Mysterious Part 6

0
549

Mysterious
Part-6
Romoni

ইফান নিজের ভালো চাও তো চলে যাও এখান থেকে, না হলে আমি তোমার ক্ষতি করতে বাধ্য হবো। (তায়াশা)

–তায়াশা তুমি আমার ক্ষতি করবে? তুমি না বলতে তুমি আমায় ভালোবাসো।
আর তুমি এখন আমার ক্ষতি করবে বলছো?

দেখো তায়াশা, আমি যা করবো আমাদের ভালোর জন্যই করবো।
আর আমি যদি একবার All devil power পেয়ে যাই তাহলে, সমস্ত Invisible Earth এর ক্ষমতা আমার হাতে থাকবে, আর আমার কুইন হয়ে থাকবে তুমি, Invisible Earth এর সবাই আমাদের দাসত্ব করবে।
তাই যেভাবেই হোক আমার ওই পাওয়ারও চাই আর তোমাকেও চাই।
আর আমি যা চাই তা আমি নিয়েই ছাড়ি,আর তোমরা যতই চেষ্টা করো না কেনো, আমায় আটকাতে পারবে না, তাই এসব বৃথা চেষ্টা করা বন্ধ করে দাও। (ইফান)

তাই নাকি?
তাহলে নিয়ে দেখান দেখি তায়াশাকে, আর নিজের নিয়ন্ত্রণে এনে দেখান তো All Invisible power.
পেছন থেকে ইয়ান ইফানের উদ্দেশ্য বলে।

–দেখো ইয়া……..
ইফান পেছনে ঘুরে ইয়ানকে কিছু বলতে গিয়েও থেমে যায়।
ইফান আর তায়াশা ইয়ানকে দেখে কি বলবে বুঝতে পারছে না, এমন বিপদজনক একটা মুহুর্তে ইয়ান একটা বড় পাথরের সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে হাসছে।
আর হাতে একটা triochilidae apodiformes(হার্মিং বার্ড এর বৈজ্ঞানিক নাম),নিয়ে দুষ্টুমি করছে।

তায়াশা রেগে ইয়ানের সামনে গিয়ে বলে, এসবের মানে কি ইয়ান স্যার?
আপনি আমায় এখানে একা রেখে কোথায় চলে গেছিলেন, আর হঠাৎ কোথা থেকে এসেছেন?
আর এমন একটা সময় আপনি হঠ্যাৎ নিরুদ্দেশ হয়ে গেছেন, আবার হঠাৎ করেই এখন এখানে এসে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দুষ্টুমি করছেন।
আসলে আপনি চান টা কি বলুন তো?
আপনার সমস্যাটা কোথায়?
স্বাভাবিক নিয়মে কি কোনো কাজ করতে পারেন না?
এতো হেয়ালির মানে কি?
|
|
|

আজ সকালে তায়াশা ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে কলেজে চলে যায়, তায়াশার সামনে ফাইনাল পরীক্ষা, তার জন্য কিছু ফরমালিটি’স পুরন করতে হবে।

তায়াশা কলেজে গিয়ে প্রয়োজনীয় কাজ সেরে হেঁটে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলো, আর ইফানের সাথে কাটানো মুহুর্ত গুলো বারবার তায়াশার মনে কড়া নাড়ছিলো।
আগে প্রতিদিন ইফান আর তায়াশা এই রাস্তা দিয়েই একসাথে যাতায়াত করতো, এই চিরচেনা পথ গুলো একসময় দুজনে একসাথে পারি দিয়েছে, কতো ছোট ছোট স্মৃতি মিশে আছে এই স্থানে,অথচ আজ সেই একই পথে তায়াশা একাকিত্বের সঙ্গীনি।

এরমধ্যেই তায়াশার ভাবনায় ছেদ ঘটিয়ে, হঠাৎ কেউ তায়াশার হাত ধরে টেনে একটা গলিতে নিয়ে যায়, আর তায়াশা কিছু বোঝার আগেই সে হঠাৎ আগমনকারী তায়াশাকে নিয়ে অদৃশ্য হয়ে যায়।

অদৃশ্য হওয়ার পরমুহূর্তেই তায়াশা নিজেকে lone island এ আবিষ্কার করে।
তবে আজ Ione island এর অন্য প্রান্তে আছে তায়াশা, এই জায়গাটা সম্পূর্ণ নিরব, আশেপাশে ধুধু মাঠ।
আর পাশে তাকাতেই তায়াশা দেখতে পায় ইয়ানকে,তখন তায়াশা বুঝতে পারে ইয়ানই তায়াশাকে এখানে নিয়ে এসেছে।
আর তায়াশার চোখ ইয়ানের উপর পড়তেই ইয়ান সে স্থান থেকে নিমিষেই মিলিয়ে যায়।

তায়াশা ইয়ানের এমন ব্যাবহারের আকস্মিকতায় কিছু বুঝে ওঠার আগেই পেছন থেকে কেউ তায়াশার নাম সম্বোধন করে।
তায়াশা পেছনে ঘুরতেই ইফানের সম্মুখ হয়, ইফানকে দেখা মাএই তায়াশার চোখে মুখে এক ঘৃণ্যীয় ক্রোধ প্রকাশ পায়, তবে সেই ক্রোধেয় দৃষ্টির আড়ালে আছে এক অভিমানীয় দৃষ্টি।
তায়াশা ইফানের দিক থেকে চোখ সরিয়ে উল্টো দিকে ঘুরে বলে,

–ইফান তুমি এখানে?

— কেনো আসতে নেই?
আমার যা চাই তা না পাওয়া পর্যন্ত আমি থামবো না, শেষ অব্ধি চেষ্টা করে যাবো, আমার উদ্দেশ্য পূর্ণ করার প্রচেষ্টা। (ইফান)

এরপর ইফান এবং তায়াশার মাঝে এক প্রকার তর্ক বেঁধে যায়, এর মধ্যেই ফের আগমন ঘটে ইয়ান এর।

ইয়ান তায়াশার কথার উওর না দিয়ে, হাতে থাকা পাখিটাক পাথরের উপর বসিয়ে, তায়াশাকে পাশ কাটিয়ে ইফানের সামনে চলে যায়।

–কি হলো, এভাবে তাকিয়ে আছেন কেনো, রাফিম হিন?
নিয়ে যান আপনার তায়াশাকে আর আদায় করে নিন আপনার All Invisible power.
কথাগুলো বলে ইয়ান ইফানের সামনে থেকে সরে দাঁড়ায়।
যাতে ইফান তায়াশার কাছে যেতে পারে।

ইফান ইয়ানের এমন উদ্ভট আচরনে, ইয়ানের উপর রেগে আঘাত করতে যাবে, তার মাঝেই তায়াশা ঝড়ের বেগে এসে ইয়ানকে সরিয়ে দিয়ে, ইফানের পেছনে চলে আসে।
তারপর তায়াশা পেছন থেকে ইফানের বাম পায়ের হাঁটুর মধ্যবর্তী অংশে আঘাত করে।
আর ইফান তায়াশার এমন হঠাৎ আক্রমনে নিজেকে সামলাতে না পেরে, এক হাঁটু ভাজ করে নিচে বসে পড়ে।অতঃপর তায়াশা ইফানের সামনে এসে, একটা অদ্ভুদ গড়নের তলোয়ার ধরে ইফানের গলায়।

তলোয়ারটার গড়ন সেই ব্ল্যাক পেপারে থাকা নকশা আকৃতির।
তলোয়ারের নিচের অংশ কিছুটা চওড়া,মাঝের অংশে একটা লম্বা সরু স্টিল, যা খুব গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ না করলে বোঝা যাবে না যে,তলোয়ারের দুইপ্রান্ত সংযুক্ত করে রাখার জন্য মাঝে কোনো বস্তু আছে, মাঝখানটা খালি মনে হবে।
আর উপরের দিকে কিছুটা বাঁকানো।
তবে এই তলোয়ারের বিশেষত্ব এই মাঝের অংশটা, তলোয়ারটার প্রধান ব্যাবহারের স্থানই মাঝ অবস্থানে থাকা সরু স্টিলটা।
এই সরু স্থানের এক আঘাতে যে কারোর মৃত্যু অনিবার্য।

ইফান তায়াশার এমন রুপ দেখে অবাক চোখে তাকিয়ে আছে তায়াশার দিকে।
ইফান যেনো নিজের চোখকেই বিশ্বাস করতে পারছে না, যে তার ভালোবাসার মানুষটা আজ তাকে মেরে ফেলার জন্য, অস্ত্র তাক করে আছে তার দিকে।

–রাফিম হিন, তুমি তোমার উদ্দেশ্যেয়মান পাওয়ার কোনো দিনও পাবে না, অন্তত আমি বেঁচে থাকতে তো না।
অযথা আজ ঝামেলা করলে তুমি, সেদিন তো বলেছিলে, ব্ল্যাক পেপার না পেলে আমায় মেরে ফেলবে, অথচ কাল নিজেই কাপুরুষের মতো পালিয়ে গেছো ভয়ে।
এখন খুব খারাপ লাগছে তাই না, আমার এহেন আচরনে দেখে।
আমারও এই একই পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছিলো, যখন তুমি বলেছিলে আমায় মেরে ফেলার কথা।
নিজের উদ্যেশ্য সফল করার লোভে আমার মৃত্যুর কথা মুখে আনতেও তুমি কুন্ঠা বোধ করো নি।
আর আমার সেই ভয়ঙ্কর মৃত্যু কিনা তোমার হাতেই হবে,কথা গুলো বলতে একবারও ভাবোনি তাই না?(তায়াশা)

–তায়াশা, আমি মানছি আমি সেদিন তোমার সাথে ওই ভাবে কথা বলে অন্যায় করেছি।
কিন্তু তায়াশা তুমি ইয়ানকে বিশ্বাস করে নিজের জীবনের সব থেকে বড় ভুলটা করছো।
ইয়ান তোমার সামনে নিজেকে যেভাবে উপস্থাপন করে, ইয়ান আসলে তেমন না, ও যে ঠিক কতোটা জঘন্য আর ভয়ঙ্কর তা আমার থেকে ভালো আর কেউ জানে না। (ইয়ান)

–ইয়ান স্যার যেমনই হোক না কেনো, অন্তত তোমার মতো বিশ্বাসঘাতক, স্বার্থপর আর মিথ্যােবাদী নয়।
কোনো অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয় না।
কথাগুলো বলে তায়াশা ইফানের ঘাড় থেকে তলোয়ার নামিয়ে সরে দাঁড়ায়।
আর ইফানকে চলে যেতে বলে।

ইফান উঠে দাঁড়িয়ে চলে যাওয়ার উদ্দেশ্য অন্য দিকে ঘুরে পা বাড়ায়।
হঠাৎ করেই ইফান তায়াশার দিকে ঘুরে তায়াশার যে হাতে তলোয়ারটা আছে, সে হাত শক্ত করে ধরে তায়াশাকে উল্টো দিকে ঘুরিয়ে, তলোয়ারটা তায়াশার গলায় ঠেকায়, আর তায়াশার অন্য হাত পিছনে মুচরে ধরে।
ঘটনাটা এতো তাড়াতাড়ি ঘটেছে যে,তায়াশা বা ইয়ান কেউ বুঝতে পারেনি ইফান এমন কিছু করবে।

–রাফিম তায়াশাকে ছেড়ে দিন বলছি, নয়তো আজ খুব খারাপ কিছু হবে। (ইয়ান)

–তায়াশাকে না ছাড়লেও ভালো কিছু হবে না ইয়ান, আর আমার কাজে যদি বাঁধা দাও তাহলে এই তলোয়ার তায়াশার গলায় চলবে।
আর যদি তায়াশার ভালো চাও তো নিজের আসল পরিচয় দিয়ে দাও তায়াশাকে। (ইফান)

ইফানের এমন কাজে তায়াশা বাকরুদ্ধ হয়ে গেছে, তায়াশার মুখ থেকে কোনো কথা বের হচ্ছে না।
তবে তায়াশার চোখ আজ বাঁধ মানছে না, অঝোর ধারায় ভূ-পতিত হচ্ছে চোখে জমানো পানিগুলো।
কারোর কোনো কথাই তায়াশার কর্নপাত হচ্ছে না, এক মৃত পাথরের ন্যায় দাড়িয়ে আছে তায়াশা, নিজেকে মুক্ত করার চেষ্টাও নেই আজ।

–আমি রাজি রাফিম হিন (ইয়ান)

To be continue……

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here