ভালোবাসার সাত রং(সিজন-২)শেষ পর্ব

0
1303

#ভালোবাসার_সাত_রং?? ((সিজন-২))
#Yanur_Akter_Eanya
#৫+Last part
তিনটা প্রান পানিতে ভেসে বেড়াচ্ছে।রানার চিৎকার সবাই পিছনের দিকে পুকুরপাড়ে আসে।এসে এই অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে।মেয়েদের এই অবস্থা দেখে সাথে সাথে অজ্ঞান হয়ে যায় নিশি।রাত,রানা মিলে তিনটা কে কোলে তুলে উপরে আনে।কিন্তু ততখনে অনেক দেড়ি হয়ে গেছে তিন তিনটা প্রান এই দুনিয়ার আর নেই।আশিক সিকদার কাজের জন্য বাড়ির বাহিরে ছিলেন। তিনি এই খবর পেয়ে ছুটে আসেন।ভোর কাছে খবর দেওয়া হয় এই বলে যে তার তিনটা মেয়ে খুব অসুস্থ।তিনি যেন তাড়াতাড়ি বাসা চলে আসে।কিন্তু ভোর যখন বাড়িতে মেইন গেইট গাড়ি থামিয়ে নিচে নামল তখন বাড়িতে মানুষের ভীরের রোম রোম করছিলো।

সবার মুখে একটা কথায়ই,
আহারে কি হইল। সিকদার বাড়ি আলো বাতি নিবে গেলো।আল্লাহ এটা কি করলো।অকালে প্রানগুলো চলে গেলো।
ভোর তার তিন মেয়েকে অসুস্থ নয় মৃতদেহ হিসেবে মাটিতে শুয়ে রাখা অবস্থায় দেখেছিলো।ভোর প্রানভোমরা ছিল মেয়েরা।সেই প্রানগুলো আর বেচে নেই।নিশ্চিতে ঘুমিয়ে আছে।

__________

“প্রিয় মানুষের সঙ্গ না পেলে জীবনটা মরু বালি চরের পরিনত হয়”।
-;”আজ আলো পাগল কাদের জন্য? কে দায়ি এরজন্য? কি হলো বলুন! জবাব নেই আপনাদের কাছে।আপনারা একটা মেয়ে সাথে যে অন্যায়টা করেছেন আতো করার প্রয়োজন ছিলো।হ্যা আমি মানছি, ভালোবাসাটা কোনো অপরাধ বা দোষের নয়।তাই বলে একটা মেয়ে বিনাদোষে শাস্তি ভোগ করবে।সব একটা মেয়ের ঘাড়ে চাপিয়ে দিবেন কেনো?আপনার এতটা নিচ কাজ করেছেন বলে আজ আপনাদের এই দূরদোষা”।

“ভোর সিকদার আপনার পাপের শাস্তি আপনার তিন মেয়ে পেলো কেনো?শাস্তিটাতো আপনার পাওনা ছিলো!আপনি পাপ, ভুল করলেন আর ভোগ করলো। আপনাদের আদরে ফুটফুটে বাচ্চাগুলো। এটা কে কি বলে আমি জানি না।ওদের সাথে এটা না হলেও পারতো।কিন্তু প্রকৃতি লিলা খেলা বোঝা বড় দায়”।

“মিসেস রুবীনা সিকদার আপনি হ্যাপি তো। অবশ্য হ্যাপি থাকার কথা আলো নামে মেয়েটা আপনাদের চিরদিনের মতো মুক্তি দিয়ে চলে গেছিলো।”

“-;শুনেছি আপনি আলো কে সয্য করতে পারতেন না?আলো কে অপছন্দ কারনঃআলো জন্য আপনার গুণধর ছেলেরা কষ্ট পাচ্ছিলো।একজন আলো কে বিয়ের আসরে পেলে চলে যায়।আরেকজন বিয়ে তো করে ঠিকই বাট স্ত্রী স্বীকৃত দিতে অস্বীকার করে।কারন তার মন তো অন্য জায়গায় অন্য কারো কাছে পড়ে আছে।বিয়ের রাতে বউ সাথে সবটা শেয়ার করতে পারতে সব সত্যিটা জানাতে পারতে তা না করে কি করলে তুমি রক্তক্তাত করলে বিয়ের প্রথম রাতে”।

-;”বিয়ের প্রথম রাত থেকে শুরু করে পাক্কা তিনমাস তোমার অত্যাচার মুখ বুঝে সয্য করে আলো একমুঠ সুখে আসায়”।

“কিন্তু মেয়েটা হেরে গেলো ভেঙ্গে গেলো সম্পক নিবে গেলো আলো নামের মেয়েটা।তার কষ্ট না কাউকে বলতে পারছিলো, না কারো সাথে শেযার।বাবা বুকে মাথা রেখে টুকরে কেঁদে উঠেছিলো।কিন্তু বাবা মেয়ে কষ্ট মানতে পারেনি। মেয়ে এই পরিনতি জন্য নিজেকে দায়ি করেছিলো।ভিতরে ভিতরে গিল্টি ফিল এতো বেড়ে গেছিলো যে মেয়েরা সাথে অন্যায় হওয়াটা মানতে পারেনি।তাই মাথা প্রেশার পড়ে আর ঘুমের ঘরে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করে।আলো বাবা অকাল মৃত্যুটা মানতে পারেনি।পাগল মতো রাস্তা রাস্তায় ঘুরে।আর একটা খুন হয় সেটা কেউ জানতে ওহ পারলে না”।

“আর নিলয় তুই…তুই তো আমার ব্রেস্টফ্রেন্ড। তুই এটা কি করে করলি ইয়ার।তোরা সবাই মিলে আলো স্বপন, আশা,আঙ্গায়া সব ভেঙ্গে দিলি।মেয়েটা ভিতরে ভিতরে গুমরে মরছিলো।নিজের কষ্টটা শেয়ার করতে, কারো সাথে ভাগ করতে চেয়েছিলো।দিন শেষে এক মুঠো সুখ কুড়াতে চেয়ে ছিলো।বেশিকিছু যাওয়াতো ওর ছিলো না।তাহলে এত কষ্ট আলো জীবনে কেনো হবে”?

“আলো আজ পাগল হয়ে গেছে। আমি জানি না আমি আলো কে বাঁচাতে পারবো কি না তবে আমি আমার ব্রুেস্ট টিটমেন্ট শুরু করেছি আরো আগে আর তা ফল পাচ্ছি।আর একটা কথা আলো সুস্থ হোক এটা আমি ও চাই।যদি আমার ব্রুেস্ট টিটমেন্ট আলো সুস্থ না হয় তা ওহ আমি আলো কে একলা পথে ছাড়বো না।আলো পায়ে পায়ে চলার সাথী হবো আমি।আলো কে স্বীকৃতি দিবো আমি।হুম আলো কষ্ট দিন শেষ হতে চলেছ। আলো এখন থেকে প্রান খুলে হাসবে।আমি আলো কে কখনো কষ্ট পেতো দিবো না”।

তোমাদের শাস্তি তোমার পেয়ে গেছো।ভোর বাবা হয়ে সন্তান লাশ কাধেঁ তুলে নিয়েছে। কষ্ট দিন ভোরের শুরু হয়ে গেছে। আর নিলয় তুই ফিরে যা আলো কে আমি তোদের হাতে কখনো তুলে দিবো না।আলো এখন আমার কাছে থাকবে তাওহ সারাজীবন জন্য।আলো এখন আমার আমানত।

“আমি আলোকে বিয়ে করবো এবং সেটা আজ। ফারাজ কথাগুলো বলে চলে গেলো।গাড়ি ড্রাইভ করছে আর একে একে বুলি ছড়াচ্ছে। নিলয় নিজেই সব কিছু ফারাজ কে বলেছিলো।আর বাকিটা নিজে থেকে খোজ নিলে আর এক সত্যি বের হয়ে আসে।ভোর প্রায় মদ খেয়ে বাড়ি ফিরত।এরকমই এক আধারেঁ রাতে মদ খেয়ে মাতাল হয়ে ফিরে।সেইদিন আলোকে নিশি ভেবে আপন করে নিলে ও পরেরদিন সব ভুলে যায়। সত্যি এটাই আলো মা হতে চলেছিলো তা আবার ভোরে সন্তান মা।কিন্তু নিজের বাবা মৃত্যু মানতে পারেনি কোথায় চলে গেছো বলতে পারে না আলো হুস ছিলো না”।

“ফারাজ জানতে পারে আলো বাড়ি ছেড়ে রাস্তা পাগল মতে চলছিলো।আর অসাবধানতা কারনে মারাত্মক এক্রসিন্ড করে। যার গাড়ির সাথে দূর্ঘটনা ঘটে সেটা আর কেউ নয় জাবেদ আহসান ছিলো।জাবেদ আহসান আলো কে বাচাতে পারলে ও আলো সন্তান কে আর বাঁচাতে পারেনি।এরজন্য জাবেদ আহসান অপরাধ ভুগতেন।সেটা ফারাজ কাল জানতে পারে।ফারাজ আলো অতীত শুনে আলোকে আপন করার সিন্দ্ধান্ত নিয়েছে।আলো এতিম আর ফারাজ আলো কে নিয়ে নতুন পথ চলবে।যেখানে থাকবে হাসি, খুশি, খুনসুটি ভালোবাসা ।#ভালোবাসার_সাত_রং রাঙিয়ে দিবে আলোকে।ফারাজ আলোকে আর কষ্ট পেতে দিবে না।

আলো জীবনে ফারাজ শুরু গন্তব্য ফারাজ শেষ গন্তব্য হবে।

*******
-;ও বর… ও বর… তুই আমাকে বিয়ে করবি?আচ্ছা বিয়ে খায় না মাথায় দেয়?বিয়ে কি বর?বলনা…বলনা।

-;”বিয়ে মানে দুটো পবিএ বন্ধন কে একি বাধনে বেধে ফেলা।নিজ সুখ, দুঃখে দুটো কথা বলার জন্য কাছের মানুষটা কে আপন করা”।

-;”আচ্ছা এখন এসব রাখো তোমার ওষুধ খেতে হবে তো।চলো আমি খাইয়ে দিবো।আলো মাথা নাড়িয়ে আচ্ছা বলো।ফারাজ লক্ষ্য করলো আলো আগের মতো দুষ্টুমী করে না।ফারাজ যা বলে শুনে”!

সুখ পাখি তুই ডানা মেলে যারে উড়ে যা,
হাওয়ার মাঝে ভেসে ভেসে সুখের গান গা।
নীল, নীল আকাশে ছড়িয়ে দে তুই সুখের ঠিকানা।

“পবিএ কালাম স্বাক্ষি রেখে আপন করে নিলো আলোকে।আলো বাচ্চাদের মতো খিলখিল করে হাসছে।দুটো হাতে মিষ্টি নিয়ে ফারাজ কে ইশারা বলো খাবে।ফারাজ মুচকি হেসে বলো তুমি খাও আমি মন ভরে দেখি”।

“আলো আচ্ছা বলে মুখে মিষ্টি পুরে নিলো।
মিষ্টি এমনভাবে খেয়েছে ঠোঁটে আশপাশটা মেখে ফেলছে।দেখতে বিষণ কিউট লাগছে।ফারাজ হালকা হেসে নিজের রুমাল ভিজিয়ে আলোর মুখটা মুছে দিলো”।

“জাবেদ আহসান ফারাজের বরাবর বসে।ফারাজ আলোকে বিয়ে করে নিলে, পরে আপসোস করবে না তো”!

“আমি যা সিন্দ্ধান্ত নিয়েছি একদম ঠাণ্ডা মাথায় সুষ্থ্য মস্তিকে।আমার আপসোস করার মতো কিছু নেই। আলো কে নিয়ে আমি আমার দেশে মাটিতে ফিরে যাব খুব শ্রীর্ঘই।তার আগে এখানে কিছু অসম্পূন্ন কাজ কে সম্মর্পূন্ন করে যাবো।আচ্ছা জাবেদ স্যার আপনার হাসাপাতালে দুই নম্বরি কাজ চলে সেটা কি আপনি জানেন”।

-;”কি বলছো তুমি আমার হাসাপাতালে কি করে সম্ভব এত করা সিকুউরিটি গার্ড রাখা পর ও। এটা পসিবল নয়”।

-;”পসিবল! সবই সম্মভ। আমি প্রমান ছাড়া মিথ্যে কথা বলি না।এগুলো দেখুন…সবটা আপনার কাছে ক্লিয়ার হয়ে যাবে।

-;”জাবেদ আহসান নিজের চোখে সামনে যা দেখছে
তা মানতে পারছেন না।আলো সাথে ওহি দিন যা হয়েছে সেইটা ফুটেজ স্পট দেখাচ্ছে”।

-;”আমার সন্দেহ আগেই হয়ে ছিলো। এখন শিয়র আমার ফোন চুরি, আমার ওপর হামলা কোনোটাই কাকতালীয় নয়।সবটাই প্লান করা এবং খুব সাবাধানে করা”।

দেখুন স্যার আপনার খারাপ লাগছে আমি বুঝতে পারছি।এর আগেই এর জন্য মারা গেছে অনেক প্রান। আলো প্রান শংশয় ছিলো।তাই আলো কে সেইভ করতে পারলে ওহ বাকিদের করতে পারবো তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।তাই আমাকে আমার কাজটা করতে বাধা দিবেন।আশা করি হাসাপাতালে ভালো জন্য মুখটা বন্ধ রাখবেন।

সেইদিন ফারাজ পুলিশ হাতে প্রমান আর পাপীদের শাস্তি ব্যাবস্থা করে। লোকগুলোকে ধরিয়ে দেয়। তাদের মধ্যে জাবেদ আহসান ছেলে জড়িত ছিলো।অন্যায় প্রশয় না দিয়ে জাবেদ আহসান শাস্তি ব্যাবস্থা করে।

——-

৬ বছর পর…..

ফারিয়াঃআমাল খেলনা দে।

আবেদিতাঃ এটা আমাল।আমি দিবো না।

ফারিয়াঃচিপুক দে..বিয়াদলপ

আবেদিতাঃতুই বিয়াদলপ…তুই চিপুক…..মাম্মা…. মাম্মা তুমি কই..তোমাল বিয়াদলপ মেয়ে কে দুঃখ দেওয়।

ফারিয়াঃতবে রে কথা বলে আবেদিতা চুল ধরে টান দিলো।আবেদিতা ফারিয়া চুল ধরে টানছে।

আলো দূর থেকে এই অবস্থায় দেখে হাতে স্কেল নিয়ে টেবিল ওপর বারি মারল।

-;কি হচ্ছে এসব।

আলো আওয়াজ পেয়ে দুইজনই ভদ্র হয়ে চুপ!কি হলো কথা বলচ্ছো না কেনো।আমি তোমাদের অত্যাচারে শেষ।সারাদিন রাত আমাকে জ্বালিয়ে মারো।বাবা যখন বাসায় আশে তখন বাবা কে জ্বালাতে পারো না। এদের অত্যাচার দিন দিন বেড়ে চলেছে।আজ আসুক তোদের বাবা।তিনটা কে আজ ঘর ছাড়া করবো আমি।

ফারিয়াঃএই যা মাম্মা রেগে গেলো।আজ মনে হয় বাবাই ১,২,৩,৪,৫,৬,৭,৮,৯,ক্লাস নিবে।চল পালাই বাবা আসলে মাম্মা রাগ কমিয়ে ফেলবে।

আলো দুই কমড়ো হাত রেখে সামনে তাকিয়ে দেখে দুই মেয়ে গায়েব।আলো রেগে বোম হয়ে ফারাজ কে কল দিলো।

-;আসসালামু আলাইকুম। কি ব্যাপার আমার বউ রাগে ফুসফুস করছে কেনো?রাগ হলো কি কারনে জানতে পারি ম্যাম?

-;এই একদম কথা বলবে না। সব তোমার জন্য হয়েছে। দুটো ফাজিলের গোডাউন আমার গলায় ঝুলিয়ে নিজে হাসাপাতালে পড়ে থাকো।আর আমার কলিজা ভাজা ভাজা করে।যেমন বাপ তেমনি তার মেয়েগুলো।

-;ফারাজ বুঝে গেছে। তার বউ মুড ভালো নেই।

ফারাজ গলাটা পরিষ্কার করে খালি গলায় কান ধরলো।

লক্ষী সোনানা রাগ করে না
একটু হাসো প্লিজ!
ভাল্লাগেনা আর হবে না করছি যে প্রমিজ।

আলো কল কেটে গাল ফুলিয়ে বসে রইল।

“ফারাজ মুচকি হেসে অতীতের কথা ভাবতে লাগল।আলো কে নিয়ে বাংলাদেশ থেকে চলে এসে এখানে পারি জমিয়েছে। বেশ ভালো যাচ্ছে দিন কাল।আলো এখন সুস্থ সবটা ফারাজ জন্য সম্মভ হয়েছে। অতীত কষ্ট ভুলে সুখেই আছে ওরা। আলো, ফারাজ ওহ তাদের দুই মেয়ে নিয়ে সুখি পরিবার।”

নিলয় আর বিয়ে করেনি বিজনেস সামলাচ্ছে দিন রাত।ভোর সহ সিকদার পরিবার সবাই অনুতপ্ত আলো ফারাজ কাছে ক্ষমা চেয়েছে। আলো ক্ষমা করে দিয়েছে। আলো পুরনো বিষাক্ত কথা ভাবতে চায় না আলো ফারাজ মিলে রজনী বিয়ে দিয়েছে।রজনী স্বামী সন্তান নিয়ে আমেরিকা সুখেই আছে।

ভোর,নিশি আবার মা বাবা হয়েছে।তাদের ঘরে এক
ছেলে আছে।রাত আর আখিঁ ঘরে এক কন্যা সন্তান জম্ম হয়েছে।রুবীনা নাতি নাতিনী কে নিয়ে সময় যাচ্ছে। আশিক সিকদার মারা গেছে ১বছর হলো।
সবাই সবার লাইফ নিয়ে ব্যাস্ত জীবন যাপন করছে।

(((সমাপ্ত)))

আমি কি লিখেছি আমি নিজেই জানি না। মাথা প্রচুর ব্যাথা করছে চোখ দিয়ে পানি পড়ছে।ভুলত্রুটি ক্ষমা চোখে দেখবেন ধন্যবাদ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here