Different Love পার্ট ১৩

0
1629

Story:- #Different_Love
Writer:- গল্পছোঁয়া
Part:- 13

হঠাৎই আরও জোরে ঝড়ও হাওয়া শুরু হলো,গাছের ডাল ভেঙে পড়া অস্বাভাবিক কিছুনা।
আয়মান দ্রুতগতিতে আরিয়ার কাছে গেলো,হাত ধরে হ্যাঁচকা টান দিতেই আরিয়া হুরমুরিয়ে এসে পড়লো আয়মানের বুকে।
তৎক্ষনাৎ একটা চিকন সরু গাছ এসে ধপাস করে পড়লো যেখানে আরিয়া দাঁড়িয়ে ছিল।ভয়ে আরিয়া আরও শক্ত করে আয়মানকে জড়িয়ে ধরলো।ভয়ে জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে সে।
আয়মান কিছু না বলে আরিয়া কে কোলে তুলে নিয়ে সোজা নিজের রুমে এসে নামিয়ে দিলো।
আরিয়া এতক্ষণে বেশ বুঝতে পেরেছে ওর কপালে শনি আছে,আয়মানের চোখ মুখ লাল হয়ে আছে।

— এই মেয়ে,কমন সেন্স নেই তোমার।
এই ঝড়বৃষ্টির রাতে কেউ বাহিরে বৃষ্টিতে ভিজে?? (ধমক দিয়ে)
কিছু বলছিনা বলে মাথায় উঠে নাচছো তাইনা,যেখানে যাবে সেখানেই একটা নাতো একটা ব্লান্ডার করবে।
আচ্ছা তুমি কি বিপদ ছাড়া থাকতে পারোনা,যেখানে যাও বিপদ উড়তে উড়তে চলে আসে।না বিপদ এমনই কেন আসবে,তুমিই বিপদ ক্রিয়েট করো। (রেগে)

আরিয়া মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে,এই রাতের বৃষ্টি। ঠান্ডা পানি,ভিজে থাকায় শরীরে কাঁপুনি শুরু হয়ে গেছে।
আয়মান এতক্ষণে খেয়াল করলো আরিয়া ঠান্ডায় কাপছে,ওর জামাও লেপ্টে আছে শরীরের সাথে।
মনের ভেতর কাম বাসনা জাগলেও নিজেকে কোনোমতে নিয়ন্ত্রণ করে নিলো সে,,

— ওয়াসরুমে গিয়ে গোসল করে নাও,আর ড্রেস চেঞ্জ করো।ঠান্ডা লেগে যাবে,আমি তোমার পোশাক এনে দিয়ে যাচ্ছি। গো ফাস্ট

আয়মান হনহন করে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো,কারণ বেশিক্ষণ নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে এভাবে থাকা পসিবল না।
আরিয়াও আয়মানের ওয়াসরুমে ঢুকে গেলো,এডজাস্ট বাথরুম হলেও শাওয়ার নেই।আরিয়া ট্যাপ অন করে বালতি তে পানি ভরতে দিয়ে রুমে এসে দেখলো বেডের ওপর ওর থ্রিপিস রাখা,আয়মানই রেখে গেছে হয়তো।
আরিয়া থ্রিপিস টা নিয়ে ওয়াসরুমে চলে গেলো।
গোসল শেষে,ড্রেস চেঞ্জ করে রুমে আসলো।বারান্দায় দড়ি টাঙানো আছে, সেখানেই ভেজা কাপড় গুলো মেলে দিলো।
ভীষণ ঠান্ডা লাগছে,জ্বর আসবে মনে হয়,কাঁপুনি দিচ্ছে শরীরে।
এই গ্রীষ্মের গরমে সবাই অতিষ্ঠ,এই বাড়িটায় তো কেউ থাকতোনা।কাঁথা,কম্বল,লেপ কিছুই নেই। ওড়না দিয়ে কোনোমতে নিজেকে কভার করে গুটিশুটি মেরে সুয়ে পড়লো আরিয়া।
কিছুক্ষন পরে আয়মান আসলো..

— আরিয়া,আজ নিমু আর রোজ আসতে পারবেনা।প্রচন্ড বেগে ঝড় উঠেছে,এরমধ্যে বের হওয়া পসিবল না।ওরা রোজের এক রিলেটিভ এর বাড়িতে আছে।

কথাগুলো বলতে বলতে আয়মান রুমে ঢুকলো,বেডের দিকে তাকিয়ে দেখে আরিয়া গুটিশুটি মেরে সুয়ে আছে আর কাঁপছে।
আয়মানের ডাকে সাড়া দিচ্ছে না আরিয়া,আয়মান আরিয়ার নিকটে গিয়ে আরিয়ার হাত ধরতেই বুঝতে পারলো জ্বর এসেছে,হাত অনেক গরম।কপালে হাত দিয়ে দেখলো অনেক গরম।
একজন সিক্রেট অফিসার হওয়ার দরুন আয়মান অনেক ধরনের ট্রেইনিংই নিয়েছে, নিজের সেফটির জন্য।
তারমধ্যে সাময়িক চিকিৎসা একটি।আয়মান ফাস্ট এইড বক্স, মেডিসিন বক্স সবসময় সাথে নিয়েই ঘুরে, বলাতো যায়না কখন প্রয়োজন হয়।
নিজের হুডি টা আরিয়াকে পরিয়ে দিলো,যাতে ঠান্ডা কমে।
দুপুরে নিমু আর আরিয়া মিলে ডাউল আর খিচুড়ি রান্না করেছিলো,এখনও আছে।আয়মান দ্রুত গিয়ে সেটা নিয়াসলো।
আরিয়াকে কোনোমতে বসিয়ে নিজে হাতে খাইয়ে দিলো।তারপর মেডিসিন খাইয়ে দিলো।আরিয়া আর রোজের রুমের বিছানার চাদর তুলে এনে একসাথে করে আরিয়ার গায়ে জড়িয়ে আরিয়াকে সুয়ে দিলো।কিন্তু এতেও আরিয়ার কাঁপুনি কমছেনা,আয়মান বুঝতে পারছেনা এখন ঠিক কি করা উচিত।যতটুকু পসিবল করেছে সে,এই ঝড়বৃষ্টির মধ্যে তো ডাক্তারও আসবেনা,রাত ৯বাজে।গ্রামে এখনই অনেক রাত।
আয়মান তার এক পরিচিত ডাক্তার কে কল করলো..

— আয়মান যে,কি খবর?
হঠাৎ এইসময় কল করছো,এনি প্রবলেম?তুমি ঠিক আছোতো?

— আই এম ওকে,একচুয়ালি ডক্টর (আরিয়ার সিচুয়েশনের কথা খুলে বললো আয়মান)

— সবই তো বুঝলাম,জ্বর কমে যাবে ইনশাআল্লাহ।

— বাট,কাঁপুনি তো কমছেনা।এখানে কোনো ভারি কাঁথা কম্বল কিছুই নেই,দুটো বেডশিট জড়িয়ে দিয়েছি অনেক পাতলা।কাজ হচ্ছে না।

— আচ্ছা,এটা বলো মেয়েটি তোমার কে হয়??

— হুয়াই ডক্টর,হঠাৎ এই কথা??

— মেয়েটি কে উম দিতে হবে,এমন কাঁপতে থাকলে তো প্রবলেম।ওকে গরম দিতে হবে,এখন আমার কাছে একটাই অপশন আছে কিন্তু সেটাতো..

— কি অপশন ডক্টর,প্লিজ বলুন।
আরিয়ার সুস্থতার জন্য আমি সব করতে পারি।

— তুমি তো জানোই,মানুষের শরীরের তাপমাত্রা অনেক বেশি।মেয়েটি যদি অপর এক মানুষের সংস্পর্শে আসে তাহলে ওর গরম লাগবে,উম পাবে।এতে ওর আর ঠান্ডা লাগবেনা।
কিন্তু একজন মেয়েকে এভাবে পরপুরুষ তো আর তার সংস্পর্শে যেতে পারবে না,তুমি বরং অন্য…

— আম..আই এম হার হাজবেন্ড।

— ওও তাহলে তো ভালো, বউকে তাহলে আজকে একটু বেশিই ভালোবাসা দাও।
ট্রিট পাওনা রইলো আয়মান।

আয়মান কল কেটে দিলো, এবার সে গভীর চিন্তায় মগ্ন।আরিয়া সামনে থাকলে এমনিতেই ওর হার্ট দ্রুত বিট করে,মন অন্য কিছু করতে উসকায়।
আর আজ ওই সময় আয়মানতো প্রায় কন্ট্রোললেস হয়ে পরেছিলো,কোনমতে রুম ত্যাগ করেছে।
আর এখন আরিয়াকে জড়িয়ে ধরলে সে নিজেকে সামলাবে কি করে,জীবনে ১ম কোনো মেয়ের সংস্পর্শে যাবে সে।এর আগেও একদিন আরিয়ার জিদের কাছে হার মেনে ওকে নিজের বাহুডোরে নিয়েছিল ঠিকই,কতটা কষ্টে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করেছে সেটা শুধু আয়মানই জানে।
আজকে কি করে কি করবে,নাহ্ এটা করা পসিবল না তার পক্ষে। কিন্তু আরিয়া?ওরতো অবস্থা খারাপ হতে শুরু করেছে, কাঁপুনি আরও বেড়ে গেছে।
উপায় না পেয়ে আয়মান টিশার্ট খুলে আরিয়ার পাশে সুয়ে আরিয়াকে বুকে জড়িয়ে নিলো,এতে যদি কাঁপুনি কমে।
কিছুক্ষণ পরে আরিয়ার কাঁপুনি কিছুটা কমলেও ঝড় বইছে আয়মানের বুকে।
সে পারছেনা নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে,এদিকে আরিয়াও খামছে ধরে আছে আয়মানের পিঠ,এতে আরও নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলছে আয়মান।তারওপর আরিয়ার কাঁপা কাঁপা ঠোঁট,আয়মান পারছেনা আর।

— আরিয়া,আজ যদি আমি ভুল কিছু করতে চাই তুমি কি আটকাবে?? (নেশাক্ত কণ্ঠে)

প্রতিত্তোরে আরিয়া কিছু না বলে আয়মান কে আরও শক্ত করে ধরলো,আর চোখের ইশারায় সম্মতি সূচক ইশারা দিলো।
আয়মান আর একমুহূর্ত দেরি না করে আরিয়ার কাঁপা ঠোঁটে নিজের ঠোঁট ডুবিয়ে দিলো।
আরিয়া শক্ত করে খামছে ধরলো আয়মানের চুলগুলো, আয়মান আরিয়ার ঠোঁট নিয়ে ব্যস্ত।বেশকিছুক্ষন পর ঠোঁট ছেড়ে আরিয়ার গলায় নেমে আসলো আয়মান,পাগলের মতো কিস করছে।
কিছুক্ষণ পর আরিয়ার গলার নিচে থেকে ওর জামা নামাতে গেলে আরিয়া খামছে ধরলো আয়মানের পিঠ।
হুস আসলো আয়মানের,কতবড় ভুল করতে যাচ্ছিলো সে।

— আই এম সরি আরিয়া,আসলে কন্ট্রোল লেস হয়ে পড়েছিলাম।

আয়মান দ্রুত আরিয়াকে ছেরে উঠে আসতে নিলেই আরিয়া আয়মান কে শক্ত করে ধরলো,ভারি নিঃশ্বাস ফেলতে ফেলতে বললো…

— প্লিজ আয়মান,আই নিড ইউ।
আমি আপনার ওয়াইফ,অধিকার আছে আপনার।প্লিজ আমাকে নিজের স্ত্রীর অধিকার দিন,আমি আপনাকে আপন করে পেতে চাই।আপনার প্রফেশন নিয়ে আমার কোনো প্রবলেম নেই,প্লিজ আমাকে দূরে সরিয়ে রাখবেননা (আরও শক্ত করে জড়িয়ে)

আয়মানও ভাবলো,কি-ই বা হবে।সত্যিই তো,তারাতো কোনো ভুল করছেনা।শরিয়ত আর আইন মোতাবেক তারা স্বামীস্ত্রী,কোনো পাপ নেই ভুল নেই এতে।
আজ দেবে সে আরিয়াকে নিজের স্ত্রীর অধিকার,সেও তো আরিয়াকে ভালোবাসে।আজ আপন করে নিবে সে তার ভালোবাসার মানুষকে,তার সহধর্মিণী, তার অর্ধাঙ্গিনী কে।

সব চিন্তা সাইডে রেখে দিলো আয়মান,কোনো বাঁধা নেই। আয়মান আবার আরিয়ার ঠোঁটজোড়া নিজের ঠোঁটের আয়ত্তে নিয়ে নিলো,একটু একটু করে আপন করে নিতে লাগলো আরিয়াকে।ভালোবাসার সাগরে ডুব দিলো দুজনে।


রাত ১টা,,,
আয়মানের বাহুডোরে আয়মানের বুকে মাথা দিয়ে সুয়ে আছে আরিয়া,আয়মান ফোন স্ক্রোল করছে।একই চাদরের তলায় দুজনেই বিবস্ত্র অবস্থায়।
আয়মান বেডের পাশের ড্রয়ার থেকে হাত বাড়িয়ে ব্লুটুথ টা নিয়ে কানে লাগালো।
কিছুক্ষণ কারোর সাথে কেস নিয়ে কথা বললো,তারপর ফোন রেখে দিলো।
আরিয়ার দিকে তাকিয়ে দেখে আরিয়া ওর দিকেই তাকিয়ে আছে।
আয়মান ভ্রুকুচকে তাকালো,আরিয়া শক্ত করে আয়মানকে জড়িয়ে আয়মানের বুকে মাথা রাখলো..

— এখন থেকে আমাকে আপনার সাথে থাকতে দিবেন তো…..

To be continue….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here