Mysterious Part 23

0
223

Mysterious
Part -23
Romoni

কেউ একজন এতোক্ষণ ধরে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে পর্যবেক্ষণ করছিলো ইফান এবং তায়াশাকে,সে অবয়বটির মাঝে এক প্রশান্তির ছাপ স্পষ্ট প্রতিস্ফুটিত রয়েছে।
হঠাৎই সে অবয়ব টি আবছায়ায় মিলিয়ে যায় এবং তার কন্ঠ থেকে চারিদিকে কিছু কথা হালকা আওয়াজে ভাসতে থাকে।

” উল্টো গননার প্রহর আসন্ন অতি নিকট, ক্রীড়া সম্পন্নের অন্তিম অধ্যায় এর যাএারম্ভ এই মুহুর্ত হতে।”

ডেভিল কিংডম,

রাফিম নিজের ক্ষত স্থান এর পরিচর্যায় ব্যাস্ত।
আর অ্যাফিন রাফিম কে বারবার একই প্রশ্ন করে চলেছে, যে রাফিম তায়াশার কাছ থেকে প্রিন্সেস লকেটটা আনতে পেরেছে কি না?
রাফিমকে বারবার প্রশ্ন করার কারন হচ্ছে, রাফিম নিজের মাইন্ড রিড করার থেকে অ্যাফিন কে বাঁধা দিচ্ছে, আর রাফিম কেনো মাইন্ড রিড এ বাঁধা দিচ্ছে তাও অ্যাফিন এর বোধগম্য হচ্ছে না।
আর রাফিম যে এতোটা আঘাত পেয়েছে সে বিষয় অ্যাফিন এর মধ্যে রাফিম কে নিয়ে কোনো রকম ভাবান্তর নেই।
অ্যাফিন নিজেকে এমন ভাবে প্রতিস্থাপন করছে রাফিম এর সামনে, যেনো রাফিম এর মৃত্যু হলেও অ্যাফিন এর কিছু যায় আসে না, অ্যাফিন এর শুধু পাওয়ার এর প্রয়োজন।
যদিও এটাই স্বাভাবিক, কেনোনা অ্যাফিন আর রাফিম দুজন একসাথে আছে শুধু মাএ নিজেদের স্বার্থের প্রয়োজন এ।
কিন্তু তবুও একটা ভিন্ন এবং খুব কাছের সম্পর্ক তো আছেই অ্যাফিন এবং রাফিম এর মধ্যে, তবুও এতোটা নিষ্ঠুরতা দুজনের মাঝে।

আর রাফিমও অ্যাফিন এর আচরন খুব ভালো ভাবেই বুঝতে পারছে, তবে রাফিম এর তাতে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই, রাফিম নিজেকে নিয়ে ব্যাস্ততা দেখাচ্ছে।

এদিকে রাফিম এর এহেন আচরনে অ্যাফিন রেগে কক্ষ থেকে বেরিয়ে চলে যেতে নেয়।
আর তখনই রাফিম মৃদু হেঁসে বলে ওঠে, আমি তায়াশার কাছ থেকে প্রিন্সেস লকেট আনতে পারি নি এবং আশা করতে পারি আপনি আপনার উওর পেয়ে গেছেন?

রাফিন এর কথায় অ্যাফিন দাঁড়িয়ে যায়, আর উল্টো দিকে ঘুরেই কথাগুলো শুনতে থাকে।
রাফিম এর কথা শেষ হওয়ার পরে, অ্যাফিন রাফিম এর দিকে ঘুরে বলে, তাহলে এতোক্ষণ এতো বার করে এই প্রশ্নটা করার পরেও চুপ করে কেনো ছিলে রাফিম হিন?

অ্যাফিন এর পাল্টা প্রশ্নে রাফিম উঠে দাঁড়িয়ে অ্যাফিন এর দিকে কিছুটা এগিয়ে এসে, গুরুত্ব হীন মনোভাব এর রেশ মুখে এনে বলে, ইচ্ছে করে নি তাই।

রাফিম এর উওর পেয়ে বিরক্ত হয়ে অ্যাফিন কক্ষ থেকে বেরিয়ে যায়।
তারপর রাফিম আবার গিয়ে বিছানা বসে ক্ষত স্থানে জড়িবুটি দিতে থাকে।
.
.
.

তায়াশা নিজের ঘরে এসে, পা দুটো বাঁকা করে ভাজ করে মেঝেতে বসে লকেটটাকে দুই হাত দিয়ে চেপে ধরে আছে,ব্যালকনি দিয়ে বয়ে আসা হাওয়া তায়াশার ঘন কালো লম্বা কেশ রাশিকে এলোমেলো ভাবে উড়িয়ে দিয়ে যাচ্ছে,তায়াশা এখনো নিজের ভ্যাম্পায়ার রুপেই আছে।
তায়াশার বিশাল ডানা’র ঝাপটায় ঘরে থাকা কয়েকটা আসবাব নিচে পড়ে ভেঙেও গেছে, আর কয়েকটা ভাঙা কাঁচের টুকরো এসে তায়াশার শরীরেও বিঁধে গেছে।
কিন্তু তায়াশা যেনো এই মুহুর্তে অনুভূতি হীন, তায়াশার কোনো কিছুতেই যেনো ভ্রুক্ষেপ নেই, কোনো বাহ্যিক ব্যাথাই যেনো তায়াশার উপর কোনো রকম প্রভাব ফেলছে না, চোখের কোনেও অশ্রুর কোনো চিহ্ন নেই,আর না রয়েছে কোনো ক্রোধ।
এক নিরব সহ্যায়মান প্রতিস্থাপিকা এই ক্ষণে, এক বিরহ, না পাওয়া অথবা পেয়েও হারিয়ে ফেলার আক্ষেপ থাকা সত্বেও তা অব্যাক্ত হীন এখন তায়াশা।
আর এই বিলাস বহুল বাড়ির প্রতিটি কক্ষই সাউন্ড প্রুফ হওয়ার কারনে, এই কক্ষে কোনো কিছু ভাঙার শব্দ অন্য কক্ষে পৌঁছায় নি।
তাই কেউ ছুটে আসে নি কি হয়েছে তা পরখ করার জন্য, একাকিত্ব আকৃষ্টতার রেশ যেনো আরো অধিক মাএায় ঘিরে আছে এই সহ্যায়মান রমনীকে।
তবে এই নিষ্ঠুরতম একাকিত্বেও একজন আড়াল থেকে এবং বিনা বাক্যে সঙ্গ দিয়ে যাচ্ছে তায়াশাকে, কিন্তু তায়াশার তা অজানা।

হঠাৎই তায়াশার অতীতের কোনো এক বিষয়ে ইয়ান এর কথােপোকথন মনে কড়া নাড়তেই তায়াশার ভ্রু জোড়া কুচকে যায়, আর উঠে দাঁড়িয়ে প্রিন্সেস লকেটটাতে পুনরায় গলায় পড়ে নেয়।
তারপর নিজের স্বাভাবিক রুপে ফিরে আসে এবং ঘরের সব কিছু আবার আগের ন্যায় ঠিক করে দেয়, ধীরে ধীরে নিজের ক্ষত স্থান গুলোকেও মিলিয়ে দেয়।

এদিকে সেই অজানা অবয়বটিও আবছায়ায় নিজেকে অদৃশ্য করে দেয়, তবে চিরতরে নয়, সে যে সর্বক্ষণ তায়াশার ছায়া সঙ্গী হয়ে আছে।

আর তায়াশা কিছু প্রশ্নের উওর খুঁজতে অতিব ব্যাস্ত যে,
ইফান এর কাছে নির্দিষ্ট পাওয়ার রয়েছে, কিন্তু কিভাবে?
ইফান তো একজন সাধারণ মানব, তাহলে ইফান এর কাছে নির্দিষ্ট পাওয়ার থাকবে কিভাবে?
আর ইফান নিজের নির্দিষ্ট পাওয়ার কে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য ইয়ান এর সাথে লড়াই এর করার সময়, লড়াই শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা না করে, লড়াই মাঝ পথ থেকে ফিরে যাবে কেনো?
কোনো সাধারণ মানব এর তো এতোটা পাওয়ার থাকতে পারে না।
আর যদিও থাকে তাহলে তা দুর্বল হয়ে কেনো পড়বে, সেই পাওয়ার তো যথেষ্ট সক্রিয় থাকবে, তাহলে পাওয়ার এর সুরক্ষার জন্য লড়াই মাঝ পথ থেকে কেনো ফিরে যেতে হবে?

ইফান কয়েকবারই ইয়ান এর সাথে দ্বন্দ হওয়ার পরে মাঝ পথ থেকে লড়াই এর স্থান ত্যাগ করেছে, তায়াশা বিষয়টা নিয়ে এতোদিন ভাবে নি, স্বাভাবিক ভাবেই দেখেছে, তবে এই মুহুর্তে হঠাৎই বিষয়টা তায়াশার মনে সন্দেহ প্রবন প্রশ্ন জাগিয়ে তুলেছে।
আর তায়াশা ইফান এর ব্যাপারে আরো বেশি জানার প্রচেষ্টা করতে নেয় নিজের পাওয়ার ব্যাবহার করে, তবে কোথাও থেকে এক অদৃশ্য বাঁধা এসে তায়াশাকে বাঁধাগ্রস্থ করে, তায়াশা ব্যার্থ হয় ইফান এর সম্পর্কে আরো বাড়তি কিছু জানায়।
এতে তায়াশা বেশ বিরক্ত বোধ করে, আর তায়াশা খুব ভালো করেই বুজতে পারে যে এটাও ইয়ান এর কাজ, ইয়ান ই বাঁধা দিচ্ছে তায়াশাকে।
তায়াশা এটা ভেবেই অবাক হয় যে ইয়ান তায়াশার বিষয়ে এতোটা অবগত থাকে কিভাবে?
আর ইয়ান এর এই বাঁধার কারন ই বা কি?
এতোটা রহস্য উৎপন্নের কি খুব প্রয়োজন?

.
.
.

রাএিকালের মধ্য প্রহর,

তায়াশা এবং ইয়ান ছাদে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আছে, আর দুজনেই ব্যাস্ত টাইমার এ পাওয়ার আরোহন করতে।
আশপাশ জুড়ে রয়েছে অসংখ্য ভ্যাম্পায়ার এক ঝাঁক।
তবে আজ আকাশে কালো বর্নের মেঘের আনাগোনা খুব বেশিই যার দরুন চাঁদটা আর ওই মিটমিট করে জ্বলন্ত তারকা মন্ডলী গুলো আজ খুব তাড়াতাড়িই হারিয়ে যাচ্ছে ওই ঘন কালো মেঘের আড়ালে।
পরিবেশটাও বিষাদ মুখর দুই জনের কাছে, যদিও দুজনের বিষন্নতার হেতুদ্বয় ভিন্ন হওয়া সত্বেও এক কেন্দ্রে এসে মিলিত হয়েছে।

কিছুক্ষণ পরে,

তায়াশা, ইয়ান এবং অন্যান্য ভ্যাম্পায়ার দের পাওয়ার আরোহন কার্য সম্পন্ন হলে,উড়ন্ত অবস্থায় থাকা ভ্যাম্পায়ার গুলো আস্তে আস্তে ফিরে যায় নিজেদের আবাস স্থলে।

ইয়ান ও তায়াশা দুজনের কারো মুখেই কোনো কথা নেই, দুজনেই নিরবতায় আবদ্ধ।
বেশ কিছুক্ষণ পরে ভোরের আলো ফুটে ওঠে, বাড়িটা এতোটা উচ্চতা সম্পন্ন যে সূর্যদ্বয় প্রতিফলিত হওয়া এই ছাদ থেকে খুব সুন্দর ভাবে উপভোগ করা যায়।
এই সূর্য দ্বয়ের অপরুপ রক্তিম আভা এবং সকালের শিশির বিন্দু কনা গুলো আর মৃদু শীতল হাওয়ার ছোঁয়ায় তায়াশার ঠোঁটের কোনের বিষন্নতার রেশ কেটে গিয়ে প্রফুল্লতার আমেজ ভেসে ওঠে।

আর তায়াশাকে আনন্দিত হতে দেখে পাশে থাকা ব্যাক্তিটির ঠোঁটের কোনেও এক প্রশান্তি প্রাপ্তি হাসি প্রশস্ত হয়।
যে হাসিটা তায়াশার দৃষ্টি অগোচর হয় না, তায়াশা মনে মনে বলে ওঠে, শুনেছিলাম আপনি অনেক স্বার্থপর ইয়ান স্যার, নিজের স্বার্থ ছাড়া নাকি কিছু করেন না, তবে আমি তো আপনাকে তার বিপরীত ভাবে দেখছি, একজন নিঃস্বার্থ প্রেমিক,তবে অধিক রহস্যময়।

এরপর ইয়ান আর তায়াশা নিচে নেমে নিজেদের ঘরে চলে যায়।

To be continue…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here