Mysterious Part 3

0
749

Mysterious
Part 3
Romoni

এরপর ইয়ান গিয়ে ওই বক্সটা হাতে নেয়, যেটাতে ব্ল্যাক পেপারটা রাখা আছে।
তারপর বক্সটা খুলে ব্ল্যাক পেপারটা বের করে নেয়,আর হোয়াইট পেপার এর সাথে ব্ল্যাক পেপারটা দু’হাতের সাহায্যে সামনাসামনি এনে মিলিত করে দেয়, পেপার দুটো জুড়ে যাওয়ার সাথে সাথে সম্পূর্ণ পেপারটা কালোবর্ন ধারন করে এবং দুটি চিহ্ন একই রকম হয়ে কালো রঙা পেপারটাতে শুভ্র রঙে প্রজ্জ্বলিত হয়।

এরমধ্যেই নীল রঙা থাইগ্লাস ভেদ করে হলুদ আর কালোর সংমিশ্রণ আলো এসে ইয়ানের উপর পড়ে, মুহুর্তেই, ইয়ান হাঁটু গেড়ে নিচে বসে পড়ে।
তায়াশা তাড়াতাড়ি উঠে ইয়ানের কাছে আসতে নিলেই ইয়ান হাতের ইশারায় তায়াশাকে থামিয়ে দেয়।

তায়াশা দূর থেকে এসব শুধু নিরব দর্শক হয়ে দেখে যাচ্ছে আর ভাবছে, এই রাতের বেলায় এতো আলো, তাও এমন অদ্ভুত রঙের, কিভাবে?

কিছুক্ষণ পরে আলোটা আস্তে আস্তে নিভে যায়, আর ইয়ান উঠে দাঁড়ায়, তারপর ইয়ান এসে তায়াশার পাশে বসে, আর তায়াশাকে বলে,চেইনটা গলা থেকে খুলে দিতে।
তায়াশা চেইনটা খুলে ইয়ানকে দিয়ে দেয়, ইয়ান সেটা নিয়ে নেয়।
এরপর পুরো পেপারটাকে গোলাকারে পেঁচিয়ে নেয় ইয়ান, আর চেইনটাকে দুইটা ভাগ করে দেয়, আর মাঝারি আকার চেইনটা ক্রমশ দৈর্ঘ এবং প্রস্থে বাড়তে থাকে,তায়াশা এমন অদ্ভূতুরে ঘটনা দেখে রীতিমতো ভয় পাচ্ছ।
তারপর ইয়ান পেপারটা চেইনের মাঝে আবদ্ধ করে নেয়,আর চেইনটাও আবার আগের মতো হয়ে যায়।ইয়ান উঠে দাঁড়িয়ে চেইনটাকে নিজের সামনে এনে, চোখ বন্ধ করে, হালকা ঠোঁট নাড়িয়ে কিছু একটা পড়ে সামনের দিকে তাকায়।
ইয়ান সামনের দিকে তাকাতেই একটা কালো রঙের দরজা আকৃতি অবয়ব তৈরি হয়, তায়াশা সেই অবয়বটার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে চোখ সরিয়ে চোখ বন্ধ করে নেয়।
কারন ওই অবয়বটার দিকে বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকলে হিপ্রটাইজ হয়ে যায়, আর তা তায়াশা বুঝতে পেরে চোখ সরিয়ে নেয়।

–তায়াশা এদিকে আসুন।
ইয়ান এর ডাকে তায়াশা ধীরে ধীরে চোখ খুলে, উঠে এসে ইয়ানের পাশে দাঁড়ায়।
ইয়ান তায়াশার হাত ধরে সেই অবয়বটিতে প্রবেশ করে, আর অবয়বটিও অদৃশ্য হয়ে যায়।
দরজার ওপাশে যেতেই তায়াশা দেখে একটা দ্বীপের মধ্যে স্থানে ওরা দুজন আছে,চারিদিকে আবছয়া ছায়ার ন্যায় মানব।
–স্যার এটা কোথায়? (তায়াশা)
–এটা Invisible Island এর একটা অংশ Lone island.
তবে বেশিরভাগ ইনভিসিবল আর্থ এর মানব দের কাছে এটা “Invisible Island ” নামেই পরিচিত।
আর তায়াশা, ইফান একজন ডেভিল পাওয়ার আহ্বান কারী তায়াশা,সেদিন যখন প্রথম ইফান ব্ল্যাক পেপারটা দেখে, সেদিন ওর কাজ অনেকটা এগিয়ে যায়,কেনোনা এই ব্ল্যাক পেপার সবাই পায় না, এর জন্য অনেক সাধনা করতে হয়, কিন্তু সেদিন একটা সমস্যার কারনে ব্ল্যাক পেপারটাকে সেখানে ফেলতে হয়।

Invisible Island এর এক বার্তাবাহক Invisible cave এর থেকে এই ব্ল্যাক পেপার নিয়ে Invisible Island এ আসছিলো, তখনই এক ডেভিল সদস্য সেই বার্তা বাহকের সামনে চলে আসে, আর বার্তা বাহকের দৃষ্টি সে সময় আপনার উপর পড়ে, তারপর সে পেপারটা ডেভিলটার কাছ থেকে আড়াল করে, আপনার কাছে পৌঁছে দেয়।(ইয়ান)

–আমার কাছে কেনো?তায়াশা)

–কারন আপনার মধ্যে এক অদৃশ্য শক্তি আছে,যার দ্বারা আপনি এই পেপার এর সুরক্ষা দিতে পারেন।
আর ইফান তখন পেপারটা আপনাকে দিয়ে দেয় কারন, ইফান ভাবতো আপনি আপনার শক্তি সম্পর্কে অবগত, কিন্তু ইফানকে বিভ্রান্ত করার জন্য আপনি আপনার শক্তি সম্পর্কে অজানার অভিনয় করছেন।
ইফান মনে করেছিলো আপনি ব্ল্যাক পেপার সমন্ধে সব জানেন, তবুও আড়াল করছেন।
আর ইফান আপনার মাইন্ড পড়তে পারতো পারতো না, যার কারনে ইফানের বিশ্বাসটা আরো দৃঢ় হয়, ইফান ভেবেছিলো আপনি হয়তো ইফানকে বাঁধা দিতেন আপনার মাইন্ড পড়তে।

এই ব্ল্যাক পেপারটা যদি একবার ইফান পেয়ে যায়, তাহলে Devil Island এর সমস্ত পাওয়ার ইফান এর করে নেবে,আর রাজা বলে ঘোষিত হবে ইফান Devil Island এ।
যেখানে ইফান রাফিম হিন নামে পরিচিত, আর সেখানকার পরিচালনাও কিং রাফিম হিন এর কথা অনুযায়ী হবে।
কিন্ত এতে Invisible Island এর ক্ষতি হবে, কারন ডেভিল পাওয়ার রাফিম হিনের কাছে গেলে, মানবসমাজের আড়ালে থাকা সমস্ত আর্থকে সে ধ্বংস করে দেবে, তাহলেই ডেভিলদের রাজত্ব সম্পূর্ন অক্ষত থাকবে।

আর নিজের কার্য সম্পন্ন করার লোভ ইফান সামলাতে পারেনি, তাই এই ব্ল্যাক পেপারটা আপনার কাছে চেয়েই নিলো, আর আপনি যখন বলেছেন যে দিয়ে দিবেন তখন ইফানের ভুল বিশ্বাসটা ভেঙে যায়, তখন ইফান বুঝতে পারে যে, আপনি আপনার এই পাওয়ার সম্পর্কে কিছুই জানেন না, জানলে এতো সহজে রাজি হতেন না পেপারটা দিয়ে দিতে ।
আর তখনই ইফান আপানাকে ভয় দেখাতে শুরু করে, আপনার কাছ থেকে পেপারটা চায়, কিন্তু কখনো জোড় করেনি,কেনোনা আপনার পাওয়ার ইফানের থেকে অত্যাধিক, তাই একটা ভয় ইফানের রয়েই যায়।
যদি আপনি আপনার পাওয়ার সম্পর্কে কিছু জেনে যান, তাহলে ইফানেরই বিপদ বাড়বে।

কিন্তু আপনি পেপারটা দিতে বার বার অমত করায়,একপর্যায়ে নিজের রাগকে নিয়ন্ত্রণ রাখতে না পেরে আপানকে মেরে ফেলার ভয় দেখায়, তবে এটা ইফান কখনোই করতো না, কেনোনা ইফান সত্যিই আপনাকে ভালোবাসে।
শুধু ইফানের লোভ ইফানকে আপনার কাছে এতোটা নত করে দিয়েছে।(ইয়ান)

–আর আপনি কে?(তায়াশা)

— Invisible Island এর একজন সাধারণ সদস্য, তবে আমার মাঝেও একই অদৃশ্য পাওয়ার আছে, যা আপনারও আছে। (ইয়ান)

–এখন আমায় কি করতে হবে? (তায়াশা)

–প্রথমে আপনার সম্পূর্ণ পাওয়ার আপনার নিজের নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে, কারন আপনার পাওয়ার আপনার নিয়ন্ত্রণের বাহিরে আছে, যার জন্য আপনি এখনো আপনার পাওয়ার সম্পর্কে সব তথ্য জানেন না।

তারপর ইয়ান তায়াশাকে নিয়ে একটা ঘরের সামনে যায়, ইয়ান ঘরের দরজায় হাত ছোঁয়াতেই দরজা খুলে যায়, এরপর দুজনে ভেতরে প্রবেশ করে,ঘরটার উওর পার্শ্বের দেয়ালের সাথে আটকানো একটা বড় তলোয়ার আছে।
ইয়ান ব্ল্যাক পেপার আবদ্ধ করা চেইনটা তায়াশার হাতে দিয়ে দেয়, আর সেই তলোয়ারটা বের করে তায়াশার সামনে ধরে।
তায়াশা ভয় পেয়ে পিছিয়ে যায়,ইয়ান তায়াশাকে অভয় দিয়ে বলে, ভয় নেই, এই চেইনটা এই তলোয়ারে পেঁচিয়ে দিন।
তায়াশা ইয়ানের কথা অনুযায়ী চেইনটা পেঁচিয়ে দেয়, চেইনটা পেচিয়ে দেওয়ার সাথে সাথে কিছু লেখা ভেসে ওঠে তলোয়ারের গায়ে।

–এই লেখাটা নির্ভুল ভাবে পড়ুন তায়াশা,দেখবেন কোনো ভুল যেনো না হয়, তাহলে কিন্তু আপনার সমস্ত পাওয়ার আপনার থেকে চিরতরে দূরে সরে যাবে। (তায়াশা)

তায়াশা লেখাটা ধীরে ধীরে নির্ভুল ভাবে পড়ে, তারপরই সেই একই রঙের আলো তায়াশার উপর এসে পড়ে, যা ইয়ানের উপর পড়েছিলো।
এক পর্যায়ে তায়াশাও ইয়ানের ন্যায় হাঁটু গেড়ে নিচে বসে পড়ে,আর তায়াশা নিজের মাঝে এক অজানা শক্তির আভাস পাচ্ছে।
অতঃপর কিছুক্ষণ পরে তায়াশা উঠে দাঁড়ায়, আর ইয়ান চেইনটা তলোয়ার থেকে খুলে নিজের কাছে রেখে দেয়।

এরপর ইয়ান তায়াশাকে নিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়, তায়াশা ইয়ানের পিছনে হাঁটছে, হঠাৎ তায়াশা থেমে গিয়ে ইয়ানকে ডাক দেয়।

–ইয়ান স্যার দাঁড়ান। (তায়াশা)

–আপনার কৌতুহল খুব বেশি তায়াশা।(ইয়ান)

–হওয়াটাই স্বাভাবিক নয় কি?(তায়াশা)

–হুম স্বাভাবিক, কিন্তু এখন তো আর কোনোকিছু আপনার অজানা নয়, কারন আপনি আপনার পাওয়ার সম্পর্কে অবগত এখন, আপনার সব পাওয়ার এখন আপনার নিয়ন্ত্রণে। (ইয়ান)

–হুম জানি, কিন্তু আপনার এমন ব্যাবহারের কারন কি শুধুই মানব জগতকে এই অদৃশ্য আর্থ সমন্ধে জানানো, নাকি, অন্য কিছু?(তায়াশা)

তায়াশার কথায় ইয়ান হালকা হেঁসে বলে, এখনো আমায় বিশ্বাস হলো না?

তায়াশা আর কিছু না বলে সামনের দিকে হাঁটতে থাকে, ইয়ানও তায়াশার পাশাপাশি হাঁটছে।
তবে তায়াশার মুখটা মলিন হয়ে আছে, ইয়ান তায়াশার দিকে দৃষ্টিপাত করে বলে, ইফানের জন্য মন খারাপ?
তায়াশা তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে বলে,নাহ ঠিক আছে, বাদ দিন।

–ইফানকে ভুল বুঝবেন না তায়াশা, উনি ভুল করেছেন এটা ঠিক, তবে…
ইয়ানের কথার মাঝে তায়াশা থামিয়ে দিয়ে বলে, এই বিষয় কথা না বললেই খুশি হবো ইয়ান স্যার।

–আচ্ছা, সরি। (ইয়ান)
–আপনি কথায় কথায় সরি বলেন কেনো? (তায়াশা)
–আমি এমনই তায়াশা। (ইয়ান)
–ওহ। (তায়াশা)
–হুম।(ইয়ান)

ইয়ানকে তখন তায়াশার থামিয়ে দেওয়ার কারন ছিলো…

To be continue…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here