সে আদরের অন্য নাম পর্ব-১১

0
442

? #সে_আদরের_অন্য_নাম ?

#পর্ব_১১

উজান ওর পরীক্ষা দিয়ে শুক্রবারের ফ্লাইটে ঢাকায় চলে আসে,এসে ওদের অফিস থেকে একটু দূরে ওর এক মামার বাড়িতে শীফট করে,উজানের এই মামার বাড়ি টা যেনো কোনো বাড়ি না আস্ত একটা রাজমহুল,উজান সাত তলার যেই ফ্লাট টাতে উঠেছে ওটাতে তিনটে বড় বড় রুম সহ বিশাল বড়ো ডাইনিং ড্রয়িং,কিচেনের কথা তো বাদই দিলাম,বারান্দা গুলো কি সুন্দর খোলামেলা আর কত্তো বড়ো,টাইলস থেকে শুরু করে ফ্লাটটার বাকিসব কোণা গুলো আধুনিকতার মিশ্রণে ভরপুর,পুরো যেনো রাজকীয় কারবার,কিন্তু এই ফ্লাটের আপাতত কিছু কাজ বাকি মানে দুটো বাথরুম এখনো কম্পিলিট হয়নি,উজান ওর মামাকে বলেছে এখন আর কাজ করতে হবে না ও যখন সব গুছিয়ে নেবে তখন যেনো লোক এসে বাকি যা আছে সব ঠিক করে দেয়__তাই উজান যে রুমের ওয়াশরুম টা ঠিক ঔ রুমে উঠে,ঔ রুম টার সাথে আছে একটাই বিশাল বারান্দা আর বারান্দার এ পাশ টায় অন্য কোনো বিল্ডিং না থাকায় সাত তলার এই বারান্দা থেকে পুরো ঢাকা শহর টা কি যে রকম সুন্দর দেখতে লাগে বলে বোঝানো মুশকিল,আপাতত উজান ওর নিজের রুমের জন্য একটা বিছানা সাথে মাঝারি দেখে একটা কাবাড আর সুন্দর দেখে একটা ড্রেসিং টেবিল এনে রেখেছে,আর ডাইনিং এর জায়গাটায় আছে একটা বিশাল ফ্রীজ আর যেহেতু উজান ডাইনিং ছাড়া খেতে পারে না তাই জন্য কিনে নিয়েছে একটা ছ সিটের ডাইনিং,আর ওপাশের ঘর টায় আছে একটা তোষক ওটা উজানের কেনা না আগে থেকেই ছিলো ওখানে__এই তো হয়ে গেলো এখন উজান ঠিক করেছে ও আর কিছু কিনবে না এরপর হিয়া এলে হিয়া ওর পছন্দ মতো না হয় ওদের এই টোনাটুনির ফ্লাট টা সাজাবে!!

দেখতে দেখতে সময় গুলো কী রকম ভাবে কেটে যায়,উজান ঢাকায় গিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে অফিসের নানা কাজ নিয়ে এদিকে হিয়া ব্যস্ত হয়ে যায় পরীক্ষার পড়াশুনো নিয়ে,উজান তাও কাজের ফাঁকে হিয়াকে ফোনে নক করতে থাকে কখনো হিয়া উজানের ফোন রিসিভ করলো তো করলো,তো কখনো একদমই অফ,উজান জানে হিয়াকে বুঝিয়ে আর লাভ নেই,হিয়ার কাজই হচ্ছে কিছু হলেই এখন উজানকে ভুল বোঝা,তাই এসব জিনিস এখন উজানের গা সাওয়া হয়ে গেছে কারন মেইন ভুল টা যে তার সেটা সে এতোদিনে খুব ভালো করেই রিয়েলাইজ করেছে তাই হিয়া ফোনে হাজার টা ঝারি দিলেও উজান বেহায়ার মতো পরেরদিন ঠিক আবার হিয়াকে ফোন করে

দেখতে দেখতে হিয়াদের প্রাক্টিকেল থেকে শুরু করে সব পরীক্ষাও শেষ হয়,পরীক্ষা কি রকম হলো এটা জানতে চাইলেও হিয়া উজান কে কোনো উওর দেয় না,এমনকি অবো ওর পেছনে বসে পরীক্ষা দিলেও সে অবোকেও পর্যন্ত বলে না কারণ জানে অবো জানা মানে তার ভাইয়া জানা,আর এটা সে কিছুতেই হতে দিতে পারে না__এদিকে উজান ঢাকায় অবন্তী আর হিয়া দু’জনের কোচিং এর ব্যবস্থা করে রাখে আগে থেকে,এখন কথা হচ্ছে অবন্তী করবে ইন্জিনিয়ারিং কোচিং আর হিয়া করবে মেডিকেল তাই দুজনের কোচিং তো আলাদা হলো কিন্তু এরপর__বাসবি ঠিক করে অবন্তী ওর শান্তা খালামনির সাথে ঢাকায় থেকে পড়বে আর হিয়া উজানের কাছে থেকে,আর কিছু দিন পর বাসবি গিয়ে থাকবে অবন্তীর সাথে,কারণ হিয়া উজান অনেকদিন আলাদা ছিলো তাই বাসবি চায় এই কয়েকটা মাস ওরা নিজেদের মতো করে থাকুক এতে যদি দুজনের মধ্যে কার দূরত্ব টা কমে,হিয়া প্রথমে না করলেও বাসবির কথা ফেলতে পারে না কারণ পরীক্ষার আগে হোস্টেলে থাকার ওর আবদার টা বাসবি পূরণ করেছে এবার বাসবির আবদার রাখার পালা আসছে হিয়ার,হিয়া তাই বাধ্য মেয়ের মতো অবন্তী দের সাথে ঢাকায় চলে আসে,দুদিন হিয়া অবন্তীর সাথে বাসবিকে নিয়ে ওর খালা বাড়িতে থাকলেও,আজ উজানের এসে সবার সাথে কিছু কেনা কাটা করে হিয়াকে নিয়ে ফাইনালি ওর ফ্লাটে শিফট করবার কথা

হিয়ার মনে অনেকটা অভিমান জমা থাকলেও হিয়া ঠিক করে হিয়া সব অভিমান ভুলে ওদের এই সম্পর্ক টাকে আর একটা সুযোগ দিবে,নতুন জায়গা নতুন লোকজন,নতুন পরিবেশ আর এই নতুনত্বের ছোঁয়ার হিয়া চেয়েছিলো সবকিছু আরো একবার নতুন করে শুরু করতে,এদিকে হিয়ার মনের এই ইচ্ছের সাথে উজানো নিজেকে তৈরি করতে থাকে, আজকে হিয়া প্রথম আসবে ওর বাড়িতে,হিয়া যতোই রাগ করুক উজান ঠিক করে ও হিয়াকে আর কিচ্ছু বলবে না,যেভাবে হোক হিয়ার মন গলিয়ে হিয়াকে নিয়ে জীবনের অপূর্ণ থাকা অধ্যায় টা আবার পূর্ণ করবে,,তাই সে আজ কাজের বুয়োকে সকাল সকাল আসতে বলে ওর ঘরবাড়ি সব গুছিয়ে নেয় একদম পরিপাটি করে,বুয়োকে বলে আজ যেনো মুরগীর রোস্ট আর সাথে বুটের ডাল রান্না করে রেখে যায় হিয়া এলে হিয়াকে যেনো আর কোনো রান্না করতে না হয়,উজান ঠিক করে হিয়ার জন্য সে আজ অনেক কিছু কিনবে যেমন হিয়ার জন্য একটা পড়ার টেবিল,হিয়ার জন্য কিছু নতুন ঘরের জিনিস,হিয়ার কিছু নতুন ড্রেস থেকে শুরু করে কতো কি তাই তো কয়েকদিন আগে মাসের যে বেতন টা পেয়েছিলো সে টা সে পুরোটা জমিয়ে রাখে

উজানঃ আম্মু আর তো কিছু কেনা বাকি নেই না তোমাদের,আমার সব কম্পিলিট,

বাসবিঃ তোর বোন আবার জেদ ধরছে তার নাকি আলাদা কাপড় রাখবার জন্য ছোট আলমারি চাই

উজানঃ কেনো খালা বাসায় কি কাবাড নেই

বাসবিঃ আছে কিন্তু তোর বোন তো জানিস বারবার গিয়ে শান্তার কাছে চেয়ে চেয়ে কাপড় পড়ার মেয়ে না

উজানঃ আচ্ছা ও কি চায় ওকে কিনে দিও,আমি এই জিনিসগুলো গাড়িতে রেখে আসছি

বাসবিঃ ঠিক আছে,আমি উপরে আছি ওরা উপরে সবাই কি যে কি যে কিনছে কে জানে

উজানঃ একটা জিনিস কিছুতেই আমার মাথায় আসছে না আমরা এসেছি আমাদের মতো করে,আঁখি দের আবার এর মধ্যে আসার কি ছিলো

বাসবিঃ আমি কি করবো বাবা,জানিসই তো ওরা কিরকম,এমনিতে তোর ফুফুরা সেদিনের পর থেকে ক্ষেপে আছে,এখন আবার মানা করলে কি রকম হয় না ব্যাপার টা,হাজার হোক ওরা তো তোর বাবার বোনের মেয়ে

উজানঃ বোন না অন্য কিছু___আসছি আমি

উপরে হিয়া অবন্তী,ওদের সাথে এসেছে আঁখি সহ উজানের আরো অনেক কাজিন,ওরা কিসব ওরনামেন্টস এর দোকানে গিয়ে ওগুলো নিয়ে পড়ে পড়ে দেখছিলো,হিয়ার এদের সবার মাঝে থাকতে একটু ইতস্তত লাগে,এরা কতো সহজেই কতো টাকা খরচ করে পছন্দের জিনিসগুলো কিনছে,হিয়া তবু ওর ইনসিকিউরিটি টুকু কাটিয়ে চেষ্টা করে ওদের সাথে হাসিখুশি ভাবেই মেলামেশা করতে,কিন্তু আঁখি তো এমনিতে সেদিনের পর হিয়াকে সহ্য করতে পারে না তার উপর বাকি সব কাজিন রাও খুব একটা পাওা দেয় না হিয়াকে____বাসবি উপরে এসে আলাদা করে নিজের জন্য কিছু কিনতে চাইলে বাসবির কিছু টাকা শর্ট পড়ে বাসবি অবন্তী কে জিঙ্গেস করে ওর কাছে আছে কি না,অবন্তী বলে না আম্মু আমি একটু আগে একটা ব্রেচলেট কিনে সব টাকা শেষ করে ফেলেছি,বাসবি ও সময় আচমকাই জিঙ্গেস করে হিয়ার কাছে আছে নাকি আসলে বাসবির নিজেরো ওসময় খেয়াল ছিলো না হিয়ার কাছে কোথা থেকে টাকা আসতে যাবে,হিয়া বাসবির উওরে বলে ওর কাছে দু হাজারের মতো আছে হবে কি না,কিন্তু দু হাজারে হতো না তাই বাসবি ওটা বাদ দিয়ে অন্য কিছু দেখতে শুরু করে,আঁখি রা হিয়াকে ছোট করার জন্য বাসবি কে টাকা দিতে চাইলেও বাসবি বলে লাগবে না উজান আসলে ও তখন কিনে নিবে__সবার সব কেনা শেষ হয়ে গেলে সবাই নিচে নেমে আসে আর এই সুযোগে হিয়াকে একা পেয়ে আঁখি রা সবাই হিয়াকে যা নয় তাই বলে খুঁচিয়ে অপমান করতে থাকে

আঁখিঃ সামান্য দু হাজার টাকা সাথে নিয়ে ঢাকা শহরের মতো একটা জায়গায় পড়াশোনা করতে আসছো

হিয়াঃ মানে বুঝলাম না আপু

আঁখিঃ এতো ন্যাকামো করো কেনো

হিয়াঃ আমি সত্যি বুঝতে পারছি না আপনার কথা

প্রমাঃ ধুর ছাড়তো শুধু শুধু ওকে নিয়ে পড়ে আছিস কেনো তখন থেকে,ওদের মতো মেয়েরা তো জেনে বুঝেই ভাইয়ার ঘাড়ে ঝুলেছে,দেখলি না ভাইয়াকে,কি রকম করে সব টাকা বিলিয়ে মেয়েটার জন্য কতো কি কিনলো__এছাড়া কোচিং-এর ফি বই খাতা যাতায়াত সব মিলিয়ে কতো খরচ করতে হয় এসবের পেছনে ওর কোনো ধারণা আছে,সবটাই তো এখন ভাইয়াই দিবে হাজার হোক হাসবেন্ড বলে কথা

হিয়াঃ আপনারা এভাবে কেনো বলছেন,আমি তো ওনাকে বলিনি আমার জন্য এসব কিনতে বা করতে উনি তো নিজে থেকে

অবন্তীঃ এই হিয়া থাম তো,কিসের এতো ব্যাখা দিচ্ছিস এদের তুই,তুই ভাইয়ার ওয়াইফ,ভাইয়া তোর পেছনে টাকা খরচ করবে না তো কার পেছনে করবে আজব

হিয়াঃ অবন্তী তুই থাম,আমাকে বলতে দে

আঁখিঃ ইদানীং অবন্তীরো দেখছি মুখে অনেক কথা হয়েছে__শুনো অবন্তী তোমার এই সো কলড বান্ধবী যে তোমার ভাইয়ার টাকা দেখেই ফাঁসিয়ে হোক আর যেভাবে হোক বিয়ে টা করেছে এটা তুমি অস্বীকার করলেও আমরা ঠিকই বুঝি

অবন্তীঃ তুমি কিন্তু আবার বেশি বেশি বলছো আপু,ডাকবো ভাইয়াকে

প্রমাঃ শোন অবো ভাইয়াকে তোরা সবাই সত্যি বলতে না পারলেও আমি পারি,আর আঁখি তো ভুল কিছু বলেনি ভাইয়ার সাহায্য ছাড়া কি হিয়া পারবে এই ঢাকা শহরে সারভাইভ করতে,ওকে তো রোজ রোজ ভাইয়ার কাছেই হাত পাততে হবে

অবন্তীঃ হাত পাততে হবে মানে,আমি কিন্তু এবার আম্মুকে ডাকবো আপু

হিয়াঃ অবো থাম

আঁখিঃ তোমাদের মতো মেয়েদের দয়াই করা যায় বুঝলা,এতো যে মানুষের দয়া নেও মাঝে মাঝে কি একটুও লজ্জা করে না তোমার

অবন্তীঃ দয়া টা আসলে কে নেয় আপু একটু ভালো করে ভেবে দেখো তো,আমার বাবার টাকা দিয়েই তো নিজেদের বিজনেস টা দাড় করিয়েছ আর এখন তোমরাই আসছো আমাদের দয়া কি জিনিস সেটা শেখাতে

অবন্তী আর কিছু বলবে তার আগেই হিয়া ওর নিজের উপর সব অনুভূতি হারিয়ে দৌড়ো গিয়ে বাহিরে পার্কিং এড়িয়াতে গিয়ে দাড় হয়

বাসবিঃ ঔ তো হিয়া,হিয়া

হিয়াঃ জ্বী আন-টি

বাসবিঃ এখন তো আমাদের ফেরার সময় হচ্ছে,আমি হয়তো আর দু একদিন অবন্তীর কাছে থেকে সিলেট ফিরে যাবো,আমি চাই নতুন শহরে এসে সবটা নতুন করে তোমরা শুরু করো,আমার ছেলেটার খেয়াল রেখো কেমন,আমি আসছি

হিয়ার কানে এখনো আঁখিদের বলা কথা গুলো ভাসছে তাই বাসবির কথা হিয়ার কিছুটা কানে ঢুকলেও বাকি টা মাথার উপর দিয়ে বেরিয়ে যায়,উজান গাড়ির দরজা খুলে দিলে হিয়া বাসবিকে একবার জরিয়ে একটা মেকি হাসি দিয়ে গাড়িতে উঠে পড়ে,এদিকে উজান বাসবিকে অনিকের গাড়িতে তুলে দিয়ে নিজে এসে হিয়ার কাছে বসে গাড়ি ড্রাইভ করতে শুরু করে,উজানের মনে আজ এক অন্য রকম অনুভূতি যাক তাহলে হিয়া ফাইনালি ওর সাথে থাকছে কিন্তু হিয়া,এতোকিছু শোনার পর যে হিয়া আবার সেই সেদিনের কষ্ট টার মতো মনে আঘাত পেলো,হিয়াকি পারবে আবার সেই আঘাত টা সারিয়ে উঠতে!!

গাড়িটা বাড়ির ভেতরে পার্ক করে গাড়ি থেকে নেমে উজান হিয়ার হাতে তিন চারটে ব্যাগ দিয়ে বাকি গুলো নিজে নিয়ে হিয়াকে নিয়ে লিফটে উঠে পড়ে,গাড়ি থেকে এখন অবধি উজান হিয়াকে হাজারটা কথা বললেও হিয়া কোনো রেসপন্স করে নি,হিয়ার মাথায় এখনো সেই কথা গুলো চরকির মতো ঘুরপাক খাচ্ছে তো খাচ্ছেই,উজান হিয়াকে নিয়ে লিফট থেকে নেমে ওর ফ্লাটের কাছে গিয়ে দাঁড় হয়

উজানঃ আজ মনটা কতো ভালো লাগছে জানো হিয়া__আমি আজ আর গেট খুলে একা এ বাড়িতে ঢুকবো না আজকে আমি তোমাকে নিয়ে একসাথে__ধন্যবাদ হিয়া আমার সাথে আবার সবটা নতুন করে শুরু করবার জন্য__আসো,

উজানের কথায় হিয়া শুধু ওর দুচোখ ভরে উজানের দিকে তাকিয়ে থাকে,কেনো করছে উজান এরকম,কিসের এতো আনন্দ ওর,হিয়া তো ওর যোগ্য না

উজান গেট খুলে দিয়েই কোনোরকম ওর শু গুলো খুলে,হাতের প্যাকেট গুলো ফ্লোরে ছুড়ে দিয়ে,হিয়ার হাতটা গপ করে ধরে হিয়াকে নিয়ে পুরো ওদের ফ্ল্যাট টা ঘুরে ঘুরে দেখাতে শুরু করে এখানে এটা আছে ওখানে ওটা আছে,এটা কেনা এখনো বাকি ওটা কেনা এখনো বাকি,এটা এভাবে সাজাবে ওটা ওভাবে সাজাবে কতো কতো আনন্দ আজ উজানের মনে

উজানঃ হিয়া এটা হচ্ছে আমাদের বেড রুমের বারান্দা দেখো,দেখলে__এখান থেকে পুরো ঢাকা শহর টা তুমি দেখতে পারবা see__নিচে নিচে দেখো পুরো একটা প্লে গ্রাউন্ড এখানে মাঝে মাঝে অনেক কনসার্ট হয় জানো কতো নামি-দামি সিংগাররা এসে নাকি গান করে আমি শুনেছি___আর একটু পর তো সন্ধ্যা নামবে তখন যখন সব আলো জ্বলবে তুমি জাস্ট অবাক হয়ে দেখবে তোমার মনে হবে জ্যামে ভরা শহর টা কি করে এতো সুন্দর হতে পারে!!আর একটা মজার জিনিস দেখো__আরে আসো না এদিকে(হিয়াকে জড়িয়ে নিয়ে)__এই দেখো আরে ওদিকে দেখো__ঔ যে ঔ নীল বিল্ডিং টা দেখছো ঔ যে একটা মাথা দেখা যাচ্ছে ঔ বিল্ডিং টা থেকে আর দুটো বিল্ডিং পেড়িয়ে তোমার কোচিং সেন্টার,এই শাখা টায় তো সীট ই ছিলো না ভাগ্যিস আমার এক ফ্রেন্ড ছিলো তাকে বলে অনেক কষ্টে তোমার জন্য সীট টা ম্যানেজ করেছি__বাসা থেকে হেটে যেতে হায়েস্ট দশ মিনিট লাগবে তবে আমি ঠিক করেছি আমার তো সকালে অফিস তো আমি অফিস গিয়েই অফিসের এই গাড়ি টা তোমার জন্য পাঠিয়ে দেবো তুমি ওটাতে করেই__তবে আমি চেষ্টা করবো নিজে এসে তোমাকে নিয়ে যেতে,দেখি___আর ঔদিকের রুম টায় দুটো বারান্দা আছে দু পাশে কিন্তু ওগুলো ছোট ছোট আর ওখান থেকে দেখার মতো তেমন কিছু নেই,তাই আমি এই রুম টাকেই আমাদের জন্য সিলেক্ট করেছি ভালো করেছি না বলো___ভাবছি এখানে একটা দোলনা লাগিয়ে দেবো তারপর রোজ তোমাকে নিয়ে অফিস থেকে ফিরে দোলনায় বসে রাতের শহর টা গায়ে মাখবো ভালো হবে না বলো

বলতে বলতে উজান হিয়াকে কোলে তুলে নিয়ে রুমে এসে হিয়াকে ওদের বিছানায় শুইয়ে দিয়ে হিয়াকে জড়িয়ে ধরে

উজানঃ আজ আমি অনেক অনেক খুশি হিয়া__কিন্তু তুমি এরকম সাইলেন্ট মুডে কেনো চলে গেলে হঠাৎ,শপিংমলে তো বেশ দেখলাম তোমাকে,আমি তো অবাক হয়ে গিয়েছিলাম যে তুমি আমার সাথে কথা বলছো!!__হুম সত্যি আমি তো ভেবেছিলাম তুমি ঔ আগের মতো হয়তো আমার উপর অভিমান পুষে রেখে আমাকে দূরে সরিয়ে রাখবে কিন্তু যখন তুমি আমাকে দেখে তোমার ঔ হাসি টা দিলা না ইসস আমার তো বুক টা ওখানেই চিন চিন করতে শুরু করছিলো পুরো এ্যাটাক করে ফেলতাম সত্যি,এটা দেখে একটা বোঝা নামলো যে ম্যাডামের রাগ টা তাহলে শেষমেশ কমেছে

প্রায় ২০মিনিট ধরে এতো এতো কথা বলার পর উজান এবার একটা দীর্ঘ শ্বাস টেনে হিয়ার দিকে ঝুকে হিয়ার ঠোঁটে আলতো করে ওর ঠোঁট ছুঁইয়ে দিতে থাকলে কিছুক্ষন পর হিয়া দুম করে উঠে উজান কে সারিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে

উজানঃ হিয়া!!

হিয়াঃ ওয়াশ—-রুম ওয়াশরুম কোথায়

উজানঃ এই তো তোমাকে না বললাম আপাতত একটাই ওয়াশরুম এখনো বাকি গুলোর কাজ বাকি,তুমি আমার কথা শুনো নি

হিয়া কোনো উওর না দিয়ে ওর ব্যাগ থেকে কোনোরকম একটা জামা বের করে ওয়াশরুমে ঢুকে যায়,হিয়ার এরকম আচরণের কারণ এখনো উজানের কাছে অস্পষ্ট কিন্তু এতো অস্পষ্টার মাঝেও উজান খেয়াল করে হিয়ার চোখে পানি ছিলো,উজানের মন কিছুটা হলেও বুঝতে পারে নিশ্চয় হিয়াকে আবার কেউ কিছু বলেছে তাই হিয়া এভাবে,উজান কোনোরকম বিলম্ব না করে অবন্তী কে ফোন করে,অবন্তী উজানকে এক এক করে সব বলে দেয় ওখানে তখন কি হয়েছিলো আঁখি রা কি করে ওকে হিয়াকে অপমান করেছিলো,অবন্তীর কাছে সব শুনে উজান আর নিজের মধ্যে থাকতে পারে না,রাগে দু চোখ রক্তবর্ণ ধারণ করে মুহুর্তে

প্রায় এক ঘন্টার কাছাকাছি হয়ে আসে কিন্তু হিয়া এখনো ওয়াশরুমে,উজান এসে দু তিন বার হিয়াকে ডেকে যায় কিন্তু হিয়া বের হয় না,উজানের বুঝতে বাকি থাকে না হিয়া ভেতরে বসে কাঁদছে,হ্যা হিয়া কাঁদছে খুব কাঁদছে হিয়ার মতো মেয়েদের এই কান্না টাই শেষ সম্বল,কান্না করে করেই তাদের মনের কষ্ট টা তাদেরকে নিজেকেই কমাতে হয় হিয়া এখন তাই করছে,ঝর্ণার নিচে বসে নিজের কমতি গুলো নিয়ে আক্ষেপের পানিতে ভেসে যাচ্ছে হিয়া,চেয়েছিলো তো সবটা শুরু করতে কিন্তু তা না হয়ে আবার আরো একটা আঘাত!!হিয়াও তো মানুষ,বয়স কতো ওর,এ বয়সে এতো ধাক্কা সত্যি কি সামলানো যায়

হিয়াঃ দোষ টা আমার,ভুল টা আমার _____আমার প্রথম ভুল ওনার মতো কাউকে ভালোবাসা দ্বিতীয় ভুল এই সম্পর্ক টাকে আবার একটা সুযোগ দেওয়ার মতো আকাশচুম্বী ইচ্ছে মনে আনা____উনি আবেগে আছেন হ্যা হ্যা হ্যা উনি আবেগে ভাসছেন তাই উনি বাস্তব টা বুঝতে চাইছেন না,কিন্তু যেদিন বুঝবে সেদিন না উনি আমাকে ছাড়তে পারবে না আমি ওনাকে ধরে রাখতে পারবো___ওনাকে বুঝতে হবে আমি ওনার জন্য তৈরি না আর সেটা বেশি দেড়ি হবার আগেই___আমারো তো একটা আত্মসম্মান আছে আমি তো খুব বেশিদিন এভাবে চুপ করে সবটা সহ্য করতে পারবো না,আপু তো কখনো আমাকে এ শিক্ষা দেয়নি,আপু তো আমাকে সমাজে একটা সাহসী মেয়ের চোখে দেখেছে সবসময় আমি আপুর সেই শিক্ষা কে এভাবে সবার কাছে বারবার অপমানিত হয়ে ছোট করতে দিতে পারি না___ভাইয়াকে যখন বাড়িতে মেনে নেই আপু সব ছেড়ে ভাইয়ার কাছে গিয়েছিলো কিচ্ছু ছিলো না তখন আপুর না একটা মাথার ছাঁদ না খাবার,কতোদিন না খেয়ে ছিলো ওরা তবু তো আজ দুজনে প্রতিষ্ঠিত___আমিও আপুর বোন কারো সাহায্য আমার লাগবে না,ঢাকা শহরে টাকা না হলে সারভাইভ করা যায় না তো কিন্তু আমি দেখিয়ে দেবো কারো দয়া না নিয়েই এই হিয়া মুনতাসীর কি করে পড়াশোনা টা চালিয়ে যায়,অনন্ত আয়নার সামনে দাড়িয়ে নিজেকে বলতে তো পারবো আজ আমি যা সবটা আমার নিজের জোড়ে,কারো কাছে হাত পেতে না___অনেক করেছেন ওনারা আমার জন্য আর না,এবার আমার টা আমি একাই দেখে নিতে পারবো

হিয়া নিজেকে শক্ত করে চোখের পানি গুলো মুছে গোসল টা সেড়ে নেয়,অনেকক্ষণ ঝর্ণারর নিচে থাকায় হিয়ার মাথা টা ভীষণ ধরেছে সাথে হাত পা কাঁপছে জ্বর আসতে পারে হয়তো,হিয়া একটা দীর্ঘ শ্বাস টেনে ওয়াশরুম থেকে বের হতে ধরলেই দেখে উজান ওর দু হাত ভাজ করে ওয়াশরুমের গেটের ঠিক সামনেই দাঁড়িয়ে আছে,হিয়াকে বের হতে দেখে উজান নিজের সব শক্তি দিয়ে হিয়ার দু বাহু ধরে হিয়াকে ওর কাছে হ্যাচকা টেনে এনে দাঁত মুখ খিচে উঠে,উজানের চোখে তখন রাগের লাল আগুন জ্বলছে,

উজানঃ কাঁদছিলে কেনো,আঁখি দের কথা ভেবে__কে ওরা আর আমি কে

হিয়াঃ____

উজানঃ তুমি ওদের সব কথা মাথায় নিয়ে ঘুরছো এদিকে যে আমি তোমাকে পেয়ে আজ এতোটা খুশি সেটা তোমার চোখে পড়ছে না

হিয়াঃ____

উজানঃ এই একটা ঘন্টা তুমি নিজে কেঁদেছো সাথে আমাকেও ভেঙে চূড়ে দিয়েছো____তোমার কাছে কে বেশি ইম্পর্ট্যান্ট আমি না ওরা

হিয়াঃ____

উজানঃ ভালোবাসি তোমাকে হিয়া,তুমি কিন্তু এভাবে আমাকে আঘাত করতে পারো না

হিয়াঃ____

উজানঃ কি দেখছো ওভাবে তাকিয়ে,তুমি যদি ভেবে থাকো তুমি এভাবেই অন্যের কথা শুনে আমাকে একটার পর একটা আঘাত করবে তাহলে তুমি আম্মুর সাথে ফিরে যাও,যদি আমি বাদ দিয়ে পৃথিবীর আর সবাই তোমার কাছে ইম্পর্ট্যান্ট হয়ে থাকে তো আমাকে বলো আমি তোমাকে কালই আম্মুর কাছে দিয়ে আসবো

হিয়াঃ দি–য়ে আ–সুন(অস্ফুটে)

উজানঃ হোয়াট!হোয়াট ডিড ইউ সে (হিয়াকে আরো জোরে চেপে ধরে)

হিয়াঃ আমা–কে আমার বাড়িতে–দিয়ে আসুন(অস্ফুটে)

উজানঃ লিসেন হিয়া,যেটা আমি কখনোই করবো না সেটা নিয়ে আমাকে কখনো ফোর্স করবা না,আমার এই জিনিস গুলো প্রচন্ড রাগ লাগে

হিয়াঃ এতে–আপ-নি–ভালো থাকবেন

উজানঃ হিয়া আমি না তোমার সাথে একটা সুন্দর লাইফ লিড করবো বলে তোমাকে এখানে নিয়ে এসেছি,ভুলেও আর কখনো আমার সামনে বাড়ি যাবার কথা বলবা না,এমনকি নিজের চিন্তার মধ্যেও এসব ভাবনা আনবা না_____(একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে)__আসো খাবে আসো

উজান হিয়াকে টানতে টানতে ডাইনিং এ নিয়ে গিয়ে বসিয়ে দেয়,তারপর দু প্লেটে দুজনের ভাত সুন্দর মতো করে বেড়ে হিয়ার পাশের চেয়ার টায় গিয়ে বসে হিয়াকে প্লেট টা এগিয়ে খেতে বলে,

উজানঃ খাও_____হিয়া আমি খেতে বলছি তোমায়_____খাইয়ে দেবো_____হিয়া(অস্ফুটে)

হিয়াঃ খাচ্ছি

হিয়া ওর হাত দিয়ে এক লোকমা ভাত মুখে নিয়ে পরের লোকমা বানাতে প্লেটের ভাত গুলোর সাথে কাটাকুটি খেলতে শুরু করে,খেতে খেতেই হিয়ার আবার মনে পড়ে যায় আখিঁদের কথা ওরা কি করে বললো ভাইয়ার টাকায় খাবে আবার ভাইয়ার টাকায় পড়বে,মুহুর্তে হিয়ার দু চোখ পানিতে ভরে উঠে,এক ফোটা পানি গাল বেড়ে গড়িয়ে পড়ে ভাতের প্লেটে,উজান হিয়ার দিকে তাকিয়ে থাকায় যেটা খুব সহজেই চোখে পড়ে যায় উজানের,উজানের তখন আরো রাগ বেড়ে যায় হিয়াকি বোঝে না হিয়া কাঁদলে ঠিক কতো টা কষ্ট হয় উজানের,উজান খুব সতর্কভাবে হিয়ার চোখের পানি মুছে দিয়ে হিয়াকে খেতে বলে

উজানঃ হিয়া আমার কষ্ট হচ্ছে হিয়া__ডোন্ট ক্রাই

হিয়াঃ না আমি কেনো ওনার খাবার খাচ্ছি,এটা তো ওনার টাকার খাবার,যদি কেউ দেখে ফেলে তখন তো আবার সেই মুখের উপর বলে দিবে আমি ওনার দয়াতে এসব খাচ্ছি__না ওনার কেনা কিচ্ছু আমি খাবো না,আমি ঠিক আমার ব্যবস্থা করতে পারবো কিন্তু ওনাদের দেওয়া কোন কিছু আমি আর ছোঁবো না,নেভার

নিজ মনে কথা টা বলেই হিয়া উঠে পড়ে

উজানঃ কোথায় যাচ্ছ হিয়া__হিয়া স্টপ__হিয়া খাবার টা শেষ করো হিয়া___হিয়া আমার কথা শুনো হিয়া__হিয়া প্লিজ

হিয়া উজানের কথা না শুনে ভেসিনে গিয়ে ওর হাত ধুয়ে রুমে গিয়ে শুইয়ে বালিশে মুখ চাপা দিয়ে কেঁদে উঠে

উজানঃ হিয়া উঠে আসো হিয়া__হিয়া কাঁদবে না হিয়া__হিয়া আমার কথা টা শুনো হিয়া প্লিজ

হিয়া উজানের ডাকে সাড়া দেয় না,উজান ওর প্লেট টা হাত দিয়ে ঠেলে সামনে চটকে দিয়ে টেবিলের উপর হাত রেখে নিজের চুল খামচে ধরে,উজানের মন তো বলছে গিয়ে আঁখি দের গালে ইচ্ছে মতো কয়েকটা কষিয়ে থাপ্পড় দিয়ে আসুক ও,সুযোগ থাকলে সেদিনের মতো আরো দশটা কথা শুনিয়ে দিতো,বেয়াদব মেয়ে গুলো এক একটা,উজান নিজেকে কন্ট্রোল করে হিয়ার প্লেট টা নিয়ে হিয়ার কাছে হিয়াকে খাইয়ে দিতে গেলে দেখে হিয়া তোতোক্ষনে ঘুমিয়ে গেছে,উজান ভালো করে খেয়াল করলে দেখতে পারে হিয়া কাঁপছে হিয়ার জ্বর আসছে হয়তো,উজান দৌড়ে ওসব থুয়ে এসে হিয়ার গায়ে গরম কম্বল জড়িয়ে দিয়ে হিয়াকে ঠিক করে শুইয়ে দেয়

উজানঃ কিচ্ছু খেলো না,গা টা কিরকম কাঁপছে,কে বলেছিলো বাথরুমে এতোক্ষন বসে থেকে নিজের কষ্ট কমাতে

উজান হিয়াকে খাইয়ে দিতে চেয়েছিলো কিন্তু হিয়ার ওরকম ঘুম দেখে সে আর হিয়াকে ডাকেনি__রাতের টুকিটাকি কাজ শেষ করে ফ্রেশ হয়ে এসে লাইট টাইট সব ওফ করে উজান হিয়ার পাশে গিয়ে হিয়াকে আলতো করে জড়িয়ে ধরে____সারারাত উজান আর ঘুমোয় না,একটু পর পর উঠছে আর হিয়াকে দেখে নিচ্ছে সেদিনের মতো যদি জ্বর টা আবার নাড়া দিয়ে উঠে,

উজান উঠছে বারান্দায় গিয়ে পর্দা সাড়িয়ে একটা করে সিগারেট টানছে আবার গিয়ে শুইয়ে পড়ছে,কিছুক্ষন পর আবার উঠছে আবার সিগারেট টানছে আবার গিয়ে হিয়াকে দেখে নিচ্ছে

বারান্দার আকাশ জুড়ে রাতের গভীরতা,সামনের খোলা মাঠ থেকে যেনো এই গভীরতা আরো গভীরে ডুব দিচ্ছে,আশেপাশের সব বিল্ডিং অন্ধকারাচ্ছন্ন তবে কিছু কিছু রুমে এখনো বাতি জ্বলছে,মাঝেমাঝে আকাশ কাপিয়ে উড়ে যাচ্ছে কোন লাল নীল প্লেন বা জেট বিমান,কি মায়া পুরো ঢাকা শহর জুড়ে এই রাতে!!

উজানঃ কতো ইচ্ছে ছিলো এখানে এভাবে দাঁড়িয়ে রাতের এই শহর টা তোমাকে নিয়ে দেখবো,কিন্তু তা আর হলো কোথায়__আমাকে এতো টা আঘাত তুমি দিতে পারো না হিয়া,ভালোবাসি তোমায় খুব ভালোবাসি(সিগারেট টানতে টানতে)

রাত পেড়িয়ে ভর হয়ে আসে,মসজিদ থেকে ভেসে আসে আযানের মধুর ধ্বনি,উজান ওর হাতের সিগারেট টা ফেলে দিয়ে ওজু করে এসে নামাজ টা পড়ে নেয়,নামায পড়া শেষ হলে উজান হিয়ার পাশে গিয়ে বসে কিছু দোয়া পড়ে হিয়ার শরীর টা ঝেড়ে দিয়ে আবার গিয়ে বারান্দায় দাঁড়িয়ে পায়চারি করতে থাকে

পায়চারি করতে করতে উজানের চোখে এবার ঘুম চলে আসে,উজান গিয়ে এই গরমের মধ্যেও হিয়ার কম্বলের ভেতর ঢুকে হিয়াকে জড়িয়ে ঘুমিয়ে পড়ে এবার

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here