শেষ পাতায় সামাপ্তি পর্ব ১৫

0
371

#শেষ_পাতায়_সমাপ্তি
#লেখিকাঃজিন্নাত_চৌধুরী_হাবিবা
#পর্ব_১৫

গুমোট অন্ধকারে নিস্তব্ধ, শান্ত পরিবেশ। জনাকীর্ণ হীন পরিবেশে মানুষের আনাগোনা নেই। আটটা নাগাদ গ্রামের মানুষগুলো ঘুমিয়ে পড়ে। মাঝেসাঝে দু’একটা পরিবারকে দেখা যায় অনেক রাত পর্যন্ত জেগে থাকতে। দূর থেকে বেওয়ারিশ কুকুরের ডাক ভেসে আসছে। বাতাসে গাছের পাতা ঝরে পড়ার শব্দ, শুকনো পাতার মড়মড়ে শব্দে আচমকা ভ’য় জেগে ওঠে। চৈতালিকে নিয়ে জমিদার বাড়ির সামনে এসে দাড়ালো সাদমান। চৈতালি অবাক হলো। জিজ্ঞাসু চোখে তাকিয়ে রইলো সাদমানের দিকে।
চৈতালির চোখের দৃষ্টি উপেক্ষা করে সাদমান ওর শক্তপোক্ত হাত চৈতালির হাতকে আগলে নেয়। জমিদার বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে দুজনে। বাড়ির শেষ কর্ণারে পৌঁছে দরজায় করাঘাতে একটি মেয়ে এসে দরজা খুলে দেয়। সাদমানের পেছনে চৈতালিকে দেখে সরু চোখে তাকায় মেয়েটি।

চৈতালি কোনো প্রতিক্রিয়া দেখালোনা। মেয়েটি দরজা থেকে সরে দাড়াতেই চৈতালির হাত আরেকটু শক্ত করে চেপে ধরে ভেতরে পা রাখে সাদমান। সাদমানের হাতে নিজের বদ্ধ হাতের দিকে তাকিয়ে তাচ্ছিল্য হাসলো চৈতালি। হাতজোড়া সারাজীবনের জন্য এভাবে বদ্ধ হতে পারতো। ভেতর ঘরে বেশ আয়েশে বৈঠকখানায় গা এলিয়ে বসে আছে সমুদ্র আর আলতাফ খান। সাদমান যে তাদের পেছনে লোক লাগিয়েছে এ বিষয়ে তারা অবগত।
সাদমানের সাথে চৈতালিকে দেখে শব্দ করে হাসলো সমুদ্র। চমকালো চৈতালি। এনামুল হকের তথ্যমতে জমিদার বাড়িতেই লুকিয়ে আছে প’তিতা পল্লি। তাই অবাক হলোনা চৈতালি। কিন্তু সমুদ্র সহ গ্রামের ভালোমানুষের মুখোশধারী পরিচিত মুখগুলো দেখে গা গুলিয়ে আসছে। ঘৃ’ণায় তাদের চোখের দিকে তাকানোর সাহস পাচ্ছনা চৈতালি।

সাদমান চৈতালির দিকে তাকিয়ে তার অভিব্যক্তি বোঝার চেষ্টা করলো। মুখ খুললো সমুদ্র,

-“বাহ্! এখান পর্যন্ত চলে এসেছো? জানতাম আমি, এমন কিছুই হবে। তাছাড়া তোমার কাছ থেকে লুকিয়েই বা কী লাভ? কদিন পর আমার ঘরের ঘরনি হবে। এসব কিছু মেনেই তো তোমাকে সংসার করতে হবে।”

অতিরিক্ত শক পেলে মানুষ যেমন শক্ত পাথর হয়ে যায় তেমনি চৈতালি শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো। নিষ্পলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো সামনে বসা মানুষটির দিকে। এই মানুষটা এতদিন ভদ্র সমাজের আড়ালে এই নোং’রা জগতের আচ্ছাদন গায়ে জড়িয়ে বসেছিলো? পৃথিবী থেকে বিশ্বাস শব্দটা বিলুপ্ত হতে আর বেশি দেরি নেই। মা কিনা এই জঘন্য লোকটাকে ভরসা করে তাকে এ লোকের হাতে তুলে দিতে যাচ্ছিলো?

-“তোমার যত শ’ত্রুতা আমার সাথে। তুমি চৈতালির মাকে কেনো মে’রেছো?”

সাদমানের প্রশ্নে নির্বিকার রইলো সমুদ্র। তার ভাবলেশহীন উত্তর,

-“খেলতে নামলে এরকম দু’একটা গুটি কোর্টের বাইরে ফেলতেই হয়।”

চৈতালির শরীর কেঁপে উঠলো। অবিশ্বাস্য দৃষ্টিতে তাকলো সমুদ্রের মুখে। তার মাকে সমুদ্র মেরেছে? রা’গে শরীর রি রি করে কাঁপছে। আর দেরি করলোনা চৈতালি। ঝাপিয়ে পড়লো সমুদ্রের উপর। এলোপাতাড়ি তাকে আ’ঘা’ত করতে লাগলো। সাদমান চৈতালিকে অনেক কষ্টে ছাড়িয়ে নিলো। ডুকরে কেঁদে উঠলো চৈতালি। সাদমান একহাতে চৈতালিকে জড়িয়ে রেখেছে।

চৈতালির তেজি রূপ দেখে সমুদ্র মিটিমিটি হাসলো।

-“বাড়ির বউদের এরকম তেজি না হলে চলেনা। তবে সমুদ্রের শরীরে আ’ঘা’ত করার সাহস দ্বিতীয়বার করবেনা। সমুদ্র যেমন প্রাণ উজাড় করে ভালোবাসতে জানে তেমনি সমুদ্রের তলদেশে ডুবিয়ে নিয়ে যেতে ও পারে।”

শেষের কথাগুলো চোয়াল শক্ত করে বলল সমুদ্র।

চৈতালি মুহূর্তেই অগ্নিমূর্তি ধারণ করলো। তর্জনী তুলে শাসিয়ে নিলে সমুদ্রকে।

-“আপনার মতো জানো’য়ারের বউ হওয়ার জন্য চৈতালি বসে নেই। আপনি হলেন রাস্তার কুকুর। যাদের কপালে ভালো খাবার জোটে না। তাইতো এইসব জায়গায় এসে ক্ষুধা মেটায়। আর হ্যাঁ মৃ’ত্যুর জন্য প্রস্তুত থাকবেন।”

বেহায়ার মতো আবার ও হাসলো সমুদ্র।
সাদমানের বুকের উপর থেকে ভারী পাথরটা নেমে গেলো। এবার চৈতালিকে এখান থেকে নিয়ে যাওয়া উচিত। মেয়েটার জীবন ঝুঁকিতে আছে। দু’দিনের মধ্যেই চৈতালিকে অন্য কোথাও পাঠিয়ে দেবে সাদমান। সেই ব্যবস্থা ও করে ফেলেছে। এখানে থাকলে সমুদ্র ওকে ছিঁ’ড়ে খাবে। সাদমানের নিজের জীবনের ও নিশ্চয়তা নেই। রাজ’নীতিতে চারদিকে শত্রু ছড়িয়ে আছে। সমুদ্র যে ওকে মা’রা’র জন্য পূনরায় পরিকল্পনা করেনি এটার কি নিশ্চয়তা আছে? আজ হোক বা কাল, হয় সাদমানের হাতে সমুদ্র ম’র’বে নয়তো সমুদ্রের হাতে সাদমান। তার আগে চৈতালির সুরক্ষার ব্যবস্থা করে যাবে সাদমান।

চারদিকে মেয়েরা আড়ি পেতে রয়েছে। উৎসুক হয়ে দেখে যাচ্ছে বিশাল বড় বৈঠকখানায় ঘটে যাওয়া ঘটনা।

সাদমান চৈতালিকে নিয়ে এগিয়ে গেলো দরজার দিকে। পেছনে একবার সাবধাণী নজরে তাকালো। বাঁকা হেসে সমুদ্রকে মৃ’ত্যুর আগাম ইঙ্গিত দিয়ে গেলো। সাদমানের ইঙ্গিতে শব্দ করে হাসলো সমুদ্র। আলতাফ খান বলে বসলেন,

-“এই মেয়েকে যেতে দিচ্ছো? আরে এখনই তো ডানা ছেঁ’টে চন্দ্রা দীঘির তৃষ্ণা মেটাতে পারো।”

আলতাফ খানের দিকে চোখ রাঙিয়ে তাকালো সমুদ্র। অতঃপর হেসে বলল
-” বাইরের পাশাপাশি ঘরে ও একজন প্রয়োজন। আর এরকম বোকাসোকা সুন্দরী দেখতে মেয়েগুলোই বউ হওয়ার যোগ্যতা রাখে।”

———————————————

শূন্য দৃষ্টিতে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে চৈতালি। “ঘুমিয়ে পড়ুন” বলে সাদমান নিজের ঘরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে পা বাড়ালো।

-“সরি! ক্ষমা করবেন আমায়।”

চৈতালির মুখ থেকে সরি শুনে পা থেমে গেলো সাদমানের। পেছন ঘুরে দেখলো চৈতালির শুষ্ক চোখ জোড়া জলে টইটম্বুর। নরম গাল জোড়া ভিজে উঠেছে নোনা ধারায়। অন্তঃকরণে ভীষণ জ্বালা অনুভব করলো সাদমান।

দাঁত দিয়ে ঠোঁট কামড়ে কান্না আটকানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে চৈতালি। মুখে হাত চেপে ফুঁপিয়ে ওঠা কন্ঠে বলল,

-“আমি জীবনে কারো ভালোবাসা পাইনি। একমাত্র মা ছাড়া কেউ আমায় ভালোবাসেনি। প্রথমদিকে জানতাম সবাই আমাকে ভালোবাসে। কিন্তু নাহ!আমি ভুল ছিলাম। বাবা, দাদা কেউ আমায় ভালোবাসেনি। দিনের পর দিন ঠকি’য়েছে আমাদের। বাবা আমার মাকে ঠকিয়ে খালাকে বিয়ে করে নিলো। দাদা নিজের রিসার্চের কাজে আমার মস্তিষ্ক ব্যবহার করলো। নিজ স্বার্থে একের পর এক মেডিসিন প্রয়োগ করলো আমার উপর। চুলে হাত দিয়ে দেখিয়ে বলল এই যে চুল, আমার চুল সব উঠে যাচ্ছে। সব কিছু পিছে ফেলে আমি ছুটেছি এক কৃষ্ণ মানবের পিছু। মানুষের ভাস্যমতে সে একজন বেয়া’দব, অ’ভদ্র, দুর্বৃত্ত ছেলে। যার কোনো ম্যানার নেই এমন অ’সভ্য ছেলেকে মন দিয়ে বসলাম আমি। কি আশ্চর্য! তার থেকে দূরে দূরে থেকেও তাকে ভুলতে পারিনি। বছর গড়িয়ে নতুন বছর এলো। সে পূরানো বছরের সাথে পিছু না হটে নতুন বছরে আমার মনে আরো জায়গা দখল করে নিলো। এবার আর নিজেকে লুকিয়ে রাখলাম না। কারণে-অকারণে নানা ছলেবলে তার সামনে ব্যক্ত করলাম আমার ভালোবাসা। কিন্তু আফসোস আমি অবহেলা ছাড়া কিছুই পাইনি। তার একটু ভালোবাসা পাওয়ার জন্য তৃষ্ণার্ত কাকের মতো চেয়ে থাকতাম। দিনশেষে মায়ের ভালোবাসা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হতো আমায়। যখন জানলাম আমার ভালোবাসার কঠিন প্রেমিক আমার একমাত্র ভালোবাসা পাওয়ার মানুষটিকে মে’রে ফেলেছে তখন আমি সত্যিই নিজেকে সামলাতে পারিনি। আমি নিজের চেয়ে ও আপনাকে বেশি ভালোবাসি কিন্তু আমার মায়ের চেয়ে বেশি নয়। আচ্ছা, আমার কি বেঁচে থাকা উচিত? কেউ তো রইলোনা আমার জন্য। আমাকে ভালোবাসার মতো কেউ রইলোনা। তাহলে আমি কার জন্য বাঁচবো?”

সাদমান চৈতালির অগোচরে চোখের কোনের পানিটুকু সন্তর্পণে মুছে নিলো। দৃঢ় কন্ঠে চৈতালিকে শুধালো,

-“নিজের জন্য বাঁচবেন। আপনাকে ভালোবাসার জন্য আপনি একাই যথেষ্ট। যে মানুষ নিজেকে ভালোবাসতে জানে তার অন্যের ভালোবাসা প্রয়োজন হয়না।”

তাচ্ছিল্য হাসলো চৈতালি। আজও লোকটির পাষণ্ড মনে তার জন্য একটু জায়গা হলোনা। একবার ও বললোনা ‘আমি আছি চৈতালি, আপনাকে ভালোবাসার জন্য আমি আছি। আপনি আমার জন্য বাঁচবেন’।

চৈতালিকে তাচ্ছিল্য হাসতে দেখে সাদমান দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল। শুকনো ঢোক গিলে নিজেকে কঠিন করে নিলো। আবেগ দিয়ে জীবন চলেনা। বাঁচতে হলে কঠিন হতে হবে। চৈতালির চোখে চোখ রেখে সাদমান বলল,

-“আপনার আগে আমাকে একজন প্রচন্ড রকম ভালোবাসতো। ঠিক আপনি যেমনটা বাসেন তেমনি। সে আমার ব্যাচমেট ছিলো। প্রথম দিকে আমি গা না দিলেও দিনে দিনে তার পাগলামো গুলো আমাকে বাধ্য করলো তাকে ভালোবাসতে।”
কথাটুকু শেষ করে থামলো সাদমান।

চৈতালির ভেতরটা ছ্যাৎ করে উঠলো। সাদমান অন্যকাউকে ভালোবাসে? সেজন্যই তাকে ভালোবাসতে পারেনি? চোখের কার্ণিশ বেয়ে দু’ফোটা অশ্রুর মৃ’ত্যু ঘটলো।

সাদমান আবার বলা শুরু করলো।

-” যখন আমাদের সম্পর্কটা গভীর হলো। একে অপরকে ছাড়া থাকার কথা ভাবতেও পারতাম না। তখনই বোধহয় উপর থেকে ডাক আসলো একজনকে চলে যেতে হবে। ঠিক হলো ও তাই। চলে গেলো রিংকি। একবছর যাবত মৃ’ত্যুর সাথে লড়াই করে বিদায় নিলো। জানেন তো চৈতালি? এতদিনে হয়তো মাটির নিচে আমার হাড় ও খুঁজে পাওয়া যেতোনা। ঐ যে রিংকি, তার কথাতো আমি ফেলতে পারিনা। সে আমাকে ওয়াদা করিয়ে নিলো তার চলে যাওয়ার পর যেনো আমি নিজের কোনো ক্ষতি না করি। তাই তো পারিনি। যদি আমার মনে রিংকি না থাকতো তবে আপনাকে ফিরিয়ে দেয়ার সাধ্য আমার কোনো কালেই হতো না। এমন ভালো সবাই বাসতে পারেনা। আমার পুরোটা হৃদয় জুড়ে যার স্থায়ী বসবাস তাকে অস্থায়ী করে কিভাবে আরেকজনকে ঠাঁই দিতাম? আপনার জন্য আমি একটা টান অনুভব করি। আমি জানি সেটা ভালোবাসা নয়। আমি তো রিংকি কে ভালোবাসি। হয়তো রিংকির মতো করে আমায় এতটা ভালোবাসেন বলেই টান অনুভব হচ্ছে।

আমি প্রথম দিকে চাইতাম আমার ভাইয়ের মতো এমন একজন গোছালো,সুপুরুষ আপনার হোক। যতটা পারা যায় আপনাকে অবহেলা করেছি। আমি চাইতাম আপনি আমার ভাইয়ের সাথে সুখী থাকুন। আমার মতো ছেলে এতটা ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্যতা রাখেনা। দেখুন না রিংকির ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্য ছিলাম না বলেই উপরওয়ালা তাকে নিয়ে গিয়েছে। এভাবে আরও একজনকে হারানোর মতো ক্ষমতা আমার মধ্যে নেই। যখন ভাইয়ের নোং’রা মানসিকতা সম্পর্কে জানলাম তখন বড্ড আফসোস হয়েছিলো কেনো আপনার জীবনটা নরক করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছিলাম? যাই হোক আপনাকে চট্রগ্রাম পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি আমি। কালই হয়তো তিতাসনগর ছাড়তে হবে আপনাকে। আপনার যাতে কোনো অসুবিধা না হয় সেই ব্যবস্থা করে রেখেছি আমি। আপনিতো পড়ালেখা জানা মানুষ। একটা ভালো চাকরি নিশ্চয়ই পেয়ে যাবেন। আর হ্যাঁ, সরি! আপনাকে ভালো না বাসতে পারার জন্য। আসি।”

সাদমান যেতে নিলেই চৈতালি সাদমানের হাত চেপে ধরে। আর নিজেকে আটকাতে পারলোনা। ভালোবাসার মানুষের মুখে অন্য কাউকে ভালোবাসার কথা শোনা যে কতট যন্ত্রনার সেটা আজ উপলব্ধি করছে চৈতালি। সে বুঝি এতটাই পোড়া কপালি? কারো ভালোবাসা বুঝি তার কপালে জুটলোনা। আফসোস! তার জীবনে জড়িতে কোনো পুরুষের ভালোবাসা সে পেলোনা। না বাবা, না দাদা আর না সাদমান। চৈতালি হু হু করে কেঁদে উঠলো। মাটিতে হাঁটু গেড়ে মাথানিচু করে নিলো।

-“আপনি আমাকে এভাবে দূরে ঠেলে দেবেন না। আপনার উপন্যাসের প্রতিটি পাতা জুড়ে রিংকি আছে। অন্তত শেষ পাতায় আমাকে ঠাঁই দিন। সমাপ্তিতে আপনার নামের পাশে আমার নামটা লিখুন। আমাকে বিয়ে করবেন? কথা দিচ্ছি আপনার আমাকে ভালোবাসতে হবেনা। আমিই নাহয় দূর থেকে আপনাকে ভালোবাসলাম। অন্তত আপনার শেষটায় আমি ছিলাম এটা ভেবেও শান্তিতে ম’র’তে পারবো। আপনি ও তো কাউকে ভালোবেসেছিলেন। তবে কেনো আমার যন্ত্রনা গুলো উপলব্ধি করতে পারছেন না? আপনার কাছে এতদিন আমার আবদার ছিলো আমাকে ভালোবাসার। আজ আমি তা ফিরিয়ে নিলাম। শুধু আপনার নামের পাশে আমার নামটা রাখার সুযোগ দিন। এরপর আপনি যা বলবেন আমি তাই করবো।”

সাদমানের পা জোড় জড়িয়ে ধরলো চৈতালি। সাদমানের আজ নিজেকে বড্ড অসহায় লাগছে। মস্তিষ্ক বলছে সামনে থাকা মেয়েটির কথা ভাবতে আর মন বলছে তুই শুধু রিংকি কে ভালোবাসিস। মন মস্তিষ্কের খেলায় আজ সে বড্ড ক্লান্ত। চিৎকার করে কাঁদতে পারলে বোধহয় ম’রা হৃদয়টা তাজা হয়ে উঠতো। চোখের পানি আড়াল করে চৈতালিকে পা ছাড়িয়ে উঠিয়ে চৈতালির ঘর ছেড়ে বেরিয়ে গেলো।
মাটিতে বসে হাউমাউ করে কেঁদে উঠলো চৈতালি। কারো চোখ,হৃদয় দুটোই কাঁদছে। কারো শুধু হৃদয় কাঁদছে, কিন্তু শব্দ হচ্ছেনা।
ফাহমিদা ভাবলেন মায়ের কথা মনে করেই বুঝি মেয়েটা এমন করুন সুরে কাঁদছে?

#চলবে………

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here