Mysterious
Part -13
Romoni
সকাল ৭ টা,
তায়াশার বাড়িতে সবাই ঘুমিয়ে আছে, তায়াশার ঘুম কয়েক দিন ধরে খুব তাড়াতাড়িই ভেঙে যায়, আর এই কয়েক দিন যাবত সকালে উঠে তায়াশার প্রধান কাজ হলো ফ্রেশ হয়ে সেই বইটা নিয়ে বসা, আজও তার বিপরীত হয় নি।
তায়াশা ফ্রেশ হয়ে এসে জানালার পাশে থাকা পড়ার টেবিলের সাথে হেলান দিয়ে বইটা হাতে নিয়ে পাতা উল্টে আবার পড়তে শুরু করে।
.
.
.
হঠাৎ মাঝ রাতে তায়াশার ঘুম ভেঙে যায়, তায়াশা তাকাতেই দেখতে পায় ঘরের আলো জ্বলছে, আর ইয়ান নিচে বসে বেডের সাথে হেলান দিয়ে ঘাড় কাত করে বেডের উপর রেখে ঘুমিয়ে আছে।
ইয়ানের যেনো ঘুম না ভাঙে তাই তায়াশা খুব সাবধানে বেড থেকে নিচে নেমে আসে।
এমন হুটহাট মাঝরাতে ঘুম ভেঙে যাওয়া তায়াশার জন্য নতুন কিছু নয়, প্রায়শই তায়াশার মাঝ রাতে ঘুম ভেঙে যায়, তখন তায়াশা জানালা খুলে জানালার পাশে থাকা দেয়ালে মাথা ঠেকিয়ে দাঁড়িয়ে রাতের প্রকৃতি উপভোগ করে, আর আজও তাই করছে।
জানালা দিয়ে মৃদু ঠান্ডা বাতাস বয়ে আসছে, আচমকা এমন ঠান্ডা হাওয়া ইয়ানের শরীর স্পর্শ করতেই ইয়ানের ঘুম ভেঙে যায়,ইয়ান চোখ মেলে সামনের দিকে তাকিয়ে
তায়াশাকে দেখতে না পেয়ে উঠে দাঁড়িয়ে পড়ে,আর পেছনে ঘুরতেই দেখে তায়াশা জানালার সামনে দাঁড়িয়ে এক মনে দৃষ্টিপাত করে আছে ধীরে ধীরে মেঘের সংস্পর্শে এসে ঢেকে যাওয়া তারামণ্ডল গুলোর দিকে।
অতঃপর ইয়ান একটা সস্তির নিঃশ্বাস ফেলে তায়াশার দিকে এগিয়ে গিয়ে বলে, আপনি এখানে?
তায়াশা ইয়ানের ডাকে সামান্য হেঁসে ইয়ানের দিকে তাকিয়ে বলে, ভ্যাম্পায়ার প্রিন্স আইহান।
ইয়ান অবাক কন্ঠে তায়াশাকে প্রশ্ন করে, মানে?
–কিসের মানে আইহান, Just according to your words my Iyhan.
আপনি নিজেকে একাই রহস্য উদ্ভাবক ভাবেন তাই না?
তবে এবার আপনি আপনার ভাবনাটাকে বদলে ফেলুন, আইহান।
আপনি যা চেয়েছিলেন তা সম্পূর্ণ হয়ে গেছে, আর এখন যা চাইছেন তা সম্পূর্ন হওয়া কখনোই সম্ভব নয়।
–কেনো সম্ভব নয়? (ইয়ান কিছুটা জোড়েই বলে কথাটা)
(ইয়ানের তায়াশার কাছে আসার উদ্দেশ্য গুলোর মধ্যে একটা উদ্দেশ্য ছিলো কিং কে তার শক্তি পুরায় ফিরিয়ে দেওয়া, আর যে কাজটা তায়াশা বিহীন অসম্ভব ছিলো।
কেনোনা ওই ব্ল্যাক পেপার আবদ্ধ চেইনটা যদি একই ধরনের স্পেশাল পাওয়ার সম্পন্ন দুজনের সংস্পর্শে আনা হয় এবং কাঙ্খিত ব্যাক্তির গলায় সেই স্পেশাল পাওয়ার সম্পন্ন ব্যাক্তির দ্বারা পড়ানো হয়, তাহলেই সেই ব্ল্যাক পেপারটা কিং এর ক্ষেএে কার্যকরী হবে, নয়তো না।
কারন কিং তার পাওয়ার সম্পূর্ণ রুপে হারিয়ে ফেলেছিলো, তাই কিং এর পাওয়ার আবার পুনরায় সচল করতে গেলে খুব জোড়ালো এবং অধিক পাওয়ার এর প্রয়োজন পড়বে, আর যে পাওয়ার তায়াশা আর ইয়ান দু’জনের কাছেই আছে।
তবে কেউ যদি নিজের কাছে অবশিষ্ট পাওয়ার থাকাকালীন নিজের পাওয়ার আরো বৃদ্ধি করতে চায় অথবা নিজের কাছে সমস্ত Invisible island এর পাওয়ার আনতে চায়,তাহলে সেই চেইন এ স্পেশাল পাওয়ার সম্পন্ন যে কোনো একজনের স্পর্শ হলেই হবে, আর চেইনটা সেই স্পেশাল পাওয়ার সম্পন্ন ব্যাক্তির দ্বারা গলায় আবৃত করে নিলেই হবে।
আর যে সম্পূর্ণ পাওয়ার হারিয়ে ফেলে তা পুরায় ফিরে পেতে চায়,তাহলে একই ধরনের দুটি স্পেশাল পাওয়ার এর প্রয়োজন পড়বে।)
–আপনি খুব ভালো করেই জানেন কেনো সম্ভব নয়?
ইফান আমায় ঠকিয়েছে এটা ঠিক কিন্তু তবুও আমি ওকেই ভালোবাসি।
আর শুধু ইফান নয় আপনিও আমায় ঠকিয়েছেন। (তায়াশা)
–আমি আপনাকে ঠকায়ই নি তায়াশা, আপনি আমার সমন্ধে অন্তত এইটুকু অবগত হয়েছেন যে আমি কোনো কাজ স্বাভাবিক ভাবে বা সহজভাবে করি না, অথবা কোনো কথা সহজ ভাবে বলি না।
তায়াশা আমার নিজেকে আড়ালে রাখতেই বেশি ভালো লাগে,আর আপনিই আমার জীবনে প্রথম একজন যে আমার আড়ালকৃত অধ্যায়ের তথ্য সমগ্রের বেশিরভাগ অংশ জানেন এবং তারমধ্যে কিছু বিষয়ে সামিল আছেন।
আমার আপনাকে ঠকানোর কোনো ইচ্ছে নেই, আমার দিক থেকে আমি আমার মতো করে নিজেকে উপস্থাপন করেছি আপনার সামনে, কিন্তু আপনার দিকে আপনি ভাবছেন আমি আপনাকে ধোঁকা দিয়েছি, আর যে ধারণাটা সম্পূর্ণ ভুল।
আমি ধীরে ধীরে আমার আসল রুপটা আপনার সামনে নিয়ে আসছি, আর তাতেই আপনি ভয় পেয়ে গেছেন।
আর আমি যদি আমার সমন্ধে সব সত্যি একসাথে আপনাকে জানিয়ে দিতাম তাহলে আপনার পজিশন ঠিক কি হোতো একবার ভেবে দেখবেন তায়াশা।
তারপর না হয় আমার বিপক্ষে কোনো রকম অভিযোগ আনবেন। (ইয়ান)
–আচ্ছা মানলাম আপনি আমার ভালোর জন্যই আমায় সবকিছু একবারে বলেন নি।
তাহলে আমার জ্ঞান ফেরার পর আপনি সব অস্বীকার করলেন কেনো? (তায়াশা)
–সেটা তো আমি একটু দুষ্টুমি করেছি আপনার সাথে।
বলেই ইয়ান হেঁসে দেয়।
অন্য দিকে তায়াশাকে ইয়ানকে এভাবে হাসতে দেখে রেগে ইয়ানের দিকে তাকিয়ে আছে,আর ইয়ান তায়াশাকে রেগে যেতে দেখে তায়াশার সামনে থেকে সরে গিয়ে চুপচাপ সোফায় হেলান দিয়ে বসে পড়ে।
তায়াশা জানালা বন্ধ করে বেডে দুই পা উঠিয়ে বসে গালে হাত দিয়ে আছে।
ইয়ান যখন ঘুমিয়ে ছিলো তখন ইয়ানের নিজের মাইন্ড এর উপর কোনো নিয়ন্ত্রণ ছিলো না, আর সেই সুযোগেই তায়াশা ইয়ানের মাইন্ড রিড করে নেয়।
আর তখনই জানতে পারে ইয়ান আসলে একজন ভ্যাম্পায়ার,আর শুধু ইয়ানই নয় lone island এর প্রতিটি সদস্য এমনকি তায়াশা নিজেও একজন ভ্যাম্পায়ার।
অথচ এতোদিন তায়াশা নিজেই জানতো না তায়াশা একজন ভ্যাম্পায়ার, আর রক্তের প্রতি চাহিদাও কখনো লক্ষ্য করেনি তায়াশা নিজের।
তায়াশা আরো একটা ব্যাপার কিছুতেই বুঝতে পারছে না, তায়াশা একজন ভ্যাম্পায়ার হলে তায়াশার মা বাবাও তাহলে ভ্যাম্পায়ারই ছিলো।
তাহলে তারা সামান্য একটা কার এক্সিডেন্ট এ কি করে মারা গেলো?
এই মানব পৃথিবীতে ঘটা দুর্ঘটনা থেকে নিজেদের রক্ষা করার মতো ক্ষমতা আছে তাদের।
তায়াশা, আর কতো ভাববেন?
এবার ঘুমান, বাকি ভাবনা গুলো না হয় কালকের জন্য তোলা রাখুন।
ইয়ান তায়াশাকে এভাবে বসে বসে আকাশ পাতাল ভাবতে দেখে,কথাটা বলে তায়াশার দিকে বিরক্তি মাখা মুখ নিয়ে তাকিয়ে আছে।
ইয়ান এটাই বুঝতে পারে না, এতো কৌতুহল তায়াশার মধ্যে আসে কোথা থেকে।
–আমি ভাবছি আমার সমস্যা হচ্ছে না, আপনার এতো সমস্যা কোথায় হচ্ছে?
তায়াশাও বিরক্তি পূর্ণ কন্ঠে ইয়ানের দিকে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয়।
ইয়ান তায়াশার প্রশ্নে আর কিছু না বলে সোফার উপরে উঠে ডান দিকে ঘুরে বসে, সোফার হাতলের উপর থুতনি ঠেকিয়ে বসে থাকে, আর তায়াশাও বাকি রাতটা বসেই পার করে দেয়।
সকালে ৮ টা,
আইহান তায়াশা Devil island এ দাঁড়িয়ে আছে,এই মুহুর্তে দুজনেই নিজের ভ্যাম্পায়ার রুপে আছে।
ইয়ান আর তায়াশার পেছনে দাঁড়িয়ে আছে ভ্যাম্পায়ার সৈন্যরা।
আর তায়াশার প্রশ্নতুর দৃষ্টি আইহান উপর নিক্ষিপ্ত, কেনোনা আইহানের গলায় জ্বল জ্বল করছে Vampire king locket.
এই কিং লকেট থাকার কথা ছিলো কিং এর গলায়, অথচ এই কিং লকেট রয়েছে আইহান এর গলায়, আর তায়াশা এসবের কিছুই বুঝতে পারছে না।
আজ সকালে ইয়ান তায়াশাকে একটা ব্ল্যাক কালার চেইন এ ঝোলানো, একটা ব্ল্যাক কালার লকেট দেয়, আর তায়াশাকে পড়তে বলে।
তায়াশা লকেটটা হাতে নিয়ে ইয়ানকে জিজ্ঞেস করে এটা কিসের লকেট?
–এটা ভ্যাম্পায়ার প্রিন্সেস লকেট, যেটার অভাবে আপনি এতোদিন….
To be continue…