Mysterious Part 19

0
243

Mysterious
Part -19
Romoni

চন্দ্রিমার আলোক রশ্নি মিলিয়ে যাওয়ার শেষ প্রহর পর্যন্ত ভ্যাম্পায়ার অনীকরা নিজেদের লকেট এ এবং ইয়ান কিং লকেট এ পাওয়ার সংগ্রহ করে নেয়।

তারপর ইয়ান ধীরে ধীরে চোখ খুলে, ছুরিকাঘাতে ক্ষত সৃষ্টি করে রক্তাক্ত করা আঙুলটাকে লকেট এর উপর থেকে সরিয়ে লকেটটাকে নিচে নামিয়ে নেয়।
আর ভ্যাম্পায়ার অনীকরাও ধীরে ধীরে আবছায়ার মিলিত হতে থাকে এবং ফিরে যায় lone island এ।
আর ইয়ান ধীর পায়ে এগিয়ে যায় নিজের কক্ষের অন্দরে।
কোমরে থাকা বেল্টের সাথে আটকানো কাভার থেকে রিভলবারটা বের করে নিচে ফেলে দেয় ইয়ান, তারপর সোফায় গিয়ে নিঃশব্দে বসে পড়ে।
ক্ষত স্থান থেকে এখনো রক্ত বের হচ্ছে, তবে আগের তুলনায় এখন অনেকটা কম।
ইয়ান সোফার পিছন দিকে মাথা এলিয়ে দিয়ে চোখ বন্ধ করে আছে।
আর মনে মনে বলে চলছে, কেনো এতো জলপাত তোমার ওই অক্ষি যুগলে?
তুমি কি জানো তোমার এই অশ্রু ধারার প্রতিটি ফোঁটা আমি অনুভব করি,তোমার হৃদয়ের প্রতিটি কষ্টানুভূতি আমি নিজের হৃদয়ে স্থানান্তর করি?

অন্য দিকে ইয়ানের মাইন্ড এর প্রত্যেকটা কথা তায়াশার মাইন্ড অব্ধি পৌঁছাচ্ছে, কারন ইয়ান ইচ্ছা কৃত ভাবেই তায়াশা অব্ধি কথা গুলো পৌঁছে দিচ্ছে।
তায়াশা ইয়ানের কথাগুলো জানার পর আরো একবার বিস্মিত হয়।
তায়াশা জানতোই না যে ইয়ান তায়াশার Depressed mind feeling নিজের মাইন্ড এর সাথে কানেক্টেড করে রেখেছে।

________________________________________

ডেভিল দ্বীপ,

আচ্ছা আপনি নিশ্চিত যে ইয়ান আমাদের করা পরিকল্পনার কোনো কিছুই আন্দাজ করতে পারে নি?
আপনি বিষয়টা যতটা হালকা ভাবে দেখছেন তা এতোটাও সহজ নয়।
আপনি খুব ভালো করেই জানেন যে ইয়ান অত্যাধিক রহস্যময়, ও নিজের সঠিক সময় অনুযায়ী কাজ করে।
আর শত্রু পক্ষকে কখনোই দুর্বল ভাবতে নেই, তাহলেই পতনের ফাঁদে পড়তে হয়।
যে ভুলটা প্রাক্তন ডেভিল কিং করেছেন, আমাকে দুর্বল ভেবে, তার পরিনতিতে আজ সে মৃত।
অবশ্য এই একই ভুল আমিও করেছিলাম।

রাফিম এতোক্ষণ ধরে অ্যাফিন কে কথাগুলো বলে চলেছে।

অ্যাফিন আর রাফিম পরিকল্পনা করে মিলিত হয়ে সব পাওয়ার সংগ্রহ করার চেষ্টা করছে।
কেনোনা এতো বড় লড়াই রাফিম এর একার পাওয়ার ব্যাবহার করে করতে পারবে না, এই যুদ্ধ করতে অধিক পাওয়ার এর প্রয়োজন।
তাই রাফিম অ্যাফিন এর দেওয়া প্রস্তাব এ সম্মতি প্রদান করে।
অ্যাফিন রাফিমকে প্রথমে প্রস্তাব দেয় যে, আমায় আটকে রেখে তুমি ইয়ানকে ব্ল্যাক মেইল করবে, তাহলে আমার মৃত্যুর ভয়ে ইয়ান বাধ্য হবে হার মেনে নিতে।
আর তারপর সমস্ত পাওয়ার আমাদের কাছে নিয়ে আসতে মনে হয় না খুব একটা সমস্যা হবে, আর তখন তায়াশাকেও আমাদের বশে আনার পথটা সচল হয়ে যাবে।

অ্যাফিন এবং রাফিম এর একটাই উদ্দেশ্য কিং লকেট আর all invisible power এবং All devil power নিজের মধ্যে প্রতিস্থাপন করা।
তবে অ্যাফিন আর রাফিম দুজনেই একটা চুক্তিবদ্ধতায় আসে এবং ঠিক করে যে সব পাওয়ার এবং কিং লকেট যদি একবার নিয়ে নেওয়া যায় তাহলে,রাফিম আর অ্যাফিন দুজনের মধ্যে এক যুদ্ধ প্রতিযোগিতা হবে, আর সে যুদ্ধে যে জয় লাভ করবে সেই পাবে এই কিং লকেট আর অল পাওয়ার।
আর অপরজনকে সেচ্ছায় মৃত্যু স্বাদ গ্রহন করতে হবে।

|
|
|

রাফিম এর কথায় অ্যাফিন হেঁসে বলে, রাফিম হিন তুমি সব বিষয়ে একটু বেশিই ভাবো, ইয়ান আমাদের করা পরিকল্পনার যদি কিছু আন্দাজ করতেই পারতো তাহলে ও এতোটা শান্ত থাকতো না।
আর তার ওপর আমি ইয়ানের বাবা হয়ে ওর সাথে ফের এতো বড় প্রতারণা করছি, তা বুঝতে পারলে ইয়ান নিজের রাগকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারতো বলে আমার মনে হয় না, সরাসরি নিজের ক্রোধ আমাদের সামনে প্রকাশ করেই দিতো, কেনোনা আমি এই বিষয়ে অত্যন্ত নিশ্চিত যে ইয়ান বেশ অধৈর্য প্রকৃতির ছেলে, তাই এতোটা সময় ধরে নিজের ধৈর্যকে প্রাধান্য দিয়ে এসব সহ্য করতো না।
আর কিছু কিছু বিষয়ে ঝুঁকিগ্রহন না করলে জীবনে এগিয়ে যাওয়া আর হয়ে ওঠে না, তাই আমাদেরকেও এই বিষয়ে ইয়ানকে বিশ্বাস করার মতো একটা মারাত্নক ঝুঁকি পূর্ণ কাজ করতেই হবে।

কিন্তু রাফিম তুমি একটা সত্যি কথা বলো তো, তুমি কি আসলেই তায়াশাকে ভালোবাসাে?

অ্যাফিন এর প্রশ্নে রাফিম একটা তাচ্ছিল্যের হাসি হেঁসে সেখান থেকে বেরিয়ে যায়।
আর অ্যাফিন রাফিম এর যাওয়ার পানে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে,কেনোনা রাফিম এর এহেন হাসির কারন অ্যাফিনের বোধগম্য হলো না।

|
|
|

সকাল গড়িয়ে প্রায় দুপুর হয়ে এসেছে ইয়ান এখনো নিজের ঘর থেকে বের হয় নি, সকাল ৯ টার সময় কায়রানা আর তায়াশা ইয়ানকে ছাড়াই খেয়ে নেয়, খাওয়ার সময় তায়াশা ইয়ানের কথা জিজ্ঞেস করলে কায়রানা বলে, ইয়ান সচরাচর এতো সকালে ওঠে না ঘুম থেকে,তাই বেশির ভাগ সময় একাই খেয়ে নিতে হয় আমায়।
তবে এতোটা বেলা হয়ে যাওয়ায় কায়রানা তায়াশাকে বলে খাওয়ার জন্য ইয়ানকে ডেকে নিয়ে আসতে।
আর তায়াশা তার কথা অনুযায়ী ইয়ানকে ডাকতে চলে যায়,তায়াশা ইয়ানের ঘরের বাহিরে দাঁড়িয়ে দরজায় কয়েকবার নক করলেও ইয়ানের কোনো সাড়া পায় নি, তাই তায়াশা দরজা ঠেলে ভেতরে গিয়ে দেখে ইয়ান বিছানায় উল্টো হয়ে শুয়ে আছে, আর তায়াশাকে ভেতরে আসতে দেখে তায়াশার দিকে তাকিয়ে দুষ্টুমি ভরা মলিন হাসি দেয়।

–আপনি তো জেগেই আছেন তাহলে সাড়া দিচ্ছিলেন না কেনো?(তায়াশা)

–এমনি। (ইয়ান)

–অসহ্যকর, নিচে আসুন খাবার খেতে ডাকছে আন্টি।(তায়াশা)

–আমি পরে খাবো, মম কে গিয়ে বলে দিন।
আর তারপর আবার এখানে আসবেন।(ইয়ান)

–কেনো? (তায়াশা)

–এলেই দেখতে পাবেন। (ইয়ান)

এরপর তায়াশা নিচে গিয়ে কায়রানা কে বলে দেয় যে ইয়ান পরে খাবে, তারপর আবার ফিরে আসে ইয়ানের ঘরে, এসে দেখে ইয়ান ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে আছে।
তায়াশার উপস্থিতি টের পেয়ে ইয়ান পেছনে ঘুরে তায়াশার দিকে এগিয়ে আসে, তারপর হঠাৎ করেই ইয়ান হাত উপরে তুলে হাতের আঙুল গুলো মুষ্টিবদ্ধ করে নেয়, আর তৎক্ষনাৎ ঘরের সব জানালা দরজা বন্ধ হয়ে যায়, আলো গুলো নিভে গিয়ে পুরো ঘরে অন্ধকার ছেয়ে যায়।
এরপর ইয়ান স্বচ্ছ কাঁচের ন্যায় একটা উজ্জ্বল আলোর গোলক সৃষ্টি করে ঘরের মাঝামাঝি স্থানে, তারপর সেই গোলক এর মধ্যে স্থানে ইয়ান নিজের চোখ দ্বারা কৃএিম আলোর প্রতিফলন করে।
আর সেই গোলক এর মাঝে ভেসে ওঠে ইফানের প্রতিচ্ছবি।
ইফান ডেভিল দ্বীপের শেষ প্রান্তে থাকা নদীর কিনারায় একা একা দাঁড়িয়ে আছে,ঠোঁটের কোনে আছে এক পৈশাচিক হাসি।
যে হাসির গভীরতা অতিব ঘৃণিত, যা তায়াশার অজানা এমনকি কল্পনারও অধিক।

তায়াশা ইয়ানের দিকে প্রশ্নতুর দৃষ্টি নিক্ষেপ করে আছে।
হঠাৎ এসবের মানে কি, সেটাই তায়াশা বুঝতে পারছে না।
ইয়ান তায়াশার উদ্দেশ্য বলে ইফানের মাইন্ড নিজের মাইন্ড এর সাথে কানেক্টেড করতে।
আর তায়াশাও ইয়ানের কথা অনুযায়ী ইফানের মাইন্ড নিজের মাইন্ড এর সাথে কানেক্ট করে নেয়।
আর ইয়ান এক স্পেশাল পাওয়ার প্রয়োগ করে দেয় ইফানের উপর যেন ইফান বুঝতে না পারে যে কেউ তার মাইন্ড রিড করছে।

আজ হয়তো বা এক ঘৃণিত অতীত সম্পর্কে অবগত হবে তায়াশা, কোনো এক জঘন্য রহস্য আজ সম্মুখে আসবে তায়াশার।
আর এই বিষয়টা তায়াশার সামনে প্রকাশিত হওয়ার পর তায়াশার ইফানের প্রতি থাকা ভালোবাসা ঘৃনায় রুপান্তরিত হবে।
কেনোনা একজন স্বার্থপর ব্যাক্তিকে ভালোবাসে তায়াশা।
তায়াশার ভালোবাসার ব্যাক্তিটিই তায়াশার কাছ থেকে এমন দু’জনকে কেড়ে নিয়েছে,যারা তায়াশার পৃথিবীর সব থেকে কাছের মানুষগুলোর মধ্যে দু’জন।
আর এসব সত্যি না জেনেই তায়াশা ইফানকে বিশ্বাস করে গেছে।

To be continue…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here