বেলা_শেষে_শুধু_তুমি পর্ব ১৪
#আনিশা_সাবিহা
–“দেখো মা আমি ওই বাড়িতে যেতে পারব না। আমার অনেক কাজ আছে। আর অফিসেও তো যেতে হবে না? ঐশানীকে পাঠিয়ে দাও একাই। যতদিন ইচ্ছে থেকে আসুক। পারলে আর না-ই আসুক।”
অকপট ভাবেই কথাগুলো বলে সোজা হয়ে বসে অভয়। কথাগুলো শুনে মিসেস. তনয়া বড়ই অসন্তুষ্ট হন। রাহাত সাহেবও মুখটা গম্ভীর করে ফেলেন। বিয়ের পরে আজ দুজনের জন্য ছোটখাটো রিসেপশন হবার কথা আছে। আর রিসেপশনে ঐশানীর পরিবার আসবে ঐশানী আর অভয়কে নিতে। কিন্তু অভয় যেতে নারাজ। রাহাত সাহেব মুখ খুলেন এবার।
–“অন্যসময় তো ঠেললেও অফিসে যাবার নাম নিস না। এখন যেই তোর শ্বশুরবাড়িতে যাবার নাম নিতেই আগে অফিস অফিস করে দৌড়াচ্ছিস? আমি অন্যদিন যেভাবে অফিসে সামলে নিই। এবারও সেভাবেই সামলে নেব। মোটকথা, ঐশানীর সাথে শ্বশুড়বাড়ি যাচ্ছিস! আরে বাবা বিয়ের পর জোড়াই শ্বশুরবাড়ি যাবারই তো নিয়ম। একবার গিয়ে দেখ। জামাই আদরের শেষ হবে না।”
–“বাবা যাব না। এখানেই যতটা জ্বালাচ্ছে মেয়েটা। নিজের বাড়িতে গিয়ে আমার সাথে কি না কি করে!”
রাহাত সাহেব ছেলেকে বোঝাতে ব্যর্থ হলেও আবার বলেন….
–“তাছাড়া গ্রাম থেকে তোর দাদিজান বার বার ফোন করছেন। জার্নি করতে পারে না বলে নাতির বিয়েতে আসতে পারেনি। এখন নতুন নাতবউ এর মুখ না দেখে শান্তি পাচ্ছে না। ওখান থেকে ফিরে গ্রামে যাব সবাই হইহই করে। বেশি দিন না শুধু নিয়ম রক্ষার্থে একদিন থেকে এলেও পারিস।”
বাবার কথার সাথে না পেরে অবশেষে অভয় হাফ ছেড়ে বলে….
–“ওকে জাস্ট একদিনই কিন্তু! মনে থাকে যেন।”
–“হ্যাঁ হ্যাঁ চলবে।”
স্বস্তির হাসি ফুটিয়ে বলেন রাহাত সাহেব।
রুমের দরজা খোলা থাকায় ভিতরে ঢুকে পড়ে অভয়। সামনে ঐশানী উল্টোদিকে ঘুরে কিছু করছে। মনে হচ্ছে কিছু খাচ্ছে। ঠোঁটে ঠোঁট চেপে কিছুক্ষণ ঐশানীর কর্মকান্ড দেখে আচমকা বলে ওঠে….
–“কি করছো তুমি?”
হঠাৎ অভয়ের কন্ঠে যেন আঁতকে তাকায় ঐশানী। আতংকিত চোখমুখে ঘাড় ঘুড়িয়ে অভয়কে একবার দেখে নিয়ে নিজের ট্রলিব্যাগে কিছু একটা ঢুকিয়ে পানির গ্লাস নিয়ে সামনে ঘোরে। তা দেখে অভয় এগিয়ে আসতে আসতে বলে….
–“চোর যখন চুরি করে তখন তার মুখটা এমনই হয়। কি করছিলে?”
–“পা…পানি খাচ্ছিলাম। আর আপনার ঘ…ঘরে এমন কোনো মহামূল্যবান জিনিস রাখা নেই যে আমাকে সেটা চুরি করতে হবে।”
–“তাহলে কেন মনে হলো আমার যে ব্যাগে কিছু লুকিয়ে রাখলে? কি রাখলে? লেট মি চেক!”
বলেই ঐশানীর ব্যাগে হাত দিতে যায় অভয়। সঙ্গে সঙ্গে ব্যাগটা টান দিয়ে নিজের দিকে করে নেয় ঐশানী। মুখ ভেঙ্গিয়ে বলে….
–“আমাকে যদি আপনার এতোই চোর মনে হয় তাহলে আপনার ঘরের সব জিনিস চেক করে নিন। আর আপনাকে কেন আমার ব্যাগে হাত দিতে হবে হুহ? আপনি জানেন না মেয়েদের ব্যাগে পারমিশন ব্যতীত হাত দেওয়া মহাপাপ! এর জন্যও ফাঁসিও হতে পারে। জানেন না? জানেন না?”
অভয় বুকে হাত রেখে চোখমুখ জড়িয়ে কথাগুলো শোনে। থমথমে গলায় একটাই জবাব দেয়….
–“ওভার এক্টিং কুইন!!”
বলেই বিছানায় বসে ধপ করে বালিশ নিয়ে শুয়ে পড়ে অভয়। শরীরটা বড্ড ক্লান্ত। গতকালও ঠিকঠাক ঘুমাতে পারেনি। বুকের ওপরে এমন মেয়ে থাকলে তো অশান্ত মনকে শান্ত করতেই রাত কাবার হয়ে যাবে। ঐশানী তার ব্যাগটাকে নিয়ে গিয়ে খাটের নিচে ঢুকিয়ে দেয়। ব্যাগটা খাটের নিচে ঢুকিয়ে দেওয়ার আগে ভালো করে ছোট তালা দিয়ে লক করে দেয় সে। অভয় টা দেখে মজা ছলে বলে ওঠে……
–“এবার তো আমার মনে হচ্ছে ব্যাগে কোনো হীরে-জহরতের ভান্ডার রেখে দিয়েছো যার কারণে এতোকিছু সিকিউরিটি দিচ্ছো ব্যাগটাকে। আচ্ছা তোমার সব কাপড়চোপড় তো ওয়ারড্রবে মা আমার কাপড় সাইড করে ঢুকিয়ে দিয়েছে। আবার আলমারিতেও বেশ কিছু কাপড় দেখলাম তোমার। তাহলে ব্যাগে কি এমন আছে?”
–“একটা ডাইনোসরের ডিম রেখে দিয়েছি। পৃথিবীতে তো ডাইনোসর বিলুপ্ত হয়ে গেছে। তাই বলা যায় না ডিম দেখে আপনার মতো মানুষ হামলে পড়তে পারে।”
অভয় নিজের প্রশ্নের আজগুবি উত্তর পেয়ে বিরক্ত হয়ে শ্বাস নেয়। সে বুঝতে পারে না মেয়েটার কথা বলার ধরনই কি এমন? নাকি শুধু তার সাথেই এভাবে কথা বলে? এতো কিছুর পরেও অভয়ের কেন জানি মনে হলো ঐশানী তার আজগুবি কথা বলে আসল কথা গোপন করে গেল। অবশ্য তাতে তার কি? লুকিয়ে রাখুক যত কথা। তার জানার কোনো আগ্রহ নেই।
নিজেকে কথাগুলো বুঝিয়ে ঐশানীর দিকে তাকাতেই অভয় দেখে ঐশানী মাথা ধরে টলছে। অভয় দ্রুত ঐশানীর পায়ের দিকে তাকায়। ও পায়ের ধাপ ফেলতে পারছে না ঠিকঠাক। নড়বড়ে করে হাঁটছে। ধড়ফড়িয়ে উঠে বসে অভয়। হাত বাড়িয়ে বলে…..
–“তুমি ঠিক আছো?”
–“হ্যাঁ আমি ঠিকই আছি। মনে হচ্ছে বেশি স্ট্রেস নেওয়ার কারণে শরীর দুর্বল লাগছে। লো প্রেসার তো!”
আস্তেধীরে বেডে বসে ঐশানী। অভয় বিদ্রুপাত্মক কন্ঠে বলে…..
–“এতোটুকু মেয়ের লো প্রেসার!! বাড়িতে ঠিকঠাক খাওয়াদাওয়া করো না? নাকি আমার বর্তমান শ্বাশুড়ি খেতে দেন না।”
অভয়ের বিদ্রুপে চোখ গরম করে তাকায় ঐশানী। ফুঁসে বলে….
–“আমি এইটুকু মেয়ে না। লো প্রেশার হতেই পারে এই বয়সে। বাইশ বছর বয়স আমার।”
–“আমার বয়স জানো?”
–“কি করে জানব? বলেছেন কখনো?”
–“ঊনত্রিশ বছর বয়স। ৭ বছরের বড় হওয়া সত্ত্বেও কি করে তুমি গণহারে আমার সাথে তর্ক করে যাও। ভাবা যায়!”
ঐশানী বিদ্রুপের হাসি দিয়ে বলল….
–“বয়সটা বাড়লেও আমার মতো আপনি পায়ে পা লাগিয়ে ঝগড়া করতে ভোলেন না।”
অভয় ঐশানীর সাথে তর্কে কখনো জিততে পারবে না। তাই প্রসঙ্গ পাল্টায় সে।
–“তোমার শুয়ে রেস্ট নেওয়া উচিত। একটু আগেই মাথা যেহেতু ঘুরে গেছিল। শুয়ে পড়ো!”
–“না থাক।”
অভয়ের খেয়াল হয় অভয় বেডের বেশিরভাগ অংশ জুড়ে শুয়ে আছে। দ্রুতই উঠে বসে সে। হয়ত ঐশানীও একারণেই শুতে চাইছে না। গলা খাঁকারি দিয়ে কাঠকাঠ গলায় বলে….
–“বললাম তো শুয়ে পড়ো। শরীরটা খারাপ হলে দোষটা কার হবে জানো তো? আমার! সো শুয়ে পড়ো। তোমার জন্য তোমার ফ্যামিলি আমাকে কথা শুনাবে। আবার নির্যাতনের কেস করে দিলে সোজা জেলে। মেইন কথা ইউ হ্যাভ টু টেক রেস্ট।”
ঐশানী অদ্ভুত ভাবে তাকিয়ে মনে মনে হাজারো বকতে বকতে শুয়ে পড়ে। মিনিট দশেক ঐশানীর দিকে তাকিয়ে থেকে ফেসবুকে লগইন করার কথা ভাবে অভয়। কিন্তু ফোন খুঁজে পায় না আশেপাশে। তার মনে পড়ে অনিন্দিতা তার ফোন নিয়ে গিয়েছিল। সেই সাথে মনে পড়ে সায়রার কথা। নিজের ওপর নিজেই চমকে যায় অভয়। নিজেই নিজেকে মনে মনে প্রশ্ন করে….
–“হোয়াটস রং উইথ ইউ অভয়? কি হয়েছেটা কি তোর? আজ পর্যন্ত তুই যতই ব্যস্ত থেকেছিস সায়রার নামটা তোর মনে থেকেই গেছে। আর আজ তোর এমন দিন এলো যে তোকে জোর করে সায়রার নাম মনে করতে হচ্ছে? যার সাথে একদিনও কথা না বলে থাকতে পারতিস না এখন তাকে ভুলেই কতটা সুন্দর ভাবে কাটিয়ে দিচ্ছিস সময়? তুই কি কোনো ভাবে ঐশানীর মোহে আটকাচ্ছিস? অনিন্দিতার সাথে তোকে তবে চ্যালেঞ্জ হারতে হবে।”
অভয় যত তাড়াতাড়ি সম্ভব উঠে বেরিয়ে যায় অনিন্দিতার কাছ থেকে ফোনটা আনতে। ফোনটা এনে ঘরে পায়চারি করতে করতে টান টান উত্তেজনা নিয়ে কল করতে থাকে সায়রাকে। বেশ কিছুক্ষণ পর রিং হওয়ার পর ওপাশ থেকে এক দুর্বল ও বিষন্নতায় ভরা কন্ঠে ভেসে আসে।
–“অবশেষে তোমার সময় হলো আমাকে কল করার?”
অভয় এই কন্ঠ চিনতে পারে না। সায়রারই গলা তবে এই কন্ঠে এতোটাই দুঃখ মেশানো যে যেকারোই বুঝতে অসুবিধা হবে।
–“একসময় আমি আমার সারাটা দিন তোমায়ই দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ভাগ্য সবটাই পাল্টে দিল।”
–“ওহ একসময় চেয়েছিলে? এখন আর আমাকে চাও না। তাহলে ফোন করেছো কেন? নতুন বউকে নিয়ে আনন্দে আছো না? দুজনে খুব খুশিতে আছো?”
কান্নারত অবস্থায় বলে সায়রা। সে পারছে না অভয়ের সাথে অন্য মেয়েকে জুড়তে। অন্য মেয়ের সাথে অভয়ের নাম জুড়তেই তার কান্না আসছে। অভয় সায়রাকে শান্ত করার চেষ্টা করে।
–“ঐশানী তোমার কথা জানে সায়রা। ওর সাথে মিল হতে পারে না আমার।”
–“তাহলে প্লিজ আমার সাথে দেখা করো। আমি তোমাকে আমার সামনে দেখতে চাই। নিজেকে বোঝাতে চাই তুমি আমারই আছো। প্লিজ দেখা করো।”
অভয় ঘাবড়ে যায়। এসময় দেখা করতে বাইরে বের হতে হলে যে কেউ সন্দেহ করবে। তারপর কি হতে পারে তা ওর জানা নেই।
–“সরি সায়রা। আমি পারব না এই মূহুর্তে দেখা করতে। বাড়িতে হয়ত মেহমান আসতেও শুরু করে দিয়েছে। সন্ধ্যে বেলায় রিসেপশন। এখন বাইরে বের হলে অনেক বড় সিনক্রিয়েট হতে পারে।”
–“মিথ্যে কথা বলছো তুমি আমায়। আসলে তুমি দেখাই করতে চাও না। বাহানা দেখাচ্ছো আমাকে। ইউ আর এ লায়ার অভয়।”
ফোন কেটে দেয় ওপর পাশ থেকে সায়রা। অভয় ‘হ্যালো হ্যালো’ বলেও কলে না পেয়ে দেখে সে অলরেডি কল কেটে দিয়েছে।
দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে ফোনটা রেখে দেখে ঐশানী একনাগাড়ে তাকিয়ে আছে তার দিকে। হয়ত সে অনেক কথায় শুনেছে। নিরব থাকার পর ঐশানী বলে…..
–“ভালোবাসায় মান অভিমান হয়। ভালোবাসা সেই সম্পর্কে থাকলে মান-অভিমান ভুলে দুজন একও হয়। আপনাদের মাঝে ভালোবাসা থাকলে আপনারাও একসময় এক হবেন। এটা নিয়ে হতাশ হবেন না।”
–“তুমি এতোকিছু জানো কি করে?”
অভয়ের প্রশ্নে আলতো হেসে শোয়া থেকে ওঠে ঐশানী।
–“জীবনে অনেককিছু জানতে হয়। পরিস্থিতি অনেক কিছু শিখিয়ে দেয় জানিয়ে দেয়। আমি এতোটাও ছোট নই যে ভালোবাসা কি সেটা জানব না। আমার বাড়ি থেকে ঘুরে এলেই আপনি বরং সায়রার সাথে দেখা করে ওকে সারপ্রাইজ দিয়ে ওর অভিমান ভাঙিয়ে দেবেন।”
–“কি সারপ্রাইজ!”
–“ওহ হো! আপনি সিনেমায় দেখেননি? হিরো হিরোইনকে কত সুন্দর করে প্রপোজ করে? আপনি তো পারেন রেস্টুরেন্ট বুক করে ওর জন্য সারপ্রাইজ প্রপোজ করতে।”
ঐশানীর আইডিয়াটা খারাপ নয়। করাই যায়। অনেক ভেবে সে বলে….
–“এই প্রথম দেখলাম কোনো স্ত্রী তার স্বামীকে প্রেমিকার রাগ ভাঙিয়ে দিতে আইডিয়া দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।”
ঐশানী এই কথায় নির্বাক হয়ে পড়ে। তার মায়াভরা চাহনি বেশ কিছু কথা বলছে। তবে অভয় যে ঐশানীর চাহনিতে ভেসে থাকা কথা পড়তে পারছে না। ঐশানী নিজেই বুঝতে পারছে না তার মাঝে কি হচ্ছে। অভয় আর কি বুঝবে? তার কন্ঠ কাঁপছে। তার নিঃশ্বাস ওঠানামা করছে। হয়ত কোনো অজানা যন্ত্রণায়! যেটা সব স্ত্রীর-ই হয়। কাঁপা কাঁপা গলায়ই সে জানায়…..
–“আমাদের মাঝে কি কখনো স্বামী-স্ত্রী এর সম্পর্ক হয়েছে?”
অভয়ও এবার বাকরুদ্ধ। আসলেই থেকেও নেই তাদের মাঝে স্বামী-স্ত্রী এর সম্পর্ক। এর উত্তর না দিতে পারে কোনোমতে ঐশানীর নজর থেকে পালিয়েই বাইরে আসে অভয়।
সন্ধ্যাবেলা! বাড়ির কাছে অভয়দের একটা বাংলো আছে। সেখানেই হয়েছে আয়োজন। আশেপাশে সোনালী রঙের আলোয় ঝকমক করছে। অভয় আর ঐশানীকে বসিয়ে রাখা হয়েছে দুটো পাশাপাশি চেয়ারে স্টেজের ওপর। অভয় বরাবরের মতো মুখটা হাসিবিহীন করে রেখেছে। নাকের ডগা হালকা লাল। ঐশানী দাঁত বের করে হাসি ঝুলিয়ে রেখেছে। তার গজদাঁতের হাসি হাসিকে যেন অন্যরুপ দিয়েছে। তবে তার হাসি অন্য কারণ রয়েছে। তা হলো অনুষ্ঠানের আগেই মিসেস. তনয়া অভয় ও ঐশানীকে দুটো ড্রেস দিয়েছিল। একটা সোনালী রঙের আরেকটা সাদা রঙের। অভয় সাদা পছন্দ করলেও ঐশানী পছন্দ করল সোনালী রঙের ড্রেস। মিসেস. তনয়া তার কথায় দুজনকেই সোনালী রঙের ড্রেস পড়তে দিলেন। যার কারণে অভয় রাগে বম হয়ে আছে আর ঐশানী হাসি নিয়ে আছে। সে হাসি নিয়ে দৃঢ় প্রতিক্ষা করছে নিজের পরিবারের।
অনিন্দিতাকে এক মুঠো রঙ মাখিয়ে ভূতের মতো করে তার হাত থেকে বাঁচতে বাংলোর বাইরে দৌড়ে আসে ইশান। অসাবধানতায় কারো সাথে ভুলক্রমে ধাক্কা খেয়ে বসে সে। দ্রুততার সাথে বলে….
–“সরি সরি সরি!! খেয়াল করিনি।”
বলেই সে তাকিয়ে দেখে একটা মেয়ের সাথে ধাক্কা খেয়েছে সে। মাথা চুলকে আগামাথা পর্যবেক্ষন করে মেয়েটিকে। অতিরিক্ত ফর্সা গড়নের মেয়ে। চোখ তার টানা টানা। নাকটা একটু বোঁচা। চুলগুলো বেশি বড় না। কাঁধের একটু নিচ পর্যন্ত। সন্দেহ ছাড়াই সে রূপসী!! মাথা চুলকে ইশান বলে….
–“কে আপনি নন্দিনী?? আগে তো দেখেনি? কনের বাড়ির কেউ?”
–“সরি! আমি নন্দিনী নই। আমি সায়রা। এখানে অভয় খানের রিসেপশন হচ্ছে তো?”
–“হুম হুম! অভয় খান। আমার মামাতো ভাই বুঝলেন? কে হন আপনি অভয়ের?”
–“অনেক কাছের কেউ। এক্সকিউজ মি!”
বলেই পাশ কাটিয়ে চলে যায় সায়রা। ইশান মাথা চুলকায়।
–“যাহ শালা! এমন করে মাইয়াটা বলল যেন অভয়ের আরেক বউ হয়। অভয় কি ঐশানী ভাবির সতিনও রেখেছে নাকি?”
চলবে……
[বি.দ্র. ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। ]