#ভালোবাসার_সাত_রং??
#Yanur_Akter_Eanya
#পাঠ-৪
আশিক সিকদারঃফোন কেটে পকেটে রেখে বাসায় রওনা হবে!তখনি অপর সাইটের রাস্তায় নিজের বড় ছেলে রাত কে দেখে চমকে গেলো!রাস্তা পার করে এইপাশ আসতে আসতে রাত গায়েব!রাত এখানে নেই চলে গেলো কোথায়!এখানেই তো ছিলো!আপদতো রাত কথা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে! নিলয় জন্য বাসায় রওনা দিলো!
এয়ারপোর্ট থেকে সোজা সিকদার বাড়ির মেইন গেইটে সামনে ব্লাক রং এর বিএমডাব্লিউ গাড়ীটি থামলো!
রজনী ছাদ থেকে বাড়ীর ভেতরে প্রবেশ করা গাড়ীটির দিকে তাকিয়ে আছে,প্রায় পাঁচ মিনিট হয়ে গেলো কিন্তু কেউ নামছে না!
গাড়ীর পিছনের আরেকটা গাড়ি থামলো!সেখানে থেকে সিকদার বাড়ির ড্রাইভার নেমে আসলো।সামনে গাড়ি ডিকি থেকে ব্যাগপত্র নামাচ্ছে!
রজনীঃআজব আমাদের বাড়িতে নতুন কে আসলো! গাড়িতে এমন কে আছে এখন গাড়ি থেকে না নেমে বসে আছে!ভাবী নিচে চলোতো দেখি কে এসেছে!
_____ ড্রাইভিং সিটের দরজা খুলে নেমে আসলো একটা সুদর্শন পুরুষ।ব্লাক কালারের শার্ট পড়নে,হাতাটা কনুই পর্যন্ত ভাজ করা,সামনের দুটো বোতাম খোলা,আর এতে লোমেভরা ফর্সা বুকটা কিছুটা দেখা যাচ্ছে তার।হাতে ব্রান্ডেড ওয়াচ,আর সিল্কি চুলগুলো বাতাসের তালে তালে উড়ছে।মনে হয় খেলা করছে।চোখে সানগ্লাস,আর মুখে খোঁচা খোঁচা দাড়ি তার সুন্দর মুখটাকে যেনো আরো বেশি আকর্ষণ করে তুলেছে।এ যেনো একটা এটোম বোমা।ক্রাশ কেউ খেতে না চাইলেও এই ব্যক্তিটা কে দেখে না খাওয়ার উপায় নেই।লেখনীতে ইয়ানুর আক্তার ইনায়া!
নিচে আলোকে নিয়ে রজনী দাড়িয়ে শোকড!
নিলয় ভাইয়ায়য়য়!ওহ মাই গড!তুমি বাংলাদেশে আম্মু,আব্বু দেখো ভাইয়া চলে এসেছে!
নিলয় কে জড়িয়ে কেমন আছো ভাইয়া!
____চোখ থেকে স্নানগ্লাস খুলে,হুম ভালো আছি!তুই কেমন আছিস!বাড়ি সবাই কোথায়!
____তুমি একটু দাড়াও আমি সবাইকে ডেকে আনচ্ছি!
রজনী দৌড়ে উপরে চলে গেছে!
নিলয় সোফা বসে পড়ে চোখ বুঝে অনেক টার্য়াড লাগছে লম্বা জার্নি করে এসেছে!
_____আলো নিলয় কে চিনে না!তাই কোনো কিছু না বলে মাথা নিচু করে চলে যেতে নিলে,
_____দাড়াও!বাড়িতে মেহমান, অতিথি আসলে তাদের আপ্যায়ন করতে হয় সেটা কি ভুলে গেছে সিকদার বাড়ির লোকেরা!
নিলয় কথা শুনে চুপ!নিলয় কে চিনে না কি বলবে এখন আলো এক ঢোক গিললো!
___চুপচাপ দাড়িয়ে থাকতে দেখে ছোট করে নিশ্বাস ফেলে বলো,একগ্লাস পানি হবে!
____জি আনছি!আলো পানি এনে নিলয় সামনে রাখলো!নিলয় পানি খাওয়া মাঝে সিকদার সাহেব, সিকদার সাহেব বউ রুবিনা এসে হাজির!
______কেমন আছো চাচ্চু,চাচীমা!
রুবীনা চোখে বিষাদময়ে ছায়া!মনে শান্তি নেই তার!বিয়ে আসর থেকে বড় ছেলে রাত চলে যাওয়া পর কোনো খোজ পায়নি আর!ছোট ছেলে ভোর পাগলের মতো করছে ঘরে থাকে না এক মিনিট!সিকদার বাড়ি সেই আগের আনন্দ নেই!সব আনন্দ, খুশী হারিয়ে ফেলেছে!আলো এই বাড়িতে আসার পর থেকে সয্য করতে পারনে না!রুবীনা মনে করে আলো দোষী!আলো জন্য তার সংসার ভেঙ্গে গেছে!তার দুই ছেলে সুখ কেড়ে নিয়েছে আলো নামে মেয়েটি!
____হুম ভালো আছি নিলয় আব্বু! তুমি ফ্রেশ হওয়!বিশ্রাম প্রয়োজন তোমার! রাতে কথা বলি তোমার সাথে!নিলয় ভ্রু কুঁচকে আসলো!ফোনে কথা হতো সবার সাথে মাসে একবার তখন সব স্বাভাবিক লাগত!আজ কেমন যেন অস্বাভাবিক লাগছে!নিলয় এসব নিয়ে পরে ভাববে!তাই এখন নিজের জন্য তৈরি করা রুমে বিশ্রাম জন্য চলে গেলো!
____________
যার কারণে ছাড়লাম আমি জগত সংসার
তবুও সে পাষান বন্ধু হইলো না আমার
আমার দুঃখে কাঁদে আকাশ কান্দেরে জমিন
নিদয়া তুই পাষান বন্ধু এতো রে কঠিন
তোর মনের পিঞ্জিরায় তুই কারে দিলি ঠাঁই
কারে এতো করলি আপন পর করে আমায়
তুই ভালো থাকিস বন্ধু আমার,
সুখে থাকিস রোজ
তোর স্বপ্নে আমি আসবো ঠিকই,
নিতে তোর খোঁজ
জলে নেভে জোনাকি দিয়ে যায় আলো
তুই ছাড়া একলা আমি কেমনে থাকি ভালো?
এ ভরা জোছনায় তুই কার পাশে?
কার বুকেতে মাথা রাখিস কারে ভালোবেসে
তোর মনের পিঞ্জিরায় তুই কারে দিলি ঠাঁই
কারে এতো করলি আপন পর করে আমায়
তুই ভালো থাকিস বন্ধু আমার,
সুখে থাকিস রোজ
তোর স্বপ্নে আমি আসবো ঠিকই,
নিতে তোর খোঁজ।
এই রঙের দুনিয়ায় আমার চাওয়ার কিছু নাই
রোজ হাসরে চাইবো তোরে খোদার খাজানায়
তখন যদি হায় তোরে না পাই
নিজের জীবন বৃথা ভাববো করার কিছু নাই
তোর মনের পিঞ্জিরায় তুই কারে দিলি ঠাঁই
কারে এতো করলি আপন পর করে আমায়
তুই ভালো থাকিস বন্ধু আমার,
সুখে থাকিস রোজ
তোর স্বপ্নে আমি আসবো ঠিকই,
নিতে তোর খোঁজ।
আরেকটি নির্ঘুম রাত যোগ হলো নিশি জীবনে!হাসপাতাল থেকে বাসায় আনা হয়েছে আজ ১৫ দিন!
নিজের সবচাইতে প্রিয় জায়গা তার বারান্দা যা নিজের পছন্দ মতোই সাজিয়ে ছিলো নিশি । এখানে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে বসে ফোনে কথা বলে নিজেদের ভবিষ্যৎ এর স্বপ্ন বুনতো নিশি ভোর সাথে। আজ সেখানে বসেই ভোর কে হারিয়ে ফেলার কষ্ট গুলোকে বুকে আগলে রাখছে নিশি। ভাবতে ভাবতেই চোখে কোনা বেয়ে পানি পড়ে গেল!
ভোর সাথে যোগাযোগ নেই নিশি আজ ১৫ দিন!
ভোর কেমন আছে, কোথায় আছে,কি করছে তার কোনো উওর নেই!
হঠাৎ কল আসায় নিশি চোখের পানি মুছে ফোন হাতে নিলো!ভোর মাই লাভ দিয়ে সেইভ করা ফোনটা বেজে চলেছে বারবার! আজ এত দিন পর ভোর কল পেয়ে নিজেকে আর ধরে রাখতে পারল না!কল রিসিভ করে কানে ধরলো!হ্যালো!
_____কেমন আছো নিশিপাখি!জানি ভালো নেই তুমি!আমি ও ভালো নেই নিশি পাখি!আমার সব সুখ যে তোমার কাছে!সেই সুখ পাখিটা আমায় ফোন দিয়ে বলে না আর তুমি খেয়েছ, তুমি না খেলে আমি খাবো না,এই রাত অনেক হয়েছে ফোনের প্রেম আলাপ রেখে ঘুমাও!কাজ মন দেওয় আমি আছি তোমার পাশে!
ভালোবাসায় এত কষ্ট কেনো নিশি পাখি!আমি শুধু তোমায় ভালোবেসে ছিলাম!কোনো পাপ তো আমি করিনি! তবু কেনো আজ আমি,তুমি আলাদা কেনো?আমার সুখে তো তুমি ছিলে! আল্লাহ কাছে একটাই যাওয়া ছিলো!আমার নিশিপাখি কে আপন করে পাওয়া তবু কোনো তোমায় পেলাম না!তোমাকে হারিয়ে আজ আমার বুকটা মরভূমি বালুচর হয়ে গেছে!বুকের পাশটাতে একবার কান পেতে শুনো!নিশিপাখি চাই,নিশিপাখি চাই বলে চিৎকার করছে!এই নিশি পাখি তুমি সত্যি আমার হলে না নিশি পাখি বলো না!উৎসব থেকে আজ জানতে পারলাম তুমি নাকি,অন্য কারো হতে চলেছো!তুমি নাকি তাজ ভাইয়ের পছন্দ করার ছেলে কে বিয়ে করবে!
নিশি চুপ হয়ে আছে কোনো কথা বলছে না!
ভোর নিশি নিশ্বাস শব্দ পাচ্ছে!নিশি পাখি কথা বলবে না আমার সাথে…..
ভোর কাদছে নিশি আর পারছে না নিজেকে আটকে রাখতে খুব কষ্ট হচ্ছে!নিশি ভোর কান্না সয্য করতে না ফেরে ফোন কেটে দিলো!
১.২৫ বাজে, মাতাল অবস্থায় সিকদার বাড়িতে পা রাখলো ভোর!
আশিক সিকদার উপরে দাড়িয়ে সব দেখছেন!ছেলে এই অবনতি মানতে পারছেন না! রুবিনা সিকদার কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছে আশিক সিকদার সাথে!
ভোর মাতাল অবস্থায় নিজের রুমে না গিয়ে পাশের রুমে চলে গেলো!
চলবে…..