অনন্যময়ী সানজিতা_তুল_জান্নাত পর্ব_০৫

0
8278

অনন্যময়ী
সানজিতা_তুল_জান্নাত
পর্ব_০৫

অপর পাশে থাকা ব্যক্তি অনিকে দেখে যেন তার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে……..

অনির চোখে মুখে রাগটা স্পষ্ট ভাবে ফুটে উঠেছে।সামনে থাকা ব্যক্তিকে উদ্দেশ্য করে রাগী গলায় মৃদু চিৎকার দিয়ে বলে ওঠেঃ
আপনার সাহস তো কম নয়।অচেনা মেয়ের গায়ে হাত দেন।হাউ ডেয়ার ইউ।
এই মূহুর্তে অনি প্রচণ্ড রেগে আছে। রেগে গেলে তার নাক কাঁপতে শুরু করে। তার চোখ মুখ শক্ত হয়ে আসে। অনির এই ভয়ংকর রুপ দেখে অপর পাশে থাকা ব্যক্তি কিছুটা ভড়কে যায়। তবে সে নিজেকে সামলে নিয়ে উঠে দাঁড়ায়।
– আই এম সো সরি ইয়াং লেডি। আমি অন্য কারো সাথে আপনাকে গুলিয়ে ফেলেছি।আমি ইনটেনশনালি কিছু করিনি।

অনি ঝাঁঝালো কণ্ঠে বলে ওঠে;
আপনি বললেন আর আমি বিশ্বাস করলাম?? আপনি কি দিন কানা নাকি যে জলজ্যান্ত মানুষকে অন্য কারো সাথে আমাকে গুলিয়ে ফেলবেন। আজ আমার সাথে গুলিয়ে ফেলেছেন কাল আবার অন্যকারো সাথে গুলিয়ে ফেলবেন।আসলে আপনি ইচ্ছা করে এরকম করেছেন তাইনা। আপনাকে দেখতে তো একদম জেন্টলম্যান টাইপ মনে হছে কিন্তু স্বভাব এরকম কেন বলুন তো। ইডিয়ট কোথাকার।

অনির সামনে থাকা ব্যক্তি এতক্ষণ ধরে চুপ থাকলেও অনির কথায় সে কিছুটা রেগে যায়।রেগে গিয়ে সে বলেঃ
হ্যালো মিস হোয়াটএভার,এবার কিন্তু আপনি বাড়াবাড়ি করে ফেলছেন।মানুষ মাত্রই কিন্তু ভুল হয়।আর আমি মানছি আমি মিসটেক করে ফেলেছি।তার জন্য কিন্তু আমি সরিও বলেছি।তারপরেও আপনি এতোটা সিনক্রিয়েট করছেন কেন? আপনার সমস্যা কোথায়?এখন তো আমার মনে হছে আপনার মাথায় প্রবলেম আছে তাইনা তাছাড়া সরি বলার পর ও এতো ছোটখাটো বিষয় নিয়ে এভাবে সিনক্রিয়েট করতেন না। একচুয়ালি ডু ইউ নো হোয়াট আপনি আমার সরি ডিজার্ভই করেন না।সো আমি আমার সরি ফেরত নিচ্ছি ওকে।

অনি কিছুটা চটে গিয়ে বলে;
আমি সিনক্রিয়েট করছিইইই?? ও মাই গড ওয়াওও!!!তাহলে আপনি যেটা করেছেন সেটাকে তো ইভটিজিং বলে। আর আমার নাম মিস হোয়াটএভার না মাই নেইম ইজ মিস অনন্যময়ী শেখ।সো ডোন্ট কল মি হোয়াটএভার।আর আপনি তো আচ্ছা গায়ে পড়া লোক একেই তো নিজেই ভুল করছেন আর এখন আমাকেই রাগ দেখাচ্ছেন।মেয়ে দেখলেই আপনাদের মাথায় কিরকিরি পোকা কামড়ায় নাকি বলুন তো।যত্তসব।

দেখুন মিস অনন্যময়ী আমি আপনার সাথে কোন ঝামেলা করতে চাইনা। । আমি আমার উড বি ওয়াইফ এর সাথে এখানে দেখা করতে এসেছিলাম।ভুল বশত আমি পিছন থেকে আপনাকে আমার উড বি ওয়াইফ ভেবে
চোখ ধরে ফেলেছি। আমি ভালোই ভালোই আপনাকে সরি বলেছি বাট আপনি তো সোজা মাণূষ নন তাই দুলাইন বেশি বুঝে ঝামেলা কতছেন। নাউ প্লিজ লিভ ওকে। (সামনের ব্যক্তি)

অনি ভেংচি দিয়ে বলল;
নাউ প্লিজ লিভ বললেই হলো নাকি।হোটেলটা আপনার বাবার সম্পত্তি নাকি যে আমি আপনার কথায় এখান থেকে চলে যাব। আমি এখানে আগে এসেছি সো আমি কোথাও যাব না।যাওয়ার হলে আপনি যান হুহহ।আর আপনার মতো এরকম লোককে কে বিয়ে করতে যাবে।জানিনা কোন মেয়ের কপালটা পুড়ল।

-হা হা হা।এতক্ষণে আপনি একটা ঠিক কথা বলেছেন মিস।ফর ইউর কাইন্ড ইনফরমেশন এটা আমার বাবার হোটেল। বলেই সে জোরে জোরে হাসতে শুরু করল।
লোকটার কথা শুনে অনি হকচকিয়ে যায়।সে কিছুটা থতমত খায়।
ব্যক্তিটি অনির অবস্থা বুঝতে পেরে একটু ভাব নিয়ে বলতে শুরু করে;
ইটস ওকে মিস।এভাবে অবাক হওয়ার কিছু নেই।বাই দ্যা ওয়ে আপনি এখানে থাকতে পারেন।আমরা আমাদের গেস্ট দের খুব সম্মান করি।
লোকটার কথা শুনে অনির এখন বেশ অস্বস্তি হচ্ছে সাথে প্রচণ্ড বিরক্তও লাগছে তবেঅপর পাশের ব্যক্তি অনিকে এ অবস্থায় দেখে বেশ মজা নিয়ে বার নার লেগপুল করার চেষ্টা করছে।এতে অনির রাগ সপ্তমে উঠে যায়।রাগে তার চোখমুখে লালচে আভা ফুটে ওঠে।রিশাদ অনিকে দেখে আরেকদফায় ভড়কে যায়।তবে সে এবারেও নিজেকে সামলে নিয়ে অনিকে আরেকটু রাগানোর চেষ্টা করে।

এরইমধ্যে অদ্রি গাড়ি পার্ক করে ভিতরে ঢুকেই দূর থেকে অনিকে দেখো কারো সাথে কথা বলতে। সে কিছুটা অবাক হিয়ে যায় কেননা অনি অনেক বছর হলো দেশের বাইরে থাকত। এখানে কাউকেই সে চেনে না।অদ্রি কিছু একটা ভেবে হন হন করে অনির দিকে ছুটে যায়।

অদ্রি অনির কাছে পৌঁছে সামনের ব্যক্তি কে দেখে অবাক হয়।সেও অবাক হয়।
অনি অদ্রিকে দেখে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে। সে বলে; আপু তুমি এসেছো।কখন থেকে তোমার জন্য অপেক্ষা করছি।তুমি দেরিতে না আসলে এই খচ্চর লোকটার সাথে কথা বলা লাগত না। জানো আপু এই লোকটা পিছন থেকে এসে হুট করে আমার চোখ চেপে ধরেছে।তুমি ভাবতে পারছ আপু লোকটা কেমন খচ্চর।

অদ্রি আরেক দফা অবাক হয়।সাথে সাথে সামনের ব্যক্তিটা অসহায় মুখ করে বলল; অদ্রি বিশ্বাস করো আমি ইচ্ছা করে কিছু করিনি।আমি তো তুমি ভেবে ওর চোখ ধরেছিলাম।দেখো তোমার জামা আর ওর জামার কালার কিন্তু সেম। আর তুমিই তো কাল রাতে বলেছিলে মিষ্টি কালারের ড্রেস পড়ে আসবে।আমার দোষটা কোথায় তাহলে।তুমি বলো।এই মেয়েটা তখন থেকে আমাকে যা নয় তাই বলছে।

অদ্রি এবার পুরো ঘটনা বুঝতে পেরে হু হা করে হাসতে শুরু করে।অনি পাথরের এসব কিছু দেখে বোকার মত চেয়ে থাকে।
অদ্রি হাসতে হাসতে বলে;
রিশাদ তুমিও না।ও অনি তোমাকে বলেছিলাম না ওর কথা। দুই দিন হলো দেশে ফিরেছে।ওর সাথেই দেখা করানোর জন্যই তো তোমাকে ডেকেছিলাম।তবে মনে হচ্ছে না আর দেখা করাতে হবে তোমরা নিজেরাই যে কান্ড ঘটিয়ে ফেলেছ।আমার তো হাসি থামছেই না।

রিশাদ অদ্রির কথা শুনে বোকা বোকা ফেস করে হেসে দেয়। অনি এবার আস্তে আস্তে সবটা বুঝতে পেরে সে নিজেও অনেক লজ্জা পায়।
রিশাদ মনে মনে ভাবে; কি মেয়েরে বাবা। অদ্রির বোন এতো ঝগড়ুটে কিভাবে হলো।দেখে তো মনে হয় একদম ইনোসেন্ট বাচ্চা।
তারপর রিশাদ অনিকে বলে;
সরি অনি আসলে আমি বুঝতে পারিনি। অদ্রি তোমার কথা অনেক বার আমাকে বলেছে। তোমার কথা বলতে শুরু করলে তো অদ্রি আমার কথাই ভুলে যায়।
রিশাদের কথার কবাবে মুচকি হাসে অনি।
আবার রিশাদ বলে;
তাহলে কি যেন বলছিলেন আপনি আমাকে কোন মেয়ে বিয়ে করবে না।যে মেয়ে বিয়ে করবে তার কপাল পুড়বে তাইনা।এখন দেখুন তো কার কপাল টা পুড়ল।অদ্রির সাথে কিন্তু আপনার কপালটাও পুড়ল হাজার হোক শালি আধি ঘরওয়ালি।

অনি এবার রিশাদের কথায় কিছুটা বিব্রত বোধ করে।সে অসহায় মুখ করে অদ্রির দিকে তাকায়।অদ্রির মুখে গম্ভীরতা প্রকাশ পেলেও পরমূহুর্তেই আওয়াজ করে হেসে ওঠে।এতে করে অনি কিছুটা স্বস্তি পায়।তারপর তারা হোটেলের ভিতরে ঢুকে যায়।অনি চারপাশটা এক নজরে দেখে নেয়।হোটেলের স্টাফরা সবাই সেম সিকুয়েন্সের ড্রেস পড়েছে।জেন্টস স্টাফদের পরনে রয়েছে হোয়াইট শার্ট বো টাই সাথে ব্ল্যাক প্যান্ট। আর লেডিস স্ট্যাফ দের পরনে লাইট পার্পল কালার শাড়ি।হোটেলের পরিবেশটাও অনির কাছে বেশ আকর্ষণীয় মনে হয়।আধুনিকতার পাশাপাশি রাজকীয় আসবাবপত্র, অসাধারণ সাজসজ্জায় দেশি মানুষদের পাশাপাশি ভিনদেশি অতিথিদের ও নজর কাড়তে বাধ্য।
রিশাদের বাব রায়হান খান নিজেই হোটেলের তদারকি করেন খানিকটা শখের বসেই তিনি হোটেলের বিজনেস শুরু করেন।রায়হান খান বেশ শৌখিন ও রুচিশীল মানুষ যা তার হোটেলের সাজসজ্জাতেই তা ফুটে উঠেছে।

রিশাদ অনি আর অদ্রি কে নিয়ে হোটেলের ভিতরে ফুড কোর্টের দিকে যায়।সেখানে তারা একটি লাক্সারি কেবিনে বসলে রিশাদ অদ্রির পছন্দ মত খাবার অর্ডার দিয়ে নিজের জন্যও কিছু নিয়ে নেয়।অনি শুধুমাত্র এককাপ কফি অর্ডার করে।খাওয়ার মাঝে মাঝে টুকটাক গল্প করে।অনি তেমিন কোন কথা বলে না।মাঝে মাঝে শুধু হু হা করে কফি তে মনোযোগ দেয়।অদ্রি অনিকে জোর করে একটু তুলে খাওয়ায়।রিশাদ দুবোনের এই ভালোবাসার দৃশ্য উপভোগ করে। মুগ্ধ নয়নে অনি আর অদ্রির দিকে তাকিয়ে থাকে।রিশাদের দিকে চোখ পড়তেই অনি লজ্জায় চোখ নামিয়ে নেয়।পুরোটা সময় সে নিচের দিকে তাকিয়েই কাটিয়ে দেয়।তখনকার ঘটনার অস্বস্তিবোধ সে এখনও কাটিয়ে উঠতে পারে নি।

খাওয়া শেষ করে তারা বেরিয়ে যায়।রিশাদ অনি আর অদ্রিকে হোটেলটা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখায়।অদ্রি এর আগেও এখানে রিশাদের সাথে এসেছে।আজ অনি আসায় রিশাদ তাকে উদ্দেশ্য করেই দেখাতে নিয়ে যায় এই বাহানায় সে অদ্রির সাথে আরেকটু বেশি সময় কাটানোর সুযোগ পায়।
অদ্রি রিশাদ সামনে এগিয়ে যায়।সে ইচ্ছে করেই হাঁটার গতি কমিয়ে দিয়ে পিছিয়ে পরে।রিশাদের সাথে সে খানিকটা আনকমফোর্টেবল ফিল করে।
হাঁটতে হাঁটতে অনির চোখ আটকে যায় হোটেল এর করডোরে ফ্লাওয়ার টবে লাগানো এক অচেনা ফুলের দিকে। অনি খুব ছোট থাকতেই দেশ ছেড়ে পাড়ি জমায় ভিনদেশে।সেখানে থেকে দেশীয় সংস্কৃতির সাথে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পায় নি।যার ফলশ্রুতিতে আমাদের সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ তথা দেশীয় ফুল সম্পর্কে অনির ধারণা খুবই সীমিত। ইংল্যান্ডে থাকাকালীন সময়ে অনি তার রুমের বারান্দায়
বিদেশি ফুলের পাশাপাশি জাহানারা বেগমের সহায়তায় কছু দেশি ফুলের গাছও লাগিয়েছিল।অবসর সময় পেলেই সে তার বারান্দা বাগানের পরিচর্যায় ব্যস্ত হয়ে পড়ত।ফুল অনির একটি দুর্বলতার জায়গা।

অনি অচেনা ফুলটার দিকে মনোযোগ দিয়ে তাকিয়ে থাকে।অদ্রি অনিকে পিছিয়ে পড়তে দেখে সে অনির কাঁধে হাত দিতেই অনির ধ্যান ভাঙে। অনির কৌতূহলী দৃষ্টি দেখে অদ্রি বলে;
বাবুনি তুই এই ফুলগুলো এত মনোযোগ দিয়ে কি দেখছিস??
অনি জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে অদ্রিকে বলে; এটা কি ফুল আপু এত সুন্দর কেন?আমি আগে তো এই ফুলটা দেখিনি।
অদ্রি কিছুটা অবাক হলেও সে বুঝতে পারে অনি এত দিন দেশে না থাকায় এসব দেশীয় ফুল সম্পর্কে তার ধারনা নেই।সে বলে;
এটা অপরাজিতা ফুল।

অনি বলে; অপরাজিতা।নামটা যেমন সুন্দর ফুলটাও তেমনই সুন্দর।একদম পারফেক্ট।

অদ্রি অনির কথায় মুচকি হাসে।অন্যদিকে রিশাদ অনির কথা শুনে বলে ওঠে;
আমার বিদেশিনী শালি সাহেবার মনে হয় ফুলটা বেশ মনে ধরেছে।শালি সাহেবা আপনি চাইলে এটা নিয়ে যেতে পারেন।আমি স্টাফকে বলে দেব আপনাদের বাসায় পৌঁছে দেবে।

প্রথমে অসম্মতি জানালেও রিশাদের জোরাজুরিতে অনি ফুল নিতে সম্মতি জানায়।

অদ্রি রিশাদ ব্যতীত অনির এসকল কার্যক্রম দূর থেকে দাঁড়িয়ে আরো একজন ব্যক্তি দেখছিল।যার চোখ অনির উপর আটকে যায়। মুগ্ধ দৃষ্টিতে সে অনির দিকে তাকিয়ে থাকে।নিজের অজান্তেই সে মনে মনে বলে আমার ; মিষ্টি মায়াবতী।

আরো কিছুকাল ঘোরাঘুরি করে তারা হোটেল থেকে বেড়িয়ে আসে।অনি অদ্রিকে বিদায় জানিয়ে রিশাদও নিজ গন্তব্যের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে যায়।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _

হঠাৎ মৃদু গোঙানির আওয়াজ শুনে অনির ধ্যান ভাঙে।সে রিশাদের দিকে তাকিয়ে দেখে তার ঠোঁটজোড়া কাঁপছে। কিছু একটা বলার চেষ্টা করছে রিশাদ।সে উপুড় হয়ে শোনার চেষ্টা করে রিশাদ কি বলছে।
অনি রিশাদের কথা বুঝতে না পারলেও ঠোঁট নাড়ানো দেখে বুঝতে পারে রিশাদ পানি খেতে চাইছে।

অনি কিছুটা অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে পরে।সে রিশাদ কে ধরে বেডের সাথে হেলান দিয়ে বসিয়ে দেয়।তারপর গ্লাসে পানি ঢেলে রিশাদের সামনে ধরে।
রিশাদ পানি খেয়ে আবছা আবছা চোখ খোলার চেষ্টা করে। অস্পষ্ট ভাবে সে অনিকে দেখতে পায়। অনিকে অদ্রি ভেবে রিশাদ অনির কোমড় জড়িয়ে ধরে।রিশাদের এভাবে চেপে ধরায় অনি বরফের মত জমে যায়।তার হাত পা কাঁপতে শুরু করে।সে রীতিমত কিছুক্ষণের জন্য ফ্রিজ হয়ে যায়।

রিশাদ অদ্রিকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাদতে বলতে থাকে;তুমি কোথায় চলে গেছো অদ্রি। জানো তোমাকে ছাড়া আমার কতটা কষ্ট হয়।প্লিজ আমাকে ছেড়ে চলে যেওনা অদ্রি।তোমাকে ছাড়া থাকতে আমার খুব কষ্ট হয়।প্লিজ আমাকে ছেড়ে যেও না। খুব ভালোবাসি তোমাকে।তোমাকে ছাড়া আমি কিচ্ছু ভাবতে পারি না। বলেই রিশাদ বাচ্চাদের মত ফুঁপিয়ে কাঁদতে শুরু করে।
অনি কোন কথা না বলে চুপচাপ রিশাদের কথা শুনতে থাকে।কিছুক্ষণ পর রিশাদের কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে অনি তার থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে রিশাদকে সোজা করে বেডে শুয়ে দিয়ে চাদরটা রিশাদের গায়ে টেনে দেয়।
অনি রিশাদের দিকে তাকিয়ে থাকে। চোখের পানিগুলো রিশাদের গাল বেয়ে পড়ছে।অনি ভাবতে থাকে একটা মানুষ আরেকটা মানুষকে ঠিক কতটা ভালোবাসলে এভাবে ঘুমের ঘোরেও তার কথা ভেবে কান্না করতে পারে??

অনি রিশাদ ও অদ্রির ভালোবাসার গভীরতা বেশ ভালোভাবেই বুঝতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে সে না পারছে দূরে যেতে না পারছে কাছে টেনে নিতে।অদ্রির জায়গায় অনি কখনোই নিজেকে বসাতে চায় না।অনি কেবিন এর কাছ থেকে একটু দূরে রাখা সোফায় বসে পড়ে।উদাসীনভাবে সে রিশাদের দিকে তাকিয়ে থাকে। তার এলোমেলো জীবনটা আরেকবার এলোমেলো হয়ে গেলো।এবার শুধু তার একার জীবনেও প্রভাব পড়ছে না তার সাথে রিশাদ, রিশাদের পরিবারের উপরেও প্রভাব পড়েছে। এ সময় অদ্রির উপর অনির বেশ অভিমান হয়।

কাল থেকে না খেয়ে থাকায় অনি বেশ ক্লান্তবোধ করে।সোফায় দুপাতা তুলে হেলান দিয়ে বসে দুচোখ বুজে ফেলে অনি।তার চোখের কোণা দিয়ে দুফোঁটা জল গড়িয়ে পরে।

চলবে……….

ভুলগুলো ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।গল্প সম্পর্কে কোন মন্তব্য থাকলে জানাবেন।ধন্যবাদ।??

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here