মন প্রাঙ্গনে এলে যখন পর্ব ৮

0
176

#মন_প্রাঙ্গনে_এলে_যখন
#লেখনীতেঃ #আলফি_শাহরিন_অর্পা
#পর্ব_৮

স্কুলের বাহিরে দাঁড়িয়ে জয়া আইসক্রিম খাচ্ছে আর রাগে ফুঁসছে। তার মাথা গরম হয়ে গিয়েছে আর রুশমি তাকে ঠান্ডা করার চেষ্টা করছে।
–দোস্ত! মাথা ঠাণ্ডা রাখ। রুশমি এই ‘ঠান্ডা রাখ’ বাক্যটি শুনে জয়ার মাথা আরও গরম হয়ে গেলো। সে রুশমির দিকে চোখ বড় করে তাকালো আর চিবিয়ে চিবিয়ে বললো-
–তুই শা*লী চুপ থাক। কে বলেছিলো তোরে ক্লাস টাইমে কথা বলতে কে বলছিলো বা*ল। তোর জন্য ঐ হিটলারে আমাকে কতগুলো কথা শুনাইলো।
–বাদ দে দোস্ত। তোরে একা তো আর শুনায়নি। আমাকেও তো শুনাইসে।
–আচ্ছা তোর কথা মানলাম। কিন্তু আমি রাগ এই ব্যাপার নিয়ে না। আমার রাগ অন্য কিছুর জন্য। ঐ বেটা ইচ্ছা করে আজ আমাকে পুরা ক্লাসের সামনে দাড় করাইসে।
–তুই একটু বেশি ভাবছিস। তাছাড়া স্যারের তোর সাথে কিসের শত্রুতা যে স্যার তোকে ইচ্ছা করে শাস্তি দিবে।
— আরে শত্রুতা হওয়ার বাকি আর কি আছে? তুই একটা কথা আমাকে সকালে বলেছিস মনে আছে যে স্যার ক্লাসে যদি স্যার কাউকে পড়া ধরলে কেউ যদি পড়া না পারতো তাহলে খালি ইনসাল্ট করতো কিন্তু আমার বেলায় ইনসাল্ট প্লাস শাস্তি দুটোই ছিলো। তুই ভেবে দেখ আমাদের আগের টিচাররা শাস্তি দিলেও তা ক্লাসে দিত। কিন্তু আমি আজ পড়া পারিনি বলে আমাকে ক্লাস থেকে বের করে দিসে আবার বাহিরে কানে ধরতে বলসে। অথচ ঐ শয়*তান্নি ছে*মরি নুসরাত ও কিন্তু পড়া পারেনি কিন্তু ওকে শুধু ক্লাসে দাড় করাইসে আর আমার মান-ইজ্জত খাইসে।
–ওই মেয়ে থাম! আগে খালি তোর মুখে শুনে তুই রেগে থাকলে নিজের ভাষার পরিবর্তন করতে পারিস কিন্তু আজ নিজ চোখে দেখে নিলাম। আচ্ছা মানলাম! তুই যা বলছিস তা ঠিক। কিন্তু তুই স্যারের সাথে কী করবি আদোও কিছু করতে পারবি? আর সবচেয়ে বড় কারণ তাকে কিছু না করার তা হলো সে আমাদের টিচার।
–টিচার বলে যে সে আমার থেকে ছাড় পেয়ে যাবে তা তুই কিভাবে ভাবলি। প্রথমে ভেবেছিলাম সেদিনের ভুলের জন্য ক্ষমা চাবো, যেখানে আমার কোনা দোষ ছিলো না তাও মাফ চাইতাম কিন্তু তার আগেই উনি আমার মাথা আবার গরম করে দিয়েছ। এবার উনি হারে হারে টের পাবেন জয়া চৌধুরীর সাথে পাঙ্গা নিয়ে উনি মোটেও ঠিক করেনি।
–কিন্তু তুই করবি কী?রুশমির প্রশ্নে জয়ার ধ্যান ভাঙ্গে যখনই সে পাল্টা কিছু বলতে যাবে তার চোখ এদিকে আটকে যায় আর ঠোঁটে এক রহস্যময় হাসি ফুটে ওঠে।

_____________

স্নিগ্ধাকে জরিয়ে ধরে আছে পরশি আর স্নিগ্ধার ভয়ে অবস্থা কপোকাত। এত বিভৎস দৃষ্য সে কখনো নিজের জীবনে দেখেনি। একটা মানুষ এতটা নির্মম হতে পারে সে কখনো দেখেনি। কিছুক্ষণ আগের ঘটনা মনে হতেই তার গায়ে কাটা দিয়ে উঠে।
–ভাই! তুমি এখানে..ওর সামনে.. এসবের মানে কী? রুদ্ধ এতক্ষণ এক ভ্রু উঁচিয়ে স্নিগ্ধার দিকে তাকিয়ে ছিলো। কেনো জানি স্নিগ্ধার এই ভয়াতুর চেহারা তাকে খুব আনন্দ দিচ্ছিল।কিন্তু পরশির তোতলানো কথা শুনে তার ধ্যান ভেঙে যায় তাই সে কিছুটা বিরক্ত।

–এই মেয়ের সাথে থেকে থেকে তোর মাথায় যা ছিলো তার সবই মনে হয় গেছে। কী আজগুবী প্রশ্ন করছিস? এখানে হওয়া প্রত্যেকটা ঘটনার সাথে তুই অবগত?
–আহ!ভাই থামো। আমি বলতে চাচ্ছিলাম ওর সামনে এসব কেনো করছিস? দেখছিস মেয়েটা কত ভয় পেয়ে গেছে?
–এই সামান্য বিষয়ে ভয় পেলে চলবে? এরপর যা হবে তা সহ্য করতে পারবে তো? তোমার জন্য কী শাস্তি প্রস্তুত করেছি তা শুনবানা? রুদ্ধ বাঁকা হেসে স্নিগ্ধার দিকে তাকিয়ে কথাগুলো বললো। রুদ্ধর কথায় স্নিগ্ধার ধ্যান ভাঙে সে শান্ত দৃষ্টিতে রুদ্ধর দিকে তাকিয়ে থাকে। অতঃপর রুদ্ধ স্নিগ্ধার দিকে তাকিয়ে বলে-
–মেয়ে! শাস্তির জন্য তৈরী হও। তোমার অনেক কষ্ট হচ্ছিল না ঐ বিশ্বাস ঘাতকের জন্য। যাও তোমাকে সুযোগ দিলাম লোকটাকে সাহায্য করার। শাস্তি বা সুযোগ যা ভাবার তুমি ভাবতো পারো। চুপচাপ লোকটার কাছে যাও আর রডটা বের করে আনো,ব্যাস এইটুকুই। এত ভয়ংকর কথা শুনে স্নিগ্ধা ফ্রিজ হয়ে গেলো।
–ভাই! মেয়েটা এমনেই অতীতে অনেক কিছু সহ্য করেছে এরপর আজকের এই ঘটনা, মেয়েটা প্রচণ্ড ভয়ে আছ৷ ভাই প্লিজ এমন কিছু করিস না যে মেয়েটা এই শক থেকে বের হতে না পারে।
–হুশ! তুই চুপ থাক। এই মেয়ে এতক্ষণ যখন আমার সাথে দাড়িয়ে তর্ক করছিলো তখন তো এর ভয় লাগছিলো না। এই পৃথিবীতে ভীতুদের জন্য কোনো জায়গা নেই তার প্রমাণ একটু আগে এই মেয়ে দিয়েছে। তখন তো বাহাদুরের মত দৌড়ে এসে আমার হাত ধরলো, যে আমার ভয়ে পুরো শহর কাঁপে সেই আমাকেই এত কথা শুনালো।

চলবে..

বিঃদ্রঃ পর্ব ছোট বলে লজ্জা দিয়েন না। দুইদিন খুব ব্যাস্ততায় কাটিয়েছি তাই গল্প দিতে পারিনি?।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here