তার_শহরে পর্ব ২৭

0
461

#তার_শহরে

লেখা : ইসরাত সিনহা
পার্ট : ২৭


-কি বলছো ভাবি তুমি এসব , আনিতা কখন বিয়ে করে নিল ?



মিসেস এনজেলা শান্ত গলায় বললেন ,
-একমাস আগে আদিল আনিতা কে বিয়ে করেছে ।
মিসেস আলেয়া এবার চিৎকার করে উঠে বললেন ,
-কি একমাস আগে বিয়ে করেছে ওরা , আর আজ তুমি আমায় বলছো ভাবি ?
মিসেস এনজেলা গম্ভীর কন্ঠে বলে উঠলেন ,
-আলেয়া শুনো আদিল আনিতা একে অপর কে ভালবাসে । ভালবেসে তারা বিয়েটা করেছে ।
মিসেস আলেয়া খানিক রেগে গিয়ে বললেন ,
-ভালো কথা ভাবি ছেলে মেয়ে দুজন দুজন কে ভালবাসে , কিন্তু আমার প্রশ্ন হচ্ছে এটা আমাদের বললে কি আমরা বাঁধা দিতাম ? সব বাবা-মা ই চায় তার সন্তান সুখে থাকুক ইভেন আমরাও সেটাই চাই।
ভাবি আমরা কি চাইনা আমাদের আনিতা সুখে থাকুক ভালো থাকুক ? আমার খারাফ লাগছে ভাবি একটা কথা ভেবে আনিতা কেন আমাদের কে কিছু বলল না , আমরা কি ওর কথা ফেলে দিতাম ?
মিসেস এনজেলা নরম গলায় বললেন ,
-আনিতার কোনো দোষ নেই আলেয়া এ ব্যাপারে , সব দোষ আদিলের ও ই তোমাদের বলতে নিষেধ করেছিল । আদিল বলে ছিল বিয়ের একমাস হলে তোমাদের জানাতে তাই আজ জানালাম ।
আনিতার মা মিসেস আলেয়া রুুক্ষ গলায় বলে উঠলেন ,
-ভাবি তুমি আনিতার কাছে ফোনটা দাও , এখন যা কথা হবে ওর সাথে হবে । আমি আনিতার কাছ থেকে জানতে চাই আমরা ওর বাবা-মা নই , যে এতো বড় ডিসিশন নিয়ে ফেললো আর আমাদের কে জানানোর প্রয়োজন টুকুও মনে করল না ?
মিসেস এনজেলা ভালো করে বুঝতে পারছেন মিসেস আলেয়া খুব ক্ষেপে আছেন উনার মেয়ের উপর । তিনি বেশ ভয় পাচ্ছেন মিসেস আলেয়ার কথা ভেবে না জানি এখন আনিতা কে কি বলেন ?
মিসেস এনজেলার ভাবনায় ছেদ পড়ল আনিতার মায়ের কথায় , মিসেস আলেয়া বলছেন ,
-কি হলো ভাবি আনিতা কে ডাক দাও , নাকি ও বাসায় নেই ?
মিসেস এনজেলা থতমত গলায় বললেন ,
-হ্যাঁ , হ্যাঁ আলেয়া মামনি কে ডাকছি ওয়েট করো মামনি বাসায়’ই আছে । আজ ভার্সিটি যায়নি ।
মিসেস এনজেলা একটু উঁচু স্বরে আনিতা কে ডাক দিলেন । আনিতা উনার গলার স্বর শুনতে পেয়ে তাড়াতাড়ি পায়ে নিচে নামলো । নেমেই মিসেস এনজেলা কে উদ্দেশ্য করে বলে উঠল ,
-মম আমায় ডাক ছিলে ?
মিসেস এনজেলা চিন্তিত ভঙ্গিতে বললেন ,
-হ্যাঁ , মামনি তোমায় ডাক ছিলাম । তোমার মা ফোনে তোমার সাথে কথা বলতে চায় । মিসেস এনজেলার চিন্তিত মুখ দেখেই আনিতা আন্দাজ করতে পারছে কিছু একটা তো হয়েছে ।
আনিতা ভয় পাচ্ছে কাঁপা কাঁপা হাতে ফোন নিলো , মিসেস এনজেলার দিকে অসহায় চোখে তাকিয়ে আছে আনিতা ।
মিসেস এনজেলা ইশারায় আনিতা কে বললেন ,
-ডোন্ট ওয়ারি ।
আনিতা ভয়ার্ত কন্ঠে বলল ,
-হ্যালো , মা কেমন আছো ?
মিসেস আলেয়া আনিতার ভয় পাওয়া গলার আওয়াজ বুঝতে পারলেন , মিসেস আলেয়া মুখ টিপে হেসে আবার গম্ভীর গলায় বললেন ,
-আমরা ভালো আছি আনিতা , তুমিও নিশ্চয়ই ভালো আছো ? ভালো থাকবেই না বা কেন ?
আনিতা ভয়ে ভয়ে বলল ,
-মা তুমি এরকম কথা বলছো কেন ? তোমার শরীর ঠিক আছে ?
মিসেস আলেয়া খানিকটা রাগি কন্ঠে বলে উঠলেন ,
-তো আনিতা তোমার সাথে আর কি রকম কথা বলব , তুমি যা করেছো তারপরে তোমার সাথে আর কিভাবে কথা বলা যায় ?
আনিতা বুঝে গেছে তার মা কোন বিষয়টা ইঙ্গিত করছেন , আনিতার বুক মূর্হতেই অজানা ভয়ে কেঁপে উঠল । ভয় হচ্ছে আনিতার তার আদিল কে হারানোর , সে তো আদিল নামক ব্যাক্তি কে ছাড়া থাকতে পারবে না । যদি এখন তার মা বলেন আদিল কে ছেড়ে দিতে এই ভেবে আনিতার অবচেতন মন কুঁকড়িয়ে উঠছে বারংবার ।
আনিতা এক বুক ভয় আর কান্না জড়ানো গলায় বলল ,
-মা আমি সরি , মা আমি উনাকে ভালবাসি । আনিতা কান্নার জন্য কথা বলতে পারছে না বার বার কথা গুলো জরিয়ে যাচ্ছে । তারপর আবার আনিতা অনুনয়ের সুরে বলল , মা প্লিজ উনাকে ছেড়ে যাবার কথা বলো না । তাহলে যে তোমার আনিতা বাঁচবে না ।
মিসেস এনজেলা কেঁদে দিলেন আনিতার কান্না দেখে , তিনি খুশিও হলেন আদিলের প্রতি আনিতার এমন ভালোবাসা দেখে ।
মিসেস আলেয়া ফোনের অপর পাশে নিঃশব্দে হেসে যাচ্ছেন মেয়ের এমন পাগলামো দেখে । মিসেস আলেয়া স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে নিজ মনে বললেন ,
-যাক এই প্রথম আমার মেয়ে কাউকে ভালোবাসল , তাও আবার আমরা যে ছেলে কে মনে মনে পছন্দ করতাম ওর জন্য তাকেই বিয়ে করেছে ।
ফোনের দু পাশেই নিরবতা , এই নিরবতা ভেঙে কান্না করা গলায় আনিতাই বলল ,
-মা কিছু বলছো না যে ?
কিন্তু তিনি বুঝতে দিলেন না আনিতা কে কিছু , তাই আবার মিসেস আলেয়া গম্ভীর কণ্ঠে বলে উঠলেন ,
-আমি কি বলব আনিতা ? আমি তোমার বাবার সাথে এ বিষয় নিয়ে আলোচনা করে দেখব , তোমার বাবা কি বলেন ? তুমি তো আমার একার মেয়ে না তোমার বাবারও মেয়ে । তাই উনার সঙ্গে কথা বলাটা জরুরি । উনি যা বলেন তাই তোমার মানতে হবে । বলেই মিসেস আলেয়া এখন রাখছি বলে লাইন কেটে দিলেন ।
আনিতার মা ফোন রাখার পরেই আনিতা কান্নায় ভেঙে পড়ল । আনিতার একটাই ভয় যদি তার মা-বাবা বলেন #তার_শহরে আর থাকতে হবে না, চিরদিনের জন্য চলে যেতে হবে । মিসেস এনজেলা আনিতার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে শান্ত ভাবে বললেন ,
-মামনি কি বলেছে আলেয়া আমায় বলো , কাঁদছো কেন পাগলি মেয়ে ?
আনিতা মিসেস এনজেলা কে ঝাপটে ধরে কান্না করতে করতে বলল ,
-মম, মা বলেছেন বাবা যা বলবেন আমাকে তাই করতে হবে । আমার ভয় লাগছে মম বাবা যদি আমাদের বিয়েটা না মানেন ?
মিসেস এনজেলা জোর গলায় বলে উঠলেন ,
-তোমার বাবা আলবাত মানবেন , তোমার বাবা কে আমার চিনা আছে । তোমার বাবা আনিশা কে আর তোমাকে সুখি দেখতে চান ।
আমার আদিল তোমার অযোগ্য নয় মামনি , কাজেই আদিল কে রিজেক্ট করার কোনো যথাযথ কারণ আমি খুঁজে পাচ্ছি না । তুমি চিন্তা করো না , আমি তোমার পাপা কে বলছি তোমার মা-বাবার সাথে কথা বলতে । যাও রুমে যাও কান্না চিন্তা কোনোটাই করো না । আমরা দেখছি,
আনিতা রুমে এসে আদিল কে কল করলো , আদিল আনিতার কল দেখেই মুচকি হেসে রিসিভ করল ।
আদিল হেসে আনিতা কে বলল ,
-মিসেস মেহবুব কথা বলছো না কেন , মিস করছো বুঝি ?
আদিলের গলা শুনে আনিতা ফুফিয়ে কেঁদে উঠল ।
আদিল আনিতার কান্নার শব্দ শুনে , ভয়ার্ত গলায় বলে উঠল ,
-আনি তোমার কি হয়েছে তুমি কাঁদছো কেন ? তোমার শরীর ঠিক আছে ?
আনিতার কান্নার বেগ আরো বেরে গেল , আনিতা কান্না মাখা গলায় বলল ,
-আপনি বাসায় আসুন আমার ভালো লাগছে না ।
আদিল বুঝতে পারছে না আনিতার কি হয়েছে , আদিল উত্তেজিত হয়ে বলল ,
-আমার লক্ষী বউ তুমি একদম কাঁদবা না আমি আসছি এক্ষুনি । তোমার কি হয়েছে আনি ?
আনিতা কোনো উত্তর না দিয়ে ফোন কেটে দিল ।
আনিতার হৃদয়ে আদিল কে হারিয়ে ফেলার ভয় ঝেকে বসেছে । তার কেবল মনে হচ্ছে এই বুঝি তার বাবা ফোন করে বলেন ,
-আনিতা তুমি চলে এসো , তোমাকে আর কানাডা থাকতে হবে না ।
আনিতা এসব ভাবছে আর চোখের জল বিসর্জন দিচ্ছে । আনিতা নিজের মনেই বলে উঠল ,
-আমি যে পারবনা উনাকে ছাড়া থাকতে , #তার_শহরে ভালবাসায় আঁটকা পড়ে গেছে আমার মন । আনিতা কাঁদতে কাঁদতে ফ্লোরে বসে পড়ল ।



আদিল দ্রুত ড্রাইভ করছে , তার কোনো দিকে কোনো হুঁশ নেই । তার মন মস্তিষ্ক ছুড়ে একটাই চিন্তা আনি এভাবে কাঁদলো কেন ? আনিতার চিন্তায় আদিলের মাথা ফাঁকা ফাঁকা লাগছে , আদিল যেন চিন্তা শূন্য হয়ে পড়েছে ।
১ ঘন্টার ভেতর আদিল বাসায় পৌঁছালো ,
মিসেস এনজেলা জনাব আলী মেহবুবের সাথে এই বিষয় নিয়ে ডিসকাসড করছেন তাদের রুমে ।
আদিল দরজার কাছে এসেই জোরে কলিং বেল চাপ দিল , কাজের লোক দ্রুত পায়ে দরজা খুলে দিলো ।
আদিল ঝড়েরবেগে ভেতরে প্রবেশ করে তাদের রুমের দিকে রওয়ানা হলো ।
আদিল ভয়ে ভয়ে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠছে , তার একটাই প্রার্থনা আনিতা যেন ঠিক থাকে ।
আদিল রুমে ঢুকে চারিদিকে চোখ বুলিয়ে দেখলো আনিতা কোথাও নেই , অজানা ভয়ে আদিলরে বুক ধক করে কেঁপে উঠল ।
হঠাৎ আদিলের চোখ গেল রুমের এক কোণায় আনিতা দু’হাঁটোর উপর মাথা রেখে নিচের দিকে তাকিয়ে কান্না করছে ।
আদিল এক মূূর্হত দেরি না করে চিৎকার করে বলে উঠল ,
-আনি তোমার কি হয়েছে , তুমি ফ্লোরে বসে আছো কেন ?
আদিলের গলা শুনতে পেয়ে আনিতা বসা থেকে উঠে দৌঁড়ে আদিলের বুকে ঝাঁপিয়ে পড়ে হাউমাউ করে কেঁদে উঠল ।
আদিল আনিতা কে বুকের সাথে শক্ত করে চেপে ধরে ভয় মাখা কন্ঠে বলে উঠল ,
-আনি তোমার কি হয়েছে , আমাকে বলো প্লিজ ?
আমার খুব ভয় হচ্ছে আনি তুমি কান্না থামাও ।
আনিতা বাচ্চাদের মতো কান্না করে বলতে লাগল ,
-আমি আপনাকে ছেড়ে কোথাও যাবো না , আমি আপনাকে অনেক অনেক ভালবাসি ।
আনিতার মুখে ছেড়ে যাওয়ার কথা শুনে আদিল চমকে উঠল , অজানা আশংকায় তার বুক কেঁপে উঠছে । আদিলের বুক ভারি হয়ে আসছে ।
আদিল কাঁপা গলায় আনিতার দিকে প্রশ্ন ছুড়ে দিল ,
-আমাকে ছেড়ে যাওয়ার কথা তোমাকে কে বলেছে আনি ? আর হঠাৎ ই বা আমাকে ছেড়ে যাওয়ার কথা উঠছে কেন ?
আনিতা আদিল কে আরো শক্ত করে জরিয়ে ধরে , মিসেস আলেয়ার সাথে যা যা কথা হয়েছে সব বলল।
আদিল সব কিছু শুনে শান্ত সুরে বলল ,
-আনি তুমি আগে শান্ত হও , চোখ মুখের কি অবস্থা করেছো ? কান্না করে একদম চোখ মুখ ফুলিয়ে ফেলেছো ।
আদিল আনিতার কপালে গভীর ভাবে চুমু এঁকে দিল । আনিতা আদিলের দিকে কান্না চোখে তাকিয়ে বলল ,
-আমি আপনাকে রেখে কোথাও যাব না ।
আদিল বাঁকা হেসে আনিতা কে বুকে আগলে ধরে বলে উঠল ,
-তা মিসেস মেহবুব আমাকে কি বেশি ভালোবেসে ফেলেছেন ?
আদিলের প্রশ্নে আনিতা রেগে গেল , রাগি কন্ঠে বলল ,
-এটা কোন ধরনের প্রশ্ন ? আপনি কি চান আমি আপনাকে সত্যি ছেড়ে চলে যাই ?
আদিল রাগে চিৎকার করে আনিতা কে বুক থেকে সরিয়ে দিয়ে বলে উঠল ,
-তুমি কি বললে আনি , তুমি আমাকে ছেড়ে চলে যাবে ?
আনিতা ভয় পেয়ে গেল আদিলের হঠাৎ রাগ দেখে ।
আদিল আবার রেগেমেগে বলল ,
-এই মেয়ে যদি আর কোনো দিন শুনেছি আমাকে ছেড়ে যাওয়ার কথা মুখে এনেছো তাহলে খুব খারাপ হবে । আমি তোমায় যেতে দিলে তো তুমি যাবে ? আমি যতদিন বাঁচব ততদিন তুমি আমার হয়ে থাকবে , মাইন্ড ইট !
আনিতা আদিল কে জড়িয়ে ধরল , ধরে অপরাধীর স্বরে বলল ,
-আই এম সরি , আর কখনো এরকম বলব না । প্লিজ রাগ করবেন না ।
আদিলের রাগ নিমিষেই হাওয়া হয়ে গেল আনিতার জড়িয়ে ধরায় ।
আদিল মুচকি হেসে বলে উঠল ,
-হুম ঠিক আছে , তবে আর যেন এরকম কথা না শুনি । যাও ফ্রেশ হয়ে আসো , আমি মম-পাপার রুমে যাচ্ছি । তুমি এতো চিন্তা করো না তো।
আনিতা হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানালো ।
আদিল তার মম-পাপার রুমের দিকে পা বাড়াল আর আনিতা ওয়াশরুমের দিকে ।


আদিল তার মম-পাপার দরজার সামনে দাঁড়িয়ে বলল ,
-মে আই কামিং ?
জনাব আলী মেহবুব হাল্কা হেসে বললেন ,
-এসো আদিল ভেতরে এসো । অফিস থেকে চলে এসেছো নাকি ?
আদিল ম্লান হেসে বলল ,
-হ্যাঁ , পাপা একটা দরকারে আসতে হলো ।
মিসেস এনজেলা মুচকি হেসে বললেন ,
-আদিল তোমাকে নিশ্চয়ই মামনি ফোন করে আসতে বলেছে ?
আদিল কিঞ্চিৎ লাজুক হেসে মিসেস এনজেলার দিকে তাকিয়ে বলল ,
-মম তুমি কি ফুফি কে বলে ছিলে ?
মিসেস এনজেলা একটু নড়েচড়ে বসে গম্ভীর গলায় বলে উঠলেন ,
-হ্যাঁ , আদিল বলেছিলাম । তোমার ফুফি তো রাগ করলো তোমাদের বিয়ের কথা শুনে ।
আদিল জনাব আলী মেহবুবের পায়ের কাছে হাঁটু গেড়ে বসে অনুরোধের কন্ঠে বলল ,
-পাপা প্লিজ তুমি ফুফি কে মেনেজ করো , আমি সিউর ফুফি তোমার কথা শুনবেন । পাপা আনি কে ছেড়ে থাকা আমার পক্ষে সম্ভব না । বিকোজ আই লাভ হিম পাপা ।
জনাব আলী মেহবুব আর মিসেস এনজেলা হেঁসে কুটিকুটি হচ্ছেন আদিলের পাগলামো দেখে ।
জনাব আলী মেহবুব হেসে আদিল কে বললেন ,
-আদিল উঠে দাঁড়াও , আলেয়া আর তার স্বামী তো তোমাকে অনেক আগে থেকেই মেয়ের জামাই হিসাবে পছন্দ করতো । কিন্তু আমাদের কিছু বলেনি কারণ আনিতা যদি তোমায় পছন্দ না করে এরজন্য ।
তবে খানিক রাগ করছে তোমরা না জানিয়ে বিয়ে করেছো বলে । এটা তো স্বাভাবিক ব্যাপার আদিল ওরা তো রাগ করবেন , আমি আনিতার বাবা -মা কে পুরো ঘটনা খুলে বলেছি । তারা আর দ্বিমত করেনি ।
আদিল আনন্দে আপ্লূত হয়ে জনাব আলী মেহবুব কে জড়িয়ে ধরে বলল ,
-পাপা তোমাকে অনেক ধন্যবাদ , আমি ফুফির কাছে মাফ চেয়ে নিব । আর তোমরা তো জানোই কেন আমি সেদিন আনি কে বিয়ে করে নিয়ে ছিলাম ?
আদিলের খুশি দেখে তার মম-পাপাও খুশি হলেন ।
আদিল তার পাপা কে ছেড়ে দিয়ে চিন্তিত ভাবে বলল ,
-পাপা ফুফিরা কি বিয়ের কথা কিছু বলেছেন ? মানে উনারা কানাডা আসবেন নাকি আমরা সবাই বাংলাদেশে যাবো ?
মিসেস এনজেলা বলে উঠলেন ,
-তোমার ফুফি আর আংকেল বলেছেন , তোমরা দুজনে যদি বলো কানাডায় বিয়ের অনুষ্ঠান করতে তাহলেও তারা রাজি , আনিতার ফ্যামেলি কানাডা আসবে । আর যদি বলো বাংলাদেশে যেয়ে অনুষ্ঠান করতে তাহলেও তারা রাজি । এখন তোমরা ডিসাইড করো কি করবে?
আদিল তার মম-পাপার দিকে প্রশ্নে ছুড়ে দিল ,
-মম-পাপা এ বিষয়ে তোমাদের কি মতামত আগে বলো ?
জনাব আলী মেহবুব হাসি মুখে বললেন ,
-তোমরা যা চাও আদিল তাই হবে , আমরা তোমাদের ইচ্ছা কে আগে প্রাধান্য দিবো ।
আদিল তার পাপা কে বলল ,
-ঠিক আছে পাপা, আমি আর আনি মিলে ডিসাইড করে তোমাদের জানাবনে । বলেই আদিল তার রুমে যাওয়ার জন্য বেরিয়ে গেলো ।
এর মধ্যে আনিতা ফ্রেশ হয়ে বাহিরে এসে দেখলো রুমে সাহিল দাঁড়িয়ে আছে , কিছুটা চিন্তিত দেখাচ্ছে তাকে । হঠাৎ সাহিল কে তাদের রুমে দেখে আনিতা ভ্র কুঁচকে তাকাল সাহিলের দিকে ।
(চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here