মন প্রাঙ্গনে এলে যখন পর্ব ১৭

0
885

#মন_প্রাঙ্গনে_এলে_যখন
#লেখনীতেঃ #আলফি_শাহরিন_অর্পা
#পর্ব_১৭

জয়া আজ খুবই খুশি। হঠাৎ করে অনাকাঙ্ক্ষিত জিনিস পেয়ে গেলে যেমন খুশি হয় মানুষ তেমন খুশি। আজকের সকাল তার জন্য আনন্দের ঢেউ বয়ে এনেছে। একটু আগে মা এসে বলে গিয়েছে তার জন্মদিনের অনুষ্ঠানে পরশি আপু আর রুদ্ধ ভাইয়া আসবে। যখন থেকে এই খবরটা শুনেছে রুম আটকে মিউজিক অন করে উড়া ধুরা নাচছে। অবশেষে তার দেখা রুদ্ধের সাথে হবে। রুদ্ধকে এর আগে একবার দেখেছিল কিন্তু সে তখন ছোট ছিল অতটা খেয়াল ছিল না। কিন্তু পরবর্তীতে ভাইয়ের সাথে রুদ্ধের একটা পার্টির ছবি দেখে সে তার উপর রীতিমত ক্রাশ খেয়ে গেছিল, তবে তাদের পরিবারের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল না বলে তার আর রুদ্ধের সাথে দেখা হয়নি।

________________________

গ্রীষ্মের উষ্ণতা আর আগুনের উত্তপ্ততায় একে বারে ঘেমে গেছে স্নিগ্ধা। পরীক্ষার জন্য রুদ্ধ বলেছিল কিছুদিন যেনো রান্না ঘরের আশেপাশে না যাই কিন্তু তার জন্য এক কাপ চা প্রতিদিন বানাতে হয়েছে। একদিন পড়ার টেনশনে তাকে চা দিতে ভুলে গিয়েছিলাম তারপর থেকে তার কি যে মাথা ব্যাথা হয়েছিল বলার বাহিরে। আজ অনেকদিন পর সে পরশি আর রুদ্ধের পছন্দের রান্না করবে। পরশি আর রুদ্ধ উভয়ের পায়েস খুব পছন্দ, একদিন কথায় কথায় পরশি থেকে থেকে জেনেছিল তাদের পায়েস খুব পছন্দের। তাই নেমে পড়লো পায়েস বানানোর যুদ্ধে।

বাড়িতে প্রবেশ করতেই হঠাৎ রুদ্ধের নাকের সামনে ভেসে উঠলো তার খুব চেনা পরিচিত ঘ্রাণ। কিন্তু এটা কীভাবে সম্ভব? মা চলে যাওয়ার পর কেউ তোহ তার জন্য পায়েশ রান্না করেনি। আর পরশি তো রান্না-বান্না পারে না তাহলে কে করবে? ব্যক্তিটিকে দেখার অদম্য ইচ্ছাকে দমন করতে না পেরে সে চলে গেল রান্নাঘরের উদ্দেশ্য।

রান্নাঘরে যেয়ে সে স্নিগ্ধাকে দেখে অবাক হয়ে গেল। তার কাছে মনে হলো পিচ্চি মেয়েটা হঠাৎ করে বড় হয়ে গেল। চুলার সামনে কাজ করার ফলে শরীর বেয়ে ঘাম ঝড়ছে, ঘামের জন্য চেহারা, ঘাড় আর হাত চিকচিক করছে। সামনে দিয়ে কাটা চুল গুলো ঘামের কারণে কপালের সাথে লেপ্টে আছে। কী অপূর্ব সেই দৃশ্য। রুদ্ধ ঘোর দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে স্নিগ্ধার দিকে। হঠাৎ স্নিগ্ধার মৃদু চিৎকারে রুদ্ধের ঘোর ভেঙে গেল। সে দেখলো স্নিগ্ধা বাদাম কা*ট*তে যেয়ে নিজের আঙুল কে*টে ফেলেছে। রুদ্ধ ওর এমন অবস্থা দেখে দৌড়ে স্নিগ্ধার কাছে গেল। স্নিগ্ধার হাতটা টান দিয়ে নিজের দিকে নিলো আর কোনো কিছু না ভেবে স্নিগ্ধার কে*টে যাওয়া সেই আঙুলটি মুখে পু*ড়ে নিলো। স্নিগ্ধা বিষ্ময় নিয়ে রুদ্ধের কর্মকাণ্ড দেখছে। সে কিছু বলবে কিন্তু তার জন্য মুখ থেকে কোনো শব্দ উচ্চারণ করতে পারছে না।

________________________

জয়া একের পর এক ড্রেস ট্রায় করছে। সে চাচ্ছে আজ পার্টিতে রুদ্ধের নজর তার দিকে হোক। আর আজ পার্টির মধ্যমনি তো সে নিজেই। কোন ড্রেসের সাথে কোন জুয়েলারি পরবে বা কী রকম মেকআপ করবে তা নিয়ে তার যত সব টেনশন। মিসেস সেলিনা রীতিমত বিরক্ত জয়ার উপর। রাতে পার্টি কত কাজ বাকী কিন্তু তার মেয়ে তাকে এখানে বসিয়ে তার সাজসজ্জা দেখাচ্ছে। আজ তার জন্মদিন বলে কিছু বলতেও পারছেন না।

অপরদিকে স্নিগ্ধার বিষ্ময়ের রেশ কাটছে না। যে লোকটার মানুষ মারতেও কখনো হাত-পা কাঁপেনি সে লোকটা তার আঙুলটাকে এত সূক্ষ্মভাবে ব্যান্ডেজ করছে যাতে আমার ব্যাথা না লাগে। এসব কী ভাবা যায়।

চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here