অনন্যময়ী
সানজিতা_তুল_জান্নাত
পর্ব_৩৮
সকালবেলা থেকেই বেশ বিরক্ত লাগছে অনির। কেমন ফাঁকাফাঁকা লাগছে। রিশাদ সেই সকালবেলা ব্রেকফাস্ট না করেই অফিসে বেরিয়ে গেছে। আজ নতুন প্রোজেক্টের উদ্বোধনী তাই তাড়াতাড়িই বেরিয়েছে। মিথিলা রিশাও নিজেদের পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত। কথা বলে সময় কাটানোর মতো শুধু শায়লা বেগম। কতক্ষণই বা আর গল্প করে পার করবে।
ব্রেকফাস্ট করে উপরে নিজের রুমে চলে যায় অনি। জাহানারা বেগমের সাথে কিছুক্ষণ কথা বলার পর উদ্দেশ্যহীন ভাবে ফোন ঘাটাঘাটি করে। কিছুতেই ভাল্লাগছে না তার।
এভাবে দুপুর গড়িয়ে যায়।দুপুরে গোসল শেষ করে নামাজ পড়ে নেয় অনি। নামাজ শেষ করে উঠতেই ডাক পড়ে তার।
মিথিলা আর রিশা একযোগে অনির রুমে আসে। সারাদিন পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত থাকায় তাদেরও খুব বোর ফিল হচ্ছিল। তাই এসেছে অনির সাথে একসাথে সবাই মিলে আড্ডা দিতে।
এই ভরদুপুরবেলা গল্প করে আর কতক্ষণ সময় পার করা যাবে।এদিকে লাঞ্চের সময়ও হয়ে আসছে। তাই সবাই মিলে ঠিক করে যে আজ রান্না করবে। সবাই মিলে ঠিক করে নেয় কে কি রান্না করবে।
অনি দেশী রান্নায় খুব বেশি পারদর্শী নয়। তবে জাহানারা বেগমের সান্নিধ্য পেয়ে সে টুক টাক কিছু রান্না পারে। কিন্তু আজ সে কোন দেশি বাঙালি খাবার রান্না করবে না।
ইংল্যান্ডে থাকাকালীন সে সেখানকার রান্নার সাথে বাঙালি রান্নার ছোঁয়া মিশিয়ে নিত্য নতুন রান্নার এক্সপেরিমেন্ট করতো। সেই এক্সপেরিমেন্টগুলোর মধ্যে থেকেই সে আজ দুটি পদ সবার জন্য রান্না করতে যায়। রাইস পিলাফ আর সাথে ইংল্যান্ড এর জনপ্রিয় খাবার সানডে রোস্ট।
অন্যদিকে মিথিলা আর রিশা মিলে সিদ্ধান্ত নেয় তারা সর্ষে ইলিশ,খাসির রেজালা আর রুই মাছের কারি।
সময় নষ্ট না করে সবাই রান্নাঘরের দিকে যায়।শায়লা আর সাবরিনা কেউই তাদেরকে প্রথমত রান্না করার পারমিশন না দিলে তারা তিনজন মিলে রাজি করায়। তাদের কথায় সায় দেয়।শায়লা এবং সাবরিনা তাদের সাহায্য করতে চাইলে তারা সরাসরি না করে দেয়। আমেনার মা কেও রান্নাঘর থেকে বের করে দেয়।
তারা তিনজন মিলে হাতে হাতে সবকিছু রেডি করে নেয়। মিথিলাকে বেশ হাসিখুশিই দেখাচ্ছে। মিথিলা অনি আর রিশাকে দেখে কেউ বলবে না তাদের খুব অল্পদিনের পরিচয়। মনে হচ্ছে বহুকাল আগে থেকেই যেন তারা একে অপরের সাথে পরিচিত। তারা তিনজনই প্রায় সমবয়সী।
এই সুযোগে অনিও বাঙালি রান্না শেখার সুযোগ পেয়ে যায়। রান্নাঘরের বাইরে দাঁড়িয়ে সাবরিনা বেগমের চোখে অশ্রু চলে আসে। শায়লা বেগম তার কাঁধে হাত রেখে কিছুটা ভরসা যোগায়। বাড়িতে যেন আজ উৎসব বেধে গেছে। সবাই কতটা হাসিখুশি।
এত কিছুর মাঝে অনি রিশাদকে একটু মিস করছে। রিশাদ থাকলে সেও তাদের সাথে মজা করতে পারতো। পরক্ষণেই তার মনে হয় রিশাদ থাকলে হয়তো মিথিলা কিছুটা অস্বস্তিতে পড়তো।
রান্নার ফাঁকেফাঁকে অনি রিশাদকে দুতিনবার কল দেয়। কিন্তু রিশাদ কল রিসিভ না করে ছোট ছোট টেক্সট দেয় যে সে কাজে ব্যস্ত আছে। অনির মনটা খারাপ হয়ে যায়।অবশ্য রিশাদ যাওয়ার আগে তাকে বলেই গিয়েছিল আজকে অনেক ব্যস্ত সময় পার করতে হবে রিশাদকে। কিন্তু সে এত কাঠখড় পুড়িয়ে রান্না করলো রিশাদই যদি সেটা মিস করে তাহলে তার এত কষ্ট বিফলে যাবে।
দুপুরের পর পর তিনজন রান্না শেষ করে। তিনজনই ঘেমে নেয়ে একাকার অবস্থা। তাই উপরে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিচে আসে।রিশাদের অনুপস্থিতিতে অনির কিছুটা মন খারাপ থাকলেও রিশার অদ্ভুত অদ্ভুত কথাবার্তায় তা কিছুটা দূর হয়ে গেছে।
একটু পরেই রায়হান সাহেব আসলে তিনিও সবার সাথে যোগ দেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই অনি রিশা মিথিলা সবার জন্য খুব সুন্দর করে খাবার পরিবেশন করে তারা বসে পড়ে।
সবাই খেতে শুরু করার মূহুর্তেই কোথা থেকে যেন রিশাদ দৌঁড়ে এসে অনির পাশের ফাঁকা চেয়ারটায় বসে পড়ে। বড় বড় নিঃশ্বাস ফেলে।যেন কোথাও থেকে হাপিয়ে এসেছে।
রিশাদকে দেখে অনির চোখ বড় বড় হয়ে যায়। রিশাদ তো আজ অনেল ব্যস্ত ছিল।তার ফোনই রিসিভ করার সময় হয়না সে এখানে কি করছে।
অনি কিছু বুঝতে পারছে না। রিশাদ অনির দিকে তাকিয়ে মুচক হাসি দেয়। এদিকে রিশা শব্দ করে হাসতে থাকে।
–“কি ভাবী!কেমন দিলাম সারপ্রাইজ টা বলো তো। খুব তো মন খারাপ করে ঘুরে বেড়াচ্ছিলে। কি ভেবেছো আমরা কি কিছু বুঝিনা? তোমার এই ননদিনী সব বুঝতে পারে। আমরা সবাই নতুন বউয়ের হাতের রান্না খাবো আর যে আসল মানুষ সেই মিস করবে তা কি হতে পারে বলো? তাই তো যথা সময়ে ভাইয়া তোমার সামনে হাজির করলাম। তোমার ননদিনীর কোয়ালিটি আছে বস। “(রিশা)
রিশার কথায় অনি বেশ লজ্জা পায়। লজ্জায় তার মাথা নিচু হয়ে যায়। রিশাদ অনির অবস্থা বুঝতে পেরে রিশার মাথায় হালকা টোকা দিয়ে বলে;
–“হইছে মা এখন একটু থাম।আমাদের রেহাই দে তোর এই বকবকানি থেকে। “(রিশাদ)
–“এহহ রেহাই দে। আমার জন্যেই আজ তুমি ভাবীর হাতের রান্না খাইয়ার সুযোগ পাচ্ছো। গিভ মি সাম রেসপেক্ট ব্রো।”(রিশা)
রিশাদ আর রিশার কথোপকথনে উপস্থিত সবাই হাসিতে ফেটে পড়ে। রিশাদ রিশাকে ভেংচি কাটে। রিশাকে উদ্দেশ্য করে কিছু বলতে যাবে তার পূর্বেই শায়লা বেগম সবাইকে থামিয়ে দেয়।
হাসিমজার মধ্যে দিয়ে সবাই খাওয়া শুরু করে। এক অদ্ভুত আনন্দের জোয়ার বয়ে যাচ্ছে সকলের মাঝে দিয়ে। এই আনন্দের জোয়ার অন্যদের তুলনায় মিথিলার ক্ষেত্রে কিছুটা কম থাকলেও সবার সাথে পাল্লা দিয়ে চাপা কষ্টের উপর হাসির রেখা ফুটিয়ে রেখেছে। যা কারোরই নজরে পরে নি।
রান্না খেয়ে সবাই প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে যায়। বিশেষ করে অনির হাতের বাঙালি ধাচের বিদেশি রান্না সবারই খুব ভালো লাগে। এধরনের রান্না আজই প্রথম খেলো সবাই। সবার প্রশংসা শুনে অনির মনটাও খুব খুশি হয়ে যায়।
খাওয়া দাওয়া শেষ করে রিশাদ পুনরায় বেরিয়ে যায়। সে অফিসে কাজের মধ্যে এতটা ব্যস্ত ছিল যে কারো ফোন রিসিভ করারই সময় পাচ্ছিল না। অনি বার বার ফোন দিলে তাকে টেক্সট করে দেয়। কিছুক্ষণ পরেই রিশা এক নাগাড়ে ফোন দিতে থাকে। কিন্তু কোনভাবেই রিশাদ ফোন রিসিভ না করায় রিশা ভয়েস মেসেজ পাঠায়।
–“ওই ভাইয়া ফোন রিসিভ করিস না কেন? প্রধানমন্ত্রীর চেয়ে বেশি ব্যস্ত নাকি তুই? আচ্ছা কাজের কথা শোন। আজকে ভাবী সহ আমি আর মিথিলা বাড়ির সবার জন্য রান্না করেছি। তুই প্লিজ একটু আয় না। সবাই আছে তুই ই শুধু নাই। ভাবীরও মন খারাপ। তুই আসলে ভাবীর মনটা ভালো হয়ে যাবে আর আমাদেরও সবার ভালো লাগবে। প্লিজ প্লিজ প্লিজ ভাইয়া একটু ম্যানেজ করে আয়। লাঞ্চ করেই আবার বেরিয়ে যাবি। তুই আসলে কিন্তু ভাবীও সারপ্রাইজ পাবে। তো প্লিজ চলে আয়।”(রিশার ভয়েস মেসেজ)
রিশার মেসেজ শুনে রিশাদের মনটা ভালো হয়ে যায়। অনির কথা ভাবতেই সে আনমনে মুচকি হাসে। মনে মনে ভাবতে থাকে অনি আজ প্রথম রান্না করেছে। অনির হাতের রান্না কোনভাবেই মিস করা যাবে না।
তাই রিশাদ খুব দ্রুত হাতের কাজগুলো শেষ করে নেয়। লাঞ্চ আওয়ারে এক ঘন্টার জন্য সে বাড়িতে আসে। আবার খাওয়া শেষ করেই বেরিয়ে যায়। অনির সাথে সেভাবে কথা বলার সুযোগই পায়না সে। এতে অনির কিছুটা মন খারাপ হলেও সে পাত্তা দেয় না।রিশাদ এসেছিল তাতেই সে বেশ খুশি হয়েছে।
বেশ ভালো একটা দিন কেটেছে অনির আজ। ফোনের এপাশ থেকে জাহানারা বেগমকে সেই গল্পই শুনাচ্ছিল অনি। জাহানারা বেগমের জায়গায় অনামিকা শেখের উপস্থিতি টা ফোনের এপাশ থেকে টের পায়নি অনি।
জাহানারা বেগম ঘরে উপস্থিত ছিলেন না। ফোন বাজতে শুনে অনামিকা শেখ রুমে আসেন। স্ক্রিনে অনির নামটা দেখে নিজের অজান্তেই ফোনটা রিসিভ করে কানে ধরেন।
জাহানারা বেগমকে কল করে তাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই অনি নিজের কথাগুলো বলতে শুরু করে দেয়। আজকে রিশাদের পরিবারের সাথে কাটানো প্রতিটা মূহুর্তের বর্ণনা দেয় খুব উৎসাহ নিয়ে। যেন এটা তার জীবনের এক চরম প্রাপ্তি। কতটা প্রাণবন্ত ;কতটা উচ্ছ্বাসিত তা ফোনের ওপাশ থেকে একটু একটু করে অনুভব করতে পারছে।
কতটা প্রাণবন্ত, চাঞ্চলতা! আগে কখনো দেখেননি অনামিকা শেখ। অবশ্য দেখার সুযোগই বা কোথায় পেতেন। সেই ছোটবেলায় দূর অজানায় পাড়ি জমিয়েছিল জাহানারা বেগমের সাথে। আজ এত বছর পর ফিরেও চলে গেল অন্যের ঘরে।
অনির প্রতিটি কথা অনামিকা শেখ খুব মনোযোগ দিয়ে শুনছে। বাচ্চারা যেমন ছোট খাটো কোন বিষয় নিয়েও উচ্ছ্বাসিত থাকে ঠিক তেমনি ঘটেছে অনির ক্ষেত্রে। এমনটাই মনে হচ্ছে অনামিকার কাছে। আসলে পারিবারিক সুখানুভূতি বহু কাল ধরে অনির ধরাছোঁয়ার বাহিরে।তাই বোধ হয় সে আবেগকে দমিয়ে রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে।
কাঁধের উপর কারো হাতের স্পর্শ অনুভব করতে পেরে হুশ ফেরে অনামিকার। পিছনে ফিরে দেখতে পান জাহানারা বেগম দাঁড়িয়ে আছেন।
জাহানারা বেগমকে দেখে অনামিকা কিছুটা ইতস্তত বোধ করে।
ফোনটা জাহানারা বেগমের দিকে বাড়িয়ে দিলে তিনি হাতে নিলে দেখতে পান অনির নামটা।
স্পীকার অন করে দেন। অনামিকা শেখ স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছেন অনির কথা। অনামিকা শেখ এই মূহুর্তে চাইছিলেন সেখান থেকে চলে যেতে। এক অদৃশ্য শক্তি যেন তাকে বার বার আটকে দিচ্ছিল। অনামিকা শেখ সেখানেই ঠায় দাঁড়িয়ে থাকেন।
জাহানারা বেগম অনির কথায় খুব বেশি জবাব দেন না। শুধু তার কথায় তাল মিলিয়ে হু হা করেন। অনির কণ্ঠস্বর শুনে বুঝতে পারেন বেশ ভালোই আছে। মিথিলার ঘটনাটার পর জাহানারা বেগম বেশ চিন্তিত ছিলেন। অনির কথা শুনে তার সকল চিন্তা একেবারে দূর হয়ে গেছে।
অনির সাথে কথা বলা শেষ করে ফোনটা রেখে দেন জাহানারা বেগম। অনামিকা শেখ তার মায়ের সাথে কোন কথা না বলে রুম থেকে আস্তে আস্তে বেরিয়ে যান। জাহানারা বেগম অনামিকার গমন পথের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলেন।
।
।
।
রাত প্রায় ১১টা বাজতে চলেছে। রিশাদ এখনো বাড়ি ফেরেনি। অনি কয়েক বার ফোন দেয়ার পর রিশাদ রিসিভ করে বলে ফিরতে কিছুটা দেরি হবে। সবাই রাতের খাবার খেয়ে প্রায় ঘুমিয়ে গেছে। মিথিলার ঘরে এখনো আলো জ্বলছে। মনে হয় সে সজাগ আছে।
শায়লা বেগমকে অনি জোর করে ঘুমাতে পাঠিয়েছে। রিশাদ ফেরেনি বলে তিনি এখনই ঘুমাতে চাচ্ছিলেন না। কিন্তু অনির সাথে পেরে ওঠেননি। তাই বাধ্য হয়েই ঘুমাতে যান। এদিকে অনি রিশাদের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে।
বসে বসে ঝিমুচ্ছে অনি। রিশাদের উপর খুব বিরক্ত লাগছে তার। প্রথম দিনেই অফিস গিয়ে এতটা দেরি করে ফিরছে। মনে মনে হাজারটা কথা শোনাচ্ছে রিশাদকে। ঝিমুতে ঝিমুতে কিছুতা তন্দ্রাভাব চলে আসে অনির।
কলিং বেলের শব্দ শুনে ধড়ফড় করে ওঠে অনি। চোখ কচলাতে কচলাতে বিছানা থেকে নেমে নিচে নামে।
ঘুম ঘুম চোখে দরজা খুলে দেয় অনি। রিশাদকে বেশ ক্লান্ত দেখাচ্ছে। তবে অনির সেদিকে বিশেষ কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। এই মূহুর্তে ঘুম তাকে কাবু করে ফেলছে।
রিশাদ অনেকক্ষণ ধরেই বেল বাজাচ্ছিল। অনিকে দেখেজ সে বুঝতে পারে হয়তো ঘুমিয়ে পড়েছিল। কিন্তু বাসার অন্য সবাইও যে ঘুমিয়ে গেছে তা সে জানত না।
অনি ঘুম ঘুম কন্ঠে রিশাদকে বলেঃ
–“আপনি ফ্রেশ হয়ে আসুন।আমি আপনার খাবার গরম করে দিচ্ছি। “(অনি)
বলেই অনি রান্নাঘরের দিকে পা বাড়ায়। পিছনে রিশাদ কি বলে তা তার কান অবধি পৌঁছালেও মস্তিষ্ক অবধি পৌঁছেছে কিনা সন্দেহ।
রিশাদ উপরে চলে যায় ফ্রেশ হতে। একটা ট্রাউজার আর টি শার্ট পরে নিচে নামে। অনি ওভেনে খাবার গরম করে টেবিলের উপর সার্ভ করে রাখে।
একটা চেয়ার টেনে বসে পড়ে। টেবিলে হাতের উপর মাথা রেখে শুয়ে পড়েম রিশাদ নিচে নেমে দেখতে পায় অনি এভাবে শুয়ে আছে। রিশাদ ডাকতেই অনি চোখ কচলাতে কচলাতে রিশাদের দিকে তাকায়।
অনি রিশাদকে দেখে জোর করে চোখ খুলে রাখে।
–“তাড়াতাড়ি খেয়ে নিন।”(অনি)
অনির পাশেই একটা চেয়ার টেনে রিশাদ বসে পরে। খাওয়া শুরু করার সময় রিশাদ অনিকে বলে;
–“আপনি খেয়েছেন?”(রিশাদ)
অনি ইশারায় মাথা নাড়িয়ে বলে না।
রিশাদ ভ্রু কুঁচকে তাকায়। অনি এখনো খায়নি কেন? সে কি আমার জন্য অপেক্ষা করছিল?
–“তাহলে আমার জন্যই শুধু খাবার বেড়েছেন যে আপনি খাবেন না?”(রিশাদ)
–“না আমি খাবো না। আমার খেতে মন চাচ্ছে না আপনি খেয়ে নিন।”(অনি)
রিশাদ বুঝতে পারে অনি ঘুমের ঘোরে খেতে চাচ্ছে না। তাই সে জোর করে অনির মুখে কয়েক লোকমা ভাত তুলে দেয়। পাশাপাশি নিজেও খেয়ে নেয়। অনির যেন কোন খেয়ালই নেই এদিকে।
ঘুমকাতুরে অনন্যময়ী রিশাদের বরাবরই খুব ভালো লাগে। আজও তার ব্যতিক্রম হয়নি। অনির ঘুম ঘুম কণ্ঠস্বর রিশাদের কাছে খুব আকর্ষণীয় লাগে।
চলবে………..
আসসালামু আলাইকুম?