Ragging To Loving ?part-4

0
1185

? Ragging To Loving ?
Part:: 4
Writer:: Ridhira Noor

আফরানের রাগী চেহারা দেখে পরিবেশে নিরবতা বিস্তার করছে। কারো মুখে সাড়াশব্দ নেই।

আহিলঃঃ- হেই ইউ লিসেন টু মি। (অনেকটা রাগী শব্দে বলল)

আমরিনঃঃ- ইউ আর মাই লাভ জানো তুমি। (বলেই মুখ চেপে ধরল।)

নূর সহ বাকি বান্ধবীরা মিটিমিটি হাসছে। নূর আর না পেরে জোরেই হেসে দিল। নূরের হাসি যেন আফরানের রাগ আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে। আফরান সাধারণত দুষ্টু প্রকৃতির। কিন্তু তা শুধু পরিবার আর বন্ধুদের জন্য। তার রাগ খুব কমই দেখা যায়। কিন্তু যখন রাগ করে তা সাত আসমান উপরে থাকে।

আফরানঃঃ- খুব তো হাসি পাচ্ছে তাই না? হাসিটা ক্ষনিকের জন্য। আর ভুল না আমরা তোমাদের সিনিয়র। আর ইতিহাসের এটাই নিয়ম সিনিয়ররা জুনিয়রদের র‍্যাগিং করে। আর আমরা বা কেন পিছিয়ে যাব। এই প্রথা আমরাও এগিয়ে নিয়ে যায়। (এক ভিলেন মার্কা হাসি দিল।)

নূরঃঃ- র‍্যাগিং করবেন তাই না। বের করছি আপনার র‍্যাগিং। (মনে মনে)

রিহানঃঃ- এন্ড ইউ (আমরিনকে) খুব শখ না গান গাওয়ার। এখন তুমি গান গাইবে।

আফরানঃঃ- আর তুমি নাচবে (নূরকে) আর বাকি জনগণ তোমরা দেখতে থাক।

নূর আর আমরিন যেন আকাশ থেকে পড়ল। দুইজনই হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে আছে একে অপরের দিকে। সিমা পুষ্প আলিফা মেহের তারাও হতভাগ। নূর আমরিনকে চোখ টিপি দিল। বাকিদের বুঝতে আর বাকি রইল না নূর নিশ্চয় কোন খুরাফাতি করবে। তাই তারা নিরবতা পালন করে মুখ টিপে হাসছে।

ওয়াসিমঃঃ- চল গুরু,,, হো যা শুরু।

আমরিন হালকা কেশে গলা ঠিক করছে। নূর ওড়না কাঁধের একপাশ হয়ে কোমরে বাঁধলো।

আমরিনঃঃ- হাম পে ইয়ে কিসনেএএএএএএ কালা রাং ডাআআলাআআআ খুশি নে হামারে হামেএএএ……. (চিল্লিয়ে চিল্লিয়ে দুই হাত ছড়িয়ে গান গাইছে)

নূর হাত পা ছড়িয়ে নাচছিল। এক হাত এগিয়ে একবার ডান পাশে যায় আবার অন্য হাত এগিয়ে বাম পাশে যায়। তারপর ঘুরতে থাকে।ঘুরতে ঘুরতে হাত গিয়ে লাগলো আফরানের পিঠে। (ঠাসসসস)

আফরানঃঃ- মারডালা আআআ মারডালা।

পুষ্পঃঃ- বাহ্ আপনি তো ভালো গান গাইতে পারেন। চলেন একসাথে গান। হামপে ইয়ে কিসনেএএএএ…..

রিহানঃঃ- ওহ জাস্ট শাট আপ।

সবাই চুপ হয়ে গেল। নূর কাচুমাচু হয়ে গেল। এটা করার কোন উদ্দেশ্য তার ছিল না। সে শুধু হা পা ছড়িয়ে তাদের ভয় দেখাতে চেয়েছিল। আফরানের চোখ দিয়ে যেন আগুন বের হচ্ছে।

আফরানঃঃ- হাউ ডেয়ার ইউ। তুমি ইচ্ছে করে এমন করেছ।

নূরঃঃ- ভয় পেলে চলবে না নূর (মনে মনে) Tit for tat. আপনি যেমন করেছেন তেমন ফল পেয়েছেন। আপনি না আমার নাচ দেখবেন। তাই নাচ দেখালাম। আসছে র‍্যাগিং করতে। এখন থেকে র‍্যাগিং করতে আসলে তার যোগ্য জবাব পাবেন।

আফরানঃঃ- ওহ রিয়েলি! দেন লেটস সি। জাস্ট ওয়েট এন্ড ওয়াচ।

আফরান রিহান আহিল ওয়াসিম চলে গেল। নূর আর তার বান্ধবীরা এখনো মাঠে দাঁড়িয়ে আছে। নূর রাগী দৃষ্টিতে তাদের যাওয়ার পানে তাকিয়ে আছে। হঠাৎ চিন্তার ভাব নিয়ে জিজ্ঞেস করল।

নূরঃঃ- এক মিনিট তোরা জানলি কি করে? ওরা আমাদের সিনিয়র। আর আমাদের র‍্যাগিং করবে। তোরা তো ওদের চিনিস না।

সিমাঃঃ- যখন তুই বাইরে চিলি তখন এই ছেলেটা যে তোর সাথে ধাক্কা খেল ওর আর আরেকজনের কার রেস হয়েছিল। আমাদের ভার্সিটির একজন মেয়েকে জিজ্ঞেস করাই সে বলল।

আলিফাঃঃ- ভার্সিটিতে নাকি ওদের কথায় চলে। ট্রাস্টির ছেলে হওয়ায় কেউ ওদের কিছু বলতে পারে না। কিন্তু কারো সাথে তেমন কথা বলে না। আর যদি কারো সাথে কোন ঝামেলা হয় তাহলে তার র‍্যাগিং করে। রেসটা হয়েছিল তাদেরই ক্লাসের একজনের সাথে। কোন এক ঝামেলার কারণে। কারণটা কেউ জানে না।

নূরঃঃ- ওই খাচ্চর খাটাশ পোলাটা কোন কার চালাচ্ছিল?

মেহেরঃঃ- ব্লু কার।

নূরঃঃ- তার মানে সে আমাকে আগে থেকেই মারার প্লান করছে।

সবাই একসাথে চিল্লিয়ে উঠলো “মানে?”

নূরঃঃ- আরে আমি যখন ভিতরে আসছিলাম ব্লু কার হঠাৎ ফুল স্পীডে আমার সামনে চলে এলো। ভাগ্যিস আরেকটুর জন্য বেঁচে গেলাম। যেই না ঠাডা ফেলতে যাব ওরিম্মা দেখি মশাই গায়েব। তারপর ভিতরে এসে এই কাহিনি। আচ্ছা বাদ দে এসব। চল ভার্সিটি দেখি।

তারপর তারা পুরো ভার্সিটি ঘুরে দেখল। আজ তাদের ওরিয়েন্টেশন ক্লাস হলো। সকল শিক্ষক শিক্ষিকার সাথে পরিচয় হলো। তাদের মধ্যে একজন স্যার খুবই ইয়াং ক্রাশ খাওয়ার মতো। অনেকে তো খেয়েও ফেলছে। স্যারের কথায় বোঝা গেল তিনি একদম স্ট্রেইট ফরওয়ার্ড। যা বলবে সরাসরি। স্যারের নাম নিহাল হোসেন। ক্লাস শেষে সবাই বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিল। বের হতেই আবার তাদের মুখোমুখি হলো। জ্বি আফরান আর নূর। একে অপরের দিকে এমন ভাবে তাকিয়ে আছে যেন এক্ষুনি একজন আরেকজনকে পঁচা টমেটো মারবে। মনে মনে একে অপরের চৌদ্দ গোষ্ঠী উদ্ধার করছে।
.
.
.
পরের দিন কলেজে_________________
আজ কোন ঝামেলা হয় নি। সবাই ভালো মতো ক্লাস করে নিল। নিহাল স্যার ক্লাসে আসতেই মেয়েরা যেন হাওয়ায় ভাসছে। একেকটার ভঙ্গি দেখে মনে হচ্ছে চোখ খুলে নিচে গড়াগড়ি খাচ্ছে। কেউ চুল ঠিক করছে, কেউ লিপস্টিক দিচ্ছে। স্যার তাদের পাত্তা না দিয়েই ক্লাস করে চলে গেল। নূর ও পুষ্প প্রথমে লাইব্রেরি গেল তারপর ক্যান্টিনে যাবে আর বাকিরা গেল ক্যান্টিনে। ক্যান্টিনে আফরান আর বাকিরা আগে থেকেই ছিল। রিহান আহিল পাশাপাশি তাদের সামনাসামনি আফরান ওয়াসিম। নূর ও পুষ্প ক্যান্টিনে গেল। নূর এগিয়ে আসতেই রিহান পা বাড়িয়ে দেয়। নূরের পা লেগে পড়ে যেতেই আফরান ধরে ফেলে। চোখ মুখ খিচকে ফেলে।

আফরানঃঃ- হাই চাশমিশ! (নূর চোখ খুলে দেখে আফরান তাকে কোমর জোড়ে ধরে আছে) তোমাকে বলেছিলাম না চশমা আরও দুই তিনটা লাগিয়ে নিও। দেখ একটা দিয়ে কাজ হচ্ছে না। লাগলে আমাকে বল। (বলে নূরকে ছেড়ে দিতেই নিচে মেঝেতে পড়ে যায়।)

নূরঃঃ- আহ্হহহ আমার কোমর ভেঙে গেল গো……

পুষ্প সজোরে রিহানের পায়ে পা দিল। ব্যাথায় রিহান চিৎকার করে উঠলো।

পুষ্পঃঃ- পা টা বেশি লম্বা হয়ে গিয়েছে। তাই যেদিক সেদিক ছড়িয়ে পড়ছে। (শান্ত গলায় বললেও চেহারায় রাগ স্পষ্ট ফুটে উঠেছে। পুষ্প হাত বাড়িয়ে নূরকে তুললো।)

নূরঃঃ- আমাকে চশমা না দিয়ে উনাকে একটা দড়ি দিন। যাতে পা গুলো বেঁধে রাখতে পারে।

আফরান দাঁড়িয়ে কিছু বলতে যাবে তারপর আগেই নূর চুল আফরানের মুখের ওপর ঝাড়া দিয়ে সেদিক থেকে সরে গেল। গিয়ে বাকিদের সাথে বসল।

ওয়াসিমঃঃ- রিহান? দড়ি লাগবে?

রিহানঃঃ- তুই চুপ কর। (পুষ্পর দিকে তাকিয়ে কটমট করে বলল) পা কার বেড়েছে তা সময় বলে দিবে।

মেহেরঃঃ- তুই ঠিক আছিস?

নূরঃঃ- কেমনে ঠিক থাকব। ওই খাচ্চর খাটাশ খবিশ পোলা আমার কোমর ভেঙে দিল।

আলিফাঃঃ- তুই কি চোখ হাতে নিয়েছিলি? দেখে হাটতে পারিস না।

নূরঃঃ- ওই তুই কার সাইডে। আমার নাকি ওই খাচ্চরের? আর ওরা ইচ্ছে করে এমন করছে।

আমরিনঃঃ- আচ্ছা তোরা বস আমি ওয়াশরুম থেকে আসছি।

আমরিন ক্যান্টিনের বাইরে গেল। তার পিছে আহিলও গেল। আমরিন ফিরে আসতেই আহিল পিছন থেকে বলে উঠল।

আহিলঃঃ- হাই মাই লাভ। (আমরিন পিছনে ফিরে দেখে আহিল। তারপর আসে পাশে তাকিয়ে চলে যেতে নিলে আহিল সামনে এসে দাঁড়ায়।) তোমাকেই বলছি মাই লাভ। (হালকা ঝুকে)

আমরিনঃঃ- লাভ মানে? কার লাভ? কিসের লাভ? কেমন লাভ? কিভাবে লাভ?

আহিলঃঃ- কুল ডাউন। এত প্রশ্ন একসাথে। আরে ভুলে গেলে? কালই তো বললে আর আজ ভুলে গেলে? (আমরিন প্রশ্ন সূচক দৃষ্টিতে তাকানো দেখে আহিল আবার বলতে শুরু করল) কাল যখন বলেছিলাম “হেই ইউ লিসেন টু মি” তখন তুমিই তো বললে “ইউ আর মাই লাভ জানো তুমি”।

আমরিন চোখ বড় বড় করে তাকালো।

আমরিনঃঃ- ওইটা গানের লিরিক্স ছিল।

.
.
.
চলবে

বিঃদ্রঃ ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন ?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here