Mysterious Part 7

0
330

Mysterious
Part-7
Romoni

হঠাৎ পেছন থেকে কেউ এসে ইফানের তায়াশাকে তলোয়ার আবদ্ধকর ধরে রাখা হাত টান দিয়ে তায়াশার গলা থেকে সরিয়ে দেয়, ইফানের খেয়াল সে দিকে স্থগিত হওয়ার ফলে, তায়াশার অন্য হাত থেকে ইফানের হাত আলগা হয়ে যায়।
আর সে ব্যক্তি তায়াশাকে ইফানের থেকে দূরে সরিয়ে ইফানকে ধাক্কা দিয়ে নিচে ফেলে,আর তায়াশার হাত থেকে তলোয়ারটা নিচে পড়ে যায়।
সেই ব্যাক্তি তলোয়ারটা তুলে আবার ইফানের ঘাড়ের এক পাশে ঠেকিয়ে দেয়।

ইফান সে ব্যাক্তিটির দিকে তাকিয়ে দেখে, লোকটির মুখে একটা কালো কাপড় বাধা।
হিংস্র দৃষ্টিপাত ময় চোখ দুটো উন্মুক্ত।
লম্বায় ৮ ফুটের উপরে, পড়নে পা অব্ধি লম্বা, হাফ হাতা একটা আদিম যুগের পুরুষদের জামার মতো দেখতে একটা জামা,আর পেছনে চাদর জাতীয় একটা কাপড় কাঁধের অংশের জামার সাথে আটকানো,চুল গুলো ঘাড় অব্ধি হাওয়ায় দুলছে।
লোকটা মাথা নিচু করে, নিজের মুখে বাঁধা থাকা কাপড়টা এক টানে খুলে ফেলে দিয়ে ইফানের দিকে মুখ তুলে তাকায়।
ইফান লোকটিকে দেখে স্তব্ধ হয়ে আছে,ইফান কিছুক্ষণ লোকটির দিকে তাকিয়ে থেকে বলে ওঠে,

–কিং?

লোকটি ঠোঁট ব্যাতিত সম্পূর্ণ মুখে গম্ভীরতা রেখে, ঠোটের কোনে স্মিত হাসি এনে বলে,

–কেনো রাফিম হিন, আশা করেন নি আমায় তাই না?

–এটা কি করে সম্ভব?
কিং আপনি কি করে আসতে পারেন? এখনো পূর্নিমার দুই দিন তিন রাত বাকি। (ইফান)

–নিজেকে খুব ধূর্ত মনে করেন আপনি তাই না? আপনি ভুলে যাবেন না রাফিম হিন, আপনার বয়স কিন্তু এখনো অব্ধি আমার সন্তানতুল্য।
বুদ্ধি বিচক্ষণতার দিক দিয়ে আমি আপনার থেকে নিশ্চই এগিয়ে আছি।
দুনিয়ার বাস্তবতা, মানুষের ধূর্ততার সম্মুখীন আমি আপনার থেকে বেশিই হয়েছি।

আর শত্রু পক্ষকে কখনো দুর্বল ভাবার ভুলটা করতে নেই, তাহলে সেটার পরিনাম খুব ভয়ঙ্কর হতে পারে, কিন্তু সে ভুলটা আপনি করে ফেলেছেন।

একটু ভেবে দেখুন রাফিম হিন ইয়ান আর তায়াশার কথোপকথনের মুহুর্তে তায়াশা বলেছিলো পূর্নিমার এখনো দুই দিন তিনরাত বাকি।
আপনার এই প্রশ্নটি একবারও মনে হলো না যে, এটা কিভাবে সম্ভব?
দুই দিন তিনরাত পূর্নতা পাওয়ার পর, পূর্নিমার চাঁদ প্রকাশিত কিভাবে হবে?
বুঝতে পারলেন না তাই না? আমিই বোঝাই তাহলে আপনাকে।
আমার কথা গুলো মনোযোগ সহকারে শুনুন রাফিম হিন;

তায়াশা কাল রাতের শেষ প্রহরে বলেছিলো পূর্নিমার এখনো দুই দিন তিন রাত বাকি।
কাল রাত পার হওয়ার পর তিনরাত থেকে এক রাত শেষ, আজ দিন পার হলে দুই দিন থেকে একদিন শেষ।
আর আজ রাত পার হলে কাঙ্খিত তিনরাত থেকে দুই রাত শেষ হয়ে যাবে।
আর আগামীকালের দিন শেষে রাত নামার পর আরো একদিন শেষ।
রাত ১২ টার পর নতুন সময় সূচনা কালীন তিনরাত থেকে তৃতীয় রাতটিও শেষ হবে।
তাহলে রাতের পরবর্তী কালীন সময় হয় দিন।
আর তায়াশা তো তিন রাতের কথা বলেছে, আর রাত শেষ হওয়ার পর তো দিনের সূচনা হয়, আর দিনে নিশ্চই পূর্নিমার সম্পূর্ণ প্রকাশ ঘটে না, পূর্নিমার চাঁদ নিশ্চই দিবস প্রহরে আলো প্রকাশ করবেনা।

ইফানের কিং এর বলা যুক্তি গুলো শোনার পর নিজের উপরেই নিজের রাগ হচ্ছে।

( কাল রাতে যখন তায়াশা আর ইয়ান lone island এ আসে, তখন ইফানও ওদের পিছু নেয়, আর ইফানের এভাবে পিছু নেওয়াটা তায়াশা আর ইয়ান বুঝে যায়, কিন্তু সরাসরি ইফানকে কিছু বলে না।
দুজনেই কৌশলে ইফানকে বিভ্রান্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়।

ইয়ান আর তায়াশা যখন কথা বলছিলো তখন ইফান দরজার বাহিরে দাঁড়িয়ে ইফান আর তায়াশার পরবর্তী কালীন পরিকল্পনার কথা জানার চেষ্টা করছিলো।
তায়াশা ইফানকে বিভ্রান্ত করতে বলে, পূর্নিমার আরো দুই দিন তিনরাত বাকি।
তবে তায়াশা নিশ্চিত ছিলো না যে, ইফান বিভ্রান্ত হবে কিনা?
নাকি তায়াশার উদ্দেশ্য বুঝে যাবে?
কিন্তু ইফান যে এতোটা বোকামির পরিচয় দিবে তা তায়াশার ধারনার বাহিরে ছিলো। )

( আর ইয়ান যখন চেইনটা নিয়ে Invisible cave এ যাওয়ার উদ্দেশ্য পা বাড়ায়, তখন ইফান তা বুঝতে পেরে সেখান থেকে চলে যায়।
আর সেই সুযোগে ইয়ান আবার ফিরে এসে চেইনটা তায়াশাকে দিয়ে বলে, কিং কে পড়িয়ে দিতে,তায়াশা চেইনটা নিয়ে কিং এর গলায় পড়িয়ে দেয়, কেনোনা পূর্ন শক্তি কিং কে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য পূর্নিমার আলোর প্রতিস্ফুটিত প্রয়োজন নেই,তায়াশাকে প্রয়োজন।

তারপর ইয়ান একই রকমের দেখতে একটা অন্য চেইন পকেট থেকে বের করে নিয়ে বেরিয়ে চলে যায়।

আর অন্য দিকে ইফান ভাবে ইয়ানের invisible cave এ নিয়ে যাওয়া চেইনটাই আসল চেইন।
আর ইফান চেয়েছিলো এই চেইনটা কিং এর গলায় ওঠার আগেই তায়াশাকে নিয়ে এখান থেকে চলে যাবে, আর চেইনটাও তায়াশার কাছ থেকে আদায় করে নেবে।
কেনোনা এই চেইন আর ব্ল্যাক পেপার তায়াশা বিহীন কিং এর গলায় পড়ালে চেইনটার পাওয়ার সক্রিয় হবে না, আর কিং কেও তার পূর্ণ শক্তি ফিরিয়ে দেওয়া যাবে না।
তাই আজ ইফান নিজের পাওয়ার লকেট ঠিক করে lone island এ আসে।
আর ইফান আসার সাথে সাথেই হঠাৎ কোথা থেকে যেনো ইয়ান এসে উদয় হয় ইফানের সামনে।
ইয়ানকে দেখা মাএই ইফানের মুখে বিরক্তির আভাস দেখা যায়,কিন্তু ইয়ানের মুখে কোনো বিরক্তির ছাপ নেই, ইয়ানের ঠোঁটে ঝুলে আছে সেই রহস্যময় হাসি।

–রাফিম হিন, তায়াশাকে নিয়ে যেতে এসেছেন? (ইয়ান)

–জানোই যখন তখন আবার প্রশ্ন করছো কেনো? (ইফান)

— আচ্ছা আপনি একটু অপেক্ষা করুন আমি তায়াশাকে নিয়ে আসছি। (ইয়ান)

–মানেহ? (ইফান)

ইফানের প্রশ্নের উওর না দিয়েই ইয়ান চলে যায় তায়াশাকে আনতে।
ইয়ানের এমন হটকারি কাজ কর্মে সবাই-ই বিচলিত হয়ে পড়ে,ইয়ানকে সহজে কেউ বুঝতে পারে না ওর এই ধরণের ব্যাবহারের কারনে।
আর অনেকে রেগেও যায় ইয়ানের উপর, তাদের তালিকা থেকে তায়াশা আর ইফানও বাদ পড়ে নি।
ইফানের ইয়ানের ওপর ক্ষোভ থাকার একটি প্রধান হেতু ইয়ানের এহেন খামখেয়ালী আচরন।

ইফান বিরক্তি মাখা একটা নিশ্বাস ফেলে চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে দ্বীপের মাঝে।
এদিকে প্রায় অনেক্ক্ষণ হয়ে গেছে ইয়ান তায়াশাকে আনতে গেছে,এখনো ফিরে আসে নি, ইফানের রাগ ক্রমশ বাড়ছে।
কিন্তু ইফানের এখানে অপেক্ষা করা ছাড়া আর কোনো উপায়ও নেই, এখন কোনো ঝামেলা করা মানেই নিজের উদ্দেশ্য সফলে আরো পিছিয়ে যাওয়া।
অবশেষে ইফানের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে ইয়ান তায়াশাকে নিয়ে আসে। )

ইফানকে চুপ করে থাকতে দেখে কিং আবার বলা শুরু করে,কি হলো রাফিম হিন, কিছু বলবেন না?
নিয়ে যাবেন না তায়াশাকে?

–কিং আমায় ছাড়ুন, আর তায়াশাকে নিয়ে যেতে দিন, আপনাদের উদ্দেশ্য আমি পূরন হতে দিবো না।
আর তায়াশা আমি তোমাকে বারবার বলছি তুমি ইয়ানকে বিশ্বাস কোরো না, তুমি কি বুঝতে পারছো না?
আরে আমি ভুল করেছি তার মানে এই নয় যে আমি তোমায় ভালোবাসি না, আমি তোমার ক্ষতি চাই না তায়াশা, শেষ বারের মতো আমার ওপর একটু আস্থা রেখে দেখো, ঠকাবো না তোমায় কথা দিলাম।

কথা গুলো বলার সময় ইফানের চোখে, ইফানের নিজের বলা কথাগুলোর প্রতি এক আত্মবিশ্বাস দেখেছে তায়াশা।
এক মুহুর্তের জন্য হলেও ইফানকে বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করছে তায়াশার।
আর তায়াশার মনে করা নাড়াতে শুরু করে ইফানের সেই কথাটা,”ইয়ানকে বিশ্বাস কোরো না, ইয়ান তোমার সামনে নিজেকে যেভাবে উপস্থাপন করে, ও আসলে তেমন নয়।”

এতোদিন তায়াশা ভাবতো ইফান হয়তো মিথ্যা বলছে তায়াশাকে ইয়ানের ব্যাপারে।
তবে ইফানের আসল পরিচয় জানার পর থেকে তায়াশা ইফানের দিকে তাকিয়ে ইফানের কথা শোনেনি, বা বলেনি।
কারন…

To be continue…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here