ভালোবাসি_প্রিয়_সিজন_টু পর্ব_১৫

0
1317

ভালোবাসি_প্রিয়_সিজন_টু
পর্ব_১৫
#সুলতানা_সিমা

অরিন চট করে ফোন কেটে দিলো। পিছনে ঘাড় ঘুরিয়ে শাওনকে দেখে ভয়ে তাঁর আত্মা কেঁপে ওঠল। শুকনো এক ঢোক গিলে শুকিয়ে যাওয়া গলাটা ভিজিয়ে নিলো। এই মূহুর্তে ফোনে যে কথাগুলা বলেছে সে এগুলা কি শাওন শুনে ফেলেছে? শাওনের অগ্নি চোখ বলে দিচ্ছে শাওন শুনেছে। অরিন নিজেকে নিজে সাহস দিলো, সাওনকে এতো ভয় পাওয়ার কিছুই নেই। কিন্তু পরক্ষণে ভয়টা বেড়ে গেলো। শাওন যদি ফোন দেখে চিনে ফেলে এটা দিহানের ফোন। তখন কী হবে? অরিন হাত দুটো টেবিলের নিচে রেখে ওড়নার দিয়ে হাত ঢেকে নিলো। দু কয়েক শুকনো ঢোক গিলে বলল, “ক্ক ক্ক কারো ক্ক কথা বলছি না। প্প প্প পড়ছি আমি।” শাওন স্বাভাবিক স্বরে বলল, “তোমার বইয়ের মধ্যে এসব লিখা?” অরিন কিছু বলল না। ভয়ে তাঁর কান্না চলে আসছে। শাওনকে সে ভয় পাচ্ছেনা। শাওনকে পাওয়ারও কোনো কারণ নেই। কিন্তু ফোন। এই ফোনটার জন্যই সে ভয় পাচ্ছে। যদি শাওন ফোনটা দেখে তখন তো চিনে ফেলবে এটা দিহানের ফোন।

শাওন কি জানি ভেবে চলে যেতে পা বাড়ালো। তখনই অরিনের ফোন বেজে উঠল। ফোনের শব্দে আবারও কেঁপে ওঠে অরিন। দুহাতে ফোন চেপে ধরলো যেন শব্দ শাওনের কান পর্যন্ত না পৌঁছায়। শাওন হাত বাড়িয়ে অরিনের হাত থেকে ফোন নিয়ে নিলো। ফোনের স্ক্রিনে খুব সুন্দর করে ভেসে উঠছে,”husband” শাওন দাঁতে দাঁত চেপে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করলো। রাগে তাঁর শরীর কাঁপছে। ফোনটা উল্টে পাল্টে দেখে অরিনকে বলল,”এই ফোনটা কই পেয়েছো তুমি?” শাওনের প্রশ্নে অরিন থরথর করে কাঁপতে লাগলো। এতোক্ষণ এই ভয়টাই পেয়েছিলো সে। শাওন দাঁতে দাঁত চেপে বলল,”ফোনটা কই পেয়েছো?”
_ক্ক ক্ক ক্কি কিনে এএএনেছি আমি।
_কোথা থেকে কিনেছো?” অরিন আর কিছু বলতে পারলো না। ভয়ে তাঁর কপালে ঘাম জমে গেছে। জিব দিয়ে ঠোঁট ভেজাতে চায় কিন্তু ঠোঁট ভিজেছে। তাঁর ঠোঁট শুকিয়ে কাঠ হয়ে আছে। আর যাইহোক এতো দামী ফোন সে গ্রামের বাজারে কিনছে বললে কেউই বিশ্বাস করবে না। তাছাড়া এই ফোনটা কম হলেও ৮০-৯০ হাজার হবে। এতো টাকার ফোন সে কিনেছে বললে কে বিশ্বাস করবে? শাওন চিল্লিয়ে অরিনকে কিছু বলতে গিয়েও থেমে গেলো। সেলিনা বেগমের কানে এসব গেলে অরিনকে কথা শুনাবেন। যা শাওন চায়না। দিহান আবার কল দিলো। শাওন ফোন রিসিভ করে কথা না বলে ফোন কানে লাগিয়ে রাখলো। ফোনের ওপাশের জনও কথা বলছে না। শাওন পাঁচমিনিট এভাবেই চুপচাপ ফোন কানে লাগিয়ে রাখলো। অরিনের মনে হচ্ছে এইবার তাঁর দম আটকেই যাবে। মনে মনে দোয়া ইউনুস পড়ছে। মানুষ যতই সাহস দেখিয়ে কথা বলুক না কেন বিপদ সামনে আসলে বুঝা যায় কে কতোটা সাহসী। তখন আর সাহস থাকেনা মনে। চারদিকে ভয় আর আতঙ্ক থাকে। ফোনের ওপাশের জন কল কেটে দিলো।

জহুরা বেগম মাত্র এসে ঘরে ঢুকলেন। শাওনকে পিছন থেকে দেখে চিনেন নি তিনি। অরিনের ভয়ার্ত ঘেমে যাওয়া চেহারা দেখে উনি আঁতকে উঠলেন। দরজার সামনে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করলেন,” কে?” শাওন পিছন ফিরে তাকালো। শাওনকে দেখে উনি ঘরের ভেতর ঢুকলেন। আগেই আন্দাজ করেছেন এটা শাওন। জহুরা সাওনের দিকে তাকাতে পারছেন না। অগ্নিরূপ ধারন করে আছে সে। জহুরা বললেন,”বাজান কিছু অইছে?” শাওন রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে বলল, “এই ফোন আপনার মেয়ে কই পেয়েছে?”
_বাজান এইডা তো,,,
_কি কিনে এনেছি আমি।”জহুরা বেগমের কথার মাঝখানে অরিন এটা বলে উঠল৷ নয়তো উনি বলে দিতেন শান্তি চৌধুরী দিয়েছেন। যা উনি জানেন আর শাওন বিশ্বাস করতো না। উনি অবাক হয়ে অরিনের দিকে তাকালেন। জহুরা শাওনকে বললেন,”হ বাজান এইডা ওর মামা টাহা দিছিল পরে কিনছে।” শাওন দাঁতে দাঁত চেপে নিজেকে কন্ট্রোল করলো। রাগ দমাতে হাতের মুঠি চেপে ধরলো। জহুরা বেগম ভয়ে ভয়ে বললেন,”কিছু কি অইছে বাজান?
_শাওন এক হাতে নিজের কপাল চেপে ধরলো। নিজেকে সামলে ফোনটা টেবিলের উপর রেখে জহুরাকে নিয়ে বেরিয়ে আসলো ঘর থেকে। উঠুনে এসে লম্বা একটা দম ছেড়ে গলা স্বাভাবিক করে বলল, “শুনলাম ইমন নাকি অরিনকে বিয়ে করবে?
_হ বাজান। আপা [সেলিনা বেগম] একডা বিয়ার আলাপ আনছিল। পোলা বেশ ভালা না। কবে জানি জোর কইরা ধইরা বিয়া দিয়া দেয়। তাই প্রস্তাবকান হাতে নিয়া নিছি। ইমন পোলাও ভালা আছে। অরিনরেও পড়াইবো কইছে।
_অরিন জানে?
_এখনও জানাই নাই।” শাওন আর কিছু না বলে চলে গেলো। জহুরা বেগম অবাক হলেন৷ শাওন স্বাভাবিক ভাবে এরকম যায়না। যাওয়ার আগে বিদায় নিয়ে যায়। জহুরা বেগমকে নিজের খেয়ার রাখতে বলে যায়। জহুরা ঘরে গেলেন। অরিন খাটে বসে আছে। উনি গিয়ে অরিনের পাশে বসলেন। গম্ভীর গলায় প্রশ্ন করলেন,”ফনটা [ফোনটা] কই পাইছস তুই?” অরিন কিছু বলল না। জহুরা আবার প্রশ্ন করলেন”কি অইলো কথা কসনা কেন?” অরিন ডুকরে কেঁদে উঠে। জহুরা ঘাবড়ে যান। উনি অরিনের হাতের উপর নিজের হাত রেখে বলেন,”ক আমারে অরিন। কিছু কমুনা তরে। আমি জানি তুই চুরি করবি না। কেউ তরে দিছে। আমারে ক অরিন। কই পাইছন এই ফন।” অরিন কেঁদে কেঁদে বলল ”
_উউউউনি দিছেন।
_উনি কিডা?
_দিহান।” জহুরা বেগমের মাথায় যেন বাজ পড়লো। উনি অবাক হয়ে বললেন”
_ওই পোলা তরে ফন দিব কেন?” অরিন জহুরার দুহাত ধরে বলল”
_আমি তোমাকে,,,, তোমাকে যা বলব বিশ্বাস করবা মা?
_ক।”অরিন বিয়ে থেকে এই পর্যন্ত যা যা হয়েছে একে একে সব বলে গেলো। সবকিছু শুনে জহুরা বেগম চোখে মুখে বিস্ময়নিয়ে অরিনের দিকে তাকিয়ে তাকলেন। হয়তো উনার বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে। অরিন মাথা নিচু করে কাঁদতে থাকে। উনি ক্ষীণ গলায় বললেন,”আর কেউ জানে?” অরিন না সূচক মাথা নাড়ায়। জহুরার মাথা ঘুরছে। বুকে ব্যথা অনুভব করছেন। উনার একটা হাত অরিনের হাতে রাখলেন। তারপর দূর্বল গলায় বললেন, “আমার মাথায় একটু পানি দে রে অরিন।” বলতে বলতে বিছানায় শুয়ে পড়েন তিনি।

শায়লা বেগম রাতের রান্না শেষ করে রুমে গিয়ে উনার মাকে ফোন দিলেন। আসরের নামাজ পড়তে অজু পরে আসছিলেন তখন উনার মা ফোন দিছিলেন। উনি নাকি কি বলবেন। শায়লা নামাজ পড়ে শুনবেন বলে ফোন রেখে দেন। পরে আর ফোন দিতে পারেন নি। তাই এখন দিলেন। শান্তি চৌধুরী ফোন ধরলে শায়লা সালাম দিলেন। সালামের উত্তর দিয়ে শান্তি চৌধুরী বললেন,” কি করছিস রে?
_কিছু না মা বসে আছি। তুমি?
_আমিও বসে আছি।
_ তুমি কি যেন বলবা বলো।
_শাওনের জন্য একটা মেয়ে পছন্দ করছি৷ আর আমি চাই বিয়েটাও খুব তারাতাড়ি সেড়ে নিতে।
_ও পুরোপুরি ভাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করুক তারপর ভাবা যাবে।
_তুই বুঝতে পারছিস না। মেয়েটার অন্য কোথাও বিয়ে হয়ে যাবে। তাছাড়া শাওন মেয়েটাকে ভালোবাসে। মেয়েটাও শাওনকে ভালোবাসে।
_কি বলছো? শাওন কাউকে ভালোবাসে? কে মেয়েটা?
_মেয়েটাকে তুই চিনিস।
_আমি চিনি? নাম বলো তো।”শায়লা চৌধুরী কথাটা বলার সাথে সাথেই অনেক জোরে কিছু ভাঙার শব্দ হলো। এই শব্দের কারণে শান্তি চৌধুরী কার নাম বললেন তিনি শুনতে পারলেন না। পরপর অনেকগুলা জিনিস ভাঙার শব্দ এলো। শায়লা উনার মাকে বললেন, “মা আমি পরে ফোন দিচ্ছি তোমাকে।” শায়লা ফোন রেখে দিয়ে শাওনের রুমের দিকে দ্রুত পায়ে হেঁটে গেলেন।

শাওনের রুমে সবকিছু এলোমেলো হয়ে আছে। একটা চেয়ারের এক পা ভেঙে গেছে চেয়ারটা উল্টে আছে। ড্রেসিং টেবিলের আয়না ভাঙা। খাটে হেলান দিয়ে মেঝেতে বসে এক হাঁটুর উপর হাত ঝুলিয়ে রাগে কিড়মিড় করছে শাওন। ছেলের এমন ভয়ংকর রূপ দেখে শায়লা বেগম আঁতকে উঠলেন। শাওনকে উনি খুব ভালো করেই চিনেন। ও খুব রেগে গেলে এইরকম ভাংচুর করে। শায়লা ঘরে আসলেন। ছেলের সামনে বসে তাঁর কাঁধে হাত রাখলেন। শাওন মুখ তুলে তাকিয়ে মাকে দেখে চট করে উনাকে জড়িয়ে ধরলো। শাওন ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠে। ছেলের কান্নার শব্দে শায়লা বেগমের কলিজা মুচড় দিয়ে উঠে। একহাতে শাওনের পিঠে হাত বুলাতে বুলাতে বললেন,”কাঁদিস না বাবা। কি হইছে তোর বল?
_আমার ওকে খুন করে দিতে ইচ্ছে করছে আম্মু। ও কেন অন্য কারো সাথে কথা বলবে?” শায়লা বেগম আন্দাজ করলেন শাওনের ভালোবাসার মানুষটির সাথে তাঁর মনমালিন্যতা চলছে। উনি শাওনের পিঠে হাত বুলাতে বুলাতে বললেন,”কাঁদিস না বাবা সবঠিক হয়ে যাবে।”শাওন তাঁর মাকে ছেড়ে দিলো। তারপর বলল,”তুমি যাও আম্মু। আমাকে একটু একা থাকতে দাও।” শায়লা বেগম কথা না বাড়িয়ে চলে গেলেন। আপাতত একা ছেড়ে দেওয়াই ভালো। পরে বিষয়টা দেখা যাবে।

_____________________________________

রাতের খাবার খেয়ে দিহান তাঁর দাদুমনির রুমে গেলো। উনি বসে আছেন। রুহান উনাকে পান বানিয়ে দিচ্ছে। দিহান দিয়াকে বলল,”ওই তুই যা তো উঠ।” রুহান চলে গেলো। দিহান শান্তি চৌধুরীর পাশে বসে উনার কোলে মাথা রেখে শুয়ে পড়লো। দিহান বলল,”কী করো বড় বউ?” শান্তি চৌধুরী দিহানের গালে হালকা করে থাপ্পড় দিয়ে বললেন,”যা চুপ থাক। তোরা সবগুলাই শয়তান।” দিহান তাঁর দাদীর হাতে চুমু খেয়ে বলল,”আমরা সবগুলার আদরের একমাত্র বড় বউ তুমি তাইতো শয়তানি করি।”শান্তি চৌধুরী বললেন”হ্যাঁ শুধু মুখ দিয়ে ভালোবাসা দেখাস তোরা। যেই না আমি সুস্থ হয়েছি অমনিই মিহান চলে গেলো বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে। ওমা এখন আবার ফোন করে বলে সে নাকি আজ আসবেনা। সেই দুপুরে খেয়ে বের হলো, আল্লাহ জানে এখন কিছু খাইছে কিনা। নাকি না খেয়ে শুধু তাঁর ফ্রেন্ডের সাথে আড্ডা দিচ্ছে। ” দিহান হেসে বলল,” দাদুমনি। সে এসেছে একসপ্তাহ হয়ে গেলো। এতোদিন বাসার বাইরেই পা রাখেনি সারাদিন তোমার খেয়াল রেখেছে। এতোদিনে দেশে এসেছে, বন্ধুদের সাথে একটু আড্ডা দিবেনা?” শান্তি চৌধুরী কিছু বললেন না। দিহান বলল, “দাদুমনি তোমায় আজ একটা কথা বলব। আমার কথাটা কিন্তু বিশ্বাস করতে হবে তোমাকে।” শান্তি চৌধুরী নাতির মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বললেন, “বল। তোর কথায় অবিশ্বাসের কি আছে যে অবিশ্বাস করবো?
_আমার কথা শুনতে চেয়ে উল্টা একটা প্রশ্ন করে বসলে। এখন আমি আমারটা শুনাবো নাকি তোমার প্রশ্নের উত্তর দিবো?” শান্তি চৌধুরী দিহানের নাক টিপে বললেন,
_তোরটাই বল রে পাগল।” দিহান বলল,”জানো দাদুমনি তোমার নাতির একটা বউ আছে।
_হ্যাঁ জানি তো। ছোট বেলায় তোর দাদা পুতুল খেলতে গিয়ে তোর সাথে পুতুলের বিয়ে দিতো।
_এটা পুতুল বিয়ে না দাদুমনি। এটা রিয়েল লাইফের বিয়ে।
_ভালো মজা শিখেছিস তো। তারপর বল।
_দাদুমনি আমি মজা করছিনা আমি সত্যি বলছি।” শান্তি চৌধুরীর মুখটা অন্যরকম হয়ে গেলো৷ উনি কৌতুহল নিয়ে বললেন,”তুই কি সিরিয়াস?
_হুম।
_কি বলছিস এসব?
_দাদুমনি আমি তোমাকে সব বলছি।” দিহান উঠে বসে একে একে কলকাতায় ঘটে যাওয়া ঘটনাটা খুলে বলল। তাদের গাড়ি থেকে নামিয়ে দেওয়া পতিতালয়ে আশ্রয় নেওয়া তারপর তাদের বিয়ে হওয়া। এইটুকু বলে থামলো দিহান। শান্তি চৌধুরী গম্ভীর মুখে বসে আছেন। দিহান উনার দুটো হাত ধরলো। দিহানের দৃষ্টি কাতর। উনি গম্ভীর গলায় জিজ্ঞেস করলেন,”তারপর কি হলো?
_তারপর একমাস চলে গেলো ওর কথা ভাবতে ভাবতে। একমাস পরে শাওন এলো ঢাকায়। ওর সাথে যখন,,,,এইটুকু বলতেই দিহানের ফোন বেজে উঠল। দিহান ফোন হাতে নিয়ে দেখলো অরিন কল দিছে। সন্ধ্যায় কথা বলার সময় অরিন যে ফোনে কথা বলতে গিয়ে ফোনে ধরা খাইছে তা ঠিকই আন্দাজ করছিলো দিহান। তাই এতোক্ষণ নিজে ফোন না দিয়ে অপেক্ষা করছিলো অরিন কখন ফোন দিবে। দিহান তাঁর দাদুমনিকে ফোনটা দেখিয়ে বলল,”দাদুমনি কল দিচ্ছে। কাল বলবো তোমায় প্লিজ।” শান্তি চৌধুরী কিছু বললেন না। দিহান চলে গেলো। শান্তি চৌধুরী দিহানের ফোনের স্ক্রিনে দেখেছেন বউপাখি দিয়ে সেভ করা। ভাবছেন আসলেই কি দিহানের কথাগুলা সত্যি?

দিহান রুমে এসে অরিনকে ফোন দিলো। অরিন ফোন রিসিভ করার পরে দিহান কথা বলল না। অরিন হ্যালো বলার পরে সে বলল,”এই তুমি ঠিক আছো তো?
_জ্বি। আগে কথা বললেন না যে?
_ভেবেছিলাম তুমি নয় অন্যকেউ। সন্ধ্যায় কি হয়েছিলো?” অরিন চুপ থাকলো। শাওনের কথাটা যদি দিহানকে জানালে শাওন আর দিহানের মাঝে ঝগড়া হয় তখন? দিহান আবার বলল,”বউপাখি।”
_খেয়েছেন?
_বলো সন্ধ্যায় কি হয়েছিলো?
_মা এসেছিলো রুমে তাই কেটে দিছিলাম।
_তারপরে কে রিসিভ করছিলো?
_ম ম মা ছিলো।
_কিছু বলেছেন তোমায়?
_বলে দিয়েছি সব কিছু।
_শুনে কি বললেন?
_কিছু বলেন নি। চিন্তা করছেন কখন কি হয় সেটা ভেবে।
_চিন্তা নেই সোনা। আমি আজীবন থাকবো তোমার পাশে। আচ্ছা ভিডিও কলে আসো।
_আজ না প্লিজ।
_কেন আজ কি হয়েছে? কল দিচ্ছি ধরো।” দিহান কল কেটে দিয়ে ভিডিও কল দিলো। অরিন রিসিভ করে লেপের নিচে ঢুকে গেলো। জহুরা বেগম রাতে অষুধ খেয়ে ঘুমান বলে অরিন শান্তি মতো কথা বলতে পারে। নয়তো দিহান যা লুচ্চা,ওর মুখের ভাষার যা শ্রী কখনোই অন্যের সামনে কথা বলা সম্ভব নয়।

________________________________

সকালে ঘুম থেকে উঠে অরিন বালিশের নিচ থেকে আগে ফোন বের করলো। জহুরা বেগম ঘরে নেই প্রতিদিন সকালে ভিডিও কলে কথা বলা লাগে নয়তো দিহান রেগে যায়। অরিন দিহানকে কল দিলো। দিহান কল ধরে ঘুম ঘুম চোখে ফোনের দিলে তাকালো। দিহানের ঘুম ভাঙা কণ্ঠ,চেহারা সবকিছু অরিনকে পাগল করে দেয়। তাঁর নেশা ধরে যায়। তখন মনে হয় সেও লুচ্চা হোক দিহানের মতো। আর মনে জাগা অনুভূতি গুলা বলে যাক দিহানকে। দিহান অরিনকে কিস দিলো। অরিন মৃদু হাসলো। দিহান ঘুম জড়ানো গলায় বলল,”আমার মর্নিং কিস কই?” অরিন দিহানকে কিস দিলো। কিছুক্ষণ কথা বলার পরে অরিনের কানে অনেক হইচই এলো৷ অরিন দিহানকে বলল, “আচ্ছা পরে কথা বলি?
_কেন?
_উঠতে হবে একটু।
_একটু পরে উঠো প্লিজ। আর পাঁচ মিনিট কথা বলি?
_পাঁচ মিনিট পরে ফোন দিচ্ছি তাহলে?
_আচ্ছা তাহলে কিস দাও।” অরিন কিস দিয়ে ফোন রেখে দিলো। তারপর ফোনটা বালিশের নিচে রেখে বাইরে আসলো। কুয়াশায় চারদিক অন্ধকার হয়ে আছে। মনে হচ্ছে এখন ফজরের আজান হয়েছে। কুয়াশায় গেট দেখা যাচ্ছে না। গেটের বাইরে থেকে অনেকজনের কথা বলার আওয়াজ আসছে। অরিন পা বাড়িয়ে সেখানে গেলো। কয়েকজন মহিলা কথা বলছেন। সেলিনা বেগম আমিরুন নেছা আর জহুরাও আছেন। অরিন কিছুক্ষণ দাঁড়ালো। কারো কথার আগামাথা বুঝলো না। অরিন আমিরুন নেছাকে জিজ্ঞেস করলো,”কি হইছে দাদী?” আমিরুন নেছা কিছু বললেন না। কিছুক্ষণ পরে সব মহিলা চলে গেলো। সেলিনা বেগম অরিনকে দেখতেই বললেন,”অলক্ষী।” কথাটা বলেই তিনি চলে গেলেন। অরিন জহুরাকে জিজ্ঞেস করলো,”মা কি হয়েছে?
_বাবুল ভাইয়ের ভাতিজা ইমনরে কেডা জানি কোপাইয়া মাইরা দিছে।

চলবে,,,,,,,।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here