আলেমের বউ পর্ব ১৯+২০

0
433

#আলেমের_বউ (পর্ব-১৯+২০)


নাজিফা আর রাইসা বাড়ির পথে পা বাড়ালো তখনি তাদের পথ আটকে দাঁড়ালো তনয়।
তনয়: নাজিফা দাঁড়াও কথা আছে!
রাইসা: স্যরি নাজিফা কোন কথা বলবেনা,,,আপনি পথ ছাড়ুন নাহলে প্রিন্সিপাল কে ডাকব।
তনয়: এই মেয়ে তুমি চুপ থাকো আমি নাজিফার সাথে কথা বলবো
নাজিফা: দেখুন আপনি আমার জন্য হারাম, তাই আমি চাই না আপনি আমার সাথে কথা বলেন।
আল্লাহ হাফেজ, এই রাইসা চলো।
রাইসা আর নাজিফা পথ চলছে
রাইসা: একটা কথা বলি?
নাজিফা: হ্যাঁ বলো?
রাইসা:তনয় ছেলেটা ভালো না
নাজিফাঃ জানি।
রাইসা: জানলে ভালো ওর থেকে সাবধানে থাকবা।
নাজিফা: আচ্ছা বোন আমার বাড়ির কাছে এসে গেছি।আমি এখন যাই আর আপনিও সাবধানে যাবেন কেমন?
রাইসা: আচ্ছা, বাই।


নাজিফার পরীক্ষা শেষ।তাই ব্যগ ঠিক করে জামা কাপড় নিয়ে।বাড়িতে চলে আসে।ফোনে করে রহিমা বেগম কে বলেনি কিছু।হঠাৎ এসে খুশি করাবে সেই আশা নাজিফার।


-নাজিফা কখন এসেছিস?(রহিমা বেগম)
– এইতো এখন মামুনি।
-ফোনে তো বললিনা যে আসবি?
-কেন গো? আমি আসাতে তুমি খুশি হওনাই বুঝি?
-নারে পাগলি,অনেক খুশি হয়েছি,তোর আসতে সমস্যা হয়নি তো?
-একদম না।
-আচ্ছা খেতে আয়।
নাজিফা ফ্রেশ হয়ে খাওয়ার টেবিলে বসে খেতে শুরু করলো
-পরীক্ষা কেমন হলো?(মামুনি)
নাজিফা: আলহামদুলিল্লাহ!খুব ভালো মামুনি।
-পর্দা নিয়ে কিছু বলনি তো!
-হ্যাঁ আবার ঠিক হয়ে গেছে।
-যে অবস্থা যাই আসুক কখনো বেপর্দা হবিনা, বেপর্দার শাস্তি কিন্তু ভয়ানক।
– জানি মামুনি, তাছাড়া আল্লাহ আমার পাশে আছেন।
– হুম যে আল্লাহকে ভরসা করে, আল্লাহই তার জন্য যথেষ্ঠ।
-হুম,মামুনি তুমি খাও আমি আছরের নামায পড়ে আসছি।


পরের দিন,

-মামুনি তোমাকে এমন দেখাচ্ছে কেন?কিছু হয়েছে?
-নাজিফারে তোর বড় ভাইয়া সোহান কিছুটা আঘাত পেয়েছে কুমিল্লা মেডিকাল আছে!
-কী বলছো মামুনি?কী ভাবে আঘাত পেলো?
-এক্সিডেন্ট হয়েছে।ঢাকা থেকে আসার পথে,
জানিয়েছে বেশি গুরুতর হয়নি।তবুও আমার মন মানে না রেডি হয়ে নেয়,আমরা দেখে আসবো।
-হ্যাঁ নিচ্ছি।


নাজিফা আর রহিমা বেগম কুমিল্লা যাওয়ার জন্য মেইন রোডে আসলেন।আবার ও পথে রাইসার সাথে দেখা।রাইসা ও কুমিল্লা যাবে তার খালার বাসায়।ভালই হলো এক সাথে যেতে পারবে অনেকটা পথ।
নাজিফা রাইসার দিকে চেয়ে নিলো একবার সেলোয়ার কামিজের সাথে রংচঙ্গা হিজাব পড়েছে।অনেক গুলো ক্লীপ লাগিয়ে মাথায় হিজাব লাগিয়েছে,একদম পাতাকপি বানিয়ে নিয়েছে।
বাসে উঠলো রাইসা,নাজিফা আর মামুনি কিন্তু কোন সিট পেলো না, ভাল ভাবে দেখে একটা সিট নিয়ে নাজিফা মামুনিকে বসিয়ে দিলো আর রাইসা মিলে নাজিফা দাঁড়িয়ে রইলো!পাশে কিছু ছেলেরাও দাঁড়িয়ে আছে, তারা বাসে ঝাকি লাগার অজুহাতে রাইসাকে ছুঁয়ে দেয়ার প্রচেষ্টায় আছে।
রাইসা খুব বিরক্তবোধ করছে কিন্তু কিছু বলতে পারছেনা।
সাইডের সিটের একটা বয়স্ক লোক বসেছে সেও তাকে দেখছে।ছিঃ বাবার বয়সী লোকেদের কি নোংরা দৃষ্টি।
হঠাৎ
পাশের সেই বয়স্ক লোকটা উঠে দাঁড়ালো নাজিফাকে উদ্দেশ্য করে বলল, মা তুমি আমার
সিটে বসো, আমি দাঁড়িয়েই যাই
নাজিফাঃ না চাচা আপনি বসে থাকেন
লোকটিঃ মা দাঁড়িয়ে দাড়িয়ে কষ্ট পাবে আর ছেলে বসে থাকবে?এটা কেমন হবে?মা তুমি বসো।

রাইসা মনে মনে বলল, কি আশ্চর্য আমাকে বসতে বললো না আর নাজিফা কালো ভূত সেজে এসেছে ওকে বসতে বলছে।
আর পাশের ছেলেরাও যেনো নাজিফার প্রতি সম্মানে মাথা নিচু করে দুরত্ব বজায় রেখে দাঁড়িয়ে আছে।
নাজিফা বলল, চাচা আমার ক্লাসমেট দাড়িয়ে কষ্ট পাচ্ছে,আমি বসি কি করে?
চাচা টাইপের লোকটিঃ ও দাঁড়িয়েই থাক তুমি বসো।লোকটি দাঁড়িয়ে গেলো, নাজিফা রাইসাকে ঐ সিটে বসিয়ে ও দাঁড়িয়ে পড়ল।তখন পেছনের সিটের একটা ছেলে বলল, বোন তুমি আমার সিটে বসো
নাজিফাঃ না ঠিক আছে
ছেলেটিঃ ভাই থাকতে বোন কেনো দাঁড়িয়ে যাবে? আপনি বসুন বোন! অতঃপর নাজিফা বসল।


কুমিল্লা পৌঁছে গেলে নাজিফা মামুনি মিলে মেডিকেলের দিকে পা বাড়ায় আর রাইসা নাজিফার থেকে বিদায় নিয়ে তার খালার বাসায় পা বাড়ায়।


মেডিকেল সোহানকে দেখে মামুনি জড়িয়ে ধরে।নাজিফা দাঁড়িয় মা আর ছেলের দৃশ্য দেখে।
নাজিফা বস বোন(সোহান)
-জ্বী ভাইয়া।
-পরীক্ষা কেমন হলো?
-আলহামদুলিল্লাহ ভালো।
-কষ্ট করে কোন আসলি,আমার তেমন কিছুই হয়নি হালকা একটু লেগেছে মেডিসিন নিয়েছি ইনশাআল্লাহ্ ভাল হয়ে যাবে।


সোহান ভাইয়াকে নিয়ে মামুনি আর নাজিফা বাড়িতে ফিরে আসে।ভাইয়াকে দেখার জন্য তার কয়েক জন ফ্রেন্ড রওয়ানা দিয়েছে ঢাকা থেকে ফোনে জানিয়েছে।মামুনি রান্না নিয়ে ব্যস্ত।নাজিফা হাতে হাতে মামুনিকে সাহায্য করছে কাজে।
রাত দশটার দিকেই সোহান ভাইয়ার ফ্রেন্ডরা চলে আসে।


সোহান ভাইয়া এবং তার ফ্রেন্ডরা মিলে খেতে বসে তখনি আসে আয়শা চাচির ছেলে মেহেরাজ।বয়স চার হবে।খুব দুষ্টামি করে।জিদের বসে আয়শা চাচি কয়টা তাপ্পর লাগিয়ে দেয়।নাজিফা মেহেরাজের কাঁন্না থামাতে ব্যস্ত।নাজিফার মোটেই সহ্য হয়না কারো কাঁন্না।নাজিফা আর মেহেরাজ মিলে ছাদে চাঁদ দেখে আর খিল খিল হাসির শব্দ তুলে দুই জন খুব মজা করে।সোহান ভাইয়ার একটা ফ্রেন্ড ফোনে কারো সাথে কথা বলতে এসেছে ছাদে তাই নাজিফা যখন তা বুঝতে পারলো তখনি মেহেরাজকে নিয়ে চলে আসে।


নাজিফার খিল খিল হাসির শব্দ দাগ কাটে মনের মাঝে সোহান ভাইয়ার ফ্রেন্ডের।
ছাদের থেকে এসেই সোহান ভাইয়াকে বলে!
-তোর বোনকে কী আমার কাছে বিয়ে দিবি?
-সোহান ভাইয়া অবাক হয়ে যায়।আরে আমার বোনকে তুই কোথায় দেখলি?
-না দেখিনি।
-না দেখলে বিয়ের কথা বললি যে?
-এত প্রশ্ন না করে দিবি কি না বল?
-ওয়েট তাকে জিজ্ঞেস করে নেই।


নাজিফা?
-জ্বী ভাইয়া।
-ভাইয়ার একটা ফ্রেন্ড তোকে পছন্দ করছে!তোর মতামত কী?
-নাজিফা মুচকি হাসি টানে কারণ তার মনে এখন ও আজ থেকে এক বছর আগের নাত শরীফের সু-মধুর কণ্ঠ সুর কানে শুনে মনে হয়। আর বলে আমি এখন বিয়ে করবো না ভাইয়া!তোমাদের ছেড়ে এত সকাল কোথায় ও যাচ্ছি না।
সোহান বুঝে নেয় নাজিফা রাজি নয়।


সোহান ভাইয়া তার ফ্রেন্ডকে জানিয়ে দেয়।মনে একরাশ দুঃখ নিয়ে মেনে নেয় ভাইয়ার ফ্রেন্ড।সকাল হলেই নাজিফার বেলকুনিতে যাবার ইচ্ছা।কিন্তু বাসায় কোনো বেলকুনি নেই তাই ছাদে চলে আসে।
অনেকটা সময় ছাদে কাটায় নাজিফা,নাজিফার মনে হলো ছাদে কেউ তাকে দূর থেকে দেখছে কিন্তু তাকে নাজিফা দেখছেনা।হয়তো তার উপস্থিতি নয় তার অনুভূতি নাজিফাকে দেখছে।তারপর নাজিফা আবার রুমে ফিরে আসে।রুমে আসার একটু পরেই মনে হলো সেই এক বছর আগের সু-মধুর কণ্ঠে কেউ নাত শরীফ গাইছে।নাজিফা বেকুল হয়ে পড়ে দেখার জন্য।কিন্তু একটু পরে আর শুনা গেলো না।নাজিফার মন খারাপ হয়ে গেলো।হয়তো মনের ভুলে শুনেছে।মন ভাল করতে আবার ও ছাদে চলে আসে।নীল আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে।পাখিদের উড়ে বেড়ানোর দৃশ্য নাজিফাকে মুগ্ধ করে।মন ভাল হয়ে যায় নাজিফার।আবার রুমে ফিরে আসে।দুপুরের মাঝে ভাইয়ার সব ফ্রেন্ডরা খাওয়া-দাওয়া শেষ করে বিদায় নিয়ে চলে যায়।


তারা চলে যাওয়ার পর নাজিফার মনে কেমন শূণ্যতা অনুভব হলো।ভাইয়ার কোন ফ্রেন্ড আমাকে পছন্দ করলো তাকে একবার দেখা উচিত ছিলো।এভাবে না দেখে না করা ঠিক হয়নি।না একদম ঠিক হয়েছে।দূর কী সব আজে বাজে চিন্তা করছি আমি।আমি তো একজন আহলে সুন্নাতে ওয়াল জামায়াত আকিদার মদিনাওয়ার পাগল আলেম কে বিয়ে করবো।কোথায় থেকে যে মাঝে মাঝে কী সব চিন্তা চলে আসে।


পড়াতে আবার ও মনোযোগ দেয় নাজিফা।নাজিফা এখন অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী।নাজিফার সাথে থেকে রাইসা ও সম্পূর্ণ পর্দায় চলা শুরু করে।নাজিফার ভাল বান্ধুবি হয়ে যায় রাইসা।



বড় ভাইয়ার জন্য মেয়ে দেখা হলো।বিয়ের দিন তারিখ ও ঠিক করা হলো ফেব্রুয়ারির বারো তারিখ মেহেদী অনুষ্ঠান আর তেরো তারিখে বিয়ে।
যথা সময়ে সবাই চলে আসা শুরু করছে।বাড়িতে মেহমানে গিজগিজ করছে।বড় ভাইয়ার মেঝো ভাইয়ার মোট কথা সব ভাইয়ার ফ্রেন্ডরা চলে আসছে।নাজিফার বান্ধুবি রাইসা ও এসেছে।নাজিফা মামুনির সাথে অনেকটা ব্যস্ত।


নাজিফার বড় ভাইয়া সোহান সহ চার ভাই সবাই মাদ্রাসার।যার কারণে সবাই ইসলামিক মাইন্ডের।
বড় ভাইয়ার মঙ্গলবার মেহেদী অনুষ্ঠান

বারো তারিখ আজ।


ভাইয়ার রুমের থেকে অনেক গুলো সুরে নাত শরীফ গাইছে ভাইয়ার ফ্রেন্ডরা সবাই।নাজিফা পাশের রুমের থেকে রাইসা মিলে নাত শরীফ গুলো শুনছিলো।হঠাৎ সেই নাত শরীফের কণ্ঠ শুনা গেলো।নাজিফা উঠে দাঁড়ালো।ভাইয়ার রুম থেকে অনেক মুখের হাসির শব্দে নাজিফার ঘোর কাটে।
ইচ্ছে থাকা শর্তে ও ভাইয়ার রুমে যাওয়ার সাহস পেলোনা নাজিফা।কারণ বাসায় সম্পূর্ণ পর্দা মেনে চলা হয়।
ভাইয়াকে রুম থেকে বের হতে দেখেই নাজিফা দৌড়ে গেলো।
-ভাইয়া শুনো?
-কী বল?
-সবার শেষে নাত শরীফ কে গাইলো?
-ওহ আমার এক ফ্রেন্ড।
-নাম কী?
নাম শুনার আগেই মামুনি টেনে নিয়ে যায় নাজিফাকে
কতরাত হলো এখন ও কিছু খাসনি।আমি কাজে বিজি ছিলাম নিজে হাতে তো খেতে পারতি

আর রাইসাকে ও দিতে পারতি
মেয়েটা না খেয়ে আছে।দেখিস ও তোর বিয়েতে আসবেনা।নাজিফা হা করে তাকিয়ে রইলো মামুনির দিক।

মামুনিকে ছাড়া নাজিফা কখন খায় না।নাজিফা ও রাইসা আর মামুনি মিলে খেয়ে নিলো।তারপর নাজিফা গিয়ে রাইসার পাশে শুয়ে পড়লো।
-একটা কথা জিজ্ঞেস করবো?(রাইসা)
-আরে অনুমতি নেওয়ার কী আছে বল না!(নাজিফা)
-কাউকে ভাল লাগা কী পাপ?
-একদম না!কেন গো কাউকে ভাল লাগছে নাকি,নতুন রহস্যের গন্ধ পাচ্ছি!হিহিহি?
-হ্যাঁ একজনকে তো লেগেছে।বাট ভয় করছে,আর বলতে পারবো না!
-আরে বলে ফেলনা!
-নারে আমি পারবো না।
-শুন রাইসা,
যদি তুমি চাঁদকে চেয়ে থাক,তবে রাত থেকে লুকিও না।
যদি গোলাপকে চেয়ে থাক,কাটার আঘাতকে ভয় পেওনা।
যদি প্রকৃত ভালবাসা চেয়ে থাক,নিজ থেকে নিজেকে লুকিও না।
~মাওলানা জালালুদ্দিন রুমী (রাঃ)।
সো বলে ফেল,ভয় করিস না।


-তোর মেঝো ভাইয়াকে!
স্যরি আমাকে ক্ষমা করিস।আমি হয় তো তার যোগ্য নই।আমি জেনারেল লাইনের আর সে জামেয়ার এক জন ভাল আলেম।
-একদম চুপ রাইসা!আল্লাহ্ উপর ভরসা করো,বিয়েটা আল্লাহ্ হাতে।আমি মামুনিকে বলবো এই বেপারে বড় ভাইয়ার বিয়েটা আগে শেষ হোক, হলেই তারপর তুই আমার ভাবী বানিয়ে আনবো
হিহিহি।মিষ্টি ভাবী আমার।
-আচ্ছা দুষ্ট ননদ আমরা এখন ঘুমাই!অনেক রাত হলো যে।
-ওকে প্রিয় ভাবী আমার।



নাজিফা মনে মনে ভাবছে,ইশ অল্পের জন্য ভাইয়ার থেকে তার নামটা মামুনির জন্য অজানা রয়ে গেলো।আল্লাহ্ হয় তো চান না এখন আমি তার নাম জানি।আল্লাহ্ খুশিতে আমার খুশি,তিনি যখন চাইবেন তখন না হয় জানা যাবে।চিন্তা করেই
চোখের মাঝে নেমে আসে সারাদিনের ক্লান্তির ঘুম।


রাত তিনটায় নাজিফার ঘুম ভাঙ্গে সেই সু-মধুর কণ্ঠে কুরআন শরীফ পাঠে।নাজিফা পা টিপে টিপে নিজের রুম ত্যাগ করলো।মনে হলো গেস্ট রুম থেকে সুর ভেসে আসছে।নাজিফা এক পা এক পা পেলে এগিয়ে যাওয়া শুরু করলো।
অন্ধকারে এটা ওটার দরজার সাথে ধাক্কা খেয়েই চলছে নাজিফা।আর মিট মিট করে হাসছে,তবুও থেমে নেই হঠাৎ ধাক্কা খায় গেস্ট রুমের দরজার সামনের কাচের ফুলের টবের সাথে।টবটা ভেঙ্গে যাওয়া জোরে শব্দ হয়।
নাজিফা ও পড়ে যায়।জোরে শব্দ হওয়াতে নাজিফার মিট মিট হাসির থেকে খিল খিল করে হাসি দিয়ে ফেলে।গেস্ট রুম এর মাঝে কুরআন পাঠ বন্ধ করে কে জানি আসছে কে কে বলে।নাজিফা মুখে চাপা দিয়ে হাসি থামিয়ে রাখে,নাজিফার এই আরেক সমস্যা মুখে চাপা দিলে আরো বেশি হাসি পায়।মনে হচ্ছে কেউ চলে আসতেছে কারো ছায়া দেখা যায়।নাজিফা কোনো মতে দৌড়ে নিজের রুমে এসে লাইট অন করে।নাজিফা আরো খিল খিল করে হাসছে কারণ আসার পথে ও অনেক গুলো ধাক্কা খায় অন্ধকারে এটা ওটার সাথে।নাজিফার হাসির শব্দে রাসাই উঠে চোখ কচলাতে থাকে।এই নাজিফা কী হলো?
-কিছুনা মাথা মোটা ঘুমা তুই।
-এই রক্ত!
-কী রক্ত?
-ঐ যে!
-নাজিফা হাসি থামিয়ে রক্ত কোথায় থেকে আসবে?
-তোর পায়ের দিকে দেখ।
-নাজিফা পায়ের দিকে তাকিয়ে বুঝে যায় টবের কাচের মাঝে এমন হলো।ঐ দিকে চোর এসেছে বলে গেস্ট রুমের উনি সবাইকে তুলে দিয়েছে।সারা বাসায় সবাই জেগে গেছে চোর চোর বলে হৈ চৈ পড়ে যায়।এক তো বিয়ে বাড়ি তার মাঝে আবার চোর এসেছে।রাইসা নাজিফাকে বলল,”চল তো দেখে আসি চোর এসেছে সবাই বলা বলি করছে বাহিরে।নাজিফা বুঝে ও না বুঝার ভান করে বলল,হুম চল দেখে আসি!ওয়েট ওয়েট পা টা একটু বেঁধে নেই কাপড় দিয়ে রক্ত পড়া বন্ধ হবে তাহলে।

-মামুনি কী হলো?
-চোর এসেছে বাড়িতে?
-ওমারে তাই নাকি তা কখন এসেছে আর কে দেখেছে?
-গেস্ট রুমের সামনে যে ফুলের টব ছিলো চোরের ধাক্কা খেয়ে সেটা ভেঙ্গে গেছে।
-সে কী কথা!নাজিফা ও সাথে সুর তুলছে।আর মিট মিট করে হাসছে।
সকাল হলে সবাই চোর এসেছে বলে বলা বলি করলে
নাজিফা হাসি থামাতে না পেরে সিঁড়ি বেড়ে উপরে উঠে দেখে আগের থেকে রাইসা দাঁড়িয়ে আছে ছাদে।হাতে কিছু ফুল নিয়ে নাজিফার দিকে এগিয়ে দিলো বলল,

“””””শুভ বসন্তকাল”””””
ফুল ফুটোক আর না ফুটক আজ বসন্তকাল।

-তুই ফুল গুলো কোথায় পেলি?
-তোদের ছাদে পেয়েছি,কেউ হয়তো আমার জন্য রেখে গেছে,হিহিহি।
-ওমারে কে রাখবে,আর তুই এই ফুল গুলো দিয়েই আমাকে শুভেচ্ছা জানালি?
-হুম করলাম!এখন ফুল গুলো দিয়ে দেয়।শুভেচ্ছা জানানো তো হয়ে গেছে,,,,হিহিহি,,আমি ফুল গুলো যেখানে পেয়েছি আবার সেখানে রেখে দেই।হিহিহি
-না আমি দিবো না!
-আরে দিয়ে দেয়,কার না কার ফুল রেখে গেছে!
-তুই আমাকে দিলি ক্যান?এখন পাবিনা যা!
-যাবো না আগে দেয়!
-ধর যা ভাগ!
-এইরে ফোনটা রুমে রেখে আসছি নিয়া আসি!
-যা,,,তাড়াতাড়ি আসবি?
-আচ্ছা,,,,


নাজিফা ছাদে একা দাঁড়িয়ে রাইসার জন্য অপেক্ষা করছে,,এমন সময়,
মেহেরাজকে দেখা গেলো ছাদে চিপ্স খাচ্ছে আর ঘুটি ঘুটি পায়ে নাজিফার নিকট আসছে!
নাজিফা বলল,”মেহেরাজ তুই একা চিপ্স খাবি আমাকে দিবি না?
নাজিফার কথা শুনেই মাত্র একটা চিপ্স নাজিফার মুখে দিয়ে দিলো মেহেরাজ।নাজিফা ও খুশি হয়ে খেয়ে নিলো।রাইসা আসছিলো না দেখে নাজিফা মেহেরাজকে নিয়ে যেইনা নিচে আসলো তখনি মেহেরাজ তার আম্মু,নানুমনি,দাদিমনি,আরো কয়েকজন বয়স্ক মহিলা ছিলো তাদের সামনে বলে উঠে,”আমার চিপ্স দেয়”তুই আমার চিপ্স খেয়েছিস!আমার চিপ্স দেয়।জোরে জোরে চিৎকার দিয়ে বলা শুরু।
সবাই নাজিফার দিকে তাকিয়ে পড়লো।
নাজিফার মনে হলো সব চিপ্স প্যাকেট থেকে নাজিফা একাই খেয়েছে।লজ্জা পেয়ে মেহেরাজ কে বলল,”চল আমার রুমে তোকে এক প্যাকেট দিবো।
মনে মনে আজ আমাকে একটা চিপ্সের জন্য লজ্জা এমন করে না দিলে ও পারতি পিচ্ছি পোলা।একটা দিয়ে এখন এক প্যাকেট আদায় করছিস।


চলবে,
#আলেমের_বউ (পর্ব-২০)


আয়শা চাচি:নাজিফা আমার বোন সাজিয়া যদি তোর রুমে আসে তাকে একটু বুঝাবি?
নাজিফা:কেন সে আবার কী করলো?
-তার জন্য একটা আলেম ছেলে ঠিক করা হয়েছে।একটু কালো তাই সে রাজি না।কিন্তু ছেলেটা খুব ভাল।
-আলেম তো বুঝলাম,কোন আকিদার?
-আহলে সুন্নাতে ওয়াল জামায়াত আকিদার।
-আচ্ছা আমার রুমে পাঠিয়ে দাও।
-আচ্ছা।



সাজিয়া কই তুই?(আয়শা চাচি)
-বলো আপু?(সাজিয়া)
-নাজিফার রুমে মেহেরাজ আছে নিয়ে আয় তো।
-আচ্ছা।


নাজিফা:কী গো সাজিয়া খালামনি তোমাকে নাকি দেখতে এসেছে?
-হ্যাঁ রে নাজিফা।
-ছেলে নাকি আলেম আয়শা চাচি বলল?
-আলেম।বাট আমি পছন্দ করি না।
-কেন পছন্দ কর না শুনালাম তো আহলে সুন্নাতে ওয়াল জামায়াত আকিদার?
-হ্যাঁ সব ঠিক বাট একটু কালো তাই।
-এটা কি কোনো কথা হলো।
শুনো,
রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
এর একজন কালো সাহাবি ছিলো।
তার নাম ছিলো, সা,দ (রাঃ)
সাদ আল আসওয়াদ আস-সুলুমী (রা)-তিনি ছিলেন গরীব, গায়ের রং ছিলো কালো।কেউ তাঁর কাছে নিজের মেয়ে বিয়ে দিতে চাইতো না।
সাদ (রা) একদিন আল্লার রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
এর কাছে দুঃখ করে বলেছিলেন, ‘ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমি কি আল্লার জান্নাতে যেতে পারবো না?তিনি আরো বলেন!
‘আমি তো নিচু মাপের ঈমানদার হিসেবে বিবেচিত হই’। রাসুল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
বললেন! কেন তুমি জান্নাতে যেতে পারবা না? অবশ্যই তুমি জান্নাতে যাবে????
সা’দ (রাঃ) দুঃখ সহকারে বলতে লাগলেন? মদিনার, কেউ আমাকে নিজের মেয়ে বিয়ে দিতে রাজি হচ্ছে় না’?
রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
সাহাবীর দুঃখটা বুঝতেন পারেন।
রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
একটি পত্র লিখে
৷ কালো সাহাবির হাতে দিয়ে
বললেন এই পত্রটি মদিনার বড় বাড়িতে
গিয়ে , মালিকের হাতে দিয়ে উত্তর
জেনে তার পরে আসবে , কালো
সাহাবী জানে না যে , এর ভিতরে কি
লেখা আছে , নবীজী(সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
এর কথা
অনুযায়ী পত্র খানি নিয়ে মদিনার বড়
বাড়ির মালিকের হাতে দিল ।
নবীজী(সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
এর কথা শুনে
তারাতারি পত্রটি খোলে ফেললো,
এর মধ্যে লেখা আছে __________
আস সালামু আলাাইকুম আমি হযরত
মোহাম্মদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
বলতেছি! আমি আপনার কাছে আমার একজন কালো সাহাবি কে পাঠিয়েছি আপনার মেয়ের সাথে আমার কালো সাহাবীর
বিয়ের প্রস্তাব দেয়ার জন্য আপনার কাছে আমি তাকে পাঠিয়েছি।আশা করি
আমার প্রস্তাব আপনি গ্রহণ করবেন এবং
আমার কালো সাহাবীর সাথে
আপনার সুন্দরী মেয়ের হুড়হুড়ি সাথে বিবাহ দিবেন ,
___________ ইতি হযরত মোহাম্মদ(সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
মদিনার শ্রেষ্ঠ ধনি লোক ছিলেন আল ইবনে-ওয়াহহাব। সাধারণ কোন ব্যক্তি ছিলেন না আল ইবনে ওয়াহহাব। তিনি হলেন মদীনার নেতাদের একজন; কিছুদিন যাবৎ মুসলিম হয়েছেন। তাঁর মেয়ে অপরূপা সুন্দরী রমণী, রূপের জন্য তাকে হুড়হুড়ি নামে বিখ্যাত ছিলেন। সেই আল ইবনে ওয়াহহাবের মেয়েকে বিয়ে করার জন্য রাসূলুল্লাহ(সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
সাদকে পাঠালেন।
এমন নেতার মেয়ে বিয়ে করবে সাদের মতো একজন অসহায় গরীব কালো ছেলে।
সে তার সৌন্দর্য্যের জন্য এতো প্রসিদ্ধ,
৷ সে হবে সাদের বউ??
স্বাভাবিক ভাবেই আল ইবনে ওয়াহহাব
অহংকার করে বলতেছে! তোমার মত একজন কালো ছেলের কাছে, আমার হুড়হুড়িকে বিয়ে দেবো? না অসম্ভব তুমি ‘আকাশের-কুসুম কল্পনা ছেড়ে দিয়ে বাড়িতে চলে যাও’?সে চেহারাটা খারাপ করে বাড়ির দিকে রওনা হলো?
… কিন্তু তাঁর মেয়ে ততক্ষণে দরজার ফাঁক থেকে সব কথা বার্তা শুনে ফেলেছে। তখন মেয়েটা বলে উঠলো, ‘বাবা! ছেলে টা আপনার কাছে কি প্রস্তাব নিয়ে আসছে?আমাকে একটু বলবেন!তার বাবা বললেন?তোমাকে নাকি সেই ছেলেটা বিয়ে করার জন্য নবীজি (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
আমার কাছে পাঠিয়েছেন।।।। তখন মেয়েটা বলে উঠলো? আমাকে বিয়ে করার জন্য প্রস্তাব টা দিয়েছে কে ….তিনি বল্লেন….আমাদের বিশ্ব নবীজি হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা ( সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
করেছে বিয়েটা দেওয়ার জন্যে, কিন্তু তাকে কিভাবে ফিরিয়ে দিতে পারলেন?? রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
উৎকণ্ঠা থেকে আমরা মুখ ফিরিয়ে নিলে আমাদের অবস্থানটা কি হবে?’এরপর সাদকে আধা পথ থেকে ফিরে এনে বললো, ‘রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
এর কাছে বলে দিন, আমি আপনাকে বিবাহ করার জন্য প্রস্তুত’এই কথা শুনে সাদের মন সেদিন আনন্দে পুলকিত… সে যেন খুশিতে টগবগ করে ফুটছে;…তারপর ।। রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
বললো বিয়ে জন্য ৪০০ দেরহাম মোহরানা দিতে হবে।
সাদ বললেন, হে রাসূল, আমি তো জীবনে কোনদিন চারশ দেরহাম দেখিই নি! আমি এই টাকা কীভাবে শোধ করবো? নবীজি (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
তাকে বললেন, আলী আল-নুমান ইবনে আউফ আর উসমান (রা) এর কাছ থেকে দুইশত দুইশত করে মোট চারশ দেরহাম নিয়ে নিতে। দুজনেই উনাকে দুইশত বেশি করে দেরহাম দিয়ে দিলেন।
টাকা জোগাড় হয়ে গেলো!
রাসুল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
বলেন!
সাদ তুমি যাও বাজার থেকে তোমার বউ এর জন্যে টুকটাক কিছু উপহার কিনে নিয়ে আসো। তিনি মার্কেটে পৌঁছে গেছেন, তিনি আনন্দের সাথে বাজার করতেছেন। প্রায় বাজার সব শেষের দিকে বউ জন্য একটা শাড়ি কিনলো বাকি টাকা দিয়ে আরও কিছু জিনিস পত্র..কিনবে।.হঠাৎ করে তাঁর কানে আওয়াজ আসলো জিহাদের ডাক। ‘যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হয়ে যাও’ … সাদ যেখানে ছিলেন সেখানেই দাঁড়িয়ে গেলেন। একবার আকাশের দিকে তাকায়…আর একবার জমিনের দিকে তাকায়?তিনি বললেন- ‘হে আল্লাহ! আমি এই বাকি টাকা দিয়ে এমন কিছু কিনবো যা তোমাকে খুশি করবে।’ নতুন বউ এর জন্য গিফট কেনার বদলে তিনি কিনলেন একটি তরবারি আর একটি ঘোড়া। সাদ (রাঃ) তার বউয়ের কাপড়টা পুরা শরীরে পড়ে ঘোড়া নিয়ে ছুটে চললেন জিহাদের ময়দানে, নিজের চেহারাটা কাপড় দিয়ে বেঁধে দিলেন।। যেন আল্লাহর রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
তাকে দেখে চিনে ফেলতে না পারে। কারণ রাসূলুল্লাহ(সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
তাকে দেখলেই তো বাড়িতে পাঠিয়ে দিবেন! সাহাবারা বলা বলি করছিলেন, এবং আল্লাহর রাসুল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
নিজেই চিন্তা করতেছেন?যুদ্ধের ময়দানে আমাদের মুসলমানদের পক্ষে এই রকম পুরা শরীর কাপড় দিয়ে ঢেকে রেখে আমাদের পক্ষে কে যুদ্ধ করতে আসা এই -ঢাকা লোকটি কে? আলী (রা) বললেন, ‘বাদ দাও, সে যুদ্ধ করতে এসেছে।’ সাদ যুদ্ধ করতে থাকলেন, কিন্তু তাঁর ঘোড়ায় আঘাত হানা হলো, ঘোড়া পড়ে গেলো। সাদ উঠে দাঁড়ালেন। ঐ সময় নবীজি (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)ো
তার কালো চামড়া দেখে ফেললেন, ‘ইয়া সাদ এ কি তুমি?!’ রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
এর প্রশ্নের জবাবে তিনি (রা) বললেন ‘আমার মা-বাবা আপনার উপর উৎসর্গিত হোক ইয়া আল্লাহর রাসূল! হ্যাঁ, আমি সাদ’
মুহাম্মাদ ( সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
বললেন, ‘হে সাদ, জান্নাত ছাড়া তোমার জন্য আর কোন আবাস নেই।’ সাদ (রা) আবারো জিহাদে ঝাঁপিয়ে পড়লেন। কিছু সময় পর কয়েকজন বললো সাদ আহত হয়েছে। রাসূল (সা) ছুটে গেলেন ময়দানে। সাদকে খুঁজতে লাগলেন। সাদের মাথা খানা নিজের কোলের উপর রেখে কাঁদতে শুরু করলেন।তাঁর অশ্রু গড়িয়ে গড়িয়ে সাদের মুখের উপর এসে পড়ছিলো। রাসুল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
চোখ বেয়ে নেমে আসছিলো অশ্রুর ধারা।একটু পর তিনি দুনিয়া থেকে শাহাদাত বরন করে নিলেন । কিছু পর রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
হঠাৎ হাসতে শুরু করলেন, আর তারপর মুখ ফিরিয়ে নিলেন।
আবু লুবা (রা) নামের একজন সাহাবা উনাকে দেখে বিস্ময়ে বললেন, ‘হে রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
আমি আপনাকে এমনটি কখনো করতে দেখি নি’… আল্লাহর রাসূল ( সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
বললেন, ‘আমি কাঁদছিলাম কারণ আমার প্রিয় সঙ্গী আজ চলে গেলো! আমি দেখেছি সে আমার জন্য কী ত্যাগ করলো আর সে আমাকে কতো ভালোবাসতো… কিন্তু এরপর আমি দেখতে পেলাম তার কী ভাগ্য, আল্লাহর কসম, সে ইতিমধ্যে হাউদে পৌঁছে গেছে।’ আবু লুবা জিজ্ঞেস করলেন ‘হাউদ কি?’ রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
বললেন, ‘এটি হলো এমন এক ঝর্ণা যা থেকে কেউ একবার পান করলে জীবনে আর কোনদিন পিপাসার্ত হবে না, এর স্বাদ মধুর চেয়েও মিষ্টি, এর রং দুধের চেয়েও সাদা! আর যখন আমি তাঁর এইরূপ মর্যাদা দেখলাম, আল্লাহর কসম, আমি হাসতে শুরু করলাম।’
‘তারপর আমি দেখতে পেলাম সাদের দিকে তাঁর জান্নাতের স্ত্রীগণ এমন উৎফুল্ল ভাবে ছুটে আসছে, যে তাদের পা গুলো কাপড় গুলো হাটু ওপরে উঠে গেছে ।।।, তাই আমি চোখ ফিরিয়ে নিলাম।রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন,
আল্লাহ তায়া’লা সাদকে জান্নাত দান করেছেন ।
হে আল্লাহ আমাদের সমস্ত মুসলমানদের বুঝার তৌফিক দাও।
আমীন ছুম্মা আমিন।

সাজিয়া:মাশাআল্লা নাজিফা তুমি আমার চোখ খুলে দিলা আমি তাকে বিয়ে করবো।
নাজিফা:শুকরিয়া,আলহামদুলিল্লাহ।

চলবে!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here