Mysterious
Part -21
Romoni
বিস্ময়কর ক্ষমতা সম্পন্ন এই পৃথিবীতে কখন কোথায় কে থাকে বা কোথায় কে থাকবে, কার সাথে থাকবে, কি অবস্থায় থাকবে, এসব কিছু কখনো কখনো বিশাল রহস্যে আবৃত থাকে।
আর কিছু বিষয় রহস্যের শ্রী-তে সামঞ্জস্যপূর্ণ, সেটা উন্মোচন করতে গেলেই তার ঠাম ক্ষুন্ন হয়ে যায়, সেটার প্রতি জানার কৌতুহল ঊন (কম) হয়ে পড়ে।
আর আপনার তো প্রতি বিষয়ে কৌতুহল বজায় রাখাটা এক ধরনের আসক্তি ছিলো, তবে এখন তার পরিবর্তন হচ্ছে, আর থাক না হয় এটাও একটা উন্মোচিত না হওয়া রহস্য হয়ে।
এছাড়াও প্রত্যক অনুরই এক নির্দিষ্ট সময়কাল আছে, সে সময় হয়তো বা অতি নিকটে আসন্ন আবার হয়তো বা অতি দুরত্বে সেই সময়কাল।
সঠিক সময় আসুক সব জেনে যাবেন।
কথাগুলো বলে ইয়ান হাতের মুঠো খুলে দেয়, আবার সব সম্পূর্ণ ঘর আলোকিত হয়ে ওঠে, দরজা জানালা গুলো যেনো নিজ দায়িত্বেই যেনো খুলে যায়।
এরপর ইয়ান গোলকটাকে আবার অক্ষি দ্বয় থেকে নিক্ষিপ্ত কৃএিম রশ্মির সাহায্যে অদৃশ্য করে দেয়।
সবসময় নঞর্থক বিশ্বাস বা ধারনা পোষন করা ঠিক নয়, কিছু সময় অতি হতাশাময় পরিস্থিতিতেও ইতিবাচক চিন্তাধারাও মনে রাখতে হয়।
আর আপনিও তা-ই করুন, এতোটা হতাশ হয়ে পরবেন না, কিছু ভালো তো হলেও হতে পারে, তাই না তিশ।
ইয়ান সব কিছু আবার আগের ন্যায় স্বাভাবিক করে দিয়ে, তায়াশার অক্ষি স্পর্শ করে গড়িয়ে পড়া অশ্রু ফোঁটা কনিষ্ঠ আঙুলের সাহায্যে মুছিয়ে দিয়ে কথা গুলো বলে।
তায়াশা ইয়ানের কথায় কোনো কিছু পুনরায় ফিরে পাওয়ার এক লুকায়িত আশ্বাস খুঁজে পায়।
ইয়ান তায়াশাকে বলে, আপনার প্রিন্সেস লকেটটার পিছন এর দিকটায় দেখুন একটা ক্ষুদ্র বালু কনার ন্যায় বাটন রয়েছে,সেই বাটনটায় একবার প্রেস করুন।
তায়াশা প্রিন্সেস লকেটটা গলার থেকে কিছুটা সামনে ধরে এনে, উল্টো করে ঘুরিয়ে দেখে একটা অতি ক্ষুদ্র বাটন রয়েছে, তারপর তায়াশা ইয়ানের কথা অনুযায়ী সেই বাটন এ প্রেস করে দেয়।
বাটনটাতে প্রেস করার সঙ্গে সঙ্গেই লকেটটা থেকে এক অদ্ভুত ধরনের আওয়াজ ভেসে আসতে শুরু করে, আর লকেটটার আকার আকৃতিও নতুনত্বের ছোঁয়ায় আসতে থাকে।
এরপর লকেটটা একটা বেশ পুরোনো টাইমার এর আকৃতিতে পরিবর্তিত হয়ে যায়।
ইয়ান নিজের পকেট থেকে একই রকম দেখতে একটা টাইমার বের করে।
আর বলে, এই টাইমার দুটোর সাহায্যে যখন ইচ্ছে তখন টাইম স্টপ করা যায়, তবে এই দুটো টাইমারের যে কোনো একটা কে প্রত্যেক রাতের মধ্য প্রহরে একবার চন্দ্রিমার আলেক রশ্নির সংস্পর্শে আনতে হয়, তা না হলে এর নির্দিষ্ট পাওয়ার এর প্রখরতায় ঘাটতি ঘটবে।
তখন এটা ব্যাবহার করলে কিছুটা বিলম্বে ফল প্রকাশ করবে।
আর এতোদিন আপনি এই টাইমার এর বিষয় কিছু জানতেন না, তাই আমি আমারটাতেই পাওয়ার সংগ্রহ করেছি, আর দুটোর মধ্যে যে কোনো একটাতে পাওয়ার সংগ্রহ করার কারন হলো, এই দুটোকে এক স্পেশাল পাওয়ার দ্বারা একই বৃওে আবদ্ধ করা হয়েছে।
তাই যে কোনো একটা টাইমার এ পাওয়ার সংগ্রহ করলে অপর টাইমার এ পাওয়ার ট্রান্সফার হয়ে যাবে।
তবে এখন থেকে আমাদের দুজনকেই রোজ রাএির শেষ প্রহর এ একসাথে এই দুটো টাইমার এ পাওয়ার সংগ্রহ করতে হবে, তাহলে এই টাইমার দুটোর পাওয়ার আরো অধিকতম বৃদ্ধি পাবে।
কারন একটায় পাওয়ার সংগ্রহ করলে যতটা পাওয়ার উৎপাদন হয়, দুটোতে পাওয়ার সংগ্রহ করলে তার থেকেও অধিক পাওয়ার উৎপাদিত হয়।
যার ফলে যুদ্ধ ক্ষেএে আমাদের পাওয়ার কোনো ভাবে ঘাটতি পড়লে বা আরো কয়েকগুন বাড়িয়ে তোলার প্রয়োজন হলে এই টাইমার থেকে সংগ্রহ করতে পারবো।
তবে এতে টাইমার এর পাওয়ার একেবারে কমে যাবে না, শুধু এর এর প্রখরতা খানিকটা দুর্বল হয়ে পড়বে।
কিন্তু আবার যদি এটাতে পুনরায় পাওয়ার সংগ্রহিত করা হয় তাহলে আবার আগের ন্যায় কাজ করতে শুরু করবে।
তায়াশা এতোক্ষণ ধরে ইয়ান বলা কথা গুলো শুনে রীতিমতো স্তব্ধ হয়ে ছিলো, তায়াশা এটা ভাবতেই ব্যাস্ত যে,আরো কতো রহস্য আছে, যা তায়াশার এখনো অজানা, এমনকি তায়াশার নিজের ভাবনার ও বাহিরে।
–এই টাইমার এর বিষয় আপনি আমায় আগে বলেন নি কেনো?(তায়াশা)
–আমি তো ভেবেছিলাম আপনি হয়তো বা নিজেই জেনে যাবেন অথবা বুঝে যাবেন, কিন্তু আপনি এতোটাই অলস যে কোনো কিছুর বিষয়ে ঠিক করে খোঁজ অব্দি নেন না।(ইয়ান)
তায়াশা আজ ইয়ানের কথায় রাগ করে না, অবশ্য এর কারনটাও ইয়ান খুব ভালো করেই জানে, যে তায়াশার এই মুহুর্তে মন ভালো নেই, তাই খুব বেশি কথা বলছে না।
নয়তো তায়াশাকে অলস বলায় তায়াশা এতোক্ষণ রেগে যাওয়ার কথা ছিলো, অবশ্য ইয়ান তায়াশাকে রাগানোর জন্যই আর মন ভালো করার জন্য এমন দুষ্টুমি করেছিলো, তবে তাতে কোনো লাভ হয় নি।
— আচ্ছা ইয়ান স্যার, আমি একটা বিষয় লক্ষ্য করেছি, আপনি আঙ্কেল এর বিষয় একটুও চিন্তিত নন, আঙ্কেল যে ইফান এর কাছে বন্দী হয়ে আছে, সে বিষয় আপনি সেদিন ডেভিল দ্বীপ থেকে আসার পরে একবারের জন্যেও কথা বলেন নি, এমন কি আপনাকে সেই বিষয়ে আমি হতাশ হতেও দেখি নি, কেনো বলবেন?
তবে আপনি আপনার মাইন্ড রিড করতেও আমায় বাঁধা দেন, জানিনা আপনি আসলেই আঙ্কেল কে নিয়ে চিন্তিত কিনা?
তবে আপনাকে দেখে মনে হয় না আপনি আঙ্কেল কে নিয়ে একটুও বিচলিত।
আর আমাকেও আঙ্কেল এর কোনো খোঁজ নেওয়ার বিষয়টা থেকে পাওয়ার প্রয়োগ করে দূরত্বে রেখেছেন, যেনো আমি আঙ্কেল এর বিষয় ইফান এর মনোভাব, কি করেছে ও আঙ্কেল এর সাথে অথবা আঙ্কেল কোথায় আছে, কি অবস্থায় আছে সেসব বিষয় এ কোনো রকম তথ্য না পাই।
এই সব কিছুর মানেটা আমার কাছে একটু পরিষ্কার করবেন?
ইয়ান তায়াশার কথায় মুচকি হেসে বলে, যখন সবটা জানতে পারবেন তখনো কি ড্যাড এর বিষয়ে এই উদ্বেগ টা স্থায়ী থাকবে?
থাকবে না, আর না থাকাটাই স্বাভাবিক।
তাই বলি কি , এখন থেকেই ড্যাড কে চিন্তা করাটা বন্ধ করে দিন, কেনোনা এরপর আপনি আবারও আরো একটা প্রতারনার স্বীকার হওয়া সত্যির সম্মুখীন হতে চলেছেন।
–মানেহ? (তায়াশা)
— মানে?
একটু ধৈর্য ধরুন নিজের অক্ষি সম্মুখে-ই প্রমান পেয়ে যাবেন। (ইয়ান)
দুজনের কথার মাঝেই ইয়ানের ফোনটা বেজে ওঠে, আর ইয়ান ফোনটা হাতে নিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়।
আর তায়াশা টাইমার এর সেই একই বাটনটা আবার প্রেস করে দেয় এবং টাইমারটা পুনরায় লকেট এ পরিনত হয়।
তারপর তায়াশা ঘর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্য পা বাড়িয়ে কিছুটা এগিয়ে গিয়েও থেমে গিয়ে নিজের ডান পাশে তাকায়।
তখন তায়াশা দেখে, ইয়ানের একটা ছবি বড় ফ্রেম বন্দি করে বাঁধানো রয়েছে দেয়ালে, আর তার ঠিক পাশেই রয়েছে বিগ এলফাবেট এ লেখা আছে SIHAN RAYAD.
তায়াশা ছবিটার দিকে এগিয়ে গিয়ে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সেই নামটার দিকে, আর বোঝার চেষ্টা করছে এটা কার নাম?
হঠাৎ করেই তায়াশা সেই লেখাটার উপরে হাত ছোঁয়ায়, আর তায়াশা হাত ছোঁয়াতে ই সম্পূর্ণ নামটা বদলে গিয়ে ব্রাকেট এর ভেতরে দুটো বড় হাতের এলফাবেট ভেসে ওঠে (S.R.).
আর Sihan Rayad নাম দুটোর প্রথমেও ছিলো SR।
আর নামটা ইয়ানের ছবির পাশেই ছিলো, তাই তায়াশার আর বুঝতে বাকি থাকে না যে এই SR এর পূর্ণ রুপ সিহান রায়াদ।
এবার খুশি তো আপনি এস আর এর পূর্ণ রুপ জেনে, এতোদিন তো শুধু নামটার প্রতি কৌতুহলী ছিলেন, আশা করি আর কোনো কৌতুহল নেই আপনার।
ইয়ান তায়াশার পেছন থেকে কথাটা বলে।
তায়াশা পেছনে ঘুরে দেখে ইয়ান দাঁড়িয়ে আছে।
তারপর ইয়ান এগিয়ে এসে ছবির ফ্রেম এর পাশে থাকা কয়েকটা বাটন এ প্রেস করে দেয়, আর সেই নামটা মুহুর্তেই মিলিয়ে যায়।
তায়াশা প্রতি উওরে বলে, আপনি বিরক্ত হন না ইয়ান স্যার?
— কেনো?(ইয়ান)
–এই যে এতো রহস্যের মাঝে নিজেকে ডুবিয়ে রাখতে। (তায়াশা)
–নাহ, ভালো লাগে #MYSTERIOUS হয়ে থাকতে। (ইয়ান)
–তাহলে নামটা আমায় জানিয়ে দিলেন কেনো?
আর নামটা এখানে এভাবে রেখেছেন কেনো, আগে তো ছিলো না।
আবার এখন নামটাকে হাইড করে দিলেন যে?(তায়াশা)
–আপনার জন্য। (ইয়ান)
–কেনো? (তায়াশা)
–এটা না হয় অজানাই থাক। (ইয়ান)
To be continue…