Mysterious Part 12

0
269

Mysterious
Part -12
Romoni

প্রায় বেশ কিছুক্ষণ পরে ইয়ান timer এর বাটনটা আবার প্রেস করে দেয়, সাথে সাথে সব আবার আগের মতো সচল হয়ে যায়।
তবে অস্বাভাবিক ভাবেই তায়াশা আর ইয়ানের অবস্থানরত স্থানটা বদলে একটা বিদঘুটে অন্ধকার জায়াগায় পরিনত হয়, তবে সেই ভয়ঙ্কর অন্ধকারের মাঝে এক আবছায়া আলো এসে পড়ছে ইয়ান আর তায়াশার উপর, ঠিক যেনো স্পট লাইট এর ন্যায়,তবে আলোটা কিছুটা ঝাপসা।
সেই আবছায়া আলোয় তায়াশা দেখতে পায় একজন বেশ লম্বা আকার কেউ দাঁড়িয়ে আছে পেছন দিকে ঘুরে।
লোকটার পেছনে দুটো ঘন কালো তবে উজ্জ্বল রঙা পাখা,আর তার চারপাশে লম্বা একটা কালো চাদর ন্যায় কাপড় উড়ছে, সে স্থানের বাতাস শুধু সেই ব্যাক্তির গায়েই লাগছে,তায়াশার শরীরে নয়।
চুলগুলো মাঝারি আকার অদ্ভুত ভাবে কাটা, হাতে একটা তলোয়ার, আর পিঠে ঝোলানো তলোয়ার রাখার কভার।

সামনে থাকা ব্যাক্তিটির তুলনায় তায়াশাকে নিতান্তই ক্ষুদ্র বস্তুর আকার মনে হচ্ছে।
তায়াশা স্বাভাবিক ভাবেই বেশ ভয় পেয়ে যায় এমন পরিস্থিতি দেখে।
আর চারিদিকে চোখ বুলিয়ে ইয়ানকে খুঁজতে থাকে, তবে আশেপাশের কিছুই দেখা যাচ্ছে না অন্ধকারের কারনে,শুধু দুজন ব্যাক্তিই স্পষ্ট এখানে।
তায়াশা কাঁপা কাঁপা কন্ঠে ইয়ানকে ডাকে, কিন্তু ইয়ানের কোনো সাড়া শব্দ নেই, একপর্যায়ে তায়াশা ভয়ে ফুপিয়ে কাঁদতে শুরু করে, আর কান্না রত অবস্থায়ই ইয়ানকে ডাকতে থাকে।

–ইয়ান স্যার আপনি কোথায়?
প্লিজ আমায় নিয়ে যান এখান থেকে। (তায়াশা)

হঠাৎ তায়াশা ইয়ানকে ডাকা বন্ধ করে সামনে থাকা লোকটির দিকে একটু এগিয়ে গিয়ে বলে,

–কে আপনি?

–“তিশ” সেই তো আমায় ডাকলে, তবে এতো দেরি করে কেনো ডাকলে?
অযথাই এতোক্ষণ ভয় পেলে, ভয় না পেয়ে আমায় একবার ডাকলেই পারতে,বলেই সে সামনে ঘোরে।
ব্যাক্তিটির ঠোটের কোনে ঝুলে আছে এক রাগান্বিত, ভয়ঙ্কর আর রহস্যময় হাসি।

আর এদিকে তায়াশা হতবাক হয়ে তাকিয়ে আছে ব্যাক্তিটির দিকে, তায়াশা যেনো কোনো ঘোরে চলে গেছে।

–তিশ!

হঠাৎই তায়াশা ঘোরের মাঝে সেই ব্যাক্তির কন্ঠ শুনে তার দিকে তাকায়।
তায়াশার মুখ থেকে অস্ফুটে প্রশ্নতুর সুরে বেরিয়ে আসে, ইয়ান স্যার?

–উহুম,ইয়ান স্যার নয়, আইহান।
only your iyhan. From now on,you call me iyhan, not ian sir.(অচেনা ব্যাক্তি)

–মানে?(তায়াশা)

তায়াশার প্রশ্নে আইহান একটু ঝুঁকে যায় তায়াশার দিকে, আইহানকে এতোটা সামনে থেকে দেখে তায়াশা ভয়ে সেন্সলেস হয়ে নিচে পড়ে যেতে নিলে আইহান তায়াশাকে ধরে, এক হাত দিয়ে উপরে উঠিয়ে নেয়।

.
.
.
.

তায়াশা, তায়াশা চোখ খুলুন, তায়াশা কি হয়েছে আপনার?
ইয়ান তায়াশার মুখে পানি ছিটাচ্ছে আর তায়াশাকে ডাকছে।
ইয়ানের ডাকে তায়াশা আস্তে আস্তে চোখ মেলে তাকায়, আর চারিদিকে দেখতে থাকে।
সব কিছু ঠিক ঠাকই আছে,তায়াশা নিজের ঘরে বেডের উপর শুয়ে আছে,আর পাশেই তায়াশার এক হাত ধরে বসে আছে ইয়ান, চোখে মুখে চিন্তার ছাপ স্পষ্ট ইয়ানের।
তায়াশা ইয়ানকে দেখে ভয়ে ইয়ানের হাত থেকে নিজের হাত ছাড়িয়ে ছিটকে দূরে সরে যায়।
ইয়ান জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তায়াশার দিকে।

–তায়াশা কি হয়েছে আপনি এমন কেনো করছেন, হঠাৎই সেন্সলেস হয়ে পড়লেন, আবার এখন অদ্ভুত আচরন করছেন। (ইয়ান)

–You are a lier ian sir.
আপনি একটু আগেই তো অন্য রুপে ছিলেন,আর আমি এখানে কি করে এলাম,আমরা তো অন্ধকার একটা জায়গায় ছিলাম। (তায়াশা)

–তায়াশা এসব কি বলছেন আপনি?
আমরা এখানেই ছিলাম, আর এখানে আসার পরে হঠাৎ আপনি জ্ঞান হারান। (ইয়ান)

–কিন্তু……. (তায়াশা)

(তায়াশা সেন্সলেস হওয়ার পর আইহান সব কিছু আবার আগের মতো করে দেয়, আর তায়াশাকে বেডের উপর শুয়িয়ে দেয়।)

— কোনো কিন্তু নয় তায়াশা, আপনি প্লিজ শান্ত হোন, আপনার সম্ভবত hallucinogen হচ্ছে, হঠ্যাৎ এসব আধ্যাত্মিক ঘটনার সম্মুখীন হওয়ায় হয়তো আপনি সবটা মানিয়ে নিতে পারছেন না। (ইয়ান)

ইয়ান তায়াশার হাত ধরে এনে আবার শুয়িয়ে দেয়, আর তায়াশা ইয়ানের দিকে ভয়ার্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে, ইয়ান চোখের ইশারায় তায়াশাকে নির্ভয় দেয় আর বলে, আপনি একটু রেস্ট নিন আমি কফি নিয়ে আসছি।
তারপর ইয়ান উঠে চলে যায় কফি আনতে।

সম্পূর্ণ ঘরে এক অদ্ভুত অনুভূতি আভাসময় নিরবতা, তায়াশা চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে,তবে তায়াশার চোখের মনি দুটো এক মুহুর্তের জন্যেও স্থির নেই, কোনো এক অদেখা অজানা হওয়া সত্বেও হয়তো বা সবটাই জানা সবটাই দেখা, প্রশ্নের উওর সন্ধানে ব্যাস্ত তায়াশা।

Hey tissh, open your eyes.

হঠ্যাৎ আবার আইহানের কন্ঠ আর আইহান এর তায়াশার নামের ক্ষুদ্র নাম তৈরি করে সম্বোধিত ডাকটা তায়াশার কানে আসতেই, ভয়ে তায়াশার শরীরে এক হীম স্রোত বয়ে যায়।
আর চোখ থেকে পানি পড়তে থাকে।

–তায়াশা চোখ খুলুন আপনি কাঁদছেন কেনো?
ইয়ান কফি নিয়ে এসে তায়াশাকে এভাবে কাঁদতে দেখে কাঁধ ধরে ঝাকিয়ে ডাকছে।
তায়াশা চোখ খুলে সামনে ইয়ানকে দেখে খুব জোড়ে শব্দ করে কাঁদতে থাকে,আর বলতে থাকে –

Ian Sir Please do not do with me, who are you, why do you scare this way.

কান্নার ফলে তায়াশা ঠিক করে কথা বলতে পারছে না, অতিরিক্ত কান্না করায় তায়াশার চোখ দুটো ভয়ংকর ভাবে লাল বর্নের হয়ে গেছে, তবে যেটা খুবই অস্বাভাবিক, সাধারণত বেশি কাঁদলে চোখ লাল বর্ন হয় কিন্তু এতোটাও নয় যতটা তায়াশার হয়েছে।

ইয়ান কফির মগটা সাইডে রেখে, তায়াশাকে উঠিয়ে বসায়, তায়াশার চোখের পানিগুলো মুছিয়ে, কফির মগটা তায়াশার হাতে দেয়।

তায়াশা কফির মগটা খাওয়ার জন্য সামনে এনে কফির দিকে তাকাতেই দেখতে পায় কফিটা সম্পূর্ণ লাল রঙের, তায়াশা ভয়ে কফিটা ছুড়ে নিচে ফেলে দেয়,এতে কফির কিছুটা অংশ ইয়ানের হাতে এসে পড়ে।
সেদিকে তায়াশার কোনো খেয়াল নেই,তায়াশা মুখ অন্য দিকে ঘুরিয়ে চোখ বন্ধ করে জোড়ে জোড়ে শ্বাস নিচ্ছে, আর ইয়ান অবাক দৃষ্টিতে তায়াশার দিকে তাকিয়ে আছে।

–তায়াশা, কফিটা আপনি ফেলে দিলেন কেনো? (ইয়ান)

–ওইটা কফি নয়, রক্ত ছিলো। (তায়াশা)

–কি বলছেন আপনি, আপনি ভালোভাবে দেখুন ওইটা কফি। (ইয়ান)

তায়াশা নিচে পড়া ভাঙা কাচের টুকরো গুলোর মাঝে ছড়িয়ে পড়ে থাকা কফির দিকে তাকিয়ে দেখে, কফির রঙ স্বাভাবিকই আছে।
তায়াশা ইয়ানের দিকে করুন দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে, ইয়ান স্যার ট্রাস্ট মি ওইটা একটু আগে কফি ছিলো না, রক্ত ছিলো।
ইয়ান একটা হতাশাবৃত নিশ্বাস ফেলে বলে,আচ্ছা এসব বাদ দিন, আপনি একটু ঘুমান, আমি এখানেই আছি।
ভয় নেই, কোনো সমস্যা হবে না।
তায়াশা কিছু না বলে, কিছুক্ষণ কফিটার দিকে তাকিয়ে থেকে চুপচাপ শুয়ে পড়ে।

___________________________________
তায়াশা রাত তিনটা বাজে এখনো তুমি না ঘুমিয়ে বই পড়ছো,এমনিতে তো তোমায় সারাদিন বকেও পড়তে বসানো যায় না, আর কয়েক দিন ধরে দেখছি বই ছাড়া কিছুই বোঝো না।
একজন মাঝ বয়সী মহিলা মাঝ রাতে তার মেয়ের ঘরে এসে কথা গুলো বলছেন,মেয়েটির নাম তায়াশা।

–মা, তুমি যাও আমি একটু পরে ঘুমিয়ে পড়বো।

তাহমিনা (তায়াশার মায়ের নাম) এসে তায়াশার কাছ থেকে বইটা নিয়ে বলে, এটা তো গল্পের বই, তুমি রাত জেগে গল্প পড়ছো, কয়েকদিন পড়ে যে তোমার পরিক্ষা সেই খেয়াল আছে?
এভাবে রাত জাগলে তুমি অসুস্থ হয়ে যাবে।
আর তাছাড়াও তায়াশা তুমি তো গল্পের বই কখনোই পড়ো না,তোমার তো ঘোর অনিহা গল্পের বইয়ে, জানিনা কিসের এতো বিরক্তি তোমার গল্পের বইয়ের প্রতি।
কি এমন আছে এই বইয়ে যে কয়েক দিন যাবত শুধু এই বই নিয়ে বসে আছো।

–নাম। (তায়াশা)

–কিসের নাম?(তাহমিনা)

–আমার নাম আছে এই বইয়ে, আর কেনো জানি মা এই নামটাই আমায় বইটার দিকে অদ্ভুত ভাবে টানে। (তায়াশা)

–কি সব বলছো তায়াশা, নাম থাকতেই পারে, এতে অদ্ভুত ভাবে টানার কি আছে?
তাহমিনা বিরক্তি নিয়ে বইটাকে বন্ধ করে টেবিলের উপর রেখে তায়াশাকে হাত ধরে টেনে এনে বিছানায় শুয়িয়ে দেয়, আর লাইট বন্ধ করে বলে চুপচাপ ঘুমাও, আর যেনো রাত জাগতে না দেখি, বলে চলে যান।

এদিকে বইটার উপরে MYSTERIOUS লেখাটা রক্তিম বর্নে এক ঝলক জ্বলে ওঠে।

To be continue…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here