সাইকো_নীড় part : 15

0
607

#সাইকো_নীড়
part : 15
writer : Mohona

.

নীড় : i am sorry my snow white ….
মেরিন পানির দিকে তাকিয়ে আছে…
নীড় : চোখ দিয়ে কি পানির কনা গুলো গুনছো?
মেরিন : …
নীড় : তোমার বাবা চাইছে আমাদের বিয়েটা তারাতারি সেরে ফেলতে… তিনি মনে করছেন যে তুমি কেবল আমার চোখের নেশা। যে নেশাটা ফুরিয়ে গেলে আমি তোমাকে ছুরে ফেলে দিবো।
মেরিন : …
নীড় : তোমারও কি এমনটা মনে হয়?
মেরিন : ….
নীড় : তোমার কি মনে হয় আমি তোমাকে ছুরে ফেলে দিবো…?
মেরিন : …
নীড় : বুঝেছি তোমাকে বোবায় ধরেছে…. যাই হোক… বলোতো view টা কেমন ? সুন্দরনা ?
মেরিন : …
নীড় : চলো কয়েকটা ছবি তুলি….আচ্ছা তুমি সাতার কাটতে পারো?
মেরিন : …
নীড় মেরিনকে টেনে দার করালো।
নীড় : দারাও ফোনটা বের করি…
নীড় পকেট থেকে ফোন বের করতে করতে পানিতে ঝাপ দেয়ার শব্দ পেলো।
নীড় : snow white….

আসলে নীড় যতোবার মেরিনকে জিজ্ঞেস করেছো এটা পারো কিনা ততোবার নীড় জোর করে সেটা করিয়েছে… তাই মেরিন মনে করেছে নীড় হয়তো এখন ওকে পানিতে ধাক্কা মারবে। তাই নীড় ধাক্কা দিয়ে পানিতে ফেলার আগে নিজেই পানিতে ঝাপ দিলো…
⛈️⛈️⛈️
]

.

বর্তমান…
মেরিন : car accident হলে নীড় কিভাবে খুনী হলো? car accident কি তবে নীড়ের plan ছিলো? উফফ…. কিছু বুঝতে পারছিনা….
নীড়ের পরিবার… মা-বাবা…? দেখি তো…

মেরিন জানতে পারলো যে নীড়ের মা-বাবা কে?
মেরিন : oh my god… ডক্টর নীলিমা নীড়ের মা… অনেক ভয়ংকর লোক তো এই। অথচ… চেহারা টা দেখতে কতো মাসুম। নিষ্পাপ… তিনি কাউকে খুন করতে পারে? ভাবা যায়? নাহ মাথা ব্যাথা করছে। বাকী খোজ খবর পরে জেনে নিবো।

.

নীলিমা বসে বসে চোখের পানি ফেলছে। তখন জহির এসে ওর কাধে হাত রাখলো।
নীলিমা : আরে তুমি…?
জহির : হামম । কি হলো কান্না করছো কেন?
নীলিমা : না এমনিতেই… স্মৃতির পাতায় নারা লাগলো…
জহির : আমার ভালোবাসা তোমার ওপর অনেক ভারী হলো… তোমার জীবনটা নষ্ট হয়ে গেলো…
নীলিমা : দোষ আপনার ভালোবাসার না আমার কপালের ছিলো। নিজের ভুলের জন্য নিজের স্বামী আর সন্তানের থেকে কতো দূরে… ব্যার্থ মা আমি।নিজের সন্তানকে বোঝাতে পারিনি যে আমি তাকে অনেক ভালোবাসি…
জহির : আমার আর নাবিলের জন্যেই আজ তোমার জীবন এমন …
নীলিমা : বললাম তো … কারো দোষ। আমি আমার দায়িত্ব পালন করতে পারিনি… যাই হোক । বাদ দিন। আপনি এখনো ঘুমাননি? কতোরাত হয়ে গিয়েছে …
জহির : ঘুমুতেই যাচ্ছিলাম। হঠাৎ মনে পরলো যে কিছু বলার ছিলো। তাই চলে এলাম। জানি তুমি আজও নীড়-নিহালের ছবি নিয়ে এখানে এভাবে বসে আছো…
নীলিমা : কি বলবেন বলুন…
জহির : নীড়কে নিয়ে কিছু বলার ছিলো…
নীলিমা : কি?
জহির : নীড় ওর মানষিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছে…
নীলিমা : কি…
জহির : হ্যা … ।

.

অতীত…
[
⛈️⛈️⛈️

নীড় : snow white…
নীড়ও পানিতে ঝাপ দিলো। মেরিনকে তুলে আনলো…

বেশকিছুক্ষন পর মেরিনের জ্ঞান ফিরলো। নিজেকে নীড়ের বাহুতে পেলো। ভেজা কাপড় নেই শরীরে। অন্য পোশাক… তবুও কেন যেন নীড়ের ওপর সন্দেহ হলোনা… মেরিন চুপ করে ওভাবেই রইলে।
নীড় : কি দরকার ়ছিলো পানিতে ঝাপাবার?
মেরিন : …
নীড় : সাতার জানোনা… তবুও কেন ঝাপ দিলে বলো তো… তুমি ভাবলে কি যে আমি তোমাকে পানিতে ফেলবো?
মেরিন মনে মনে : এই লোক জানলো কি করে?
নীড় : শোনো তোমার ভেজা কাপড় ছারিয়ে দিয়েছি। না হলে ঠান্ডা লাগতো…
মেরিন : …
নীড় : বসো তোমার জন্য গরম গরম স্যুপ নিয়ে আসছি।
বলেই মেরিন সরিয়ে নীড় স্যুপ আনতে গেলো।

মেরিন তাকিয়ে দেখলো না এটা চৌধুরী বাড়ি , না ়খান বাড়ি , আর না নীড় মহল… আসলে এটা কোনো আধুনিক বাড়িই না। কেমন যেন গ্রাম্য গ্রাম্য ।
মেরিন : এটা আবার কার বাসা…
নীড় : আমাদেরই….
মেরিন তাকিয়ে দেখে নীড় স্যুপ নিয়ে দারিয়ে আছে….
নীড় এসে মেরিনকে খাওয়াতে লাগলো।
নীড় : ছোটবেলায় কুড়েঘরের ছবি আকার সময় সত্যিকারের কুড়েঘর দেখার আর সেটার ভেতরে থাকার আমার ভীষন ইচ্ছা করেছিলো। বাবাকে বলেছিলাম। বাবা এই বিলের পারে করে দেয়….
মেরিন : ?।
নীড় : by the way… তোমার change টা কিন্তু আমিই করিয়েছি… ?…
মেরিন : কি?
নীড় : হাহাহা… i am joking….

.

পরদিন…
দোলা : এখানেও তোর আশিককে নিয়ে আসা জরুরী… ১টা দিন কি আমাকে সময় দেয়া যায়না?
মেরিন : মানে?
দোলা : সামনে তাকা…
মেরিন দেখলো নীড় গাড়ি থেকে নেমে ওদের দিকে এগিয়ে আসছে। মেরিন নীড়ের কাছে গেলো।
মেরিন : আপনি এখানে কেন এসেছেন?
নীড় : তুমি এসেছো তাই …
মেরিন : নীড় আজকে আমি কেবল দোলার সাথে থাকতে চাই … আপনি তো always থাকেনই আমার সাথে।
নীড় : তোমার safety…?
মেরিন : আপনি যখন ছিলেন না তখন কি মরে যেতাম নাকি?
নীড় : আজব তো… দেখো বিয়ের শপিং করতে এসেছো আমি থাকলে সুবিধা হবে।
মেরিন : আপনার কি আমার বান্ধবিকে ভিখারী মনে হয়…?
নীড় : আরে সেটা কখন বললাম?
মেরিন : তাহলে যান প্লিজ…
নীড় : না…
মেরিন : আমি কিন্তু কান্না করবো…
নীড় : এটা কিন্তু ঠিকনা… এভাবে কেউ কাউকে blackmail করে? কান্না সহ্য করতে পারিনা বলে আজকে চলে যেতে হচ্ছে … বুঝবে বুঝবে… যেদিন আমাকে ভালোবাসবে… আমার চোখের পানি সহ্য করতে পারবেনা সেদিনই বুঝবে…
বলেই নীড় ধীরে ধীরে পিছে যেতে লাগলো। মেরিনের দিকে তাকিয়েই…

মেরিন : নে চল … এখন তোর বিয়ের শপিং করি… মন ভরে…
দোলা : ইশ নীড়কে যদি আমি পেতাম…
মেরিন : তো নিয়ে নে না…
দোলা : সেকি আর আমাকে ভালোবাসে…?
মেরিন : বাদর…
বলেই মেরিন সামনে তাকিয়ে দেখে অর্নব দারিয়ে আছে। সাথে ৮-১০জন গুন্ডা type লোক…
মেরিন মনে মনে : অর্নব ভাইয়া… সাথে এতো মানুষ? আমি কি করবো? নীড় কি চলে গিয়েছে ? ভাইয়া যদি কিছু করে তাহলে তো নীড় ভাইয়াকে শেষ করে দেবে… আর যদি নীড় না থাকে তবে… আমি কি করবো… সাথে তো দোলাও আছে…
দোলা : ভালো আছেন অর্নব ভাইয়া?
অর্নব : হামম। তুমি?
দোলা : ভালো। এমা আপনি আমাকে চিনেছেন?
অর্নব : চিনবোনা কেন… ২জন তো জোরা কবুতর…
মেরিন: দোলা একটু শোন… ভাইয়া ২মিনিট..
অর্নব : যাও পাখি যাও… তোমাকে যে আজকে ঘেরাও করে ফেলেছি…
মেরিন দোলাকে কিছুটা দূরে নিয়ে গেলো।
দোলা : কি হলো…?
মেরিন আশেপাশে নীড়কে খুজতে লাগলো।
দোলা : কি রে কাকে খুজছিস?
মেরিন : নীড়কে…
নীড় : সত্যি ?
মেরিন অবাক হয়ে পিছে ঘুরলো।
দোলা : আপনি এখনো যাননি জিজু…?
নীড় : চলেই যাচ্ছিলাম..
বলেই মেরিনের কাধে হাতে রেখে কাছে আনলো।
নীড় : কিন্তু snow white কে একেবারে snow white লাগছে। তাই রেখে যেতে সাহস পাচ্ছিলাম না…
মেরিন : চলুন… অন্য মলে যাই…
নীড় : why… ?
মেরিন : এতো কথা বলেন কেন ? চলুন না।
নীড় : ok… but ওই চাঙ্গু মাঙ্গু ওয়ালা লোকটা কে?
মেরিন : ওই টা তো অর্নব ভাইয়া । আমার মামাতো ভাইয়া…
নীড় : oh… any problem ?
দোলা : না জিজু… অর্নব ভাইয়া খুব ভালো….
মেরিন : চলুন না…
নীড় : ok… but এতো ভয় পাচ্ছো কেন?
মেরিন : আসলে ওই গুন্ডা type মানুষ দেখে ভয় করছে…
নীড় : what? আগে বলবা না… আমি থাকতে আমার snow white ভয় পাবে… wait…

অর্নব : নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষন? মানে টা কি?

নীড় মেরিনের হাত ধরে অর্নবের সামনে গেলো।
নীড় : হ্যালো মিস্টার সমন… কি যেন বলে… যাই হোক ভাইয়াই বলি…. বড় ভাইয়া আপনার ছোটবোন আপনার সাথে থাকা গুন্ডাদের দেখে ভয় পাচ্ছে। you should know this… আপনি যদি চান তবে আমাদের সাথে join করতে পারেন। but without them… যদি ৫সেকেন্ডের মধ্যে ওরা দফা না হয় তবে আমি এদের … দুনিয়ে থেকে ইস্তফা দেবো… আমার snow white কে ভয় দেখানোর অধিকারও কেবল আমার… so throw them out… please …
অর্নব : না আসলে ১টা কাজে এসেছিলাম। আর ওরা আমার বন্ধু। মেরিন এমনিতেই ভয় পাচ্ছে… আসছি মেরিন…

অর্নব চলে গেলো।
নীড় : চলো শালিকা শপিং করি…

ওরা শপিং করতে লাগলো।

.

রাতে…
মেরিন : কি হলো গাড়ি কোথায় নিচ্ছেন? বাসায় যাবো তো…
নীড় : হামম যাবে। তবে একটু আমার সাথে থাকো…
মেরিন : আমি অনেক tired… বাসায় গিয়ে ঘুমাবো…
নীড় : ok… বেশি সময় নিবোনা… ১টা প্রশ্ন … অর্নব ভাইয়া তোমাকে ভালোবাসে…
মেরিন : হামম বাসে। অনেক। কোন ভাই তার ছোট বোনকে না ভালোবাসে…
মনে মনে : মেরিন relax … নীড়কে কিছু বুঝতে দিসনা… খামোখা ঝামলা হবে…
নীড় : ন্যাহ… এটা বোনের প্রতি ভাইয়ের ভালোবাসা না… এটা অন্য ভালোবাসা । আমি অর্নবের চোখে দেখেছি… তোমার জন্য ভালোবাসা…
মেরিন : বললাম তো ভাইয়ার মতো ভালোবাসা…
নীড় : ন্যাহ… তুমি কিছু লুকাচ্ছো…
মেরিন : যা ভাবার ভাবুন… আজিরা ফালতু…
নীড় : ?।
মেরিন : বাসায় নিয়ে যাবেন না ঘুমাবো?

নীড় মেরিনকে বাসায় পৌছে দিলো।

অর্নব : নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষনের সাথে মেরিন কি করে… আবার বলছিলো আমার snow white … oh god… বুঝতে পারছিনা.. মেরিন ওই ভয়ংকর লোকটার সাথে কি করে!!!

নীড় : সেটা নিজেকে জিজ্ঞেস না করে আমাকে জিজ্ঞেস করলেই তো হয়…
অর্নব দেখলো নীড় দারিয়ে আছে । নীড় পেছনে কালো পোশাকধারী লোকদের হাতে শপিং মলের সেই গুন্ডা টাইপ লোক গুলো আহত অবস্থায়…

অর্নব : আরে মিস্টার চৌধুরী… come …
নীড় : এই আবর্জনাগুলোর জন্য আমার snow white ভয় পেয়েছিলো… তাই এদের বোল্ড আউট করে দিয়েছি…
অর্নব : আসলে আমি…
নীড় : আসল নকল বুঝিনা… আমার snow white ভয় পেয়েছে so… i gave them punishment …
অর্নব : no no its ok…
নীড় : আসছি… oh… তোমার চোখে আমি মেরিনের জন্য ভালোবাসা দেখেছি… সেই ভালোবাসাটা যেন কেবল বোনের প্রতি ভাইয়ের ভালোবাসা হয়… না হলে এই চোখ জোরা ওখানে নয়… আমার পায়ের নিচে হবে…

বলেই নীড় চলে গেলো।

অর্নব : তোমাকে সরিয়ে মেরিনকে আমার করে নিবো…

দোলার বিয়ে টিয়ে খেয়ে নীড়-মেরিন লন্ডন ফিরলো।

.

মেরিন : না জানে result কি আসবে…
নীড় : ভালোই আসবে। আমার snow white এর result …. এতো ভয় পাচ্ছো কেন?
মেরিন : ভয় পাবোনা? final result …
নীড় : ভালোই হবে…
পরদিন result দিলো মেরিন ভালো ১টা result করলো। মেরিনের খুশি দেখে কে।

নীড় : happy ?
মেরিন : ভীষষষষষন…
নীড় : এখন আমাকে বিয়ে করবে?
মেরিন : …
নীড় : তোমার ১টা ডিগ্রির জন্য wait করছিলাম। তোমার পড়ালেখা নষ্ট করতে চাইনি… এখন বিয়ে করবে আমায়…
মেরিন : i need time নীড়…
নীড় : দিলাম… কিন্তু জবাব যেন হ্যা হয়….
মেরিন : …

৩-৪ দিন পর ২জন দেশে ফিরলো।

.

মেরিন প্রথমে কবিরের হসপিটালেই practice শুরু করলো। দিন কাটতে লাগলো।

কবির : মামনি…
মেরিন : হ্যা বাবা।
কবির : তুমি কাউকে ভালোবাসো?
মেরিন : না বাবা।
কবির : বাবা তোমার পড়াটা শেষ। আমি চাই এখন তোমার বিয়ে দিতে… তুমি কি রাজী আছো?
মেরিন : তুমি যা বলবে… কিন্তু বাবা নীড়…
কবির : ওই ছেলেটার জন্য তোমার জীবন শেষ করতে পারবোনা।
মেরিন : কিন্তু বাবা… আমাদের জন্য কাকে বিপদে ফেলবো? নীড়…
কবির : নীড়কে টক্কর দেয়ার মতো কাউতে পেয়েছি…
মেরিন : কাকে?
কবির : নাবিল রায়হানকে। চৌধুরীদের টক্কর দেয়ার জন্য জহির রায়হান যথেষ্ট।
মেরিন : জহির রায়হান?
কবির : সেদিন ১টা মেডিকেল conference এ দেখা হয়েছিলো।
মেরিন : …
কবির : নাবিলরা কালকে আমাদের বাসায় আসবে….
মেরিন : ….
কবির : আসছি…

কবির চলে গেলো।

মেরিন : নাবিল রায়হান হোক বা অন্য কেউ… নীড় নামের তুফানের কাছে হেরে যাবে… বর্ষন যে বড় ভয়ংকর বাবা…. জানিনা কালকে কি হবে?

.

পরদিন…
জহির রায়হান আর নাবিল রায়হান এলো। মেরিনকে দেখতে। মেরিন তো ভয়ে মরে যাচ্ছে। নীড় জানলে যে কেয়ামত ঘটাবে। মেরিনকে তাদের সামনে নেয়া হলো। বাবা ছেলে ২জনই মেরিনকে দেখে পছন্দ করলো। মেরিন আর নাবিলকে আলাদাভাবে কথা বলতে দেয়া হলো। অনেক নার্ভাস হলেও মেরিন ভালোভাবেই জবাব দিলো। কবির মেরিনকে আরালে নিয়ে জিজ্ঞেস করলো।

মেরিন : তুমি যেটা ভালো বোঝো…

জহির রায়হান মেরিনের গলায় চেইন পরিয়ে গেলো। তারা যাওয়ার পর মেরিন নিজের রুমে বসে আছে। তখন নীড় এলো….

.

চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here