় পেলে মানুষের বুদ্ধি সুদ্ধি লোপ পায়। তাই নিজেকে আপাতত অনুদ্ধত করার চেষ্টা করছে।
কিয়দংশ সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরই চৈতালি উঠে দাঁড়ালো। ফোনের ফ্ল্যাস দিয়েই জানালা খুঁজে বের করলো। ধুলো মাখা জানালায় হাত রেখে জানালা খোলার চেষ্টায় অবশেষে সফল হলো।

এতক্ষণের তিমিরে ঢাকা ঘরে এক চিলতে আলো যেনো চোখেমুখে অগ্নিশিখার মতো কাজ করলো। মুদে আসলো নেত্রপল্লব। আলোকিত হলো ঘরের আনাচকানাচে। জানালার বাহিরে ফোন বাড়িয়ে দিলো। একটা নেটওয়ার্কর দাগ এসেছে। কল দিলো হাফির নাম্বারে। কল রিসিভ হতেই স্বস্তি মিললো। চৈতালির স্বস্তিতে এক বালতি পানি ঢেলে দিয়ে হাফি জানালো,

-“কি জন্য কল দিয়েছিস? তোর কথা কিছুই বুঝতে পারছিনা, রাখ।”

কল কেটে দিলো হাফি। চৈতালি এবার মেসেজ পাঠালো।

“আমি কর্ণারের একটা ঘরে আটকে আছি। দরজা খুলতে পারছিনা। আমাকে এখান থেকে বের কর।”

মেসেজ পাঠিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলো চৈতালি। ধুলোপড়া বইয়ের ভাঁজে হাত রাখলো। ছুঁয়ে ছুঁয়ে সবুজ মলাটে আবৃত একটি বইয়ের থেকে হাত সরাতেই থেমে গেলো চৈতালি। বইটা হাতে নিয়ে অল্পবিস্তর দেখা যাওয়া লিখায় হাত বুলিয়ে ধুলো পরিষ্কার করে নিলো।

“আলী আহমাদ চৌধুরী”। নামটি দেখে কৌতুহল বশত ভেতরে খুলে দেখলো চৈতালি। এটা কোনো বই নয় ডায়েরী বলা চলে।
নিশ্চয়ই জমিদার আলী আহমাদ নিজের প্রিয় বাক্য কাগজের পাতায় তুলে ধরতে পছন্দ করতেন। ভেতরের লিখাগুলো উল্টেপাল্টে দেখলো চৈতালি। এতবছর লিখাগুলো ঠিক নেই। কলমের কালি ছড়িয়ে এবড়ো থেবড়ো হয়ে আছে। শুধু দুটো শব্দ পড়তে পারলো চৈতালি।

‘চন্দ্রাবতী’, ‘ভালোবাসি’।মাঝের লিখাগুলো পড়া যায়নি। ডায়েরি বন্ধ করে আবারও ফোন হাতে নিলো চৈতালি। কোনো ফিরতি মেসেজ আসেনি। এবার চিন্তার পাহাড় দৃঢ় হলো। আত’ঙ্কে গলা শুকিয়ে আসলো।

পরাণ,লুনা, পাখি আর হাফি চারজন চারদিকে ঘুরে একসাথ হলো। কিন্তু চৈতালিকে পেলোনা। আরেকটু খোঁজাখুঁজি করে দেখলো। নাহ কোথাও নেই চৈতালি। হাফি কল দিয়ে দেখলো। ফোন বন্ধ বলছে। সবার চোয়ালে যখন চিন্তার পাহাড় তখন সবাইকে অবাক করে দিয়ে মিটিমিটি হাসছে পাখি। হাফির তীক্ষ্ণ চোখ জোড়া পাখির উপর পড়তেই ফিক করে হেসে দিলো পাখি।

-” কেমন চমক দিলাম? পাখি কর্ণারের ঘরটায় আছে। আমি বাইরে দিয়ে সিটকিনি লাগিয়ে দিয়েছি।”

পরান ধমকে উঠলো পাখিকে।

-“এরকম গবেট এর মতো কাজ কিভাবে তোর দ্বারা সম্ভব হলো?” দ্রুত চল। মেয়েটা নিশ্চয়ই ভয় পেয়েছে।”

পাখি মাথানিচু করে মিনমিন করে বলল,

-“আমি তো মজা করেছি। তোরা ও তো আমার জন্মদিনে এভাবে ভ’য় দেখিয়েছিলি।”

কেউ আর অযথা বাক্যব্যয় করলোনা। দরজা খোলার শব্দে পেছন ঘুরে তাকায় চৈতালি। দ্রুত ডায়েরীটি যথাস্থানে রেখে বেরিয়ে আসলো।

এখনো আরও দেখা বাকি আছে। পাখির বড় ভাই ও দেখছি এসে যোগ দিয়েছে। তিনি যে কি কারণে এসেছেন সেটা বন্ধমহলের সবার জানা। লুনাকে পছন্দ করে ফাহিম। বন্ধুদের মধ্যে সবচেয়ে সুন্দরী মেয়েটি হলো লুনা। কিছুটা লাজুক প্রকৃতির। মনে মনে সেও ফাহিম ভাইকে বেশ পছন্দ করে। করবেনা ই বা কেনো? সৌন্দর্যের কোনো অংশে কমতি নেই মানুষটার। নম্র, ভদ্র লোক। কথার পিঠে চমৎকার এক হাসি উপহার দেয়। সেই কখন থেকেই তার তৃষ্ণার্ত আখিঁদ্বয় লুনাকে দেখতে ব্যস্ত।

চৈতালি মিষ্টি হেসে জিজ্ঞেস করলো,

-“কেমন আছেন ভাইয়া?”

-“ভালো আছি। তোমরা সবাই কেমন আছো উড়ো পাখির দল?”

শব্দ করে হাসলো চৈতালি।
-“এই যে একদম জম্পেশ আছি। তো চলুন আমরা আরেকটু ঘুরে দেখি।”

অনেকক্ষণ সময় নিয়ে ঘুরলো জমিদার বাড়ি। যতবার এখানে এসেছে চৈতালি, ততবারই কয়েকটা ঘর বদ্ধ অবস্থায় পেয়েছে। জুলন্ত বড় তালায় কর্ণারের ঘরগুলো। চৈতালি লাইব্রেরি সদৃশ যে ঘরটায় ঢুকেছিলো? এই ঘরগুলো ও ঠিক তার পাশেই আছে।
সবার ঘোরাফেরা শেষে বাড়িতে ফিরলো বন্ধুমহল। লুনা,পাখি ফাহিম ভাইয়ের সাথেই বাড়ি ফিরেছে। পাখিকে বাড়ি পৌঁছে লুনাকে এগিয়ে দিতেই পা বাড়ালো ফাহিম। পথিমধ্যে হুট করেই লুনার ডানহাতের ভাঁজে হাত গলিয়ে দিলো ফাহিম। তড়াক করে উঠলো লুনার বক্ষঃস্থল। চোখে চোখে লজ্জায় হলো প্রেম নিবেদন।

————————————

আকাশেতে রাশি রাশি পুঞ্জ মেঘের দল। অভিমানে সিক্ত কপোল,টুপটাপ কান্নায় ভারী হলো স্থল। দেয়াল ঘেষা ডালপালার পাগলাটে নৃত্যের আসর। হু হু দমকা হাওয়ায় উড়িয়ে দিচ্ছে প্রকৃতি মানবীর কেশ। বিকট শব্দে মেঘ বিদ্যুৎ এর খেলা। এক ছটাক আলোর দীপ্তি হামাগুড়ি দিয়ে পালিয়ে গেলো সারা।
ঘড়ির কাঁ’টা প্রায় নয়টার ঘর ছুঁই ছুঁই। সারাদিনে ফোনের কথা একটিবারের জন্যেও মনে পড়েনি চৈতালির। কাঁপা কাঁপা হাতে হরিদ্রাভ কাগজের ভাঁজ খুলে বসলো। ঘরে বিদ্যুৎ নেই। মোম জ্বালিয়ে অন্ধকারের গুমোট ভাব দূর করেছে। বক্ষঃপিঞ্জরে ধুকপুক ধুকপুক শব্দ। কাগজ খুলতেই একফোঁটা মিষ্টি জল ছুঁয়ে দিলো বাদামী কপোল।

‘রাঙাবতী’

একফোঁটা অভিমান হয়ে এসো। অপেক্ষায় আছি শুষ্ক খরায় তৃষ্ণার জোয়ার নিয়ে।
শুষে নেবো বিস্তৃত অভিযোগের ঝুলি। অগোচরে হাসবো আমি। তুমি শুধু শেষ পাতায় রেখো তোমাতে আমার সমাপ্তির স্মৃতি। দিনশেষে সূর্য যেমন সমুদ্রের বুকে ফেরে? একবুক ভালোবাসা হয়ে তুমি ফিরে এসো আমারই নীড়ে।

ইতি
“ভালোবাসার এক তৃষ্ণার্ত পথচারী”।

আনন্দাশ্রুতে সিক্ত চোখজোড়া। হুট করেই মনটা চনমনে হয়ে উঠলো।
এই মুহূর্তে বন্ধুমহলে তার দারুণ সুখ সুখ অনুভূতির কথা জানাতে ইচ্ছে হলো। ফোন খুঁজলো,কিন্তু হতাশ হয়ে হাত গুটিয়ে নিতে হলো। কিছুতেই মনে করতে পারছেনা ফোন কোথায়। জমিদার বাড়ি থেকে আসার পর আর ফোন হাতে নেয়া হয়নি। তাই দ্রুত ব্যাগ তল্লাশি করলো। কোথাও নেই। হুট করেই মনে পড়ে গেলো, যখন জমিদারের ডায়েরী হাতে নিয়েছিলো তখনই ফোনটি তাকের উপর রেখেছিলো। আর নিয়ে আসা হয়নি।

মায়ের ঘরে গিয়ে দ্রুত ফোন লাগালো হাফিকে।

-” কিরে লেদির মা, কি মনে করে কল দিলি?”

হাফির প্রশ্ন এড়িয়ে চৈতালি বলল,

-“তাড়াতাড়ি বের হ তো বাড়ি থেকে। আমার ফোন ফেলে এসেছি জমিদার বাড়িতে।”

হাফি চোখজোড়া বড় করে বলল,

-“তোর কি মাথা খা’রা’প? এত রাতে জমিদার বাড়ি যাবি? তোর ফোন চুলোয় যাক। আমি বাড়ি থেকে বের হচ্ছি না।”

-“আচ্ছা তুই না গেলে আমি একাই যাচ্ছি।”
বলে লাইন কে’টে দিলো চৈতালি।

ফিরতি হাফির মেসেজ পেয়ে হাসলো। চৈতালি জানতো হাফি এতরাতে ওকে একা ছাড়বেনা।

লুনার বাড়ি যাবে বলে মায়ের অনুমতি নিয়ে বের হলো চৈতালি। আবার ঘন্টা পেরোতেই চলে আসবে। হাসি আর না করেননি।
পৌঁছে গেলো দুই বন্ধু জমিদার বাড়ি। বাঁধলো বিপত্তি। জমিদার বাড়ির সামনে একজন পাহারাদার রয়েছেন। যিনি কিছুতেই ওদেরকে বাড়িতে ঢুকতে দেবেননা। রাতের বেলা নাকি এখানে ভূত-প্রেত ঘোরাঘুরি করে। যদি ছেলেমেয়ে দুটোকে মে’রে ফেলে?

অনেক আকুলিবিকুলি করে শেষে ঢুকতে দিলো। টর্চ জ্বালিয়ে হাফি আর চৈতালি ওই ঘরে ছুটলো। কেমন নিস্তব্ধ,গুমোট পরিবেশ। গা চমচম করে উঠছে। মনে হচ্ছে পেছনে কেউ আছে। এমন হাজার ও কল্পনা জল্পনা নিয়ে সেই জায়গাতেই ফোন পেয়ে গেলো। হঠাৎই পাশের ঘর গুলো থেকে দরজা খোলার শব্দ হলো মনে হচ্ছে। নারী কন্ঠে হাসির শব্দ দেয়ালে ঝংকার তুলছে। গটগট পদধ্বনি তরঙ্গিত হচ্ছে মস্তিষ্কে। চৈতালি ভ’য়া’র্ত চোখে তাকিয়ে বলল,

-“শুনছিস, আমার মনে হচ্ছে এখানে আরও কেউ আছে।”

হাফিকে ও কেমন ভীত দেখালো। নিশ্চয়ই জমিদার আর তার স্ত্রীর আত্মা ঘোরাঘুরি করছে বলে চৈতালিকে নিয়ে ত্রস্ত পায়ে বেরিয়ে গেলো। চৈতালি আর দেরি করলোনা। সে ও ব্যস্ত ভঙ্গিতে বেরিয়ে এলো। জমিদার বাড়ি থেকে বেরিয়ে চারপাশে টর্চ ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখছে চৈতালি।

হঠাৎই হাত থেমে গিয়ে হাফির উদ্দেশ্যে বলল,

-“এনামুল হক জমিদার বাড়ির পেছন দিক থেকে কেনো বের হচ্ছে? উনার এখানে কি কাজ থাকতে পারে? জমিদার বাড়িতে তো এ সময় কেউ আসার সাহস করেনা। তবে কি উনিই দরজা খুলেছিলেন?”

হাফির চোখেমুখে ও জানার কৌতুহল। নাকে এসে ঠেকছে রহস্যের পোড়া গন্ধ।

——————————

আজই অনুকে প্রথম পড়াচ্ছে চৈতালি। পড়াতে বেশ ভালোই লাগছে মেয়েটাকে। একদমই ভাইয়ের মতো বেয়া’দব নয়। শান্তশিষ্ট,মিষ্টি মেয়ে একটা। কাছেপিঠে বাড়ি বলে রাতেই পড়াচ্ছে তাকে।
সফেদ রাঙা থ্রি-পিস গায়ে জড়িয়ে সিঁদুর রাঙা আলতায় রাঙানো হাতে দুমুঠো লাল-সফেদ চুড়ির ছড়াছড়ি। কৃষ্ণ কাজলে লেপ্টানো আঁখিদুটি কাঙ্খিত পুরুষের অপেক্ষায়। অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে বাড়ি ফিরলো সে পুরুষ। গোসল সেরে ছাদে চরণ ফেললো।

অনুর ঘর থেকে সিঁড়ি ঘর স্পষ্ট দেখা যায়। ঘড়িতে সময় দেখে ছুটি দিলো অনুকে। গুটিগুটি পায়ে ছাদে পড়লো আরেক জোড়া তুলতুলে পা।

রেলিং এ হাত রেখে সিগারেটে সুখটান দিয়ে আকাশে ধোঁয়া উন্মুক্ত করছে শক্তপোক্ত পুরুষালি অবয়ব। রিনিঝিনি চুড়ির শব্দ ঝংকার তুলতেই আলতো ঠোঁটে হাসলো। যেন সে জানতো এমনই হবে। রমণী ঠিকই তার উপস্থিতি জানান দিতে আসবে।
পেছনে একপাল তাকালো সাদমান। রূপোলী চাঁদের আলোয় দেখা মিললো এক মায়াময়ী মুখশ্রী।

সাদমানের চোখে চোখ রাখলো চৈতালি। চুড়িতে আবৃত হাত তুলে ধরলো তার সামনে।
মোহনীয় কন্ঠের বুলি,

-“দেখুন তো কেমন লাগছে?” রাঙিয়ে নিয়েছি নিজেকে একমুঠো ভালোবাসায়।”

সাদমান হু হা করে হেসে উঠলো। ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলো চৈতালি।

হাসি থামাতেই ঠোঁট কামড়ে ধরলো সাদমান।

-“বেশ ভালোই মানিয়েছে। তবে আপনার কোথাও ভুল হচ্ছে চৈতালি। এই মুঠো ভর্তি ভালোবাসা আমার নয়, বড় ভাইয়ের।”

মুহুর্তেই বিষিয়ে গেলো মনটা। প্রণত মস্তকে চেয়ে রইলো খানিক সময়। ব্যথাতুর কন্ঠে সুধালো,

-“কেনো আমার অনুভূতি কে এত হেলা করছেন?”

সাদমানের তুচ্ছ প্রশ্ন,

-“এই অনুভূতির মূল্য কত?”

তাচ্ছিল্য হাসলো চৈতালি।

-“অনুভূতির আবার মূল্য হয় বুঝি? তবে আমার অনুভূতির মূল্য এবং, এবং, এবং এক ভয়’ঙ্ক’র সর্ব’নাশা মানব।”

সিগারেটে লম্বা সুখটান দিয়ে চৈতালির মুখে ধোঁয়া ছড়ালো সাদমান। কেশে উঠে হাত দিয়ে ধোঁয়া তাড়ানোর চেষ্টা করে চৈতালি।

সাদমানের তাচ্ছিল্য কন্ঠস্বর,

-“সামান্য সিগারেটের তেজ সহ্য করতে পারছেননা, তবে আমার ভালোবাসা কিভাবে সহ্য করবেন?
আমার ভালোবাসায় প্রচন্ড ঝাঁঝ আর তিক্ততা। সইতে হবে যন্ত্রণা। কোনো মিষ্টতা নেই।
আপনি বরং মিষ্টি পায়েসেই সন্তুষ্ট থাকুন। আগুণে ঝলসে কয়লা হতে আসবেননা। উপহার স্বরুপ বিষাদ ছাড়া কিছুই মিলবেনা।”

হাসলো চৈতালি।
-“বিষাদ যন্ত্রণাই যদি সহ্য করতে না পারি, তবে ভালোবাসি দাবি করি কিভাবে? যে ভালোবাসায় যন্ত্রনা বেশি সেই ভালোবাসায় সুখের তৃপ্ততা তত বেশি।”

-“আপাতত আপনি এখান থেকে গেলেই আমি সুখের তৃপ্তি পাবো।”

সাদমানের বুলি শুনে জলে সিক্ত চোখজোড়া লুকিয়ে ফেললো চৈতালি। এতটা অস’হ্য, অবহেলার পাত্রী সে? ভেতরে ভেতরে হাউমাউ করে কেঁদে উঠছে অন্তরিন্দ্রিয়। শব্দ হচ্ছে না, কেবল সে অনুভব করতে পারছে। পা বাড়ালো সিঁড়ি ঘরের দিকে।

সদর দরজার ফটকে পা ফেলতেই সমুদ্রের প্রবেশ। এলোমেলো হৃদয়ে একবুক প্রশান্তির ছাপ ফেলার জন্য এই মুখটিই যথেষ্ট সমুদ্রের জন্য। তাই তো কৌশলে মানবীকে নিজের বাড়িতে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করেছে। অনুকে পড়ানোর প্রস্তাবটি তারই ছিলো। বাকিটা বাবা সামলেছেন। চৈতালির হাতে নজর পড়তেই পুলকিত হলো মন। অধর কোনে দেখা মিললো এক চিলতে হাসি।

-“পছন্দ হয়েছে? ভেবেছিলাম তুচ্ছ করবেন। পরিবর্তে একফালি সুখ দিয়ে গেলেন।”

চৈতালি কিছু না বলেই বেরিয়ে গেলো। যাওয়ার পানে চেয়ে রইলো এক তৃষ্ণার্ত প্রেমিক পুরুষ।

#চলবে…….

(
হ্যাপি রিডিং।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here