#Devil_Cousin_Lover♥
#Imtihan_Imran
09.
সকালবেলা সবাই ডাইনিং টেবিলে বসে ব্রেকফাস্ট করছে।
“ইমরান.।
” জ্বি বাবা।
“দিশা আজকে আসছে,জানোই তো নাকি?
” ওয়াও দিশা আপু আসছে।এতো বছর পর,ভাবতেই অনেক খুশি লাগছে।
সিনহার দিকে তাকিয়ে সবাই হেসে দেয়।দিশা মেয়েটা,সিনহাকে অনেক আদর করতো,ভালোবাসতো,যার রেশ এখনো সিনহার কাছে রয়ে গেছে।তাই আজ দিশা আসবে শুনে সে অনেক বেশি খুশি হয়েছে।
“ইমরান তুমি দিশাকে আনতে এয়ারপোর্টে যাচ্ছো।
” আচ্ছা যাবো।পাঁচ বছর পর আমার বোন আসছে,আমিই তাকে আনতে যাবো।
দিশা চৌধুরী মিস্টার ও মিসেস মাহবুবের বড় মেয়ে।পাঁচ বছর আগে লন্ডনে গিয়েছে,পড়ালেখা করার জন্য।পড়াশোনা শেষ,তাই সে এখন দেশে আসছে।তাকে আনতেই ইমরান এয়ারপোর্টে যাচ্ছে।
”
সিনহা কলেজে এসে যথারীতি ক্লাস গুলো শেষ করে রুম থেকে বের হয়।
রুম থেকে বের হতেই জিসান এসে, সিনহার পথ আটকায়।
“আপনি আমার পথ আটকে দাড়ালেন কেনো?
” ওহ সিনহা,আমরা সেইম ব্যাচ।আমাকে আপনি করে ডেকে,বুড়া কাকু বানাচ্ছো কেনো?আমাকে তুমি করে ডাকবে,ওকে?
“কিছু বলার থাকলে বলুন,আমার তাড়া আছে।
” তোমার ফোন নাম্বার টা দেও তো।
“আমার ফোন নাম্বার দিয়ে আপনি কী করবেন?
” বোকা মেয়ে,ফোন নাম্বার কেনো নিচ্ছি জানে না।তোমার সাথে কথা বলতে চাই।
“দেখুন আমি আগেও বলছি।ছেলেদের সাথে আমার কথা বলা নিষেধ।এখনো বলছি আপনি আর আমাকে ডিস্টার্ব করবেন না।
সিনহা চলে যেতে নিলে,জিসান সিনহার হাত ধরে ফেলে।সিনহা ভয় পেয়ে যায়।সাথে সাথে হাত ঝাড়া দিয়ে,জিসানের থেকে নিজের হাত ছুটিয়ে নিয়ে হনহন করে হেটে চলে যায়।জিসান শয়তানী হাসা হেসে,সিনহার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে।
” সিনহা,তোর ভাইয়া আসে না।এক্ষুনি উনাকে গিয়ে সব বলে দে।
“ভাইয়া আজকে আসে নাই।
” কী অসভ্য,বেয়াদব ছেলে,তোর হাত পর্যন্ত ধরে ফেলেছে।একে একটা উচিত শিক্ষা দিতেই হবে।
“ভাইয়াকে বলবো কীনা,চিন্তায় আছি।ভাইয়া যদি জানে আমার হাত ধরেছে,তাহলে এই ছেলেকে তো মেরেই ফেলবে।
”
ইমরান সামান্য দেরিতে এয়ারপোর্টে এসে পৌঁছে।কারন সে এসে দেখে,অলরেডি তার বোন চলে এসেছে।ইমরান লুকিয়ে এসে দিশার পিছনে দাঁড়ায়।
“হেই দিশা লেডি।(জোরে)
দিশা চমকে উঠে পিছনে তাকায়।ইমরান হাসিমুখে দাঁড়িয়ে আছে।
” হেই রাজপুত্র ইমরান।
ইমরান,দিশা দুজনে এগিয়ে এসে দুজন দুজনকে জড়িয়ে ধরে।
“কেমন আছিস দিশা?
“ভালো আছি।ওই আমি কিন্তু তোর দুই বছর বড়,মনে রাখিস।
” দুই বছর বড় হলেও আমি আপনাকে দিশাই ডাকবো।
ইমরানের হঠাৎ নজরে আসে,পাশে একজন ইয়াংমেন দাঁড়িয়ে আছে।
“তোর সাথে নাকী?(দিশার দিকে তাকিয়ে)
” হুম,আমরা একই ভার্সিটি থেকে পড়ালেখা শেষ করেছি।
“আমার মনে হয়,ইনি আমার ফিউচার দুলাভাই,হাহা।
” চুপ ফাজিল।
ইমরান,ইয়াংমেন এর সাথে পরিচিত হয়ে নেয়।নাম রিহান তালুকদার। বাবামায়ের একমাত্র ছেলে।
”
ইমরান,দিশাকে নিয়ে চৌধুরী বাড়িতে চলে আসে।এতো বছর পর দিশাকে পেয়ে,সবাই দিশাকে নিয়ে মেতে আছে।
দুপুরের পর সিনহা কলেজ থেকে ফিরে আসে।ইমরান ড্রয়িংরুমেই ছিল।সিনহাকে আসতে দেখে,সে সোফা থেকে উঠে দাঁড়ায়। সিনহাও,ইমরানকে দেখে যতোটা সহজ থাকা যায়,থাকছে।
ইমরান সিনহার কাছে এসেই প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলো।
“সিনহা তোকে খুব চিন্তিত দেখাচ্ছে? কোনো সমস্যা?
“না তো,কই?
” আমাকে অ,আ বুঝাতে আসিস না।আমি তোকে সেই অনেক বছর আগে থেকেই ছিনি।তাই আমার থেকে কথা লুকাতে আসিস না।কলেজে কোনো সমস্যা হয়েছে?কেউ কিছু বলছে তোকে? বল আমাকে?
“ভাইয়া,তুই অযথা হাইপার হচ্ছিস।আমার কিছু হয়নি।এই রোদে হেটে এলাম তো,তাই ক্লান্ত লাগছে।
” হেটে এসেছিস মানে?গাড়ি ছিল না?আর দিয়া কোথায় ছিল?
“দিয়া তো আজকে কলেজে যায়নি।আর আমার থেকে টাকাও ছিল না,যে রিক্সা করে আসবো।
” আমাকে একটা ফোন দিতি।আমি টাকার ব্যবস্থা করে দিতাম।মোবাইল দিয়েছি কী,সবাইকে দেখানোর জন্য(রেগে)
“দূর বাদ দে।ভাইয়া দিশা আপু কই?
” উপরে রুমে।
“আমি দেখা করে আসি।
সিনহা দাঁড়াল না।হেটে প্রগাঢ়পাড়। এখানে থাকলে আরো একশটা মিথ্যা কথা বলতে হতো।তাই সিনহা কথা ঘুরিয়ে কোনোভাবে ইমরানের হাত থেকে পালাল।
বিকালবেলা ইমরান রুম থেকে বের হয়ে ড্রয়িংরুমে আসে।ইমরান ড্রয়িংরুমে এসে নিজের আম্মাকে ছাড়া আর কাউকে দেখতে পায়না।
” আম্মা সবাই কই?কাউকে যে দেখছিনা।
“সবাই বাইরে বাগানে আড্ডা দিচ্ছে।
” তো তুমি একলা একা এখানে বসে আছো কেনো?
“এমনি তোর বাবা আসবে,তাই অপেক্ষা করছি।
” ও আচ্ছা।এই ব্যাপার। আচ্ছা তাহলে তুমি অপেক্ষা করো,তোমার স্বামীর জন্য,আমি গেলাম।
“যান রাজপুত্র।
” লেখক: ইমতিহান ইমরান।
ইমরান হেসে বাগানের উদ্দেশ্যে হাটা ধরল।ইমরান বাগানে এসে দেখে,কেউ দোলনায়,কেউ নিচে ঘাসে বসে আড্ডা দিচ্ছে।তার চাচা,চাচীও এখানে আছে।তবে দুজন,দুজনের থেকে অনেক দূরত্ব মেপে বসে আছে।
ইমরান এসেই দিয়া ও সিনহার মাথায় থাপ্পি মারে।
” আমাকে রেখেই আড্ডা দেওয়া হচ্ছে,তাই না।পিটিয়ে তোদের দুইটাকে আমি গাছে লটকাবো।আমাকে ডাকলি না কেনো?
“তোকে কেনো ডাকতে যাবো?তোকে আমাদের প্রয়োজন নেই।
ইমরান আরেকটা থাপ্পি মারে দিয়ার মাথায়।
” ভাইয়া,মাথায় থাপ্পি মারবি নাতো।
“ইমরান কী শুরু করেছিস।ওদের থাপ্পি না মেরে বসে পড় আমাদের সাথে।
” না,আর বসবোই না তোদের সাথে আমি চাচাকে নিয়ে চললাম।
ইমরান চাচার কাছে এসে চাচার এক হাত চেপে ধরে।
“ছাড় ভাতিজা,আমি কোথাও যাবো না তোর সাথে।
” তোমাকে যেতে হবে,এখানে সব মেয়েরা এক ঝুট।আর আমরা চাচা,ভাতিজারা থাকবো এক ঝুট,ওকে।
এবার সিনহা উঠে এসে চাচার অন্য হাত চেপে ধরে।
“না চাচা এখানেই থাকবে,কোথাও যাবে না।
” হ সিনহা,ঠিক কইছে,আমি কোথাও যাবো না।
“চাচা,তোমাকে যেতে হবে,তোমার ভাতিজা বলছে তোমাকে যেতে হবে।
” না চাচা যাবেনা।চাচার,ভাতিজি বলছে চাচা যাবে না।
ইমরান চাচার হাত ধরে নিজের দিকে টানছে,অন্যদিকে সিনহা চাচার অন্য হাত ধরে চাচাকে নিজের দিকে টানছে।
“সিনহা চাচার হাত ছেড়ে দে।না হয় আমি চাচার হাত টেনে ছিঁড়ে ফেলবো।
” তুই চাচার হাত ছেড়ে দে।না হয় আমি চাচার হাত টেনে ছিঁড়ে ফেলবো।
দুজনের কথা শুনে চাচার চোখ বড় বড় হয়ে যায়?।
“নাউযুবিল্লাহ।কী কস তোরা।আমার হাত ছাইড়া দে।তোদেরর বিশ্বাস নেই।
কে শুনে কার কথা।সিনহা,ইমরান দুজনে চাচার হাত ধরে টেনেই যাচ্ছে।
” আল্লাহ মাফ চাই।এদের হাত থেকে মোরে রক্ষা করো।ওই আমারে ছাইড়া দে,তোরা।
সিনহা,ইমরান চাচার হাত টেনেই যাচ্ছে।আর চাচা এদের রসাতলে পড়ে,ও আল্লাহ রে।ও মাগো কী বিপদে পড়লাম গো বলে,চিৎকার করছে।
” ও সোহাগী বেগম মোরে বাঁচাও।এরা তো সত্যি সত্যি আমারে ছিঁড়ে আলাদা করে ফেলতেছে গো।
চলবে..
~ইমতিহান ইমরান।