#Devil_Cousin_Lover♥
#Imtihan_Imran
06.
সিনহা লুডু খেলায় হেরে বসে আছে।এই প্রথম সে ইমরানের সাথে লুডু খেলায় হেরেছে।তার কী দোষ,হারছে তো এই চাচার জন্য?সিনহার আক্কেল হয়েছে বহুত,সে জীবনেও আর এই চাচাকে পার্টনার করে লুডু খেলবে না।
অবশ্য বেচারা চাচারও দোষ দিয়ে কী লাভ?বেচারা চাচা তো,চাচীরে ভয়েই হজম হয়ে থাকে?না পারে কিছু বলতে,না পারে সহ্য করতে?
ইমরান সুযোগ পেয়ে,এরই মধ্যে সিনহাকে টিজ করা শুরু করে দিয়েছে। সিনহা শুধু রাগ দেখাচ্ছে,আর কিছুই করতে পারছে না।
”
“দাঁড়িয়ে পড়লেন কেনো?আসেন দিহান।ও সরি দিহান ভাইয়ায়া..
” আমার আজকে বহুত আক্কেল হয়েছে।এই জীবনে যেনো আল্লাহ কখনো তোমার মতো পাজি মেয়েদের পাল্লায় আমাকে না পেলে।শেষ পর্যন্ত আমাকে দিয়ে এই ব্যাগ গুলো নিজের বাসায় এনে ছাড়লে।
“বেশি কথা না বলে ভিতরে আসেন তো।
” পাগল নাকি,ইমরান তোমার সাথে আমাকে দেখলে কী ভাববে?আমি যাবো না,তুমি ধরো ব্যাগগুলো,আমি বাসায় চলে যায়।
“আরে ভাইয়া কিছু বলবে না,বললে তো আমি আছি।আসেন।
দিয়া না দাঁড়িয়ে হনহন করে হেটে বাসার ভিতরে ঢুকে পড়ল।
” ও খোদা আজকে এই কোন মেয়ের পাল্লায় আমাকে ফেললা?
দিয়ার পিছন পিছন দিহানকে শপিংব্যাগ গুলো নিয়ে আসতে দেখে ভ্রু উঁচু করে দিহানের দিকে তাকালো।
“এভাবে তাকাস ক্যান।আমি কিচ্ছু করি নাই।তোর বোন আজকে পুরো বিকাল,আমাকে দিয়ে তার বডিগার্ডের কাজ করিয়েছে,এখন বাসায় পর্যন্ত নিয়ে এসেছে।
ইমরান,দিয়ার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞাস করে,
” দিয়া,এইসব কেমন বেয়াদবি?ও তোর ভাইয়ের বন্ধু।ওর সাথে এমন বেয়াদবি করার মানে কী?
“বেয়াদবি কখন করলাম ভাইয়া।আমি জাস্ট উনার থেকে একটু হেল্প নিলাম।তোর বন্ধু দেখেই তো নিলাম।
দিয়া,দিহানের হাত থেকে ব্যাগগুলো নিয়ে সিড়ি বেয়ে উপরে উঠে গেলো।
“সরি দোস্ত,ওর পক্ষ থেকে।ছিনিস তো অনেক ফাজিল মেয়েটা।
” আরে ধুর আমি কিছু মনে করি নাই।
বাদ দে।এখন আমি বাসায় যাই,কালকে দেখা হচ্ছে।
“এখন না,আগে কিছু খাবি তারপর যাবি।
” নারে।তাড়া আছে।যাই।
“আচ্ছা তাহলে যা।
”
ইমরান সিনহার রুমে এসে দেখে,সিনহা বই নিয়ে ঘাটাঘাটি করছে।
“সিনহা আমার রুমে আয়,তাড়াতাড়ি।
দরকার আছে।
ইমরান এই কথা বলেই রুম থেকে বের হয়ে গেলো।সিনহা বই রেখে,ইমরানের রুমের দিকে হাটা ধরল।
সিনহা রুমে এসে দেখে,ইমরান বিছানায় শুয়ে আছে।
” ভাইয়া।
“মাথা ব্যাথা করছে,মাথাটা একটু টিপে দেতো।
” আচ্ছা।
সিনহা বিছানায় বসতেই,ইমরান বালিশ থেকে মাথা সরিয়ে সিনহার কোলে মাথা রাখতেই,সিনহা কিছু বুঝে উঠার আগেই ধড়পড়িয়ে উঠে পড়ে।
এভাবে সিনহা হঠাৎ উঠে পড়ায়,ইমরানের মাথাটা খাটের কোনায় বারি খায়।সাথে সাথে ইমরানের নিজের হাত তার মাথায় চলে যায়।যা বুঝাচ্ছে সে ব্যাথা পেয়েছে।
সিনহা ভয় পেয়ে,ইমরানের কাছে ছুটে যায়।
“ভাইয়া ব্যাথা পেয়েছিস।আমি সরি,আমি বুঝে উঠতে পারিনি,কী হলো।
” কিছুই হয়নি।যা তো রুম থেকে।
“আমি জানি তুই ব্যাথা পেয়েছি।
সিনহা,ইমরানের মাথায় হাত রাখতে গেলে,ইমরান সিনহার হাত সরিয়ে দেয়।
” ব্যাথা পেলেও তোর কী?তোকে আর দরদ দেখাতে হবেনা।এখন শান্ত কন্ঠে বলছি,আমার রুম থেকে বের হয়ে যায়।
নাহলে থাপ্পড় মেরে বের করে দিবো।
“ভাইয়া,তোর মাথা ব্যাথা।
” আমার মাথা ব্যাথা আমি দেখবো,যা তুই।তোরে ডাকি ভালোর জন্য।তুই এসে উলটো আরো বেশি রাগিয়ে দিস আমাকে।
“সরি ভাইয়া,এবারের মতো মাফ করে দে।আমার কোলে মাথা রাখ।প্লিজ প্লিজ আমার উপর রাগ করে থাকিস না,আমার কষ্ট হয়।
” সত্যি তোর কষ্ট হয়?
“হুম(মাথা নিচু করে)
” কেনো আমি তোর কী হই?
“তোর মাথা কী খারাপ হয়ে গেছে?তুই জানিস না আমার কী হোস?ভাইয়া তুই আমার।
” ও আল্লাহ এই গাধী মেয়েকে নিয়ে আমি কোথায় যাবো?
“আমাকে নিয়ে কোথায় যাবি তুই?আমি তো এখানেই ভালো আছি।
” লেখকঃইমতিহান ইমরান।
” বেশি ফটর ফটর করে আমার মাথা খারাপ করিস না।দাঁড়িয়ে না থেকে বসে আমার মাথাটা টিপে দে।
সিনহা ইমরানের বিছানায় গিয়ে বসল।ইমরান নিজের মাথাটা সিনহার কোলে রাখে।সিনহা নিজের নরম,কোমল হাতটা দিয়ে ইমরানের মাথা টিপে দিচ্ছে,চুলে বিলি কেটে দিচ্ছে।
“যাদু আছে তোর হাতে সিনহা।অনেক ভালো লাগছে।ঘুমে চোখ জোড়া বন্ধ হয়ে আসছে।
” ঘুমা তুই।
”
সকালবেলা ব্রেকফাস্ট করে সবাই সবার কাজে চলে যায়।সিনহা আজকে দিয়ার সাথে কলেজে যায়।
সিনহা ক্লাস শেষ করে,তার বান্ধুবীদের নিয়ে কলেজ মাঠের একপাশে দাঁড়িয়ে গল্পগুজব করছে।
“এই তোরা ওই ছেলেটা সম্পর্কে জানিস কিছু?
” কোন ছেলের সম্পর্কে?
“ওই যে তিনটা ছেলের মধ্যে কালো শার্টপড়া ইয়াং হ্যান্ডসাম লোকটা।খুবি ভয়ংকর ছেলে,কলেজের সবাই ছেলেটাকে বাঘের মতো ভয় পায়।খুব রাগ তার।তার উপর তাদের গ্যাংও আছে।
” আরে রাখ তোর ভয়ংকর ছেলে।এই ছেলেকে ভয় পাওয়ার কী আছে?একে তো আমি ইচ্ছে করলে যা ইচ্ছা,তাই করতে পারি।
সিনহার কথা শুনে তার দুই বান্ধুবী অবাক হয়ে যায়। কী বলছে কী এই মেয়েটা?
“যা ইচ্ছা,তাই করতে পারিস।তাহলে করে দেখা,আমরা বিশ্বাস করবো।
” কী করতে হবে বল?
“কিস করবি।
সিনহা,আস্তে করে একটা থাপ্পড় মেরে দেয়,তার বান্ধুবীর গালে।
” মান ইজ্জতের ব্যাপার।অন্য কিছু বল।
“ওকে তাহলে ছেলেটাকে থাপ্পড় মারবি।
“আরেকটা থাপ্পড় মারবো তোরে,এটা তো ছেলের মান ইজ্জতের ব্যাপার।
” ওকে এইসব কিছুই করতে হবে না।জাস্ট জড়িয়ে ধরবি।
“ওকে ডান।
সিনহা এক পা এক পা করে হেটে ছেলেটার সামনে এসে দাঁড়ায়।ছেলেটা সিনহাকে দেখে ভ্রু উঁচু করে তাকায়।
সিনহা হুঠ করেই ছেলেটাকে জড়িয়ে ধরে।
সিনহার বান্ধুবীরা এই দৃশ্য দেখে হা হয়ে যায়।
” হাই হাই,এই দেখি সত্যি সত্যি.. আজ কপালে কী আছে?আল্লাহ জানে।
ছেলেটি তো চরম আকারে শকড খেয়ে যায়।তার মুখ সবার মতো হা হয়ে যায়।সেই সাথে ছেলেটির সাথে থাকা বাকী দুইটা ছেলেরও।
দূর থেকে এই দৃশ্য দেখে অন্য একটি ছেলে রাগে ফুঁসছে।সে রাগ কন্ট্রোল করার চেষ্টা করছে।
চলবে…
~ইমতিহান ইমরান।