ভালোবাসা এমনও হয় পর্ব-৫

0
963

#ভালোবাসা_এমনও_হয়
#Writer_Nusrat_Jahan(লেখিকার আসল নাম)
#Part_05

আয়ানঃ মানে??

ইশান আর কিছু বলতে যাবে তার চোখ পড়লো নেশার দিকে।

ইশানঃ আরে নেশা বাইরে দাড়িয়ে আছিস কেন। ভেতরে আয়।

নেশাঃ ননা মমানে আয়য়ান ভভাইয়ার জন্য আন্টি সসরবত পাঠালো

ইশানঃ ওহহ আচ্ছা বাট তুই তোতলাচ্ছিস কেন?

নেশাঃ আমি যে সব শুনেছি ইশান ভাইয়া কে বুঝতে দেয়া যাবে নাহ(মনে মনে)

ইশানঃ কিরে কোথায় হারিয়ে গেলি

নেশাঃ হ্যা?।না মানে কিছু নাহ।।এমনি।। ভাইয়া নিন সরবতটা (আয়ানের দিকে এগিয়ে দিয়ে)

ইশানঃ নাহ এখন সরবত খাওয়ার টাইম নেই।।কলেজে যেতে হবে।।

বলেই ইশান আয়ানকে একপ্রকার টেনেই নিয়ে বেরিয়ে গেল।

নেশাঃ কি হলো ব্যাপারটা।। ভাইয়া মনে হয় পালিয়ে গেল
।কিছু তো একটা ব্যাপার আছে।।

নেশার ঘোর কাটলো ফোনের আওয়াজে।।

নেশাঃ এই রে ভাইয়া তো তার মোবাইল রেখেই চলে গেছে।।গেলে গেছে আমার কি।।।

নেশা চলে গেল।।আসলে তাড়াহুড়ো তে ইশান ফোন টা নিতে ভুলে গেছে।।

নেশা আবার রুমে আসলো।

নেশাঃ আচ্ছা ভাইয়া তো কখনো তার ফোন কাউকে ধরতে দেয় নাহ।।আজ তো ধরলে বুঝতে পারবে নাহ।ইয়েস।।

নেশা ইশানের মোবাইল নিয়ে ঘাটতে শুরু করলো

নেশাঃ যাক বাবাহ লক ও দেয়নি।।থাক ভালোই হয়েছে?




একটুপর

নেশাঃ আল্লাহ মানুষ একসাথে এতোগুলো প্রেম কিভাবে করে।।আমি তো ভেবেছিলাম শুধু নিহাই ইশান ভাইয়ার গার্লফ্রেন্ড।। এখন তো দেখি????
(কিছুক্ষণ ভেবে)দাড়া বাচ্চু।।তোর এতো গুলো প্রেম করা বের করছি আমি??

নেশা চুপচাপ কাজ গুলো শেষ করে ফেললো।।তারপর ইশানের মোবাইলের গ্যালারি তে ঢুকলো।
বেশি ছবি নেই।।সব পরিবারের মানুষের আর ফ্রেন্ডদের সাথে ছবি।

নেশাঃ ধুর ছাই গার্লফ্রেন্ড এর একটা ছবি ও নেই মোবাইল টায়।

হঠাৎ নেশা দেখলো তার ছবিও আছে।।।।তবুও ওর ঘুমন্ত অবস্থায়।

নেশাঃ আল্লাহ ওই ছবি কোথায় পেল ইশান ভাইয়া।।মনে তো হচ্ছে কালকের ছবি।।কিন্তু ভাইয়া কেন আমার ঘুমন্ত ছবি তুললো।।ভাইয়া তারমানে প্রতিদিন রাতে আমার রুমে আসতো।।কিন্তু কেন????
।উফফ ভাইয়া যে কি করছে কিছুই বুঝতে পারছি নাহ?

কলেজে

ইশানঃ শিট মোবাইল টা রেখে এসেছি?

আয়ানঃ থাক কিছু হবে নাহ।।একদিন মোবাইল না আনলে মরে যাবি নাহ।

ইশানঃ ধুর আজ রিয়ার সাথে ডেট ছিলো মাথা?

আয়ানঃ রিয়া?কোন রিয়া

ইশানঃ আরে সাইকোলজির স্টুডেন্ট রিয়া?

আয়ানঃ আবার এইটারে ধরেছিস?‍♀

ইশানঃ ??

আয়ানঃ নিহা যদি জানতে পারে তোর হাড্ডি কিমা করবে

ইশানঃ আরে একটা প্যারা।।যাক ভালো হয়েছে কয়দিন আসবে নাহ বলেছে।।তাই তো নতুন টাকে ধরলাম,?

আয়ানঃ কেন আগের গুলোকি কম ছিল আবার নতুন

ইশানঃ দেখ বেশি কথা বলিস নাহ।।এই বয়সে এতোটুকু প্রেম করাই যায়।।কই বেশি করি।।?

আয়ানঃ বেশি নাহ?।তুই বলতে পারবি তোর কয়টা গার্লফ্রেন্ড

ইশানঃ পারবো নাহ কেন।।আমি নাম বলছি তুই কাউন্ট কর।।কবিতা,কনা,নিহা,লিমা,অনিমা,তুলি আর এই যে নতুন টা রিয়া।।বেশি নাহ ৭ টা মাত্র।

আয়ানঃ আর আয়েশ কোথায় গেল

ইশানঃ ওহহ হ্যা ওর কথা তো ভুলেই গেছি।।থাক ।। মাত্র ৮ টা।।আর তুই এমন করছিস যেন…..

আয়ানঃ নিলা কোথায় গেল,আর প্রিয়া সেইদিন তো দেখলাম ওকে নিয়ে পার্কে গেছিলি??

ইশানঃ ???।।উফফ তুই থাম তো।। হোক যতোজন ইচ্ছা।।ওরা আমার সাথে লাইন মারলে আমি কি করবো।।এই মাসুম মেয়েগুলোকে যদি না বলি তাহলে ওরা কষ্ট পাবে নাহ??

আয়ানঃ হ্যাঁ তুই পারলে পুরো কলেজের মেয়েদের সাথে প্রেম কর?

ইশানঃ আইডিয়া টা খারাপ নাহ।।?।বাদ দে।।তোর ফোনটা দে।।দেখি মোবাইলটা বাড়িতে ফেলে এসেছি কিনা।।

ইশান ফোন নিয়ে বাড়িতে কল দিলো।।নেশার হাতেই মোবাইলটা ছিলো।।তাই সাথে সাথে ধরে ফেললো।

নেশাঃ হ্যালো

ইশানঃ কিরে তোর হাতে আমার মোবাইল কেন।আমার মোবাইল নিয়ে কি করছিস শুনি।।?

নেশাঃ এই রে ভাইয়া বুঝলো কিভাবে আমি মোবাইল নিয়ে ঘাটছি(মনে মনে)

ইশানঃ হ্যালো

নেশাঃ হ্যাঁ ?

ইশানঃ আমার মোবাইল তোর হাতে কেন

নেশাঃ কই তোমার মোবাইল আমার হাতে

ইশানঃ তাহলে ফোন দেয়ার সাথে সাথে ধরে ফেললি কিভাবে

নেশাঃ আয়াসলে ততোমার ররুম পররিষ্কার ককরছিলাম তো তাই বাজার সাথে সাথে ধরে ফেলেছি?

ইশানঃ ওহহ আচ্ছা।।বাট তুই তোতলাচ্ছিস কেন রে।মিথ্যা বলছিস তাই নাহ

নেশাঃ ককই মিথ্যা বলছি।

ইশানঃ আচ্ছা ঠিকাছে রাখছি।।মোবাইলটা অফ করে চার্জে দিয়ে রাখিস।।ভুলেও টিপবি নাহ কিন্তু।

নেশাঃ তোমার মোবাইলে হাত দিতে আমার বয়েই গেছে?

ইশানঃ আচ্ছা সেটাই যেন হয়।।রাখছি।।

নেশাঃ যাক বাবা বেঁচে গেলাম।।কিন্তু তুমি কিভাবে বাচবে ইশান বেবি।।আজ তো ধরা খাবেই???।






কলেজের ছুটির পর ইশান রিয়াকে নিয়ে পার্কে ঘুরতে গেল।।

রিয়াঃ বেবি তুমি নাকি নিহাকে ভালোবাসো?

ইশানঃ কে বলেছে এই সব তোমায় বেবি।।ও তো যাস্ট আমার ফ্রেন্ডছিলো।।আমিতো যাস্ট তোমায় ভালোবাসি ?

রিয়াঃ সত্যি তো?

ইশানঃ হুহ তুমি আমায় ডাউট করলা।।এই তোমার ভালোবাসা।।আমি তো ভেবেছিলা আজ মামনিকে তোমার কথা বলবো আর তুমি কি আমাকে সন্দেহ করছো??(ন্যাকা কান্না করে)

রিয়াঃ আই এম সরি বেবি।। আমি আসলে ভুলে বলে ফেলেছি। প্লিজ রাগ করো নাহ।।

ইশানঃ ?????

রিয়াঃ সরি তো??

ইশানঃ হায়রে মেয়ে।।আমাকে সন্দেহ করতে এসেছে।।দিলাম তো উল্টো ঘুরিয়ে?(মনে মনে)

রিয়াঃ সরি তো আর হবে নাহ।।

ইশানঃ আচ্ছা ঠিকাছে।।আর প্লিজ এইভাবে আমায় কষ্ট দিও নাহ?

রিয়াঃ কখনো দিবো নাহ?

ইশানঃ হেই?এইসব কি।।বিয়ের আগে এইসব একদম নাহ।।দুরে যাও দুরে যাও??

রিয়াঃ এগুলো তো এখন কমন বেবি।।আর বেশি কিছু কই চাইলাম।।শুধু তো কিস ই??☺

ইশানঃ মাথা নষ্ট নাকি।।।তোমাকে কিস করে আমি আমার ঠোঁটের ভার্জিনিটি নষ্ট করবো নাকি।।বিয়ে আগে এইসব চলবে নাহ।।দুরে যাও

রিয়াঃ লিপসের ও আবার ভার্জিনিটি??

ইশানঃ হুহ।আচ্ছা তুমি বসো। আমি আইসক্রিম নিয়ে আসি।।দুইজন একসাথে খাবো।

রিয়াঃ আচ্ছা।


ইশান আইসক্রিম কিনতে গেল।।পিছন থেকে একজন ইশানকে জড়িয়ে ধরলো। ইশান দেখতে পায়নি।

ইশানঃ আরে রিয়া রাস্তায় এইসব কি।।।(বলেই মেয়েটার দিকে ঘুরলো)

নিহা কটমট করে তাকিয়ে আছে।।নিহাকে দেখেই ইশান এক ঢুক গিললো

নিহাঃ রিয়া কে?আর ও তোমায় জড়িয়ে ধরতে কেন?

ইশানঃ ররিয়া কে রিয়া আমি তো কোন রিয়াকে চিনি নাহ?

নিহাঃ একটু আগেই তুমি বলেছো আমি শুনলাম।

ইশানঃ আরেহ আমি তো ররিয়া নাহ রিসুর কথা বলছিলাম?

নিহাঃ রিসু কে?

ইশানঃ আরে তুমি জানো নাহ আমি তো রাসেলকে রিসু বলি,?(বোকা হাসি দিয়ে)

নিহাঃ কিন্তু তুমি তো সব সময় রাসেল ভাই বলতে।।

ইশানঃ ???

নিহাঃ আর রাসেল ভাই কোথায়(আশেপাশে তাকিয়ে)

ইশানঃ নেই তো নেই।।ও এখানে কিভাবে আসবে।আমি একাই এসেছিলাম।।বাট এইভাবে রাসেল ভাইয়া জড়িয়ে ধরে তো তাই ভেবেছি রাসেল ভাইয়া?

নিহাঃ তুমি একা আসলে তোমার হাতে আইসক্রিম দুইটা কেন?

ইশানঃ তোমার জন্য??।।নাও নাও খাও

নিহাঃ ওহহ ওকে।।(নিহা আইসক্রিম টা নিলো)

ইশানঃ চলো বসে নেই কোথাও।

নিহা রিয়া যেখানে বসেছে সেইদিকে যেতে নিলো।

ইশানঃ আরে ওইদিকে কোথায় যাচ্ছো এইদিকে চলো

নিহাঃ কিন্তু ওই দিকে কি

ইশানঃ আরে ওইদিকে রি….না মানে কুকুর কুকুর।। অনেক গুলা কুকুর বসে আছে ওইদিকে।।তুমি তো ভয় পাও

নিহাঃ ওহহ আচ্ছা চলো ওইদিকে বসি

ইশানঃ তা তুমি এইখানে কেন?

নিহাঃ তুমিই তো বললে তুমি পার্কে একা বসে আছো।।আমি যাতে দেখা করি?

ইশানঃ আমি ?

নিহাঃ হ্যাঁ তুমিই তো মেসেজ দিলে সকালে

ইশানঃ বাট আমি?(মনে মনে- আমি তো ফোনই আনিনি।।মেসেজ দিবো কিভাবে)

নিহাঃ বেবি একটা টিসুর প্যাকেট নিয়ে আসো নাহ।।দেখ নাহ আইসক্রিম পড়ে হাত গুলো ভরে যাচ্ছে।।

ইশানঃ আচ্ছা তুমি বস আমি আসছি।।

নিহাঃ সাথে একটা পানির বোতল

ইশানঃ ওকে।

ইশান আবার দোকানে গেল

আবার পিছনে থেকে কেউ হাত ধরে টান মারলো।

ইশানঃ আরে দাড়াও পানি……???

কনাঃ বেবি??

ইশানঃ ততুমি এখানে????

কনাঃ ওমা তুমিই তো মেসেজ দিয়ে আসতে বললে

ইশানঃ আমি??

কনাঃ হ্যা।।তো তুমি কি অন্যকাউকে আসতে বলেছিলে নাকি?

ইশানঃ ও হ্যা আমিই তো তোমায় বলেছিলাম।।অন্যকাউকে কেন বলবো।।চল ওইখানে গিয়ে বসি।

ইশান কনাকে নিয়ে আরেকটা টুল এ বসলো।।

কনাঃ কিছু খাওয়াবে নাহ?

ইশানঃ হ্যা এই নাও (হাতের পানির বোতল টা এগিয়ে দিয়ে)

কনাঃ শুধু পানি খাবো?

ইশানঃ ওহ না সরি আচ্ছা তুমি বস আমি কিছু নিয়ে আসছি

ইশানঃ ধুর আর দোকানের সামনেই যাবো নাহ।।।আল্লাহ জানে আবার কে এসে হাজির হয়।।কিন্তু সবাই একসাথে এইটা কিভাবে সম্ভব ?।।এতে আবার নেশার হাত নেই তো।। মোবাইল তো বাড়িতে।।এই রে ওইখানে রিয়াকে তো বসিয়ে রেখে এসেছি।।যাই আগে গিয়ে দেখা করে আসি

ইশান রিয়ার ওইখানে যেতে নিবে সামনে আরেকজন এসে হাজির।

ইশানঃ আরে লিমা তুমি।।তোমাকে ও নিশ্চয়ই আমি মেসেজ করেছি আসার জন্য তাই নাহ?

লিমাঃ হ্যা তুমিই তো মেসেজ দিলা পার্কে দেখা করতে

ইশানঃ জানতাম।। আচ্ছা আসো ওইখানে গিয়ে বসি।।

 

ইশানঃ আচ্ছা তুমি একটু বস আমি যাবো আর আসবো।

বলেই ইশান কেটে পড়লো।

ইশানঃ নাহ আর এইখানে থাকা যাবে নাহ।।।আর কে কে আছে আল্লাহ জানে।।এর থেকে বরং বাড়ি ফিরে যাই।।।কাল কিছু একটা বলে মেনেজ করে নিবো

ইশান কোন রকমে পালিয়ে বাড়ি ফিরে আসলো।

বাড়িতে

নেশা দরজা খুলে দিলো।।ইশান রাগি চোখে নেশার দিকে তাকিয়ে আছে।।নেশা মুখ টিপে হাসছে।।ইশান যে প্রচুর টেনশনে ছিলো দেখেই বুঝা যাচ্ছে।

ইশানঃ তুই এই সব করেছিস তাই নাহ???

নেশাঃ এমা আমি কেন করবো।। আমি তো তোমার মোবাইলই ধরি নি।।আর আমি কি তোমার গার্লফ্রেন্ড দের চিনি নাকি যে মেসেজ করবো?

ইশানঃ তোকে তো আমি কিছু বলিই নি।। তুই তো সব বলে দিলি। যদি তুই না করিস তাহলে তুই জানলি কিভাবে।

নেশাঃ মনে মনে- এই রে সব বলে দিয়েছি।।ভাইয়া নিশ্চয়ই বুঝে গেছে সব কিছুর পিছনে আমি আছি।।??এখন আমার কি হবে

 

চলবে?

( কি করবে বলে মনে হয় এখন এই ফ্লার্টবাজ ইশান বাবু নেশার সাথে?)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here