উত্তরণ পর্ব_৯

0
871

#উত্তরণ
পর্ব_৯

নিজের ফ্ল্যাটে ফিরে উজান ফোন টা ছুঁড়ে ফেলে দেয় বিছানায়. রাগের চোটে কপালের দুপাশের রগ ফুলে ওঠে.

উজান: হিয়া মিত্র, তোমার এতো সাহস হয় কি করে আমার মুখে মুখে উত্তর দাও (রাগের চোটে দেওয়ালে একটা ঘুঁষি মারে).

এমন সময় উজানের ফোন বেজে ওঠে. ফোন টা হাতে নিয়ে দেখে বাসবি.

উজান: বলো۔۔কেমন আছো?
বাসবী: আমি ঠিক আছি রে তুই কি করছিস?
উজান: কিছুনা
বাসবী: কি হয়েছে রাজা? (ছেলের রাগের উষ্মা বাসবী দূর থেকেই টের পায়)
উজান: ۔۔۔۔۔۔۔
বাসবী: কি হলো আবার? কে কি করলো?
উজান: ۔۔۔۔۔
বাসবী: কোনো বিপদ হয়েছে নাকি রে? (মায়ের মন অজানা ভয়ে ভীত হয়ে ওঠে)
উজান: এখনো হয়নি۔۔۔তবে হবে
বাসবী: মানে? বিপদ? কার বিপদ? তোর?
উজান: আমার না۔۔۔ওই ইডিয়ট টার
বাসবী: (অবাক হয়ে) ইডিয়ট??

উজান: তাছাড়া কি? আর একটু হলেই গাড়ি চাপা পড়তো.

বাসবী: (আঁতকে ওঠে) কি বলছিস? কিন্তু তুই ওর উপর রাগ করছিস কেন?

উজান: রাগ করবোনা? একে তো বাঁচালাম, তার উপর মুখে মুখে তর্ক? বলে কিনা ওকে বাঁচিয়ে আমি ওর কোনো উপকার করিনি, ওকে বাঁচানোটা আমার কর্তব্য. ইচ্ছে করছে۔۔۔۔ (দাঁতে দাঁত চেপে কথাগুলো বলে)

বাসবী এবার হেসে ফেলে বলে: তা ওই ইডিয়ট টা কে? নাম আছে কিছু?

উজান: ওর নাম ইডিয়ট. এর বেশি আর কিছু তোমার জানার দরকার নেই.

বাসবী: আচ্ছা বেশ. (দ্রুত কিছু ভেবে নিয়ে) অবশ্য ছেলেটার সাহস আছে বলতে হবে. তা তুই আবার গায়ে হাত তুলিসনিতো?

উজান: ছেলে হলে এতক্ষন উচিৎ শিক্ষা দিয়ে দিতাম. যাইহোক একটু পরে কথা বলছি. রাখছি.

উজান ফোন রেখে দেয়. রান্নাঘরে গিয়ে ফ্রিজ খুলে খানিকটা ঠান্ডা জল গলায় ঢেলে নিজেকে ঠান্ডা করতে চায় ও. হিয়ার উপর রাগ হলেও ওর ভয়ার্ত মুখটাই বার বার উজানের চোখে ভেসে উঠছে. ফ্রিজের পাল্লাটা সজোরে বন্ধ করে দেয় ও. হিয়াকে কেন্দ্র করে ওর ভাবনার উপর নিজেই বিরক্ত হয় উজান.

বাসবী হেসে ফেলে. যেটা জানার ছিলো সেটা ওর জানা হয়ে গেছে. এবার জানতে হবে কে এই মেয়েটা. ওই মেয়েটার উপর মায়াও হচ্ছে বাসবীর. উজান যে ওর কি অবস্থা করবে কে জানে. মনে মনে ভগবান কে বলে: তুমি ওই ইডিয়ট টা কে রক্ষা কোরো. তারপর আবার হেসে ফেলে বাসবী, সেও মেয়ে টা কে ইডিয়ট বলছে.

হিয়া বাড়ি ফিরে কোনোরকমে টলতে টলতে বেডরুমে পৌঁছোয়. বাবার ফটো টা বুকে চেপে ধরে.
হিয়া: এবার আমার তোমাদের কাছে যাবার সময় হয়ে এসেছে, কিন্তু আমার যে এখনো অনেক কাজ বাকি. অনেক কিছু খুঁজে বার করতে হবে, তারপর আমার যা হওয়ার হবে. আমি তোমার মেয়ে, এতো সহজে আমি হারতে পারিনা.

বাবার ফটো টা যথাস্থানে রেখে দেয় হিয়া. দ্রুত নিজের কর্তব্য স্থির করে নেয় ও. পরশু ফ্লাই করবে মানে হাতে কালকের দিন টা আছে. মিসেস কাশ্যপের সাথে ওকে দেখা করতে হবে. উনি হিয়াকে খুব স্নেহ করেন স্বামীরই মতো. তারপর মি: সেনের সাথে দেখা করে জানাতে হবে হিয়ার উপর হওয়া আক্রমণগুলোর ব্যাপারে. তবে সবার আগে আর একটা কাজ করতে হবে ওকে. কালকের রুটিন টা ছকে নেয় হিয়া. ফোন টা হাতে নেয় মিসেস কাশ্যপ আর মি:সেনের এপয়েন্টমেন্ট নেবে বলে. ফোনটার দিকে চোখ পড়তেই থমকে যায় হিয়া.

দেখা যাক কেনই বা উজান হঠাৎ করে হিয়ার কথায় রাগ করলো–এটা কি শুধুই রাগ নাকি অভিমান..!!

NB:পাঠকগণ আপনাদের অসংখ্য ধন্যবাদ #উত্তরণ এর ব্যাপারে নিজেদের মতামত জানানোর জন্য–আজকের পর্ব কেমন হয়েছে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here