সে আদরের অন্য নাম পর্ব-১৬

0
480

? #সে_আদরের_অন্য_নাম ?

#পর্ব_১৬

হিয়া উজানের বুকে সেন্স হারিয়ে পড়ে গেলে উজান আরো ভয় পেয়ে যায়,কোনোরকম হিয়াকে কোলে করে নিয়ে এসে নিজের রুমের মধ্যে শুইয়ে দিয়ে হিয়ার শরীর মুছে দিতেই খেয়াল করে হিয়ার গা টা হালকা গরম হয়ে আছে,হয়তো রাতে জ্বর আসতে পারে,হিয়ার সেন্স টা হালকা হয়ে আসতেই হিয়া ঘুমের মধ্যে গঙ্গাতে থাকে,আর ওভাবেই একটা সময় ঘুমিয়ে যায়

সকাল সকাল জানালার পর্দার ফাঁক থেকে রোদের মিষ্টি আলো প্রবেশ করায় হিয়ার চোখে পড়তেই হিয়া ওর পুরো শরীর এ আড়মোড়া ভেঙে উঠে বসে,জ্বর টা এখন আর নেই,শরীর টা রাতের তুলনায় এখন ভালোই আছে,হিয়া একটা হাই তুলে ওর গা থেকে চাদর টা সরিয়ে বিছানা থেকে নিচে নামতেই খেয়াল করে ওর গায়ে জরিয়ে আছে একটা অন্য জামা,হিয়া কিছুক্ষণ নিজের দিকে তাকিয়ে থাকে,হিয়া মনে করে কালকে রাত অবধি ও ছাঁদে বৃষ্টিতে ভিজছিলো,আর উজান ও সময় ছাদে এসে ওকে কিছু একটা বলছিলো,হিয়া অনেক চেষ্টা করে এরপর ঠিক কি হয়েছিল সেটা মনে করার কিন্তু কিছুতেই কিছু মাথায় আসে না আর

হিয়াঃ আমি কি কাল সেন্স হারিয়ে পড়ে গিয়েছিলাম,সেন্স হারালাম কখন,কিন্তু কিছু মনে আসছে না কেনো,আমাকে কে নিয়ে আসলো উপর থেকে,উনি,আর আমার গায়ে তো অন্য জামা পড়া ছিলো তাহলে এটা কে

হিয়া আর কিছু ভাবতে পারে না,তারমানে কাল রাতে উজান ওর জামা কাপড় চেঞ্জ করে দিয়েছিলো,হায় রে,বেচারি এবার সত্যি সত্যি না কান্না করে দেয়,হিয়া ভয়ে সংকোচে ওর চোখ মুখ খিচে কাঁদো কাঁদো চোখে উঠতে যাবে ওমনি উজান হিয়াকে ডাকতে রুমে আসলে দেখতে পারে হিয়া উঠে গেছে,উজান গিয়ে হিয়ার কপালে হাত ছুঁইয়ে জ্বর মাপতে চেষ্টা করে

উজানঃ জ্বর টা নেই এখন,,যাই হোক আমি নাস্তা দিচ্ছি তুমি উঠে ফ্রেস হয়ে নেও,ঔষধ খেতে হবে

উজান ঘুরে চলে যেতে ধরলে হিয়া কাঁদো কাঁদো কন্ঠে নিয়ে উজান কে থামিয়ে দিয়ে

হিয়াঃ কাল রাতে ঠিক কি হয়েছিল,আমার আমার জামা কে চেঞ্জ করে দিয়েছিলো,,,,আপনি আমার পারমিশন ছাড়া এটা কি করে করতে পারলেন,আমি আপনাকে কখনো ক্ষমা করবো না,কখনো না,আপনার সাহস হলো কি করে আমাকে এভাবে,আমি মা কে বলে দেবো আপনি আমার সাথে আমার পারমিশন না নিয়ে এ্যা হ্যা

উজান একটা বাঁকা হাসি দিয়ে ফিরে এসে হিয়ার পাশে গিয়ে বসে পড়ে

হিয়াঃ খবরদার আমার কাছে আসবেন না,আপনি একটা খুব খুব অসভ্য লোক,খুব বাজে লোক

উজানঃ আরে এরকম বোকার মতো না কেঁদে আমার কথা টা তো শুনো

হিয়াঃ কি কি শুনবো আমি,গেলো আমার সব শেষ হয়ে গেলো,এ্যা হ্যা,আমার সব কিছু এই লোক টা দেখে নিলো,এখন আমি কি করবো,কি করবো আমি

উজানঃ এই,এই এরকম করে বাচ্চাদের মতো ঢং করবা না,আর আমি কি করবো মানে কি বলতে চাও তুমি,আর করলেও বা কি আফটার ওল আই এম ইউর হাসবেন্ড সো তোমাকে চেঞ্জ করে দেওয়ার পুরো রাইট আমার আছে

হিয়াঃ তার মানে আপনি সত্যি সত্যি আমাকে এ্যা হ্যা এ্যা

উজানঃ হ্যা আমি সত্যি সত্যি তোমাকে দেখে নিয়েছি,সমস্যা কোনো?

হিয়াঃ আপনি সত্যি একটা লুচু টাইপ ছেলে,আপনি আমাকে এ্যা হ্যা

উজানঃ এই শুনো আমি লুচু হই আর যাই হই আমি তোমার হাসবেন্ড তোমাকে দেখার পুরো রাইট আছে আমার তার উপর কালকে ওরকম করে ভিজে নিজের কি হাল করেছিলে কোনো খেয়াল আছে,কাল তো সারারাত জ্বর নিয়ে কাঁপা কাঁপা শরীরে আমাকে জরিয়ে ধরে ছিলে তার বেলা তার বেলা কিছু না,আর আমি একটু জামা পাল্টে দিয়েছি বলে এরকম কুমিরের কান্না কাঁদছো

হিয়াঃ আমি বিশ্বাস করি না,আপনি হাসছেন,সেদিনের ঔ তেলাপোকার মতো আপনি আমার সাথে কোনো মশকরা করেছেন না তো,কি প্রমাণ আছে আপনি আমার ড্রেস চেঞ্জ করে দিয়েছেন,আমার তো কিচ্ছু মনে নেই, হতেও তো পারে আমি চেঞ্জ করে ভুলে গেছি তাই আপনি সেদিন এর মতো আমাকে বোকা বানাচ্ছেন(নাক টেনে টেনে)

উজানঃ(হিয়ার দিকে একটু ঝুকে)প্রমাণ লাগবে

উজানের কথায় হিয়া ওর বুকের চাদর টা আরো শক্ত করে চেপে ধরে মাথা ঝাকিয়ে বলে হ্যা লাগবে,হিয়ার ওরকম ভয়ার্ত মুখ দেখে উজান আবার একটা বাকা হাসি দিয়ে বলে

উজানঃ তোমার স্পাইনাল কর্ডের মাঝ বরাবর একটা তিল আছে না,আররররর আর কোমড়ের সাইডে একটা লাল তিল?

উজানের কথায় হিয়া থ মেরে যায়,চোখ বড় বড় করে পাকিয়ে উঠে,এই বুঝি হিয়ার চোখের কোটর থেকে হিয়ার চোখের মনি দুটো ধক করে বের হয়ে আসে,এখন হিয়ার মাথায় হাত,হিয়া এখন কি করে বুঝবে ওর পিছনে আসলে তিল আছে কি না!!??

উজানঃ কি ভাবছো,তিল আছে কি না এখন কি করে বুঝবে

হিয়াঃ ইয়ে মানে হ্যা মানে,সত্যি তো আমি এখন কি করে বুঝবো

উজানঃ(হিয়ার নাক টা টেনে)শুনো একটু পর খালা আসবে তখন না হয় খালা কে দেখিয়ে তুমি জেনে নিও

কথা টা বলে উজান একটা ডেভিল মার্কা হাসি দিয়ে হিয়ার মাথার সাথে মাথা ঠেকিয়ে হিয়ার জন্য নাস্তা আনতে চলে যায়,এদিকে হিয়ার মন এই মুহুর্তে আনচান এর চরম পর্যায়ে গিয়ে লাফালাফি শুরু করে,কখন খালা আসবে কখন সে জানবে তার পিছনে আদৌও তিল আছে কি না,উফফ আর ভালো লাগে না হিয়ার

হিয়া গিয়ে ফ্রেশ হয়ে এসে ওর বারান্দায় মেলে দেওয়া ভেজা জামা কাপড় গুলো তুলে এনে,হাতে নিয়ে উজানের বেডে বসে পা দুলাতে থাকে আর কালকে রাতের রহস্য ভেদ করতে থাকে,কিন্তু কিছুতেই কিছু হিয়ার মাথায় আসে না,এদিকে উজান হিয়ার এই ছটফটানি দেখে মিচকে মিচকে হাসতে থাকে তো থাকেই,উজান হিয়াকে নাস্তা আর ঔষধ খাইয়ে দিয়ে ওর অফিসের জন্য তৈরি হতে থাকে,হিয়ার মনে তখনো ছটফটানি কেনো খালা এখনো আসছে না,অসহ্য

উজানঃ ওরকম জামা কাপড় নিয়ে বোকার মতো বসে না থেকে বই নিয়ে বস(টাই ঠিক করতে করতে)______আজকে আর কোচিং যাবার কোনো দরকার নেই,দুদিন খুব ভুগিয়েছো আমাকে আজকে প্লিজ আর না(হাত জোর করে)

হিয়াঃ খালা আসবে না আজকে

উজানঃ(একটা হাসি দিয়ে) ঔ অপেক্ষাতে থাকো তুমি আমি আসলাম,,

উজান হিয়ার কপালে একটা স্নেহের পরশ একে দিয়ে অফিসে চলে যায়,,এদিকে হিয়া খালা কখন আসবে কখন আসবে এই অপেক্ষা তেই বসে থাকে,,খালা আসে,হিয়া দৌড়ে গিয়ে গেট খুলে দিয়ে প্রথমে আমতা আমতা করতে থাকে,,শেষে হিয়া সব লাজ লজ্জা ভুলে খালাকে বলেই দেয় দেখো তো খালা আমার পেছনে কোনো তিল আছে নাকি,,খালা মুচকি দিয়ে হেঁসে দেয়,,হিয়াকে দেখে বলে হ্যা ওর ঠিক ঔ ঔ জায়গাতে তিল আছে,,খালার কাছে প্রমাণ পাবার পর হিয়ার তো মাথায় পুরো বাজ,সত্যি তার মানে,হিয়া ওর বিছানায় গিয়ে দুম করে বসে পড়ে থ হয়ে থেকে আচমকাই ছোট বাচ্চাদের মতো কান্না শুরু করে,আর হিয়ার এই ভ্যানভ্যানানি টাইপ কান্না তে খালা তো পুরো ভয় পেয়ে উজান কে ফোন করে বসে,,আধা ঘন্টা হয়ে আসে হিয়া তখনো ওরকমি প্যান প্যান করে কেঁদে যাচ্ছে তো যাচ্ছে,এদিকে খালার আবার অন্য বাড়িতে কাজ আছে খালা এখন কি করে,,,এক ঘন্টা খালা ওভাবেই দাঁড়িয়ে থেকে হিয়াকে শান্ত করতে চেষ্টা করে কিন্তু হিয়া চুপ হয় না,,ভাগ্যিস এর মধ্যে উজান এসে যায়,উজান আসলেই খালা উজানকে হিয়ার দায়িত্ব দিয়ে বেড়িয়ে যায়,এদিকে উজান ভয়ে হিয়াকে জরিয়ে ধরে

হিয়াঃ গেলো রে আমার সব শেষ হয়ে গেলো,আমার সরলতার সুযোগ নিয়ে আমাকে দেখে নিলো রে,,,এই এই আমার আমার কাছে একদম আপনি আসবেন না,,অসভ্য লোক,,সব শেষ করে দিলো রে আমার,আমি এখন কোথায় যাবো,কই মুখ লুকাবো,,এ্যা হ্যা এ্যাআআ,,না জানি কাল কি কি করেছে আমার সাথে,,এ্যা হ্যা,,অসভ্য লোককক

উজানঃ মানে সিরিয়াসলি হিয়া তুমি এই কারণে কাঁদছো

হিয়াঃ এটা এই টুকু কারণ

উজানঃ তুমি জানো আমি আমার কতো ইম্পর্ট্যান্ট একটা মিটিং কেনসেল করে শুধু তোমার জন্য আসলাম,আর তুমি

হিয়াঃ এ্যা হ্যা,,রাখুন আপনার মিটিং,,কি কি করেছেন আপনি কাল আমার অঞ্গান হবার সুযোগ নিয়ে,কি করেছেন বলুন

উজানঃ আমি কিচ্ছু করি নি হিয়া,তুমি শুধু শুধু

হিয়াঃ কিচ্ছু করেন নি কিছু না,তাহলে জানলেন কি করে আমার আমার পেছনে ঔ তিল(হিয়া আবার কেঁদে ফেলে)

উজানঃ জাস্ট শেট আপ,,দিস ইস রিয়েলি টু মাচ হিয়া,আর আমি যদি কিছু করেও থাকি তাহলে সমস্যা টা কোথায় আমি তোমার হাসবেন্ড আমি তোমার সাথে যা ইচ্ছে করতে পারি ইটস মাই রাইট

হিয়াঃ হাসবেন্ড বলে আমার পারমিশন না নিয়ে আপনি সব করবেন,,,আপনি কেনো করলেন আমার সাথে এরকম টা,,কেনো??কি কি করেছেন আপনি ঠিক আমার সাথে বলুন না কি কি করেছেন

উজানঃ কি করেছি

হিয়াঃ হুমমম,এ্যা হ্যা

উজানঃ ওয়েট

উজান সপাটে গিয়ে হিয়ার গেঞ্জি তুলে হিয়ার কোমড়ের কাছে একটা সজোরে আবার কামড় বসিয়ে দেয়,,

উজানঃ এসব করেছি আমি কাল,হ্যাপি_____শুধু শুধু আমাকে অকারণে এতো হেনস্তা করালে,,প্রত্যেকদিন এই মেয়ের জন্য আমাকে আতঙ্কে থাকতে হয়,,ইডিয়ট,,ফয়সালের মাকে ডেকে বলো কাল কে এসে তোমাকে জামা পড়িয়ে দিছে,,,,বোকা বলবো না একে চালাক বলবো অসহ্য একবারে??
___________________
আজ এক সপ্তাহ পর

হিয়াঃ ফয়সাল আসছে বোধহায় একটু দরজা টা খুলে দিন না(ওয়াশরুম থেকে চিৎকার করে)

উজানঃ সে দিচ্ছে কিন্তু তুমি সেই এক ঘন্টা ধরে ওয়াশরুমে কি করছো,,আমার বিকালে অফিসে মিটিং আছে হিয়া,,বের হয়ে আমাকে খেতে দেও

হিয়াঃ ওখানেই তো বাড়া আছে সব,নিয়ে নিলেই তো পারেন,,,আগে যান তো গিয়ে দরজা টা খুলে আসুন

উজান চোখ মুখ খিচে দিয়ে দরজা খুলে দিলে ফয়সাল ফারিহা কে নিয়ে হুড়মুড় করে ঘরে ঢুকে হিয়াকে খুঁজতে শুরু করে

ফয়সালঃ হিয়া পরী হিয়া পরী কোথায় তুমি,,আজ ফারিহার চকক্কেট আনো নি,,দেখো ফারিহা কাঁদছে

উজানঃ (ফারিহা কে কোলে তুলে নিয়ে) তোর হিয়া পরী এখন স্নান করছে,,চক্কেট বুঝি আজ পাবি না তোরা

ফয়সালঃ (হিয়ার ওয়াশরুমের দরজা ধাক্কা দিয়ে) হিয়া পরী,,আজকে চকলেট আনো নি

হিয়াঃ হ্যা আনছি তো,বের হয়ে দিচ্ছি

ফয়সালঃ কখন বের হবে,ফারিহা কাঁদছে যে খুব

হিয়াঃ খুব কাঁদছে,,এই যে শুনছেন আমার ব্যাগে না ফারিহার জন্য চকলেট রাখা আছে একটু কষ্ট করে বের করে দিন না

উজানঃ আমি কাজ করছি হিয়া,আমি পারবো না তুমি আসো

হিয়াঃ আরে একটু চকলেট টা বের করে দিতেই বুঝি সব কাজ শেষ হয়ে যাবে আজব

উজানঃ দিচ্ছি,তুমি বের হবা কি?

উজান হিয়ার ব্যাগ থেকে চকলেট বের করে ঠিকই কিন্তু সাথে বেড়িয়ে আসে একটা রিসিপট,,রিসিট টা একটা সোনার দোকানের,যেখানে খুব স্পষ্ট ভাবে তারিখ সহ লেখা যে দুদিন আগে হিয়া ওর গলার চেন টা বিক্রি করে কুড়ি হাজার টাকা নিয়েছে,,রিসিট টা পড়ে উজান পুরো অবাক হঠাৎ কি এমন দরকার পড়লো যে হিয়ার এতো টাকার প্রয়োজন হলো,আর প্রয়োজন হয়েছে হয়েছে কিন্তু সে উজানের থেকে টাকা না নিয়ে গা থেকে গয়না খুলে বিক্রি করে টাকা এ্যারেন্জ করলো!!

উজান এই মুহুর্তে এতোটাই রাগ হচ্ছে যে তার সাদা মুখ টা রাগে পুরো টমেটো হয়ে যাচ্ছে,কপাল কুচকে যাচ্ছে রাগের ভাজে,চোখ দিয়েই বুঝি আজ সে গিলে খাবে হিয়াকে,বাড়িতে ফয়সাল আর ফারিহা থাকায় উজান আপাতত চুপ করে থাকে,এদিকে হিয়াও গোসল সেরে বেড়িয়ে ফারিহা আর ফয়সালের সাথে একটু খেলা করে ডাইনিং এ উজানের জন্য খাবার বাড়তে যায়,এ-র মধ্যে ফয়সাল আর ফারিহার মা এসে হিয়ার সাথে একটু গল্প করে ওনার বাচ্চাদের নিয়ে নিজের ফ্লাটে চলে যায়,হিয়া ভাত বাড়ছে উজান গেট লাগিয়ে আপাদমস্তক রাগ নিয়ে দাঁড়িয়ে যায় হিয়ার সামনে

হিয়াঃ একটু যে ভাত টা বেড়ে নিয়ে খাবে সেটাও পারে না,,আমি যদি আরো দেড়ি করে বের হতাম তখন কি করতেন তোতোক্ষন না খেয়ে থাকতেন আজব একটা লোক আপনি,,,কি করছেন কি,দাঁড়িয়ে গেলেন কেনো এ-র কম করে সামনে,,,

উজানঃ প্লেট টা টেবিলে রাখো

হিয়াঃ কেনো

উজানঃ আমি বলছি তাই

হিয়াঃ আরে আপনি বললেই হলো,আমার এখনো বাড়া শেষ হয়নি

উজানঃ (হিয়ার হাত থেকে প্লেট টা কেড়ে দুম করে টেবিলে রেখে) গলার চেন টা কোথায় তোমার

হিয়াঃ____

উজানঃ কিছু জিজ্ঞেস করছি আমি তোমাকে

হিয়াঃ ?হঠাৎ আম আম আমার গলার চেন এর কথা জানতে চাইছেন

উজানঃ যেটা জানতে চাইছি সেটার উওর দেও

হিয়াঃ ইয়ে মানে আছে,ঔ পড়ে থাকতে থাকতে কি রকম গলা টা চুলকোচ্ছিলো তাই

উজানঃ তাই

হিয়াঃ হ্যা ঔ এল্যার্জী টা বোধ হয় বেড়ে গেছে ওজন্য

উজানঃ আর কতো মিথ্যে বলবা হিয়া,আর কতো

হিয়াঃ আমি মিথ্যে,,আমি আসলে

উজানঃ তোমার এতো টাকার দরকার ছিলো যার জন্য তুমি

হিয়াঃ আপনি কি করে জানলেন

উজানঃ সেটা তোমার না জানলেও চলবে,কিন্তু তুমি আমাকে এখন উওর দেও কুড়ি হাজার টাকা ঠিক কি কারণে তোমার প্রয়োজন হলো

হিয়াঃ না আসলে আমার একটু

উজানঃ আমি কারণ জানতে চেয়েছি

হিয়াঃ আমি আপনাকে বলতে পারবো না,আমাকে ক্ষমা করবেন

উজানঃ হোয়াট!!কি বললা,,আমাকে বলা যাবে না,,লিসেন হিয়া বিয়ে হবার পর থেকে আমি তোমার সব সহ্য করে গেছি তার মানে এই না যে আমার কোনো অভিমান বা অভিযোগ কোনো টাই তোমার উপর জন্মায়নি

হিয়াঃ প্লিজ আপনি এই টপিক টা বাদ দিন না,,ভাত বাড়ছি খেয়ে নিন,,মিটিং আছে নাকি

উজানঃ (হিয়ার বাহু খামচে ধরে) ড্যাম ইউর মিটিং,,আমি যা জানতে চাইছি সেটার উওর আগে তুমি দেও আমাকে,কি করেছো তুমি এতোগুলো টাকা দিয়ে এন্সার মি

হিয়াঃ আমি তো বলছি আমি আপনাকে বলতে পারবো না

উজানঃ হিয়া আমাকে কিন্তু আর রাগ রাগাইও না তুমি,,কখনো তোমাকে আমি শাসন করি নি তার মানে এটা না যে আমি এখনো চুপ করে থাকবো

হিয়াঃ প্লিজ আপনি আমাকে জোর করবেন না

উজানঃ তুমি আমাকে বলবে কি না

হিয়াঃ আপনি কেনো বুঝতে চাইছেন না,বলার হলে তো আমি বলেই দিতাম আপনাকে

উজানঃ তুমি বলবে কি না

হিয়াঃ আপনি প্লিজ একটু মাথা টা ঠান্ডা করে আমার কথা টা শুনুন

উজানঃ হ্যা কি না

হিয়াঃ না

উজানঃ (কিছুক্ষণ চুপ থেকে) ব্যাগ গোছাও তোমার,,এক্ষুনি

হিয়াঃ ব্যাগ গুছাবো মানে,কেনো ব্যাগ গুছাবো

উজানঃ তুমি আর এ বাড়িতে আমার সাথে থাকবে না,আমি তোমাকে আজই মার কাছে দিয়ে আসবো দেন তোমার ওখানে যা ইচ্ছে খুশি তুমি করো আমি দেখতেও যাবো না

হিয়াঃ না প্লিজ আপনি এরকম টা করবেন না

উজানঃ তুমি গোছাবা না আমি গুছিয়ে নেবো

হিয়াঃ না কিচ্ছু গোছানো লাগবে না,,আপনি একটু মাথা টা ঠান্ডা করুন,,আমি আমি তো বলছি সে রকম কিছুই না,,সিরিয়াস কিছু হলে তো আমি বলতামই আপনাকে,প্লিজ আপনি আর রাগ করবেন না

উজান হিয়ার আর কোনো কথা না শুনে হিয়ার রুমে গিয়ে হিয়ার লাগেজ গোছাতে শুরু করে,উজানের পিছে পিছে হিয়া এসে উজানের হাত থেকে সব কেড়ে নিয়ে উজান কে থামাতে চেষ্টা করে,এ-র মধ্যে শুরু হয়ে যায় হিয়ার কান্না

উজানঃ আমারই ভুল ছিলো,আমি তোমাকে একটু বেশি প্রছয় দিয়ে ফেলেছি,আমার কাছে টাকা নিতে পারবে না,আমার টাকায় খেতে ওনার সমস্যা কিন্তু বাহিরে গিয়ে দোকানে গিয়ে উনি গা থেকে গয়না খুলে ছিঃ

হিয়াঃ আপনি প্লিজ আমার কথা টা শুনুন নাআআআআ,,আমি ওখানে মার কাছে গিয়ে কি করবো,আমার পড়াশোনা আমার কোচিং এগুলো এগুলোর কি হবে,,শুনুন না একবার আমার কথাটা প্লিজ(কাঁদতে কাঁদতে)

উজানঃ হিয়া আমার সামন থেকে সারো,এরপর কিন্তু আমার হাত লেগে কিছু অঘটন ঘটে যাক তুমি নিশ্চয় সেটা চাও না

হিয়াঃ কি করছেন কি,,আমি আমি যাবো না মার কাছে,,প্লিজ ওগুলো রাখুন আপনি,,উজান উজান শুনুন না প্লিজ,আর আর এরকম ভুল হবে না আমার,,আমার যা লাগবে আমি এরপর থেকে আপনাকে বলবো,,

উজানঃ হিয়া হাত ছাড়ো আমার

হিয়াঃ আপনি প্লিজ এরকম টা করবেন না,শুনুন নাআআআ

কাঁদতে কাঁদতে হিয়া এবার উজানের পা ধরে বসে পড়ে,উজান হিয়ার এরকম কান্নায় হাতে থাকা বাকি বই গুলো হাত থেকে বারান্দায় চটকে দিয়ে দাঁড়িয়ে যায় ওখানে

হিয়াঃ প্লিজ এরকম টা করবেন না,,আমার খুব কষ্ট হচ্ছে থামুন এবার আপনি

উজান হিয়াকে ছাড়িয়ে দিয়ে রাগে ওর রুমে গিয়ে গেট লাগিয়ে দেয়,হিয়া গিয়ে বারবার দরজা ধাক্কাতে থাকে উজান দরজা খুলে না

  1. হিয়াঃ আমি খুব হেল্পলেস ছিলাম,আমাকে আপনি ক্ষমা করে দিন প্লিজ,আমার খুব কষ্ট হচ্ছে প্লিজ দরজা টা খুলুন (ভীষণ কাঁদতে কাঁদতে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here