Mysterious Part 2

0
891

 

Mysterious
Part-2
Romoni

এক কালো অবয়ব ধীরে ধীরে দরজা ভেদ করে ঘরে প্রবেশ করে,আর অবয়বটি সম্পূর্ণ ইফানের রুপ ধারন করে ,তায়াশা বিস্মিত চোখে তাকিয়ে আছে ইফানের দিকে।
ইফান ধীর পায়ে এগিয়ে আসছে তায়াশার দিকে, আর তায়াশা ভয়ে পিছিয়ে বেডের এক কোনে বসে আছে।
ইফান গিয়ে তায়াশার সামনে বসে সামান্য হেঁসে বলে,তায়াশা ব্ল্যাক পেপারটা দাও, আর এই চেইনটা পড়েছো কেনো, খুলে ফেলো।
ইয়ানকে বিশ্বাস কোরো না তায়াশা, ওকে তুমি যা ভাবছো ও কিন্তু তা নয়, তাই যদি নিজের ভালো চাও তো, ইয়ানের ওপর বিশ্বাস করা বন্ধ করে দাও।

তায়াশা ইফান এর কথায় অবাক হয়ে যায়,তায়াশার মস্তিষ্ক একটা প্রশ্নের উওর খুঁজতেই ব্যস্ত, ইফান ইয়ানের কথা কিভাবে জানলো?

অতঃপর তায়াশা রাগান্বিত কন্ঠে বলে, কেনো খুলবো আমি এই চেইন? তোমার সাথে কথা বলার কোনো ইচ্ছে নেই আমার, বেরিয়ে যাও এখান থেকে,লজ্জা করলো না নিজের পরিচয় আড়াল করে, আমার ইমোশন নিয়ে খেলতে, তুমি কখনো আমায় ভালোই বাসোনি ইফান, তুমি শুধু নিজের উদ্দেশ্য সফল করার জন্য আমায় ব্যাবহার করেছো।
আর ইয়ান স্যার এর কথা তুমি কি করে জানলে?আচ্ছা সত্যি বলতো ইফান, কে তুমি?

— এতো কিছু তোমার না জানলেও চলবে তায়াশা,আমার সম্পর্কে যতটা জানো ততটাই যথেষ্ট তোমার জন্য, অতি কৌতুহল ভালো নয় ,তোমায় যা বলছি করো। (রেগে গিয়ে)

কেনো রাফিম হিন? আপনি তো চাইলে এতোদিনে জোড় করেও ব্ল্যাক পেপারটা নিতে পারতেন, তাহলে নিয়ে নিলেন না কেনো?

ইফান পেছনে ঘুরে দেখে ইয়ান দাঁড়িয়ে কথা গুলো বলছে।
ইয়ানকে দেখা মাএই ইফানের চোখ মুখ লালবর্ণ ধারন করে, ইফান রাগান্বিত কন্ঠে বলে,তুমি সবটা জেনেও এই প্রশ্নটা করছো ইয়ান?
আমার কাজ আমায় করতে দাও ইয়ান, আমার কাজে বাঁধা দিতে এসো না,তুমি খুব ভালো করেই জানো আমার কাজে বাঁধা দিলে তার পরিনাম কি হতে পারে।

জানি, আপনি মেরে ফেলবেন আমায়, তো মারুন, আপনার সামনেই তো আছি।
ইয়ান ইফানের দিকে এগোতে এগোতে কথাগুলো বলছে, ইফান এক পা দু’ পা করে পিছিয়ে যাচ্ছে আর বলছে, ইয়ান থেমে যাও, আর এক পাও এগোবে না।
ইয়ান থামছে না, অপরদিকে ইফানের মুখে ভয় স্পষ্ট, এক পর্যায়ে ইফান গিয়ে দেয়ালের সাথে ঠেকে যায়, আর ইয়ানও স্থির ভাবে দাঁড়িয়ে পড়ে।

অন্য দিকে তায়াশা শুধু ওদের দুজনের কর্মকান্ড দেখে চলেছে, আর বোঝার চেষ্টা করছে কি করছে দুজন, আর রাফিম হিন-ই বা কে?ইফানকে তায়াশা রাফিম হিন বলে কেনো ডাকলো? ইফান এমন ভয়ই বা পাচ্ছে কেনো ইয়ানকে?
এরমধ্যেই তায়াশা লক্ষ্য করে ইয়ানের হাতে একটা হোয়াইট পেপার, আর পেপারটাতে ব্ল্যাক পেপার এর মতোই একটা চিহ্ন আকা, তবে চিহ্নটা ব্ল্যাক পেপারে যেভাবে আকা তার ঠিক উল্টো করে এই হোয়াইট পেপারে নকশা করা।
আর তায়াশা এসবের কিছুই বুঝতে পারছে না,ইয়ানকে তায়াশার কাছে আরো বেশি রহস্যময় মনে হচ্ছে, প্রথমত ইয়ানের হঠাৎ আগমন,তারপর ইয়ানের নিজেই যেচে তায়াশাকে সাহায্য করতে চাওয়া,ইফানকে রাফিম হিন বলে ডাকা, এখন আবার হোয়াইট পেপার।

ইয়ানের সাথে তায়াশার দেখাটা বড়ই অদ্ভুত ছিলো…
তায়াশা আজ বিকেলের দিকটাতে পার্কে গেছিলো, একটু মুক্ত হাওয়ায় নিজের প্রশান্তি খুঁজতে।
ভয় নামক শব্দটা খুবই জঘন্য, যা মানুষকে হিতাহিত জ্ঞান শূন্য করে দেয়,আর এই ভয় থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় মানুষ সবকিছুতেই খুঁজে বেরায়, তায়াশার ক্ষেএেও এর অন্যথা হয়নি।

তখনই হঠাৎ কোথাও থেকে ইয়ান এসে তায়াশাকে বলে, সাধারন মানবের চোখের আড়ালে থাকা অদৃশ্য আর্থের রহস্য উদঘাটন এভাবে ভয় পেলে করা যাবে না।
তায়াশা ইয়ানের এমন অদ্ভুত কথার মানে বুঝতে পারেনি,তবে একটা বিষয় খুবই অবাক হয়েছে যে,ইফানও এই আর্থ শব্দটা উল্লেখ করেছে।
ইয়ান আবার বলে, এতো অবাক হবেন না।
–আমি ইয়ান, একজন Miracle explorer.
আপনার তো অলৌকিক দিশা খুঁজতেই এতো হয়রানি তাই না?
–মানেহ?
–আপনার নাম কি?
–তায়াশা।
–তো মিস তায়াশা, এতোদিনে আপনার সাথে যা ঘটছে, আর এরপর যা যা ঘটবে কোনোটাই স্বাভাবিক নয় তাই না?
আপনি চাইলে আমি আপনাকে সাহায্য করতে পারি।
–আপনি সত্যি বলছেন।
–মিথ্যা বলে আমার লাভ?

এরপর তায়াশা কিছুক্ষণ বিষয়টা নিয়ে ভেবে ইয়ানের অফারটা একসেপ্ট করে নেয়,ইয়ান তায়াশাকে বলে, রাত সাড়ে এগারোটায় আমি আপনার বাড়িতে আসবো, বলেই তায়াশাকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে সেখান থেকে চলে যায়।
তায়াশা এতে আরো একবার অবাক হয়, তায়াশা মনে মনে ভাবছে ,কি অদ্ভুত লোক রে বাবা,মজা করার জন্য কি আমাকেই পেয়েছিলো, একেই এতো রহস্য, কি হবে, কি করবো বুঝতে পারছি না, তার মাঝে আরো রহস্য সামনে এনে দাঁড় করিয়ে দিলো, অসহ্য।
তায়াশা সেখানে আরো কিছুক্ষণ থেকে বাড়ি ফিরে আসে।

রাত ১১.৩০ টা,
তায়াশা কলিংবেলের আওয়াজ শুনে গিয়ে দরজা খুলে দিয়ে বিস্মিত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে,কেনোনা দরজার ওপাশে ইয়ান দাঁড়িয়ে আছে।
ইয়ান তায়াশার উদ্দেশ্য বলে, অবাক হওয়ার অনেক সময় পাবেন, এখন ভেতরে আসতে দিন, ইয়ানের কথায় তায়াশা দরজার সামনে থেকে সরে দাড়ায়,আর ইয়ান ভেতরে যেতে যেতে বলছে,এখন কোনো প্রশ্ন করবেন না, যে আমি আপনার বাড়ি কি করে চিনলাম,সব প্রশ্নের উওর সঠিক সময়ে পেয়ে যাবেন।
তায়াশা কি বলবে বুঝতে পারছে না, তায়াশার মনে চলমান প্রশ্ন ইয়ান কি করে জানলো?

–আপনি এখানে একা থাকেন?
–জ্বী।
–কেনো?
–আমার বাবা মা বেঁচে নেই।
–ওহ, সরি।
–ইট’স ওকে।
ইয়ান গিয়ে বেডের এক পাশে নিজের কাঁধে থাকা ব্যাগটা রেখে,তার থেকে একটা হিডেন ক্যামেরা আর একটা সুইচ বোর্ড বের করে, সাথে এগুলো সেট আপ করার যন্ত্র নিয়ে কাবার্ড এর পেছনে সেট করতে থাকে।
কিছুক্ষণ পরে কাজ শেষ করে এসে বেডের এক পাশে বসে, আর তায়াশাকেও বসতে বলে।
তায়াশা ভ্রু কুচকে হেঁটে এসে বেডের অপর পাশে বসে, তায়াশা মনেমনে বলছে,আমার ঘরে এসে আমাকেই বসতে বলে।
এরপর তায়াশা নিজেই বলা শুরু করে, সমস্ত ঘটনা।

|
|

রাফিম হিন, তায়াশার পিছু ছেড়ে দিন এবার, অনেক তো হলো।
তবে গেইমটা খেলেছেন অসাধারণ, গেইমটা তায়াশার সামনে প্রকাশ করেছেন মাএ তিনদিন আগে, অথচ এই ভয়ঙ্কর গেইম এর শুরু তো সেদিন ব্ল্যাক পেপার পাওয়ার পরেই হয়েছিলো।
আর এই গেইম খেলার জন্য প্রস্তুতি শুরু করেছিলেন তায়াশার সাথে একটা সম্পর্ক স্থাপন করে।

–ইয়ান তুমি থামো,বেশি বলে ফেলছো,এমনি এমনিই তো তুমি কারোর সাহায্য করো না ইয়ান,নিজের স্বার্থ ছাড়া।
আর আমি খুব ভালো করেই জানি, তুমি কেনো এখানে এসেছো, কিন্তু তোমার উদ্দেশ্য আমি সফল হতে দেবো না, ওই ব্ল্যাক পেপার তুমি নিয়ে যেতে পারবেনা এখান থেকে।(ইফান)

–তাই?
তো আমিও দেখি আপনি কি করে আমায় আটকান।
এরপর ইয়ান নিজের হাতে থাকা হোয়াইট পেপারটা ইফান এর সামনে ধরে, ইফান আরো বেশি ভয় পেয়ে যায়, আর বলে, ইয়ান এটা সরাও সামনে থেকে।
ইয়ান আরো এগিয়ে যেতে থাকে ইফানের দিকে, ইফান হঠাৎ উধাও হয়ে যায়,আর ইয়ান ইফানের এমন কাজে হেসে দেয়।

–স্যার একটা সত্যি কথা বলবেন?
–এটাই জানতে চান তো কে আমি?
–আপনি কিভাবে জানলেন?
–একটু ধৈর্য ধরুন তায়াশা,সব জানবেন, আর আমায় ভয় পাওয়ার কোনো কারন নেই, আমি কারোর ক্ষতি করতে আসিনি, শুধু এক অদৃশ্য আর্থকে এক ভয়ঙ্কর বিপদ থেকে বাঁচানোর জন্য সাহায্য করছি, আর সেই উদ্দেশ্য সফল করার জন্য আপনার সাহায্য চাই আমার।
বিশ্বাস করতে পারেন আমায়, কথা দিলাম বিশ্বাস ভঙ্গ করবো না।

ইয়ানের কথায় বিশ্বস্ততার এক ছাপ ছিলো, যা তায়াশার মস্তিষ্ক এড়ায় নি, আর তায়াশা সম্মতি দেয় ইয়ানকে সাহায্য করার জন্য।

To be continue…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here