তার_শহরে পর্ব ১৯

0
511

#তার_শহরে

পার্ট : ১৯

লেখা : ইসরাত সিনহা

আমার অজানতেই উনার গালে আমার হাত রাখলাম , উনি উনার একটা হাত আমার হাতের উপর রাখলেন । তারপর নেশা লাগানো কন্ঠে বললেন,
-আমায় ভালোবাস আনি !


উনার এমন প্রশ্নে আমি বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গেলাম , আমি কল্পনাও করিনি উনি এখন এই প্রশ্ন করবেন ।
ভেবে পাচ্ছি না কি বলব ? উনার দিক থেকে চোখ সরিয়ে নিলাম ।
আদিল ভাইয়া আবার মাদক মিশানো গলায় বলে উঠলেন ,
-কি আনি ! আমায় ভালবাস না ? তাকাও আমার দিকে ।
আমি অনেককানি জড়তা নিয়ে , লজ্জা মাখা চোখে তাকালাম উনার দিকে ।
উনি আরো মোলায়েম সুরে বললেন ,
-আমার চোখের দিকে তাকিয়ে বলো আনি আমাকে ভালবাস কি না ?
আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলাম না , ঝাঁপিয়ে পড়লাম উনার সু’দীর্ঘ , প্রস্তত বুকে । উনিও উনার বাহুদ্বারা আমাকে শক্ত করে আবদ্ধ করে নিলেন ।
তারপর হাল্কা হেসে উনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন এরকম ঝাঁপিয়ে পরার কারণ কি ?
আদিল ভাইয়ার বুকে মুখ গুজে লজ্জা মিশ্রিত কন্ঠে বললাম ,
-আমি আপনার এই বুকের অধিকার কাউকে দিতে পারব না , এই বুকের মধ্যে আমি এক অনাবিল শান্তি খুজেঁ পাই যা আর কোথাও পাব না । আপনার সবুজ চোখের চাহনির সুন্দরর্য আমি আর কোনো মেয়ের সাথে ভাগ করতে পারব না । আর রইল আপনার ওই গোলাপি ঠোঁটের মুচকি হাসি , এই হাসিতে হাজার মেয়ে পাগল হবে । কিন্তু আমি চাই আপনার এই পাগল করা হাসিটা শুধু আমার জন্য হোক ।
আদিল ভাইয়া আমার বলা কথা গুলো শুনে মজা করার জন্য বললেন ,
-তা আনি তুমি তো দেকি আমার সব সুন্দরর্য একদম নিখুঁত ভাবে গিলে খেয়েছ ? কখন থেকে এইসব গিলে খাওয়া শুরু করলে বলো তো ?
উনার প্রশ্নে সত্যিই আমি লজ্জা পেলাম , নিজের উপরই রাগ হচ্ছে কেন যে আবেগি হয়ে কথা গুলো বলে দিলাম ? না বললে তো উনি জানতেও পারতেন না , দূর লজ্জায় এখন তাকাতেও পারছি না উনার দিকে । আবেগের ঠেলায় সব বলে দিলাম এখন তো বজ্জাতটা আমাকে প্রতি পদে পদে লজ্জা দিতে সর্বদা প্রস্তুত থাকবে ।
আমার এইসব আকাশ পাতাল চিন্তা ভাবনার মাঝে আদিল ভাইয়া বলে উঠলেন ,
-এই যে মহারাণী আমাকে কি মেরে ফেলবেন নাকি ? যেভাবে ধরে আছেন তাতে তো ধম আঁটকে আমার প্রাণ পাখি উড়াল দিবে । ছাড়ো আর লজ্জা পেতে হবে না , আমি আমার উত্তর পেয়ে গেছি ।
আমি লজ্জায় নতজানু হয়ে গেলাম উনার কথা শুনে , ধীরে ধীরে উনাকে ছেড়ে একটু দূরে এসে মাথা নিচের দিকে রেখে দাঁড়িয়ে রইলাম । পৃথিবীর সব লজ্জা যেন আমাকে ঝেঁকে বসেছে ।
আদিল ভাইয়া আমাকে মিষ্টি কন্ঠে বললেন ,
-আনি তোমার হাত টা কি ধরতে পারি ।
আমার কাছে মনে হলো উনার এই কথার মধ্যে মাদক মিশানো ছিল যা আমাকে পাগল করে দেয় , আমার কাঁপা কাঁপা হাত বারিয়ে দিলাম উনার দিকে । আমার এই কাঁপা কাঁপি দেখে উনি এক ঝটকায় আমার হাত উনার হাতে পুরে নিলেন । তারপর আলতো ভাবে আমার হাতের উপর পৃষ্ঠায় একটা চুমু এঁকে দিলেন । আমি আমার সভাব মতোই কেঁপে উঠলাম ।
আমার কেঁপে উঠা দেখে উনি হাসলেন , খানিক বাদেই গম্ভীর মুখ করে বললেন ,
-তুমি কি আমাকে বিশ্বাস করো আনি ?
আমি কিছু টা অবাক হলাম হঠাৎ উনার এমন প্রশ্নে ! উনি কেন এই প্রশ্ন করলেন বুঝতে পারছি না ।
আদিল ভাইয়া মুখ গম্ভীর রেখেই বললেন ,
-কি ব্যাপার আনি উত্তর দিচ্ছ না কেন ?
মনে মনে ভাবছি আজ উনার কি হয়েছে উনি এরকম উল্টা পাল্টা কথা বলে আমাকে অস্বস্তিতে ফেলছেন কেন ? উনার আজব আজব কথায় তো আমার রীতিমতো ভয় করছে , একটু অপ্রস্তুত গলায় বললাম ,
-হ্যাঁ , বিশ্বাস করি তো ।
আদিল ভাইয়ার গম্ভীর করা মুখকানা নিমিষেই উবে গেল , সেই মুখে ফুটে উঠল এক টুকরা তৃপ্তির হাসি । উনি হাসি হাসি মুখ রেখেই আমার দিকে আবার প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন ,
-তাহলে আনি আমি যা বলব তা মানতে নিশ্চয়ই তোমার কোনো আপত্তি থাকবে না ।
আমি কোনো উত্তর দিলাম না । আদিল ভাইয়া আমার আরেকটু কাছে এসে দাঁড়ালেন , তারপর মৃদু কন্ঠে বললেন ,
-আমি যা করবো এখন সেটা আমার আর তোমার ভালোর জন্যই করব । তুমি শুধু আমার পাশে থাকবে কথা দাও আনি ?
জিজ্ঞাসা দৃষ্টিতে তাকালাম উনার দিকে , উনি কি বলতে চাইছেন বুঝতে পারছি না ।
আমার তাকানো উনি বুঝতে পেরে শান্ত গলায় বললেন ,
-আমি তোমার কোনো প্রশ্নের এখন কোনো উত্তর দিতে পারব না , তবে কিছু মানুষের নোংরা কাজের মোক্ষম জবাব দেবও আজকে । আমার সাথে রুমের বাহিরে আসো , বলেই উনি আমার হাত ধরে বাহিরে যাওয়ার জন্য দরজা খুললেন ।
এক অজানা ভয় আমাকে গ্রাস করছে , আদিল ভাইয়ার কি হয়েছে , উনি কার নোংরা কাজের জবাব দিতে চাইছেন ? আমার মস্তিষ্ক ফাঁকা লাগছে , ভয়ে মুখ রক্ত শূন্য হয়ে গেল ।
আমি আর আদিল ভাইয়া যখন বাহিরে আসলাম তখন মামিমা আমাকে জড়িয়ে ধরলেন , তারপর ধরা গলায় বললেন ,
-তুমি ঠিক আছো মামনি , আদিল তোমাকে কোনো শাস্তি দেয়নি তো ?
মামিমার এমন কথায় আমার হাসি পেলও , হাসি আঁটকে রেখে বললাম ,
-জি না মামিমা উনি আমাকে শাস্তি দেননি , বিড়বিড় করে বললাম আমাকে আদর করেছেন ।
মামিমা আমার কথা হয়তো স্পষ্ট বুঝেনি , তাই সন্দিহান গলায় বলে উঠলেন ,
-শেষের কথা গুলো কি বললে শুনতে পাইনি , কিছু কি বলে ছিলে ?
আমি হাসি হাসি মুখ করে বললাম ,
-জি না মামিমা কিছু বলিনি । একথা বলে আদিল ভাইয়ার দিকে তাকালাম , তাকিয়ে দেকি উনি চোখ লাল করে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন । উনার এমন চাহনি দেখে একটা শুকনো ঢুক গিললাম , মনে মনে ভাবছি বজ্জাত টা কি আমার কথা শুনে ফেললো ?
এরমধ্যে মামা আদিল ভাইয়ার উদ্দেশ্য বললেন ,
-আদিল তোমার কি হয়েছিল যার জন্য এমন ভংকর ভাবে রেগে গিয়ে ছিলে ? আনিতা কি কিছু করেছে ?
আদিল জেনি আর সাহিলের দিকে তাকিয়ে বলল ,
-না , পাপা আনি কিছু করেনি , করেছে তো কিছু নোংরা মনের মানুষ । তাদের মনে সব সময় নোংরামি লেগেই থাকে , কাকে দিয়ে কাকে ফাঁসানো যায় এই চিন্তায় রাতে মনে হয় তাদের ভাল ঘুম হয় না ?
আদিলের বলা কথায় সাহিল জেনি দুজনের ভয়ে মুখ রক্ত শূন্য হয়ে গেছে ।
তাদের দুজনের মনেই একি প্রশ্ন আদিল কি তাহলে তাদের কারসাজি ধরে ফেললো ? জেনি ভয়ে শুকনো গলায় কয়েকটা ফাঁকা ঢুক গিলল , কারণ প্ল্যান টা তারই ছিল ।
জেনির এভাবে ভয়ে ঢুক গিলা আদিলের চোখ এড়ায়নি , আদিল জেনির দিকে রক্তচুক্ষু নিয়ে তাকালো । জেনি আরো ভয়ে জড়সড় হয়ে দাঁড়িয়ে রইল ।
আদিল গম্ভীর কণ্ঠে তার বাবা-মা কে বলল ,
-মম-পাপা আমি আনি কে বিয়ে করতে চাই ।
আদিল ভাইয়ার এরকম হুটহাট বিয়ের কথা বলায় আমি যেন আাকাশ থেকে পড়লাম ।
সাহিল জেনি এক জন উপর জনের দিকে অবাক চোখে তাকাল !
তারা তো এমন প্ল্যান করেনি , সাহিল জেনি ভেবে ছিল আদিল আনিতা কে ভুল বুঝে দূরে ঠেলে দিবে । আর তারা সুযোগে সৎ ব্যবহার করবে , কিন্তু হলো তার উল্টো ।
জনাব আলী মেহবুব বললেন ,
-বিয়ে করবে ভালো কথা আদিল , এই বিষয়ে কি আনিতার মত আছে ? আর কখন বিয়ে করতে চাও ?
আদিল গম্ভীর মুখে বলল ,
-পাপা বিয়েটা আমি আজ করতে চাই , আর এখনি।
মিসেস এনজেলা যেন এমনটাই চেয়ে ছিলেন তিনি খুশি হয়ে বলে উঠলেন ,
-আচ্ছা আগে মামনির মতামত কি জানতে চাই ?
বলো মামনি তুমি কি আদিল কে বিয়ে করতে চাও ?
আমি কি বলব এই মূহুর্তে , আর উনি কি আগে আমাকে এটাই বুঝাতে চেয়ে ছিলেন ? কানাডা আসার মূল কারণ আমার পড়া লেখা , আর বাবা -মার অনুপস্থিতিতে বিয়ে করা টা কি আমার উচিত হবে ? আমার কি করা উচিত আমি বুঝতে পারছি না , আদিল ভাইয়া কে ভালবেসে ফেলেছি উনাকে ছেড়ে থাকা আমার পক্ষে সম্ভব না । কিন্তু আমার বাবা-মা ?
আদিল ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে দেকি উনি আমার দিকে কেমন মায়াভরা চোখে চেয়ে আছেন ।
উনার এমন তাকানো আমার হৃদয়ে তোলপাড় সৃষ্টি করে দিয়েছে , উনাকে হারানোর ভয়ও হচ্ছে ।
মামিমার দিকে তাকিয়ে বললাম ,
-মামিমা আমার বাবা -মা কে ছাড়া বিয়েটা কিভাবে করি বলুন তো ? আর আমার পড়ালেখা ও অনেক বাকি আছে , আমার পড়ালেখা আমার বাবা-মায়ের সপ্ন ছিল ।
জনাব আলী মেহবুব জোর গলায় বললেন ,
-আনিতা তুমি একদম চিন্তা করো তোমার মা -বাবা কে রাজি করানোর দায়িত্ব আমার আর তোমার মামিমার , তুমি কি চাও সেটা বলো ?
আদিল এরমাঝে আনিতাকে বলল ,
-আনি তুমি পড়ালেখা চালিয়ে যাবে এতে আমার কোনো প্রবলেম নেই , তোমার পড়ার সব খরচও আমি দেব । কারণ আমি চাই না আমার ওয়াইফের পড়ালেখার খরচ তার ফ্যামেলি চালাক । যদিও তোমার ফ্যামেলি তোমার খরচ অনায়েসে চালিয়ে যেতে পারবেন , কিন্তু আমার কাছে সেটা বেমানান লাগে ।
আনিতার চোখে মুখে তৃপ্তির হাসি ফুটে উঠল । সে তো এমন একজন জীবন সঙ্গিই চায় , যে থাকে বুঝবে তার চাওয়া পাওয়া কে মূল্যায়ন করবে । তার সব কাজ কে সম্মান করবে , সে বুঝে গেছে আদিলই সেই ব্যক্তি । যে সব সময় তার পাশে থাকবে।
মিসেস এনজেলা ও তাল মিলিয়ে বললেন ,
-হ্যাঁ , হ্যাঁ , তোমার ওয়াইফের দায়িত্ব তুমিই বহন করবে আদিল ।
আদিল তার পাপার দিকে তাকিয়ে বলল ,
-পাপা একটা কথা বলার ছিল ।
জনাব আলী মেহবুব বললেন ,
-বলো আদিল কি বলতে চাও ?
আদিল গম্ভীর গলায় বলল ,
-আমার আর আনির বিয়ের কথা এখন ফুফি কে আংকেল কে জানানোর দরকার নেই । একমাস পরে আমাদের আবার অনুষ্ঠান করে বিয়ে হবে তখন তাদের জানাবো ।
আমি গুমরা মুখ করে রইলাম এ আবার কেমন কথা বাবা মাকে পরে জানাবেন কেন ?
মিসেস এনজেলা আদিলের উদ্দেশ্য বলে উঠলেন ,
-তাহলে কি এখন পারিবারিক ভাবেই বিয়ে করে নিতে চাও ? আর এরকম হুটহাট বিয়েই বা করার কারণ কি আদিল ?
আদিল মিসেস এনজেলার প্রশ্নে শান্ত ভাবে বলল ,
-মম এর কারণ অন্যদিন বলব প্লিজ এখন না , আমি যা করছি তা আমরা দুজনের ভালোর জন্যই করছি ।
মিসেস এনজেলা, জনাব আলী মেহবুব তারা আদিলের ডিসিশন এর উপর কিছুই বললেন না । তাদের জানা আছে আদিল কোনো ভুল কাজ করবে না , যা করছে হয়তো তার পিছনে বড় কোনো রিজন আছে ।
সাহিল মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে , আর আনিতা কে তার পাওয়া হবে না । জেনির উপর সাহিল মনে মনে অনেক টা কেঁপে গেল ।
-সিস এর এমন বুদ্ধিহীন কাজের জন্য আনিতা কে পাওয়া হলো না ।
অন্যদিকে জেনি রাগে ফোলছে সে কিছুতেই মানতে পারছে না আনিতা আদিলের বউ হয়ে যাবে ?
নিজের উপরও তার বিষণ রাগ হচ্ছে জেনির , কেন এমন বোকামি করতে গেল ?
-যদি এখন এরকমটা না করতাম তাহলে আদিল এখন এই মেয়েকে বিয়ে করতো না । দূর নিজেই নিজের জালে ফেঁসে গেলাম । না , না জেনি তুই এভাবে হেরে যেতে পারিস না , আই হ্যাভ টু ডু সামথিং ! বলেই জেনি তার স্থান ত্যাগ করল ।
সাহিলও ভারাক্রান্ত হৃদয় নিয়ে চলে গেল ।
আনিতা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সব কিছুই লক্ষ্য করছিল , সব কিছু বুঝতে না পারলেও অল্প কিছু আন্দাজ করেছে ।
আদিল ভাইয়া এমন করার পেছনে নিশ্চিত বড় কোনো কারণ আছে , না হলে এভাবে কেউ বিয়ে করতে চায় ?


রাত ১২ বেজে এক মিনিট , আনিতা বধু বেশে বসে আছে আদিলের রুমে । আদিলের অপেক্ষায় ।
কয়েক ঘন্টা আগে ধর্ম মতো কাজি ডেকে তাদের বিয়ে পড়ানো হয়েছে । বিয়ের সময় আদিলের দু তিনজন ঘনিষ্ট বন্ধু কে আদিল ডাকে , সেখানে রাদিফ ও আসে । তার বন্ধুরা অবাক হয়ে যায় আদিল কে বর সাজে দেখে , রাদিফ অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে ,
-কি ব্যাপার আদিল তুই এভাবে বরের সাজসেজে আছিস কেন ?
আদিল মুচকি হেসে বলে আমার বিয়ে তে আমি বর সাজে সাজব না তো তুই সাজবি না কি ?
রাদিফ আরো অবাক হওয়া কন্ঠে বলল ,
-তর বিয়ে মানে কি বলছিস কার সাথে ?
আদিল রাদিফ কে বলে ,
-এতো উতলা হয়ে পরছিস কেন রাদিফ , তর ভাবি নিচে আসলে দেখতে পারবি এখন গিয়ে বস ।
রাদিফ আর বাকিরাও সোফায় বসে রইল । খানিক পর নেহাল আর মিসেস এনজেলা সিঁড়ি দিয়ে আনিতা নিয়ে নিচে নামলেন । আনিতা কে দেখামাত্রই আদিলের হার্টবিট দ্রুত গতিতে ছুটছে , আনিতা কে অসম্ভব সুন্দর লাগছে । হোয়াইট কালারের একটা লেহেঙ্গা পড়েছে আনিতা , তারমধ্যে গোল্ডেন কালারের স্টোন এর কাজ করা ।আদিলের হোয়াইট কালার পছন্দ বলেই হোয়াইট কালারের লেহেঙ্গা এনেছে তার মায়াকুমারীর জন্য । আনিতার মুখে তেমন কোনো সাজ নেই , হাল্কা মেকাপ করেছে, চোখে গাড় করে কাজল, ঠোঁটে রেড কালার লিপস্টিক এতেই যেন তাকে অপ্সরীর মতো দেখাচ্ছে । দুই হাত ভর্তি হোয়াইট কালার আর গোল্ডেন কালার চুড়ি । আদিলের এক ধ্যানে তাকানো দেখে বাকিরাও ওই দিকে তাকালও , সবাই ই হা করে তাকিয়ে আছে আনিতার দিকে ।
আদিল তার বন্ধুদের ধমক দিয়ে বলল ,
-আমার বউয়ের দিকে এভাবে নজর দিস না ও তদের ভাবি , সম্মানের নজরে দেখবি ।
আদিলের কথায় সবাই লজ্জা পেল , তারা তাৎক্ষণিক ভাবে চোখ সরিয়ে নিল । রাদিফ নিচের দিকে তাকিয়ে ভাবছে ,
-আদিল শেষমেশ আনিতাকেই বিয়ে করে নিল ? আচ্ছা বিয়ে যখন করছে তাহলে পারিবারিক ভাবে কেন ?
আনিতা কে আদিলের পাশে বসানো হলো , লজ্জায় আনিতা আদিলের দিকে তাকাতে পর্যন্ত পারছে না ।
আদিল একটা হোয়াইট কালারের পাঞ্জাবি পড়েছে আনিতার সাথে মেচ করে , তাকেও কোনো অংশে কম লাগছে না আনিতার থেকে । আদিল সবার আড়ালে ফিসফিস করে আনিতা কে বলল ,
-আনি আজ তোমায় খুব সুন্দর দেখাচ্ছে , ইচ্ছে করছে খেয়ে ফেলি । বলেই এক চোখ টিপ মারল আনিতার দিকে তাকিয়ে ।
আনিতা আদিলের কথায় লজ্জায় কুঁকড়ে যাচ্ছে ।
সাহিল আর জেনি সেখানে উপস্থিত হলো না , তারা নানা কাজের এক্সকিউজ দেখিয়ে বাহিরে চলে গেল। ব্যাপারটা মিসেস এনজেলা, জনাব আলী মেহবুব এর কটকা লাগল ।
তিন কবুল বলে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হলো, কবুল বলার সময় আনিতার চোখ বেয়ে কয়েক দন্ড জল গড়িয়ে পরল । শুধু আদিল দেখলো আনিতার চোখের জল, আর কারো চোখে পরল না । আনিতা হাতের উল্টা পিঠ দিয়ে মুছে নিল ।
আদিলের বন্ধুরা জানতে চেয়ে ছিল এরকম হুটহাট বিয়ে করার কারণ কি, আদিল সে বিষয় এড়িয়ে গেছে খুব চালাকির সাথে । সবাই কে ডিনার করিয়ে এগিয়ে দিয়ে আসতে আসতে আদিলের রাত বারোটা বেজে গেছে।
তার বন্ধুদের বিদায় করে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠছে আদিল , তার হৃৎপিণ্ড ক্রমাগত বেড়েই চলেছে ।
তার আনি তার জন্য অপেক্ষা করে আছে ভাবতেই কেমন একটা সুখ সুখ অনুভূতি হচ্ছে আদিলের ।

আদিল যখনি তার রুমে ঢুকতে যাবে তখনি জেনি এসে আদিলের হাত ধরে আঁটকে দেয় । (চলবে)

/

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here