Mysterious Part 17

0
248

Mysterious
Part -17
Romoni

অন্ধকারচ্ছন্ন কক্ষদ্বয়ে হালকা আলোর আবরনের আভাস প্রতিফলিত হয়, যার ফলে দাঁড়িয়ে থাকা ব্যাক্তিটির মুখ আবছায়ায় ফুটে ওঠে।
অতঃপর ব্যাক্তিটি নিজের মুখে বাঁধা কাপড়টা একটানে খুলে ফেলে।

তার ঠোঁটের কোনে মিশ্রিত এক ভয়ঙ্কর রহস্যময় স্মান হাসি,চোখে রয়েছে এক ভয়ঙ্কর গেম এর উইনার হওয়ার পূর্ণ আত্মবিশ্বাস।
উপড়ে ঘুর্নন প্রক্রিয়ায় চলমান সিলিং ফ্যান এর হাওয়া দোল দিয়ে যাচ্ছে তার মাঝারি গড়ন চুলগুলো।

এক পর্যায়ে আলোর প্রতিফলন ঘটেছে সম্পূর্ণ কক্ষে।
কক্ষটা সুসজ্জিত সব এক্সপেন্সিভ আসবাব এ।
কক্ষের একপাশের দেয়ালে সাজানো বিভিন্ন ধরনের রিভলভার, অন্য পাশের দেয়ালে ক্রস আকারে দুইটা তলোয়ার আর ঢাল আটকানো।

হঠাৎই ব্যাক্তিটির ফোনে একটা ফোন আসে, সে ফোনটা পকেট থেকে বের করে স্ক্রিনের দিকে তাকাতেই তার ঠোটে এক প্রশান্তিময় হাসি রেখা প্রতিস্ফুটিত হয়।
ফোন রিসিভ করে সালাম দিতেই অপর পাশ থেকে সালাম নিয়ে একজন মহিলা কন্ঠী কেউ বলে ওঠে, S.R. আপনার কাজ নিশ্চই এতোক্ষণে শেষ, আরো একজনের জীবনের অন্তিম অধ্যায় টেনে দিলেন আপনি আজ, আমার মনে হয় না আর কোনো কাজ আছে, তো এবার বাড়ি ফিরে আসুন।

আসছি বলেই ফোনটা কেটে দেয় (S.R.).

রাত ১০ টা,

তায়াশা ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে ছিলো, হাতে এক মগ কফি নিয়ে।
হঠাৎই তায়াশার ফোনটা বেজে ওঠে,তায়াশা একরাশ বিরক্তি নিয়ে ফোনটার কাছে যায়।
তায়াশার কাছে সব কিছুই এখন যেনো বিরক্তি তে রুপান্তরিত হয়েছে, কোনো কিছুতেই তায়াশার মনোনিবেশ পছন্দ হয় না।

তায়াশা ফোনটা হাতে নিয়ে দেখে “Ian sir” লেখাটা স্ক্রিনে ভাসছে,তায়াশা ফোন ধরে সালাম দেয়, অপরপাশ থেকে ইয়ান সালাম নিয়ে বলে,
আজ একা একা খুব বিরক্ত হয়েছো তাই না তিশ।

–আপনি আবার শুরু করলেন ইয়ান স্যার,এতোক্ষণ ভালোই ছিলাম তবে এখন বিরক্ত হচ্ছি।(ইয়ান)

–ওহ আচ্ছা সরি,আর বিরক্ত কবো না আপনাকে প্রিন্সেস, কবরস্থান এর সামনে আসুন।
কথাটা শেষ করেই ইয়ান ফোন কেটে দেয়, তায়াশা আর কিছু বলার সুযোগ পায় না।
তায়াশা ফোনটা কর্নদ্বয় থেকে স্থানান্তর করে, রাগান্বিত একটা নিঃশ্বাস ফেলে ঘর থেকে বেরিয়ে ইয়ানের বলা স্থানে প্রস্থান করে।

তায়াশা গিয়ে দেখে ইয়ান কবরস্থান এর সামনে থাকা ফুল গাছটার সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

তায়াশাকে দেখে ইয়ান এগিয়ে এসে বলে,চলুন।

–কোথায় যাবো? (তায়াশা)

–যেখানে মম আছে সেখানে। (ইয়ান)

–মানে, আন্টি কোথায় আছে?
আন্টি তো এই ঘরেই থাকে, তায়াশা ইয়ানের ঘরের দিকে তাকিয়ে বলে।(তায়াশা)

ইয়ান তায়াশার প্রশ্নের প্রতিউওরে বলে, না।
এখন আর আর এখানে থাকে না।

— তাহলে কোথায় থাকে সেটা তো বলুন। (তায়াশা)

–বলবো না, নিয়ে যাবো। (ইয়ান)

তায়াশা আর কথা না বাড়িয়ে ইয়ানের সাথে যেতে রাজি হয়ে যায়, কেনোনা হাজার বললেও ইয়ান নিজের ইচ্ছের বিরুদ্ধে গিয়ে তায়াশাকে না নিয়ে গিয়ে বলবে না ইয়ানের মা কোথায় আছে।
ইয়ান তায়াশাকে দাঁড় করিয়ে রেখে, বাইকটা বাড়ির পেছন থেকে গিয়ে নিয়ে আসে, তারপর তায়াশা উঠে বসে বাইকের পিছনে।
ইয়ান বাইক স্টার্ট দিয়ে চালাতে থাকে।

প্রায় অনেক্ক্ষণ হয়ে গেছে ইয়ান বাইক চালিয়েই যাচ্ছে, থামার কোনো নাম নেই, তায়াশাও কিছু বলছে না, শুধু ইয়ানের দিকে রাগী দৃষ্টিপাত করে আছে।
ইয়ান তায়াশার এমন রাগান্বিত মুখটা বাইকের সামনে গ্লাস এ দেখে একটা টেডি স্মাইল ফুটিয়ে তোলে নিজের ঠোটের কোনে, তায়াশা আরো বেশি রেগে মুখ অন্য দিকে ঘুরিয়ে বসে আছে।

অবশেষে বেশ কিছুক্ষণ পরে বাইকটা এসে একটা বিশাল ডুপ্লেক্স হোম এর নিচে থামে।
তায়াশা বাইক থেকে নেমে বাড়িটার দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে আছে।
তায়াশার বোধগম্য হচ্ছে না ইয়ানের তায়াশাকে এই ডুপ্লেক্স হোম এ আনার কারন, আর ইয়ানের মা-ই বা এখানে কি করে।
তায়াশা চারপাশে চোখ বুলিয়ে দেখে বাড়িটা একদম নির্জন একটা জায়গায় তৈরি,যতদূর চোখ যাচ্ছে একজন মানুষও দেখা যাচ্ছে না, আর কোনো যানবাহনের শব্দও কর্নপাত হচ্ছে না।

ইয়ান বলে ওঠে, তায়াশা আসুন আমার সাথে।
ইয়ানের কথা মতো তায়াশা ইয়ানের পিছু পিছু হাঁটতে থাকে।
বাড়ির ভেতরে যাওয়া পথে তায়াশা দেখে সম্পূর্ণ কালো পোশাক পরিহিত অনেকগুলো গার্ড দাঁড়িয়ে আছে,আর ইয়ানকে দেখা মাএই সালাম দিচ্ছে এবং ইয়ানকে স্যার বলে সম্বোধন করছে।

অতপর বাড়ির দরজার সামনে এসে, ইয়ান কলিং বেল বাজাতেই একজন মেয়ে এসে দরজা খুলে, ইয়ানকে দেখে সালাম দেয়।
ইয়ান সালাম নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে আর বলে আজ থেকে এই ম্যাম এখানেই থাকবেন, তার যেনো কোনো অসুবিধা না হয়,তায়াশার দিকে দেখিয়ে ইয়ান কথাটা বলে।
ইয়ানের কথা মতো সেই মেয়েটি বলে,আচ্ছা স্যার আমরা ম্যাম এর সম্পূর্ণ খেয়াল রাখবো, কিন্তু ম্যাম কোন ঘরে থাকবে।

–সেটা আমি দেখছি।? (ইয়ান)

–আচ্ছা স্যার।

তারপর সেই মেয়েটি সেখান থেকে চলে যায়।
ইয়ান তায়াশাকে নিয়ে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে থাকে, তায়াশা বাড়ির যত ভেতরে প্রবেশ করছে ততই অবাক হচ্ছে, কেনোনা বাড়ির প্রতিটা কর্নার এক্সপেন্সিভ জিনিসে সুসজ্জিত, আর কয়েকজন লোক আর কয়েকজন মেয়ে নিজেদের মতো কাজ করে যাচ্ছে।

ইয়ান গিয়ে একটা ঘরের সামনে থামে, আর দরজায় নক করে বলে, মম আসবো?

ভেতর থেকে একজন বলে ওঠে, হ্যা আয়।

ইয়ান আর তায়াশা ঘরের ভেতরে যায়।
তায়াশা ঘরে গিয়ে বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে আছে।তায়াশার মুখ থেকে অস্ফুটে ব্যাক্ত হয়, কায়ারানা(ইয়ানের মায়ের নাম) আন্টি।

কায়ারানা’র পড়নে এক্সপেন্সিভ পোশাক, অর্নামেন্টস।
সেদিন তায়াশা কায়ারানাকে দেখেছিলো এক সাধারণ পোশাক পরিহিত এক সাধারণ নারী রুপে, তবে আজ তাকে কোনো কুইন এর তুলনায় কম লাগছে না।

–আয় মা ভেতরে আয় (কায়ারানা)

তায়াশা তার কথা মতো ভেতরে প্রবেশ করে, আর বলে, এসব কি হচ্ছে আন্টি?
আর এটা কোন জায়গা?

–সব জানবি মা, এখন একটু বিশ্রাম নে, অনেক রাত হয়েছে আজ ঘুমিয়ে নে, বাকিটা কাল জানিস।
তায়াশা আর কিছু বলতে যাবে, তখনই কায়ারানা থামিয়ে দিয়ে বলে,যা বললাম শোন মা, আর ইয়ান তায়াশাকে ওর ঘরে নিয়ে যা।

কায়রানার কথা অনুযায়ী তায়াশাকে ইয়ান অন্য একটা ঘরে নিয়ে আসে,এই ঘরটাও যেনো অপরুপ রুপে সজ্জিত।

ইয়ান তায়াশাকে বলে,আপনি বিশ্রাম নিন, আমি আসি, বলে ইয়ান বেরিয়ে যায়।
আর তায়াশা কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে, ফ্রেশ হয়ে নিয়ে দরজা বন্ধ করে দিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে।
কারন তায়াশা খুব ভালো করেই জানে,এখন যতই ভাবুক না কেনো তায়াশা, ইয়ান যতক্ষণ না চাইবে তায়াশাকে সব কিছু জানাতে, ততক্ষণ তায়াশা শত চেষ্টা করেও এসব কিছুর মানে খুঁজে পাবে না।

অন্য দিকে ইয়ান নিজের ঘরে গিয়ে দেয়ালে বাধানো একটা ছবির দিকে একমনে তাকিয়ে আছে, আর একা একাই কথা বলে চলেছে,
আর মাএ কয়েকটা দিন, আমি তোমায় আর কষ্ট পেতে দেবো না, এতোটা ভালোবাসবো তোমায় তুমি সমস্ত কষ্টকে ভুলে যাবে, হয়তো অতীত কে ভুলতে পারবেনা, কেনোনা প্রথম প্রেম ভোলা যায় না।

রাত ৩.০০ টা,

হঠাৎই শুট এর আওয়াজ শুনে তায়াশার ঘুম ভেঙে যায়, তায়াশা টেবিল ল্যাম্পটা জ্বালিয়ে উঠে বসে।

এরমধ্যেই আবার সেই শুট করার আওয়াজ ভেসে আসছে।
তায়াশা বেড থেকে নেমে গিয়ে দরজা খুলে ঘর থেকে বাহিরে বেরিয়ে ধীরে ধীরে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে যায়।

তায়াশা নিচে গিয়ে দেখে সদর দরজাটা কিছুটা খোলা, এতো রাতে সদর দরজাটা খোলা দেখে তায়াশার মনে সন্দেহ জাগে, আর তায়াশা বাহিরে যাওয়ার জন্য পা বাড়াতে নিয়েও আবার থেমে যায়।
কেনোনা বাহিরে অনেক গার্ডস আছে, তাই দরজা দিয়ে বের হলে তাদের নজর এড়াবে না, আর এতো রাতে তায়াশা বাহিরে বের হতে দেখলে বাঁধা দিবে।
আর তখন তায়াশা কিছুই জানতে পারবে না, এই শুট এর আওয়াজ কোথা থেকে আসছে, কেনোই বা আসছে?
এতো রহস্যের মাঝে কিছুটা রহস্য উন্মোচন করার সুযোগ পেয়েছে তায়াশা, আর এই সুযোগটা কিছুতেই হারাতে চায় তায়াশা।

তাই তায়াশা সেখান থেকে অদৃশ্য হয়ে গিয়ে একটা গাছের পেছনে খুব সাবধানে দাঁড়ায় যেনো কারোর নজরে না আসে।
তবে তায়াশা সামনের দিকে তাকাতেই তায়াশার চোখের সামনে স্পষ্ট দেখতে পায় এক ব্যাক্তির পড়নে থাকা একটা জ্যাকেট “S.K. Gangster” লেখাটা……….

To be continue…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here