শ্যামাঙ্গণা-৭

0
459

শ্যামাঙ্গণা-৭
———–

ফাহমান ক্লান্ত ভঙ্গিতে হাঁটছে। তার মাথায় ঘুরছে হাজারও অজস্র ভাবনা। চোখ দুটো বরাবরের মতোই সামনে নিবদ্ধ। ফাহমানের একটা বাজে অভ্যাস আছে। হাঁটার সময় সে ডানে বাঁয়ে কোথাও তাকায় না। সোজা সামনে চোখ রেখে হাটতে থাকে। এমনকি রাস্তাও পার হয় জেব্রা ক্রসিং দিয়ে কিংবা যখন অনেক মানুষজন একসঙ্গে রাস্তা পার হয় তখন। এই বাজে অভ্যাস ছাড়ানোর চেষ্টায় সে তৎপর তবে ছাড়াতে পারছে না।

তবে আজ হঠাৎই মনে হলো অজস্র মানুষের এই ভিড়ে এক জোড়া চোখ তাকে দেখছে। মেয়েরা তাদের সিক্সথ সেন্সের কারণে এই জিনিসটা টের পেলেও ছেলেদের এমন কোনো সেন্স আছে কিনা ফাহমানের জানা নেই। তবে তার মনে হলো কেউ তো দেখছে তাকে। ফাহমান আশেপাশে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করলো কে তাকে দেখছে। চোখ পড়ল তার থেকে মিটার কয়েক দূরে হাতে নুডুলসের প্লেট নিয়ে দাড়িয়ে আছে ঝুমুর।

ঝুমুরের সঙ্গে মার্জিয়াকে দেখা যাচ্ছে। মার্জিয়াকে দেখে চিনতে পারলো ফাহমান। এই মেয়েকে ও প্রায়ই হসপিটাল থেকে ফেরার সময় বাড়িতে ঢুকতে পথে বের হতে দেখেছে। তবে মেয়েটা কে সেটা জানার আগ্রহ কোনওদিন দেখায়নি ফাহমান। এমনকী আজও তার সেই আগ্রহ নেই। সে উৎসুক, হাস্যোজ্জ্বল চোখে ঝুমুরকে দেখছে। ঝুমুরের হাতে নুডুলসের প্লেট, ঠোঁটের কোণে নুডুলসের টুকরো লেগে আছে।

ফাহমানের মনে হলো ঝুমুর যেন তাকে দেখে হাসলো। কিন্তু সেই হাসিতে ঝুমুরের ঠোঁট প্রসারিত হলো না, চোখ হাসলো। ঝুমুরের অদেখা এই হাসি ফাহমান ভিতর থেকে অনুভব করলো। তবে সে বেশিক্ষন ঝুমুরের দিকে দৃষ্টি রাখলো না। ইতিমধ্যে ঝুমুরের দৃষ্টি অনুসরণ করে মার্জিয়া তাকে দেখে ফেলতে চলেছে তাই ফাহমান দ্রুত এগিয়ে গেলো বাড়ির পথে। ঝুমুরকে দেখে তার দিকে মন্ত্র মুগ্ধের মতো তাকিয়ে থেকে নিজেকে আর ঝুমুরকে বিপদে ফেলার মানেই হয় না।

—-

বাসায় ঢুকেই ফাহমান দেখলো মনোয়ারা বেগম তার মা মারিয়ামের সঙ্গে খাবার ঘরে বসে কথা বলছেন। মনোয়ারা বেগমকে দেখে ফাহমান সালাম দিল এবং কুশল বিনিময় করলো। কুশল বিনিময় শেষে ফাহমান নিজের ঘরে ঢুকে গেলো। এখন তার ফ্রেশ হয়ে কিছু খাওয়া প্রয়োজন। আজ অতিরিক্ত ব্যস্ততা থাকায় দুপুরে সেভাবে খাওয়ারই সুযোগ হয়নি। কাজেই পেট ভরে খেতে হবে।

ফ্রেশ হয়ে ভেজা চুলগুলো গামছায় মুছে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে এলো ফাহমান। রান্নাঘর থেকে প্লেটে ভাত, তরকারি নিয়ে নিজের ঘরের দিকে যাচ্ছিল কারণ তার মা আর মনোয়ারা বেগমের কথার মাঝে সে টেবিলে বসে খেলে অভদ্রতা দেখায়। তবে সে রুমে ঢোকার আগেই মারিয়াম তাকে ডাক দিলেন। মায়ের ডাকে ফাহমান নিজের ঘরের ভাতের প্লেটটা রেখে মায়ের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো।

ছেলেকে দেখে মারিয়াম বললেন ‘ বাবা ফাহমান তোর কি সময় হবে ? ‘
মায়ের কথার ঠিক মানে বুঝতে পারলো না ফাহমান। মা কোন সময়ের কথা বলছে ? সে ইতস্তত করে বললো ‘ সময় ? ‘
মারিয়াম এবার মনোয়ারা বেগমের দিকে তাকিয়ে বললেন ‘ আসলে ভাবী বলছিলেন তুই যদি সময় করে সপ্তাহে চারদিন ঝুমুরকে সন্ধ্যা আটটার দিকে এক ঘন্টা ইংলিশটা পড়াতে পারিস তাহলে ভালো হতো। ‘

ঝুমুরকে সপ্তাহে চারদিন এক ঘন্টা করে পড়ানোর প্রস্তাবে ফাহমান একটু ভ্যাবাছ্যাকা খেয়ে গেলো। আমতা আমতা করে বলল ‘ আমি ? না মানে আমি তো প্রফেশনাল টিচার নই। আন্টি আপনার মনে হয় ভুল হচ্ছে। আমার থেকেও অনেক ভালো ভালো টিচার আছেন। আপনি বললে আমি ব্যবস্থা করে দিতে পারি। ‘

মনোয়ারা বেগম এবার বললেন ‘ সুযোগ থাকলে ফারুককেই বলতাম ঝুমকে পড়াতে কিন্তু ফারুক বাড়ি ফিরে রাত নয়টায়। ঝুম আবার সেই সময় পড়তে পারবে না। আমি প্রফেশনাল টিচারের কাছে দিতে পারতাম কিন্তু বাড়িতেই মেডিক্যাল স্টুডেন্ট থাকতে এর থেকে ভালো আর কার কাছে দিবো ? তাছাড়া তোমার কাছে পড়লে ঝুম তোমার কাছে থেকে গাইডেন্স নিতে পারবে। ঝুমের ইচ্ছা ও মনোবিজ্ঞান বিভাগে পড়বে। ‘

যদিও ফাহমান পড়ানোর বিষয়ে অভিজ্ঞ নয় তবুও মনোয়ারা বেগমের এহেন যুক্তির কাছে তার আর কোনো যুক্তি কাজ করলো না। শেষ পর্যন্ত মনোয়ারা বেগমের কথাতেই সপ্তাহে চারদিন ঝুমুরকে পড়াতে সে রাজি হয়ে গেল। ঝুমুরকে সে রবি, মঙ্গল, বৃহস্পতি এবং শুক্রবার পড়াবে। মনোয়ারা বেগম যাওয়ার আগে বলে গেলেন ঝুম কাল থেকে পড়বে যেহেতু কাল বৃহস্পতিবার।

মনোয়ারা বেগম যাওয়ার সময় হৈমন্তীর দেখা পেলেন। মনোয়ারা বেগমকে দেখে হৈমন্তী সালাম দিয়ে টুকিটাকি কুশল বিনিময় করে বাসায় ঢুকলো। বললো ‘ বাড়িওয়ালা আন্টি হঠাৎ আমাদের বাসায় ? ‘
মেয়ের কথায় মারিয়াম রসুনের কোয়া ছাড়াতে ছাড়াতে বললেন ‘ ফাহমান যেন ঝুমুরকে পড়ায় সেই ব্যাপারেই কথা বলতে এসেছিলেন। ‘

‘ ভাইয়া ঝুমকে পড়াবে ? তারমানে এখন থেকে রোজ ওর সঙ্গে দেখাবে ? বাহ ভালই তো। দুজনে মিলে কথা বলা যাবে। ‘

হৈমন্তীর কথায় ফাহমান হৈমন্তীর মাথায় টোকা মেরে বলল ‘ ও আমার কাছে স্রেফ এক ঘণ্টার জন্য পড়তে আসবে। কথা বললে পড়বে কখন ? ‘
হৈমন্তী মাথার তালুতে হাত ঘষতে ঘষতে বললো ‘ তাই বলে মারবে। মুখে বললেন হয়না ? হাত কেন চালাও ? ‘

হৈমন্তীর কথা শুনে ফাহমান ওকে ভেংচি কেটে রুমে চলে গেলো। অন্যদিকে টেবিলে বসে নোটস চেক করছে ঝুমুর। বাইরে থেকে একটু আগেই ফিরেছে সে। মার্জিয়া ওকে বাড়ি পৌঁছে দিয়ে আজকের মতো চলে গেছে। ঝুমুর যখন কাগজে গভীর মনযোগ দিয়ে চোখ বুলাচ্ছে তখনই দরজায় কারোর নক করার শব্দ পেলো। মুখে বললো ‘ কে ? ‘

ঝুমুরের গলার আওয়াজে ঘরের দরজা খুলে ঘরে ঢুকলেন মনোয়ারা বেগম। ঝুমুরের টেবিলের পাশে থাকা চেয়ারে এগিয়ে গিয়ে বসলেন। শান্ত কণ্ঠে সুধালেন ‘ কি পড়ছিস ? ‘
ঝুমুর জবাবে বললো ‘ গ্রামাটিক্যাল রুলস দেখছি ইংলিশের। আজ খায়রুল স্যার(হোম টিউটর) শিট দিয়েছেন। ‘

ঝুমুরের কথা শুনে মনোয়ারা বেগম বললেন ‘ তোর জন্য আরেকটা টিউটরের ব্যবস্থা করেছি। এখন থেকে সপ্তাহে চারদিন এক ঘন্টা করে ইংলিশ পড়াবে তোকে। রবি, মঙ্গল, বৃহস্পতি এবং শুক্রবার পড়াবে। তোর কোনো সমস্যা আছে ? ‘

ঝুমুর ব্যস্ত গলায় নোটস দেখতে দেখতে বললো ‘ উহু, সমস্যা কিসের ? টিউটর খুঁজে পেয়েছেন ভালো কথা। তা স্যারের নাম কি ? থাকেন কোথায় ? আমাদের বাড়ি থেকে কত দূরে তার বাসা ? ‘

‘ ফাহমান পড়াবে তোকে। ‘

মনোয়ারা বেগমের কথায় খানিকটা থতমত খেয়ে গেলো ঝুমর। শুকনো ঢোক গিলে বললো ‘ ফাহমান মানে মামার বন্ধু ? উনি পড়াবে আমাকে ? কিন্তু কেন ? ‘
ঝুমুরের কথায় মনোয়ারা বেগম ভ্রু কুচকে ফেললেন। সন্দিহান চোখে তাকিয়ে বললেন ‘ ফারুকের বন্ধু ছাড়া আর কোন ফাহমানকে চিনিস তুই ? আর ও পড়ালে কি সমস্যা ? তোর কি কোনো আপত্তি আছে ? ‘
মনোয়ারা বেগমের কথার জবাবে ঝুমুর আমতা আমতা করে বলল ‘ হ্যাঁ…. মানে না কিসের আপত্তি থাকবে ? কোনো আপত্তি নেই ‘

আপত্তি নেই বললেও ঝুমুরের ঘোরতর আপত্তি আছে। বললেই হলো নাকি ? সে কি করে পড়বে ফাহমানের কাছে ? যেখানে এক সেকেন্ডের জন্য ফাহমানের দিকে তাকালেই তার দিক থেকে দৃষ্টি সরানো মুশকিল হয়ে পড়ে সেখানে এক ঘণ্টা কি করে পড়বে তার কাছে ? এক ঘণ্টায় তো তার পড়া কিছুই হবে না উল্টো তাকিয়ে থেকে থেকেই সময় কেটে যাবে।

মনোয়ারা বেগম ঝুমুরের কথা শুনে কিছুক্ষণ তীক্ষ্ণ চোখে ঝুমুরের দিকে তাকিয়ে থেকে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলেন। ঝুমুর মনোয়ারা বেগম প্রস্থান করতেই বড় নিশ্বাস ফেললো নিজেকে শান্ত করলো। নিজেকে অনেক কষ্ট বোঝালো তার ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করতে হলে তাকে পড়াশোনায় মন দিতে হবে। নাহলে যে গতি নেই। ঝুমুর মাথা থেকে সমস্ত অবান্তর চিন্তা ঝেড়ে ফেলে দিয়ে পড়ায় মন দেওয়ার চেষ্টা করলো। খাতা খুলে কলেজের হোম ওয়ার্ক করতে বসলো।

—-

মোতালেব সাহেব দোকান থেকে বাসায় ফিরতে সময় দোতলায় এলেন। উদ্দেশ্য শশুরের জন্য আনা ওষুধগুলো হাতে হাতে দিয়ে যাবেন। দরজা খুলে ভিতরে ঢুকতেই শুনতে পেলেন মনোয়ারা বেগম ফারুকের সঙ্গে ঝুমুরকে পড়ানোর ব্যাপারে কথা বলছেন। তাদের কথা বলতে দেখে উনি আজমাঈন সাহেবের ঘরের দিকে গেলেন।

ঝুমুরকে ফাহমান পড়াবে শুনে ফারুক তেমন উচ্চবাচ্য করলো না তবে স্রেফ বলল ফাহমানের পড়া ঝুমুরের কিরকম লাগে আগে সেটা দেখা প্রয়োজন। ঝুমুর এমনই যার তার পড়া বুঝে না। পড়াশুনায় ভালো হলে কি হবে, সবার পড়ানো সে সহজে বুঝে না। খুব কষ্টে মার্জিয়া আর খায়রুলকে পাওয়া গেছে নাহলে তারা না থাকলে হয়তো ঝুমুরের ভবিষ্যৎ অন্ধকার।

আজমাঈন সাহেবকে ওষুধগুলো দিয়ে এসে মোতালেব সাহেব খাবার ঘরে উপস্থিত হলেন। শাশুড়ি মনোয়ারা বেগমকে সালাম দিয়ে এবং কুশল বিনিময় করলেন। কথায় কথায় জানতে পারলেন ঝুমুরের টিউটর খুঁজে পাওয়া গেছে। উনি হেসে বললেন ‘ ধন্যবাদ আম্মা। আমি আরও ভাবছিলাম বিজ্ঞপ্তি দিবো। তা বলছিলাম স্যার মানে যিনি ঝুমকে পড়াবেন উনি কি করছেন ? কিছু জানেন ? ‘

ফারুক খাচ্ছিল তবে মোতালেব সাহেবের কথা শুনে রুই মাছের কাঁটা বাছতে বাছতে বললো ‘ আপনি ওকে চিনেন ভাইয়া। ফাহমান, আমার বন্ধু আর আপনাদের সামনের ফ্ল্যাটে যে থাকে ওই পড়াবে। ও তো আমার সাথেই ইন্টার্নশিপ করছে। ও মনোবিজ্ঞান বিভাগে আর আমি নিউরোলজি। ‘

ফাহমানকে মোতালেব সাহেব চিনেন। ও প্রায় সময় নিজের মায়ের জন্য ওষুধ মোতালেব সাহেবের ড্রাগ হাউজ থেকেই নিয়ে থাকে। তাই উনি বললেন ‘ ফাহমান, তোমার বন্ধু ? ওকে আমি চিনি তো। আমাদের দোকান থেকে প্রায়ই নিজের মায়ের জন্য ওষুধ নেয়। ও পড়াবে তাহলে ? তাহলে তো ভালই। ছেলেটা ভদ্র। আমার সঙ্গে যতবার দেখা হয় ততবার সুন্দর করে হেসে সালাম দেয় আর ভালো মন্দ জিজ্ঞেস করে। ‘

কথায় কথায় মনোয়ারা বেগমও বললেন ‘ আসলেই ছেলেটা অনেক ভালো। ওর বাবার ধার দেনা পরিশোধ করতে গিয়েই তো নিজেদের দোতলা বাড়িটা বিক্রি করে দিলো নাহলে ওদের অবস্থা আমাদের থেকেও ভালো ছিল। ভীষন মেধাবী ছেলে। ওদের পরিবারটাও খুব ভালো। ফাহমানের মা এত বছর অনেক কষ্টেই তার স্বামীর রেখে যাওয়া সম্পদ দিয়ে ছেলেকে মেডিক্যালে পড়িয়েছে। এখন আবার মেয়েকে নিজের রোজগারের টাকা দিয়ে পড়িয়েছে। উনার দুই ছেলে মেয়েই ভীষন মেধাবী। তবুও তার কোনো অহংকার নেই। ‘

কলেজের সব পড়া গুছিয়ে রেখে ঝুমুর বইখাতা গুছিয়ে রেখে ঘর থেকে বেরিয়ে এলো। এখন সে খেয়ে ঘুমোতে যাবে। কাল আবার কলেজ বন্ধ কাজেই সকাল সকাল উঠলে আরও পড়া গুছিয়ে রাখা যাবে। ঝুমুর খাবার ঘরে ঢুকতেই মনোয়ারা বেগম প্লেটে ভাত নিলেন। তবে হঠাৎই বাতাসে গন্ধ নেওয়ার ভান ধরে ঝুমুর বড় বড় চোখে বললো ‘ ফুলকপি রান্না করেছে কে ? ‘

ঝুমুরের আতঙ্কিত মুখ দেখে ফারুক দ্রুত উঠে গিয়ে ফুলকপি দিয়ে রুই মাছের তরকারিটা খাবার টেবিল থেকে সরিয়ে নিয়ে রান্নাঘরে রাখতে গেলো। ফারুককে তরকারি সরাতে দেখে ঝুমুর সস্তির নিশ্বাস ফেলে চেয়ারে বসলো। তার ফুলকপির উপস্থিতিতে আতঙ্কিত হয়ে পড়াতে ফারুক যেভাবে খাবার রেখে ছুটেছে তাতে ঝুমুরের একটু খারাপই লাগলো। কিন্তু তারও বা কি করার আছে ?

এরকমটা ছোট থেকেই হয়ে আসছে। ঝুমুর কখনও ফুলকপির গন্ধ সহ্য করতে পারে না। ফুলকপির ভাজি থেকে শুরু করে তরকারি সে কোনোটাই ছুঁয়েও দেখে না। বিশেষ করে ফুলকপি তরকারির গন্ধ তার নাকে গেলে তার সর্বাঙ্গ গুলিয়ে বমি আসে। তবে কালো গোল মরিচের গুঁড়া ব্যবহার করে ফুলকপির স্যুপ করলে সে সেটা খেতে পারে কারণ তাতে ফুলকপির উটকো গন্ধ অনেকটাই কেটে যায়।

ঝুমুরের এহেন বিবমিষা দেখে মনোয়ারা বেগম কিছুই বললেন না। এসবে উনি অভ্যস্ত। হয়তো ঝুমুর বাংলাদেশে থেকে তাদের মত খাদ্যভাস গড়ে তুলেছে কিন্তু তার মাঝে এখনও কিছু বাইরের দেশের সংস্কৃতি রয়েই গেছে। কিছু কিছু সবজি আছে যেগুলো ঝুমুর খেতে পারে না। যেমন সিম,বেগুন, ধুন্দুল। তেমনই ফুলকপি তার জানের শত্রু। বাকিদের সহ্য করা গেলেও ফুলকপির গন্ধ নাকে গেলেই তার শরীর খারাপ করে।

ঝুমুর খাবার ঘরে এসে ফুলকপির উপস্থিতি টের পেয়ে মন খারাপ করে খেতে বসলো। কেন তার জানা নেই কিন্তু ফুলকপির গন্ধ নাকে গেলেই তার শরীর খারাপ করে। সঙ্গে মনটাও খারাপ হয়ে যায়।
মোতালেব সাহেব মেয়ের সঙ্গে কিছু জরুরী কথা বলে বেরিয়ে গেলেন এবং মনোয়ারা বেগম ব্যস্ত হয়ে পড়লেন নাতনিকে খাওয়ানোর কাজে।

চলবে….
মিফতা তিমু

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here