তার_শহরে পর্ব ১৫+১৬

0
516

#তার_শহরে

পার্ট : ১৫&১৬

লেখা : ইসরাত সিনহা


চোখ লাল করে অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে ,হাত মুষ্টিবদ্ধ করে তারপর দেয়ালে একটা ঘুষি মেরে হনহন করে ছাদ থেকে চলে যায় …!!


অজ্ঞাত ব্যক্তিটি আনিতার মুখ চেপে ধরায় সে কোনো চিৎকার দিতে পারছে না । আর অজ্ঞাত ব্যক্তিটি লাইটের অল্প আলোয় আনিতার দিকে এক নজরে চেয়ে আছে ।
যেন অনেক বছর ধরে দেখেনি আনিতা কে।আনিতা কি করবে ভয়ে তার শরীর কাঁটা দিয়ে উঠছে । আনিতা না পেরে অজ্ঞাত ব্যক্তির হাতে কামড় বসিয়ে দেয় , যে হাত দিয়ে আনিতার মুখ চেপে ধরে ছিল ।
সাথে সাথে লোকটি আউচ ! বলেই হাত সরিয়ে নিল । আনিতা লোকটির কন্ঠ শুনে স্তব্দ হয়ে গেল ..!
লোকটি আনিতার দিকে কটমট চোখে তাকিয়ে দাঁতেদাঁত চেপে বলল ,
-এতো জোড়ে কেউ কামড় দেয় ডেম ইট !
আনিতা ভয়ে ভয়ে উত্তর দিলো ,
-আমি কি জানি আদিল ভাইয়া আপনি এখানে থাকবেন , আমি তো ভয় পেয়ে গিয়ে ছিলাম । আনিতা এখানো ভয়ে কাঁপছে সেটা আদিলের চোখ এড়ায়নি ।
আদিল আর এক মিনিট ও লেট না করে আনিতা কে টান দিয়ে তার বুকে জড়িয়ে নিলো । আদিল আনিতা কে বুকে নিয়ে সে এক প্রশান্তি অনুভব করছে । আচমকা ভাবেই আনিতা আদিল কে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিল।
আদিল হতবাক নয়নে চেয়ে আছে আনিতার দিকে । তখনি আনিতা তীব্র রাগ নিয়ে বলে উঠল ,
-আপনি নিজে কে কি ভাবেন বলুন তো ? যখনি ইচ্ছা বুকে টেনে নিবেন , যখনি ইচ্ছা টর্চার করবেন । আপনার এ সবের মানে কি আদিল ভাইয়া ? আমাকে কারো সাথে মিশতে দেন না এমন কি আপনার আপন ভাইয়ের সাথেও না , কেন ?
আদিল আনিতার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে , এটা কি সেই আনিতা যে আদিলের ভয়ে কাঁপতো ?
আনিতা আরো কিছু বলতে যাবে তখনি আদিল আনিতার ঠোঁট দু টো তার দখলে নিয়ে নিল ।
আদিলের কাছ থেকে ছুটার জন্য আনিতা আদিলের বুকে অজস্র কিল ঘুষি মারছে , কিন্তু সে দিকে আদিলের কোনো ভ্রক্ষেপ নেই । সে তার কাজে ব্যস্ত , আনিতাও হাল ছেড়ে দিয়ে রোবটের ন্যায় দাঁড়িয়ে রইল ।
কিছু সময় বাদে আদিল নিজে আনিতা কে ছেড়ে দিয়ে একটু দূরে দাঁড়াল । আনিতা ছাড়া পেয়ে জোড়ে জোড়ে কয়েকটা নি:শ্বাস ফেললো ।
তারপর আনিতা কাঁদো কাঁদো গলায় বলল ,
-আপনি এমন করেন কেন আদিল ভাইয়া , আমি কি আপনার খুব বড় ক্ষতি করেছি ?
আদিল বাঁকা হাসি দিয়ে বলে উঠল ,
-হ্যাঁ , আনি তুমি আমার খুব বড় ক্ষতি করেছো । একথা বলেই আদিল আনিতার কাছে গেল , গিয়ে নরম সুরে বলল ,
-আই এম সরি , হোয়াইট এন্জেল । রাগের সময় আমার মাথা কাজ করে না , সরি আনি তোমাকে কষ্ট দেওয়ার জন্য ।
আনিতা জড়ো পদার্থের মতো ঠায় দাঁড়িয়ে আছে , আর চোখ থেকে অঝর ধারায় জল গড়িয়ে পরছে । সে বুঝার চেষ্টা করছে একটু আগে তার সাথে কি হলো ..! যখন বুঝতে পারলো আনিতা কান্না মাখা মুখেও লজ্জায় লাল হয়ে উঠল , তার কান দিয়ে যেন গরম ধোয়া বের হচ্ছে ।


আদিল আনিতার চোখের জল সহ্য করতে পারে না । আনিতার একদম কাছে গিয়ে তার ঠোঁট দিয়ে আনিতার চোখের জল মুছে দিল।
আদিলের এমন স্পর্শে আনিতা কেঁপে উঠল। তারপরই আদিল আনিতা কে পাজোঁ কোলে তুলে নিয়ে , ছাদের কোণায় রাখা বেতের সোফার মধ্য বসল ।
আনিতা এখনো ঘুরের মধ্যে ডুবে আছে । আনিতা যেন কথা বলার বাঁক শক্তি হারিয়ে ফেলেছে ।
আদিল ভাইয়া এমন করছেন কেন , উনি আমার এতো কাছে আসায় আমার ধম বন্ধ হয়ে আসছে । উনার শরীরের পারফিউমের ঘ্রাণ টা ও আমার নাকে এসে লাগল, কেমন ঘুর লাগানোর মতো ।
আদিল আনিতা কে কোলে নিয়ে সোফায় বসে আছে কোনো কথা বলছে না ।
কিছুক্ষণ নিরবতার মধ্যদিয়ে কাটল । প্রথমে আদিলই নিরবতা ভেঙ্গে বলল ,
-আনি এই ঠান্ডার মধ্য তোমার গায়ে সাল নেই কেন ? আদিলের করা প্রশ্ন যেন আনিতার কর্ণপাত হলো না , সে এক গভীর ভাবনার মাঝে চলে গেছে ।
আদিল এইবার ঝাঁজালো গলায় বলে উঠল ,
-এই মেয়ে কথা কানে যায় না , কি এতো রাজ্যের ভাবনা ভাবছো শুনি ?
আদিলের ঝাঁজালো গলা শুনে আনিতা তার ভাবনার জগত থেকে বের হয়ে এলো ।
ভয়ার্ত কন্ঠে জিজ্ঞেস করলো ,
-আপনি আমায় কোলো নিয়ে বসে আছেন কেনো আদিল ভাইয়া ? আমার অস্থিত্ব লাগছে , নামান প্লিজ আমি রুমে যাবো ।
আনিতার এমন কথায় আদিলের রাগটা সপ্তম আকাশে উঠে গেল , আদিল তার রাগ কে কন্ট্রোল করার জন্য কয়েক টা লম্বা শ্বাস নিল । আদিল চায় না এখন আনিতার সাথে কোনো রুড বিহেভ করতে ।
তাই আদিল ঠান্ডা কন্ঠে আনিতা কে বলল ,
-তোমার ঠান্ডা , ভয় দুটোই লাগছিল আনি,তার জন আমার কোলে নিয়ে বসে আছি , দেখো তোমার শরীর টা কেমন বরফ হয়ে গেছে ?
আনিতা ও উপলব্ধি করতে পারছে তার শরীর কেমন হিম শীতল হয়ে আছে । আনিতা মনে মনে ভাবছে তাড়াহুড়া করে আসতে গিয়ে আমার গায়ের সাল’টা রুমেই ফেলে আসছি । বাহিরে যে এতো ঠান্ডা পরেছে সেদিকে তো আমার খেয়ালই ছিল না , রুমের ভেতর গরম হিটার থাকায় ঠান্ডা বেশ একটা বুঝা যায় না ।
আনিতার ভাবনার মাঝেই আদিল নরম সুরে ডাক দিল ,
-আনি , এতো রাতে ছাদে কেন এসে ছিলে ?
আদিল ভাইয়ার কথায় আমি খানিক টা অপ্রস্তুত গলায় বললাম ,
-ইয়ে , মানে আমার ঘুম আসছিলো না তখনি কারো গিটারের সুর শুনলাম , শুনে ইচ্ছে হচ্ছিল কে গিটার বাজায় দেখতে । অনুমান করলাম আওয়াজ টা ছাদ থেকে যাচ্ছে তাই ছুটে আসলাম দেখতে , কিন্তু আমি আসতেই সুর টা গায়েব হয়ে গেল । তাই তো ভয়ে চলে যেতে ছিলাম আর আপনি আটকে দিলেন । কি ভয়টাই না পেয়ে ছিলাম , ভাব ছিলাম এই বুঝি শেষ আমি .!
আমার কথায় উনি উচ্চ শব্দে হেসে উঠলেন , আমি জিজ্ঞাসা চোখে তাকালাম উনার দিকে । আমি কি কোনো জোকস বলছি না কি যে অতো জোড়ে হেসে উঠলেন।
আনিতা গাল ফুলিয়ে বসে রইল ,
আদিল আনিতা কে আরেকটু শক্ত করে বুকের সাথে জড়িয়ে বললো ,
-এই পাগলি মেয়ে এতো ভয় পাওয়ার কি আছে , আদিল মেহবুব ছাড়া তোমাকে কেউ ছুতেঁও পারবে না । এ কথা বলেই উনি আমার কপালে গভীর ভাবে একটা চুমু একেঁ দিলেন , উনার এমন স্পর্শে আমি আবারও কেঁপে উঠলাম ।
আজ উনার কি হয়েছে বুঝতে পারছি না ।
উনার বুকে আমার নিজে কে খুব নিরাপদ মনে হয় , খুব শান্তি লাগে । উনার প্রস্তুত বুকে আমাকে যেন এক খরগোশের বাচ্চার মতো লাগছে । ইচ্ছে করছে এই বুকে এভাবে মাথা রেখে শত শত যুগ পাড় করে দেই ।
আমার ভাবনার মাঝে আদিল ভাইয়া ঠান্ডা মিশ্রিত কন্ঠে জিজ্ঞেস করলেন ,
-আনি তোমার কি গিটারের সুর ভালো লাগে ?
আমি উনার কোলে আরেকটু গুটিশুটি হয়ে বসে উত্তর দিলাম ,
-হুম খুব ভালো লাগে, বিশেষ করে আজ যে গিটার বাজাচ্ছিল ওই সুর টা খুব ভালো লেগে ছিল । কিন্তু কে বাজালো দেখতে পেলাম না । আচ্ছা আপনি কি জানেন কে গিটার বাজাচ্ছিল ? আপনি তো ছাদেই ছিলেন ..!!



আদিল আনিতা কে দেখে গিটার বাজানো বন্ধ করে দিয়ে ছিল ,
আনিতার করা প্রশ্নে আদিল কিছুটা বিব্রত বোধ করে উত্তর দিলো ,
-হ্যাঁ , জানি !
আমি উনার বুক থেকে মাথা তুলে উনার মুখের দিকে চেয়ে খুব আগ্রহ নিয়ে বললাম ,
-কে বাজাচ্ছিল…!!
আদিল ভাইয়া মুচকি হাসি দিয়ে বললেন ,
-গিটার টা আমি’ই বাজাচ্ছিলাম আনি ।
উনি বাজাচ্ছিলেন শুনে আমি বিস্ময়ে হা হয়ে গেলাম । উনি এতো সুন্দর গিটার বাজাতে পারেন তা আমার জানা ছিল না ..!
আমি বিস্ময় কাটিয়ে উনার দিকে তাকিয়ে বলে উঠলাম ,
-আদিল ভাইয়া আপনার তো অনেক গুন দেখছি ..!
আমার কথায় আদিল ভাইয়া কিছু টা অবাক হওয়ার ভান করে বললেন ,
-তা আমার কি কি গুন আনি একটু বলতো দেখি ,
উনার বলা কথায় আমি থতমত গলায় বললাম ,অনেক গুনই আছে ।
আদিল ভাইয়া একটু হেসে বললেন ,
-বলো না শুনি কি গুন আছে ?
এবার আমি একটু বিরক্তি ভাব নিয়ে বললাম ,
-কারো সামনা সামনি তার প্রশংসা করা মানে তাকে জ্যান্ত জবাই করা । কাজেই কারো প্রশংসা করতে হলে তার আড়ালে করতে হয় , আপনার গুনটাও একটা প্রশংসা তাই সেটা আড়ালে করাই শ্রেয় ।
আদিল আনিতার কথা শুনে বললো ,
-বাহ ! মেডাম দেখি অনেক কিছুই জানেন দেখছি ,
আনিতা আদিলের মুখে তার নিজের প্রশংসা শুনে লাজুক হাসি দিল ।
আদিল আনিতা কে আবার প্রশ্ন করলো ,
-আনি তুমি এই কথা কোন বইয়ে পরেছো ?
উনাকে বললাম ,
-এই কথা টা (হযরত আলী রা.) বলেছেন ।
উনি এবার বললেন ,
-অহ , ঠিক আছে মানার চেষ্টা করব ।
মনে মনে ভাবছি উনাকে একটা কথা জিজ্ঞেস করবো , কিন্তু সাহস পাচ্ছি না । অনেক ভাবনার পর কিছুটা সাহস নিয়ে জিজ্ঞেস করলাম ,
-আচ্ছা আদিল ভাইয়া আপনার গিটারে আজ এতো বিষাদের সুর ছিল কেন ?
উনি মৃদু হেসে বললেন ,
-মন ভালো ছিল না , আমার মন ভালো না থাকলে আমি প্রায়ই গিটার বাজাই ।
ভাবছি উনার এতো মন খারাপের কারণ কি হতে পারে ..! এর মাঝেই উনি বলে উঠলেন ,
এই আনি তোমার ভয় করছে না এই ভাবে যে আমার কোলে বসে আছো , যদি উল্টা পাল্টা কিছু করে বসি ?
আনিতার ভাবলেশহীন জবাব ,
-নাহ , ভয় করছে না , উল্টা পাল্টা কিছু যদি করতে চাইতেন তবে সেদিন’ই করতে পারতেন । যেদিন রাতে আপনার রুমে একা গিয়ে ছিলাম , সে সময় যখন কোনো কু চিন্তা মাথায় আনেনি তবে এখনও আনবেন না আমার বিশ্বাস ।
আনিতার এতো বিশ্বাস দেখে খুশিতে আদিলের মন ভরে গেল । তাহলে সে সঠিক মানুষকেই বাচাই করছে , তার জীবন সঙ্গী হিসেবে একথা ভাবতেই আদিলের এক আনন্দের ঢেউ বয়ে গেল সারা হৃদয় জোড়ে ।
কারণ যে কোনো সম্পর্কের বিত্তিই হলো বিশ্বাস । যেখানে “বিশ্বাস” নামক ছোট শব্দটা নেই , সেখানে আর যাই হোক ভালোবাসা থাকতে পারে না । “বিশ্বাস” শব্দটা ছোট হতে পারে কিন্তু এই একটা শব্দই যে কোনো সম্পর্কের মূল চাবিকাঠি ।
আনিতা আদিল কে একমনে ভাবতে দেখে বলে উঠল ,
-কি এতো ভাবছেন আদিল ভাইয়া ?
আদিল আনিতার কথায় তার সম্মতি ফিরে পেয়ে বললো ,
-কিছু না আনি , রাত অনেক হয়েছে চলো এবার ঘুমাতে যাবে । কাল তো তোমার ভার্সিটি আছে । রাত যতো হবে ততো ঠান্ডাও বাড়বে , পরে ঠান্ডা লেগে যেতে পারে ।
আনিতা মাথা নেড়ে সম্মতি দিলো , আদিল আনিতা কে ওইভাবেই কোলে নিয়ে আসতে চাইলে আনিতা বাঁধা দিয়ে বলে ,
-না , আদিল ভাইয়া আমাকে নামিয়ে দিন । আমি হেঁটে যেতে পারব , যদি কেউ দেখে ফেলে তাহলে কি ভাববে বলুন তো ?
আমার কথায় মূর্হতেই উনার রূপ পাল্টে ফেললেন যেন , রাগে উনার নাক লাল হয়ে গেল । আমি ভয়ে একটা শুকনো ঢুক গিললাম । এই জল্লাদটাকে বুঝা বড় মুশকিল , এই রোমান্টিক মুডে চলে যানতো , এই উনার ভিলেন রূপে ফিরে আসেন , আজব এক্কান চিজ ব্যাটা বজ্জাত।
মনে মনে এইসব কথাই আওড়াচ্ছিলাম , তখনি শুনতে ফেলাম উনি কাটকাট গলায় বললেন ,
-কে কি ভাবলো আমি পরয়ো করি না আনি , কোলে করে যেতে তোমার কোনো প্রবলেম হলে বলো নামিয়ে দেই ।
উনার এই রাগ দেখে আমি ভয়ে উনার গলা শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম আমার দুহাত দিয়ে , বলাতো যায় না যদি নিচে ফেলে দেন।ভয়ে ভয়ে বললাম ,
-না , না আমার কোনো প্রবলেম নেই চলুন।
ছাদ থেকে আসার আগে আমাকে নিয়ে ছাদের রেলিং এর কাছে গেলেন,তারপর একটা গিটার দেখিয়ে বললেন ,
-গিটার টা হাতে নাও , আমি নিতে পারবো না তোমায় ধরে আছি । গিটার নিতে গেলে তুমি পরে কোমর ভাঙ্গবা , বলেই উনি বাঁকা হাসি দিলেন । আমি আর কিছু না বলে উনার গিটার নিয়ে শক্ত হাতে ধরে রইলাম ।

কিছুক্ষণের মধ্যে সিঁড়ি বেয়ে উনি আমার রুমে আমাকে নিয়ে চলে আসলেন । উনি আমাকে নামিয়ে দিয়ে গুড নাইট বলে উনার গিটার নিয়ে আমার রুমের দরজা অব্দি চলে গেলেন । তারপর আবার কি মনে করে ফিরে এসে বললেন ,
-আজ হোয়াইট গাউনে তোমায় একদম পরির মতো লাগছিল ।ঠিক যেমনটা কল্পনা করছিলাম তার থেকেও বেশি সুন্দর লাগছিল । বলেই বাঁকা হাসি দিয়ে চলে গেলেন ।
আর আমি অপলক চোখে তাকিয়ে আছি উনার যাওয়ার দিকে ।
আজ এক অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করছে , আমি আমার প্রশ্ন গুলোর উত্তর একটু হলেও পেয়েছি । আদিল ও মুখে বাঁকা হাসি রেখেই ভাবছে , আমি অনেকটাই নিশ্চিত আনিতার ব্যাপারে , সে দুর্বল হয়ে গেছে আমার প্রতি ।
রাতের শেষ দিকে কিছু একটা ভাঙ্গার শব্দে জেনির ঘুম ভেঙ্গে গেল । জেনি এখনো আদিলদের বাড়িতেই আছে , কয়েক দিন থাকবে বলে এসেছে ।
জেনি কান কাড়া করে অনুমান করার চেষ্টা করছে শব্দটা কোথা থেকে আসলো ।
সে ধীর পায়ে উঠে রুমের বাহিরে আসলো , হ্যাঁ তার অনুমানই সঠিক শব্দটা সাহিলের রুম থেকেই আসছে । জেনি লেট না করে দ্রত পায়ে হেঁটে গেল সাহিলের রুমের দিকে ।
দেখলো সাহিলের রুমের দরজাটা হাল্কা ফাঁক করা । তাই সে দরজার সামনে দাঁড়িয়ে দেখার চেষ্টা করলো সাহিল কি করছে , সাহিল কে দেখেই জেনি চিৎকার দিয়ে রুমের ভেতর ঢুকে বলে উঠল ,
-ব্রো তোর কি হয়েছে , এভাবে হাত দিয়ে রক্ত ঝরছে কেন ? আনসার মি , ব্রো !…

(চলবে)

#তার_শহরে

পার্ট : ১৬

লেখা : ইসরাত সিনহা



-ব্রো তোর কি হয়েছে , এভাবে হাত দিয়ে রক্ত ঝরছে কেন ? আনসার মি , ব্রো !.



জেনি এক নাগারে সাহিল কে প্রশ্ন করেই যাচ্ছে , কিন্তু এতে সাহিলের কোনো ভাবান্তর নেই । সাহিল রক্ত চোক্ষু নিয়ে চেয়ে আছে ফ্লোরের দিকে । জেনি এবার বাজকাই গলায় সাহিল কে বলল ,
-কি হয়েছে সাহিল বলবি তো , না বললে বুঝব কেমনে ? আর এভাবে হাত কেটে ঘরের জিনিসপত্র ভাংচুর করে দেব দাস হয়ে বসে আছিস কেন ?
সাহিল এবার মুখ খুলে বললো ,
-আমার জগের পানি শেষ হয়ে গিয়ে ছিল , তাই পানি আনতে আমি নিচে যাওয়ার জন্য রুম থেকে বের হই । তখনি দেখলাম আনিতা তার রুম থেকে বাহির হয়ে ছাদের দিকে পা বাড়ায় । আমি ভাবলাম ও এতো রাতে ছাদের দিকে যাচ্ছে কেন ? দেড়ি না করে নি:শব্দে আমিও আনিতার পিছু নিলাম। আমার কানে ভেসে আসছিল ভাইয়ার গিটারের সুর , আরেকটু আগ্রহ নিয়ে আনিতার পিছু পিছু যাই । আনিতা যখন ছাদে উঠে তখনি ভাইয়া গিটার বাজানো বন্ধ করে দেয় । গিটারের সুর না পেয়ে আনিতা হয়তো ভয় পেয়ে ছিল । তাই সে ছাদ থেকে চলে আসার জন্য উদ্বেত হলেই , ভাইয়া এসে আনিতা কে জড়িয়ে ধরে ।
জেনি বললো ,
-আর তুই সে দৃশ্য দেখে রেগে রুমে চলে এসে ভাংচুর শুরু করেছিস না ?
জেনি সিস ভাইয়া আর আনিতা কে আমি এক সাথে সহ্য করতে পারি না , সাহিল বললো ।
জেনি রোষপূর্ণ গলায় বললো ,
-ব্রো এই মেয়ে আমার আদিল কে ও আমার কাছ থেকে কেড়ে নিল । আমি একটা ব্যাপার ভেবে আশ্চর্য না হয়ে পারছি না সাহিল , যে আদিল কোনো মেয়ে কে ধার কাছ ঘেঁষতে দিতোনা সে আনিতা কে আজ জড়িয়ে ধরেছে । প্রচন্ড রাগ নিয়ে জেনি বললো , এই মেয়ের মধ্যে তোর ভাই দেখেছে টা কি ? যা আমার মাঝে নেই ? আমি তো ওই মেয়ে থেকেও অনেক গুন সুন্দরি ।
সাহিল জেনির উদ্দেশ্য বললো ,
-আমি কিছু জানি না সিস , আমার আনিতা কে চাই । আর আজ আরেকটা কান্ড করেছে ভাইয়া , তুমি তখন তোমার রুমে ছিলে । তুমি বা আনিতা তোমরা কেউই এই ব্যাপারে জানো না ।
জেনি অতি আগ্রহী হয়ে বললো ,
-আদিল কি করেছে , সাহিল ?
সাহিল কিছু সময় নিরব থেকে উত্তর দিল ,
-ভাইয়া মম-পাপা কে বলেছে তার আনিতা কে চাই । রাদিফ ব্রো ও আনিতা কে পছন্দ করে তার মায়ের মাধ্যমে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছে মমের কাছে । একথা বলে সাহিল থামল , সাহিল থামার সাথে সাথে জেনি অবাক কন্ঠে বলল ,
-ব্রো এত কিছু ঘটে গেছে আর তুই আমাকে এখন বলছিস , হোয়াই সাহিল হোয়াই ?
সাহিল মাথা চুলকাতে চুলকাতে বলল ,
-সরি সিস আর হবে না , আর তুমি তো পার্টি শেষে রুম থেকে বাহির হওনি তাই বলার সুযোগ পাইনি ।
জেনি কি যেন ভাবল তারপর সাহিল কে বলল এদিকে শুন ,
-তর চাই আনিতা কে , আমার চাই আদিল কে । তাহলে সেই অনুযায়ী প্লান করতে হবে , মাইন্ড ইট .. যাতে সাপও মরে লাঠি ও না ভাঙ্গে । বলেই একটা শয়তানি হাসি দিল জেনি ।
জেনির কথার কোনো মানে সাহিলের মাথায় ঢুকল না , তাই সে জিজ্ঞাসা দৃষ্টিতে তাকাল জেনির দিকে , জেনি সাহিলের তাকানোর মানে বুঝতে পেরে বলল ,
-বুকা ছেলে তর এতো বুঝতে হবে না , তুই শুধু আমার প্লান মতো কাজ করবে । তাহলেই কেল্লা ফতে , বলেই আরেকটা শয়তানি হাসি দিল । জেনি সাহিলের কার্বাড থেকে ফাস্ট এইড বক্স নিয়ে সাহিলের হাত ব্যান্ডেজ করে দিল । সাহিল এক মনে ভেবেই যাচ্ছে ,
-সিস কি করতে চাইছে , আর কিসের প্লান এর কথাই বা বলল ? সাহিল আবার খানিক বাদে জেনি কে বলল , সিস একটা ইম্পর্ট্যান্ট কথা বলি ?
জেনি মাথা নাড়িয়ে বলল ,
-হুম , বল ”
সাহিল কিছুটা ভয়ার্ত চেহারা করে বলল ,
-সিস তুমি যা ই প্লান করো না কেন , একটু ভেবে চিন্তে করবে । তুমি তো ভাইয়া কে চিনও ভাইয়া কি ভয়ংকর রাগি ? যদি কিছু টের পায় তো আমরা শেষ । জেনিও চিন্তিত ভঙ্গিতে বলল ,
-হ্যাঁ , সাহিল আমি সে বিষয় মাথায় রেখেই কাজ করব । আদিল কে আমিও বিষণ ভয় পাই যা রাগি ও , জেনি সাহিল কে আশ্বাস দিল সে কোনো কাঁচা কাজ করবে না । সাহিল শান্তনা ফেলেও ভেতরে ভেতরে বেশ ভয় পাচ্ছে , আদিল খুব চতুর তাকে ফাঁকি দেওয়া অতোসোজা না ।
জেনি সাহিলের হাতে ব্যান্ডেজ করে দিয়ে বলল ,
-ব্রো তুই ঘুমিয় পর , ভোর হতে বেশি সময় বাকি নেই । সকালে কথা হবে , এতো ভাবিস না আনিতা তরই হবে । বলেই জেনি সাহিলের রুম ত্যাগ করল ।
জেনি রুমে এসে ভাবছে ,
-এই মেয়েটা কে তো আমার রাস্তা থেকে সরাতে হবে , এট এনি হাউ , এনি কস্ট ।
সাহিল টা ও খুব বোকা তার গার্লফ্রেন্ড গুলোই তো ভাল ছিল , কেন যে এই মোয়েকে ভালবাসতে গেল ? এই বাঙ্গালী মেয়ের মধ্যে এরা দুই ভাই কি এমন দেখলো যে , দুই ভাই পাগল দেওয়ানা হয়ে গেল ? উফ গড’ই ভাল জানেন ।
আদিলের কোনো মেয়েকেই তার ভাল লাগত না তাই সে পাত্তাই দিত না , তিনি এখন আনিতার প্রেমে মজনু হয়ে গেছেন । আর উপর জন ডজন খানেক গার্লফ্রেন্ড রেখে এই আনিতার নেশা পেয়েছে। এই দু ভাই কি পেয়েছে কি এই বাঙ্গালী মেয়ের মাঝে , যা এই দেশের মেয়েদের মধ্যে নেই ? জাস্ট অসহ্য..! আবার রাদিফও চায় আনিতা কে , কি অসহ্য । পৃথিবীর সব মেয়ে কি মরে গেছে নাকি , যার জন্য এক জন কে নিয়ে তিনজন টানা হেঁচড়া শুরু করছে ? সব দোষ এই মেয়ের ওঁকে আমি দেখে নিব , জেনি তীব্র রাগে ফেটে পরছে যেন ।



মিসেস এনজেলা আদিল কে বলছেন ,
-কি হচ্ছে আদিল নাস্তা করছো না কেন ? আদিল অপ্রস্তুত কন্ঠে বলল ,
-হ্যাঁ , মম নাস্তা করছি ।
মিসেস এনজেলা বুঝতে পারলেন ছেলের অপ্রস্তুত ভাব , আর সাথে এ ও বুঝলেন আদিল কেন নাস্তা করছে না । তাই তিনি উচ্চ আওয়াজে ডাক দিলেন ,
-মামনি তুমি কই , তোমার হলো নাস্তা কখন করবে ? তাড়াতাড়ি নিচে আসো তো ওয়েট করছি ।
আদিল লজ্জা পেয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে , মনে মনে ভাবছে ,
-মম জানলেন কিভাবে আমি যে , আনি’র জন্য ওয়েট করছি ? আনি’র মুখ না দেখে সকালে নাস্তা করতে ভাল লাগে না তাই ওয়েট করে আছি । আজ ঘুম থেকে উঠতে লেট করছে হয়ত কাল রাতে দেড়িতে ঘুমিয়েছে বলে ? নাকি আনি কাল রাতের ঘটনার জন্য লজ্জায় আসতে পারছে না আমার সামনে ? বলা যায় না উনার তো আবার অনেক লজ্জা , লজ্জাবতী লতা । এর মাঝেই জেনির কন্ঠ শুনা গেল ,
-হেই , গুড মর্নিং এভরি বডি । বলেই জেনি আদিলের পাশে একটা কালি চেয়ারে বসল ।
আনিতা তাড়াহুড়া করে নিচে আসল এসেই বলল ,
-আই এম সরি মামিমা , ঘুম থেকে উঠতে লেট হয়ে গেছে । আনিতা মিথ্যা বলেছে কারণ সে কাল রাতের কথা মনে করেই লজ্জায় আসতে চাইছিল না আদিলের সামনে । এখনও লজ্জায় আদিলের দিকে তাকাতে পর্যন্ত পারছে না সে ।
সাহিল বলল ,
-ঠিক আছে আনিতা এখন নাস্তা করতে বসো । তোমার জন্য ওয়েট করে আছি সেই কখন থেকে । সাহিল ডাহা মিথ্যা বলছে , আনিতার এটেনশন পাওয়ার জন্য । আনিতা আসার আগে সাহিল কয়েক পদের নাস্তা করে নিয়েছে । সাহিলের এই ডাহা মিথ্যা কথা শুনে আদিলের চোয়াল শক্ত হয়ে গেল । রাগ নিয়ে সে নিচের দিকে চেয়ে আছে , সে চায় না কোনো সিনক্রিয়েট করতে । আনিতা সাহিলের দিকে চেয়ে ভদ্রতা রক্ষার খাতিরে নম্র হেসে বলল ,
-সরি , সাহিল ভাইয়া এখন খাওয়া শুরু করুন । আনিতা আদিলের অপোজিট চেয়ারে বসল , এখনও সে তাকাতে পারছে না আদিলের দিকে ।
সবাই যে যার মতো খাচ্ছ , আনিতা মুখ তুলে দেখল আদিল একমনেই খেয়ে চলছে ।
তার দিকে চোখ তুলেও তাকালো না , এতে আনিতার মনক্ষুন্ন হলো । আদিলের পাশে জেনি কে বসা দেখে আনিতার রাগ হলো জেনির উপর । আনিতা মনে মনে বলল ,
-এই মেয়ের দেখি ল্জ্জা শরমের কোনো বালাই নাই , কিভাবে গা গেষে বসে আছে উনার পাশে ।
জেনি আদিল কে বলে উঠল ,
-কি ব্যাপার আদিল খাচ্ছ না কেন , এভাবে মুড অফ করে আছো কেন ?
আদিল জেনির দিকে না তাকিয়েই বলল ,
-আমার মুড ঠিক আছে জেনি , তুমি তোমার খাওয়াতে মন দাও আমাকে নিয়ে ভাবতে হবে না । বলেই আদিল নাস্তা করতে শুরু করল । আর জেনি চাপা রাগ নিয়ে বলে উঠল ,
-হোয়াট’স ইউর প্রবলেম আদিল , তুমি আমাকে সবার সামনে অপমান করছো কেন ? আমি কি এমন বললাম যে তুমি এতো রিয়েক্ট করলে ?
জনাব আলী মেহবুবও জেনির কথার সাথে তাল মিলিয়ে বললেন ,
-সত্যিই তো আদিল তুমি জেনির সাথে এরকম রুড বিহেভ করছো কেন ? জেনি তো খারাফ কিছু বলছে না । আদিল নম্র শব্দে বলল ,
-পাপা জেনির সাথে আমার রুড বিহেভ করার অনেক গুলো রিজন আছে , যা আমি তোমাদের কাউকে বলতে চাই না । একথা বলেই আদিল আনিতার দিকে দৃষ্টি দিল , এবং সাথে সাথে দুজনের চোখা চোখি হলো।
আনিতা চোখা চোখি হতেই দৃষ্টি নিচের দিকে নামিয়ে নিল লজ্জায় । মিসেস এনজেলা সন্দেহের চোখে তাকিয়ে , আদিলের দিকে প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন ,
-জেনি কি করেছে আদিল , আমাকে বলো ?
সাহিল , নেহালও তাকিয়ে আছে আদিলের দিকে । জেনি ভয়ে জড়সড় হয়ে বসে আছে চেয়ারে , যদি আদিল সেদিনের ঘটনা বলে দেয় আন্টিকে । নিশ্চয়ই আন্টি কষিয়ে কয়েকটা চড় দিবেন আমার গালে , আন্টিরও আদিলের মতো রাগ । জেনি ভয়ে চেয়ে রইল আদিলের দিকে আদিল কি বলে।
আদিল তার মম কে বলল ,
-মম বাদ দাওতো ওসব , ও ছোট মানুষ তাই ভুল করে ফেলেছে আমি ক্ষমা করে দিয়েছি ।
মিসেস এনজেলা গম্ভীর কন্ঠে বললেন ,
-তদের নিজেদের মধ্যে মিটমাট করে নিলেই ভালো । আর মনে মনে বললেন , এই জেনিকে আমি ছোট থেকেই চিনি ও কোন ধাঁচের মেয়ে । জেনি খুব হিংসুটে আর লোভী টাইপের । না জানি এখন আবার কি করে , ভালোই ভালোই কয়েক দিন থেকে চলে গেলেই বাঁচি ।
জেনি যেন ভয়ংকর এক বিপদ থেকে রক্ষা পেলও ।
তারমধ্যে আনিতা নাস্তা করে দাঁড়িয়ে পরল ভার্সিটিতে যাওয়ার জন্য । জনাব আলী মেহবুব আনিতাকে বললেন ,
-আনিতা দাঁড়িয়ে গেলে কেন ? নাস্তা শেষ করো । আনিতা মৃদু হেসে বলল ,
-মামা আমার খাওয়া শেষ , ভার্সিটি যেতে লেট হয়ে যাচ্ছে । আনিতার মামা বললেন ,
-তুমি কি একাই যাবে ভার্সিটি ?
-হ্যাঁ , মামা আজ একাই যাবো । আদিল আনিতার কথা মধ্যেই বলল ,
-আনি তোমার একা যেতে হবে না , নেহালের সাথে যাও । আমার একটা কাজ আছে তাই ড্রপ করে দিতে পারব না । আনিতা আর বাঁধা দিল না , সেও একা যেতে ভয় পায় । এখনও কানাডার অতো কিছু তার জানা নেই । সাহিল , জেনি তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে শুধু । আনিতা , নেহাল বিধায় নিয়ে বেড়িয়ে পরল ।
আদিলও বেড়িয়ে গেল তার অফিসের উদ্দেশ্য ।


নেহাল ধীর গতিতে ড্রাইব করছে । আনিতা কাল রাতের ঘটনা মনে করে লজ্জায় লাল হচ্ছে । এগুলো মনে হতেই তার শির ধারা দিয়ে এক শীতল শ্রোত বয়ে গেল । এরমাঝে নেহাল বলে উঠল ,
-আপু তুমি জেনি সিস থেকে সাবধানে থেকও । জেনি সিস কিন্তু খুব একটা সুবিধার না ।
আনিতা নেহালের দিকে ভ্রকুচকে বলল ,
-কেন নেহাল , আমি জেনির কি করেছি ?
নেহাল হাল্কা হেসে বলল ,
-সময় হলে বুঝবে তুমি কি করেছ সিস এর ..! তবে ভাইয়া যতো দিন আছে সিস তোমার কিছুই করতে পারবে না ।
নেহাল কি বলতে চাইছে , আনিতা অল্প হলেও বুঝেছে । আনিতা চিন্তিত ভাবে বসে রইলো , জেনির কথা ভাবছে ।


কিছু সময় বাদে তারা এসে পৌঁছালো ভার্সিটি । নেহাল কে বাই জানিয়ে ভার্সিটির ভেতর চলে এলো আনিতা ।
আনিতা ভার্সিটি এসে চার্লস , চার্লি কে খুঁজ ছে । অবশেষে ওরা দুজন কে খুঁজে পেল আনিতা । চার্লি আনিতা কে দেখেই দৌঁড়ে এসে জড়িয়ে ধরলো , আর বলল ,
-আনিটা কেমন আছো ? আনিতা হেসে বলল ,
-হুম , ভালো আছি চার্লি । তুমি কেমন আছো ? চার্লি আনিতা কে ছেড়ে দিয়ে বলল ,
-আমিও ভালো আছি ডিয়ার , চার্লস আনিতার দিকে হাত বারিয়ে দিয়ে বলল ,
-হোয়াট’স আপ আনিটা ?
আনিতাও হ্যান্ডশেক করে বলল ,
-ফাইন , এন্ড ইউ ?
চার্লস একটু হেসে বলল ,
-ফাইন ,
তারপর তারা ক্লাসের দিকে চলল ।
আনিতা যখনি ক্লাস রুমে ঢুকতে যাবে তখনি একটা পরিচিত কন্ঠ শুনে থমকে গেল , পেছন থেকে কেউ ডাকদিল ,
-হেই , দাঁড়াও ..!
আনিতার মুখ বির্বণ হয়ে গেছে ভয়ে । তার পা অল্প কাঁপছে । আনিতা তাকানোয় চার্লস , চার্লিও তাকালো সে দিকে .,,
. (চলবে)

#এখন থেকে একদিন পর পর গল্প পাবেন ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here