অপরিচিত পর্বঃ ০৯

0
997

অপরিচিত পর্বঃ ০৯
লেখিকাঃ তাহমিনা তমা

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে আছে মেহরাব। একটু আগেই ল্যান্ড করেছে প্লেন কিন্তু এখানে এসে মেহরাব বুঝে উঠতে পারছে না কোনদিকে যাবে। না মেহেক আসেনি মেহরাবের সাথে সে একাই এসেছে। মমের অবাধ্য হতে মেহরাবের খারাপ লাগলেও কিছু করার নেই তার এভাবে হাত গুটিয়ে থাকা সম্ভব নয় তার পক্ষে। বাংলাদেশে পা রাখার পর মেহরাব বুঝতে পারলো কানাডার তুলনায় এখানে শীত নেই বললেই চলে। গায়ের শীতের পোশাকগুলো খুলে ফেললো। মেহরাবের এখন মনে হচ্ছে এভাবে হুট করে চলে আসাটা ঠিক হয়নি তার আগে প্রিপারেশন নেওয়া প্রয়োজন ছিলো বোকার মতো কাজ করেছে সে। একটা গাড়িও পাচ্ছে না সব নাকি রিজার্ভ করা। অনেক কষ্টে একটা ট্যাক্সি খুজে পেলো।

মেহরাব একটু নিচু হয়ে বললো, Do you know where Mehrab Health Care Hospital is ?

ট্যাক্সি ড্রাইভার একবার মেহরাবের পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখে নিলো। তার কাছে মেহরাবকে বিদেশি মনে হলো তাই ভ্রু কুঁচকে বললো, স্যার বাংলা জানলে বাংলায় বলেন।

মেহরাব এবার নিজের বোকামির জন্য নিজেকে গালি দিচ্ছে সে ভুলেই গিয়েছিলো সে কানাডায় না বাংলাদেশে আছে আবার ড্রাইভারের দিকে তাকিয়ে বললো, মেহরাব হেলথ কেয়ার হসপিটাল কোথায় জানেন ?

ড্রাইভার এবার বিটকেল মার্কা হাসি দিয়ে বললো, হ্যাঁ স্যার চিনি তো কিন্তু এখান থেকে একটু দূর হয়ে যায় তাই ভাড়াটা বেশি দিতে হবে।

মেহরাবের এখন বিরক্ত লাগছে ইচ্ছে করছে নিজের মাথায় নিজেই একটা বারি দিতে। কপালে দু’আঙ্গুল ঘষে রাগ কন্ট্রোল করে বললো, ঠিক আছে চলুন।

মেহরাব গাড়িতে বসতে না বসতেই ড্রাইভার বললো, স্যার আপনি কোন দেশ থেকে এসেছেন ? না মানে কোনো বিদেশি মানুষকে এতো সুন্দর করে বাংলা বলতে দেখিনি কখনো বললেও ভেঙে ভেঙে বলে।

মেহরাব ছোট করে উত্তর দিলো, কানাডা।

উত্তর পেয়ে ড্রাইভার আবার বললো, স্যার এখানে কার কাছে এসেছেন ?

মেহরাব এবার বিরক্ত হয়ে বললো, আপনি কথা কম বলে একটু তাড়াতাড়ি যান।

ড্রাইভার মুখটা মলিন করে বললো, ঠিক আছে স্যার।

একটু যেতেই গাড়ি জ্যামে আঁটকে গেলো মেহরাব বলে উঠলো, কী হলো থামলেন কেনো ?

ড্রাইভার বললো, কেনো আর থামবো স্যার ? ঢাকার জ্যাম সম্পর্কে জানেন না হয়তো তাই এ কথা বলছেন।

মেহরাব আর কিছু বললো না কিন্তু দশ মিনিট হয়ে গেলেও যখন গাড়ি একই জায়গায় আঁটকে আছে তখন মেহরাবের মেজাজ খারাপ হতে লাগলো। কিন্তু কিছু করার নেই বাংলাদেশের জ্যাম সম্পর্কে সে আগে থেকেই একটু জানে। শুনেছে বাংলাদেশি বন্ধুদের থেকে।

বিরক্ত হয়ে মেহরাব বললো, আর কতক্ষণ এভাবে বসে থাকতে হবে ?

ড্রাইভার সামনের দিকে উঁকি ঝুঁকি তাকিয়ে বললো, সেটা কী করে বলি বলুন তো স্যার ? কখনো কখনো তো ঘণ্টার পর ঘন্টা জ্যামে বসে থাকতে হয়।

মেহরাব বিরক্ত হয়ে সিটে হেলান দিয়ে বললো, ও গড,,, এই দেশে মানুষ থাকে কী করে ? ঐ মেয়ে যদি কোনো মিথ্যা বলে থাকে তাহলে খবর আছে এই মেয়ের। খুন করে ফেলবো আমি ওকে।

সেদিন বাসায় গিয়ে আরফা মেহরাবকে ম্যাসেজ করে বলেছে মুজাহিদ খান খুবই অসুস্থ আর মৃত্যুর আগে একবার তাকে দেখতে চায়। সেটা শুনে কিছু না ভেবে মেহরাব পাগলের মতো ছুটে এসেছে। এমন কী নিজের বাড়ি ঠিকানা পর্যন্ত জানা নেই মেহরাবের, তাই হসপিটালে যাচ্ছে। আরো পনেরো মিনিট পর জ্যাম ছাড়লো গাড়ি আবার চলতে শুরু করলো। আধঘন্টা চলার পর হঠাৎ গাড়ি থেমে গেলো। মেহরাবের মাথায় অনেক পেন হচ্ছে তাই সিটে হেলান দিয়ে ছিলো গাড়ি ব্রেক করায় মাথা তুলে সামনে তাকালো।

কী হলো আবার ব্রেক কেনো করলেন ?

ড্রাইভার বললো, স্যার একটা মেয়ে সিগনাল দিচ্ছিলো।

মেহরাব কিছু বলবে তার আগেই কেউ মিষ্টি স্বরে বলে উঠলো, একটু লিফট দিবেন প্লিজ প্লিজ। আসলে এখানে এসে গাড়িটা নষ্ট হয়ে গেছে আর এখন অফিস টাইম তাই কিছু খালি পাচ্ছি না। আমার একটা ইমারজেন্সি অপারেশন আছে তাড়াতাড়ি যেতে হবে প্লিজ।

ড্রাইভার বললো, কিন্তু ম্যাম আমার গাড়িতে তো প্যাসেঞ্জার আছে। স্যারের সমস্যা না থাকলে আমার নিতে সমস্যা নেই।

মেয়েটা এবার মেহরাবের দিকে তাকিয়ে বললো, প্লিজ হেল্প মি নাহলে আমার অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যাবে।

মেহরাবের মেজাজ এমনই খারাপ হয়ে আছে তার ওপর এখন আবার উটকো ঝামেলা। ইচ্ছে করছে মেয়েটাকে কথা শুনিয়ে দিতে কিন্তু তেমন কিছু না বলে বললো, ওকে।

মেহরাবের বলতে দেরি কিন্তু মেয়েটার গাড়িতে উঠে বসতে দেড়ি হলো না। ড্রাইভারকে বললো, মামা এবার যান আপনি।

ড্রাইভারকে মামা ডাকায় একটু ভ্রু কুঁচকে তাকালো মেহরাব। বাংলাদেশ সম্পর্কে তার ধারণা যে খুবই কম তবে সে তেমন ইন্টারেস্ট দেখালো না আগের মতো মাথা হেলান দিলো সিটে।

ড্রাইভার বললো, ম্যাম আপনি কোথায় যাবেন ?

মেয়েটা বললো, মেহরাব হেলথ কেয়ার হসপিটাল এই সামনেই।

মেহরাব মেয়েটার কথা শুনে আবার তাকালো তার দিকে। মেয়েটার হাতের সাদা এপ্রোন বলে দিচ্ছে সে একজন ডক্টর। মেহরাব আইডি কার্ডে নাম দেখার চেষ্টা করলো কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত সেটা উল্টো হয়ে আছে নিজের ইগোর জন্য কিছু জিজ্ঞেসও করতে পারলো না মেহরাব।

ড্রাইভার বলে উঠলো, আরে স্যারও তো ঐ হসপিটালেই যাবে।

এবার মেয়েটা মেহরাবের দিকে তাকালো। মুখে মাস্ক চোখে সানগ্লাস আর গায়ের পোষাকে বেশ স্মার্ট মনে হচ্ছে ছেলেটাকে। মেয়েটা বলে উঠলো, সরি সরি আমি আপনাকে ধন্যবাদ দিতে একদমই ভুলে গিয়েছিলাম।

মেয়েটার কথা শুনে মেহরাব আবার তার দিকে তাকালো। ড্রাক ব্লু রঙের একটা থ্রিপিস পরে আছে মেয়েটা, মাথায় হিজাব মুখে কোনো মেক-আপের প্রলেপ নেই, চোখে একটু কাজল দেওয়া, গোলাপি ঠোঁটের কোণে সৌজন্যে মূলক হাসি, খুব সাদাসিধা সাজে অসাধারণ লাগছে তাকে। এককথায় সুন্দরী বলাই ঠিক হবে। এক মিনিট মেহরাব একটা মেয়েকে এভাবে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছে ভাবতেই চোয়াল শক্ত হয়ে গেলো মেহরাবের তাই কিছু না বলে আবার চোখ বন্ধ করে নিলো।

এদিকে মেহরাবের এমন ব্যবহারে একটু অপমান বোধ করলো মেয়েটা তাই আর কিছু না বলে চুপ করে থাকলো। কিছু সময়ের মধ্যেই গাড়িটা হসপিটালের সামনে থামতেই মেয়েটা নেমে দাঁড়ালো।

ড্রাইভারকে জিজ্ঞেস করলো, ভাড়া কতো দিতে হবে ?

ড্রাইভার বললো, এটুকু তো এসেছেন ভাড়া দিতে হবে না। আর এমনিতেই লিফট আমি না স্যার আপনাকে দিয়েছে।

মেয়েটা একবার মেহরাবের দিকে তাকিয়ে সামনের দিকে আগাতে লাগলো।

মেহরাব মনে মনে বললো, কী অকৃতজ্ঞ মেয়ে যাওয়ার আগে ধন্যবাদও বললো না।

এই আরফা তোর আসতে এতো দেরি হলো কেনো ? অপারেশন একটু পরই শুরু হবে। সিনান স্যারকে তো চিনিস কতো রাগী লেট হলে তোর খবর আছে।

আরফা হাতের ঘড়িতে সময় দেখতে দেখতে বললো, হ্যাঁ রে অনেক লেট হয়ে গেলো।

আরফা নামটা শুনে মেহরাব চমকে পেছনে তাকালে দেখলো তার সাথে আসা মেয়েটাকে আর একটা মেয়ে আরফা নামে ডেকে কথা বলছে। মেহরাব সেদিকে যাবে তার আগেই ড্রাইভার বললো, স্যার আমার ভাড়া।

মেহরাব বললো, হ্যাঁ কত হয়েছে আপনার ভাড়া ?

ড্রাইভার বললো, ৭০০ টাকা দেন স্যার।

মেহরাব কিছু বলতে গিয়েও থেমে গেলো তার এখন আরফাকে প্রয়োজন। তাই ওয়ালেট থেকে টাকা বের করতে গিয়ে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো। সে ডলার নিয়ে চলে এসেছে। ডলার ভাঙাতে মনে নেই তার কী করবে ভেবে একটা ৫০ ডলারের নোট বের করে ড্রাইভারকে দিলে ড্রাইভার বলে উঠলো, স্যার এটা কী দেন ? আমি এটা নিবো না আপনি আমাকে টাকা দেন।

মেহরাব পড়লো মহা বিপদে এখন সে টাকা কোথায় পাবে ? সে বললো, আপনি এটা নিন এতে আপনারই লাভ হবে।

ড্রাইভার বললো, আমি লাভ লস বুঝি না আপনি আমাকে টাকা দিন আমি এটা নিবো না।

মেহরাব পেছনে ঘুরে তাকিয়ে দেখলো আরফা সেখানে নেই চলে গেছে। তাই আবার ড্রাইভারের দিকে তাকিয়ে বললো, এখানে ব্যাংক কোথায় আছে ?

ড্রাইভার বললো, এখান থেকে একটু সামনে গিয়ে সিটি ব্যাংক আছে।

মেহরাব আবার গাড়িতে বসে বললো, চলুন।

মেহরাব ব্যাংক গিয়ে নিজের সাথে থাকা ক্যাশ ডলার ভাঙিয়ে ড্রাইভারকে এক হাজার টাকার একটা নোট দিলো। ড্রাইভার আবার মেহরাবকে হসপিটালের সামনে নামিয়ে দিয়ে গেলো। এদিকে মেহরাবের সারা শরীর রাগে গিজগিজ করছে। এতো ঝামেলা সে পুরো লাইফে ফেস করেনি। রাগ সাইডে রেখে হসপিটালের দিকে তাকালো, বেশ বড় একটা হসপিটাল। ছবিতে যেমনটা দেখেছিলো তেমনটা, হসপিটালের ভেতরে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালো। রিসেপশনিস্টের কাছে গিয়ে দাঁড়াতেই মেয়েটা হা করে তাকালো মেহরাবের দিকে। মুখে মাস্ক থাকলেও সানগ্লাস খুলে ফেলেছে। মেহরাবের নীল চোখ দুটোর দিকে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে মেয়েটা।

মেহরাব একটু গলা পরিষ্কার করে বললো, এখানে আরফা নামে একজন ডক্টর আছে উনার সাথে দেখা করা যাবে ?

গম্ভীর পুরুষালি কন্ঠে ঘোর কাটলো মেয়েটার কিছুটা থতমত খেয়ে বললো, সরি স্যার উনিতো এখন একটা অপারেশনে আছেন। সময় লাগবে ফ্রী হতে।

মেহরাব একটু চিন্তা করে বললো, এই হসপিটালের মালিক মিস্টার মুজাহিদ খান,,,,

মেহরাবের কথা শেষ হওয়ার আগেই মেয়েটা বললো, স্যার তো দুদিন আগেই বাসায় চলে গেছেন। অসুস্থ ছিলেন কিন্তু এখন মুটামুটি ভালো আছেন তাই বাসায় চলে গেছেন।

এটা শুনে মেহরাবের চোখ মুখ শক্ত হয়ে গেলো আর মনে মনে বললো, তার মানে ঐ আরফা নামের মেয়েটা আমাকে মিথ্যা বলেছে। এই মেয়ের জন্য তারাহুড়া করে এসে কত ঝামেলায় পড়লাম আমি। একে তো পরে দেখে নিবো আগে বাড়ির ঠিকানা নিতে হবে।

মেহরাব কিছু বলার আগেই রিসেপশনিস্ট বললো, কোনো সমস্যা স্যার ?

মেহরাব নরম গলায় বললো, মিস্টার মুজাহিদ খানের বাড়ির এড্রেসটা দেওয়া যাবে ? আসলে উনার সাথে আমার খুব জরুরি প্রয়োজন ছিলো।

মেয়েটা একটু চিন্তা করে বললো, কী প্রয়োজন সেটা বললে ভালো হতো।

মেহরাব বললো, একটু পারসোনাল প্রবলেম।

মেয়েটা আর কথা না বাড়িয়ে খান ভিলার ঠিকানা দিয়ে দিলো মেহরাবকে। মেহরাব ঠিকানা পেয়ে ধন্যবাদ জানিয়ে বেড়িয়ে এলো। রাগে ফুসফুস করছে মেহরাব। আরফার জন্য আজ তাকে অনেক ঝামেলা পোহাতে হলো নিজের বাড়ির ঠিকানা নিতে হচ্ছে হসপিটালের রিসেপশনিস্টের থেকে। এর ফল হাড়ে হাড়ে পাবে মিস আরফা। আবার একটা ট্যাক্সি ডেকে ঠিকানা অনুযায়ী যেতে লাগলো। যত আগাচ্ছে ভেতরে তত এক্সাইটমেন্ট কাজ করছে। এতো বছর পর দাদাজানকে চোখের সামনে দেখবে আচ্ছা কেমন রিয়াকশন দিবে দাদাজান। তাকে তো দাদাজান চিনতেই পারবে না এমন হাজারো কথা ঘুরপাক খাচ্ছে মেহরাবের মাথায়। এখন তার মনে হচ্ছে পথটা যেনো শেষই হচ্ছে না। মেহরাব শুধু ছটফট করছে।

কলকাতা শহরের দামী এক ফ্ল্যাটের জানলার ধারে বসে বাইরে তাকিয়ে আছে সিনথিয়া। কতগুলো বছর পার হয়ে গেলো সে কানাডা থেকে এদেশে এসেছে। জীবনের গতিপথ বদলে গেছে পুরোপুরি ভাবে তবে একটা সেকেন্ড বা একটা মুহূর্তের জন্য মনের কোণ থেকে মেহরাবকে সরাতে পারেনি সে। চোখ বন্ধ করলে চোখের সামনে এখনো ভেসে উঠে এয়ারপোর্টে তার দিকে চাতক পাখির মতো তাকিয়ে থাকা অসহায় সেই দৃষ্টি। মেহরাবের সেই দৃষ্টি কুঁড়ে কুঁড়ে খায় সিনথিয়াকে। ভেতরটা যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকে কিন্তু সেই বা কী করতো ? আজ পরিস্থিতির স্বীকার সে। মেহরাব তো এতোদিনে হয়তো বিশ্বাসও করে নিয়েছে তার সিনথিয়া এই পৃথিবীতে নেই। সত্যি মেহরাবের সিনথিয়া নেই এখানে। যে সিনথিয়া আছে সে অন্য একজনের স্ত্রী তার সন্তানের মা। হাতে থাকা মেহরাবের পড়িয়ে দেওয়া আংটিটা দেখতে লাগলো সিনথিয়া। অনেক ঝড়ঝাপটা সয্য করলেও এটাকে কখনো কাছ ছাড়া হতে দেয়নি সে। আচ্ছা মেহরাব যেদিন জানতে পারবে তার সিনথিয়া মরেনি বেঁচে আছে অন্যকারো স্ত্রী হয়ে। তখন কী মেহরাব তাকে ঘৃণা করবে ? মেহরাবের ঘৃণা সয্য করার ক্ষমতা সিনথিয়ার নেই তাই তো বেঁচে থেকেও নিজেকে মৃত প্রমাণ করেছে মেহরাবের কাছে।

চলবে,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here