শেষ পাতায় সামাপ্তি পর্ব ১

0
964

—“চৈতালি! তুই তো আবার ভাবি হতে যাচ্ছিস। তোর প্রেমিকপুরুষের মা এই বয়সে আবারও অন্তঃসত্ত্বা।”

কথাটি বলেই মুখটিপে হাসলো পাখি।

আচানক অপ্রত্যাশিত বুলি ঝংকার তুলতেই চৈতালি ভ্রু কুঁচকে তাকালো। চোখেমুখে তিঁতকুঁটে ভাব ধরে রেখেই বিরক্তিকর ভঙ্গিতে বলল,

“ফাজলামো করিস না তো?”
এমনিতেই মন মেজাজ ভালো নেই। ক্ষণে ক্ষণে রাগ চিঁড়বিঁড়িয়ে উঠছে।

পাখির চোখেমুখে কৌতুকতা বাড়লো বৈ কমলোনা। সে রসিকতার সুর টেনেই শুধালো,

“আমার কথা কি আর তোর বিশ্বাস যোগ্য হবে? খোঁজ নিয়ে দেখ পাড়ায় পাড়ায় এই খবর রমরমা ভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। সাদমান ভাইদের বাড়ির কাজের মেয়েটা আছেনা? ‘সেই’ তো সকাল সকাল মনিবের বাড়ির খবর গরম গরম চায়ের সঙ্গে ছড়িয়ে দিয়েছে।”

চৈতালি এবার খানিকটা শীতল হলো। তবুও বাইরে নিজেকে শক্তপোক্ত রাখার চেষ্টায়। ভাবলেশহীন উত্তর তার,

“তো?” একজন নারীর স্বামী আছে বর্তমান। সে অন্তঃসত্ত্বা হতেই পারে। এটা স্বাভাবিক একটা ব্যাপার। এটাতে এতোটা রসকষ মিশিয়ে সবাইকে গেলানোর কি আছে?
এই খবর পাড়ায় পাড়ায় ছড়িয়ে দিলে বুঝি তারা তোর জন্য পুরষ্কার ঘোষণা করবে?

পাখি চোখমুখ কুঁচকে নিলো। ত্যাচড়া চোখের দৃষ্টি ফেলে বলল,

” তোর প্রেমিক পুরুষের মা বলেই বুঝি এতটা ঝলছে?”

মুহূর্তেই তেঁতেঁ উঠলো চৈতালি। তাদের বাড়িতে যা কিছু হয়ে যাক, তুলকালাম বাঁধুক তাতে চৈতালির বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই। তার আগ্রহ তো শুধুমাত্র তার প্রেমিক পুরুষের প্রতি। মাদকতায় আচ্ছন্ন হওয়া চোখজোড়ার প্রতি, প্রাণ চঞ্চল উচ্ছ্বল হাসির প্রতি, কৃষ্ণবর্ণ দেহে বাম চোখের নিচে কুচকুচে কালো তিলের প্রতি, পুরো মানুষটির প্রতি তার আগ্রহ, আসক্তি, আকাঙ্খা।

ক্ষিপ্ত হওয়া স্বরে বলল, “আমার ভাবনা চিন্তা এতটা সস্তা আর নিচুমানের নয়। স্বাভাবিক বিষয়কে অযথা টেনেহিঁচড়ে অস্বাভাবিক কিছুতে পরিণত করা আমার স্বভাবের মধ্যে পড়েনা। বিষয়টি তার পরিবারে না ঘটে যদি তোর পরিবারে ঘটতো, তখন ও আমার অভিব্যক্তির পরিবর্তন হতোনা।

পাখি দমে গেলো। লম্বা শ্বাস ফেলে ধপ করে বসে পড়লো তুলতুলে নরম তুলোর তৈরি তোশকে।

আচ্ছা বাদ দে এসব কথা। তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে নে। আজ কিছুতেই ক্লাস মিস দেওয়া যাবেনা। দুদিন পরই সিটি আছে।

চৈতালি আর বাক্যব্যয় করলোনা। মিহি সুঁতোর তৈরি লম্বাটে ওড়না গায়ে জড়িয়ে নিলো। কাঁধের একপাশে একটা ব্যাগ ঝুলিয়ে বেরিয়ে পড়লো। গন্তব্য কলেজ।
দাদার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চৌকাঠ মাড়িয়ে যাওয়ার পূর্বেই চশমা পড়া চিমচাম গড়নের এক নারী মূর্তির মুখোমুখি হলো চৈতালি।

একগাল হেসে বিদায় জানালো,” আমি কলেজ যাচ্ছি মা।”

নারী মূর্তি একহাত মেয়ের মাথায় ছুঁইয়ে দিয়ে বিদায় জানালেন মেয়েকে।
পাখি চোখমুখ বিকৃত করে ফেললো। এই নারীর নাম হাসি। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়! পাখি কখনো এই নারীকে হাসতে দেখেনি। সবসময় একটা গাম্ভীর্যভাব তাকে ঘিরে রাখে, চোখেমুখে কঠোরতা বিরাজ করে। হাসিখুশি থাকার লেশমাত্র দেখা যায় না।
চৈতালি টা ও মাঝেমধ্যেই তার মায়ের মতো ব্যবহার করে। এই প্রাণবন্ত হাসি তো এই গাম্ভীর্যে পরিপূর্ণ।

চৈতালি তার মায়ের মতোই চিমচাম গড়নের। দুই মা মেয়েকে দেখলে হুট করেই যে কেউ বলবে হাসি চৈতালির বড়বোন।
এসব ভেবেই পাখি ফিক করে হেসে দিলো। চৈতালির মায়ের তীক্ষ্ণ নজর তার উপর পড়তেই পাখি হকচকিয়ে গেলো। এই নারীর নজর কেমন বাজপাখির ন্যায়। মুহুর্তেই হাসি থামিয়ে বেরিয়ে পড়লো চৈতালির পিছু পিছু।

-“তোর মায়ের নাম হাসি, কিন্তু উনাকে কোনোদিন হাসতে দেখলাম না।”

চৈতালি হাঁটার গতি অব্যহত রেখেই জবাব দিলো, “তোর নাম ও তো পাখি। তোকে তো কোনোদিন আকাশে উড়তে দেখলাম না।

পাখির বুলি থেমে গেলো। এই মেয়ের সাথে সে কখনো কথায় পেরে উঠেনা।

তিরিক্ষি মেজাজে সদর দরজা দিয়ে ত্রস্ত পায়ে হন্তদন্ত হয়ে ছুটে বাসার ভেতর প্রবেশ করলেন নুরুল হক।

ফাহমিদা বসে বসেই সোফায় ঢুলুঢুলু হয়ে ঘুমোচ্ছেন। এটা উনার একটা বদ অভ্যেস। বসে বসেই ঘুমাবেন। তারপর ঢুলতে ঢুলতে সামনে ঝুঁকে যাবেন। পূনরায় মাথা সোজা করে আবারও ঢুলতে ঢুলতে সামনে ঝুঁকে যাবেন। তবুও বিছানায় গিয়ে ঘুমোবেন না।

মাথাভর্তি চিঁড়চিঁড় করা রাগ নিয়েই বাসায় এসেছিলেন নুরুল হক। ফাহমিদার এমন ভাব ভঙ্গি দেখে রাগের পরিমাণ তরতর করে বেড়ে গেলো। সকালে ইলেকশনের কাজে বেরিয়েছেন। পথে চলা যাচ্ছেনা মানুষের কানাকানিতে। এই বয়সে এসে বাবা হতে চলেছেন কথাটা লোকমুখে শুনে কতটা লজ্জায় পড়তে হয়েছে উনাকে। অপমানে চোখজোড়া লাল টুকটুকে বর্ণ ধারণ করলো। এরকম হলেতো লোকে ভোট দেবেন না। প্রচারণার কাজেও বের হতে পারবেন না। সমস্ত দোষ স্ত্রীর ঘাড়ে চাপিয়ে দিলেন নুরুল হক।

বজ্রপাতের ন্যায় হুঙ্কারে ঘুম উবে গেলো ফাহমিদার।
চকিতে চোখ তুলে তাকান। চিন্তা করতে করতে সোফাতেই চোখের পাতা মুদে আসে।

ক্ষোভ মিশ্রিত কন্ঠে নুরুল হক শুধানেল,

“আশেপাশে কিসব শুনছি আমি? তুমি জানোনা সামনে ইলেকশন? আমি কাউকে মুখ দেখাতে পারছিনা। তোমার কারণে আমার কাজের ক্ষতি হবে সেটা আমি হতে দেবোনা। আঠারো বছর পর আবারও অন্তঃসত্ত্বা? ছিঃ! লজ্জায় আমার নাক, কান কাটা যাচ্ছে।”

ওঠো! এক্ষুনি ওঠো, এই বাচ্চা আজই এবরশন করাবে। বাচ্চা না থাকলে সবকিছু সুন্দরভাবেই ধামাচাপা দেওয়া যাবে।

কাজের মেয়েটি রান্নাঘর থেকে উঁকিঝুঁকি দিয়ে সব কিছু পরখ করছে। এককান, দু’কান করে সারা এলাকায় ঘটনাটি তেল মসলা মেখে পরিবেশন করতে হবে যে।

ফাহমিদা হতবিহ্বল চোখে তাকিয়ে রইলেন। শুষ্ক নেত্রপল্লব জলে চিকচিক করছে। এতবছর পর এরকম একটা ঘটনায় তিনি নিজেও বেশ বিব্রতবোধ করছেন। লজ্জা তার নিজের করছেনা এমনটা নয়। এত বড় বড় ছেলেদের সামনে কিভাবে মুখ টিকিয়ে রাখবেন? ভেবেছিলেন স্বামীর সাথে আলাপ করে একটা সমাধান খুঁজে বের করবেন। কিন্তু মা হয়ে সন্তানকে খু’ন করার কথা তিনি ভাবতে পারেননি।

ফাহমিদা ভাঙাচোরা কন্ঠে ধীর স্বরে বললেন,

“কিভাবে নিজের সন্তানকে মা’রতে বলছেন?” এই সন্তান কি আপনার নয়?”

নুরুল হকের রন্ধ্রে রন্ধ্রে রাগের তোপ বেড়েই চলেছে। আঙ্গুল উঁচিয়ে শাসিয়ে গেলেন ফাহমিদাকে।

“সব দোষ তোমার। তুমি সতর্ক থাকতে পারলেনা? দু-দুটো দামড়া ছেলে। তাদের সামনে কিভাবে চলবে? আমি এলাকায় মুখ দেখাবো কি করে? মানুষ আমাকে ভোট দেওয়া তো দূরের কথা, দেখলেই থুতু ছিটিয়ে দেবে।”

হসপিটাল থেকে একেবারে ছুটি নিয়ে বাসায় ফিরেছে সমুদ্র। বাড়ির খবর হসপিটাল পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। সবাই হাসাহাসি করছে ব্যাপারটা নিয়ে। সমুদ্র ভেবে পায় না, যে খবর সে বাড়ির ছেলে হয়েও জানতে পারলোনা সেটা অন্যরা কিভাবে জানলো? ঘটনার সত্যতা যাচাই করতেই সমুদ্র বাসায় ফিরলো।

বাবার কথা শুনেই সমস্ত ঘটনা পরিষ্কার হয়ে গেলো। তবে সমুদ্র কখনো বাবার কাছে এমন আচরণ আশা করেনি।

পেছন থেকে গলা চড়িয়ে জবাব দিলো সমুদ্র,

” সব দোষ মায়ের একা কিভাবে হয় বাবা?” মা যদি সন্তান গর্ভ ধারণ করে দোষ করে থাকে তবে সেই সন্তানের পিতা হিসেবে তুমিও সমান দোষী।

এমন একটা বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হবে আমরা কেউই জানতাম না। আল্লাহ চেয়েছেন বলেই তোমরা আবারও সন্তানের অধিকারী হতে যাচ্ছো। তবে এখানে মায়ের দোষ কোথায় দেখলে তুমি?

ফাহমিদা লজ্জায় মাথানিচু করে রেখেছেন। তার ছেলে, বড় ছেলের সামনে দাঁড়িয়ে থাকার শক্তিটুকু পাচ্ছেন না। ইচ্ছে করছে মাটি ফাঁক করে ভেতরে ঢুকে যেতে। আল্লাহ এতবছর পর এ কোন পরীক্ষায় ফেললেন।

নুরুল হক খ্যাঁক করে উঠলেন।

“তোমার মায়েরই সব দোষ। এখন এই বাচ্চা এবরশন করালেই সব ঝামেলা চুকে যাবে।”

চোয়াল শক্ত হয়ে আসে সমুদ্রের। রাগে ফর্সা মুখে রক্তিমা আভা দৃশ্যমান হয়ে উঠলো। কঠিন কন্ঠে বলল,

” এই বাচ্চার কোনো ধরনের এবরশন হবেনা। তুমি তোমার ইলেকশন নিয়ে থাকো। যদি বাচ্চার কিছু হয় তবে আমি সব লন্ডভন্ড করে দেবো।”

কাজের মেয়েটিকে ডেকে বলল সমুদ্র,

-“মাকে ঘরে নিয়ে যাও। এই মুহুর্তে বিশ্রামের প্রয়োজন আছে।”

গটগট পায়ে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে গেলো সমুদ্র। ব্যাপারটা তার কাছেও লজ্জাজনক। তাই বলে ছোট্ট একটা প্রাণ পৃথিবীতে আসার আগেই এভাবে ধ্বংস করে দেবে?

নুরুল হক ছেলের কথায় আপাতত দমে গেলেন। তবে একেবারেই যে থেমে গেলেন তেমনটা নয়। ছেলের রাগ সম্পর্কে নুরুল হক অবগত। দুই ছেলের মেজাজই বারুদের মতো ছুটে। দেখা গেলো নুরুল হকের সব কিছু জ্বা’লিয়ে ছাঁই করে দেবে এই ছেলে। তাই এখন কিছু করা অনুচিত হবে। সুযোগ বুঝেই কো’প মারতে হবে।

ফাহমিদা বিষন্ন মনে জানালার পাশে বসে রইলেন। কাজের মেয়েটাকে কয়েকটা ধমকি-ধামকি দিয়েছেন। এই খবর এ বাড়ির বাইরে একমাত্র লিপি ছাড়া কেউ বের করেনি। স্বামী,দুই ছেলে, মেয়ে সবাই সকালেই যে যার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়েন।

কয়েকদিন যাবত নিজের ভেতর কোনো কিছু বেড়ে ওঠার অস্তিত্ব টের পাচ্ছিলেন ফাহমিদা। সন্দেহ দূর করার জন্যই লিপির হাতেই একটা প্রেগন্যান্সি কিট নিয়ে আসেন ফার্মেসি থেকে। যা ভেবেছিলেন সেটা হতেই ফাহমিদা চিন্তিতবোধ করলেন। উদাসীন হয়ে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে আসতেই মালকিনের চোখমুখের ওমন দশা দেখে লিপি যা বোঝার বুঝে গেলো। ব্যস এটুকুই। এরপর খবর আপনা আপনি পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়লো।

গোধূলি লগ্ন। পশ্চিমাকাশে রক্তিম আভা। হু হু করে বাতাস বইছে। খোলা বারান্দায় সটান দাঁড়িয়ে থাকা সুদর্শন পুরুষের দৃষ্টি কিছুদূর সামনের বিল্ডিং এ দাঁড়িয়ে থাকা নারীমূর্তির পানে। দৃষ্টি স্থির,অধর কোনে এক চিলতে হাসি। চোখেমুখে মুগ্ধতা। যদিও নারীটির মুখাবয়ব স্পষ্ট নয়, তবুও সমুদ্র ঠাওর করতে পারলো এ চৈতালি। এ নারী হৃদয় বিনাশী, সর্বনাশী,তার হৃদয় হরণী, প্রাণোতোষী।

কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়ে চৈতালি চলল টিউশনের উদ্দেশ্যে। এখন থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চৈতালি একটা নবম শ্রেণির মেয়েকে গনিত পড়াবে। তারপর বাসায় ফিরবে। এই সময়ে টিউশন করার একটাই উদ্দেশ্য। তার প্রেমিক পুরুষকে এক নজর দেখা, চোখের তৃষ্ণা মেটানো।

স্টুডেন্টকে পড়ানোর মাঝামাঝি সময়টাতেই সাদমান ক্লাবে যায়। বাবার ইলেকশনের সমস্ত দায়িত্ব এসে তার উপর পড়েছে। অবশ্য এসব সে ফ্রীতে করছেনা। বিনিময়ে বাবার কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা খসিয়ে নিচ্ছে। বড় ভাই ডাক্তারি পেশা নিয়েই পড়ে আছে। রাজ’নীতিতে তার মন নেই।

সাদমান সম্পুর্নই সমুদ্রের বিপরীত। মা’রা’মা’রি, কা’টা’কা’টি সব কিছুতেই সাদমানকে পাওয়া যাবে। পড়ালেখায় তার বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই। পড়তে গিয়ে রাজ’নীতির সাথে নিজেকে জড়িয়ে বসে আছে। এবার বাবার আদেশেই ছুটে বাড়িতে এসেছে।

কৃষ্ণবর্ণ ছেলেটি যখন তার সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলো? অদ্ভুত এক মাদকতায় সিক্ত হয়ে ছিলো চৈতালি। তার প্রেমিকপুরুষ মোটেও শুদ্ধ পুরুষ নয়। বরং সে একটা বেয়া ‘ দব। ভয়ং’কর রকম বেয়া’ দব। চালচলনে উগ্রতা। নম্রতা, ভদ্রতার কোনো বালাই নেই তার মাঝে।
কালো শার্টের হাতা ফোল্ডা করতে করতেই এগিয়ে যাচ্ছে সাদমান। মাথাভর্তি চুল, মুখভর্তি দাঁড়ি ঈষৎ লম্বাটে। গালে গভীর কা’টা দাগ। গলায় লম্বা রুপার চেইন, হাতে সিলভার রং এর ঘড়ি, এককান ছিদ্র করে ছোট্ট একটা পিন পরেছে।

তবুও, তবুও চৈতালি এই বেয়া’দবের প্রেম তৃষ্ণায় তৃষ্ণার্ত। এক ফোঁটা প্রেম জলের অভাবে কাতর।
চৈতালির কাতর দৃষ্টি আওড়ে যায়,

“বিরহ যন্ত্রণায় কাতর আমি
সেই যে আমার সুখ,
তারে আমি চাই যে ভীষণ
সে আমার প্রিয় অসুখ।”

হাঁটতে হাঁটতে নির্দিষ্ট জায়গায় এসে থামলো সাদমান। জানালার দিকে নজর দিতেই একজোড়া হরিণী চোখ দৃষ্টিগোছর হলো। বড় ভাইয়ের হৃদয়হরণী তার প্রেমে মজে আছে ভেবেই তাচ্ছিল্য হাসলো সাদমান। কালসিটে পাতলা ঠোঁটে সিগা’রেট চেপে ধরলো। চোখজোড়া সংকুচিত করে নাকে মুখে ধোঁয়া ছড়িয়ে আড়াল হয়ে গেলো দৃষ্টি সীমানার বাহিরে।
—————————————

-“শুনছো, আনোয়ারের মা! দীঘিতে নাকি আইজ আরেকটা লা’শ ফাওন গেছে। শহুরে লোক গো। বেডার কতবড় বুকের পাঠা? ভ’য়ড’র থুইয়া দীঘিতে সাঁতার কাটতে নামছে। আর জীবিত ফেরে নাই।”

আৎকে উঠলেন আনোয়ারের মা।

-“কি কন বুবু? দীঘিতে আরও একটা লা’শ?”

#চলবে………….

#শেষ_পাতায়_সামাপ্তি
#লেখিকাঃজিন্নাত_চৌধুরী_হাবিবা
#সূচনা_পর্ব

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here