সে আদরের অন্য নাম পর্ব-১০

0
433

? #সে_আদরের_অন্য_নাম ?

১০ম পর্ব

উজান সন্ধির রুমে গিয়ে সন্ধির বিছানায় চিৎ হয়ে শুইয়ে গা টা মেলে দিলে হিয়া প্লেটে করে বিরিয়ানি সাজিয়ে উজানের সামনে গিয়ে দাড় হয়

হিয়াঃ উঠুন

উজানঃ কি এগুলো

হিয়াঃ খাবার

উজানঃ তুমি খাইয়ে দিবে

হিয়াঃ না

উজানঃ তাহলে নিয়ে যাও,আমি খাবো না

হিয়াঃ কেনো

উজানঃ হাত দিয়ে মেখে খেতে ইচ্ছে করছে না তাই

হিয়াঃ সকাল থেকে তো কিছু খাননি

উজানঃ তোমার কি

হিয়াঃ আমার কিছুই না

উজানঃ তাহলে

হিয়াঃ আপনি খুব খারাপ একটা লোক আপনি কি জানেন

উজানঃ জানি

হিয়াঃ একটা অসভ্য লোক আপনি

উজানঃ আর

হিয়াঃ কি করে মানুষকে কষ্ট দিতে হয় সেটাই শুধু জানেন আপনি

উজানঃ আর কিছু

হিয়াঃ না___খেয়ে নিন খাবার টা আপনি,আমি আপনার কথা ভেবেই রান্না টা করেছি

উজানঃ কেনো করেছো

হিয়াঃ আমার ইচ্ছে হয়েছে তাই

উজানঃ এরকম ইচ্ছের কারণ

হিয়াঃ আচ্ছা লোক তো আপনি,একটার পর একটা ঘুরিয়ে প্রশ্ন করেই যাচ্ছেন,এতো প্যাচাইন্না কবে থেকে হলেন

উজানঃ হোয়াট প্যাচাইন্না

হিয়াঃ আপনি কি খাবেন

উজানঃ বললাম তো খাইয়ে দিলে খাবো

হিয়াঃ (একটা দীর্ঘশ্বাস টেনে)উঠে বসুন__এটাই ফাস্ট আর এটাই লাস্ট

উজান একটা মিচকে হাসি দিয়ে উঠে বসে,আর হিয়া গোল গোল লোকমা বানিয়ে উজান কে মন মতো করে খাওয়াতে থাকে,খাওয়াতে খাওয়াতে কখনো এগিয়ে দেয় পানির গ্লাস,উজান তো এমন করে খাচ্ছে যেনো সে বহুবছর থেকে না খেয়ে আছে,হিয়ার লোকমা বানানোর আগেই ওর মুখের খাবার পেট অবধি চলে যাচ্ছে এরকম,দশমিনিট ধরে হিয়া দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে উজানকে খাইয়ে দিতে থাকে কিন্তু কেউ কারো সাথে কথা বলে না,উজান আপাতত ওর খাবার খাওয়া নিয়ে ব্যস্ত তার অন্য কোনো দিকে মন নেই হিয়ার দিকেও না

উজানঃ শেষ হয়ে গেলো

হিয়াঃ হ্যা আরো খাবেন

উজানঃ আছে আরো

হিয়াঃ আছে বক্সের সব প্লেটে জায়গা হচ্ছিলো না তাই

উজানঃ যাও গিয়ে সব নিয়ে আসো

হিয়াঃ এমনিতে তো অনেকগুলো খেলেন,পরে না হয় আবার

উজানঃ জানপাখি তুমি কি আমার খাবারে নজর দিচ্ছ(ভূ কুচকুে)

হিয়াঃ আমার এতো সময় নেই___আনছি

হিয়া মুখ ভেংচি কেটে বক্স থেকে সব বিরিয়ানি নিয়ে এসে আবার উজান কে খাওয়াতে শুরু করে

হিয়াঃ কেমন করে খাচ্ছে দেখো__রাক্ষস একটা___আরে এতো খেলে তো পেট ফেটে সব বের হয়ে যাবে

উজানঃ কি হলো দেও

হিয়াঃ দিচ্ছি

বক্সের সব বিরিয়ানি শেষ হয়ে আসলে

উজানঃ এটাও শেষ

হিয়াঃ আর কতো!!!!

উজানঃ আর নেই

হিয়াঃ না নেই,আমি দু বক্স এনেছিলাম এক বক্স আপনার জন্য আর এক বক্স আপুর জন্য

উজানঃ সন্ধির জন্য

হিয়াঃ হুম

উজানঃ যাও গিয়ে সন্ধির জন্য যে বক্স টা এনেছো ওটা নিয়ে এসে আমাকে খাইয়ে দেও

হিয়াঃ আপনার মাথা ঠিক আছে পুরো এক বক্স শেষ করলেন আর কতো খাবেন__আর আমি ওটা আপুর জন্য এনেছি আপনি কেনো ওটাতে ভাগ বসাতে চাইছেন

উজানঃ আমি তোমাকে আনতে বলছি তুমি আনো

হিয়াঃ আচ্ছা খাদক তো আপনি,আমি পারবো না,আমি ওনার জন্য এনে এখন ওনাকে গিয়ে বলবো যে আপু আমার বিরিয়ানি ফেরত দিন আমাকে,আমার মান সম্মান বলে কি কিছু নেই নাকি

উজানঃ ঠিক আছে তোমাকে যাওয়া লাগবে না,আমি আনছি

হিয়াঃ একদম না__ভুলেও এ কাজ করার চেষ্টা করবেন না,অনেক খেয়েছেন আর না

উজানঃ তুমি বললেই আমি শুনবো

হিয়াঃ আরে কোথায় যাচ্ছেন,এই যে শুনুন,আরে

উজান গিয়ে সন্ধির কাছ থেকে সন্ধির বিরিয়ানির বক্স টা এনে হিয়াকে খাইয়ে দিতে বললে হিয়া কপট রাগ দেখিয়ে বলে সে পারবে না,উজান কিছু না বলে নিজে গিয়ে হাত না ধুয়েই পুরো বক্স বসে বসে গিলতে শুরু করে

হিয়াঃ ভাইয়া দেখুন আপনি যেভাবে খাচ্ছেন এরপর কিন্তু আপনার পেট ডাকাডাকি করবে,সাথে আপনার বুকেও জ্বালা করবে,আপনার মাথা ব্যাথা করবে__হয়েছে এবার থামুন না এবার কিন্তু সিরিয়াসলি পেট ফুটো হয়ে যাবে আপনার___দেখুন এতো বিরিয়ানি খেলে কিন্তু ভুড়ি হয়ে যাবে আপনার তখন এক্সট্রা জিম করতে হবে এক্সট্রা ওয়ার্কআউট করতে হবে করবেন,

উজানঃ পানি

হিয়াঃ নিন ধরুন গিলুন___শুনুন না সব শেষ করবেন আপুর জন্য একটু তো অনন্ত রাখুন__ভাইয়া দেখুন এতো খেলে শরীর খারাপ করবে ভাইয়াআআআআ

উজান হিয়ার কথায় পাওা না দিয়ে চপচপ করে সবটা শেষ করে বক্স গুলো রেখে ভেসিনে গিয়ে হাত ধুতে থাকে,হিয়া তো পুরো অবাক উনি দু বক্স বিরিয়ানি শেষ করলো কোনোরকম থামাথামি ছাড়া,উনি কি সত্যি এতো খান,নাকি আজকেই শুধু,তাহলে বাড়িতে ওনাদের প্রত্যেকদিন কতো কেজি করে চাল লাগে,ইনি তো একটা হাতি হাতিও বুঝি ওনার থেকে কম খান___হিয়ার এসব ভাবনার মাঝে উজান এসে টুক করে হিয়ার ওরনা দিয়ে ওর হাত আর মুখ মুছে নিয়ে একটা ঢেকুর তুলে

উজানঃ জানপাখি বিরিয়ানি টা কিন্তু অনেক টেস্টি ছিলো

হিয়াঃ ধ-ন্য-বা-দ(বোকার মতো উজানের দিকে হা করে তাকিয়ে থেকে)
______________

সন্ধি এক প্লেটে ভাত বেড়ে হিয়াকে খাইয়ে দিছে কারণ সে জানে এরপর উজান হিয়াকে ধরলে আর ছাড়বে না

সন্ধিঃ আমার জন্য একটুও রাখেনি

হিয়াঃ সরি আপু,উনি এরকম করে সব খাবে জানলে আমি আরো রান্না করে নিয়ে আসতাম,সরি

সন্ধিঃ আরো রান্না করে আনলেও তোমার বর সব খেয়ে নিতো

হিয়াঃ তাও কথা যেভাবে গপ-গপ করে রাক্ষস গুলোর মতো খাচ্ছিলো

সন্ধিঃ ঔ যে বললাম তুমি চলে যাবার পর থেকে ঠিক মতো করে খেতো না তাই আজকে ইচ্ছে মতো করে পেটের ক্ষুধা মিটিয়েছে

হিয়াঃ হুমমম

সন্ধিঃ এখন সে তার চোখের ক্ষুধা মেটাতে প্রস্তুত

হিয়াঃ মানে

সন্ধিঃ একটু পর হলেই বুঝবা

হিয়াঃ আপু আর খাবো না প্লিজ

সন্ধিঃ কেনো আমার রান্না বুঝি ভালো হয়নি

হিয়াঃ না না তা না রান্না টা তো অনেক স্বাদের হয়েছে কতোদিন পর এরকম ছোট মাছের চ্চচরি খাচ্ছি__আমাদের তো ঔ হোস্টেলে এক বেলা ডাল ভাত তো রাতে কখনো বড় মাছ না হলে কখনো মুরগী খুবি বিরক্তি কর

সন্ধিঃ তাহলে আমি বরং যাওয়ার সময় তোমার জন্য এক বাটি চ্চচরি দিয়ে দেবো কেমন

হিয়াঃ হুমম খুব ভালো হবে

সন্ধিঃ তা উনি কোথায়,কি করছে রুমে

হিয়াঃ কি আবার সিগারেট গিলছে

সন্ধিঃ তুমি মানা করতে পারো না

হিয়াঃ আমি কে যে মানা করবো,আর আমি মানা করলেই যেনো উনি শুনবেন,কখনোই না

সন্ধিঃ মানা করেই দেখো একবার

হিয়াঃ না গো আপু,বললাম না ওনার কোনো ব্যাপারে আমি আর ইন্টারফেয়ার করবো না,উনি থাক ওনার মতো

সন্ধি হালকা হেসে হিয়াকে পানি দিয়ে হিয়ার মুখ মুছে দেয়,হিয়ার খাওয়া হলে উজান দুম করে এসে হিয়ার হাত ধরে টেনে হিয়াকে সন্ধির রুমে নিয়ে গিয়ে গেট লাগিয়ে দেয় আর যাওয়ার আগে সন্ধিকে বলে যেনো তাকে আর এখন ডিস্টার্ব না করা হয়,প্রতিউওরে সন্ধি শুধু হেসে যায়__এদিকে উজান রুমে এসে হিয়াকে বিছানায় বসিয়ে দিয়ে সন্ধির ঘরের জানালার পর্দা গুলো পুরো মেলে দিয়ে লাইট ওফ করে বিছানায় শুইয়ে পড়ে

হিয়াঃ এটা কি হলো আমি আপুর কাছে যাবো

উজানঃ (একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে) হিয়া তুমি চলে যাবার পর আমি একটা রাতো ঠিক মতো করে ঘুমোতে পারিনি

কথাটা বলেই উজান পাশ ফিরে যায়,হিয়া বুঝে উজানের কথার মানে কি উজান এখন চাইছে হিয়া যেনো ওকে একটু জড়িয়ে ধরে তাহলে সে একটু ঘুমোবে শান্তি করে,কিন্তু তাতে ওর কি,হিয়া কিছুক্ষণ বসে পা ঝুলিয়ে কিসব চিন্তা করতে করতে উজানের পাশের বালিশ টায় গিয়ে উজানের পিঠ বরাবর উল্টো হয়ে শুইয়ে পড়ে,উজান পাশ ফিরে হিয়াকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে হিয়ার মাথার চুলে একটা স্নেহের চুম্বন এঁকে দিয়ে নিজের সম্পূর্ণ ভার হিয়ার উপর দিয়ে গভীর ঘুমে ঢলে পড়ে

বাহিরে কড়া রোদ,পর্দার ফাঁক দিয়ে খানিকটা আলো এসে অন্ধকার ঘর টাকে অনেকটাই আলোকিত করেছে,অন্ধকারের মাঝে আলোর জলরঙ না আলোর মাঝে অন্ধকারের জলরঙ বোঝা মুশকিল,মাথার উপর ফ্যান ঘুরছে ফুল স্পীডে তবুও কোথাও থেকে ভেসে আসছে গরমের উষ্ণ তাপ,হিয়ার কোমড় জুড়ে শক্ত করে আছে উজানের বেষ্টন,হিয়ার ঘাড়ে এসে পড়ছে উজানের নিশ্বাসের গরম উওাপ

হিয়াঃ উনি এতো ভারীইইই কেনোওওও,আমার তো দম আটকে আসছে___আর ওনাকে দেখো কীরকম নাক ডেকে ডেকে ঘুমোচ্ছে মানে নাক ডাকছে না তবু এতো জোড়ে নিশ্বাস নিচ্ছে আমার তো ঘাড়ের কাছে সুরসুরি লাগছে__এজন্য কি আপু তখন বললো যে এখন পেটের ক্ষুধা মিটিয়ে উনি চোখের ক্ষুধা মেটাতে প্রস্তুত,হায় রে কপাল আমার কি করবো আমি এখন,এই লোক যে কতোক্ষণ এরকম করে ঘুমোবেন কে জানে

হিয়ার মেজাজ পুরো খারাপ হয়ে যায় ওদিকে উজান হিয়ার উপর নিজের সমস্ত ভর দিয়ে গভীর ঘুমে মগ্ন অন্য দিকে হিয়ার চোখে এক ফোটাও ঘুম নেই বেচারি ওর সামনে বিছানার সাথে লাগানো জানালাটার পর্দার দিকে তাকিয়ে মিটমিট করে তাকাচ্ছে আর উজানের ঘুম কখন ভাঙ্গবে তারি অপেক্ষায় আছে

দু’ঘন্টা হয়ে যায় উজানের কোন হেলদোল নেই সে আগের মতোই একই ভঙ্গিতে ঘুমিয়ে আছে,হিয়ার এবার প্রচন্ড রাগ উঠে,ও আর এক পাশ হয়ে থাকতে পারবে না আর কতো,হিয়া এবার ওর হাত দিয়ে দুমদাম উজানের হাত ধরে উজানকে ঝাঁকাতে থাকে,মাঝেমধ্যে তো দু একটা চিমটি ও কেটে দেয়

হিয়াঃ এই যে শুনছেন,উঠুন না,আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে,আচ্ছা লোক তো আপনি,ও হ্যালো শুনছেন__আরে আমি দম আঁটকে শেষ হয়ে যাচ্ছি আর আপনি এরকম নিশ্চিন্তে ঘুমোচ্ছেন,ভাইয়াআআ উঠুন নাআআ,এই যে

হিয়ার টানাহেঁচড়ার চটে উজানের ঘুম ভেঙ্গে গেলে উজান পুরো রেগে উঠে

উজানঃ কি সমস্যা তোমার?

হিয়াঃ সমস্যা মানে,আপনি জানেন আপনার ওয়েট কতো আর ঘুমিয়ে সেটা কয় ডবল ওয়েটে টার্ন করছে কোনো খেয়াল আছে?

উজানঃ তো

হিয়াঃ তো মানে,আপনি ওরকম করে আমার উপর ভর দিয়ে শুইয়ে আছেন আমার কষ্ট হচ্ছে না

উজান একটা দীর্ঘ শ্বাস টেনে হিয়ার উপর থেকে নিজেকে সারিয়ে চিৎ হয়ে শুয়ে উল্টে হিয়াকে ওর উপর শুইয়ে দিয়ে লেপ্টে ধরে

উজানঃ এখন আর কোনো সমস্যা

হিয়াঃ না কিন্তু

উজানের এরকম ঝারি খেয়ে হিয়া একদম চুপ হয়ে উজানের কানের কাছে মুখ লুকিয়ে নেয়,এদিকে উজান আবার সেই হিয়াকে নিয়ে মুহুর্তের মধ্যেই ঘুমে ডুবে যায়

হিয়াঃ এর চাইতে তো প্রথমেই ভালো ছিলো চোখ মেলে কিছু তো দেখতে পারতেছিলাম,আর এখন তো এই সাদা সাদা কান আর গাল ছাড়া কিছুই চোখের সামনে আসছে না,আর সাথে তো ডিসকাউন্ট স্বরুপ এই খোঁচা খোঁচা দাঁড়ি গুলোর গুঁতো তো আছেই____হুম!!

বেলা প্রায় চারটে বেজে যায়,উজানের বুকের সাথে লেপ্টে কখন যে হিয়া নিজেও ঘুমিয়ে পড়ে সে খেয়াল ওর থাকে না,কিন্তু সে ঘুম আবার বেশিক্ষনের না,হিয়ার ঘুম ভাঙ্গলে হিয়া দেখে উজান তখনো ওকে লেপ্টে কি সুন্দর বাচ্চা দের মতো করে ঘুমোচ্ছে,হিয়া ওর মুখ তুলে কিছুক্ষন উজানের দিকে তাকিয়ে থেকে উজানের পুরো মুখে ওর ঠোঁটের নরম ছুইয়ে দেয়

হিয়াঃ কি বানিয়েছে দেখো চেহারা টার অবস্থা,চোখে মুখে কি রকম ক্লান্তির ছাপ,চুল গুলোও কি রকম উষ্কখুষ্ক হয়ে আছে,কোনো যত্ন নেই না নিজের তবে এতো অযত্নের পরো আজ আপনাকে দেখতে যা লাগছিলো না পুরো যেনো বাইক নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা কোনো হিরো কলেজের মেয়ে গুলো তো চোখ দিয়েই চিবিয়ে খাচ্ছিলো আপনাকে,জানেন ওসময় গিয়ে সবাই কে চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করছিলো এই লোক টা কিন্তু আমার বর সো তাকাতাকি উঁকি ঝুঁকি দিয়ে কোনো লাভ নেই বাচ্চারা,অবশ্য সবাই ভালো করেই জানে আমি আপনার কি_________কে ভেবেছিলো আমি আপনার মতো একজনকে কখনো এতো ভালোবাসবো____না তবে আমি এতো সহজে ভুলবো না হুশ হারিয়ে হোক আর না বুঝেই হোক কথা গুলো কিন্তু আপনার মুখ দিয়েই বের হয়েছিলো সেদিন,আর এটাও সত্য আমি কখনোই আপনার সাথে মানিয়ে উঠতে পারবো না__আজকে একটা বিশেষ দিন বলে আমি আপনাকে বাধা দিচ্ছি না কিন্তু না এর পর আমাকে আর আপনার উপর দূর্বল হলে চলবে না,আপনি আপনার মা আপনার বোন সবাই অনেক অনেক ভালো__আপনি চাইলে আমি আপনাকে

হিয়া আর ভাবতে পারে না,চোখের কোণে আসা পানি টা চোখের মধ্যে রেখেই খুব সতর্কভাবে উজানের উপর থেকে আস্তে করে উঠে পড়ে,কিন্তু হিয়ার ওরনা টা আঁটকে যায় উজানের তোলে,কি করবে হিয়া এবার,কিছু মাথায় না আসলে হিয়া ওমনি দরজা খুলে সন্ধির কাছে গিয়ে সন্ধির পাশে বসে পড়ে

সন্ধিঃ কি চোখের ক্ষুধা মিটলো তাহলে

হিয়াঃ না আপু ভাইয়া এখনো ঘুমিয়েই আছে

সন্ধিঃ ভাইয়া এখনো(হেঁসে দিয়ে)

হিয়াঃ না মানে ইয়ে আসলে অভ্যাস আরকি

সন্ধিঃ হুম বুঝেছি

হিয়া আর সন্ধি মিলে বিছানায় বসে গল্প করতে থাকে,এদিকে চারটা পেরিয়ে এখন বিকেল পাঁচ টার কাটা ছুঁই ছুঁই করছে তবু উজানের ঘুম ভাঙ্গার কোনো নামই নেই,প্রায় সাড়ে পাঁচ টার কাছাকাছি উজানের ঘুম ভাঙ্গলে উজান ঘুমুঘুমু চোখে হিয়ার ওড়না টা হাতে নিয়ে সন্ধিদের কাছে এসে হিয়ার পাশে শুইয়ে পড়ে

উজানঃ সন্ধি এক কাপ কড়া করে লিকার দিয়ে চা কর না

সন্ধিঃ এএএএ আবদার!!ঠিক আছে বস করে আনছি

সন্ধি উঠে চা করতে গেলে হিয়া উঠে দাড়িয়ে যায়

হিয়াঃ ভাইয়া আমার ওড়না টা দিন

উজান ভূ কুঁচকে হিয়ার দিকে তাকিয়ে

উজানঃ কি বললা আর একবার বলো

হিয়াঃ বললাম ভাইয়া আমার ওড়না টা দিন

উজানঃ নিজের বিয়ে করা বরকে ভাইয়া বলে ডাকো লজ্জা করে না

হিয়াঃ না করে না,দিন তো

উজানঃ আগে বলো,হ্যা গো আমার ওড়না টা দেও না

হিয়াঃ কি!!ঘুমের নেশা কাটেনি না এখনো

উজানঃ কেটেছে খুব ভালো করেই কেটেছে জানপাখি

হিয়াঃ দিন তো দিন আমার ওড়না টা দিন

উজানঃ আগে একটু সুন্দর করে বলো

হিয়াঃ সুন্দর করে মানে

উজানঃ ঔ যে যেভাবে শিখিয়ে দিলাম

হিয়াঃ আমি পারবো না

উজানঃ তাহলে আমি ওড়না দেবোও না

হিয়াঃ আচ্ছা লোক তো আপনি__দিবেন না তো আপনি,ঠিক আছে রাখুন ওটা আপনার কাছে আমি সন্ধি আপুর কাছে আরেকটা ওড়না নিয়ে পড়ে নেবো

উজানঃ আমি ওটাও খুলে নেবো জানপাখি তুমি কি ভাবো আমায় আমি তোমার মতো ইডিয়ট

হিয়াঃ যা ইচ্ছে করুন আপনি__আর কি তখন থেকে জান পাখি জান পাখি করে যাচ্ছেন খুবি বিরক্ত লাগছে শুনতে

উজানঃ বিরক্ত লাগছে মানে আমি কতো ভেবে এই নাম টা সিলেক্ট করেছি তুমি জানো

হিয়াঃ তাই নাকি,তা কি আছে এই নামে যে এতো ভাবতে হয়েছে আপনাকে

উজানঃ বলবো শুনো তাহলে,দেখো হিয়া মানে আমি যতোদূর রিসার্চ করে জেনেছি সেটা হলো হৃদয়

হিয়াঃ আপনি আমার নাম নিয়েও রিসার্চ করেছেন

উজানঃ হুম একটা মাএ বউ আমার একটু নামই তো রিসার্চ করেছি

হিয়াঃ হুম তারপর

উজানঃ তো হৃদয় এ কি থাকে থাকে জান মানে জীবন আর উজান মানে হচ্ছে___এক মিনিট তুমি বলো তো উজান মানে কি

হিয়াঃ জানি না

উজানঃ সত্যি জানো না

হিয়াঃ না মানে জানি

উজানঃ কি জানো

হিয়াঃ জানি মানে উজান মানে আকাশ

উজানঃ নিজে থেকে জেনে বলছো না আম্মু বা অবো কারো কাছ থেকে শুনে

হিয়াঃ আন্টি বা অবোর কাছ থেকে কেনো শুনতে হবে গুগল কি শুধু আপনার একার নাকি

উজানঃ তারমানে তুমি আমার নামের মানে জানতে গুগল কে প্রশ্ন করেছিলে,কি ব্যাপার তলে তলে তাহলে এতো

হিয়াঃ বুঝেছি ঘুমের নেশা কাটেনি এখনো আপনার,দাড়ান এক বালতি পানি এনে ঢেলে দিলে তবেই আপনার নেশ কাটবে

উজানঃ আচ্ছা আমাকে বলতে তো দেও,তো আকাশে স্বাধীন ভাবে বিচরণ করে কে?পাখি, আর তুমি তো আমার জান মানে আমার পাখি তাই তো জানপাখি?

হিয়াঃ বাহ ভাইয়া আপনার এতো সুন্দর লজিক দেখে তো আমি পুরো টাসকিতো

উজানঃ আবার তুমি আমাকে ভাইয়া ডাকছো

হিয়াঃডাকছি____শুনুন আমার একটা নাম আছে হিয়া,হিয়া মুনতাসীর আহমেদ আমাকে ও নামে ডাকলেই আমি বেশি খুশি হবো,বুঝতে পারছেন

হিয়ার হাত ধরে হিয়াকে হ্যাচকা টেনে হিয়ার কোমড় জরিয়ে

উজানঃ ওটা এখন হিয়া মুনতাসীর আহমেদ না ওটা এখন হিয়া মুনতাসীর শাহরিয়ার

হিয়াঃ সত্যি কি তাই

উজানঃ মানে

হিয়াঃ আপনি মুখে বলছেন কথা টা ঠিকি কিন্তু মন থেকে কি আপনি আমাকে আদৌও কখনো আপনার ওয়াইফ ভাবতে পেরেছেন

উজানঃ হিয়া (অস্ফুটে)

হিয়াঃ এতো অবাক হচ্ছেন যে ভুল কিছু কি বলেছি আমি

উজানঃ হ্যা বলেছো এখনো বলছো

হিয়াঃ তাই কি

উজানঃহ্যা তাই__কেনো আমাকে তুমি এখনো ভুল বুঝছো হিয়া কেনো,আমার এই কষ্ট গুলো কি তোমার কিছুই চোখে পড়ছে না,তোমাকে দেখতে না পাওয়ার কষ্ট,তোমার সাথে কথা বলতে না পারার কষ্ট,তোমাকে নিজ হাতে আগলে না রাখার কষ্ট কোনোটাই কি তোমাকে ভাবাচ্ছে না__হিয়া তুমি জানো আজ আমি কতোদিন পর এভাবে টানা পাঁচ ছ ঘন্টা ঘুমোলাম,কতোদিন পর নিজ হাতে পেট ভরে খেলাম তার কোনো খেয়াল রাখো তুমি,রাখো না রাখলে জানতে তোমার দূরে যাওয়া টা কতো টা কাঁদিয়ে ছে আমায়,রাতে ঘুমোতাম আর এক ঘন্টা পর পর জেগে উঠতাম কিসের জন্য জানো তোমাকে হারানোর ভয়ে ভয় হতো তোমাকে নিয়ে,তুমি হোস্টেলে কি রকম আছো কি খাচ্ছ,আবার তোমার জ্বর হলো কি না কতো কতো চিন্তা হতো আমার তুমি জানো,কতোবার তোমার রুমমেট ইভেন তোমাদের খালা কে দিয়েও বলেছি হিয়া কে প্লিজ একটাবারের জন্য বাহিরে আসতে বলুন একটা বার কিন্তু তুমি আসো নি,আমি তবু তোমার অপেক্ষায় ছিলাম,আম্মুকে বা অবোকে আর কতো জিঙ্গেস করতাম তোমার কথা ওরাও তো বিরক্ত হয়ে যেতো,এই একটা মাস কতো টা কেঁদেছি তোমার জন্য তোমার কোনো ধারণা নেই হিয়া কোনো ধারণা নেই

হিয়াঃ ভালো অভিনয় জানেন তো দেখছি

উজানঃ হিয়া!!

হিয়াঃ কোনটা বিশ্বাস করবো বলুন আজকে এই মুহুর্তে আপনার বলা কথা গুলো না সেদিন আপনি রুপম ভাইয়া কে যেগুলো বলছিলেন ওগুলো

উজানঃ হিয়া বিশ্বাস করো ওগুলো একটাও আমার মনের কথা ছিলো না

হিয়াঃ আপনার কথা ছিলো তো!!

উজানঃ হিয়া আমি

হিয়াঃ যে ছেলে তার ঋণ মেটাতে আমাকে বিলিয়ে দিতে পারে সে যে আসলেই আমাকে কখনো সত্যি ভালোবেসেছিলো এটা আমি কি করে বিশ্বাস করবো আপনি বলুন

উজানঃ হিয়া রুপমের সাথে আমার সব কথা হয়ে গেছে ও আমাকে বুঝিয়েছে আমার ভাবনা টা ভুল,হিয়া রুপম আর তোমাকে ভালোবাসে না হিয়া,ও আমাকে বলেছে আমি যেনো তোমাকে সব সত্যি টা বলে দেই যে আমি তোমাকে ভালোবাসি,তোমার সাথেই বাকি জীবন টা পার করতে চাই বিশ্বাস করো

হিয়াঃ হাসালেন শাহরিয়ার সাহেব খুব হাসি পেলো আপনার কথা টা শুনে__আচ্ছা একটা কথা বলবেন,সত্যি সত্যি উওর দেবেন কিন্তু

উজানঃ বলো

হিয়াঃ রুপম ভাইয়া যদি আপনাকে না বুঝিয়ে এটা বলতো যে ঠিক আছে তুই হিয়াকে ডিভোর্স দিয়ে দে আমি হিয়াকে বিয়ে করতে চাই তখন আপনি কি করতেন!!____ডিভোর্স এর নাম করে বিলিয়ে দিতেন তো আমাকে রুপম ভাইয়ার কাছে

উজানঃ_____

হিয়াঃ কি হলো চুপ করে আছেন যে,নেই কোনো উওর

উজানঃ______হিয়া আমি

হিয়াঃ যেদিন আমি সত্যি সত্যি অন্য কারো কাছে চলে যাবো না সেদিন আপনি আমার কদর টা বুঝবেন,ভালোবেসেছি আপনাকে,কিছু না ভেবেই শুধু বিশ্বাসের জোরে সেদিন কটেজে আপনাকে আমার সবটা দিয়েছিলাম কিন্তু আপনি তো আমাকে পরিশোধের সামগ্রী হিসেবেই ব্যবহার করতে যাচ্ছিলেন

হিয়ার কথায় উজান এবার পুরো বাচ্চাদের মতো করে কেঁদে উঠে,কেউ বুঝতে চাইছে না কেউ না,ও তো হিয়ার ভালোর জন্যেই,ও যে খুব ভালোবাসে হিয়াকে

উজানঃ আই এম সরি হিয়া

হিয়াঃ খবরদার কাঁদবেন না,এটা মানুষের বাসা____তাও কাঁদছেন আপনি,আমার কিন্তু ভীষণ রাগ আসছে?

উজানঃ হিয়া আমি হেল্পলেস ছিলাম ও সময় টা,তোমার কেউ আমাকে বুঝতে চাইছো না,শুধু কি করে আমার উপর সবটা চাপিয়ে দেওয়া যায় তাই করছো তোমরা__একবার তো মনে হচ্ছিল রুপম বুঝি আমাকে তোমায় ভিক্ষে দিয়ে গেলো,তারপর তো তুমি,মনে হচ্ছিল আমি সেদিন নিজেকে সংযত করে তোমাকে আগলে না রাখলে এতো কাহিনি হতো না,তোমার জীবনে এতো কষ্ট হতো না,তোমার জীবনে যতো কষ্ট সব সব তো আমার জন্য হয়েছে আমি না থেকে রুপম থাকলে হয়তো ও তোমার এতো বড় ক্ষতি টা হতে দিতো না ও আরো যত্ন করে তোমাকে আগলে রাখতো,আমার চাইতেও রুপমের ভবিষ্যৎ টা অনেক সিকিউর হিয়া রুপম আমার চাইতেও ফিউচারে অনেক এগিয়ে যাবে তুমি যদি ওকে বিয়ে করতে তাহলে হয়তো তুমি আরো ভালো থাকতে,হিয়া আমি না জাস্ট পাগল হয়ে গিয়েছিলাম ঔ সময় টা,না পারছিলাম তোমাকে রুপমের সাথে সহ্য করতে না তোমাকে গিয়ে বলতে হিয়া আমি তোমাকে ভালোবাসি,হিয়া আমার দম আঁটকে যাচ্ছিলো আমি আর পারছিলাম না হিয়া আমি তো জাস্ট____

উজান আর কিছু বলার আগে হিয়া উজানের গালে একটা সপাটে চড় বসিয়ে দেয়,উজান তো পুরো থ এখন বেচারা না পারছে কাঁদতে না কিছু বলতে,

হিয়াঃ আপনি যে একটা কাপুরষ সেটা কি আপনি জানেন,আপনার পেছনের মেরুদণ্ড টাও মনে হয় কখনোই ছিলো না

উজানঃ হিয়া

হিয়াঃ কি করে ভাবলেন রুপম ভাইয়ায় ফিউচার বেশি সিকিউর বলে আমি তার কাছে ভালো থাকবো__ছিঃ___এতো দিন এতো দিন আমার সাথে মেশার পরো আপনি বোঝেন নি আমি শুধু আপনাকেই ভালোবাসি অন্য কাউকে না___you know আপনি না আমাকে ডিজার্ভ ই করেন না রুপম ভাইয়া ইস বেটার দেন ইউ,আপনার মতো একটা স্পাইনলেস ছেলেকে কি করে এই হিয়া মুনতাসীর ভালোবেসেছিলো সেটা ভেবেই এখন আমার লজ্জা হচ্ছে ভীষণ

উজানঃ হিয়া তুমি আবার আমাকে ভুল বুঝছো

হিয়াঃ আমার যা বোঝার আমি বুঝে গেছি,প্লিজ আপনি আমাকে আমার হোস্টেলে দিয়ে আসুন আমি আর একটা মুহুর্ত আপনার সাথে থাকতে চাই না

উজানঃ হিয়া

হিয়াঃ প্লিজ ভাইয়া

উজান কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে চোখমুখ মুছে হিয়ার গায়ে ওড়না টা জড়িয়ে দেয়,তারপর হিয়াকে নিয়ে সোজা নিচে নেমে বাইক স্টার্ট করে,এদিকে সন্ধি এতো করে রিকুয়েষ্ট করে চা টা অনন্ত খেয়ে বের হো কিন্তু উজান সে কথা কানেই তুলে না

বাইকে কেউ কারো সাথে আর একটা কথা বলে না,শুধু মাঝপথে হিয়া বাইক টা থামিয়ে উজানকে বলে আপনি বসুন আমি একটু আসছি,হিয়া গিয়ে সামনের একটা ফুলের দোকান থেকে প্রায় ১০০টার মতো গোলাপ কিনে তোড়া বানিয়ে নিয়ে আবার বাইকে উঠে পড়ে,ফুলের তোড়া টা অনেক বড় হওয়ার হিয়া ওটা লুকাতে পারে না,উজান আড় চোখে খেয়াল করে কিন্তু কিচ্ছু না বলে আবার বাইক স্টার্ট দেয়,বাইক গিয়ে থামে হোস্টেলের আগে একটা গলির মোড়ে

হিয়া নামলে উজান বাইক টা চাবি দিয়ে নিজেও বাইক থেকে নেমে পড়ে,হিয়া ফুলের তোড়া টা হাতে নিয়েই

উজানঃ পরশু আমার পরীক্ষা শেষ,তারপর হয়তো সামনের শুক্রবার আমি ঢাকা শীফট করবো

হিয়াঃ হুম শুনেছি

উজানঃ আম্মু চাইছে তুমি তোমার পরীক্ষার পর এডমিশনের কোচিং টা ঢাকাতেই শুরু করো

হিয়াঃ আন্টি না আপনি

উজানঃ যদি বলি আমি তুমি বিশ্বাস করবা

হিয়াঃ মন থেকে বললে কেনো বিশ্বাস করবো না

উজানঃ তুমি তো আমার মন থেকে না বলা কথা গুলোই আঁকড়ে ধরে আছো হিয়া

হিয়াঃ (একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে)নিন এটা আপনার জন্য

হিয়া ফুলের তোড়া টা উজান কে এগিয়ে দিলে উজান একটু অবাক হয়ে ওটা হাতে নেয়

হিয়াঃ শুভ জন্মদিন?

উজানঃ তুমি কি করে জানলে আজ আমার

হিয়াঃজানি___________আমি হয়তো আপনাকে নীলিমা আপুর মতো ব্রান্ডের কোনো ঘড়ি বা শার্ট উপহার দিতে পারবো না আমার সামর্থ্য তো খুবি সামান্য তাই আমার তরফ থেকে এই ছোট্ট একটা গিফট আপনার জন্য

উজানঃ হিয়া(হালকা রেগে গিয়ে)

হিয়াঃ আমি জানি আপনি এগুলো হয়তো কয় একদিন আপনার ঘরে সাজিয়ে রাখবেন তারপর হয়তো এগুলো শুকিয়ে গেলে বাড়ির সামনের কোনো ডাস্টবিনে ফেলে দেবেন তবু যে কয় দিন এগুলো আপনার ঘরে থাকবে আমার মনে হবে আমি হয়তো আপনার আশেপাশেই আছি

কথা টা বলেই হিয়ার চোখে পানি চলে আসে

হিয়াঃ আপনি তো আর বাকি সব গিফটের মতো এগুলো আপনার আলমারিতে সাজিয়ে রাখবেন না!!___যাই হোক আপনি চাইলে আমাকে ছেড়ে নীলিমা আপুকে বিয়ে করতে পারেন আমি আপনাকে আটকাবো না আপনি আজ থেকে আমার কাছ থেকে মুক্ত

উজানঃ তাহলে তুমি কাঁদছো কেনো

হিয়াঃ ভালোবেসেছি আপনাকে তাই কান্না আসবে এটাই তো স্বাভাবিক নাকি আমাদের মতো গরীব ঘরের মেয়েদের কান্না করবার সেই অধিকার টুকুও নেই

উজানঃ হিয়া স্টপ

হিয়াঃ ভালো থাকবেন নতুন জীবন শুরু করতে যাচ্ছেন দোয়া করবো আপনার অফিস লাইফ টা অনেক সম্মানের হয় যেনো,আপনি যেনো অনেক এগিয়ে যেতে পারেন সামনে,আল্লাহ তা’লা যেনো আপনার পরিশ্রমের বিনিময়ে হাজারটা সাফল্য দিয়ে ভরিয়ে দেয় আপনাকে

উজানঃ আমার সাফল্যের অংশীদার কি তুমি না হিয়া,বলে আমাকে

হিয়াঃ______আসছি সামনে তো আমার পরীক্ষা দোয়া করবেন আমার জন্য

হিয়া একটা হাসি দিয়ে ওখান থেকে চলে গেলে উজান হিয়ার যাওয়ার শেষ ছায়াটা পর্যন্ত তাকিয়ে থাকে,এদিকে চোখ দিয়ে তো তার অনবরত পানি ঝরছে

___________________?_________________
সবার রিকুয়েষ্ট এ আরেকটা পার্ট দিলাম আশা করবো ভালো লাগছে গল্প টা?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here