তার_শহরে পর্ব ২৮

0
485

#তার_শহরে

পার্ট : ২৮

লেখা : ইসরাত সিনহা

হঠাৎ সাহিল কে তাদের রুমে দেখে আনিতা ভ্রু কুঁচকে তাকাল সাহিলের দিকে ।

সাহিল আনিতা কে দেখেই বলল ,
-আনিতা তোমাকে একটা কথা বলতে এসেছিলাম ।
আদিল তাদের রুমে সাহিলের কন্ঠ শুনতে পেয়ে দরজার কাছে দাঁড়িয়ে পড়ল ।
আনিতা সাহিলের দিকে দু পা এগিয়ে এসে স্বাভিক হয়ে বলল ,
-হ্যাঁ , সাহিল ভাইয়া বলুন । কি বলতে চান ?
সাহিল হাল্কা কেশে গলা পরিষ্কার করে বলে উঠল ,
-আনিতা আমি আজ একটা রেস্টুরেন্টে গিয়েছিলাম , তো সেখানে একটা ছেলে তোমার কথা জিজ্ঞেস করল ।
আনিতা ভ্রু কুঁচকে চিন্তিত ভাবে বলল ,
-কি জিজ্ঞেস করেছে ভাইয়া ? ছেলেটার নাম কি ?
-তেমন কিছু জিজ্ঞেস করেনি , শুধু বলল আজ তুমি ভার্সিটি কেন যাওনি ? আমি নাম জিজ্ঞেস করিনি তো ।
আনিতা ভাবছে ছেলেটা কে হতে পারে ? খানিক বাদে আনিতা সাহিলের উদ্দেশ্য বলল ,
-ভাইয়া ছেলেটা দেখতে কি রকম ছিল ? ছেলেটার বর্ণনা দিতে পারবে ?
সাহিল চোখ বন্ধ করে ছেলেটার চেহারা মনে করার চেষ্টা করল , কিছু সময় পর চোখ খুলে তাকিয়ে বলল ,
-হুম , পারব । ছেলেটার চোখের মনি ব্রাউন কালার , চুলের কালার ও ব্রাউন এবং ছেলেটা খুব ফর্সা ছিল ।
আনিতা মৃদু হেসে তার ফোন হাতে নিল , তারপর গ্যালারি থেকে একটা ফটো বের করে সাহিল কে বলল ,
-দেখতো সাহিল ভাইয়া এই ছেলে কি সেই ছেলে ?
সাহিল অবাক ভঙ্গিতে বলে উঠল ,
-হ্যাঁ , হ্যাঁ আনিতা এই ছেলেই সেই রেস্টুরেন্টের ছেলে ! তুমি ওকে চিনো কি ভাবে আনিতা ? আর আমাকেই বা চিনে কি করে ওই ছেলেটা ?
আনিতা মুচকি হেসে বলল ,
-ভাইয়া শুনো ও আমার ভার্সিটির ফ্রেন্ড ওর নাম চার্লস । ওর পাশে যে মেয়েটা দেখছো চার্লস এর বোন চার্লি। আর আমি একদিন তোমাদের সবার ফটো দেখিয়ে ছিলাম চার্লস কে তাই হয়তো এখন দেখে চিনে ফেলেছে ।
সাহিল হেসে বলল ,
-ওহ্ , আনিতা তাই বলো । আমি তো রীতিমতো চিন্তায় পড়ে গেছিলাম । যে ছেলেটা কে আমাকেও চিনে আবার আনিতা কে ও চিনে ? সব চিন্তা বাদ দিয়ে তোমাকে জিজ্ঞেস করতে আসলাম , ভাবলাম তোমার পরিচিত কেউ হবে হয়তো ।
আদিল রুমে প্রবেশ করতেই সাহিল আনিতার দিকে তাকিয়ে বলল ,
-আনিতা আমি আসি তাহলে , আমার কাজ আছে।
আনিতা আদিল কে দেখে খানিক ভয় পেল , যদি আদিল রাগ করে সাহিল কে রুমে দেখে ?
আনিতা ঠোঁটে জোর পূর্বক হাসির রেখা ফুটিয়ে তুলে বলল ,
-ঠিক আছে ভাইয়া যান ।
আদিল বুঝতে পারছে আনিতা তাকে ভয় পাচ্ছে , আনিতা জোর করে ঠোঁটে হাসি আনার ব্যাপার টা আদিল বেশ বুঝতে পারল ।
সাহিল দ্রুত রুম থেকে চলে গেল ।
আদিল আনিতার সঙ্গে কোনো কথা না বলে ফ্রেশ হওয়ার জন্য ওয়াশরুমে ঢুকে গেল ।
আনিতা ভয় পাচ্ছে , মনে মনে বলে উঠল ,
-যে ভয়টা পাচ্ছিলাম তবে কি সেটাই হলো , উনি কি রাগ করলেন সাহিল ভাইয়ার সাথে কথা বলেছি বলে ?
আনিতা তোয়ালে হাতে নিয়ে বেডে বসে পড়ল ।
আনিতা ঠিক বুঝতে পারছে না আদিল রাগ করলো কি না ?
আনিতা আপন মনেই বলল ,
-দূর এই লোকটা কে আমি জীবনেও বুঝতে পারব না । কখন রাগ করে কখন মিজাজ ঠিক থাকে কিচ্ছু বুঝা যায় না ।
মম-পাপার রুমে তো গেলেন উনাদের সাথে কি কথা হলো সেটাও বললেন না । সোজা ওয়াশরুমে চলে গেলেন ।
বাবা-মা কি রাজি হবেন ?
আনিতার চোখ দিয়ে আবার কয়েক ফুটো জল গড়িয়ে পড়ল তার গাল বেয়ে ।
এসব ভাবলে আনিতার বুক ফেটে কান্না আসে , সে আদিল কে ছাড়া আর কাউকে ভাবতে পারে না ।
আনিতা ঠায় বসে আছে বেডে , অশ্রুসিক্ত নয়নে তাকিয়ে আছে দেওয়ালে ঝুলানো আদিলের ফটোর দিকে ।
২০ মিনিট পর আদিল ফ্রেশ হয়ে বাহিরে এসে দেখলো আনিতা তার ফটোর দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ।
আনিতার চোখের কোণে জল চিকচিক করছে ।
আদিল রাগে গর্জে উঠে বলল ,
-আনি তোমাকে না বাড়ন করেছি না কাঁদতে , তারপরও তুমি কাঁদছো কেন ?
আনিতা দ্রুত হাত দিয়ে চোখ মুছে থতমত গলায় বলল ,
-ক কই না তো , আমি কাঁদছি না ।
আদিল রাগি কন্ঠে বলে উঠল ,
-আমার চোখ ফাঁকি দেওয়া অতো সোজা না মিসেস মেহবুব ।
তুৃমি ভাবছো আমি হয়তো রাগ করেছি সাহিলের সাথে কথা বলায় ? যদি এরকম কিছু ভেবে থাকো তবে ভুল , আমি তোমাদের সব কথোপকথন শুনেছি দরজায় দাঁড়িয়ে ।
আর যদি না ও শুনতাম তোমরা দুজনে কি কথা বলছিলে তাও রাগ করতাম না । কারণ আমার বউ কে আমি ভালো করেই জানি ।
আনিতা মৃদু হাসলো আদিলের কথায় ।
আদিল আনিতার আরেকটু কাছে এসে বলল ,
-আর আনি তোমার বরের মাইন্ড এতো নোংরা নয় বুঝলে ।
আনিতা মুখ গোমড়া করে বলল ,
-তাহলে রুমে ঢুকে আপনি কথা বলেননি কেন আমার সাথে ?
আদিল হেসে বলল ,
-ওহ্ এই ব্যাপার । ভাবলাম আগে ফ্রেশ হয়ে নেই তারপর কথা বলব ।
আনিতা ভয়ে ভয়ে বলল ,
-মম-পাপা কি বললেন ?
আদিল টি-শার্ট গায়ে পরিধান করতে করতে বলে উঠল ,
-বলেছেন তো অনেক কিছু ।
আনিতা অধর্য্য গলায় বলে উঠল ,
-আরে বলুন না কি বলেছেন ? আমার খুব ভয় হচ্ছে মা-বাবা যদি বেঁকে বসেন ?
আদিল বাঁকা হাসল , হেসে বলল ,
-এতো ভয় পাও কেন মিসেস মেহবুব ? আমার উপর ভরসা করতে পারো না ?
আনিতা আদিলের এক হাত ধরে বলল ,
-আমি আপনাকে ভরসা করি বলেই তো আপনাকে বিয়ে করতে দ্বিমত করিনি । এবার বলুন না মম-পাপার কি কথা হলো মা-বাবার সঙ্গে ?
আদিল আনিতা কে বেডে বসিয়ে সে আনিতার কোলে মাথা রাখল ।
আস্তে আস্তে আনিতার পেটে মুখ গুজল ।
আনিতা কেঁপে উঠল আদিলের স্পর্শ পেয়ে ,
আদিল তার দু হাত দিয়ে আনিতার কোমড় জরিয়ে ধরে বলল ,
-ফুফি এবং আংকেল দুজনই রাজি হয়েছেন মিসেস মেহবুব ।
আনিতা খুশিতে গদগদ হয়ে বলল ,
-কি , সত্যি ? মা-বাবা রাজি হয়েছেন ? আমি বিশ্বাস করতে পারছি না ?
আদিল আনিতার পেটে মুখ গুজে রেখেই বলল ,
-উনারা তো আগে থেকেই আমাকে পছন্দ করতেন , তোমার বর হিসাবে । একটু রাগ করেছেন না জানিয়ে বিয়ে করেছি বলে , কিন্তু পাপা সব কিছু বুঝিয়ে বলেছেন ।
আনিতা চিন্তিত ভাবে বলল ,
-তাহলে মা আমার সাথে রুড বিহেভ করলেন কেন ?
আদিল মুচকি হেসে ধীর কন্ঠে বলল ,
-পাগলি তোমাকে ভয় দেখানোর জন্য ফুফি এরকম কথা বলেছেন , তুমি তো বোকা তাই এতো সহজে সব বুঝোনা ।
আনিতা আর কিছু বলতে পারল আনিতার ফোনে কল আসল , আনিতা হাত বারিয়ে বালিশের পাশ থেকে ফোন নিয়ে দেখল তার মা ফোন করেছেন ।
আদিল আনিতা কে বলল ,
-আনি কল রিসিভ করছো না কেন , কে কল করেছে ?
আনিতা আদিলের দিকে তাকিয়ে বলল ,
-মা কল করেছেন ।
-কল রিসিভ করো দেখো ফুফি কেন কল করছেন ?
আনিতা কল রিসিভ করে আস্তে করে বলল ,
-হ্যালো , মা, আই এম সরি । আমাকে মাফ করে দাও ।
মিসেস আলেয়া হেসে বললেন ,
-দূর বোকা মেয়ে সরি বলতে হবে না , বরং আমি সরি তর সাথে আগে রুড বিহেভ করেছি বলে ।
আসলে তকে ভয় দেখানোর জন্য এরকম বলেছিলাম । কষ্ট পেয়েছিস মায়ের কথায় ?
আনিতা হেসে আনন্দ ভরা গলায় বলল ,
-না , মা আমি কষ্ট পাইনি । তোমরা কেমন আছো মা ?
এদিকে আদিল বার বার তার কোঁচা কোঁচা দাঁড়ি দিয়ে আনিতার পেটে সুড়সুড়ি দিচ্ছে , আর মিটিমিটি হাসছে ।
আনিতা কেঁপে উঠছে , আর এক হাত দিয়ে আদিল কে সরানোর বৃথা চেষ্টা করছে ।
আদিল আরো শক্ত করে আনিতার কোমড় জড়িয়ে ধরল ।
আনিতার ফ্রীজড হয়ে বসে রইল , আনিতা বুঝে গেছে আদিল তাকে নিজ থেকে না ছাড়লে সে ছুটতে পারবে না ।
মিসেস আলেয়া শান্ত কন্ঠে বললেন ,
-আমরা ভালো আছি মা । আচ্ছা তকে একটা কথা জিজ্ঞেস করার জন্য কল দিলাম ।
আনিতা আস্তে করে বলল ,
-হ্যাঁ , মা বলো ।
মিসেস আলেয়া খানিক হেসে বললেন ,
-তোমরা তোমাদের বিয়ের অনুষ্ঠান কোথায় করতে চাও , বাংলাদেশে না কি কানাডা ?
তোমরা দুজনে যেখানে চাইবে সেখানেই আমরা রাজি আছি মা ।
আনিতা তার মায়ের কথায় কিছুক্ষণ চুপ করে থাকল , খানিক পর লজ্জা মিশ্রিত কন্ঠে বলল ,
-মা আমি #তার_শহরে অনুষ্ঠান করে আবার বিয়ে করতে চাই , তোমাদের সবার দোয়া নিয়ে ।
মিসেস আলেয়া মেয়ের কথায় মুচকি হেসে বলে উঠলেন ,
-ঠিক আছে আনিতা আমরা সবাই কানাডায় আসব । এখন রাখি মা তোমার বাবার সাথে কথা বলে সব কিছু রেডি করার ব্যবস্থা করতে হবে ।
মিসেস আলেয়া ফোন কাটতেই আনিতা আদিলের দিকে চোখ পাকিয়ে বলে উঠল ,
-মি.আদিল মেহবুব আপনি বারি দুষ্ট হচ্ছেন দিন দিন ।
আদিল ঘোর লাগানো গলায় বলল ,
-বউ এরকম বলছো কেন ? এখানে আমাদের বেবি থাকবে না আনি ?
আনিতা লজ্জা পেয়ে কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলে উঠল ,
-উঠুন তো ।
আদিল বাঁকা হেসে বলল ,
-আমাকে বাসায় ডেকে আনলে কেন মিসেস মেহবুব ? আমি অফিসে থাকলে তো আর এই জ্বালা সহ্য করতে হতো না ? নিজে যখন ডেকে এনেছো তাহলে এইটুকু তো সহ্য করো বউ ।
আনিতা আদিলের গায়ে আস্তে করে কিল দিয়ে বলল ,
– আপনার মুখে তো দেখি কিচ্ছু আঁটকায় না ? এতো র্নিলজ্জ কেন আপনি ?
আদিল আনিতা কে জরিয়ে ধরে শয়তানি হাসি দিয়ে বলে ,
-আমার বউ কে আমি লজ্জা পাবো কেন ? আমার এতো লজ্জা নেই বাবা তোমার মতো ।
হঠাৎ দরজায় নক পড়ায় আদিল আনিতার কোল থেকে মাথা তুলে দরজার দিকে তাকিয়ে বলল ,
-কে ? ভেতরে আসো ।
মিসেস এনজেলা হাসি হাসি মুখে রুমে প্রবেশ করে বললেন ,
-মামনি তোমার মা ফোন করে জানিয়েছে তুমি নাকি কানাডায় অনুষ্ঠান করতে চাও ?
আনিতা কিছু বলার আগে আদিল বলল ,
-হ্যাঁ , মম । আর আমিও চাই কানাডায় অনুষ্ঠান হোক । পরে একসময় আমরা বাংলাদেশ থেকে ঘুরে আসবনে ।
মিসেস এনজেলা হেসে বললেন ,
-ঠিক আছে , আমি আর তোমার পাপা বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করে আনিতার বাবা-মা কে জানিয়ে দেই ?
আদিল হেসে মাথা নিচু করে বলল ,
-মম তুমি আর পাপা যা ভালো মনে করো তাই করো, আমাদের কোনো প্রবলেম নেই ।
মিসেস এনজেলা চলে গেলেন উনার রুমের উদ্দেশ্য।
আদিল আনিতার দিকে তাকিয়ে বলল ,
-তোমার মত কি আনি ?
আনিতা মৃদু হেসে বলল ,
-আপনার মতই তো আমার মত । আমার এক্সট্রা কোনা মত নেই এই ব্যাপারে ।
আদিল হেসে আনিতা কে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরল ।

১৫ দিন পর….
আনিতার বাবা -মা আর তার ছোট বোন আনিশা কানাডায় এসেছে দু দিন হলো ।
আজ তাদের বিয়ের শপিং করতে যাচ্ছে , সাহিল , নেহাল, আনিশা , আদিল ও আনিতা ।
দু’দিন পরই আদিল, আনিতার বিয়ে ।
সবাই মিলে কানাডার সব চাইতে বড় শপিং মলে গেল বিয়ের কেনাকাটা করার জন্য ।
আদিল সবার উদ্দেশ্য বলল ,
-আগে আনির কনে সাজার জন্য যা যা প্রয়োজন সব কিনব । পরে তোমাদের যার যা লাগবে তা নিবে।
আনিশা আনিতার দিকে তাকিয়ে দুষ্টমি হেসে ফিসফিসিয়ে বলল ,
-আপু ভাইয়া দেখি আগে বউয়ের জিনিস কেনার জন্য কেমন উতলা হয়ে উঠেছে ?
আনিতা আনিশার মাথায় আস্তে করে থাপ্পড় দিয়ে বলল ,
-আনিশা তুই বেশি পেকে গেছিস , দ্বারা বাবা-মা কে বলে তর ব্যবস্থা করতে হবে । ফাজিল কোথাকার ?
আনিশা হেসে বলল ,
-ব্যবস্থা করও না কে না করেছে ?
আনিতা চোখ রাঙিয়ে বলে উঠল ,
-কি বললি আনিশা ?
আনিশা ইনোসেন্ট ভাব নিয়ে বলল ,
-কই কিছু বলিনি তো আপু । বলেই নেহালের পাশে দাঁড়িয়ে পড়ল । আনিতা হেসে ফেললো আনিশার ভয় পাওয়া দেখে ।
আদিল আনিতার কানের কাছে মুখ এনে বলল ,
-বউ এখন ঝগড়া করার দরকার নেই , বাসায় গিয়ে আনিশা কে আচ্ছা মতো দুলাই দিয় ।
আনিতা চাপা হেসে বলল ,
-হুম , ভেতরে চলুন ।
নেহাল আনিশার দিকে তাকিয়ে হাল্কা হেসে বলল ,
-আনিশা তুমি দেখছি খুব দুষ্ট প্রকৃতির , প্রথমে তোমাকে দেখার পর যেমনটা মনে করে ছিলাম তুমি তেমনটা না ।
আনিশা ভ্রু নাচিয়ে নেহালের দিকে তাকিয়ে বলল ,
-তা মি.নেহাল আমাকে কেমন ভেবেছিলে প্রথমে ?
নেহাল মাথা চুলকাতে চুলকাতে আস্তে করে বলল ,
-ভেবে ছিলাম তুমি আর আপু একি রকম শান্ত শিষ্ট কিন্তু না তুমি খুব চটপটে ।একদম আপুর বিপরীত।
আনিশা নেহালের দিকে তাকিয়ে কড়া কন্ঠে বলল ,
-আমি আর আপু পোশাকে-আশাকে একরকম হলেও আমরা ভিন্ন স্বভাবের । দেখতে আমি আপুর মতো ঠিকই কিন্তু অতো শান্ত বা ভদ্র কোনোটাই নয়।
আমি আনিশা আহমেদ, আনিতা আহমেদ না, মাইন্ড ইট । নেহাল মুচকি মুচকি হাসছে আনিশার কথা বলার ধরণ দেখে । নেহাল মনে মনে বলল ,
-আনিশার রাগ টা এখনও কমেনি বোধহয় , গতকাল ওর হাত থেকে চিপস কেড়ে খেয়েছি বলে।
আনিশা রাগি হলেও বেশ ভালো মনের ।
আনিশা এ কথা বলেই হনহন করে আদিল,সাহিল আনিতার পিছন হাঁটতে লাগল, আনওশা তাদের থেকে খানিক দূরে রয়েগেছে এখনো।
আচমকা এক ছেলে এসে আনিশার হাঁটার মধ্যে ইচ্ছাকৃত ভাবে গায়ে ধাক্কা দিলো । আনিশা পেছনে থাকায় কেউ দেখল না,শুধু নেহাল দেখলো ছেলেটা আনিশা কে নিজ থেকে ধাক্কা দিয়েছে । আনিশা রেগে ছেলেটার দিকে তাকালো। তাকিয়ে কিছু বলতে যাবে এমন সময় নেহাল রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে দ্রুত পায়ে হেঁটে এসে ছেলেটা কে তার দিকে ঘুরিয়ে নাক বরাবর একটা ঘুষি দিয়ে চিৎকার দিয়ে বলল,
-হেই স্কাউন্ড্রেল । নেহালের চিৎকার শুনে তিনজনই অবাক হয়ে পিছনে তাকালো। (চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here