#সাইকো_নীড়
part : 12
writer : Mohona
.
মেরিন দেখলো নীড়কে ৪-৫জন লোক মিলে মারছে। মেরে একেবারে আধামরা করে ফেলেছে। রক্তাত্ব করে ফেলেছে। আর নীড় চুপচাপ কেবল মাইর খেয়েই যাচ্ছে।
মেরিন : লোকগুলো নীড় কে মারছে কেন?
নিহাল : কারন নীড় বলেছে। টাকা দিয়েছে…
মেরিন : কিহ? কিন্তু কেন?
নিহাল : কেনটা পরে যেন… আগে আমার ছেলেকে বাচাও…
মেরিন : আমি কি করবো…? আপনিই তো ওদেরকে চলে যেতে বলতে পারেন।
নিহাল : না… ওরা আমার কথা শুনবেনা… কারন ওরা যদি নীড়ের permission ছারা চলে যায় তবে নীড় ওদেরকে shoot করে দিবে?
মেরিন : উনি কি পাগল?
নিহাল : …
মেরিন : তাহলে তো কিছুই করার নেই…
নিহাল : আছে…
মেরিন : কি?
নিহাল : তুমি…
মেরিন : আমি মানে কি?
নিহাল : তোমার কথাতেই ও ফিরবে…
মেরিন : জানিনা ফিরবে কিনা? কিন্তু যদি ফেরে তবে শাস্তিটাও আমাকেই পেতে হবে। তাও ভয়ানক….
নিহাল : না না। আমি কথা দিচ্ছি যে কোনো শাস্তি পাবেনা। প্লিজ…
মেরিন দোয়া-দরূদ পড়তে পড়তে আগে বারতে লাগলো।
.
মেরিন যেতে যেতে নীড় মুখ থুবরে নিচে পরলো…
মেরিন : নীড়…
নীড় নিভু নিভু চোখে মেরিনকে দেখলো। মেরিন নীড়ের কাছে গেলো।
মেরিন : দেখি নীড় উঠুন তো…
তখন আবার ওই লোক গুলো নীড়ের দিকে এলো। ওকে আবার তুলে মারবে বলে… এমনকি তুললও।
মেরিন : এই ছারুন উনাকে…. পাগল হয়েছেন নাকি? এমন করে কেউ কাউকে মারে ? যান এখান থেকে…
☆ : sorry mam… we have to do it…
মেরিন : no… যান… আর একটাও টোকা দিবেননা নীড়কে …
☆ : ম্যাম আমরা just order follow করছি…
মেরিন : আমি না করেছি তো… so out…
☆ : who the hell are you…
বলেই নীড়ের হাত থেকে মেরিনের হাত সরাতে নিবে তখন…
নীড় : get lost… & be ready to get punishment … আহমার snow white কে এহতো বড় কহথা বলা…
৪জন : sorry sir…
নীড় : out…
৪জন চলে গেলো।
নীড় : i am sorry snow white …
বলেই নীড় মেরিনকে জরিয়ে ধরলো।
নীড় : i need you…
বলেই নীড় নিজের সব ভর ছেরে দিলো। আসলে ও জ্ঞান হারালো।।। মেরিন সামলাতে না পেরে পরে যেতে নিলো। নিহাল এসে ধরে ফেলল। ২জন মিলে নীড়কে বাসায় নিয়ে গেলো। নীড়ের রুমে গিয়ে মেরিন অবাক। কারন সিলিংএ মেরিনের ছবি…. এমনকি ফার্নিচার গুলোতেও মেরিন… বেড শীটেও মেরিনর মুখ… blanket , pillow cover সব জায়গায়। আর দেয়ালে মেরিনের নাম। কালো মার্কার দিয়ে লেখা ।
নিহাল : ড্যানি… ডক্টর রায়কে তুলে নিয়ে আসো। আমার ছেলের treatment করবে…
মেরিন : ১মিনিট uncle … কাউকে তুলে আনতে হবেনা। কাউকে দিয়ে উনার dress change করান। আর আমি কিছু মেডিসিন লিখে দিচ্ছি সেগুলো আনানোর ব্যাবস্থা করুন। উনার change করানো হলে আমি উনার heart beat & bp টা দেখে নিচ্ছি।
নিহাল : কিন্তু ১জন ভালো ডক…
মেরিন : আমি বললাম তো…
নিহাল মেরিনের কথা শুনলো। নীড়কে ঘুম পারিয়ে রাখা হলো।
.
একটুপর…
নিহাল : চলো মামনি তোমাকে বাসায় পৌছে দিয়ে আসি…
মেরিন : আপনি বলেছিলেন যে … আপনি বলবেন নীড় এমন কেন করেছে?
নিহাল : …
মেরিন :বলুন না…
নিহাল : কারন ও নিজের মায়ের মারা থাপ্পরের বিনিময়ে অস্র তুলতে পারেনি…
মেরিন : মায়ের থাপ্পর… ও হ্যা।কিন্তু ওই আন্টিটার তো নীড়কে থাপ্পর মারা জায়েজ আছে। অনেক পচা কথা বলছিলো ওই uncle কে… কি যেন নাম? হ্যা জহির রায়হান…
নিহাল : পচা কথা? হ্যাহ…
মেরিন : নীলিমা আন্টির প্রতি কেন নীড়ের এতো ঘৃণা…?
নিহাল : ১টা ১০-১১বছরের বাচ্চা অনেক কিছু না বুঝলেও কিছুটাতো বোঝে? কি তাইতো?
মেরিন : হ্যা…
নিহাল : ১০-১১বাদই দাও… ১টা ৭-৮বছরের বাচ্চাও খানিকটা বুঝতে পারে। অন্যকিছু না বুঝলেও এটা বোঝে যে ওর মা ওর সাথে অন্য কাউকে ভালোবাসে… তখন সেই ৭-৮বছরের বাচ্চার কেমন লাগতে পারে?
মেরিন : …
নিহাল : আর যখন ১টা ১০-১১বছরের ছেলে নিজের মাকে যখন অন্য কোনো লোকের বাহুডোরে দেখে তখন তার কেমন লাগতে পারে….
মেরিন : …
নিহাল : যখন… কোনো সন্তানের মা… পরপুরুষের হাত ধরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় , অন্যের বউ হয়ে যায় … তখন সেই সন্তানের কেমন লাগতে পারে বলো? সেই সন্তান কি করে মাকে ভালোবাসতে পারে? কি করে মায়ের সেই প্রেমিক উফস স্বামীকে কি করে ভালোবাসতে পারে?
মেরিন : ….
নিহাল : তুম…
তখন মুখ ঢেকে ১জন মহিলা ওপরে উঠে গেলো।
মেরিন : ওই মহিলাটা কে?
নিহাল : ও…? ও রহিমা…. অনেকদিন ধরে আমাদের বাড়িতে ও আছে। নীলিমা যাওয়ার পর থেকে ওওই নীড়কে সামলিয়েছে….
মেরিন : ওহ….
.
পরদিন…
মেরিন : হয়তো মায়ের ওপর এমন রাগ থেকেই নীড় এমন হয়ে গিয়েছে…. নীলিমা আন্টি এতো খারাপ? ছিঃ…. এমন ধরনের মেয়ে মানুষের জন্যেই সবার বদনাম হয়। আমার মনে হয় সেই incident থেকেই নীড় এমন হয়ে গিয়েছে। সাইকো…
নীড় : আমাকেই বুঝি সাইকো বলা হচ্ছে?
মেরিন পিছে ঘুরলো।
মেরিন : আপনার তো rest এ থাকা দরকার ছিলো…
নীড় : তুমিই তো আছো ….
মেরিন : আপনি কি বলেন … কিছুই বুঝিনা।
নীড় : আমাকে বুঝতে হলে যে আমার মতো হতে হবে my snow white ….
মেরিন : আচ্ছা এমন পাগলামোর মানে কি?
নীড় : যেদিন মানে বুঝে যাবে সেদিন আর আমাকে আর জিজ্ঞেস করবেনা… by the way…. তুমি কি আমাকে ভালোবাসতে শুরু করেছো?
মেরিন : in your dream …
নীড় : but তুমি তো কালকে সরাসরি গিয়েছিলে… এরমানে কি?
মেরিন : আপনার বাবা আমাকে নিয়ে গিয়েছিলো…
নীড় : ?। যাই হোক। এই নাও।
মেরিন : কি এটা?
নীড় : খুলে দেখো।
মেরিন খুলল । আর খুলতেই ১টা ব্যাঙ লাফিয়ে বেরিয়ে এলো। হুট করে বেরিয়ে আসায় মেরিন ভয় পেয়ে ওটা ফেলে দিলো।
নীড় : হাহাহা… ওই ওই তুমি আমার ব্যাঙ রাজাকে ফেললা কেন?
মেরিন : অমন হুট করে লাফিয়ে এলে ভয় লাগেনা …?
নীড় : তোমার ফেলে দেয়ায় আমার রাজা ব্যাথা পেয়েছে। তাই তোমাকে শাস্তি পেতে হবে। আর তোমার শাস্তি হলো রাজাকে ধরে বক্সে রাখা।
মেরিন : কি??
নীড় : হামম। নাও নাও শুরু করো।
মেরিন : আমি পারবোন… যত্তোসব।
নীড় : পারতেই হবে…
মেরিন : এমন চিন্তা আপনার মাথায় আসে কিভাবে?
নীড় : এভাবেই…
.
কয়েকমাস পর…
মেরিনের final exam এর result দিয়েছে। মেরিনের খুশি দেখে কে?
কবির : thank you মামনি। i just proud of you…
মেরিন : i love you বাবা…
কবির : সােনাবাচ্চাটা আ …
তখন ব্যান্ড-বাজনার আওয়াজ এলো। ধুমচে বাজছে। ১টা ঢোল বাজাতে বাজাতে নীড় এলো।
নীড় : congratulations & celebration … snow white snow white snow white …. i love you….
কবির : …
নীড় : শশুড়ড্যাড তুমি always এমন হুতুমপেচার মতো করে মুখ করে রাখো কেন? একটু হাসতেও তো পারো… আমার মতো। নীড় the great … যাই হোক কালকে আমি আমার snow white এর honor এ ১টা party throw করছি… চলো snow white …
মেরিন : চলো মানে? কোথায় যাবো? আমি কোথাও যাবোনা…
নীড় : শশুড়ড্যাড… তোমার মেয়েটারও না তোমার মতোই ঘাড়ত্যারা….
বলেই মেরিনকে নিয়ে গেলো।
নীড় : কোথায় যাবে higeher study এর জন্য?
মেরিন : দেখি…
নীড় : দেখিনা…. লন্ডন বেস্ট হবে। তুমি লন্ডনই যাবে।
মেরিন : আজব তো… আপনার কথাতেই কেন যাবো? যাবোনা। আমি বাবার হসপিটালেই বসবো।
নীড় : ওহ হ্যাললো… mbbs degree দিয়ে কিছু হয়না… আর আমি লাগে জানিনা আপনি লন্ডন যাওয়ার জন্য try করছো..
মেরিন মনে মনে : এই লোকটা মহাবাদর…
নীড় : এইযে admission form… visa, ticket ….
মেরিন : ?।।
.
১৫দিনপর…
মেরিন আজকে লন্ডন চলে যাবে।
কবির : কোনোভাবেই আর ২টা ticket arrange করতে পারলামনা। তুমি চিন্তা কোরোনা মামনি… কয়েকদিনের মধ্যে আমি চলে আসবো। আর হ্যা নীড়কে আমি জানতে দেইনি যে তুমি কোনো flight এ যাচ্ছো…
মেরিন মনে মনে : আব্বাজান …. তুমিতো জানোনা যে এই ticket এর ব্যাবস্থা উনিই করেছেন। তবে যাই হোক ১টা জিনিস ভালোই হয়েছে যে লন্ডনে নীড়ও থাকবেনা।
কবির : কি ভাবছো মামনি…?
মেরিন : কিছুনা বাবা । আসি। চিন্তা করোনা।
কবির : নেমেই ফোন করবা কিন্তু।
মেরিন : হামমম।
কিছুক্ষনপর মেরিন গিয়ে বসলো।
নীড় : hello snow white …
মেরিন : এখানেও আপনি…
নীড় : any doubt ?
মেরিন : আপনি এখানে কি করছেন?
নীড় : তো এখানে কে থাকবে আমি ছারা?
ওরা লন্ডন পৌছালো। নীড় মেরিনকে নিজের ফ্ল্যাটেই নিয়ে তুলল।
নীড় : এই রুমটা তোমার। পছন্দ হয়েছে?
মেরিন : আমি এখানে থাকতে পারবোনা।
নীড় : তুমি কি শশুড়ড্যাডকে ভয় পাচ্ছো?
মেরিন : আজব তো… আমি…
নীড় : আমার সাথেই থাকতে হবে… চাও আর নাই বা চাও।।।
.
৩দিনপর…
নীড় মেরিনকে শপিং করাতে নিয়ে গিয়েছে।
নীড় : শোনো এখানে যথেষ্ট ঠান্ডা। so সেই অনুযায়ী কেনাকাটা করো।
মেরিন : আপনিই তো কিনছেন। আমি আর কি করবো? ?।
নীড় : তুমি কি আমাকে খোচা মারলে?
মেরিন : আমার ঘারে কটা মাথা আছে?
নীড় : তা ঠিক ।যাই হোক এগুলো প্লিজ ব্যাবহার করো।আমার দেয়া কিছুইতো তুমি ব্যাবহার করোনা।
মেরিন : কেন করবো?
নীড় : সবসময় রাগানোটা কি জরুরী?
মেরিন : …
নীড় : ফোন তুলো… কার ফোন?
মেরিন : বাবার…
মেরিন কিছুটা দূরে সরে গেলো।
নীড় : আমার সামনে বাবার সাথে কথা বললে কি হয়?
মেরিন : huh…
মেরিন কথা বলে এলো। এসে দেখে জ্যােতি নীড়কে জরিয়ে ধরে আছে। মেরিনের খানিকটা খারাপ লাগল। ও থাকবে না চলে যাবে বুঝতে পারছেনা। এখানে দারিয়ে থাকতে কেমন যেন feel হচ্ছে আবার চলে গেলেও নীড় কি করবে তার খবর নেই।
নীড় : কি রে পাগলি… আমার ড্রেস তো ভিজে গেলো। ছার। আর কতো কাদবি? হামম?
জ্যােতি : তোর ৠণ যে আমি কখনো শোধ করতে পারবোনারে। সেদিন তুই না থাকলে আমার career শেষ হয়ে যেতো। রাজ আমাকে যেই ধোকাটা দিয়েছিলো… আমার ভাবতেই অবাক লাগে যে আমি কাকে ভালোবেসেছিলাম…
নীড় : আর মেলোড্রামা করতে হবেনা।
জ্যোতি : মেলোড্রামা নারে… তুই যেটা করেছিস তা কেউ করেনা। এতোবড় মিথ্যা বদনাম কেউই নিজের নামে নেয়না…
নীড় : হাহাহা। হয়েছে এবার ছার। আমার সাথে আমার snow white আছে তো …
জ্যোতি নীড়ের থেকে সরে দারালো।
জ্যোতি : তো কোথায় তোর snow white ? দেখা?
নীড় : আমার snow white… ওই তো আসছে… come snow white …
মেরিন মনে মনে : কাহিনীটা কি? কিসের বদনামের কথা বলছে?
⛈️⛈️⛈️
]
.
বর্তমান…
মেরিন নীড়কে দেখলো। মাথার মধ্যে হাজারো স্মৃতি ঘুরপাক খাচ্ছে। তখন announcement হলো সিটে বসার আর সিট বেল্ট বাধার। তবুও মেরিন নীড়কে দেখেই যাচ্ছে। তখন ১জন airhostess এসে ওকে জোর করে বসিয়ে দিলো। কিছুক্ষন পর plane land করলো। আর নামার পরই যতো তারাতারি সম্ভব নীড়কে হসপিটালে নেয়া হলো।
মেরিন : কোথায় চলে গেলো ? নীড়…. এটাই কি সেই নীড় যার কথা সেদিন আমার মাথায় এসেছিলো…. না আগে দেশেই যাই। আম্মু-বাবা কোথায় আছে জানতে হবে। দেখি গিয়ে flight এর কি কাহিনী…
.
পরদিন…
মেরিন দেশে পৌছালো।বাসায় গেলো। গিয়ে দেখলো যে বাসা তালা দেয়া।
মেরিন : একি…? বাসা তালা দেয়া কেন? আম্মু বাবা কোথায়? কি হয়েছে? কাকে জিজ্ঞেস করবো? বাসার চাবি…ট এদিকে মাথাটাও ভীষন ব্যাথা করছে… কি যে করি? এতো এতো প্রশ্ন … কিন্তু কোনো জবাব নেই। কি যে করি?
জাফর : তোমার সব প্রশ্নের জবাব আমার কাছে আছে মা….
মেরিন পিছে ঘুরলো।
মেরিন : কাকা?
মেরিন দৌড়ে গিয়ে জাফরকে জরিয়ে ধরলো।
মেরিন : কাকা…
জাফর : মা… সোনামনিটা…
মেরিন : কেমন আছো কাকা?
জাফর : ভালো।
মেরিন : কাকা…. আম্মু বাবা কোথায়?
জাফর : …
মেরিন : বলোনা কাকা… কোথায় আম্মু-বাবা…
জাফর : খুন হয়েছে?
মেরিন : কি??? কককি আবোল তাবোল বলছো… মিথ্যা কথা।
জাফর : যা বলছি সত্যিই বলছি… এতোটুকুও মিথ্যা না। ভাইয়া-ভাবি খুন হয়েছে। নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষন করেছে খুন….
.
চলবে….