ভালোবাসা এমনও হয় পর্ব-৬

0
964

#ভালোবাসা_এমনও_হয়
#Writer_Nusrat_Jahan(লেখিকার আসল নাম)
#Part_06

ইশান নেশাকে টেনে রুমে নিয়ে গেল।।প্রচুর পরিমানে রেগে আছে তা দেখেই বুঝা যাচ্ছে।।নেশা কিছুক্ষণ তাকিয়ে আবার হেসে দিলো।

নেশাঃ ?????

ইশানঃ ????

নেশাঃ ????একটুপর??????

ইশানের আর সহ্য হলো নাহ নেশাকে দেয়ালের সাথে চেপে ধরলো।

নেশাঃ ???

ইশানঃ নিহা, কনা আর লিমাকে তুই পার্কে যেতে বলেছিস তাই নাহ?

নেশাঃ মাত্র ৩ জন?।।আমি তো মনে হয় ৭ জনকে বলেছিলাম।আর গুলোকে এক্টিভ পাইনি তাই মেসেজ দিতে পারিনি??

ইশানঃ????তোকে তো আমি…..

নেশাঃ আচ্ছা ভাইয়া ওরা কি করছে গো???।।ব্রেক আপ হয়নি তোমার??

ইশানঃ হুহ। এতো….

হঠাৎ ইশানের মোবাইল এ কল আসলো।।নেশা উঁকি দিয়ে দেখলো নিহা ফোন দিয়েছে।

নেশাঃ যাও যাও তোমার গার্লফ্রেন্ড ফোন দিয়েছে?

ইশানঃ ?

ফোন ধরে-

ইশানঃ হ্যা বেবি বল

ওইপাশেঃ……….

ইশানঃ নাহ বেবি আসলে আমি অসুস্থ হয়ে গেছিলাম।।অনেক খারাপ লাগছিলো তাই তোমায় নাহ বলে চলে এসেছি।।আই এম সরি বেবি

ওইপাশেঃ……….

ইশানঃ না বেবি আই এম ওকে।।তুমি টেনশন নিও নাহ।

ইশানে খেয়াল করলো নেশা কান পেতে আছে কথা শোনার জন্য।

ইশানঃ আচ্ছা বেবি আমি তোমায় পরে ফোন দিচ্ছি।।এখন রাখি।। টাটা।।লাভ ইউ।

ইশান ফোন রেখে নেশাকে কিছু বলতে যাবে আবার ফোন আসলো।।এইবার লিমা।

ইশানঃ হ্যা বেবি

ওইপাশেঃ……

ইশানঃ আসলে আমি একটু অসুস্থ হয়ে গেছিলাম।।তাই না বলে….

ফাক দিয়ে নেশা কথা বলে দিলো

নেশাঃ তুমি এসে পড়।। তোমার বেবি তো তোমায় ছাড়া অসুস্থ হয়ে গেছে??

ইশান এক হাতে নেশার মুখ চেপে ধরলো।।নেশা উম্ম উম্ম করছে।।ইশান নেশাকে চোখ রাঙিয়ে অন্য হাতে কথা বলায় মনোযোগ দিলো।

ইশানঃনাহ বেবি আমি কোন মেয়ের সাথে নাহ।।আসলে আমি ডাক্তারের কাছে এসেছি।।ওইটা নার্সের গলা ছিলো।

ওইপাশেঃ……….

ইশানঃ আরে নাহ তোমার আসতে হবে নাহ আমি ঠিক আছি।।

ওইপাশেঃ…….

ইশানঃ আচ্ছা আমি তোমায়….আয়ায়ায়ায়ায়ায়া

নেশাঃ ??

ইশানঃ নাহ কিছু নাহ লিমা।।আমি তোমায় পড়ে ফোন দিচ্ছি।

ইশানঃ তুই আমায় কামড় দিলি কেন।।রাক্ষসী ?

নেশাঃ তো তুমি আমার দম বন্ধ করে ফেলছো।।আমি কি করবো

ইশানঃ তু……….

আবার ফোন বাজলো।

নেশাঃ ????ধরো ধরো তোমার জানু ফোন দিয়েছে?

ইশান রাগে মোবাইল অফ করে খাটে ছুড়ে মারলো।। তারপর নেশাকে আবার চেপে ধরলো।

ইশানঃ তোর মনে হচ্ছে নাহ আজ বেশি বেশি করে ফেলেছিস??

নেশাঃ নাহ যদি সবাই একসাথে আসতো তাহলে মনে হত ঠিকাছে।।এখন কম কম মনে হচ্ছে??।যদি ব্রেপ আপ হতো তাহলে ভালো হতো

ইশানঃ তা কেন শুনি।।আমার ব্রেক আপ করে তোর কি লাভ??

নেশাঃ অবশ্যই লাভ।।আমার ভাই হয়ে এতো গুলো মেয়ের সাথে প্রেম করবে আর আমি মেনে নিবো তা কি হয়?

ইশানঃ কেন তোর ভাই বলে কি প্রেম করতে পারবো নাহ

নেশাঃ পারবে নাহ কেন।কিন্তু অন্য মেয়েদের সাথে নাহ

ইশানঃ তাহলে কার সাথে করবো

নেশাঃ আরে আমা…….???

ইশানঃ থামলি কেন বল?

নেশাঃ ননাহ কিছু নাহ।।

বলেই নেশা চলে যেতে নিলো ইশান টেনে আবার দেয়ালের সাথে চেপে ধরলো

ইশানঃ কিরে তুই কি লজ্জা পাচ্ছিস নাকি?

নেশাঃ ককই নাহ তো

ইশানঃ তোর গাল গুলোতো টমেটো হয়ে গেছে??

নেশাঃ ???

ইশানঃ আচ্ছা ঠিকাছে তোর কথাই হবে।

নেশাঃ মানে

ইশানঃ আমি আর অন্য মেয়েদের সাথে প্রেম করবো নাহ

নেশাঃ সত্যি ?

ইশানঃ হ্যাঁ সত্যি কিন্তু?

নেশাঃ কিন্তু ?

ইশানঃ আমার গার্লফ্রেন্ডদের চাহিদা গুলো তো তোকেই পুরন করতে হবে তাহলে।।(নেশার ঠোঁটে আঙুল দিয়ে স্লাইড করতে করতে)

নেশা শক।।কাপাকাপি শুরু করে দিলো।

ইশানঃ কিরে তোর কি ঠান্ডা লাগছে। এতো কাপছিস কেন?

নেশাঃ ততুমি ঠোঁট থেকে হাত সসরাও?

ইশানঃ ওমা কেন।।আমার তো ভালোই লাগছে তোর ভালো লাগছে নাহ বুঝি?

নেশাঃ দদেখ ভভাইয়া ততু

ইশানঃ হায় হায় আমি তো যাস্ট এইটাই চাইছিলাম।।তুই কিনা সব দেখাবি।।ওকে দেখা আমি ও দেখি?

নেশাঃ দেখ আমমি তোমার গগার্লফ্রেন্ড দদের মমতো হতে পারবো নাহ

ইশানঃ কেন পারবি নাহ।।তুই তো বললি অন্য মেয়েদের সাথে প্রেম না করতে। তাহলে তোর সাথে করবো।।আর প্রেমেতো এটা কমনই(বলেই আবার ঠোঁট স্লাইড করতে লাগলো নেশার)

নেশা আর কিছু বলতে যাবে ইশানের দিকে চোখ গেল।।ছেলেটার মুখে দুষ্টু হাসি।। তারমানে নেশার সাথে মজা নিচ্ছে।

নেশাঃ মনে মনে- তবে রে আমার সাথে মজা।।দেখাচ্ছি মজা।

নেশাঃ আচ্ছা ভাইয়া শুন

ইশান যে নেশার ঠোঁট ছেড়ে তার চোখের দিকে তাকাতে যাবে নেশা ক্যাচ করে ইশানের আঙুল কামড় দিয়ে দিলো

ইশানঃ আহহহহ

ইশান নেশার থেকে দুরে সরে গেল

ইশানঃ রাক্ষসী।। এই ভাবে কেউ কামড় দেয়।।আজ খালি তুই আমায় কামড়াচ্ছিস।।দাড়া তোর মজা দেখাচ্ছি।

নেশা তো ভো দৌড়।। ইশান ও পিছে পিছে দৌড়।

নেশা এক দৌড়ে রিনার ঘরে গিয়ে পৌছাল।

রিনাঃ অবাক হয়ে – কিরে দৌড়াচ্ছিস কেন

নেশাঃ না আম্মু এমনি।।

পিছন থেকে ইশান এসে রিনা কে দেখে ব্রেক মারলো

রিনাঃ কিরে তুই কখন এলি আর দৌড়াচ্ছিস কেন

ইশানঃ এই মাত্র আসলাম।আসলে দিন দিন মোটা হয়ে যাচ্ছি তো তাই একটু দৌড়াচ্ছিলাম।।হেহে?( বোকা একটা হাসি দিয়ে)

রিনাঃ তাই বলে কলেজের ড্রেস না খুলেই

রিনাঃ???

ইশানঃ আসলে ভুলে গেছি চ্যাঞ্জ করতে ?হিহি।। আচ্ছা বায়।।

বলেই ইশান পালালো।


পরেরদিন—

আজ নেশাকে ইশান কলেজে নিয়ে যাচ্ছে।।

গাড়িতে –

ইশানঃ শুন কলেজে গিয়ে বেশি ঘুরাঘুরি করবি নাহ

নেশাঃ আচ্ছা ?

ইশানঃ যার তার সাথে বন্ধুত্ব করবি নাহ

নেশাঃ হুহ?

ইশানঃ তুই মুখ বাকা করলি কেন?

নেশাঃ তো কি করবো।। চুপচাপ ড্রাইভ করো নাহ।।কখন থেকে লেকচার দিয়ে যাচ্ছো।আমি কি ছোট বাচ্চা।।আমি কি কিছু বুঝি নাহ???

ইশানঃ হ্যা বুঝিস তো কিভাবে প্যাচ লাগাতে হয়৷ আর আমার সাথে ঝগড়া লাগতে হয়।

নেশাঃ এই তুমি চুপচাপ ড্রাইভ করো তো।। না হলে এক্সিডেন্ট হয়ে যাবে।

ইশানঃ যা বলছি সব মন দিয়ে শুনবি।।।না হলে একদম কলেজ যাওয়া বন্ধ করে দিবো।

নেশাঃ হুহ??

ইশানঃ আর শুন কোন সমস্যা হলে আমায় বলবি।। ওকে

নেশাঃ ??

ইশানঃ কিছু বলছি আমি

নেশাঃ শুনছি তো

ইশানঃ কথার কি ছিড়ি??

নেশাঃ ?

ইশান গাড়ি নিয়ে পার্কিং সাইডে চলে গেল।।।গাড়ি থেকে নেমে-

ইশানঃ আচ্ছা তুই একটু এখানে ওয়েট কর।।আমি তোর ফর্ম টা নিয়ে আসি।।

নেশা কে কিছু বলতে না দিয়ে ইশান চলে গেল।।

নেশাঃ আজব তো আমি এখানে কিছু চিনি নাহ।।আর আমাকে একা রেখে চলে গেল?।

হঠাৎ নেশার ডাক পড়লো।।

সায়ানঃ হেই হটি এদিকে আসো

নেশাঃ আমি???!!!

সায়ানঃ হ্যা তুমি এদিকে আসো।

নেশা সামনে গেল।

সায়ানঃ কলেজে নতুন?

নেশাঃ জি

সায়ানঃ নাম কি

নেশাঃ নেশা

সায়ানঃ বাহ কি নাম তোমার।।তা নেশা করেছো নাকি??

নেশাঃ মানে?

সায়ানঃ ??

নেশা পিছনে তাকালো।।খেয়াল করলো কয়েকটা মেয়েই দাড়িয়ে আছে।।

নেশাঃ তোমরা এখানে দাড়িয়ে আছো কেন

সায়ানঃ ওদের সবার র‍্যাগিং হবে তাই।বাট এখন তোমার টা আগে করবো।

হঠাৎ আয়ান আসলো

আয়ানঃ কিরে কতোটুকু করলি

(আসলে আয়ান,সায়ান,আর ইশান বেস্টফ্রেন্ড। কিন্তু সায়ান নেশাকে চিনে নাহ।।আসলে ওইদিন পার্টিতে সায়ান যায়নি)

সায়ানঃ আরে দোস্ত একটা নতুন আইটেম পেয়েছি আগে এইটার কাজ করি।

আয়ান এতোক্ষণ নেশার দিকে খেয়াল করেনি।

আয়ানঃ আরে নেশা তুমি এখানে

সায়ানঃ ওরে তুই একে চিনিস

আয়ানঃ হ্যা ওতো….

সায়ানঃ বাদ দে।।আচ্ছা বলতো ওর কি র‍্যাগিং নেয়া যায়।
আইডিয়া ও যখন নেশা ওকে নেশাই করাই।

বলেই একটা সিগারেট ধরালো

আয়ানঃ আরে সায়ান তুই কি পাগল হয়ে গেছিস ওর র‍্যাগিং নিবি তুই

সায়ানঃ তুই চুপ থাক।

সায়ানের ঝাড়ি খেয়ে আয়ান চুপ হয়ে গেল।

আয়ানঃ তোর কপালে যে কি আছে-বিরবির করে

সায়ানঃ ওকে হটি এই সিগারেট টা হাতে নাও।

নেশাঃ সিগারেট কেন নিবো?

সায়ানঃ তুমি খাবে তাই

নেশাঃ ছি??।।সিগারেট খুব বাজে গন্ধ

সায়ানঃ বাট এইটা তো তোমাকে খেতেই হবে।।না হলে যে আরো কঠিন শাস্তি পাবে

নেশাঃ আমি কিছুতেই খাবো নাহ।।আর আপনারা ও এইসব খাবেন নাহ।স্মোকিং ইজ ইঞ্জুরিয়াস ফর হেলথ

সায়ানঃ লেকচার দিতে বলিনি ম্যাডাম।চুপচাপ খাও।

নেশাঃ আপনার এতো সাহস।
জানেন নাহ কলেজে র‍্যাগিং এলাও না।ওয়েট আমি স্যারের কাছে আপনার নামে বিচার দিব।

সায়ানঃ ওরে বাবা আমি তো ভয় পেয়ে গেলাম।

পাশের মেয়েটা নেশার কানে ফিসফিস করে বললো

মেয়েটাঃ যা করতে বলছে করে নাও।।না হলে কলেজে তোমার খুব অপমান করবে সবার সামনে

নেশাঃ কিন্তু কেন করবো

মেয়েটাঃ আরে ওদের একজন লিডার আছে খুব পাওয়ারফুল।। এই কলেজের বিপি।।তাই টিচাররাও ওদের কিছু বলে নাহ।।তাই করে ফেল যা বলছে।।না হলে পরে এই কলেজে পড়তেই পারবে নাহ।

নেশা মেয়েটার কথা শুনে ভয়ে ঢুক গিললো।। ও তো আর জানে নাহ মেয়েটি ইশানের কথাই বলছে।

সায়ানঃ কি হলো ধরছো নাহ কেন।।ওহ খেতে পারো নাহ।।ওকে আমি শিখিয়ে দিচ্ছি।।বলেই সিগারেট এ একটা টান দিয়ে সব ধুয়া নেশার মুখে ছাড়লো।।
নেশা কেশে উঠলো।

সায়ানঃ নাও এখন ধরো

নেশার খুব কান্না পাছে এইদিক সেদিক তাকিয়ে দেখছে ইশানকে পায় কিনা।।এইদিকে আয়ান ও কোথায় যেন চলে গেছে।।নেশা কাপাকাপা হাতে সিগারেট টা ধরতে নিবে

তখনই —–

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here