Devil_Cousin_Lover 24

0
1195

#Devil_Cousin_Lover♥
#Imtihan_Imran
24.

সবাই সাজসজ্জায় ব্যস্ত।কিছুক্ষণের মধ্যে বর এসে যাবে।দিশাকে সাজানোর জন্য পাল্লার থেকে মেয়ে আনা হয়েছে।

সিনহা নিজের রুমে এসে বিছানায় একটা প্যাকেট দেখতে পায়।সিনহা অবাক হয়ে প্যাকেট টা হাতে নেয়। প্যাকেট টা খুলে দেখে একটা নীল শাড়ি।নীল চুড়ি।একটা বেলি ফুলের মালা।একটা ছোট্ট চিরকুটও খুঁজে পায় সে।চিরকুটে লেখা,

তোমার জন্য,তাড়াতাড়ি পড়ে নেও।তোমার ডেভিল দেখতে চায়’

সিনহা ইমরানের কাছ থেকে উপহার টা পেয়ে খুশি হয়।সেও ডেভিলের পছন্দমতো সাজতে চায়।পরমুহূর্তে সিনহার মুখের হাসি বিলিন হয়ে যায়।
সিনহা তো শাড়ি পড়তে পারে না। এখন সে কীভাবে শাড়িটা পড়বে। সিনহা নিজে নিজেকে ইচ্ছামত গালাগালি দিতে থাকে।কেনো সে শাড়ি পড়তে পারে না।কেনো সে শাড়ি পড়া শিখেনি।

সিনহা প্যাকেট টা রেখে দৌড়ে রুমের বাহিরে যায়।দিয়ার রুমে গিয়ে দেখে, রুমে দিয়া নাই।সিনহা নিচে নামতেই আয়রার সাথে দেখা হলো,আয়রাকে জিজ্ঞাস করতে আয়রা বলল,সেও শাড়ি পড়তে পারেনা।সিনহার মন খারাপ হয়ে গেলো,সে কী আজকে শাড়ি পড়তে পারবে না।

সিনহাকে মন খারাপ করতে দেখে,ইমরান সিনহার কাছে এগিয়ে আসলো।

“কী হয়েছে সিনহা?মন খারাপ কেনো?

” ভাইয়া আমি শাড়ি পড়তে পারিনা। এখন কাউকে পাচ্ছি না,যে আমাকে শাড়ি পড়িয়ে দিবে।

“তুই রুমে যা,আমি কাউকে পাঠিয়ে দিচ্ছি।

” আচ্ছা।

সিনহা রুমে গিয়ে বিছানায় বসে আছে।কিছুক্ষণ পর সিনহার রুমে দুইটা মেয়ে প্রবেশ করল।মেয়ে দুইটা সিনহাকে বলল,আমরা তোমাকে সাজাতে এসেছি।

সিনহা সিড়ি দিয়ে নিচে নামছে।সে আশেপাশে তাকিয়ে তার ডেভিলকে খোঁজার চেষ্টা করছে।তার ডেভিল টা মেয়ে দুইটাকে যেভাবে সাজাতে বলল,তারা সিনহাকে ঠিক সেভাবে সাজিয়ে দিয়েছে।

সিনহা এদিক ওদিক তাকাতে গিয়ে হুঠ করে শাড়ির সাথে পা বেধে যায়। সিনহা চোখ বন্ধ করে নেয়।সিনহার বুক কাঁপছে।এই বুঝি সে পড়ে গিয়ে, হাত পা সব ভেঙে ফেলল।

কিন্তু সিনহা পড়ে যাওয়ার আগে কেউ একজন বিদ্যুৎের গতিতে এসে সিনহাকে নিজের বুকে জড়িয়ে নেয়। সিনহা হার্ট দ্রুত বিট করছে।সিনহা প্রচন্ড ভয় পেয়ে যায়।

“এক থাপ্পড় মারতে ইচ্ছে করছে।চোখ কোথায় থাকে তোরে।আর এক্টুর জন্য হলে তো…আমি যদি না থাকতাম কী হতো বুঝতে পারছিস?(ধমক দিয়ে)

ইমরানের ধমক শুনে সিনহা পিট পিট করে চোখ খুলে।সিনহা খেয়াল করে,সে তার ডেভিলের বুকের উপর।সিনহা তাড়াতাড়ি করে,ইমরানের বুক থেকে উঠে দাঁড়িয়ে,চারিদিকে চোখ বুলায়। সবাই তাদের দিকে তাকিয়ে আছে। সিনহার সবাইর থেকে চোখ ফিরিয়ে মাথা নিচু করে জবাব দেয়,

” কে জানতো শাড়ির সাথে পা বেধে যাবে।শাড়ি পড়ে হাটা যে কতো কষ্টের, তুই পড়ে হাটলে বুঝতি।

“এক থাপ্পড় মারবো,তুই এখন আমাকে শাড়ি পড়ে হাটার কথা বলছিস।এখন সব শাড়ির দোষ হয়ে গেলো।নিজে দেখে হাটতে পারিস না,আবার মুখে বড় বড় কথা।

” লেখকঃইমতিহান ইমরান।

” ভাইয়া তোর সাথে এখন আমি ঝগড়া করতে পারবো না,আমি এখন ঝগড়া করার মুডে নেই।সর সামনে থেকে।

সিনহা ইমরানের পাশ কেটে সিড়ি দিয়ে নিচে নেমে আসে।ইমরান হা করে, সিনহার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে। ইমরান ভাবছে,আজকাল মেয়েটা তাকে একদমি ভয় পায়না।মুখ খই ফুটেছে মনে হচ্ছে।

চাচা এসে ইমরানের পাশে দাঁড়ায়।

“সিনহা পড়তে নিতে,যেভাবে সুপারম্যানের মতো দৌড়ে আসলি। আমি পড়ার সময় যদি,এভাবে দৌড়ে আসতি,তাহলে আমাকে বারবার জরিনার বানুর উপর লাফিয়ে পড়তে হতোনা।

ইমরান চাচার কথা শুনে,ঝট করে উত্তর দেয়।

” তুমি কী সিনহা যে,তুমি পড়ার সময় আমি তোমাকে ধরতে আসবো?সরো সামনে থেকে।

“ও হ সিনহা তো নায়িকা,আর আপনি নায়ক।সিনহা যতোবার পড়তে যাবে, ততোবারই আপনি নাচতে নাচতে সিনহাকে ধরতে আসবেন।যত্তোসব। আজকালকার পোলামাইয়া সব জায়গায় ফিল্ম খুঁজে।মন চাচ্ছে, ভাতিজারে দুইটা উষ্টা মারি।


সিনহা তার বান্ধুবীদের সাথে কথা বলে আসতেই,ইমরান সিনহাকে টেনে একপাশে নিয়ে আসে।ইমরানের এমন হুঠ হাঠ আক্রমনের সাথে সিনহা এখন নিজেকে অনেকটা মানিয়ে নিয়েছে।

“সিনহা আজকে আমি শেষ।তোর সৌন্দর্যে আজকে আমি ঘায়েল হয়ে যাচ্ছি,রে।সব ছেলেরা তোর দিকে কেমন হা করে তাকিয়ে থাকে।ইচ্ছে করছে সবাইকে মেরে ফেলি।

ইমরানের কথা শুনে সিনহা হেসে দেয়। ডেভিলটা কী সব বলছে,সিনহা হাসলেও কিছুটা লজ্জাও পাচ্ছে।

সিনহা কিছু বলতে যাবে তার আগেই সবাই চিৎকার দিলো,বর এসেছে বর এসেছে।দুজনে কথা না বাড়িয়ে সেদিকে হাটা ধরল।

বিয়েটা কোনো ভেজাল ছাড়া সম্পুর্ণ হয়েছে।বিয়ে শেষে যে যার যার মতো নিজদের বাসায় ফিরে যায়।

দুইদিন পর ভার্সিটি থেকে ইমরান বাসায় আসলে,মাহবুব সাহেব ইমরানকে ডাক দেয়,একটা কথা বলার জন্য।ইমরান ফ্রেশ হয়ে নিচে ড্রয়িংরুমে আসে।মাহবুব সাহেব,মিসেস জাহান দুজনে ওখানেই ছিলেন।

” হুম বাবা বলো।

“একটা দারুন সুখবর আছে।(হেসে)

” তা নাকি,তা কী সুখবর শুনি?(হেসে)

“তোর ফুফি রাফসানের জন্য সিনহাকে পছন্দ করেছে।রাফসানেরও নাকি সিনহাকে পছন্দ হয়েছে।তাই উনি সিনহাকে,রাফসানের বউ করে নিতে চায়।আমরাও হ্যাঁ বলে দিয়েছি।আগামী শুক্রবার’ই রাফসান,সিনহাকে বউ করে ঘরে তুলতে চায়।

ইমরানের মুখে লেগে থাকা হাসি নিমিষেই সমুদ্রের স্রোতের মতো বিলীন হয়ে যায়।সে অবাক হয়ে,চেঁচিয়ে উঠে,

” হোয়াট…?

সিনহা সিড়ির উপরেই দাঁড়িয়ে ছিল।মাহবুব সাহেবের বলা কথাগুলো তার কান অব্দিও পৌছে যায়।নিমিষেই তার মাথায় যেনো সাত আসমান ভেঙে পড়ে।এই মুহূর্তে চারপাশের সবকিছু তার কাছে অন্ধকার লাগছে।তার হাতপা কাঁপছে।সে দাঁড়িয়ে থাকতে পারছে না। এটা স্বপ্ন না তো?সে চায় স্বপ্ন হলে,স্বপ্নটা যেনো তাড়াতাড়ি ভেঙে যায়।এমন স্বপ্ন সে জীবনে দেখতে চায় না।

চলবে…

~ইমতিহান ইমরান।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here