#Devil_Cousin_Lover♥
#Imtihan_Imran
23.
“আজকে আমি নতুন এক সিনহাকে দেখছি,যে লজ্জায় লাল নীল,রংধনু হয়ে যাচ্ছে।যে লজ্জায় আমার দিকে তাকাতে পারছে না।(হেসে)
সিনহা চোখ বন্ধ অবস্থায় ভাবতেছে,সত্যিই তো আজকে তার এতো লজ্জা লাগছে কেনো?লজ্জায় তার মরে যেতে ইচ্ছে করছে।ডেভিলটার দিকে তাকানোর সাহসও সে পাচ্ছে না।তার ইচ্ছে করছে এক দৌড়ে এখান থেকে পালিয়ে যেতে।কিন্তু কীভাবে যাবে?ডেভিলটা যে দুই হাত দিয়ে তাকে আটকে রেখেছে।
“কী হলো সিনহা রানী চুপ করে আছেন যে?কুচ তো বলিয়ে?
সিনহা মনে মনে একটা বড় নিশ্বাস নেয়।
“ভাইয়া সরে দাঁড়া,বাইরে মানুষজন।এভাবে আমাদের এক ঘরে দেখলে কী ভাববে?
“কী আর ভাববে?এক ঘরে প্রাপ্ত বয়স্ক ছেলেমেয়েরা যা করে,তা ভাববে।
ইমরানের কথা শুনা মাত্রই সিনহা চোখ খুলে,চোখ বড় বড় করে ইমরানের দিকে তাকায়।ইমরান তা দেখে হেসে সিনহাকে চোখ টিপ মেরে দেয়।
সিনহা এবার দুই হাত দিয়ে,ইমরানের বুকে হাত দিয়ে পিছনের দিকে ধাক্কা দেওয়ার চেষ্টা করছে,কিন্তু এক চুপ পরিমানও সরাতে পারছে না।ইমরান, সিনহার কান্ডে হেসে দেয়।
” এভাবে সারাদিন ধাক্কা দিলেও তো মনে হয়না,এক চুল পরিমাণ সরাতে পারবি।অযথাই শক্তি অপচয় করছিস।
“তো আমি কী সারাদিন এভাবে দাঁড়িয়ে থাকবো(বাচ্চা ফেস করে)
“ওকে একটা শর্ত মানলে,আমি সরে যাবো।
“কী শর্ত?তাড়াতাড়ি বল।
” আমাকে সুন্দর করে এখন বলবি,ইমরান ভালোবাসি তোমাকে♥
“কীইই ইম্পসিবল।আমি পারবো না।
“পারবি তুই।
” না পারবো না।
“না পারলে আজকে এভাবেই বন্দী থাক।
“ভাইয়া এমন করিস কেনো?ছেড়ে দেনা।তুই তো আমার কিউট প্রেমিক ভাইয়া।অনেক ভালো তুই।সামনে থেকে সরে যা,আমাকে যেতে দে।(বাচ্চা ফেস করে)
“অনেক পাম দেওয়া হচ্ছে,যেনো আমি সাইকেলের চাকা।কোনো লাভ হবে না।আজকে তোর মুখ থেকে না শুনে আমি তোকে ছাড়ছি না।
সিনহা দেখছে,এটা তাকে বলতেই হবে।না বলে পালিয়ে যাওয়ার কোনো উপায় দেখছে না।সে বলার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।সিনহা হুঠ করে বলে দেয়,
” ভাইয়া তোকে ভালোবাসি।(চোখ বন্ধ করে)
ইমরানের কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে,সিনহা আস্তে আস্তে সামনে চোখ মেলে তাকায়।ওমা!তার ডেভিলটা রেগে তার দিকে তাকিয়ে আছে।
“ভাইয়া আমি বলেছি তো।রেগে গেলি কেনো??
” ভাইয়া তোকে ভালোবাসি,তোকে এটা বলতে বলেছিলাম আমি?(দাঁতে দাঁত চেপে)
“আমি তুমি বলতে পারবো না।আমার কেমন কেমন জানি লাগে??
ইমরান ভ্রূ উঁচু করে জিজ্ঞেস করে,
“কেমন কেমন লাগে?
” জানি না।
“এখন আর কিছু বললাম না।কিন্তু এইসব ভাইয়া,টাইয়া,তুই তুকারি বাদ দে।তা না হলে সামনে তোর কপালে বিরাট শনি আছে।
সিনহা,ইমরানের বুকে হালকা ধাক্কা দিয়ে দৌড় লাগায় দরজার দিকে,দরজা খুলতে খুলতে বলে,কচু আছে সামনে আমার। তোকে ছোট থেকে ভাইয়া ডেকেছি,এখনো ডাকছি,সাম্নেও ডাকবো।দেখবো তুই করিস?
“কী বললি?
সিনহা থতমত খেয়ে যায়।সে দেখে ইমরান তার পাশে দাঁড়িয়ে আছে।সিনহা কোনোমতে দরজা ফাঁক করে দিলো এক দৌড়।
“লেখকঃইমতিহান ইমরান।।
এইদিকে সিনহা দৌড়াতে দৌড়াতে চাচার সাথে ধড়াম করে ধাক্কা খায়,সিনহার সাথে ধাক্কা খেয়ে চাচা ঘুরতে ঘুরতে জরিনা বানুর উপর এসে পড়ে।জরিনা বানু শরবত নিয়ে মাহবুব সাহেবের নিকট যাচ্ছিল।চাচার ধাক্কায় সে ধপাস করে নিচে পড়ে গেলো,আর সব শরবত গিয়ে পড়লো নিজের উপর।
“চাচা আপনি আবার?
” বাচ্চা পোলাপাইনের মতো কান্না করস কেন,একটা ধাক্কাই তো খাইলি।
আর সিনহা তুই এভাবে কুত্তার মতো দৌড় দিয়া আমারে ষাড়ের মতো গুতা দিলি কেনো?তোর কারনে জরিনা বানুর উপর এসে পড়লাম আমি।
“সরি চাচা,দেখতে পাইনি।
সিনহা এই কথা বলে এক দৌড়ে উধাও হয়ে গেলো।চাচা চোখ বড় বড় করে সামনের দিকে তাকায়।মাত্রই তো সিনহা এখানে ছিলো।এখন কই গেলো? সব দেখি ভূতের কান্ডকারখানা শুরু হয়ে গেছে এই বাড়িতে।
চাচা জরিনা বানুকে একটা ধমক দেয়,
” তুই এখনো ভ্যা ভ্যা করস কেন?
চাচা মেঝে থেকে উঠতে উঠতে নিজে নিজে বিরবির করে,কেউ ভূতের মতো আচরণ করে,কেউ ধাক্কা খেয়ে কান্নাকাটি করে।কী যে হচ্ছে এই বাড়িতে?এই বাড়িতে দেখছি থাকাই কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে।
”
?বিয়ের দিন?
সবাই নিজেদের কাজে ব্যস্ত।সিনহা,দিয়া দিশার দুই হাতে মেহেদী লাগিয়ে দিচ্ছে। যদিও মেহেদী লাগানোর জন্য,আলাদা করে মেয়ে আনা হয়েছে,তারপরেও দিয়া সিনহা একটু লাগিয়ে দিচ্ছে দিশার হাতে।দিশার মেহেদী লাগানো শেষ হলে,সিনহাকে একটা মেয়ে মেহেদী লাগিয়ে দিচ্ছে।সিনহা মেয়েটাকে বলে,
“আপু হাতের মাঝখানে লাভ দিয়ে ‘ডি’ অক্ষর টা সুন্দর করে লিখে দিয়েন।
”
ইমরান নিজের এক হাত দিয়ে সিনহার হাত টা ধরে আছে।আর চোখ দিয়ে সিনহার উপর রাগ বর্ষণ করছে।
সিনহা বোকার মতো ইমরানের দিকে তাকিয়ে আছে,সে বুঝতে পারছে না,ডেভিল টা এমন রিয়েকশন দিচ্ছে কেনো?
” ‘D’ কে?(রেগে)
ইমরান রাগ করার কারন বুঝতে পেরে সিনহার অনেক হাসি পাচ্ছে।সে কোনোভাবে নিজের হাসিটা আটকে রেখেছে।
“আমার ভালোবাসা।
” কীইই?তাহলে আমি কে?(রেগে)
সিনহা চুপ করে আছে।সে পারে না হেসে দিচ্ছে।
“সিনহা আমি কিন্তু রেগে যাচ্ছি।
” ওলে ডেভিল রে…
সিনহা এবার নিজের দুই হাত একত্র করে,ইমরানকে দেখায়।
ইমরান দেখে এক হাতে ‘D’,অন্য হাতে ‘R’ দুই হাত একত্র করার দরুন দুইটা ভাঙা লাভ একত্র হয়েছে।
সিনহা এবার বলে উঠল।
” ‘D’ তে ডেভিল, ‘R’ তে রানী।কী দাঁড়ায় তাহলে ডেভিল♥রানী। আর ভাইয়া তুই চোখে দেখিস না,’D’ এর ভিতরে ছোট্ট করে ‘I’ লেখা। ‘R’ এর ভিতরে ‘S’ লেখা।ডেভিল ইমরান❤️সিনহা রানী।
ইমরান এবার চোখ বড় বড় করে তাকায়,সত্যি তো।সে এটা কেনো খেয়াল করলো না।ইমরান সব বুঝতে পেয়ে বোকার মতো সিনহার দিকে তাকায়।সিনহা তা দেখে হেসে নিজের দুই হাত দিয়ে ইমরানের দুই গাল টেনে দেয়।
“ডেভিল একটা।এভাবে দেখতে অনেক কিউট লাগছে।
সিনহার এমন কান্ডে ইমরান হা হয়ে যায়।সিনহা তার গাল টানছে??
চলবে….
~ইমতিহান ইমরান।