#ঈংরেজ সাহেবের বাঙালী বধূ
#লেখিকা : সামিয়া ইমাম নূর
#পর্ব : ১৩+১৪
১৩.
রায়হানের কথা শুনে আবার হাসির রোল ফেলে দিল রাহা। রাহা হাসতে হাসতেই কোনো রকমে বলল,
রাহা – ওহো জেঠু, এখানে কেউ হা ডু ডু খেলছে না। এখানে তো মা ডু ডু খেলা চলছে।???
মাধূর্য গরম চোখে রাহার দিকে তাকিয়ে বলল,
মাধূর্য – ভালো হচ্ছে না কিন্তু রাহা।
এবার আমান বলে ওঠল,
রায়হান – মা ডু ডু খেলা হচ্ছে মানে? এটা আবার কেমন খেলা? আর তুমি এমন রেগে আছ কেন মাধূর্য মামনি?
মাধূর্য এবার অভিযোগের সুরে এতক্ষণ তার নাম নিয়ে কি কি হচ্ছিল তার সব খুলে বলল ওদের কাছে। বেচারা আরিয়ান মুখ কাছুমাছু করে মাধূর্যের দিকে তাকিয়ে আছে। ঐদিকে আমান আর রায়হান মাধূর্যের সবগুলো কথা মন দিয়ে শুনে কিছুক্ষণ দুজনে চুপ থেকে দুজন দুজনের দিকে সিরিয়াস ভঙ্গিতে তাকিয়ে হঠাৎ করেই দুইভাই এক সাথে হু হা করে হেসে ওঠল। ওদের হাসি দেখে ওদের সাথে রাহাও আবার হাসিতে যোগ দিল। ওদের তিনজনের দেখাদেখি আরিয়ানেরও মুখে হাসি ফুটে ওঠল কিছুটা। কিন্তু ওদের সবাইকে এভাবে হাসতে দেখে মাধূর্য এবার কাঁদোকাঁদো চেহারা করে আমান আর রায়হানের উদ্দেশ্যে বলতে লাগল,
মাধূর্য – Uncle! আপনারাও এখন আমার নাম নিয়ে হাসছেস? ধ্যাত! আমি থাকবই না এখানে।
বলেই মাধূর্য বাচ্চাদের মতো নাক ফুলিয়ে রাহার হাতে কফির মগটা ধরিয়ে দিয়ে লম্বা লম্বা পা ফেলে চলে যেতে লাগল। পিছন থেকে রাহা, আমানরাও ডাকছে মাধূর্য কে আর সেই সাথে আরিয়ানও মাডু মাডু বলে ডাকছে। আর এই ডাক যেন ঘিয়ে আগুন সরি, আগুনে ঘি ঢালার মতো মাধূর্যকে আরও তাতিয়ে দিল। সে ফুঁসতে ফুঁসতে বাড়ির ভেতরে চলে গেল। রায়হান বলল,
রায়হান – যাহ! মেয়েটা চলে গেল। আমাদের ঐভাবে হাসাটা একদমই উচিত হয়নি।
রাহা – Don’t worry জেঠু, ও কিছুক্ষণ পর এমনিই ঠিক হয়ে যাবে।
আরিয়ান মন খারাপ করে বলে ওঠল,
আরিয়ান – আমার মাডু খে sorry বলা উচিথ dad। But, আমি বুজথে পারচি না সে খেন এথ রাগ খরছে? আমি থো রাহা যেঠা বলল সেঠাই বললাম। থবুও মাডু খেন এথ রাগ খরল?
রাহা ট্রেতে কফির মগটা রাখতে রাখতে বলতে লাগল,
রাহা – Don’t worry bro…, মাধূর্য কিছুক্ষণ পর এমনিতেই ঠিক হয়ে যাবে। আর আমি তো আছিই, আমি এক্ষুনি গিয়ে ওর রাগ ভেঙে দেব। তুমি এখন বাবা আর জেঠুর সাথে গল্প কর, আমি মাধূর্য’র কাছে যাচ্ছি। দাও কফির মগটা দাও।
আরিয়ান কফির মগটা রাহা হাতে থাকা ট্রে এর উপর রেখে মন খারাপ করেই বলল,
রাহা – ছলো থাহলে আমিও ভিঠরে ছলে যাবো, বালো লাগছেনা।
রাহা বুঝতে পারল মাধূর্য ঐভাবে চলে গেছে বলে আরিয়ানের মন খারাপ হয়েছে। তাই সে আর তাকে না করল না। দুজনেই আমান আর রায়হানের থেকে বিদায় নিয়ে চলে গেল বাড়ির ভিতরের দিকে। রায়হান চুপচাপ আরিয়ানের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থেকে কিছু একটা ভাবছিল। আমান তার ভাইয়ের উদ্দেশ্যে বলল,
আমান – কি এত ভাবছ ভাই? আরিয়ানের মন খারাপ সেটা নিয়ে?
রায়হান – না।
আমান – তাহলে?
রায়হান – ভাবছি আমার যেই ছেলে লন্ডনের অনেক সুন্দরী সুন্দরী মেয়েদেরও পাত্তা দেয়না এমনকি অনেক নামিদামি model, actress যদি তার সামনে দিয়ে ছোট ছোট পোশাক পরেও চলে যায় সে তাদের দিকে ঘুরেও তাকায় না, লন্ডনের অনেক মেয়ে তাকে না পেলে suicide করবে বলেও হুমকি দিয়েছে কিন্তু সে সেগুলো কানেও নেয়নি অথচ আজ সেই ছেলেকেই এই একদিনের পরিচয়েই একটা সাধারণ বাঙালী মেয়েকে নিয়ে এতটা ভাবতে দেখছি। In fact, সেই মেয়েটা তার উপর রাগ করেছে বলে তারও মন খারাপ হচ্ছে। সে ভাবছে তার কারণে ঐ মেয়েটি কষ্ট পেয়েছে বা মন খারাপ করেছে। ভাবতে পারছিস? আমার don’t care dictionary মাথায় নিয়ে ঘুরা ছেলে এই প্রথম কোনো মেয়েকে care করছে, তার মন খারাপে নিজেও মন খারাপ করছে আর তাকে sorry পর্যন্ত বলতে চাইছে। এবার মনে হচ্ছে আমার দেশে আসা সার্থক হবে রে ভাই আমার। মনে হচ্ছে এবার ছেলের বউ নিয়েই লন্ডনে ফিরতে পারব?
আমান অবাক হয়ে বলল,
আমান – মানে? কি বলছ এসব? আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না।
রায়হান আমানের কাঁধে হাত রেখে বলল,
রায়হান – মানে হচ্ছে এই সেই মেয়ে যার জন্য আমার ছেলে এতবছর ধরে অন্য কোনো মেয়ের প্রতি দুর্বল হয়নি আর এই মেয়েই সেই মেয়ে যে কিনা আমার বিলেতি ছেলেকে ইংরেজ সাহেব থেকে একদম খাঁটি বাঙালী বাবু বানাতে পারবে। দেখলি না সামান্য একটু তেজ দেখেই আমার ছেলে কেমন নিস্তেজ হয়ে গেল? ওর জায়গায় অন্যকোনো মেয়ে হলে i’m sure that, সে এতক্ষণে সেই মেয়েকে দাঁতের ডাক্তারের কাছে পাঠাতো।???
ঐদিকে মাধূর্য ঘরে এসে মুখ ফুলিয়ে বসে আছে। রাহা ঘরের দরজার সামনে এসে ঘরের ভিতর উঁকি মেরে মাধূর্যের অবস্থান দেখে নিল। রাহার পিছনে দাঁড়িয়ে আছে আরিয়ান। সে এসেছে মাধূর্য কে sorry বলতে। নইলে নাকি তার মনে শান্তি আসবে না। যাই হোক, রাহা মাধুর্য কে দেখে নিয়ে আরিয়ানকে হাতের ইশারায় ভিতরে যেতে বলে নিজেও ঘরের ভিতরে ঢুকল। রাহা ঘরে ঢুকলেও আরিয়ান ঘরে না ঢুকে ভদ্রতা বজায় রাখতে দরজায় nock করল। মাধূর্য মুখ তুলে দেখে রাহা তার সামনে আর দরজার সামনে আরিয়ান দাঁড়িয়ে আছে বাচ্চাদের মতো মুখ করে। আরিয়ানের এই বাচ্চাসুোভ চেহারা দেখে মাধূর্যের খুব জোর হাসি পেলেও সে ভাব নিয়ে মুখ ঘুরিয়ে বসে রইল। রাহা বলল,
রাহা – মাধূর্য! ব্রো তোর সাথে কথা বলতে এসেছে। তোকে sorry বলতে চায় আর আমিও সরি রে।
মাধূর্য রাহার দিকে না তাকিয়েই বলল,
মাধূর্য – আমার কারো sorry এর প্রয়োজন নেই।
আরিয়ান এবার দরজার সামনে থেকেই বলে ওঠল,
আরিয়ান – আমি sorry মাডু! Oh sorry, আমি আর তোমাকে নাম দরেই ডাখব না promise। থুমি আমার উপরে রাগ খরে থেখো না। থুমি না ছাইলে আমি আর থোমার সাথে খথাও বলবো না। But, থবুও থুমি আমার উপর রাগ খরে থেখো না। আমি থো আর খদিন পর ছলেই যাব লন্ডনে, থখন আর আমার wrong বাংলাগুলোও শুনথে হবে না থোমায়। so, এই খদিন নাহয় আমাখে এখঠু সহ্য খরে নাও। আমার আর খিচু বলার নেই। ছলে যাচ্চি আমি, bye.
আরিয়ানের কথাগুলো শুনে রাহা মাধূর্য দুজনেরই খুব খারাপ লাগল আর মাধূর্য বুঝতে পারল যে, তার এই ব্যাপারটা নিয়ে এতটা রিয়েক্ট করা ঠিক হয়নি যেখানে সে জানেই আরিয়ানের বাংলায় কথা বলতে কষ্ট হয়। আরিয়ান মুখ ঘুরিয়ে চলে যেতে নিলে মাধূর্য দ্রুত ওঠে বলল,
মাধূর্য – শুনোন!
আরিয়ান থেমে গিয়ে পিছনে তাকাল। মাধূর্য মুচকি হেসে বলল,
মাধূর্য – আমি আমার রাগ তুলে নিলাম আর আপনিও আপনার promise তুলে নিন। না, আপনাকে কষ্ট করে আমাকে মাধূর্যও ডাকতে হবে না আর মাডুও ডাকতে হবে না। আপনি এখন থেকে আমায় মেহরিন বলে ডাকতে পারেন। কি পারবেন তো? নাকি এটাতেও সমস্যা হবে?
আরিয়ান মিষ্টি হেসে বলল,
আরিয়ান – পারব মেরিন।
মাধূর্য কপালে হাত চাপড়ে বলল,
মাধূর্য – এবারও?
আরিয়ানের মুখটা সাথে সাথেই আবার চুপসে গেল। তা দেখে মাধুর্য ফিক করে হেসে দিয়ে বলে,
মাধূর্য – আচ্ছা ঠিক আছে, তবুও ভালো যে মেরিনটা অন্তত একটা নাম হয়েছে। মাডুর থেকে তো মেরিনই ভালো।
আরিয়ান, মাধূর্য আর রাহা তিনজনেই এবার একসাথে হেসে ওঠল।
১৪.
কেটে গেছে দুইদিন। এর মধ্যে রাহার মামা কিসমতের comedy তো আছেই আর সেই সাথে বাড়ি ভর্তি মেহমানদের আনাগোনা। আর এই সবকিছুর মাঝে আরিয়ান এখন মোটামুটিভাবে অনেকটাই স্বাভাবিকবোধ করছে এখানে। প্রথম প্রথম সে এত মানুষ একসাথে দেখে কিছুটা অস্বস্তিবোধ করলেও এখন আস্তে আস্তে সেই সমস্যাটা কেটে যাচ্ছে তার। আর তার একমাত্র কারণ মাধূর্যর সাথে এখন আরিয়ানের অনেকটাই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠেছে। যার কারণে বেশিরভাগ সময়ই সে মাধূর্যর সাথে কাটায় যদিও অনেকেই এই ব্যাপারটা নিয়ে কানাঘুষা করছে কিন্তু যখন দেখছে আরিয়ানের মা-বাবারও মাধূর্যের সাথে খুব ভালো সম্পর্ক তখন আর এই ব্যাপারে সরাসরি তাদের কিছু বলার সাহস পায় না তারা। আসলে এই দুইদিনে আরিয়ানের বাবা রায়হান আর মা মোনালিসাও মাধূর্যের সাথে অনেকটাই মিশে গেছে। রায়হান তো ভেবেই নিয়েছে যে বিয়েতে মাধূর্যর বাবা-মা এলেই তাদের কাছে মাধূর্য আর আরিয়ানের বিয়ের প্রস্তাব রাখবে। আর মোনালিসার সাথে মুলত আরিয়ানই মাধূর্যকে কথা বলিয়ে দেয় আর যেহেতু মাধূর্য শিক্ষিতা- আধুনিক একটা মেয়ে তাছাড়া মাধূর্যের সাথে মিশে আরিয়ানও এখানে অনেকটা better feel করছে তাই মোনালিসারও মাধূর্যকে খুব ভালো লেগে যায়। আর মাধূর্যও মোনালিসার সাথে বেশ ভালোই ভাব জমিয়ে ফেলেছে। ছেলের সাথে সাথে মাও এখন সুযোগ পেলেই মাধূর্যের সাথে গল্প-আড্ডায় মেতে ওঠে। যার কারণে মোনালিসারও এখন আর তেমন একটা বিরক্তি লাগছে না এখানে থাকতে।
আজ রাহা ও আরিয়ানের ফুফু আর তার মেয়ে এসেছে কানাডা থেকে। যদিও রাহার ফুফাতো বোন সানা বাংলাদেশে কখনোই তেমন একটা আসতে চায় না কিন্তু এবার আরিয়ানের আসার খবর পেয়ে সে নিজে থেকেই ওঠে পড়ে লেগেছিল এখানে আসার জন্য। অবশ্য তার মা সেলিমাও চায় আরিয়ানের সাথে তার মেয়ের বিয়ে দিতে কিন্তু আগে দুই দুইবার এই ব্যাপারে আরিয়ানের বাবা-মায়ের কাছে প্রস্তাব দিলেও তারা সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে দেয় কারণ আরিয়ান নিজেই এই প্রস্তাবে না করে দেয়। যাই হোক, আসার পর থেকে আরিয়ানের সাথে সানা বা সানার মা কারোই দেখা হয়নি কারণ আরিয়ান মাধূর্য এবং রাহা আর তার অন্যান্য কয়েকজন কাজিনের সাথে নদীর পাড়ে ঘুরতে গেছিল। সেখানে প্রায় অনেকক্ষণ ঘুরাঘুরির পর রাহারা সবাই বাড়িতে এসে পৌঁছালো। আরিয়ানের একটা phone call আসায় সে call attend করার জন্য সবাইকে বলে phone receive করে বাড়ির দীঘির পাড়ে চলে যায় হাঁটতে হাঁটতে আর রাহারা সবাই বাড়ির ভিতরে চলে যায়। আরিয়ান কথা বলছে প্রায় আধঘন্টা ধরে। এখনো পর্যন্ত সানা আর তার মা আরিয়ানের দেখা না পেয়ে একে ওকে জিজ্ঞেস করছে আরিয়ানের কথা। মোনালিসাকে জিজ্ঞেস করলে মোনালিসা বলে সেও এখনো আরিয়ানকে দেখেনি। এই কথা বলেই মোনালিসা মাধূর্যকে ডেকে নিয়ে তার সাথে করে ঘরে চলে যায় কিছু একটা বলতে। আর এদিকে সানা মাধূর্যের সাথে মোনালিসার এত ভাব দেখে জ্বলে পুড়ে ছারখার হওয়ার অবস্থা। সানা রেগেমেগে নিজের ঘরের দিকে চলে যায়। ঘরে গিয়ে সে বারান্দায় গিয়ে দাঁড়াতেই হঠাৎই তার চোখ পড়ে বাড়ির একপাশের দীঘিটার দিকে। সানা যেন মেঘ না চাইতে জলই পেয়ে গেল। দ্রুত সে দীঘির দিকে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালো। এদিকে মোনালিসা তার ঘরে গিয়ে মাধূর্যকে বলল,
মোনালিসা – Marine my sweet heart, থুমি নাখি খুব বালো শাড়ি পরাথে পারো?
মাধূর্য – জি আন্টি। কিন্তু, কেন?
মোনালিসা – Actually, থোমার uncle আমাখে request খরেছে রাহার wedding এ শাড়ি পরথে। So, আমি ছাই থুমি আমাখে সুন্দর খরে শাড়ি পরিয়ে দাও।
মাধূর্য – Oh sure Aunty, আপনি একদম চিন্তা করবেন না। আপনি যখন বলবেন তখনই আমি আপনাকে শাড়ি পরিয়ে দিতে চলে আসব।
মোনালিসা মিষ্টি হেসে বলল,
মোনালিসা – Good girl. এই জন্যই i like you. but, Marine! where is my Prince? থাকে থো অনেখ ক্ষণ দেখছি না। সে থো থোমাদের সাথেই গেছিল?
মাধূর্য – Aunty don’t worry, উনি মনে হয় বাগানে বা দীঘির পাড়ে আছে। আসলে উনার একটা phone call এসেছিল তাই উনি phone এ কথা বলার জন্য বাড়ির বাইরেই থেকে যায়।
মোনালিসা – ও বালো। ছলো আমরাও একঠু garden থেখে গুরে আসি। থোমার আঙ্খেল থো সেই যে খোথায় গেছে এখনো ফেরার নাম নেই।
মাধূর্য – Okey, চলুন তাহলে বাগান থেকে ঘুরে আসি।
মোনালিসা – Okey, ছলো।
মাধূর্য আর মোনালিসা চলে যায় বাগানের দিকে। ঐদিকে সানা দৌঁড়ে দীঘির কাছাকাছি গিয়ে চারদিকে একবার চোখ বুলিয়ে দেখে নিল আশেপাশে আর কেউ আছে কি না। দেখল যে কেউ নেই আর আরিয়ানও দিঘির দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে কথা বলছে। সানা চুপিচুপি ধীরপায়ে একপা-দুপা করে আরিয়ানের পিছনে গিয়ে দাঁড়িয়ে যেই পিছন থেকে আরিয়ানকে জড়িয়ে ধরতে যাবে ঠিক তখনই আরিয়ান সেখান থেকে সরে অন্যদিকে যেতে লাগে আর সানা গিয়ে ধপাস করে দিঘির পানিতে পড়ে যায়। হঠাৎ করে পানিতে কিছু পড়ার শব্দে আর সানার চিৎকারে আরিয়ান চমকে ওঠে পিছনের দিকে তাকাতেই দেখে সানা পানিতে পড়ে হাবুডুবু খাচ্ছে। আরিয়ান ভ্রু কু্ঁচকে সানার দিকে তাকাতেই সানা ডুবে যাওয়ার অভিনয়টা আরও ভালো করে করতে লাগল আর ও’কে পানি থেকে তোলার জন্য আরিয়ানকে অনিরোধ করতে লাগল। আরিয়ান সেদিকে পাত্তা না দিয়ে phone কানে নিয়েই আবার কথা বলতে বলতে অন্যদিকে চলে যেতে লাগল। আর পানিতে পড়ে সানা বারবার আরিয়ানকে ডাকতে লাগল আর বলতে লাগল,
সানা – Please help me Ariyan baby, আমি ডুবে যাচ্ছি। Please আমাকে উপরে তুলো baby। please save me.
ঐদিকে মাধুর্য আর মোনালিসা হাঁটতে হাঁটতে বাগানে দিকে যেতেই হঠাৎ মাধূর্যর চোখ গেল দীঘির দিকে। তার চোখ দুটো পুরো গোল গোল হয়ে গেল নিমিষেই। সে দেখতে পেল সানা পানিতে পড়ে হাবুডুবু খাচ্ছে ঐদিকে আরিয়ান ঐ জায়গায় থেকেও সেটা দেখছে না। সে এখনো phone নিয়েই ব্যস্ত। মাধূর্য দ্রুত আরিয়ানের নাম ধরে চিৎকার করে ডেকে ওঠল। এবার মোনালিসাও অবাক হয়ে সেদিকে তাকাতেই সেও একই দৃশ্য দেখল। মাধূর্য এবার ছুট লাগাল সেদিকে। মাধূর্যের পিছনে পিছনে মোনালিসাও দ্রুত সেদিকে পা বাড়াল। মাধূর্যকে দীঘির কাছে দৌড়ে যেতে দেখে সানা রাগে দাঁত কিড়মিড় করতে লাগল কারণ তার পরিকল্পনা ভেস্তে যাবে এখন। মাধূর্য দীঘির সামনে গিয়েই অস্থির হয়ে গেল কি করবে ভেবে কারণ মাধূর্য নিজেও সাঁতার জানে না আর ঐদিকে আরিয়ানও phone এ ব্যস্ত। মোনালিসাও দ্রুত ওদের কাছে পৌঁছেই সানাকে বলতে লাগল,
মোনালিসা – Oh no Sana baby, থুমি পানিথে খি খরে পড়ে গেলে?
কথাগুলো বলেই সে দ্রুত আরিয়ানকে ডাকতে লাগল।
মোনালিসা – Prince my son, থাড়াথাড়ি এদিখে এসো। pond এ পড়ে গেছে। Please come fast.
আরিয়ান তার মায়ের গলা শুনে দ্রুত পিছনে ফিরে দেখে তার মা আর মাধূর্য দুজনেই সানাকে পানি থেকে তুলতে অস্থির হয়ে পড়েছে আর সানাও এখনো তার নাটক চালিয়ে যাচ্ছে। আরিয়ান ঠোঁট কামড়ে ধরে দ্রুত মাধূর্যদের কাছে গিয়ে বলল,
আরিয়ান – What happened mom and Marine? থোমরা এখানে খি খরছ?
চলবে-