অবন্তর আসক্তি পর্ব ৯

0
607

#অবন্তর_আসক্তি
#পর্ব_০৯
#শারমিন_আক্তার_বর্ষা
_________
‘ S O R R Y ‘

ফ্যানটা অফ ছিল, তাই কাগজটা দিয়েই গায়ে বাতাস করছিলাম। ইচ্ছে করছিল কাগজটা ধুয়ে ধুয়ে পানি খাই। কিন্তু সেটা সম্ভব নয় তাই আপাতত বাতাস খাচ্ছি। রুমের মধ্যে বৃষ্টি এসে আমাকে উদ্দেশ্য করে বলল, ‘ বাড়ির পেছনের দিকটায় যা তোর জন্য অপেক্ষা করছে ‘

আমিও অস্ফুটস্বরে পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলাম, ‘ কে অপেক্ষা করছে? আরে বলে তো যা কে অপেক্ষা করছে? ‘

কিছু না বলেই চলে গেলো, জানাই হলো না কে অপেক্ষা করছে এত সকালে আমার জন্য? বলে বিছানা থেকে উঠতে যাবো তখন দেয়ালের ঘড়ির উপর চোখ আঁটকে গেলো। সকাল ১০টা বাজে, আর আমি কি না ভাবছিলাম এখনো সূর্যের আলোয় ফুটেনি। মাথায় হাত দিয়ে তারাহুরো করে উঠে দৌঁড়ে বাথরুমে চলে গেলাম। এখন আমি ঢের বুঝতে পারছি কে অপেক্ষা করছে আমার জন্য আজও গেলে বকা খাবো ধ্যাত ভাল্লাগে না। বিড়বিড় করতে করতে বেরিয়ে পরলাম। নাস্তা করার জন্য মা অবশ্য ডেকেছিল কিন্তু আমার ওত সময় নেই বলে ছুটে যাই। আঙিনায় গিয়ে আহিতা মাহিরা রিয়া কাউকেই দেখতে পাচ্ছি না। থমকে দাঁড়িয়ে রইলাম কানের কাছে বিড়বিড় করে কেউ একজন বলল, ‘ সরি ‘
আমি ঠোঁটের উপর আলতো ভাবে কামড় বসিয়ে পেছনে ঘুরে দাঁড়ালাম। সে তার দুই হাত পেছনের দিকটায় নিয়ে মুঠি বন্ধ করে আমার দিকে ঝুঁকে রয়েছে। আমি ভ্রু কুঞ্চিত করে তাকিয়ে আছি। সে আবারও মৃদুস্বরে বলল,
‘ সরি ‘

আমি মুখ ভেংচি কেটে পাশ দিয়ে চলে যাচ্ছিলাম। তখন অভ্র ভাইয়া আমার এক হাত ধরে টান দিয়ে তার সামনে দাঁড় করিয়ে প্রশ্ন ছুঁড়ে,

‘ আমার দেওয়া আইসক্রিম নিয়েছিস, তাহলে আমার বলা সরি কেনো নিচ্ছিস না? ‘

ও মোর খোদা মানে কি সে তখন দেখে ফেলছিল। আল্লাহ আমি চোখ জোড়া রসগোল্লার মতো বড়বড় করে তার দিকে তাকিয়ে রইলাম। মনে মনে এক শুকনো ঢোক গিলে ফেললাম, তার মুখের উপর আমতা আমতা করে বলি,

‘ হা,হাত ছাড়ুন আমার, আমাকে কলেজে যেতে হবে। ‘

অভ্র ভাইয়া ভ্রুক্ষেপহীন ভাবে আমার দিকে তাকিয়ে রয়, তৎপর হাত ছেড়ে দেয়, আমি তার সামনে থেকে চলে আসলে, সে পিছু ডেকে বলে উঠে,

‘ শুক্রবারেও তোর কলেজ খোলা থাকে? ‘

‘ What the ফাউ প্রশ্ন শুক্রবারে আবার কলেজ কার খোলা থাকে? ‘

মাথা ঘুরিয়ে তার দিকে তাকিয়ে পাল্টা প্রশ্ন ছুড়লাম।
অভ্র ভাইয়া দুই হাত প্যান্টের পকেটে গুঁজে দেয়, ঠোঁট জোড়া বাঁকা করে আমার দিকেই হেঁটে আসছে। আমি ঠাঁই দাঁড়িয়ে আছি, সে সামনে এসে দাঁড়িয়ে বলল,

‘ আজ শুক্রবার ‘

‘ আজ শুক্রবার ইশশ ভুলেই গেছি। মাথা থেকে একদম বেরিয়ে গেছে। ‘ মনে মনে,

মাটির দিকে তাকিয়ে ছিলাম মাথা তুলে সামনে তাকাতে দেখলাম সে একদম আমার সামনে এসে দাঁড়িয়ে রয়েছে। এতটাই কাছে যা দেখলে যে কেউই ভাবতে বাধ্য হবে আমরা হয়তো লিপকিস।
ইয়াক, আমি তার চোখের দিকে এক নজর তাকিয়ে উল্টো দিকে দিলাম দৌঁড়, সে বেআক্কেলের মতো সেখানেই দাঁড়িয়ে রইল। আমি রুমের মধ্যে ঢুকে দরজার সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে পরলাম। বুকের উপর এক হাত দিয়ে চাপ দিলাম। দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে সামনে তাকিয়ে দেখি উপুড় হয়ে শুয়ে ফোন টিপছে বৃষ্টি, আমি তেড়েমেড়ে ওর পাশে গিয়ে ধুম করে দিলাম পিঠের উপর এক কিল, পিঠের উপর হাত দিয়ে ‘ ওরে বাবা গো ‘ বলে চিৎকার করে উঠে বসল বৃষ্টি আমার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিক্ষেপ করে চেচিয়ে বলল, ‘ মারলি কেন শাঁকচুন্নি? ‘

বিছানার উপর উঠে বসে ওর হাতে গুঁতো দিয়ে বললাম, ‘ কে ডাকছে আমায়?

সে ডোন্ট কেয়ার এটিটিউট নিয়ে বলল, ‘ কেন অভ্র ভাইয়া ‘

অভ্র নামটা শোনার পর দিলাম আরও এক ঘাত কাঁধের উপর বসাইয়া।
_______
তীক্ষ্ণ রৌদে বসে রয়েছি ছাঁদে, আজ তিন দিন পর রুম থেকে বের হইছি। লজ্জায় রুমেই লুকিয়ে ছিলাম, না জানি আবার কখন সামনে পরে যাবে, আবারও আইসক্রিম নিয়ে কথা বলবে তখন কি হবে ভেবেই রুম থেকে বের হইনি। কিন্তু আজ বের হয়ে বড়সড় শকট খেলাম। জানতে পারলাম দুইদিন আগেই অভ্র ভাইয়া তার বন্ধুদের সাথে চলে গেছে, শুনেই বুকের বা পাশে চিলিক পেরে উঠল, সে চলে গেছে শুনে আমার খুশি হওয়ার কথা অথচ আমার মুড অফ হয়ে গেলো। তখন থেকেই মনমরা হয়ে রৌদ্রে বসে রয়েছি। ভালোই লাগছে না কোনো কিছু মনে হচ্ছে কি জেনো মিসিং,, অভ্র ভাইয়ার ফেলে দেওয়া আইসক্রিম টা আমি আজও খাইনি, রেখে দিয়েছি ফ্রিজে রোজ তা দুইবার করে দেখে আবারও আগের ন্যায় ফ্রিজে রেখে দেই, জানি না কেনো দেখতে ভালো লাগে, হঠাৎ মাথার উপর একরাশ ছায়া উদয় হলো। মাথা উপর দিকে তুললাম দেখার জন্য এত কড়া রোদে ছায়া কোত্থেকে আসলো? মাথা উপরে তুলতেই দেখলাম একটা ছাতা, আর ছাতাটা নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। অভ্র ভাইয়া।
উনাকে দেখেই ফট করে উঠে দাঁড়িয়ে পরি। অস্ফুটস্বরে মুখ দিয়ে বের হয়ে আসে,

‘ আপনি কোণ্থেকা আইলেন? ‘

অভ্র ভাইয়া ভ্রু কুঞ্চিত করে বলল, ‘ মানে? ‘

আমি থতমত খেয়ে বললাম, ‘ না মানে হচ্ছে আপনি না চলে গিয়েছিলেন তাই আর কি? ‘

বলে মাথা নিচু করে ফেললাম। সে আমার দিকে তাকিয়ে গুরুগম্ভীর কন্ঠে বলল, ‘ এত রোদে ছাঁদে বসে আছিস কেন? ‘

আমি বললাম, ‘ ভালো লাগছিল ‘

‘ আমার মোটেও ভালো লাগেনি! ‘

‘ কিহহ? ‘

‘ কিছু না! এই নে! ‘

উনার কথা শুনে উনার মুখের উপর থেকে হাতের দিকে তাকালাম। এক হাত আমার দিকে বাড়িয়ে দিয়েছে অন্য হাত দিয়ে ছাতা ধরে রাখছে, ভাল করে তাকিয়ে দেখলাম। একটা কোণ আইসক্রিম আমি তাতে চোখ বুলিয়ে প্রশ্ন ছুঁড়লাম।

‘ আইসক্রিম কি আমার জন্য? ‘

সে কন্ঠ কঠোর করে বলল, ‘ না এখানে তো আরও কেউ আছে তারজন্য আনছি। ‘

উনার কথা শুনে চুপসে গেলাম আমি, চোখ দু’টো ছোটছোট করে তাকিয়ে রইলাম। সে আবারও চোখ দিয়ে ইশারা করল হাতের দিকে, যাতে আইসক্রিম টা আমি নেই। আমি না নিয়েই ইতস্ততভাবে উনার দিকে তাকিয়ে আছি। উনি হয়তো কিছু আন্দাজ করেছেন, নিঃশ্বাস ফেলে ধীর কন্ঠে বলল,

‘ তুই যদি ও-ই দিনের ঘটনার জন্য আপসেট হয়ে থাকিস তাহলে শোন, আমি ওইদিন ভুল করে তোর রুমে চলে গিয়েছিলাম আর দরজা টাও খোলা ছিল তাই সেরকম পাত্তা না দিয়ে ঢুকে পরে ছিলাম। আর বিশ্বাস কর আমি তোর দিকে তাকাইনি। কোনো কিছুই খেয়াল করিনি। আমার তেমন ইন্টারেস্ট ও নেই না ছিল। আমি সব মেয়েকেই সম্মান করি। কারো প্রতি কুদৃষ্টি আমার নেই, তাই ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়েছি, আইসক্রিম টা তোর জন্য নিবি প্লিজ। ‘

এইভাবে বললে না নিয়ে থাকা যায়। মনে মনে প্রচুর হাসি পাচ্ছে তবুও হাসি কন্ট্রোল রাখার চেষ্টা করে হাত থেকে আইসক্রিম নিয়ে দিলাম দৌঁড়, রুমে এসে দরজা বন্ধ করে দিলাম। কিছুক্ষণ হাতে আইসক্রিম নিয়ে বসে রইলাম পরক্ষণেই টের পেলাম আস্তে আস্তে আইসক্রিম গলে যাচ্ছে। কি কপাল একদম ফাটা কপাল, গলা আইসক্রিম খেতে হলো।

বিকেলে ফ্রিজ খুলে দেখলাম আমার আইসক্রিম নাই গেলো কোই আমার আইসক্রিম কিছুক্ষণ চিল্লা চিল্লি করার পর, মুন্নী আপু আইসক্রিম খেতে খেতে এদিকেই আসল, আমি তার আইসক্রিমের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে প্রশ্ন ছুঁড়লাম, ‘ এই আইসক্রিম কার কোথা থেকে নিছিস? ‘

মুন্নী আপু সাধারণ ভাবেই জবাব দিলো, ‘ কেন ফ্রিজ থেকে, অনেক দিন ধরেই দেখছিলাম। কেউ খাচ্ছিল না তাই আমিই খাচ্ছি। ‘

‘ হারামী কুত্তী রাক্ষসী ডাইনি ‘ বলে তেড়েমেড়ে ওর সামনে গিয়ে সোজা ওর গলা টিপে ধরলাম। সাহস হয় কি করে আমার অভ্র ভাইয়ার দেওয়া আইসক্রিম ওর খাওয়ার? ও আমার থেকে নিজেকে বাঁচানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছে, তখনই পুতুল আপু সেখানে চলে আসল। আমার হাত থেকে ওকে ছাড়িয়ে বলল, ‘ কি হয়েছে ওর গলা টিপে ধরছিস কেন? ‘

‘ আমার আইসক্রিম খাইছে কেন ও? ‘

‘ একটা আইসক্রিমের জন্য বোন মেরে ফেলছিলি? ‘

‘ ও খাবে কেন আইসক্রিম? ‘

‘ বোইন বিশ্বাস কর তোর আইসক্রিম জানলে আমি টাচ ও করতাম না। ‘

‘ এক তুই আর এক রিমা, একজনের আইসক্রিম আরেকজনের চকোলেট উফফ পারিস ও তোরা দু’জন ‘

বলে মুন্নী আপুকে নিয়ে চলে গেলো।

সন্ধ্যার পর,

বিছানার উপর আরাম করে বসে মোবাইল স্ক্রল করছিল! আমি রুমে প্রবেশ করে বললাম।

” একটা কথা ছিল ”

আমার দিকে না তাকিয়েই ফোন স্ক্রল করতে করতেই উত্তর দিলো অভ্র।

” যা বলবি তারাতাড়ি বলে বিদায় হো ”

হেব্বি মেজাজ গরম হলো অপমান করল নাকি Insult

দাঁত কিলবিলিয়ে বললাম।

” আমি তোমাকে নিয়ে একটা গল্প লিখবো নায়ক তুমি থাকবা ”

ফোনের স্কিন থেকে চোখ সরিয়ে ভ্রু কুঁচকে তাকালো দাঁতে দাঁত চেপে পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ল.!

” নায়িকা কে? ”

আমিও দাঁত কেলিয়ে হেঁসে লজ্জা মাখা মুখ করে মৃদুস্বরে প্রতিউত্তরে জানালাম!

“কেন আমি?”

সে কিছুক্ষণ আমার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল তার পর যা বলল ইচ্ছা করছিল চুলগুলো ধরে টেনে একটা একটা ছিঁড়ে ফেলি।

” তোর গল্পে আমার নাম দিলে আমার নামের অপমান করা হবে ভুলেও এ কাজ করবি না তারপরেও যদি করিস জরিমানা দিবি ১০হাজার টাকা এখন যা ফুট আমার রুম থেকে ”

কথাটা বলে আবারও ফোন স্ক্রল করতে ব্যস্ত হয়ে পরল। বেশ কিছুক্ষণ আঁড়চোখে উনার দিকে তাকিয়ে রইলাম। মনে মনে ভাবলাম।

উনার নামে তো আমার তিনটা গল্প আছে আর সেটা যদি উনি জানেন তাহলে কি আমাকে জরিমানা তিন গুন দিতে হবে…

Like seriously তিন দশে ত্রিশ হাজার
What the ফাউ কথা
_______
মুখ ভেংচি কেটে রুম থেকে বের হয়ে গেলাম। রাতে আমাকে বলা হলো অভ্র ভাইয়াকে ডেকে আনার জন্য, রাতে খাবার খাওয়ার জন্য ডাকতে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ দরজার সাথে ধাক্কা লেগে হাত থেকে ফোনটা ফ্লোরে পরে গেলো। ফোনটা তুলতে তুলতে বললাম।
নিজে পরে গেলো এত কষ্ট হয় না যতটা না তুই পরে গেলে হয়।

চেয়ারে পায়ের উপর পা তুলে ফোন স্ক্রোল করছিল অভ্র ভাইয়া। এতদূর থেকে আমার কথা শুনে আমার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে ঠোঁট চিবিয়ে চিবিয়ে বলল!

তুই পরে গেলে তোর কষ্ট হয় না বর্ষা? চল আমার সাথে সিঁড়ি থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিবো এখন তোকে!

What the ফাউ কথা চোখ দু’টো থেকে চারটা হয়ে গেলো ডেবডেব করে তাকিয়ে রইলাম অভ্র ভাইয়ার দিকে সাথে সাথে একটা ঢোক গিলে উল্টো দিকে৷ না তাকিয়েই দিলাম দৌঁড় অন্ধের মতো দরজার সাথে বাড়ি খেয়ে ফ্লোরে পরে গেলাম।

আমাকে পরতে দেখে অভ্র ভাইয়া ফোনটা টেবিলের উপর রেখে চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়াল সাথে দুই হাত দিয়ে শার্টের কলার ঠিকঠাক করল তারপর আমার সামনে এসে দাঁড়াল। কোই মনে মনে ভাবছিলাম এই বুঝি কোমড়ে হাত রেখে ফিল্মি স্টাইলে টেনে তুলবে।
কিন্তু হলো উল্টো আমার দিকে একটু ঝুঁকে বসে আমাকে অবাক করে দিয়ে বলল!

অন্ধের মতো দৌঁড়ালে এমনই হয় জংলী। এখন বল এখানে কেন আসছিস?

আমি এক হাত দিয়ে আরেক হাত কচলাতে কচলাতে বললাম।

আম্মু ডাকছে গিলতে না মানে খেতে..!

আমার কথা শুনে অভ্র ভাইয়া ভ্রু কুঁচকে “বড় আম্মু ডাকছে” বলে উঠে দাঁড়িয়ে সিটি বাজাতে বাজাতে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।

আমি বোকার মতো বসে অভ্র ভাইয়ার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলাম।

What the শেষে কি না জংলী এত অপমান।

হাত দুটো উপরের দিকে তুলে মুখ দিয়ে চেঁচিয়ে বললাম, ‘ আল্লাহ ধৈর্য দান করেন আমাকে ‘

#চলবে?

(কার্টেসী ছাড়া কপি করা নিষেধ)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here