ভালোবাসার সাত রং(সিজন-২) পর্ব ৪

0
1139

#ভালোবাসার_সাত_রং?? ((সিজন-২))
#Yanur_Akter_Eanya
#পাঠ-৪
৩০৩ রুমে কক্ষে সিসিটিভির ফুটেজ বের করলো।লোকগুলো মুখ তখনই দেখে ছিলো ফারাজ।কিন্তু প্রমান ছাড়া কে বিশ্বাস করবে দুই দিনের ডাক্তার কে।তাই ফারাজ প্রমান কালেক্ট করতে এসে একটা জিনিস দেখে অবাক হলো এবং শিয়র হওয়ার জন্য সিকিউরিটি গার্ডকে ডেকে আনলো।সিকিউরিটি গার্ড থেকে যা শুনলো তাতে কাজটা কঠিন হবে। ফারাজ জন্য রিক্স আর এতে আলো বিপদ বাড়বে।তাই সাবধানে পা ফেলার সিন্ধান্ত নিলো।ফারাজ ঠাণ্ডা মাথায় সবটা হিসাব কষাতে লাগলো।কিছু ফুটেজ নিজের ফোনে নিয়ে নিলো প্রমান হিসেবে সাথে আরেক জায়গায় একই ফুটেজ টান্সাফার করলো।বলাতো যায় না কখন কোথায় কিভাবে কাজে লেগে যায়।সিকিউরিট গার্ড আর কন্ট্রোল রুমের লোকদের অনুরোধ করলো ফারাজ এখানে আসা আর ওদের কিছু জিজ্ঞাসা করা এসব কেউ জেনো জানতে না পারে এটা ফারাজ রিকুয়েস্ট। ফারাজ যা করছে হাসাপাতালে সম্মান আর আলো জীবন বাঁচাতে করছে।তারা ওহ ফারাজ কথা মেনে নিয়েছে হাসাপাতালে কাজ করে নুন খেয়েছে বেইমানি করবে না।

এভাবে দেখতে দেখতে আরো বেশ কিছু দিন চলে যায়!কিন্তু হঠাৎ করে এমন একটা ঘটনা ঘটে যার জন্য আবার সব কিছু উল্টাপাল্টা হয়ে যায়!আর যা ঘটে সেটার জন্য ফারাজ প্রস্তুত ছিলো না।

কোথাও থেকে আলো ভয়ে পেয়ে দৌড়াতে দৌড়াতে এসে ফারাজ কে জাপটে ধরে কাঁদতে থাকে!আলো এত ভয় পেয়েছে যে ও রীতিমত মত কাঁপছে! ফারাজ কিছু বুঝে উঠে আগেই আলো অজ্ঞান হয়ে ঢলে পড়লো!ফারাজ আলো কে কোলে তুলে হসপিটালের কেবিনে শুয়ে দেয়।।মুখে,পানি দিয়ে, সেন্স ফেরানোর চেষ্টা করে বাট আলো সেন্স ফিরে না।ফারাজ ইমিডিয়েট আলো সিটি স্ক্যান করতে বললো কারন আলো ব্রেণে যদি এখন রক্ত ক্ষরণ হয় তো সব হাতের বাইরে চলে যাবে।ফারাজ কন্ট্রোল রাখতে পারবে না।

ফারাজ এটা বুঝে গেছে আলো আবার এমন কিছু দেখেছে যার জন্য ভয় পেয়েছে।কিন্তু সেটা কি বুঝতে পারছে না।ডক্টর ফারাজ ইমা কে ডেকে পাঠালো।আলো সাথে কি হয়েছে জানতে চাইলে ইমা কিছু বলে যা শুনে ফারাজ কেবিন না দাড়িয়ে দৌড়ে সেই জায়গায় আসে।হ্যা সেই মানুষটা পাথর মতো এখন একই জায়গায় দাড়িয়ে আছে।আলো এই পরিণতি মানতে পারছে না কিছুতেই না।

****

-;এটা কি করলাম আমি আল্লাহ। আজ আমার জন্য আলো এই অবস্থা।আমার ভুলে কারনে আলো পাগল হয়ে গেছে।আমাদের আলো আজ মেন্টাল হাসপাতালে পড়ে আছে।ছি,নিলয় ছি,তুই একটা মেয়ের জীবন বরবাদ করে দিয়েছিস। এই মাশুল তোকেই দিতে, হ্যা তুই দিবি এর মাশুল।আলো বেচে থাকার অবলম্বন একমাএ বাবাকে তো বাচাতে পারেনি।কিন্তু তার কন্যাকে এবার সুস্থ দায়িত্ব নিতে হবে শুধু তোকে।

কয়েকঘন্টা আগের কথা নিলয় কাল চলে যাবে তাই এই পাবনা হাসপাতালে ফাউন্ডেশন টাকা টান্সাফার করাতে আর হাসপাতালে মালিক জাবেদ আহসান সাথে দেখে করতে এসে চমকে গেলো।আলোকে এভাবে দেখবে তা স্বপ্নে ও ভাবেনি।আলো বেচে আছে দেখে নিলয় খুশী যেনো আকাশ ছোয়ার মতো।কিন্তু নিলয় যখন আলো সামনে নিজের পরিচয় নিয়ে যায়।তখন আলো মাথা চুলাকতে থাকে।কারণ সে তো নিলয় কে চিন্তে পাচ্ছে না।নিলয় একটু জোড় করলে আলো মাথা পেশার পড়ে যার কারনে আলো এমন বিয়াভিয়ার করে বসে।

-;নিলয় তুই এখানে।(পিছন থেকে নিজের নাম ধরে কাউকে ডাকতে দেখে অবাক হয়ে পিছন ফিরে থাকালো।)

-;’ফারাজ, তুই বাংলাদেশ কবে আসলি।’

-;আমি বাংলাদেশে এসেছি আজ ১৫ দিন হবে।এখানকার ডক্টর দায়িত্ব আছি।কিন্তু তোকে এখানে পাবো ভাবতেই পারেনি।বিদেশ মাটিতে বন্ধু হিসেবে একসাথে ছোটবেলা থেকে বড় পর্যন্ত হয়েছি।মাঝে পড়াশোনা জন্য দুই বন্ধু আলাদা হলে মন থেকে কেউ কাউকে দূরে রাখিনি।

-;আচ্ছা তুই কি তাহলে আলো টিটমেন্ট করছিস।আলো কি হয়েছে।ওর আচারন এমন কেনো, মানে
এসব কি আমি বুঝতে পারছি না ইয়ার।প্লিজ সবটা বল আমায়।নিলয় নিজের মাথা চুলগুলো টেনে মুখটা ঢেকে একটা নিশ্বাস ছেড়ে চুপ করে হাটুগেড়ে বসে রইল।চোখের কোনা দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে।

-; নিলয় কাম ডাউন ইয়ার।আমি সবটা বলছি তোকে, আলো কি হয়েছে ও এখানে কেনো সবটা বলবো। প্লিজ তুই শান্ত হয়ে বস এখানে।

-;নিলয় কে নিয়ে একটা নিরিবিলি জায়গায় বসলো ফারাজ।আলো সাথে এই পর্যন্ত যা যা হয়েছে সবটা বলতে লাগলো।নিলয় সবটা শুনে পুরো বোবা হয়ে গেছে। এসব কি হচ্ছে আলো সাথে, আঘাতে আঘাতে আলো হ্রদয় আজ ক্ষত বিক্ষত হয়ে গেছে।আলো আজ নিজের হুসে নেই। আচ্ছা আলো যখন সুস্থ হবে তখন কি সবাইকে মাফ করতে পারবে।আর আমাকে কি ক্ষমা করবে ও।

নিলয় চোখ মুখ শক্ত করে বলো, ওদের ধরা ব্যাবস্থা আমি করে দিবো।তুই শুধু আলো দিকে লক্ষ্য রাখিস।আলো সুস্থ হওয়াটা খুব জরুরি আমি আলো কে সুস্থ দেখতে চাই।যত টাকা লাগে লাগুক আমি দিবো। তুই আলোকে সুস্থ করার চেষ্টা কর দ্রুত।

-;নিলয় তুই আর আলো আগে থেকে পূর্ব পরিচিত।আলো সাথে তোর কিভাবে পরিচয়।সবটা খুলে বলবি প্লিজ।

-;বলবো সময় হলে সবটা বলবো।এখন আমাকে আমার কাজটা করতে দে।আলো সাথে আর কোনো অন্যায় হতে আমি দিবো না কিছুতেই না।আসছি আমি তোর সাথে পরে যোগাযোগ করব বায়।

—–
ফারাজ আলো কেবিন গিয়ে দেখলো আলো ঘুমিয়ে আছে।আলো হাতটা ধরে বলো।তোমার সাথে সব অন্যায় অবসান হতে চলেছে আলো।তুমি আর পাঁচটা মেয়ের মতো বাচবে সেই ব্যাবস্থা আমি করব।এটা তোমার কাছে ফারাজ করা প্রমিজ। ইমা আলো রির্পোট নিয়ে দাড়িয়ে আছে।ফারাজ ইমা হাত থেকে রিপোর্ট নিয়ে চেক করছে।
ফারাজ আল্লাহর কাছে লাখ লাখ শুকরিয়া জানায় যে আলো ব্রেনে রক্ত ক্ষরণ হয়নি!ভয়ে পেয়ে এমন হয়েছে।এখন ফারাজ অপেক্ষায় আছে আলো জ্ঞান ফিরলে কোন রিয়াকশন করে কি না। আলো হয় আগের কিছু মনে করতে পারবে!আর তা না হলে সারাজীবনের জন্য মানসিক রুগী হয়ে যাবে।

আর আগেই তুলনায় যেহেতু আলো কিছু পরিবর্তন করছে তাহলে মনে পড়াটাও ৫০% স্বাভাবিক!সাইকোলজির দিক থেকে বলতে গেলে আরো অনেক জটিল ব্যাখা দেওয়া যায়।

ফারাজ প্রাণপণ চেষ্টা করছে যাতে এবার আলো সুস্থ হয়ে যায়। কারন কোন ডাক্তারই চাই না তার রোগী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে পড়ল থাকুক।

—-পাপ করলে নাকি তার শাস্তি একদিন না একদিন ঠিকই ভোগ করতে হয়।পাপ বাব কে ছাড় দেয় না।পাপ করে তুমি সুখ পাবে না।পাপের শাস্তি ভোগ করতেই হবে। আজকে ভোর নিজের বাড়ির উঠোনে পাগল মতো মাটির মধ্যে গড়িয়ে কাঁদছে।নিশি অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে ।নিশি জ্ঞান ফিরারনো জন্য রুবীনা আর রজনী মাথা পানি ঢালছে আর দুজনই কাঁদছে।আশিক সিকদার চুপ করে আছেন তার মুখে কথার বলার ভাষা নেই।রাত আর আখি চোখে ওহ পানি টলমল করছে।তিন তিনটা প্রান একসাথে ঝড়ে গেলো।
হুম ভোর আর নিশি তিন কন্যা সন্তান এই পৃথিবীতে আর বেচে নেই।তারা চলে গেছে না ফিরার দেশে।আর ফিরবে না তাদের কলিজা টুকররা।মা,বাবা,দাদা,দাদি,চাচা,চাচী, ফুফুমনি বলে আর ডাকবে না কাউকে তারা।

ভোরের মেয়েরা বাড়ির পিছনে ক্রিকেট খেলছিলো।তখনই বলটা পুকুরপাড়ের কিনারে পড়ে। সেটা ছোট মেয়ে আনতে গেলে পা পিচলে সিড়ি থেকে পুকুরে পড়ে যায়।এক বোনকে বাঁচাতে দুই বোন পুকুর ঝাপ দেয়।কিন্তু তারা ভুলে গিয়েছিল,যে তারা কেউ সাতার জানে না।বড়দের না ডেকে নিজেরা বোনকে বাচাতে গিয়ে অকালে প্রানটা হারালো।বাড়িতে মা,দাদি,চাচা,চাচী,থাকা শর্তে তিনটা প্রান পানি ডুবে মরলো কেউ বুঝতে পারল না।যখন পুকুরপাড়ে এসেছিল কাজের লোক রানা তখন দেখেছিল তিনটা প্রান পানিতে ভেসে বেড়াচ্ছে।রানার চিৎকার সবাই পিছনের দিকে পুকুরপাড়ে আসে।এসে এই অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে।মেয়েদের এই অবস্থা দেখে সাথে সাথে অজ্ঞান হয়ে যায় নিশি।রাত,রানা মিলে তিনটা কে কোলে তুলে উপরে আনে।কিন্তু ততখনে অনেক দেড়ি হয়ে গেছে তিন তিনটা প্রান এই দুনিয়ার আর নেই।আশিক সিকদার কাজের জন্য বাড়ির বাহিরে ছিলেন। তিনি এই খবর পেয়ে ছুটে আসেন।ভোর কাছে খবর দেওয়া হয় এই বলে যে তার তিনটা মেয়ে খুব অসুস্থ।তিনি যেন তাড়াতাড়ি বাসা চলে আসে।কিন্তু ভোর যখন বাড়িতে মেইন গেইট গাড়ি থামিয়ে নিচে নামল তখন বাড়িতে মানুষের ভীরের রোম রোম করছিলো।সবার মুখে একটা কথায়ই,
আহারে কি হইল। সিকদার বাড়ি আলো বাতি নিবে গেলো।আল্লাহ এটা কি করলো।অকালে প্রানগুলো চলে গেলো।
ভোর তার তিন মেয়েকে অসুস্থ নয় মৃতদেহ হিসেবে মাটিতে শুয়ে রাখা অবস্থায় দেখেছিলো।ভোর প্রানভোমরা ছিল মেয়েরা।সেই প্রানগুলো আর বেচে নেই।নিশ্চিতে ঘুমিয়ে আছে।

চলবে…..

লাস্ট পর্ব শেষ করতে পারলাম না আরেকটু কাহিনি বাকি আছে পরবর্তী পাঠ লাস্ট পাঠ করে দিবো।

ধন্যবাদ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here