অন্যরকম_ভালোবাসা ?পর্ব::০৬
#ইফা_আমহৃদ
হঠাৎ পেছন থেকে কেউ জরিয়ে ধরার ভরকে গেলো ইশরা।। নিজের কাধ ফিরিয়ে মেঘকে দেখে এক নিমেষেই ভয় দূর হয়ে গেল।।মেঘ এগিয়ে গিয়ে বেডে বসে পড়লো।।ইশরা কিছু বলতে নেওয়ার আগেই,, হাত ধরে টান দিয়ে নিজের কোলে বসিয়ে দিলো।।ইশরা লজ্জায় মাথা নিচু করে নিলো।।মেঘ নিজের হাত দিয়ে দিয়ে ইশরার মাথাটা উঁচু করলো।। নিজের হলুদ রাঙানো ইশরার গালে চেপে ধরতেই ,, থরথর করে কাঁপতে লাগলো।।মেঘকে ধাক্কা দিয়ে দৌড়ে ওয়াশরুমে ঢুকে যেতে নেই।। কিন্তু পারলো না ।।পেছন থেকে ইশরার হাত টেনে দেয়ালের সাথে চেপে ধরলো।। ফিসফিস করে বললো ..
— “বাহহ বিয়ের হলুদ শরীর ছুঁতে না ছুঁতেই লজ্জায় মরে যাচ্ছিস দেখছি।।যদি একবার বিয়েটা হয়ে যায় তখন তো আমাকেও মেরে ফেলবি।।যাই বলিস ,, তোর লজ্জা পাওয়া মুখটা দেখতে কিন্তু হেব্বি লাগে।।ইচ্ছে করে চুস করে খেয়ে ফেলি।। কি বলিস,, একটু খাই” ।।
বলে নিজের ঠোঁট এগিয়ে আনতে নিলো।।ইশরা হাত রাখলো নিজের ঠোঁটের উপর।।মেঘ হাতের উপর চুমু খেয়ে বললো..
— “তুই তো আমার হবু বউ ।।কাল বাদে পরশু আমাদের বিয়ে ।।সেই উপলক্ষে তোকে একটু আদর করতেই পারি”।।
— “এইসব কোন ধরনের ভাষা মেঘ ।। প্লীজ ভালো ভাবে কথা বলো ,,আর তোমার সাথে আমার পরশু বিয়ে হচ্ছে আজ নয়।। তাই সবকিছু পরশুর জন্যই তোলা থাক।।বিয়ের আগে এইসব আমার একদম পছন্দ নয়”।।
কথা বাড়ালো না মেঘ ।। নিজের পকেট থেকে একটা গিফট বক্স বের করলো।।রেপিং পেপার টা থেকে খুলে নিয়ে ।।বেরিয়ে এলো ডায়মন্ডের ব্রেসলেট।।নিজের হাতের মাঝে ইশরার বন্দি হাতটা বের করে ,, স্বযত্নে পড়িয়ে দিলো।। হাতের উল্টো পিঠে চুমু খেলে।।হাত কোমর আঁকড়ে ধরে গলায় চুমু খেল।। তারপর ধাক্কা দিয়ে বেডে ফেলে দিয়ে ,,, ইশরার উপর উঠে পড়লো।।
আর কিছু দেখার আগেই ফোনটা ভেঙ্গে চুরমার করে দিল।।আয়ান ভিডিওটা স্পষ্ট দেখতে পেলেও ,, সেখানের কথা বার্তা শুনতে পারেনি।।তাই রাগে ফেটে পড়েছিল।।যার ফলশ্রুতিতে নিজের রাগ দমন করতে ইশরার উপর অমানবিক নির্যাতন করেছে।।আর এক মুহূর্ত যদি ভিডিও টা দেখতো ,,তাহলে হয়তো আয়ান এমন করতে পারতো না।। পৃথিবীর কোনো মানুষই তার ভালোবাসার মানুষটিকে অন্যে আরেকজনের সাথে সহ্য করতে পারে না।।সেখানে এতোটা ঘনিষ্ঠ কিভাবে মেনে নিত।।
নিজের ভালোবাসার মানুষটিকে অন্যের সাথে দেখে ,,সে খেয়ালই করেনি,, সেদিন মেঘ আর ইশরার হলুদ সন্ধ্যা ছিলো।। আয়ানের দৃষ্টি আর মস্তিষ্ক বারবার
জানান দিচ্ছিলো ইশরা সত্যিই এমনটা করেছিলো ,, ইশরার গর্ভের সন্তান আয়ানের নয় অন্যে কারো।। কিন্তু অবুঝ মন ,, সে বারবার একটা কথাই জানান দিচ্ছিলো,, ইশরা এমন কিছু করতে পারেনা।।। নিজের করা কাজের অনুসূচনা করতে করতে আর ইশরার সামনে যাওয়ার সাহস হয়নি তার ।। প্রতিদিন রাতের অন্ধকারে বেলকেনি টপকে ইশরার ঘুমন্ত মুখটা দেখে আসতো।। ছয় মাসে একদিনও শান্তিতে ঘুমাতে পারে নি।। নিজের বুকটা খুব ফাঁকা ফাঁকা লাগতো।।ইশরাকে বুকে নিয়ে ঘুমানো কবে যে ,,আয়ানের নিত্যদিনের অভ্যস হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলো।।জানা ছিলো না।।
____________
চারদিকে ফজরের আযান দিচ্ছে।।আযানের মধুর ধ্বনিতে প্রকম্পিত হচ্ছে।। যেখানে কালকে এমন সময় আয়ানের বুকে এলোমেলো হয়ে ঘুমিয়ে ছিলো ইশরা ,,সেখানে আজ একই সময় অপারেশন থিয়েটারের ভেতরে আছে। একটু আগে রিটায়ার্ড করা ডাক্তার এসে হাজির হয়েছে।।সবাই টেনশনের কাঁপছে।। মধ্যরাতে মেয়ের চিন্তা করতে করতে জ্ঞান হারিয়েছে তমোনা।। নিজের প্রিয়শ্রীকে এমন অবস্থায় দেখে ,, বাড়ি ফিরে গেছে ।। একটু আগে জ্ঞান ফিরেছে তমোনার ।। তবুও দমে যায়নি,,, অসুস্থ শরীর নিয়ে মেয়ের জন্য দোয়া করতে । আয়ান এক ধ্যানে দরজার দিকে তাকিয়ে আছে ।।কখন দরজাটা খুলবে ,, তার অপেক্ষার প্রহর গুনছে।।কখন তার ইশুপাখি বলবে ।।আয়ান তুমি একদম চিন্তা করো না ,, তোমার ইশুপাখি আর প্রিন্সেস আয়রা ঠিক আছে।।আযানের ধ্বনি কানে আসতেই ,, কিছু একটা ভেবে উঠে দাঁড়ালো।।আযানের ধ্বনি অনুসরণ করে এগিয়ে গেল সেদিকে ।।আজ শ্রেষ্ঠার কাছে মন খুলে চাইবে ,, নিজের প্রিয়জনকে।।
মাঝখানে কেটে গেল বেশ কিছুক্ষণ ।। এখনো আয়ান ফেরেনি ।।এদিকে আজাদ আহম্মেদ,, তিথির চিন্তার শেষ নেই।।ছেলের চিন্তা করতে করতে অপারেশন থিয়েটারের উপরে থাকা লাল রঙের বাতিটি বন্ধ হয়ে গেল।। আজাদ আহম্মেদ আর তিথি এগিয়ে গেল দরজার দিকে ।।ভেতর থেকে বেরিয়ে এলো জীবন চৌধুরী ।। যে ইশরার চিকিৎসার ভাড় নিয়েছে।। জীবন চৌধুরীর কপালে চিন্তার ভাঁজ থাকলেও মুখে তৃপ্তিকর হাসি।। তিনি এগিয়ে এসে আজাদ আহম্মেদের সাথে হাত মিলিয়ে বললেন….
— “আপাতত ভয়ের কিছু নেই।।সি ইজ আউট অফ ডেঞ্জার ।। তবে পরে সমস্যা হলেও হতে পারে ।।ব্যাপারটা আমি আপনাদের খুলে বলছি।।
আমরা যেটাকে ঠিক বলি ,, মানে মাথা উপরে পা নিচে।। কিন্তু প্রেগনেন্সির সময় সেটা উল্টো ।। প্রেগনেন্সির সময় মাথা নিচে পা উপরে থাকা সঠিক ব্যালেন্স।। অনেকের ক্ষেত্রে বাচ্চা উল্টো যায়,, সেটা নরমাল ।।তবে যদি ৩৬ সপ্তাহের মধ্যে সঠিক পজিশনে ফিরে না আসে ,,সেটা নরমাল নয়।। অস্বাভাবিক বলে।।
তখন সাধারণ ডেলিভেডিতে বাচ্চার মস্তিষ্কে অনেক সমস্যা দেখা দেয়।।ইশরার ক্ষেত্রে বেবী ঠিক পজিশনে ছিলো ।।কিন্তু একটা দুর্ঘটনায় উল্টে গেছে ।।এখন ২৭+ সপ্তাহ ।।আরো ২মাস দেখুন ,, ইনশাআল্লাহ ঠিক হয়ে যাবে”।।
— “ডাক্তার যদি তেমন না হয়”!!(তিথি)
— “বি পজেটিভ।।সব ঠিক হয়ে যাবে।যেটা বলছিলাম,, বেশী জরুরী হচ্ছে।। আমি মেডিসিন প্রেসক্রাইব করেছি ,, সেগুলো নিয়মিত করবেন।। খাবারে অনিচ্ছা থাকার সত্ত্বেও জোর করে খাওয়ানোর চেষ্টা করবেন।। সবসময় পেট ভরা রাখবেন।।প্রথম এক সপ্তাহ একদম নড়াচড়া যাতে না করে ইনসিউর করবেন ।। তারপর থেকে প্রতিদিন সকালে এবং রাতে হাটাবেন।।এতে বেবীর পজিশন অনেকটা কন্ট্রোলে চলে আসবো।।আর মোস্ট ইনপ্রটেন্ট যেটা, প্রতিমাসে ২ বার আলট্রাস্নোগ্রাফি করাবেন এবং প্রেগনেন্সি সংক্রান্ত কোনো সমস্যা দেখা দিলে ,, দূরত্ব হসপিটালে এডমিট করাবেন ,, কিংবা ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন।।আর যদি ডেলিভেরির উল্টোই থাকে তখন বাইপোলার পদ্ধতিতে ডেলিভেরি করতে হবে”।।
— “অসংখ্য ধন্যবাদ ডাক্তার ।।এতো রাতে আমাদের বিপদের কথা শুনে ছুটে আসার জন্য “।।(ছলছল চোখে আজাদ আহম্মেদ)
— “ইস মাই ডিউটি ।।একটু পর প্যাশেন্টের জ্ঞান ফিরবে ।। দেখা করুন আর কি খাইয়ে দিন।। কাল রাত থেকে না খেয়ে আছে”।।
বলেই তিনি চলে গেলেন।।এতক্ষন আটকে রাখা নিশ্বাস এবার দুজনে ছারলেন।। নিজের পকেট থেকে ফোন বের করে আয়ানের নাম্বারে ডায়াল করলেন।। রিসিভ হলো না ।। আবার ডায়াল করলো তবুও রিসিভ হলো না।।তাই রৌদ্র জুবায়ের কে ফোন করে ইশরার অবস্থা জানালেন।। অতঃপর বাড়িতে ফোন করে জানালেন।।বাড়িতে ফোন করার সাথে সাথেই রিসিভ করলো অনয়া।। নিজের কাজের জন্য অনুসূচনা করতে করতে হয়তো ঘুমাতেও পারেনি।।
___________________
আয়ান নিজের হাতে রান্না করে এনেছে খাবার ।। খাবারের কথা শুনে আয়ানকে খাবার কিনে আনতে বলেছিলো তিথি ।। কিন্তু ইশরাকে কিছুতেই বাহিরের ঝাল মশলা দেওয়া খাবার খাওয়াবে না ।।তাই নিজের হাতে রান্না করে এনেছে।।
মেয়ের খবর শোনার পরপরই রৌদ্র জুবায়ের আর তমোনা এসে মেয়েকে দেখে গেছে ।।অনয়াও এসেছিলো ,, তবে কাছাকাছি না ।। একটু দূর থেকে দেখেছে গেছে।। আজাদ আহম্মেদ আর তিথিও একটু আগে বাড়ি ফিরে গেছে।।
খাবারের লোকমা মুখের কাছে আনতেই নাক ছিচকে নিলো ইশরা।।কিছুতেই তার খেতে ইচ্ছে করছে না।। কিন্তু কে শুনে কার কথা।।আয়ান জোর করে এক লোকমা মুখে ঢুকিয়ে দিয়ে চোখ রাঙালো।।ইশরা কিছু বললো না ,, চুপচাপ খাবার চিবুতে লাগলো।। আরেক লোকমা মুখে তুলে দেওয়ার আগেই অন্যপাশ ফিরে শুয়ে পড়লো ইশরা।।মুখ ফুলিয়ে বললো…
— “আয়রার একদম এইসব থেতে ইচ্ছে করছে না”।।
— “কিন্তু ডাক্তার যে তোমাকে সবসময় খেতে বলেছে ।।জেদ করে না ইশুপাখি খেয়ে নাও” ।।(অন্যদিকে ঘুড়ে গিয়ে ,, লোকমা মুখে তুলে দিতে দিতে আয়ান)
— “আমি কখন বললাম ,, আয়রা খেতে চায় না।।আমি বলছি ,, আয়রা এইসব খেতে চায় না।।অন্যকিছু খাবে”।।(ইনোসেন্স ফেইস করে ইশরা)
— “ও তাই নাকি আয়রা ।। তুমি এইসব থেতে চাও না।।আচ্ছা বলো কি চাই ।।তোমার পাপা তোমাকে তাই এনে খাওয়াবে”।।(ইশরার পেটে কান পেতে আয়ান)
— “ঐযে ঝাল ঝাল ,,টক টক খাবারটা ।।একবার খেলে যে খাবারটা বারবার খেতে ইচ্ছে করে ,,সেই খাবার টা” !!
( মুখের ভঙ্গিতে বুঝিয়ে দিয়ে)
— “আয়রা সোনা ,, তোমার মাম্মা আমাকে খাবার নামটা কিছুতেই বলছে না।। তুমি জোরে জোরে বলে দাও তো” ??( ইশরার পেটে ঠোঁট ছুঁয়ে আয়ান)
ইশরা কিছু না ভেবেই চক করে বলে ফেললো ”’ফুচকা””
সাথে সাথে আয়ান নিজের রাগি দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো ।।ভয়ে চুপসে গেল ইশরা ।।সাথে জমেছে কিছু অভিমান।মুখটা ছোট ছোট করে বললো ,, “”থাক আয়রা সোনা তোর পাপা খেতে দিবে না।।তোর পাপা অনেক পঁচা “”।।বলেই আবার অন্যপাশ ফিরে শুয়ে পড়লো ।।সাথে সাথে হাতে স্যালাইনের ক্যানেলের টান পড়লো ।। রক্ত উঠে গেল স্যালাইনে।।মুখ থেকে আপনাআপনি বের করে গেল “”আহহ”” ।।ইশরার এমন অবস্থা দেখে আয়ান টান দিয়ে ক্যানেলটা বের করে দিলো।।পাশে রাখা বক্স থেকে খানিকটা তুলো বের করে হাতের উপর চেপে ধরলো ।। কিন্তু রক্ত থামার নামই নিচ্ছে না।।সাদা তুলো রক্তে ভিজে রক্তিম আকার ধারণ করেছে।।জোরে জোরে নার্স নার্স বলে চিৎকার করে উঠল ।।নার্স এসে রক্ত পড়া থামিয়ে ,, নতুন একটা স্যালাইন লাগিয়ে দিবে।।আয়ান কিছুতেই লাগাতে দিবো না।।অতঃপর ডাক্তার এসে আয়ান বুঝিয়ে লাগিয়ে দিয়েছে।।
ডাক্তার যাওয়ার পর থেকে আয়ান চেয়ারে বসে ভাম বিড়ালের ?মতো মুখ করে ইশরার দিকে তাকিয়ে আছে ।।মনে হচ্ছে এই বুঝি খেয়ে নিলো।।আর ইশরা পেটে হাত দিয়ে এসির দিকে তাকিয়ে আছে ।।কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম।। এসি টাকে আজ ইশরার সহ্য হচ্ছে না।। আয়ানের দিকে তাকাতে ভয় করছে ।।
বেশ কিছুদিন নিরবতায় ছেয়ে গেল ।। আয়ান পূর্নরায় খাবারের প্লেটটা হাতে নিলো।। হাত বাড়িয়ে এক লোকমা ইশরার দিকে এগিয়ে দিলো।।ইশরা নিলো না।।এতে যেন আয়ানের রাগ আরো বেড়ে গেল।। আয়ানের ইচ্ছে করছে ইশরার গালে ঠাস ঠাস করে দুটো চড় লাগিয়ে দিতে।।নিরবতা ভেঙ্গে দিলো এক চিৎকার…
— “ভালো ভালোয় বলছি হা করো ।। নাহলে কি করবো আমি নিজেও জানি না।।এই অবস্থায় ফুচকা খেলে শুধু তোমার না বেবীও ক্ষতি হবে ।।তাই জেনে শুনে আমি কারো ক্ষতি করতে পারবো না।।তাই চুপচাপ হা করো”।।।
— “যদি হা না করে তাহলে কি আবার বউ মেরে বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দেবে।।নাকি গৃহবন্দী করে রাখবে।। তোমার মতো ছেলেদের কাছ থেকে এর বেশি কিছু আশা করা যায় না”।।(ভেতরে ঢুকতে ঢুকতে মেঘ)
মেঘকে দেখে আয়ানের রাগ যেন আগ্নেয়গিরির লাভার মতো ফুটতে লাগলো।।হাত মুষ্টিবদ্ধ করে ,, দাঁতে দাঁত চেপে সহ্য করছে ।।আজ শুধু মেঘের জন্য ইশরা আয়ান।।একে অপরের থেকে অনেক দূরে দূরে।।আয়ান কোনো কথা বাড়ালো না ,, আস্তে আস্তে হসপিটাল থেকে বেরিয়ে গেল।।এক মিনিট থাকলে আয়ান আর সহ্য করতে পারতো না।।তখন সব রাগ যারতো ইশরার উপর।। কিন্তু আয়ান চাই না ।।ইশরা আর কোনো ভাবে কষ্ট পাক।।
চলবে..??