তুমি_আছো_হৃদয়ে_তাই পর্ব_১০

0
2409

#তুমি_আছো_হৃদয়ে_তাই
#শোভা_আক্তার(লাভলী)
#পর্ব_১০

হঠাৎ মাশরাত তার কারো স্পর্শ পেলো। আধুনিক্তা মাশরাতের পেছনে থাকা মানুষটাকে দেখে চোখ কপালে তুলে ফেলল। মাশরাত ধীরে ধীরে ঘাড় ঘুরিয়ে চোখ বড়ো বড়ো করে ফেলল।
“তুমি এখানে কী করছো?”
আধুনিক্তা নখ খাচ্ছে বাবার কথা শুনে। মাশরাত থতমত খেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কী বলবে আধুনিক্তার বাবাকে?
“কিছু জিজ্ঞেস করছি আমি।”
“স্য..স্যার আসলে..”
“কী?”
আধুনিক্তা বলে উঠলো-
“আব্বু আমি ভুলে আমার বই রেখে এসে পড়েছিলাম। মাশরাত স্যার সেটাই দিতে আসলো।”
“জ্বী স্যার আধুনিক্তা ঠিক বলছে। এই দেখুন ওর বই আমার হাতে।”
মাশরাতের হাত থেকে বাবা বইটা নিয়ে চোখ বুলিয়ে বলল-
“দিজ বুক ইজ এবাউট লাভ।”
আধুনিক্তা চোখ বড়ো বড়ো করে ফেলল। তার বুক ধুকপুক ধুকপুক করছে। আমতা আমতা করে বলল-
“আ..আব্বু আসলে..”
“এই বই তুমি ভার্সিটি কেন নিয়ে গিয়েছিলে?”
“টাইমপাসের জন্য”
বাবা আর কিছু বললেন না। বই আধুনিক্তার দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল-
“ভেতরে যাও এখন।”
“তুমি আসো”
“আসবো, তুমি যাও আমি তোমার আর আরমানের জন্য আইসক্রিম নিয়ে আসি।”
আধুনিক্তা মাথা নাড়ালো। বাবার হাত থেকে বই নিয়ে এক নজর মাশরাতকে দেখে জুতা খুলে ভেতরে চলে গেল। ভয় করছে তার ভীষণ। বাবা মাশরাতের জুতা দেখে নাক মুখ কুঁচকে বলল-
“তোমার কী জুতা কেনার সামর্থ্য নেই? কী পড়ে আছো এটা?”
মাশরাত মাথা নিচু করে চুপচাপ জুতা পড়ে নিল। এসব কথা তাকে কষ্ট দেয় না কখনো। কারণ তাবাসসুমের বাবার মুখে এর থেকেও বেশী শুনেছে। মাশরাত মাথা নিচু রেখেই বলল-
“আসি স্যার”
“উঁহু, আসি না। বলো যাচ্ছি সারাজীবনের জন্য।”
মাশরাত লম্বা নিশ্বাস ফেলে হাঁটা ধরল। কিছু কিছু ধনী মানুষরা নিজেদের কী ভাবে মাশরাত জানে না। কিন্তু তারা দরিদ্রদের নিশ্চয়ই কীটপতঙ্গ ভাবে। তাই ঘৃণা করে কাছে আসতে দেয় না।

আধুনিক্তা তার ঘরে পায়চারি করছে। টেনশনে তার বুক ব্যাথা উঠে যাচ্ছে। খাটে ধপ করে বসে নিজের চুল টেনে ধরল৷ বাবা যদি মাশরাতকে ঘৃণা করা শুরু করে? আধুনিক্তা কিভাবে বাবাকে মানাবে? হঠাৎ দরজা ঠকঠক করার শব্দ আসলো। আধুনিক্তা সোজা হয়ে বসে বলল ভেতরে আসতে দরজা খোলা। দরজা ঠেলে বাবা ভেতরে ঢুকলো। আধুনিক্তা নড়েচড়ে বসলো বাবাকে দেখে। বাবা এসে আধুনিক্তার দিকে আইসক্রিম এগিয়ে দিলো। আধুনিক্তা বাবার হাত থেকে আইসক্রিম নিয়ে পাশে রাখলো।
“একটা কথা জিজ্ঞেস করবো?”
আধুনিক্তার বাবার দিকে তাকিয়ে মাথা নাড়ালো।
“তুমি কী মাশরাতকে পছন্দ করা শুরু করেছ?”
আধুনিক্তা দাঁড়িয়ে গেল। এই প্রশ্নের সম্মুখীন এত তারাতাড়ি করতে হবে তার সে কখনো ভাবে নি।
“কিছু জিজ্ঞেস করছি।”
আধুনিক্তা হঠাৎ হেসে উঠলো। জোরপূর্বক হাসি যেটাকে বলে আর কী। পরিস্থিতি তো সামলাতে হবে। কারণ বাবা যদি দাদাইকে বলে দাদাই মাশরাতকে বের করে দিবে ট্রেইনার জব থেকে।
“হাসছো কেন?”
“তো আর কী করবো আব্বু? তুমি ভাবলে কী করে আমি মাশরাত স্যারকে পছন্দ করবো? আমি উনাকে নিজের সিনিয়র ভাবি। আমি উনাকে সম্মান করি খুব। হ্যাঁ পছন্দের কথা আসে তাহলে একজন ভালো মানুষ হিসেবে পছন্দ করি উনাকে। উনি অনেক ভালো।”
“সত্যি বলছো তো?”
“হ্য..হ্যাঁ আব্বু সত্যি বলছি। আমাদের ব্যাকগ্রাউন্ড কী মিলে? কাম’অন আব্বু ভুল ভাবছো তুমি।”
“ঠিক একদম ঠিক আমাদের ব্যাকগ্রাউন্ড মিলে না। আমার মেয়ে কেন ওকে পছন্দ করবে। আমার প্রিন্সেসের জন্য আমি প্রিন্স খুঁজে বের করবো।”
আধুনিক্তা হাসলো। বাবা আধুনিক্তার কপালে চুমু দিয়ে চলে গেল। বাবা যেতেই আধুনিক্তা আইসক্রিম হাতে নিয়ে মুখে হাসি ফুটিয়ে বলল-
“আমি জানি আব্বু আমার ভাগ্যে একজন প্রিন্স আছে। আর সে প্রিন্সের নাম মাশরাত তোফাজ্জল হোসেন।”

মাশরাত বাসায় পৌঁছাল। এসেই তার চোখ কপালে উঠে গেল। মা আর মালিহা মিলে ঘর গুছাচ্ছে। দেখে মনে হচ্ছে মেহমান আসবে। মাশরাত বলল-
“কী ব্যাপার তোমরা কী করছো?”
মালিহা বলল-
“দেখছিস না কাজ করছি। তোর খাটে জামা রেখেছি ৪ টার মধ্যে তৈরী হয়ে নিবি। যা তারাতাড়ি গোসল করে নে।”
“আমি কেন তৈরী হবো?”
“কারণ আজ পাত্রীপক্ষ থেকে মানুষ আসবে তোকে দেখতে।”
“কীইইইই?”
মা ধমকের স্বরে বলল-
“চিৎকার করবি না। মালিহা যা বলেছে তা কর। যা তৈরী হয়ে নে।”
“আম্মু আমাকে একবার জিজ্ঞেস করলে না কেন?”
“তুই যে লিস্ট দিয়েছিলি সে রকম মেয়ে পাওয়া অসম্ভব। তাই আমার পছন্দের মেয়েকেই তোর বিয়ে করতে হবে।”
“আম্মু আমার ছোটো বোনের বিয়ে না হওয়া পর্যন্ত আমি কিভাবে বিয়ে করি?”
মালিহা বলে উঠলো-
“তুই আবার আমার চিন্তা করছিস? বলছি যে ভাই আগে নিজের জীবন সাজিয়ে নে। তারপর না হয় তুই আম্মু আর ভাবী মিলে আমার জীবনের কথা ভাবিস।”
মাশরাত বিরক্ত হয়ে হনহন করে চলে গেল ঘরে। রাগে তার গা জ্বলছে। খাটে বসে ঘনঘন নিশ্বাস ফেলছে। দাঁড়িয়ে গেল আবার। কী করবে ভেবে পাচ্ছে না। আপাতত গোসল করে মাথা ঠান্ডা করা উচিত। জামা নিয়ে তারাতাড়ি গোসল করতে চলে গেল। কিছুক্ষণ পর মালিহা এসে দেখে মাশরাত নেই। চলে যেতে নিল তখনই মাশরাতের মোবাইল বেজে উঠল। হেটে গিয়ে খাটের উপর থেকে মোবাইল নিয়ে দেখে স্ক্রিনে “Adhunikta” নাম ভাসছে। মালিহা রিসিভ করে কানে ধরলো-
“হ্যালো আসসালামুআলাইকুম”
আধুনিক্তা থতমত খেয়ে গেল মেয়েলী কন্ঠ শুনে। মোবাইল কান থেকে নামিয়ে স্ক্রিনে তাকিয়ে কনফার্ম হলো মাশরাতের নাম্বারেই সে কল দিয়েছে। ওপাশ থেকে আবার মেয়েলী কন্ঠ ভেসে আসলো।
“হ্যালো কথা বলছেন না কেন?”
আধুনিক্তা আমতা আমতা করে বলল-
“মাশরাত আছে?”
“ভাইয়া তো গোসলে করতে গিয়েছে। আপনি কে? আর আমার ভাইকে খুঁজছেন কেন?”
আধুনিক্তা নিশ্চিন্তের নিশ্বাস ফেলল। সে ভয় পেয়ে গিয়েছিল ভীষণ। মেয়েটা মাশরাতের বোন হয় ভাবতেই মন ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে। মালিহা বিরক্ত নিয়ে বলল-
“আপনি কথা বলছেন না কেন? আমার ভাইকে কেন খুঁজছেন?”
“এইভাবে, এনি ওয়েজ এখন রাখি আল্লাহ হাফেজ।”
বলেই আধুনিক্তা কল কেটে দিলো। মালিহা অবাক না হয়ে পারলো না। তখনই মাশরাত বেরিয়ে আসলো মাথা মুছতে মুছতে। মালিহার হাতে নিজের মোবাইল দেখে বলল-
“মোবাইল চেক করে লাভ নেই আমার কোনো গার্লফ্রেন্ড নেই।”
“তো আধুনিক্তা কে?”
মাশরাত থতমত খেয়ে গেল। দ্রুত হেটে এসে মালিহার সামনে দাঁড়িয়ে বলল-
“তুই আধুনিক্তার ব্যাপারে কী করে জানলি?”
“কারণ আপনার আধুনিক্তা মাত্র কল দিয়েছিল।”
“বলিস কী?”
বলেই মাশরাত মোবাইল নিয়ে নিল। মালিহা হাত আড়াআড়িভাবে ভাজ করে জিজ্ঞেস করল-
“হু ইজ আধুনিক্তা ভাই?”
“তুই জেনে কী করবি?”
“মেয়েটা কেমন দেখতে রে?”
“তুই জেনে কী করবি?”
“জানলে কী সমস্যা?”
“আমি যে ভার্সিটির বাস্কেটবল ট্রেইনার সে ভার্সিটির স্টুডেন্ট সে।”
“ওহো এই কথা?”
“উল্টা পাল্টা কিছু ভাবলেই তোর খবর আছে।”
“আচ্ছা যা ভাবলাম না। ৩০ মিনিটের মধ্যে ওরা এসে পড়বে তাই তৈরী হয়ে নে।”
“শুন না, বিয়ে করা কী খুব জরুরি?”
“ভাই তোর কষ্ট আমি বুঝতে পারছি। কিন্তু তোরও আম্মুর কষ্ট বোঝা উচিত। আম্মু চায় তুই পিছুটান ছেড়ে নতুন জীবন শুরু কর।”
মাশরাত কিছু বলল না। মালিহা মাশরাতের গালে হাত রেখে বলল-
“তুই বল বা না বল আমি জানি তুই তাবাসসুম আপুর অপেক্ষায় আছিস। কিন্তু ভাই অপেক্ষা করে লাভ নেই। দোয়া কর আপু যাতে সবসময় সুখে থাকে।”
বলেই মালিহা চলে গেল। মাশরাত খাটে বসে পড়লো। হ্যাঁ সে অপেক্ষায় আছে তাবাসসুমের। চায় না অপেক্ষা করতে কিন্তু এক অদৃশ্য বাঁধন তাকে বেঁধে রেখেছে। লম্বা নিশ্বাস ফেলল। এখন আধুনিক্তাকে কল দেওয়া উচিত। ওর বাবা কিছু বলেছে কী না কে জানে।

আধুনিক্তা বারান্দার দোলনায় বসে নেইলপলিশ মাখছে। কথা আছে “খালি মাথা শয়তানের ঘর” আধুনিক্তা ভাবছে নেইলপলিশের সুবাস এত সুন্দর হয় কেন? সুবাসটা খুব টেস্ট মাঝে মধ্যে ইচ্ছে করে একবার খেয়ে টেস্ট করতে। হঠাৎ হেসে উঠল এইসব ভেবে। তখনই মোবাইল বেজে উঠল। হাতে নিয়ে দেখে মাশরাত কল করেছে। রিসিভ করে কানে ধরলো-
“গোসল হয়েছে তোমার?”
“এটা কেমন প্রশ্ন?”
আধুনিক্তা হাসলো। মাশরাত হাতাশার নিশ্বাস ফেলে জিজ্ঞেস করলো-
“তুমি ঠিক আছো?”
“হ্যাঁ আমার কী হবে?”
“তোমার আব্বু যদি তোমাকে কিছু বলে তাই জিজ্ঞেস করলাম।”
“আব্বু আমাকে কিছুই বলবে না।”
“যাক ভালো, কী করছো?”
“ভাবছি”
“কী ভাবছো?”
“নেইলপলিশের সুবাস খুব সুন্দর। ভাবছি খেয়ে দেখব টেস্ট কেমন।”
“এসব কোনো সুস্থ মস্তিষ্ক ওয়ালা মানুষের ভাবনা হতেই পারে না।”
আধুনিক্তা শব্দ করে হেসে উঠল। মাশরাত মুচকি হাসলো আধুনিক্তার হাসির শব্দ শুনে। আধুনিক্তা হাসি থামিয়ে জিজ্ঞেস করলো-
“আচ্ছা তোমার ছোটো বোন আছে?”
“হ্যাঁ ও কল রিসিভ করেছিল।”
“আমি তো ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।”
“কেন?”
“ভেবেছি তুমি হয় তো বিবাহিত আমাদের বলো নি।”
“বিবাহিত ছিলাম না হয় তো খুব শীগগিরই হয়ে যাব।”
“মানে?”
“মানে আজ আমাকে পাত্রীপক্ষ দেখতে আসবে।”
আধুনিক্তা চিৎকার দিয়ে বলল-
“হোয়াটটটট?”
মাশরাত চিৎকার শুনে কান থেকে মোবাইল সরিয়ে ফেলল। চিৎকার শুনে হয় তো কানের পোকা মরে গিয়েছে। আবার কানে ধরে বলল-
“কী হলো?”
“তোমার বিয়ে? কিন্তু কেন?”
“বুড়ো হয়ে যাচ্ছি তাই।”
“বুড়ো? কোথায় বুড়ো? তোমার একটা চুল পর্যন্ত সাদা হয় নি।”
“কারণ আমি চুলে কালার দেই।”
“মজা করো না মাশরাত। তুমি বিয়ে করবে না এখন।”
“আমি বিয়ে করতে চাই না কিন্তু আমার মা বোনকে কে মানাবে?”
আধুনিক্তা ঘরে এসে খাটে পা তুলে বসলো। তার কাঁদতে ইচ্ছে করছে৷ তার ভালোবাসার যাত্রা শুরু হওয়াট আগে শেষ হতে পারে না। হঠাৎ আধুনিক্তার মাথায় বুদ্ধি আসলো৷
“তোমার বাড়ির এড্রেস দাও।”
“কেন?”
“দিবে নাকি আমি খুঁজে বের করবো?”
“বের করে নাও আমি দিব না।”
“ওকে ফাইন”
বলেই আধুনিক্তা কল কেটে দিলো। মাশরাত থতমত খেয়ে গেল আধুনিক্তার ব্যবহার দেখে। তার মনে হচ্ছে আধুনিক্তা নিশ্চয়ই কোনো গন্ডগোল করবে।

মাশরাত তৈরী হয়ে বসে আছে। তার মনে হচ্ছে তাকে বোলি দিতে নিয়ে যাবে। ভয়ে হাত পা জমে যাচ্ছে। কিছুক্ষণ পর মালিহা আসলো।
“ভাই ভাই ভাই জানিস আমার হবু ভাবী ভীষণ সুন্দর দেখতে।”
“চুপ থাক বেয়াদব এখনো বিয়ে ঠিক হয় নি।”
“সবাই রাজি মেয়েও রাজি। এখন তো শুধু ফর্মালিটি পূরণ করছে। এমনও হতে পারে আজই বাগদান করে ফেলবে।”
মাশরাতের কলিজা মোচড় দিয়ে উঠল। কেন তার সাথেই এমন হয়। মালিহা বলল-
“কিছুক্ষণ পর আমি আসবো তোকে নিতে। এখন বসে থাক।”
“আমি কী মেয়ে? আমাকে দেখতে আসলো কেন তারা?”
“ভাই, আমাদের পরিবেশ দেখতে এসেছে তারা। সাথে তোকেও দেখে যাবে। আমি একটু পর আসছি। তুই মুখ গোমড়া করে রাখিস না।”
বলেই মালিহা চলে গেল। মাশরাত রাগে গজগজ করছে। মেয়ে কাকে বিয়ে করবে? মাশরাতকে নাকি তার ব্যাকগ্রাউন্ডকে? কিছুক্ষণ পর মালিহা আসলো।
“ভাই চল”
“গিয়ে বল আমি বিয়ে করবো না।”
“ঢং কম কর চল চুপচাপ।”
মাশরাত উঠে দাঁড়ালো। তার মন চাচ্ছে পালিয়ে যেতে। মালিহা মাশরাতকে নিয়ে বাহিরে গেল। মাশরাতের বেশ আজব লাগছে। তাকে নিয়ে গিয়ে সোফায় বসালো মালিহা। মাশরাত মাথা তুলে দেখেনি এখনো কে কে এসেছে। একটা পুরুষ কন্ঠ ভেসে আসলো-
“আপনার ছেলের সম্পর্কে আপা সব জানি। এখন শুধু আমার মেয়েকে আপনি পছন্দ নিন ব্যস।”
“ভাই আপনার মেয়েকে আমার বেশ পছন্দ।”
“তাহলে তো আলহামদুলিল্লাহ।”
“কিন্তু আপনার মেয়ের কোনো আপত্তি নেই তো?”
“না আমাদের মেয়ে আগেই বলেছে সে আপনার ছেলেকে পছন্দ করেছে।”
“তাহলে ভাই আজ যদি বাগদানের কাজ সেরে ফেলি।”
“তাহলে তো আরো ভালো।”
মাশরাত ভয়ে থরথর করে কাঁপছে। মালিহা খুশীতে আত্মহারা। অবশেষে তার ভাইয়ের বিয়ে হবে। মা তারাতাড়ি ঘরে গিয়ে উনার আলমারি থেকে আংটি নিয়ে আসলো। মাশরাতের বউ এর জন্য উনি এই আংটি বানিয়েছিলেন। অবশেষে কারো আঙুলে আংটিটা যাবে। মনে মনে উপরওয়ালাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানালেন। আংটি নিয়ে দ্রুত বাহিরে এসে মাশরাতের দিকে এগিয়ে দিলো-
“নে আসমাকে পড়িয়ে দে আংটিটা।”
মাশরাত আংটির দিকে তাকালো। এটা তার মা তাবাসসুমের জন্য বানিয়েছিল। এখন এটা অন্য মেয়ের হাতে যাবে? মাশরাতের কলিজা মোচড় দিয়ে উঠল। এইবার তার কান্না আসছে। কেন তাবাসসুমের জায়গা অন্য কেও নিয়ে নিচ্ছে। মালিহা মাশরাতের কাঁধে হাত রেখে বললো-
“ভাই আংটি নে”
মাশরাত হাত বাড়িয়ে আংটি নিলো। মাশরাত মাথা তুলে তাকাতে পারছে না। মেজাজ চরম পর্যায়ে গিয়ে আছে এখন। তার পাশে এসে মেয়েকে বসানো হলো। মা মাশরাতকে বলল আংটি পড়িয়ে দিতে। মাশরাত কাঁপা কাঁপা হাত বাড়ালো মেয়েটার দিকে। মেয়েটা মুচকি হেসে মাশরাতের হাতে হাত রাখলো। মাশরাত ধীরে ধীরে আংটি এগিয়ে নিয়ে নিলো। পড়াতে যাবে তার আগেই দরজা দিয়ে কেও দৌড়ে এসে ঢুকলো-
“থামুন এই বিয়েতে আমি রাজি নই।”

চলবে…….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here