অনন্যময়ী
সানজিতা_তুল_জান্নাত
পর্ব_২৩
হিমাদ্রী কিছুটা অবাক হয়ে যায়। হিমাদ্রী কিছু বলার আগেই গুনগুন তার কোমল হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে সামনের মানুষটাকে হাসিমুখে জড়িয়ে ধরে। গুনগুনকে কোলে তুলে নিয়ে আদরে আদরে ভরিয়ে দেয়।
–আরে নিধি তুমি এখানে?? তোমার তো রাজশাহী তে থাকার কথা এখন কবে আসছো??( হিমাদ্রী)
–জি ভাইয়া। আজকেই আসছি এক্সাম শেষ হলো কয়েকদিন ছুটি আসে তাই চলে আসলাম। আম্মুকে সারপ্রাইজ দিবো বলে জানায় নি। আপুকেও বলা হয় নি। (নিধি)
–ওহ আচ্ছা। তো এখন তো বাসায় যাবে নাকি??(হিমাদ্রী)
–হ্যা। আম্মুর জন্য কিছু কিনতে এসেছিলাম। তাড়াহুড়া করে এসেছি কিছু কেনার সুযোগ হয়ে ওঠেনি। বাই দ্যা ওয়ে আপনি কবে আসলেন??(নিধি)
–পরশু রাতে এসেছি। আজ একটু বেরিয়েছিলাম গুনগুনকে নিয়ে ঘুরতে । তো চলো গুনগুনের জন্য শপিং করতে এসেছি। তুমি চাইলে যেতে পারো। (হিমাদ্রী)
নিধি রাজি হয়ে যায়। গুনগুনও নিধিকে পেয়ে বেশ খুশি হয়। নিধির কোলে খিল খিল করে হেসে দেয়।তার খুশিতে হিমাদ্রী, নিধি দুজনেই বেশ খুশি হয়।
হিমাদ্রী গুনগুন আর নিধিকে নিয়ে শপিংমলের ভেতরে যায়। একটা কিডস ক্লোথ শপে ঢুকে গুনগুনের জন্য জামাকাপড় কেনে। ফুড কোর্ট য়
থেকে তার পছন্দের চকলেট সহ আরো অন্যান্য খাবার কিনে দেয়। কিডস টয় জোনে গিয়ে গুনগুনের সব পছন্দের খেলনা কিনে দেয়। কিছু ক্ষণ খেলা ধুলাও করে অন্য বাচ্চাদের সাথে কিডস প্লে জোনে।
সন্ধ্যার একটু আগে আগে তারা শপিং মল থেকে বেরিয়ে পাশের একটা রেস্টুরেন্টে ঢোকে। গুনগুনকে হিমাদ্রী খুব যত্ন করে নিজ হাতে খাইয়ে দেয়। বার বার টিস্যু দিয়ে গুনগুনের মুখে লেগে থাকা খাবার গুলো মুছে দিচ্ছে। নিধিকে নিজের জন্য কিছু অর্ডার দিতে বললে সে কিছুই খেতে চায় না। তাই হিমাদ্রী তাদের দুজনের জন্য দুকাপ কফি অর্ডার করে। কফি খেয়ে তারা বেরিয়ে যায়।
নিধি একা বাড়ি ফিরতে চাইলে হিমাদ্রী তার কথা না শুনে তাকে বাড়ি পৌঁছে দিয়ে আসে। বাড়ির সামনে নেমে নিধি হিমাদ্রিকে জোরাজুরি করে ভেতরে যেতে। গুনগুনকেও নিয়ে যেতে চায়। দেরি হয়ে যাবে বলে সে আর ভেতরে যায় না।
হিমাদ্রী গুনগুনকে নিয়ে বাড়ির দিকে যায়। বাড়ির কিছুটা দূরে এগিয়ে একটা নতুন আইসক্রিম পার্লার হয়েছে। আগে কখনো সে এটা দেখেনি। গুনগুন জানালা দিয়ে তা দেখে সাথে সাথে হিমাদ্রীকে বলে গাড়ি থামাতে।
হিমাদ্রী গাড়ি থামিয়ে গুনগুনকে বলে; কি হয়েছে গুনগুন সোনা?? তোমার কি শরীর খারাপ করছে??
গুনগুন হাত দিয়ে ইশারা করে গাড়ির জানালার বাইরে আইসক্রিম এর দিকে ইশারা করে। হিমাদ্রী সেদিকে তাকিয়ে মুচকি হাসে। এই আইসক্রিম পার্লার টা এখানে সে আগে দেখে নি। তার মানে কিছুদিন হলো এখানে হয়েছে। দোকানের উপরে উদ্বোধনীর ব্যানারটা এখনো টাঙানো আছে। হিমাদ্রী গাড়ি থেকে নেমে গুনগুনের পাশের দরজা খুলে তাকে কোলে তুলে নেয়।
দোকানের দরজা খুলে ভিতরে ঢোকে হিমাদ্রী। মাস্ক পরিহিত একজন অল্প বয়সী মেয়ে তাদের স্বাগতম জানায়। হিমাদ্রী প্রতি উত্তরে মুচকি হাসে। হিমাদ্রী গুনগুনকে নিয়ে একটা চেয়ারে বসিয়ে নিয়ে আরেকটিতে বসে। মেয়েটি দোকানের দুজন ওয়েটারকে বলে অর্ডার নিতে। তাকে দেখে মনে হচ্ছে সে দোকানের মালিক। একজন ওয়েটার এসে তাদের অর্ডার নেয়। দোকানে আরো কিছু লোকজন ছিল তবে রাতের সময় বলে ভিড় একটু কম। পরিবেশটাও বেশ শান্ত খোলামেলা।
হিমাদ্রী গুনগুনের জন্য ভ্যানিলা আর চকলেট ফ্লেভারের আইসক্রিম অর্ডার করে। কিছুক্ষণ পর একজন ওয়েটার এসে সার্ভ করে।
গুনগুন খুশিতে লাফিয়ে ওঠে। হিমাদ্রী গুনগুনকে আস্তে আস্তে আইসক্রিম খাইয়ে দেয়। এর মধ্যেই তার নজর পড়ে মাস্ক পড়া মেয়েটির উপর। সে চিন্তিত ভাবে কারো সাথে ফোনে কথা বলছে তবে খুব ভালো ভাবে বোঝা যাচ্ছে না। আবছা আবছা তার কানে ভেসে আসে; কোথায় তুমি?? এতো দেরি হচ্ছে কেন? তুই এই শহরে কিচ্ছু চেনো না।প্লিজ তাড়াতাড়ি চলে এসো।
হিমাদ্রী সেদিকে আর কান দেয় না। গুনগুনকে আইসক্রিম খাইয়ে দিয়ে টিস্যু দিয়ে তার মুখ মুছে দেয়। বিনিময়ে গুনগুন হিমাদ্রীকে এক ভুবন ভোলানো হাসি উপহার দেয়। বিল মিটিয়ে দিয়ে সে গুনগুনকে নিয়ে বাড়ির দিকে রওনা দেয়।
রাত দশটার কাছাকাছি। অনি ওয়াশরুমের দরজা খুলে বেরিয়ে আসে। শব্দ পেয়ে রিশাদ সেদিকে তাকায়। অনিকে দেখে সে এক দফা অবাক হয়। অনির পরনে হাঁটুর নিচ অবধি লম্বা আকাশি রঙ এর গোল জামা। ফুল হাত জামায় হালকা সুতোর কাজ করা। সম্পূর্ণ মাথা বুক একটা আকাশি কালারের ওড়না দিয়ে মোড়ানো। নাকের নাকফুলটা বাল্বের আলোয় চকচক করছে। এক মূহুর্তের জন্য অনির প্রতি রিশাদের ঘোর লেগে যায়।
এই কয়দিন রিশাদ অনিকে শাড়িতে দেখেই অভ্যস্ত ছিল। শাড়িতে অনির মাঝে একটা বউ বউ ভাব চলে আসে। নারীত্ব ফুটে ওঠে তার মাঝে আজ মনে হচ্ছে যেন রিশাদ তার সামনে কিশোরী অনিকে দেখছে। অনির বয়স যেন এক নিমিষেই দু তিন বছর কমে গেছে। তার চোখে মুখে কিশোরী ভাব খুব উগ্র ভাবে ফুটে উঠেছে। রিশাদের চোখের পলক যেন অনির উপরেরি আটকে গেছে। অনি বিষটা বুঝতে পেরে নিজেকে ভালোভাবে ঢেকে নেয়। রিশাদের যেন কোন হেলদোল নেই। এই মূহুর্তে তার কাছে মনে হচ্ছে সে যদি অনির উপর থেকে তার নজর সরিয়ে ফেলে জীবনের একটি সুন্দর মূহুর্ত উপভোগ করা হতে সে বঞ্চিত থাকবে। ক্রমশ সে নিজের উপর থেকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলছে।
আজ অনেক ফিন পর নিজের আগের জামা পড়ে অনি বেশ কমফোর্টেবল ফিল করছে। শাড়ি পড়ে সে ভালো ভাবে হাটাচলা করতে পারে না। মাঝে মাঝে দম বন্ধ হওয়ার মতো অবস্থা হয় তার। বাধ্য হয়েই অনিকে শাড়ি পরতে হতো। আজ থেকে অনির শাড়ি পরার ছুটি। জাহানারা বেগম অনির জামাকাপড় সহ তার প্রয়োজনীয় সকল জিনিস একটা লাগেজে ভরে দিয়ে গেছেন।
অনি রিশাদের সামনে গিয়ে শব্দ করে এক পাশের ভ্রু বাঁকিয়ে তার দিকে তাকায়। রিশাদ খুব বাজে ভাবে অপ্রস্তুত বোধ করে। এই মূহুর্তে তার মন চাচ্ছে নিজের গালে থাপ্পড় দিতে । রিশাদ লজ্জায় মাথা নত করে ফেলে।
অনি রিশাদকে কিছু না বলে বিছানা পরিষ্কার করে। একটু পর রিশাদকে বলে; ঘুমাবেন না?? লাইট অফ করে দিব??
রিশাদ আমতা আমতা করে বলে; হ্যা ঘুমাবো তো। আপনি লাইট অফ করে দিন।
অনি রিশাদকে বিছানায় সোজা করে শুইয়ে দেয়। অনির দিকে তাকাতেই তার মধ্যে একটা অপরাধবোধ কাজ করছে। সাময়িক ভাবে সে অনির প্রতি আকৃষ্ট হয়ে গেছে ঠিকি তার মানে এই না যে অদ্রিকে ভালোবাসে না। অদ্রির জায়গাটা তার জীবনে অন্য কারো জন্য বরাদ্দ নেই। রিশাদের মধ্যে প্রচণ্ড ভাবে শুন্যতা কাজ করছে। তার মস্তিষ্ক তাকে কোন উপসংহারে পৌঁছাতে দিচ্ছে না।
অনি লাইট অফ করে দিয়ে রিশাদের পাশে শুইয়ে পরে। যথাসম্ভব দূরত্ব রেখে অনি একেবারে ধারের দিকে শুইয়ে পড়ে। অজানা কারণে আজ তার বেশ অস্বস্তি হচ্ছে। রিশাদের এভাবে এক নাগাড়ে তাকিয়ে থাকায় অনির অস্বস্তি আরো বেড়ে চলেছে। সে যথাসম্ভব রিশাদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখার চেষ্টা করে যাছে। রিশাদের পাশাপাশি সাবিনা বেগমের কথাগুলোও অনির মস্তিষ্কে ঘুরপাক খাচ্ছে।
অনন্যময়ী কোন চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারছে না। তবে এটাও ঠিক যে খুব তাড়াতাড়ি এখান থেকে চলে যাবে। তার নিজের শহরে ফিরে যাবে। চাকচিক্যময় আধুনিক শহরটাই অনির কাছে আপন মনে হয়। সে দেশে অচেনা মানুষদের ভিড়ে তার কোন অনুভূতিই কাজ করে না। তবে এই দেশে আসার পর এখানকার মানুষগুলোকে অনি প্রতিনিয়ত যত দেখছে নিজের মাঝে তত নতুন নতুন অনুভূতির আবিষ্কার করছে। এই শহরে হাতে গোনা কয়েকজন মানুষ ছাড়া আর কেউই নেই তার তবুও যেন সে মনের গহীনে চাপা কষ্ট অনুভব করে। এই সূক্ষ্ম কষ্টের অনুভূতি গুলো থেকে অনির কোন নিস্তার নেই যতদিন না সে এই শহর ছেড়ে চলে যাচ্ছে। এখানে থেকে চলে গেলেও কি সে পারবে পুরোপুরিভাবে পিছুটান কাটিয়ে উঠতে?? এই শহরটা তার নিজের বলে সে কখনোই চেনে না। তবে অপ্রত্যাশিত নতুন সম্পর্ক গুলো কে যদি এক মূহুর্তের জন্যও মূল্যায়ন করে তবেই এটাই হয়ত তার আসল ঠিকানা। এধরনের উদ্ভট চিন্তাগুলো অনির মস্তিষ্ক জুড়ে বিচরণ করছে। তার দুচোখ জুড়ে ঘুমের লেশ মাত্র নেই। খুব বিরক্ত লাগছে নিজের উপর।
সারা ঘরময় খেলনা জামাকাপড় গুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে রেখেছে গুনগুন। তার আনন্দ, হাসির ঝলকানি তার খুশি যেন আজ আর বাধ মানছে না। বিগত এক ঘন্টা যাবত সে নিরাকে সব গুলো জিনিস দেখাচ্ছে। নিরাও মেয়ের মন রাখার জন্য খুব আগ্রহের সাথে সেগুলো দেখছে। মাঝে মাঝেই গুনগুন খিল খিল করে হেসে উঠছে। গুনগুনের এই হাসিটাই নিরার কাছে এক পৃথিবী সমান ভালোবাসা।
হিমাদ্রীকে কাছে পেলে মেয়েটা দুনিয়াদারি সব ভুলে সারাক্ষণ চাচ্চুর নাম জপতে থাকে। হিমাদ্রীও হয়েছে ঠিক তেমনি গুনগুন তার অর্ধেক পৃথিবী। গুনগুনকে যেমন নিজের সন্তানের মতো স্নেহ করে নিরাকেও ঠিক তেমনি নিজের বোনের মতো ভালোবাসে। কলেজ লাইফ থেকে সে হিমাদ্রীকে ভাইয়া বলে ডাকে। তখন থেকেই হিমাদ্রী তাকে নিজের বোনের মতো স্নেহ করে আসছে। আজ তার ভাইয়ের অনুপস্থিতিতে সে যেন তাদের রক্ষাকবচ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
নিরা প্রতিনিয়ত চিন্তায় থাকে গুনগুনের ভবিষ্যৎ নিয়ে। তবে হিমাদ্রী নিজের সর্বাত্মক চেষ্টা করে গুনগুন যেন কখনো তার জীবনে বাবার অনুপস্থিতি অনুভব করতে না পারে। এই পরিবারের প্রত্যেকটি সদস্য নিরাকে খুব ভালোবাসে। এ বাড়িতে আসার পর থেকে নিরা পরিবারকে নতুন সজ্ঞায় উপলব্ধি করতে পারে। প্রতিনিয়ত সে সৃষ্টিকর্তার কাছে শুকরিয়া আদায় করে এই পরিবারের একজন হতে পারে।
দেয়ালে বড় করে টাঙানো ছবিটার দিকে নজর পড়ে নিরার। ছবিতে বধূ সাজে অন্যমনস্কভাবে বসে আছে সদ্য ১৮ তে পা দেয়া তরুণী নিরা। তার পাশেই কাব্য চৌধুরী হাসি মুখে তাকিয়ে আছে নিরার দিকে।নিরার চোখ ভিজে ওঠে তার চোখে মুখে যেন বিশ্বজয়ের হাসি। সেদিনের কথাগুলো নিরার স্মৃতিপটে ভেসে ওঠে। এই তো সেদিন বছর সাতেক আগের ঘটনা।
বিশাল একটি বাড়ির সামনে এসে গাড়ি থেমে যায়। কাপাঁকাপাঁ পায়ে গাড়ি থেকে বেরিয়ে আসে। পুরো বাড়ি আলোয় আলোকিত হয়ে আছে। এক মূহুর্তের জন্য নিরার চোখ জোড়া কুঁচকে যায়। চোখ ধাঁধানো আলোক সজ্জা।সামনের দিকে পা বাড়ানোর সাথে সাথে নিরার ভয় হাজার গুন বেড়ে যায়। নিরার কাঁপুনি উপলব্ধি করে পেরে কাব্য নিরার কোমল হাতটা নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে নেয়। নিরা ঘাড় ঘুরিয়ে কাব্যর দিকে তাকায়। ভুবন ভোলানো হাসি দেয় কাব্য। নিরা আরো একবার তার হাসিতে হারিয়ে যায়। এই হাসিই প্রথম তার মন কাড়ে।
কাব্যর হাত ধরে সে তার নতুন ঠিকানার দিকে এগিয়ে যায়। বাড়ির বিশাল গেটের সামনে সবাই ভিড় জমিয়ে ফেলেছে নতুন বউকে দেখার জন্য। প্রথম দেখায় নিরাকে সবার ভালো লাগতে বাধ্য। তবুও কিছু মানুষ আছে যাদের স্বভাব অন্যের দোষত্রুটি গুলো খুঁজে খুঁজে বের করা। এখানেও সেরকম কিছু মানুষ রয়েছে। তবে নিজেদের মধ্যে বলাবলি করলেও কাব্য চৌধুরীর ভয়ে কেউ টু শব্দ করে না।সবাই হাসি মুখে শামিল হয়।
রেহানা বেগম নিজ হাতে তার ছেলের বউকে বরণ করে নেয়। নিরা এতো লোক সমাগম দেখে ভয়ে কিছুটা জড়সড় হয়ে যায়। রেহানা বেগম তাত অবস্থা বুঝতে পেরে তাকে বুকে জড়িয়ে ধরে কপালে চুমি এঁকে দেন। একজোড়া মোটা বালা নিরার হাতে পড়িয়ে দেন। নিরাকে তিনি আশ্বাস দেন এই বাড়িটাই এখন তার নিজের বাড়ি নিজের সংসার। এই মানুষগুলোই এখন তার সুখ দুঃখের সাথী। নিরা মাথা নাড়িয়ে রেহানা বেগমের কথায় নীরব সম্মতি জানিয়ে জোর করে হাসির রেখা ফুটিয়ে তোলে। রেহানা বেগম তাকে নিয়ে ভেতরে যায়।
সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে নিরাকে নিয়ে যাওয়া হয় কাব্য চৌধুরীর ঘরে। নিরা এক নজরে পুরো ঘরে চোখ বুলিয়ে নেয়। পুরো ঘরটা লাইটিং এর পাশাপাশি ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। ঘরে দামী দামী আসবাব পত্র। মাঝ বরাবর খাটোটা পুরোপুরিভাবে ফুল দিয়ে সাজানো। তবে আশ্চর্যজনকভাবে এখানে সব গুলো ফুলই সাদা। সাদা অর্কিড নিরার নজর কাড়ে। ফুলের গন্ধ খুব তীব্রভাবে তার নাকে ভেসে আসছে। প্রথম প্রথম গন্ধটা ভালো লাগলেও এখন কিছুটা অস্বস্তি লাগছে তবুও সবকিছুই তার কাছে খুবই আকর্ষণীয় লাগছে। কয়েকজন মেয়ে এসে তাকে খাটে বসিয়ে দিয়ে চলে যায়।
নিরা লম্বা ঘোমটা টেনে খাটের মাঝ বরাবর বসে আছে। এই মূহুর্তে তার নিজেকে জোকার জোকার লাগছে কিছুটা। তবুও সে নির্বিকার ভঙ্গিতে বসে আসে। কিছুক্ষণ এভাবে বসে থাকার ফলে তার খুব বিরক্ত লাগছে। দরজায় খট খট আওয়াজ শুনে নিরা হকচকিয়ে যায়। তার নড়ন চড়ন সব বন্ধ হয়ে গেছে। যেন কেউ তাকে ফ্রিজড করে দিয়েছে। খুব বিশ্রী এক গুচ্ছ অস্বস্তিময় অনুভূতি তার ভেতরে জটলা পেকে আছে। কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে সে অনুভব করতে পারছে তার কপাল বেয়ে ঘাম গড়িয়ে পড়ছে।
চলবে……..
আসসালামু আলাইকুম??