Mysterious Part 22

0
216

Mysterious
Part -22
Romoni

সন্ধ্যাবেলা,

ইয়ান বাহিরে বের হওয়ার জন্য নিজের ঘরে রেডি হচ্ছে, আর তায়াশা ঘরে বসে পড়ছে।
ইয়ান দুপুরে তায়াশার বাড়িতে গিয়ে তায়াশার বই খাতা সব এখানে কিছু নিয়ে এসেছে।

কায়রানা ড্রয়িং রুমের সোফায় বসে আছে।

|
|
ইয়ান সম্পূর্ণ রেডি হয়ে তায়াশার ঘরের দরজার সামনে এসে নক করে, তবে কোনো সাড়া পায় না,এভাবে কয়েকবার নক করার পরেও কোনো প্রতি উত্তর না পেয়ে, দরজা ঠেলে ঘরের ভেতরে প্রবেশ করে ইয়ান।
আর ঘরে গিয়ে দেখে, তায়াশা টেবিলে রাখা বই খাতার উপরে মাথা রেখে ঘুমাচ্ছে।
ইয়ান তায়াশার এমন অবস্থা দেখে তায়াশার দিকে বিরক্তিকর মুখ নিয়ে তাকিয়ে আছে।
তারপর ইয়ান তায়াশার দিকে এগিয়ে গিয়ে, ধীরে ধীরে ডেকে তায়াশাকে জাগিয়ে তোলে।
তায়াশা ঘুম ঘুম চোখে ইয়ানের তাকিয়ে দেখে ইয়ান রাগী এবং বিরক্তি মাখা মুখ করে তায়াশার দিকে তাকিয়ে আছে।
তায়াশা ইয়ানকে এভাবে থাকতে দেখে বলে, আপনার আবার কি হলো?
মুখটা এমন করে আছেন কেনো?

–আপনি এটা কি করছেন?
আপনার না সামনে পরীক্ষা, আর আপনি এখন বই খাতার উপরে ঘুমাচ্ছেন, সাহস তো কম না। (ইয়ান)

— তাতে আপনার কি? (তায়াশা)

ইয়ান তায়াশার এহেন ভাবলেশ হীন প্রশ্নে, তায়াশার হাত ধরে টেনে দাঁড় করিয়ে, বইখাতা গুলো ব্যাগের ভেতর ঢুকিয়ে নেয়।
তারপর ফের তায়াশার হাত ধরে টেনে নিচে নিয়ে গিয়ে, কায়রানার সামনে এনে দাঁড় করায়।
আর কায়ারানা’র উদ্দেশ্য বলে, মম আজ থেকে তুমি তায়াশাকে পড়াবে, উনি পড়তে বসে ঘুমিয়ে থাকেন, এভাবে চললে আর পরীক্ষায় পাশ করতে হবে না।
ইয়ান কথাগুলো বলে ব্যাগটা সোফায় রেখে অপর পাশের ব্যাক্তিটিকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে, দ্রুত পায়ে হেঁটে বেরিয়ে যায়।

তায়াশা আর কায়রানা ইয়ানের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।
তারপর তায়াশা গিয়ে অন্য সোফায় বসে কায়রানার কাছে পড়তে থাকে।
কেনোনা তায়াশা খুব ভালো করেই জানে ইয়ান এর কথার অবাধ্য হলে ইয়ান প্রচন্ড রেগে যাবে।
আর ইয়ান এর রাগ সম্পর্কে তায়াশার খুব ভালো করেই জানা আছে।
তাই বাধ্য হয়ে ইয়ানের কথা মেনে নিতে হয় তায়াশাকে।

রাত ১১ টা,

ইয়ান একটা নির্জন মাঠের মাঝামাঝি দাঁড়িয়ে আছে, প্রায় অনেকটা জায়গা জুড়ে বিস্তৃত একটা স্থান।
ইয়ানের আশেপাশে দাঁড়িয়ে কয়েকজন ভ্যামপায়ার সদস্য।
সামনে- পেছন দিক থেকে হাত বাঁধা,হাঁটু গেঁড়ে বসা একজন মাঝ বয়সী পুরুষ , তার চোখ মুখ জুড়ে আছে এক ভয়ঙ্কর ক্রোধ।
আর ইয়ানের মুখে আছে তাচ্ছিল্যের হাসি।
যে হাসির কারন সামনে থাকা লোকটির ক্রোধ, কেনোনা লোকটার কাছে আর বেশিক্ষণ সময় নেই, একটু পরেই সে ঢলে পড়বে মৃত্যুর কোলে, তবুও এতোটা উদ্ধতা।

ইয়ান ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে সেই ব্যাক্তির দিকে, আর ব্যাক্তিটির মুখে এবার ক্রোধ স্পষ্টতা মুছে গিয়ে একরাশ ভয় এসে জমাট বাঁধছে।
কারন ইয়ান লোকটির যত কাছে যাচ্ছে, ইয়ানের রুপ তত পরিবর্তন হচ্ছে, ইয়ান নিজের ভ্যাম্পায়ার রুপে পরিবর্তিত হয়ে ওঠে।
তারপর ইয়ান হাঁটু ভাজ করে লোকটির সামনে বসে, লোকটির উদ্দেশ্য বলে, অযথা রাফিম এর জন্য নিজের প্রানটাকেই হারাবে এখন।

(লোকটি ইফান এর গুপ্তচর, ইফান লোকটিকে পাঠিয়ে ছিলো ইয়ান আর তায়াশার উপর নজর রাখার জন্য, আর ইফান যথেষ্ট সতর্কতার সাথে লোকটিকে পাঠায়, যেনো ইয়ান বা তায়াশা কেউই লোকটির উপস্থিত টের না পায়।
লোকটি একজন ডেভিল সদস্য, তবে ইফান তাকে সাধারণ মানুষ এর রুপে থাকতে বলে।
ইয়ানের সন্দেহ এড়াতে।

কিন্তু প্রথমত ইয়ানের বিচক্ষণতা, আর কিং লকেট, এবং ব্ল্যাক পেপার ইয়ান এর অধীনে থাকায় ইয়ানের বুঝতে অসুবিধা হয়নি ইফান এর উদ্দেশ্য সম্পর্কে।
ইয়ান যখন ইফান এর উদ্দেশ্য সম্পর্কে অবগত হয় তখন ইয়ান এটা ভেবেই নিজের ঠোঁট এ তাচ্ছিল্যের হাসি ফুটিয়ে তুলেছিলো, যে ইফান ইয়ানের পাওয়ার সমন্ধে জেনে এবং ডেভিল কিংডম এর কিং হওয়া সত্বেও এতোটা বুদ্ধিহীন এর মতো কাজ করলো কিভাবে?)

–কিং আমায় যেতে দিন দয়া করে, আমি আজকের পর আর কখনো কিং রাফিম এর হয়ে কাজ করবো না।
লোকটি মিনতির সুরে কথাটা বলে ইয়ানকে।
তবে ইয়ান এর তাতে কোনো রকম সহানুভূতি তৈরি হয় নি, সেটা ইয়ান এর মুখোভাব দেখেই লোকটি বুঝতে পারে।
অতঃপর ইয়ান উঠে দাঁড়িয়ে কোমরে থাকা একটা ছুড়ি বের করে লোকটির বুক বরাবর গেঁথে দেয়, আর লোকটি সেখানেই বিকট শব্দে চিৎকার করতে করতে এক কালো বর্নের ধোঁয়ার ন্যায় হয়ে বায়ুমন্ডল এর সাথে মিলিয়ে যায়।

তারপর ইয়ান লোকটার শরীর থেকে মাটিতে পড়ে যাওয়া ছুরিটা তুলে নিয়ে,নিজের স্বাভাবিক রুপ নিয়ে সেখান থেকে বাড়িতে ফিরে আসে।

আর তায়াশা পড়া শেষ করে, ছাদে উঠে দাঁড়িয়ে আছে।
গলায় ঝোলানো অবস্থায় হাতে একটু উঁচু করে ধরে সামনে এনে তায়াশা এক দৃষ্টি নিক্ষেপ করে তাকিয়ে আছে টাইমারটার দিকে।
আর চোখ থেকে এক দু ফোঁটা করে পানি গড়িয়ে পড়ছে তায়াশার।

হঠাৎই একটা দমকা হাওয়া অনুভব করে তায়াশা নিজের আশেপাশে, আর টাইমারটাতেও খুব জোড় এক টান অনুভব করে।
কেউ এতোটাই জোড়ে টাইমারটা টান দিয়েছে, যে টাইমার এর সাথে থাকা চেইনটা তায়াশার গলা থেকে খুলে যাওয়ার সময় তায়াশার ঘাড়ের অংশ কেটে রক্ত জমে যায়।

তবে টাইমারটা খুলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তায়াশা টাইমারটা খুব জোড়ে মুঠো বন্দী করে নেয়, এতে টাইমার এর কিছু অংশ তায়াশার হাতে গেঁথে গিয়ে, তায়াশার হাতেও অনেকটা জখম হয়,আর রক্তপাত শুরু হয়।
অতঃপর তায়াশা অন্য দিকে ঘুরে হাঁটু ভাজ করে নিচে বসে পড়ে, আর নিজের ভ্যাম্পায়ার রুপ ধারন করে নেয়।
তায়াশা উঠে দাঁড়িয়ে পেছন দিকে ঘুরতেই দেখে ইফান দাঁড়িয়ে আছে।
ইফানকে দেখা মাএই তায়াশার চোখ দুটো রাগে রক্তিম বর্ন ধারন করে, আর তায়াশা অতি তীব্র গতিতে পিঠে ঝোলানো থাকা তলোয়ারটা বের করে ইফানের বুক বরাবর ছুঁড়ে দেয়।
আর তলোয়ারটা গিয়ে ইফান এর বুকের ডান পাশে আঘাত করে।
ইফান তায়াশার এহেন আকস্মিক আক্রমণ এর টাল সামলাতে না পেরে কিছুটা দূরে ছিটকে যায়।

ইফান তলোয়ার টা একহাত দিয়ে চেপে ধরে তায়াশার দিকে অদ্ভুত এবং বিস্মিত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
ইফান এর কল্পনার ও অধিক ছিলো যে তায়াশা ইফানের উপর এতোটা নির্মম আঘাত আনতে পারে।
কেনোনা ইফান জানে যে তায়াশা ইফান কে খুব ভালোবাসে, তাই তায়াশা ইফান কে মেরে ফেলার কথা দুঃস্বপ্নেও ভাবতে পারেনা।
তাই ইফান তায়াশাকে ইফান এর উপর আঘাত করা থেকে বাঁধা দিতে পারেনি।

তায়াশার চোখে আছে প্রতিশোধ এর তীব্র চাউনি,ঠোঁটে রয়েছে এক রহস্যময় হাসি, সমস্ত মুখো মন্ডল এ শান্ত স্বরুপ রাগের আভা।
আজ যেনো ইফান এর সামনে এক অচেনা তায়াশা দাঁড়িয়ে আছে।

তায়াশা ঝড়ের বেগে উড়ে এসে তলোয়ারটা এক টানে ইফান এর বুক থেকে বের করে নেয়, এতে ইফান এর ক্ষত স্থানে পুনরায় ব্যাথা অনুভব হতেই ইফান ভাবনার জগৎ থেকে বের হয়ে আসে।
তায়াশা ইফানকে ফের আঘাত করতে যাবে, তখনই ইফান নিজের তলোয়ার বের করে তায়াশার তলোয়ার কে আঘাত করে।
আর বলে, তুমি এমন কেনো করছো তায়াশা?
তুমি আমায় মেরে ফেলতে চাইছো, তাও আবার ক্ষমতা নিজের করে রাখার আশায়?
এতোটা বদলে গেলে কিভাবে তায়াশা তুমি?

রাফিম হিন, তোমার কি মনে হয় সামান্য একটু ক্ষমতা নিজের করে রাখার প্রত্যাশায় আমি আমার ভালোবাসাকে আঘাত করবো?
তায়াশা হালকা হেঁসে ইফানের উদ্দেশ্য কথাটা বলে।

এদিকে ইফান তায়াশার কথায় হতবিহ্বল হয়ে গেছে।
সমস্ত ইনভিসিবল আর্থ এর ক্ষমতা কে তায়াশা কিনা সামান্য বলছে?
আজ ইফান এর কাছে তায়াশাকে অত্যাধিক রহস্যময়ী লাগছে।

তায়াশা কিছুক্ষণ অদ্ভুত ভাবে ইফান এর দিকে তাকিয়ে থেকে আবার বলা শুরু করে,

–তুমি যা করেছো এর পরিনাম তো খুব ভয়াবহ হবে, আর আমি তো কমই করলাম, একটু অপেক্ষা করো নিজের অন্তিম সময়ের জন্য।

তায়াশা কথাগুলো বলে আর এক মুহুর্তও দেরি করে না সেখান থেকে প্রস্থান করে।
আর ইফান এখনো তায়াশার বলা কথা গুলো এবং তায়াশার করা কর্মের উওর খুঁজতে ব্যাস্ত।
এক পর্যায়ে ইফান নিজের বুকের ক্ষত স্থান এ তীব্র ব্যাথা অনুভব করতে থাকে, এতোক্ষণ এর তুলনায় ব্যাথাটা অধিক মাএায় বেড়ে যায়।
তারপর ইফান একহাত দিয়ে ক্ষত স্থান চেপে ধরে সেখান থেকে চলে যায়, ডেভিল দ্বীপ এ।

অন্য দিকে কিছুটা দূরে………….

To be continue…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here