হৃদয়ের_কোণে (পর্ব ৪৫)

0
2399

#হৃদয়ের_কোণে (পর্ব ৪৫)
#নাহার
·
·
·
আজকে নিরাদের বাড়িতে এলো দুইজনে। সবাই খুব খুশি। নিরা দরজার কাছে আসতেই ভাই বোন সব দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরে৷ তারপর সবগুলো গোল হয়ে সোফায় বসলো। নিরা নেকাব খুলে বললো,
— পানি আন আমার জন্য। গলা একেবারে শুকিয়ে গেছে।

নাঈম দৌড়ে পানি আনলো। সাথে এক গ্লাস লাচ্চি আনলো। রাফিন বসে অভিমানী স্বরে বললো,
— বোনকে পেয়ে আমাকে ভুলেই গেছে সবাই।

ফাহিম হাসলো। তাড়াতাড়ি করে পানি এবং লাচ্চি আনলো। সবাই গল্প করছে। এরমধ্যে কাশফি এবং তূর্য এসেও হাজির হয়েছে। রাফিন নিরাকে ইশারা দিতেই নিরা উঠে রান্নাঘরে গেলো। মাকে জড়িয়ে ধরলো। বড়মা, চাচি দুইজনকে জড়িয়ে ধরে। মিসেস তানজুম জিজ্ঞেস করলেন,
— তোর শ্বাশুড়ি মা কেমন নিরা?

— আমি এমন শ্বাশুড়ি মা পাবো এটা ভাবলেই মনে হয় স্বপ্ন দেখছি।

মিসেস তানজুমকে জড়িয়ে ধরে বললো,
— বড়মা তোমার ভাইয়ের বউটা এতো ভালো কেনো বলোতো। আমাকে অনেক আদর করে। বলেছি কাজ পারি না। আদর করে বললো উনি সব শিখিয়ে দেবে।

মিসেস রেহানা নিরার কপালে চুমু দিয়ে বললেন,
— আমাদের নিরুপাখিটা তাহলে ভালোই আছে। যাক শুনে মনটা আনন্দে ভরে গেছে।

— চাচি তুমি কিভাবে জানো এই নিরুপাখি নামটা?

তিনজনে মুচকি হাসলেন। মিসেস রেহানা বললেন,
— আমরা ডাকতে পারবো না? শুধুই কি তোমার উনি ডাকতে পারবে?

নিরা বেশ লজ্জা পেলো। মাথা নিচু করে আমতা আমতা করে বললো,
— না না সেটা নয়। তোমরাও ডাকো। কিন্তু কোথায় শুনলে সেটাই জানতে চাইলাম। উনিতো সবার সামনে ডাকে না।

নিরা আরো লজ্জা পেলো। তিনজনে হো হো করে হেসে দেয়। নিরা দৌড়ে বের হয়ে আসে। নিজের রুমে আসে। এখানে সব আগের মতোই আছে। আফিয়া, কাশফি এবং ফাতেমা এসে উপস্থিত হয়েছে। তিনজনে বেডের উপর গোল হয়ে বসেছে। আফিয়া বললো,
— তা ননদিনী কেমন কাটালে এই তিনদিন স্বামীর বাড়ি?

— হুম ভালোই।

কাশফি গুতা দিয়ে বললো,
— দেখি দেখি আঁচল সরাতো। কোনো দাগ আছে নাকি দেখি।

— আপু। কিসব বলছো এসব।

— সেদিন যে আমাকে টিজ করলি তাই আমিও করছি।

তিনজনে হেসে দেয়। নিরা বললো,
— তোমার শ্বাশুড়ি কেমন?

কাশফি বললো,
— আমাকে একদম দেখতে পারে না। শুধু আমাকে না। তূর্যকেও সহ্য করতে পারে না। কতবার বলেছে ঘর থেকে চলে যেতে। কিন্তু তুহিনের জন্য পারে না। তুহিন চুপ করিয়ে দেয়। আর শ্বশুর তো আছেই। তিনিও আমাদের দলেই।

চারজনে হেসে দেয়। কাশফি আবার বললো,
— জানিস তুহিন আগের মতো নেই। আমাকে ভাবি নয় আপু বলে ডাকে। কতযে দুষ্টামি করে। তুহিন তো তূর্য বলতে পাগল। সারাক্ষণ ভাই ভাই করবে শুধু। তোর সাথে যদি তুহিনের বিয়ে হতো তাহলে দুই বোন একসাথে থাকতাম।

নিরা বললো,
— বাদ দাও আপু। তুহিনের সাথে বিয়ে হলে আমি আমার ডাক্তার সাহেবকে পেতাম না। উনার মতো একজনকে জীবনসঙ্গীনী হিসেবে পেয়ে আমি সত্যিই খুব খুশি।

আফিয়া বললো,
— তুহিন নিরার কয়েকদিনের মোহ ছিলো যার কারণে ভুলে গেছে। দোয়া করো, রাফিন ভাইয়ের সাথে যেনো সুখে থাকতে পারে। আর বড় কথা হলো, নিরা দোয়ায় চেয়েছে তুহিনকে কিন্তু নিরার দোয়া থেকে রাফিন ভাইয়ের দোয়ার শক্তি বেশি ছিলো যার কারণে দুইজন এক হয়েছে।

কাশফি নিরার দিকে তাকিয়ে বললো,
— জানিস কৌশিকও অনেক রোমান্টিক। বউকে কোলে নিয়ে ছাদে হাটে। নিজেই রান্না করে খাওয়াবে। ওইযে আফিয়ার ঘাড়ে দেখ ভালোবাসার চিহ্ন।

আফিয়া লজ্জা পেলো। নিরা এবং কাশফি হাসছে।
ফাতেমা তাদের কথাই শুনছে। নিরার কোলে মাথা রেখে মোবাইলে কার্টুন দেখছে। নিচে তুহিন, তূর্য, কৌশিক সবাই আছে। সবাই নিজেদের মতো গল্প করছে। রাফিন আর তুহিন একা বসে ছিলো। তুহিন বললো,
— তুমি লাকি ভাই যার কারণে নিরাকে আমি পেয়েও হারিয়েছি।

রাফিন হাসলো। বললো,
— এখানে লাকি আনলাকি এর ব্যাপার না। যার জন্য যাকে সৃষ্টি করা হয়েছে সে তাকেই পাবে। আগে নিজেকে ঠিক করো তারপর জীবনসঙ্গীও ঠিক হয়ে যাবে।

— হুম। নিজের হাতেই ভালোবাসাকে দূরে ঠেলে দিয়েছি।

— তুমি তোমার জায়গায় একদম পিউর থাকো ভালোবাসা নিজে তোমার কাছে আসবে। ভালোবাসা খুজতে হবে না। আপনা আপনি ধরা দিবে।

যত যাই বলুক তুহিন এখন অনেক আপসোস করে। নিরাকে হারিয়ে নিজেকে শূন্য মনে হয়। এখন মনে হয় নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মেরেছে।

—————————————-
রাতে সবাই ছাদে পাটি বিছিয়ে অনেক গল্পগুজব করলো। বারোটা বাজতেই যে যার যার মতো গিয়ে শুয়ে পরলো। রাফিন নিরার ঘরে আসতেই নিরা বললো,
— আপনি আমার রুমে কি করছেন?

— তো কই যাবো?

— নিজের রুমে যান।

রাফিন শয়তানি হাসি দিলো। দরজা লাগিয়ে নিরার দিকে আগিয়ে আসছে। নিরা ঢোক গিলে পিছাতে শুরু করে। আমতা-আমতা করে বললো,
— ঠিকাছে ঘুমিয়ে পড়ুন। আমিতো মজা করছিলাম।

নিরা পাশ কাটিয়ে যেতে চাইলেই রাফিন দুই বাহুর মাঝে নিরাকে বন্ধি করে। কোমড় টেনে একদম কাছে নিয়ে আসে। ঘাড় থেকে চুল সরিয়ে মুখ গুজে দেয়। নিরা শিউরে উঠে। কিছু বলার আগেই ওষ্ঠদ্বয় চেপে ধরে। কোলে করে বেডে এনে শুয়ে দেয়। নিজেও শুয়ে পরে। নিরাকে নিজের বুকে টেনে এনে বললো,
— ঘুমাও নিরুপাখি।

নিরা রাফিনের খালি বুকে মাথা রাখে। এক আঙুল দিয়ে রাফিনের বুকের লোমগুলো নাড়ছে। রাফিন বললো,
— কি করছো এটা?

— কই কিছু না।

— নিরা হাত সরাও।

— কেনো?

— কাতুকুতু লাগছে।

নিরা হাত না সরিয়ে আরো বেশি করে কাতুকুতু দেয়া শুরু করে। রাফিন নিরাকে বেডের সাথে চেপে ধরে বললো,
— বেশ ফাজিল হয়েছো দেখছি।

— আপনার সাথে করবো না তো কি বাহিরের মানুষের সাথে করবো? বাহিরের মানুষের সাথে করলে তো আপনার রাগ উঠবে।

— বাহ। আমার কথা আমাকেই ফেরত দিচ্ছো,হুম। ভালো।

নিরার বুকে মাথা রেখে শুয়ে পরে। বললো,
— এখন আর সমস্যা নেই। ঘুমাও। আমাকেও ঘুমাতে দাও। নাইলে থেরাপি চলবে।

নিরা আর কিছু বললো না। ঘুমিয়ে গেলো।

——————————
ফজরের সময় নিরারই আগে ঘুম ভাঙলো। রাফিনকে জাগিয়ে দিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো। অজু করে আসার পর রাফিন বললো,
— বাহ আমার বউটা দেখছি লক্ষী হয়ে গেছে।

— বেশি কথা না বলে অজু করতে যান।

রাফিন আর নিরা একসাথে নামাজ পড়ে কোর’আন পড়ে হাটতে বের হয়। আটটার সময় বাড়ি ফরে আসে। নিরা বোরকা খুলে রান্নাঘরে যায়। সবার জন্য রুটি আর ভাজি করে। নিরার মা বেশ অবাক হলেন নিরার মধ্যে এতো পরিবর্তন দেখে। মেয়েটার মধ্যে কেমন যেনো গিন্নি ভাব আর দায়িত্ববোধ চলে এসেছে। সবাইকে টেবিলে নাস্তা সার্ভ করে দিলেন। সবাই খুব আনন্দের সাথে খেয়ে নিলো। রাফিনও খেয়ে নিলো। নিরা খেতে বসে দেখলো এতোটা ভালো হয়নি। নিরা সবাইকে বললো,
— কেমন হেসে হেসে খেয়ে নিলো। অথচ কি বিদঘুটে হয়েছে কেউ কিছু বললেও না।

নিরার মা বললো,
— আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবে।

বড়মা এবং ছোট চাচি বললো,
— ভালোবেসে বানিয়েছিস তাই আমরাও ভালোবেসে খেয়ে নিলাম।

সবার মুখে এই তৃপ্তির হাসি দেখে নিরা মনে মনে তার শ্বাশুড়ি মাকে ধন্যবাদ জানায়।

বিকেলের দিকে নিরা রাফিনের ফ্ল্যাটে ফিরে আসে। হাত মুখ ধুয়ে তনিমা খানমের সাথে গল্পে যুক্ত হোন। আজকের সবকিছুই নিরা খুলে বলে। দুইজনেই গল্প করছে আর প্রাণ খুলে হাসছে। নিরা জানে না একজোড়া চোখ গভীর ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। যেখানে ভালোবাসা রয়েছে।

—————————————
পরেরদিন সকালে রাফিন একই কাহিনি করলো। দরজার সামনে এসে চিল্লিয়ে ডেকে বললো,
— নিরা আমার ওয়ালেট দিয়ে যাও।

নিরা এসে ওয়ালেট দিলো। রাফিন ওয়ালেট নিয়ে নিরাকে কাছে টেনে এনে কপালে চুমু দিয়ে বেরিয়ে যায়।

সন্ধ্যায় রাফিন ফিরে এলো। নিরা চুপিচুপি রুম থেকে বেরিয়ে যাচ্ছিলো। রাফিন পেছন থেকে বললো,
— দাঁড়াও। পালাচ্ছো কেনো তুমি?

নিরা রাফিনের দিকে ফিরে বললো,
— ককই পপলাচচ্ছি?

রাফিন ভ্রু কুচকে নিরার দিকে তাকায়। নিরা হিহি করে হেসে বেরিয়ে যেতে গেলে রাফিন আবারো বললো,
— এই মেয়ে দাঁড়াও। বেশ বুঝতে পারছি আমি। পড়া চুরি করার জন্য পালাচ্ছো। বই খাতা সব নিয়ে এসেছি। আজ থেকে পড়ালেখা শুরু করবে। বই নিয়ে আসো আমার সাথে স্টাডি রুমে।

নিরা বেশ বিরক্ত হলো। সাথে রাগ তো আছেই। রাফিন হুকুম করেই স্টাডি রুমে চলে গেলো। নিরা বই বের করছে আর বিড়বিড় করে বলছে,
— কোথায় বিয়ে করেছি বাচ্চা কাচ্চা নিবো। সংসার করবো। বাচ্চা বড় করবো। তা না করেই পড়ালেখা পড়ালেখা উফ! কে বলেছে এসব বই খাতা বাড়িতে আনতে? নিজে ডাক্তারি পাশ করেছে কম কিসে? আবার আমাকে পড়ানোর জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। যত্তসব।

নিরা রাগে গজগজ করছে। পড়ালেখা যে আবিষ্কার করেছে তাকে পেলে নিরা বই দিয়ে পিটিয়ে বেহুশ করে ফেলতো। কিন্তু এখন কিছুই করতে পারবে না। বাধ্য হয়ে বই নিয়ে রাফিনের কাছে স্টাডি রুমে গেলো। ভেতরে ঢুকেই অবাক হলো সাথে একগাদা বিরক্ত। বিড়বিড় করে বললো,
— এতো পড়ে কি হবে? বেডরুমেও বই এর অভাব নেই। আর এখানে তো বইয়ের গোডাউন খুলে রেখেছে। উফ! অসহ্য।

রাফিন বললো,
— বিড়বিড় বন্ধ করে এখানে বসো।

রাফিনের পাশের চেয়ার দেখিয়ে দিয়ে বললো। নিরা গিয়ে সেখানে বসলো। রাফিন বই উল্টাচ্ছে। নিরা বিরক্ত হয়ে গালে হাত দিয়ে বসে আছে। ইচ্ছে করছে ভ্যা ভ্যা করে কাঁদতে। কিন্তু এখন কাঁদলেই থাপ্পড় খেতে হবে। তাই চুপ করে বসে আছে। রাফিন একটা চ্যাপ্টার বের করে বললো,
— এটা রিডিং পড়ো। এরপর আমি বুঝিয়ে দেবো।

নিরা মনে মনে বললো,
— উফ! কে বলেছিলো জুলোজি নিয়েই পড়তে। এই ডাক্তার ব্যাটা এখন আমার মাথার ভেতরেও পড়ালেখার থেরাপি চালাবে।

— নিরা।

বেশ ধমকের সাথেই ডাকলো। নিরা ভয়ে কেপে উঠে। রাফিনের দিকে তাকালো। আবার বইয়ের দিকে তাকিয়ে রিডিং পড়তে শুরু করে। রাফিন বললো,
— জোরে পড়ো। মনে মনে পড়তে বলিনি।

— আমি কি পড়তে জানি না নাকি? নাকি আমাকে কিন্ডারগার্টেন এর বাচ্চা ভাবে? অদ্ভুত।

মনে মনে কথাটা বলে একরাশ বিরক্তি প্রকাশ করে জোরে জোরে পড়া শুরু করলো। কিছুক্ষণ পড়ার পর রাফিন থামিয়ে দিয়ে বললো,
— কিছু বুঝেছো?

— না।

— না বুঝে ছাগলের মতো ভ্যা ভ্যা করে ডেকে পড়ে লাভ আছে?

নিরা অপমানিত হলো। দাঁড়িয়ে গিয়ে বললো,
— আমি পড়বো না। আপনার ইচ্ছে হলে আপনি পড়ুন।

বলেই হনহন করে হেটে দরজার সামনে আসতেই রাফিনের হুঙ্কার কানে এলো। ভয়ে জড়সড় হয়ে দাঁড়িয়ে যায় দরজার সামনে। রাফিন বললো,
— আর একপা দরজার বাহিরে পরলে আমার থেকে খারাপ কিছু হবে না। তাড়াতাড়ি এসে পাশে বসো। যেটা পড়তে দিয়েছি তাড়াতাড়ি পড়ে শেষ করো।

নিরা রাগে দুঃখে হাত মোচরাতে মোচরাতে এসে ধপ করে চেয়ারে বসে। বইটা নিয়ে পড়া শুরু করে। রাফিন শান্ত স্বরে বললো,
— কাল থেকে ক্লাস শুরু করবে। আগের রেজাল্ট কি হয়েছে আমি জানি না। জানতেও চাই না। কিন্তু এবারের রেজাল্টে যদি সিজিপিএ থ্রি পয়েন্টের নিচে নামে তো বুঝো কি হবে।

রাফিন উঠে দরজার সামনে চলে আসে। বেরিয়ে যাওয়ার আগে বললো,
— কথাটাকে সামান্য কথা হিসেবে নিলে গর্তে পরবে। এটাকে অর্ডার ভাবো অথবা হুমকি ভাবো সেটা তোমার ব্যাপার। যেটা পড়া দিয়েছি তাড়াতাড়ি পড়ে শেষ করো।

রাফিন বেরিয়ে গেলো। নিরার কান্না চলে এসেছে। বইটার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বই দিয়েই নিজের কপালে বারি মারলো। বিড়বিড় করে বললো,
— স্বামী ছিলো সেটা কি কম ছিলো নাকি। এখন আবার টিচার হয়েছে। উফ! এবার আমার দিনটাই হারাম করবে। কেন যে পড়ালেখা পৃথিবীতে আবিষ্কার হয়েছে।

বাহির থেকে রাফিনের গম্ভীর স্বরে শুনা গেলো,
— নিরা পড়ছো নাকি বসে আছো?

— না না। বসে আছি কই? পড়ছি তো। থেরাপি কম ছিলো মনে হয় এখন মানসিক প্রশান্তি হারাম করতে আরেক থেরাপি এনে হাজির করেছেন। যত্তসব। অসভ্য ডাক্তার হুহ।

সেই আটটায় ঢুকেছে স্টাডি রুমে বের হলো রাত সাড়ে বারোটায়। নিরা গাল ফুলিয়ে রেখেছে। খেয়ে এসে ধপ করেই বিছানায় শুয়ে পরে। রাফিন হালকা হেসে বাতি নিভিয়ে নিরার পাশে শুয়ে পরে। নিরাকে নিজের দিকে টেনে এনে পেটের উপর থেকে আঁচল সরিয়ে পেট শক্ত করে জড়িয়ে ধরে। একটা পা নিরার দুইপায়ের উপর তুলে দেয়। নিরা বেশ বিরক্ত হয়ে বললো,
— এভাবে শাপের মতো পেচিয়ে রেখেছেন কেনো?

— আমার বউকে যেভাবে ইচ্ছা পেচিয়ে ধরবো তোমার কি?

নিরা বেশ কয়েকবার ধাক্কা দিয়ে বললো,
— ছাড়ুন আমাকে। ছাড়ুন বলছি।

রাফিন নিরার গালে কামড় দিয়ে বললো,
— আমার বউটা কি রাগ করেছে? বউটার কি ভালোবাসার থেরাপি লাগবে?

নিরা কাঁদো কাঁদো হয়ে বললো,
— আপনি একটা অসভ্য ডাক্তার। কথা নেই আপনার সাথে হুহ।

কথাটা বলেই চোখ বন্ধ করে নেয়। রাফিন বালিশ থেকে মাথা নামিয়ে নিরার বাম কাধে রাখে। ঘুমের দেশে পাড়ি দেয় দুজন।
·
·
·
চলবে………………………….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here